এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  বাকিসব  মোচ্ছব

  • মিলেনিয়াম মলঃ পর্ব তিন 

    Ranjan Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    বাকিসব | মোচ্ছব | ০৭ অক্টোবর ২০২৩ | ২২৩ বার পঠিত
  • (৫)

    রাজকুমার গুলাবচন্দানী।
    জন্মঃ রায়পুর, ২৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৬০।
    শিক্ষাঃ রাজকুমার কলেজ;ই স্নাতক-দূর্গা কলেজ রায়পুর। ল' গ্র্যাজুয়েট,নাগপুর। এল এল এম-- ব্যাঙ্গালোর; প্রথম বছরেই র‌্যাগিং ও একটি হিট অ্যান্ড রান কেসের ফলে সংস্থান থেকে বিতাড়িত।আই আই এম, ইন্দোরে এম বি এ কোর্সে ভরতি। লাইব্রেরিয়ানের মেয়ের প্রেগন্যান্সি ও আত্মহত্যার প্রচেষ্টার সঙ্গে নাম জড়ানোয় পড়া শেষ হওয়ার আগেই রায়পুরে প্রত্যাবর্তন।
    পেশাঃ বিভিন্ন ফাইন্যান্স কোম্পানির কনসালট্যান্ট। ৯০ এর দশকে আর্থিক উন্নতি। আয়ের উৎস স্পষ্ট নয়। রায়পুরের নহর পাড়ার হর্ষদ মেহতার ভাইয়ের সহপাঠী। সেই সুবাদে হর্ষদের বিভিন্ন ইনভেস্টমেন্টের নাগপুর ও ছত্তিশগড়ের অপারেশনের মুখ্য নায়ক বলে সিআইডির গোপন রিপোর্ট।
    হর্ষদ মেহতা জেলে গেলে তার পরিবারের খাইখরচ নিয়মিত যুগিয়েছিল।
    পুলিশ ওর পায়েল ভিডিও সেন্টার, শীলা লজ ও ভিলাইয়ের বসুন্ধরা হোটেলে কয়েকবার রেইড করে। নিয়মিত সাট্টা, জুয়ার বোর্ড, হুক্কাবার ও কলগার্ল র‌্যাকেট চালানোর অভিযোগ।
    দুই মুখ্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক।
    ব্যবহার মার্জিত, পরিস্থিতির সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নিতে পারে। চতুর ও সুযোগসন্ধানী।
    বড় ভাইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ভাল নয়। পৈতৃক বাড়িতে থাকে না। শহরের বাইরে রবিনগরের পাশে ফার্মহাউস ও নিজস্ব কার্যালয়।
    বিবাহঃ প্রথমবার ভাটাপাড়ার নামকরা রাইস মিলের মালিক হোতামল খয়ানীর ছোট মেয়ে অচলার সঙ্গে। তিনবছরের মাথায় রহস্যজনক মৃত্য। ছোটবাচ্চার দুধ গরম করতে গিয়ে কথিত
    রূপে গ্যাসস্টোভ থেকে কাপড়ে আগুন ধরে। তখন রাজকুমার বাড়িতে ছিলেন।উনিই ৫০ প্রতিশত জ্বলে যাওয়া স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে ওঁর হাত-পা কিছুই পোড়েনি। পুলিশের সন্দেহ এটি হত্যা। মৃত্যুপথযাত্রী স্ত্রী স্বামীর পক্ষেই বয়ান দেয়ায় উনি ছাড়া পেয়ে যান।
    দুই বছর পরে নিজের ছোটশালীকে বিয়ে করেন।
    যৌনজীবন, নেশা ইত্যাদিঃ পরিমিত মদ্যপান। জুয়ায় আসক্তি, প্রতি তিনমাসে গোয়ার একটি ক্যাসিনোতে রুলে/ব্ল্যাকজ্যক খেলতে যান।
    নামে-বেনামে-পার্টনারশিপে প্রতিবছর আবগারী নিলামে দর লাগান।
    পুলিশের সন্দেহ গতবছর বিলাসপুরের তিনটি স্কুলে ছাত্রদের মধ্যে ব্রাউন সুগারের সাপ্লাই শুরু হওয়ার পেছনে ওঁর হাত রয়েছে।মদের ব্যবসা সামলাতে বিহার থেকে গোটা দশেক লাঠিয়াল রেখেছেন। তাদের জন্যে একটি মেসও নির্দিষ্ট আছে।
    কিন্তু তিনবছর আগে সেই মেসে একটি ১৯ বছরের ছেলে ৩৫ বছরের রম্মু পালোয়ানকে মাঝরাতে ঘুমন্ত অবস্থায় মাথায় ২২ বোরের বন্দুক থেকে গুলি চালিয়ে মারে। যতদূর খবর জান যায় -- ছেলেটির ওপর যৌন-অত্যাচার চালানোর মালিক রাজকুমারের ও প্রশ্রয় ছিল। কিন্তু প্রমাণ হয় নি।
    দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর সঙ্গেও শীতল সম্পর্ক।

    সদাশিবনের এবার হাই উঠছে। আন-কমন কিছুই নয়।গোটা ফাইলে ফুটে উঠেছে একটি ধড়িবাজ ন্যায়্নীতিবোধহীন ধূর্ত লোভী ব্যক্তির চেহারা।
    ঠিক আছে। প্রায় রাত দুটো।এবার শুয়ে পড়া যাক। বাকি কাগজগুলো কাল দেখলেই হবে।
    টেবিল থেকে জলের গেলাস তুলে ঢকঢক করে খেয়ে উঠে দাঁড়াতেই চোখে পড়ল আর একটি ছোটো ফোল্ডার। কখন বড় ফাইল থেকে মাটিতে পড়ে গেছে। নীচু হয়ে তুলতেই হাতে ঠেকল দুটো ছবি। একটি হল কোন স্কুলের প্রাইজ ডিস্ট্রিবিউশন ফাংশনের সময় মেয়রের পাশে দাঁড়িয়ে হ্যান্ড মাইক হাতে একজন শিক্ষিকা। সপ্রতিভ ব্যক্তিত্বময়ী। কিন্তু আরেকটি যে বড় চেনা। আধুনিক ফ্যাশনদুরস্ত পোশাকে হোটেলের অডিটোরিয়ামে এক পপ-গায়িকা। পাবলিকের উদ্দেশ্যে চুমু ছুঁড়ে দিচ্ছেন।
    এই ছবি এই ফাইলে কেন?
    সদাশিবনের রাতের ঘুম চটে গেল।

    (৬)

    কলিং বেলের শব্দে ঘুম ভাঙল সদাশিবনের। কাঁচ লাগানো ছোট্ট ফুটোয় চোখ লাগিয়ে দেখে শ্লথ পায়ে দরজা খুলে দিলেন। বেড টি ও স্ন্যাক্স নিয়ে ঘরে ঢুকেছে চমন।
    হেসে গুডমর্নিং বলে অভ্যস্ত হাতে টেবিল সাজিয়ে দেয়। খাওয়ার জল বদলে দেয়। তারপর দাঁড়িয়ে থাকে।
    -- “একটু পরে এসে খালি ট্রে নিয়ে যেও।”
    চমন নড়ে না।
    -- “কি হল? কিছু বলবে?”
    -- “একটা কথা বলি? মারবে না?”
    সদশিবন বিস্মিত।
    -- “মারার কথা উঠছে কেন?”
    -- “আরে বাঃ! উসদিন ইতনা মারা, ইতনী জোর সে, ফির কহতে হো মারনে কী সওয়াল কিঁউ?”
    সদশিবন একটু অপ্রস্তুত।
    -- “সেদিন তুমি যে হরকত করেছিলে তাতে তোমার চাকরি যাওয়র কথা। গেস্টদের সঙ্গে কেউ অমন করে? সত্যি কথা বল তো, কেন করেছিলে? মানে, কী ভেবে?”
    -- “গেস্টদের সঙ্গে কেন করব? এত্ত লোকজন আসে। কেউ কোনদিন শিকায়ত করেনি। কি যে বল ব্যাটম্যান?”
    -- “ব্যাটম্যান?”
    -- “হাঁ, তুমি হলে আমার ব্যাটম্যান আর অমি তোমার রবিন।”
    সদাশিবন হেসে ফেলেন। বেশ।
    --- “কী ? মঞ্জুর তো? তব্‌ হাত মিলাও!”
    উনি হেসে মাথা নাড়েন।
    -- “সে কি? কা বর?”
    -- “আগে বল সেদিন অমন হরকত করেছিলে কেন?”
    -- “টেস্ট করছিলাম।“
    -- “কী টেস্ট করছিলে?”
    -- “এই যেমন, তুমি আমার মত রবিনের ব্যাটম্যান হওয়ার উপযুক্ত কি না! ক্লাউনের আক্রমণে গর্তে সেঁদিয়ে যাও, কি পালটা আক্রমণ কর, এইসব।”

    কপট গাম্ভীর্যে মাথা হেলান সদাশিবন।
    -- “রেজাল্ট কি ? পাস না ফেল?”
    -- “য়ু হ্যাভ পাসড্‌ দ্য টেস্ট উইথ ডিস্টিংশন, ডিয়ার ব্যাটম্যান!”

    সদাশিবন ঘড়ি দেখেন।
    -- “অব মতলব কী বাত কর রবিন। মুঝে নহা-ধোকে তৈয়ার হোনা হ্যায়।”
    -- “আমাকে দুপুরবেলা তোমার এই ঘরে এসে দেয়ালে টাঙানো বড় স্ক্রীনের টিভিতে কার্টুন দেখতে দেবে? আমি কিচ্ছু নষ্ট করব না।”
    -- “দেখ, দুপুরে তো আমি ঘরে থাকিনা। কাজেই সরি। সম্ভব নয়।”

    (৭)

    আস্তে আস্তে চমনলাল সদাশিবনের রবিন হয়ে যায়।
    কবে থেকে যেন উনিও ওকে রবিন বলেই ডাকতে শুরু করেছেন। প্রথমে খেলার ছলে, পরে অভ্যেসে দাঁড়িয়ে গেল।
    -- রবিন, যাও, লন্ড্রি সে মেরা কপড়া লেকে আও।
    -- ক্যা রবিন? আজকাল খানা মেঁ কোঈ সোয়াদ নহীঁ হ্যায়, বড়া সিট্ঠা সিট্ঠা বন রহা হ্যায়? জরা দেখ লে না।
    -- রবিন, জলদি গাড়ি নিকালো। মিটিং মেঁ জানা হ্যাঁয়। জলদি করো।

    কিন্তু একদিন এই গাড়ি নিয়েই একটি ঘটনা ঘটে গেল।

    সেদিন মিটিং ভাল ভাবে শেষ হয়েছিল। ইন্টিরিয়র ডেকরের লোকজন কাজটা ভালই তুলে দিচ্ছে। ইলেক্ট্রিক্যালের সোমানীও সদাশিবনের সেফটি পয়েন্টের কতগুলো আপত্তির কথা মেনে ড্রয়িং এ কিছু মাইনর চেঞ্জ করতে রাজি হয়েছে। কিন্তু হাতে অফুরন্ত সময়। সদাশিবন ইচ্ছে করেই এখানে কোন সোশ্যাল সার্কল গড়ে তোলেন নি। অফিসার্স ক্লাবে ব্রিজ খেলতে যান নি। রবিন সেখানে টেনিস কোর্ট আছে জানিয়েছিল। কিন্তু জেগে ওঠা ইচ্ছেটাকে উনি প্রফেশনাল ডিসিপ্লিনে বেঁধে ফেলতে জানেন।

    অন্য দিনগুলোয় উনি নিজের রুমে ফিরে টিভিতে নিউজ দেখেন, পছন্দসই গান শোনেন। সামান্য দু'পেগের পর খাবার না আসা অব্দি রবিনের সঙ্গে কম্পিউটারের সঙ্গে টিভির স্ক্রীন কনেক্ট করে চেস খেলেন। খাবারের প্লেট রবিন গুছিয়ে নিয়ে গেলে উনি দরজা বন্ধ করে টেবিল ল্যাম্প জ্বেলে ল্যাপটপ খুলে বসেন। টেবিলে বিছিয়ে নেন কনস্ট্রাকশনের ব্লু-প্রিন্ট। খুঁটিয়ে দেখতে থাকেন এক-একটি সার্কিট, লুপ, সিরিজ ও প্যারাল্যাল কনেকশনের জাল, লোড ডিস্ট্রিবিউশন।

    মনে মনে ভাবতে থাকেন কোথা দিয়ে আসতে পারে আঘাত। নিজেকে অদৃশ্য শত্রুর জায়গায় বসিয়ে ভাবতে থাকেন উনি ওই জায়গায় হলে কি করতেন।
    ঘুম আসে না। ধীরে ধীরে বার করেন প্রথম সপ্তাহে রাজকুমার গুলাবচন্দানীর ফাইল থেকে পড়ে যাওয়া দুটো ছবি। একটি স্কুলের ফাংশানে এক দিদিমণির আর একটি লাস্যময়ী পপ সিংগারের। চেনা হয়েও অচেনা। কত বছর? এক দশকেরও বেশি?
    জেগে থাকেন। ট্র্যাংকুলাইজার খান না। ভোরের দিকে ঘুমিয়ে পড়েন। ঘুম ভাঙে সকাল সাতটায় বেড দিতে এসে বেল রবিন বেল বাজালে।

    সেদিন ইচ্ছে করছিল রুটিনের বাইরে কিছু করতে।

    -- “গাড়ি ঘোরাও। এত তাড়াতাড়ি গেস্ট হাউসে যাব না।”
    -- “তাহলে কোথায়?”
    -- “কোন নতুন জায়গায় নিয়ে চল। একটু খোলামেলা।”
    -- “ঠিক আছে। যেদিকে নতুন রাজধানী গড়ে উঠবে সেইদিকে আপনাকে নিয়ে যাচ্ছি। দেখবেন সব চওড়া চওড়া রাস্তা। একদম সেই গুরগাঁও বা নয়ডার আদলে।”
    -- “তুই কি করে জানলি? খালি বড় বড় কথা?”
    -- “কি যে বল ব্যাটম্যান! আমরা তো ওদিকেরই। পাঁচ বছর বয়সে এদিকে চলে আসি। রবিন কখখনো ব্যাটম্যানকে গুল দেবে না।”

    খুব ভুল বলেনি চমনলাল। তেমনি চওড়া চওড়া ওয়ান ওয়ে আর মাঝখানের ডিভাইডারগুলো মূল শহরের রাস্তার থেকে বেশি চওড়া। তবে নির্মাণকার্য চলছে, তাই ধূলো বড্ড বেশি।
    ফেরার সময় আগে দুটো গাড়ি ধূলোর ঝড় তুলে যাচ্ছে দেখে সদাশিবন চমনলালকে বললেন –“একটু স্লো কর। তাড়াহুড়োর কোন দরকার নেই।”
    কিন্তু টার্নিংয়ের মুখে ডানদিকের রাস্তা থেকে বেশ স্পীডে বাঁক নিয়ে আচমকা এদের লেনে ঢুকে পড়েছে একটি সেডান। চমনলাল প্রাণপণে বাঁদিকে স্টিয়ারিং ঘুরিয়েই আবার ডানদিকে কাটতে চায়। কোনরকমে কান ঘেঁসে সেডান ব্রেক কষে। আর পেছনের দরজা খুলে এক ষন্ডামার্কা লোক দ্রুত নেমে এসে সদাশিবনের গাড়ির উইন্ডশিল্ডে চাপড় মেরে চেঁচাতে থাকে---- “বাহর নিকল্‌ শালে! উতর্‌ বে রেন্ডি কে অওলাদ্‌ ! চমন দরজ না খুলে কাঁচ নামিয়ে জিগ্যেস করে -- হুয়া ক্যা? টাচ্‌ ভি তো নেহি লগা।”
    কিন্তু দক্ষিণী সিনেমার ঢঙে ডোরাকাটা গেঞ্জি পরা লোকটি আধখোলা কাঁচের মধ্যে দিয়েই হাত চালিয়ে দেয়। আর দরজা খোলার জন্যে জোরাজুরি করতে থাকে।

    ইতিমধ্যে ঝটিতি দরজা খুলে নেমে এসেছেন সদাশিবন।
    লোকটির পিঠে ভারি হাত রেখে বললেন — “হোয়াটস্‌ আপ?”
    চমকে উঠে লোকটি পেছন ফেরে, সদাশিবনের আপাদমস্তক দেখে। দু'পায়ে সমান ভর দিয়ে শান্ত ভাবে দাঁড়িয়ে থাকা দীর্ঘদেহী ব্যক্তিত্বকে দেখে একটু থমকায়। তারপর আঙুল উঁচিয়ে বলে—“এ- এ সাহাব! জ্যাদা আংরেজি চোদনা নেহি। জ্যাদা আংরেজি শুননে সে আপন কা দিমাগ খারাপ হোতা হ্যায়।”
    সদাশিবন নির্বিকার মুখে বললেন যে যখন কোন গাড়িরই কিছু হয় নি,তখন শুধু শুধু এখানে দাঁড়িয়ে মুখ খারাপ করে আমরা সময় নষ্ট করছি কেন?
    লোকটি জানায় যে হয় নি, কিন্তু হতে কতক্ষণ? বিশেষ করে এমন দিনকানা উল্লুর মত ড্রাইভারের হাতে স্টিয়ারিং থাকলে? আমার মালিকের গাড়ির মাত্র দুমাস হয়েছে, যদি একটু স্ক্র্যাচও লাগত, তাহলে আপনার এই গাড়ি এখান থেকে ফিরতে পারত না সেটা জেনে রাখুন।
    -- “তোমার গাড়ির মালিক কে? তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চাই।”
    সেডানের অন্যদিকের দরজা খুলে নেমে এসেছেন এক আকর্ষক ব্যক্তিত্বের পুরুষ, পরনে দামী সাফারি স্যুট। আঙুলে অনেকগুলো আংটি ও মণিবন্ধে দামি ঘড়ি চোখ এড়ায় নি সদাশিবনের।
    মুচকি হাসির সঙ্গে বললেন --- “ইয়ে গাড়ি ইস নাচিস কা হি হ্যায়।”
    তারপর চমনলালের দিকে যেন হটাৎ চোখ পড়ল এমনি ভাবে বললেন — “ আরে চমন ড্রাইভার! তাই বলি নইলে এমন বোকার মতন গাড়ি কে চালায়? ড্রাইভার বদলে নিন হুজুর! নইলে কোনদিন--!”
    নিজের রসিকতায় নিজেই হেসে উঠলেন।
    তারপর ভুরূ কুঁচকে সদাশিবনকে দেখে বললেন— “ও! আপনিই সেই বড়ে ভাইয়ার কাম কা আদমি!”
    “সে কি মশায়? শোলে দেখেন নি? গব্বর কে সামলাতে ঠাকুর আনত না লোকজন? সিপাহী? তা আমার ভাইয়াজীও খানিকটা সেই রকম। আমাকে সামলাতে কী কী করতে থাকেন।এই অমার কার্ডটা রাখুন। আসুন একদিন আমার গরীবখানায়। চমন চেনে। দেখবেন, আমি লোকটা তত খারাপ নই।“
    -- “আপনি?”
    --- “আমাকে রায়পুর শহরে সবাই রাজকুমার বলেই চেনে। রাজকুমার গুলাবচন্দানী।
    আচ্ছা, নমস্কার!”
    ধূলো উড়িয়ে সেডানটি উল্টো দিকে বেরিয়ে গেল।
    --- “ফিরে চল চমন।”
    -- “ব্যাটম্যান! এই হল তোমার "ডার্ক নাইট" সিনেমার ক্লাউন। এর ডেরায় আমি তোমাকে নিয়ে যাব না। মালিক রাগ করবেন।”

    (চলবে)
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খারাপ-ভাল প্রতিক্রিয়া দিন