এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • হোমি জাহাঙ্গীর ভাবা থেকে লালবাহাদুর শাস্ত্রী - মৃত্যুর রহস্যকথা

    Surajit Dasgupta লেখকের গ্রাহক হোন
    ০৫ অক্টোবর ২০২৩ | ১২৭৫ বার পঠিত | রেটিং ৪ (১ জন)
  • ভারত-চীন এবং ভারত-পাকিস্থানের যুদ্ধের পরে বিশ্বের কাছে ভারতবর্ষ যখন এক উদীয়মান শক্তি হিসেবে নিজেকে তুলে ধরেছে ঠিক সেই সময়েই ভারতবর্ষের আকাশ থেকে দুইটি শক্তিশালী নক্ষত্রের পতন ঘটে। অভিশপ্ত সেই বছর ১৯৬৬ সাল এবং আরও ভালো করে বললে ১৯৬৬ সালের জানুয়ারী মাস। মাত্র ১৩ দিনের পার্থক্যে ভারতবর্ষ নামক দেশটি অনেকখানি রিক্ত হয়ে পড়ে। ১৯৬৬ সালের ১০ই জানুয়ারী ভারত-পাকিস্থান যুদ্ধের শেষে সুদূর তাসখন্দ-এ যখন শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় তখন লালবাহাদুর শাস্ত্রীজীর সুদক্ষ নেতৃত্বে পরিচালিত হচ্ছে দেশ। আর ওদিকে ১৯৬৫ সালেই অল ইন্ডিয়া রেডিওতে ডঃ হোমি জাহাঙ্গির ভাবা দৃপ্ত কণ্ঠে ঘোষণা করেছেন, ভারতবর্ষ এখন পরমাণু বোমা বানিয়ে ফেলতে সক্ষম। এই ঘোষণাই বোধহয় ভারতবর্ষের আকাশে কালো মেঘকে ডেকে আনলো। ভারতবর্ষকে পরমাণু বিজ্ঞানের এক শক্ত ভিতের ওপর যিনি দাঁড় করিয়েছিলেন, তিনি আর কেউ নন স্বয়ং ডঃ হোমি জাহাঙ্গির ভাবা।

    আজকের দিনে দাঁড়িয়ে বিশ্বের পরমাণু শক্তিধর দেশগুলোর মধ্যে নিশ্চয়ই অন্যতম স্থানে আছে ভারত। আর শুধু কি অস্ত্র? পদার্থের ক্ষুদ্রতম অংশের ভেতর আর কোন আশ্চর্য লুকিয়ে আছে, আরও কী কী ভাবে তাকে কাজে লাগানো যায়— তা নিয়ে প্রতিদিন চলছে গবেষণা। এই বৃহৎ চালচিত্রটি তৈরিই হত না, যদি বিজ্ঞানী হোমি ভাবা না থাকতেন। জন্মেছিলেন এক বিত্তশালী পার্সি পরিবারে, স্বয়ং দোরাবজি টাটাও ছিলেন তাঁদের ঘনিষ্ঠ। সোনার চামচ মুখে দিয়ে জন্মেছিলেন ঠিকই, কিন্তু সেইসঙ্গে জন্মগত সূত্রে প্রাপ্ত আরও একটি জিনিস ছিল তাঁর - মেধা। এই দেশের মাটিকে যেমন ভালোবেসেছিলেন, তেমনই চেয়েছিলেন একদিন গোটা বিশ্বে বিজ্ঞানের জগতে ভারত শ্রেষ্ঠ স্থানটি পাবে। পড়তে পড়তে চলে গেলেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়। পা পড়ল ক্যাভেনডিশ ল্যাবরেটরিতে। একের পর এক যুগান্তকারী আবিষ্কারের কেন্দ্রভূমি ছিল এই ল্যাব। এখানে দাঁড়িয়েই জেমস চ্যাডউইক প্রথমবার আবিষ্কার করেছিলেন নিউট্রন কণা। সেখানে দাঁড়িয়েই পরমাণু ও নিউক্লিয়ার ফিজিক্স নিয়ে গবেষণায় মেতে উঠলেন হোমি জাহাঙ্গির ভাবা। উত্তরণের রাস্তাটা একটু একটু করে যেন সামনে আসতে লাগল। ইতিমধ্যেই ভারতের ওপর থেকে নেমে গেছে ইউনিয়ন জ্যাক। নতুন সূর্যের আলো এসে পড়েছে ত্রিবর্ণরঞ্জিত জাতীয় পতাকার ওপর। হোমি ভাবা-ও ১৯৪৭-এর বহু আগেই ফিরে এসেছেন ভারতে। শুরু হল ভারতের নিউক্লিয়ার ফিজিক্সের গবেষণার এক নতুন ও অনন্য অধ্যায়। যে রথের প্রধান সারথি ছিলেন স্বয়ং বিজ্ঞানী ভাবা! একের পর এক আধুনিক গবেষণাকেন্দ্র তৈরি হল দেশে। আর তার হাত ধরেই নতুন ভবিষ্যতের স্বপ্নটাও জাঁকিয়ে বসছিল আমাদের মধ্যে…

    পরমাণু নিজে ক্ষুদ্রতম হলেও, বিষয়টি মোটেও ছোটো নয়। পরমাণু নিয়ে গবেষণা করা মানে এক বিরাট দায়িত্ব। ততদিনে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের হাত ধরে মানুষ দেখে ফেলেছে পরমাণু বোমার শক্তি। আমেরিকার ক্ষমতাও সবার সামনে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বের বিজ্ঞানের মানচিত্রে উঠে এলেন সদ্য স্বাধীন হওয়া দেশের এক বিজ্ঞানী। ইতিমধ্যেই বিশ্ব থেকে স্বীকৃতি পেয়েছেন হোমি ভাবা। রয়্যাল সোসাইটির ফেলো হয়েছেন। পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কারের জন্যও বেশ কয়েকবার বিবেচিত হয়েছে তাঁর নাম। কিন্তু কোনো অজ্ঞাত কারণে তাঁর হাতে উঠে আসেনি সেই সম্মান। কেন? জানা নেই। অবশ্য তাতে কি কিছু যায় আসে ডঃ ভাবা-র! তিনি নিজের মতো কাজ করে যাচ্ছেন।

    একজন স্বপ্নদর্শী, ভাবা, বুঝতে পেরেছিলেন যে পারমাণবিক শক্তির বিকাশ দেশের ভবিষ্যতের শিল্প বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ শক্তি এবং শক্তির উপলব্ধ উৎস সীমিত ছিল। ব্যবসায়ী জেআরডি টাটার অর্থায়নে, ভারতীয় পরমাণু গবেষণার সূচনা হয় ১৯৪৫ সালে, টাটা ইনস্টিটিউট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চ (টিআইএফআর) এর সূচনার সাথে, যার নেতৃত্বে ভাবা। ১৯৪৮ সালে ভারত সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান নিযুক্ত, ভাবা ট্রম্বেতে পারমাণবিক শক্তি সংস্থাপন স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। পারমাণবিক শক্তির বিকাশে ভাবার অবদান তাঁকে আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক মহলে একটি উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব করে তোলে। তিনি ১৯৫৫ সালে পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার সম্পর্কিত জাতিসংঘ সম্মেলনের সভাপতি এবং ১৯৬০ থেকে ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত বিশুদ্ধ ও ফলিত পদার্থবিদ্যার আন্তর্জাতিক ইউনিয়নের সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।

    নেহেরু গত হয়েছেন দুই বছর হলো, ইতিমধ্যেই ভারতবর্ষ পেয়েছে এক দৃঢ়চেতা নেতা। শারীরিক দিকে ছোটখাটো কিন্তু অন্তরে লৌহমানব। লাল বাহাদুর শাস্ত্রী। তাঁর দৃঢ় নেতৃত্বে একটু একটু করে নিজের পায়ের তলার জমি শক্ত করছে আমাদের দেশ। নতুন দেশ, তার নতুন আশা, অনন্ত সম্ভাবনা। বিশ্বের মঞ্চে নিজের পরিচয় গড়ে তোলার চেষ্টা চলছে জোরকদমে। লাল বাহাদুর শাস্ত্রী এবং হোমি জাহাঙ্গির ভাবা - এই দুজনের ওপর দেশবাসীর অগাধ আস্থা ছিল। আপামর দেশবাসী সেই আশা নিয়েই আকাশে তাদের স্বপ্নের ফানুস উড়িয়েছিল। কিন্তু সেই স্বপ্ন যে তাদের কাছে দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে তার হিসেব বোধহয় একমাত্র বিধাতার কাছেই ছিল। ১৯৬৬ সালের ২৪ শে জানুয়ারী, এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট ১০১, বোয়িং ৭০৭, মুম্বই থেকে লন্ডনের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন ১০৬ জন যাত্রী নিয়ে। সঙ্গে ছিলেন ১১ জন বিমানকর্মী। দিব্যি চলছিল প্লেনটি। দেখতে দেখতে মঁ ব্লাঁ’র ওপরে পৌঁছে গেল এটি। আর মাত্র কিছুক্ষণ, তারপরই লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দরের মাটি ছোঁবে সবাই। হঠাৎই যেন কেঁপে উঠল প্লেনটি। তারপর? বাকিটা অন্ধকার। পরের কাহিনির শুরুতেই দেখা যায়, মঁ ব্লাঁ’র ওপর ভেঙে পড়ে আছে এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট ১০১ বোয়িং ৭০৭। ভেতরে কিছুই আর আস্ত নেই। ভারতে পৌঁছে গেল সেই খবর। গোটা দেশ এক লহমায় আবারও কেঁপে উঠল। কারণ, ওই ১০৬ জন যাত্রীর মধ্যেই ছিলেন ডঃ হোমি জাহাঙ্গির ভাবা, ভারতের পরমাণু বিজ্ঞানের জনক।

    ঠিকঠাকই চলছিল সবটা। হঠাৎই যেন দাঁড়ি পড়ে গেল সেই স্রোতে। ১৯৬৬ সালের জানুয়ারি মাসে অকালেই শেষ হল একটা অধ্যায়ের। বিমান দুর্ঘটনায় চলে গেলেন ডঃ হোমি জাহাঙ্গির ভাবা। এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটি যেভাবে ভেঙে পড়েছিল পাহাড়ের ওপর, তাতে কারোরই যে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ছিল না তা বোঝাই গিয়েছিল। তাও শেষ আশা, যদি ডঃ ভাবা বেঁচে যান। না, লাখ লাখ মানুষের প্রার্থনা বিফলে গিয়েছিল। তাঁর নিজের প্রতিষ্ঠা করা ট্রম্বে’র অ্যাটমিক এনার্জি এস্টাব্লিশমেন্টের নাম বদলে রাখা হয় ভাবা অ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টার। আজও যা দেশের নিউক্লিয় গবেষণার অন্যতম প্রধান স্তম্ভ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

    না, এখানেই থেমে যায়নি গল্পটা। বরং রহস্যের সূত্রপাত এরপরেই। সত্যিই কি বিমান ‘দুর্ঘটনায়’ মারা গিয়েছিলেন ডঃ হোমি জাহাঙ্গির ভাবা? নাকি এটা পরিকল্পনা করেই করা হয়েছিল? দুর্ঘটনার চেহারার আড়ালে কি জড়িয়ে রয়েছে কোনো জটিল তত্ত্ব? ১৯৬৬ সালে হোমি জাহাঙ্গির ভাবা-র মৃত্যুর পরই সামনে আসতে থাকে প্রশ্নগুলো। ভারতের এহেন উত্থানে কি শিয়রে সমন দেখেছিলেন আরও কেউ? ব্যস, এই সন্দেহ থেকেই শুরু হয় তদন্ত।

    বিভিন্ন সময় বিভিন্নজন তদন্তকাজে হাত বাড়িয়েছেন। যে মানুষটা এতবার নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পেয়েছিলেন, সোভিয়েত রাশিয়ার বাইরে এশিয়ার প্রথম পারমাণবিক রিয়েক্টর তৈরি করেছিলেন, টাটা ইন্সটিটিউট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চের মতো একটা গবেষণাকেন্দ্র তৈরির প্রস্তাব দিয়েছিলেন— তাঁর এমন মৃত্যু কেউই মানতে পারছিলেন না। সবচেয়ে বড়ো কথা, তদন্ত যত এগোতে থাকে, ততই সন্দেহ গাঢ় থেকে গাঢ়তর হতে থাকে। দুর্ঘটনা নয়, সম্ভবত চক্রান্তের শিকার হয়েছিলেন হোমি জাহাঙ্গির ভাবা। পরিকল্পিতভাবেই বিমান দুর্ঘটনাটি ঘটানো হয়। আর এই যাবতীয় চালচিত্রে উঠে আসে আরও একটি দেশ— আমেরিকা।

    তদন্ত যত এগোতে থাকে, ততই জোরালো হতে থাকে মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি বা সিআইএ-র ভূমিকা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পৃথিবী আবারও দেখল এক নতুন লড়াই— ঠান্ডা যুদ্ধ। বিশ্বে তখন দুটি প্রধান শক্তি, আমেরিকা এবং সোভিয়েত রাশিয়া। সরাসরি রণাঙ্গনে নামল না কেউ, অথচ ভেতরে ভেতরে একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলতে লাগল। আর পঞ্চাশ-ষাটের দশকে রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের যথেষ্ট ভালো সম্পর্ক ছিল। সদ্য ইংরেজ শাসন থেকে মুক্তি পেয়েছে দেশটি, আর সেখান থেকেই উঠে এলেন হোমি জাহাঙ্গির ভাবা-র মতো একজন বিজ্ঞানী! যিনি একটি দেশের পারমাণবিক মেরুদণ্ডটিকে শক্ত করছিলেন। উল্লেখ্য, ১৯৬৫ সালেই অল ইন্ডিয়া রেডিও’র অনুষ্ঠানে ভাবা বলেছিলেন, ভারত এখন পরমাণু বোমা বানিয়ে ফেলার মুখে দাঁড়িয়ে। শুধু সরকারের সবুজ সংকেতের অপেক্ষা। আর তার কয়েকমাস পরেই, ১৯৬৬-এর জানুয়ারিতে চিরতরে হারিয়ে গেলেন তিনি। কাকতালীয়?

    এমন সময় ২০০৮ সালে চাঞ্চল্যকর একটি তথ্য বিশ্বের সামনে উঠে আসে। তথ্য বলতে একটি ফোনকল। যার একদিকে ছিলেন সাংবাদিক গ্রেগরি ডগলাস, অন্যদিকে ছিলেন সিআইএ’র অফিসার ও গোয়েন্দা রবার্ট ক্রাউলি। ষাটের দশকে তিনি গোয়েন্দা সংস্থার অন্যতম দায়িত্বে ছিলেন। সেই ফোনালাপেই পরমাণু বোমার মতোই বিস্ফোরণ ঘটান ক্রাউলি। যেখানে তিনি একপ্রকার স্বীকার করেই নিয়েছিলেন, এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট ১০১-এর ভেঙে পড়া কোনো দুর্ঘটনা নয়; পরিকল্পিতভাবেই সেটি ঘটানো হয়েছিল একটি বোমার সাহায্যে। এবং এমনভাবে করা হয়েছিল যাতে বাইরে থেকে দেখে মনে হয় এটি দুর্ঘটনা।

    কিন্তু সিআইএ কেন এমন কাজ করেছিল? কারণ একজনই— ডঃ হোমি জাহাঙ্গির ভাবা। পরমাণু বোমার এত কাছে যখন পৌঁছে গেছে মানুষটি, তখন তো আমেরিকার একচ্ছত্র আধিপত্যও প্রশ্নের মুখে পড়বে। তার ওপর ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক বেশ ভালো। সব দিক দেখেই নাকি ঠিক হয়েছিল, এই কাজটি এখানেই থামিয়ে দেওয়া হোক। মাথা চলে গেলেই হয়তো থেমে যাবে সমস্ত কাজ। তাই, সেই ‘মাথা’কেই টার্গেট করে এগোনো হল। যার ফল, ১৯৬৬-এর বিমান ‘বিস্ফোরণ’।

    এই ঘটনা কি আদৌ সত্যি? জানা নেই। প্রথমে বলা হয়েছিল, জেনেভা এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে বিমানের চালকের ভুল বোঝাবুঝি হয়। তাতেই ঘটে যায় দুর্ঘটনা। আদৌ কি তাই? প্রশ্ন তুলেছেন ড্যানিয়েল রোশ। বহু বছর ধরে এই ব্যাপারে গবেষণা করছেন এই অভিযাত্রী। পৌঁছে গিয়েছিলেন অকুস্থলে। সেখানে ওই বিমানের সঙ্গে একটি আমেরিকান যুদ্ধবিমানের ধ্বংসাবশেষও নাকি পেয়েছেন তিনি! ওই বিমানটি কোথা থেকে এল? তাহলে কি পুরো ঘটনাতেই জড়িয়ে আছে আমেরিকা? এখনও চলছে গবেষণা। চলছে অনুসন্ধান। রাজনৈতিক চাপানউতোরের আড়াল থেকে যেন বেরিয়ে আসেন হোমি জাহাঙ্গির ভাবা, বেরিয়ে আসে তাঁর বিচার— এমনটাই আশা সবার। যিনি আমাদের আশা দেখিয়েছিলেন, তিনি বরফের ওই ঠান্ডায়, ছাই হয়ে পড়ে থাকতে পারেন না! ফিনিক্স তাঁকে হতেই হবে…

    হোমি জাহাঙ্গির ভাবা'র মৃত্যুর ঠিক তেরো দিন আগে ভারতবাসীকে চোখের জলে ভাসিয়ে, ভারতবাসীর বিবেকের আয়নায় শত - সহস্র প্রশ্নের উদ্রেক ঘটিয়ে যিনি রাজনীতির আঙিনা ত্যাগ করে অমৃতলোকে পাড়ি জমালেন, তিনি লাল বাহাদুর শাস্ত্রী মহাশয়। ভারত পাকিস্তান যুদ্ধ শেষে পাকিস্তানের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আয়ূব খানের সঙ্গে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য লালবাহাদুর শাস্ত্রী গেলেন তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের তাসখন্দে। দুদিন পরে ফিরেও এলেন এই দেশে, কিন্তু শরীর তাঁর তখন পুরো নীলাভ, নীলকন্ঠ মহাদেবের মতই। ঘাড়ে ও শরীরের অন্যান্য জায়গার ক্ষত চিন্হগুলো ছিল উপরি পাওনা। পাঁচ ফুট দুই ইঞ্চির ছোটখাটো মানুষটির ইস্পাত কঠিন মানসিকতার পরিচয় পেতে গেলে তাঁর শিক্ষা জীবন ও কর্ম জীবন সম্পর্কে একটু ধারনা করা প্রয়োজন। উত্তর প্রদেশের বারাণসী থেকে সাত মাইল দূরে মোঘলসরাই রেল স্টেশন সন্নিহিত এক ছোট্ট শহরে শ্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর জন্ম ১৯০৪ সালের ২রা অক্টোবর। তাঁর পিতা ছিলেন একজন স্কুল শিক্ষক। লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর বয়স যখন মাত্র দেড় বছর তখনই তাঁর বাবা মারা যান। তাঁর মায়ের বয়স তখন মাত্র ২০। তিনি তিন ছেলেমেয়েকে নিয়ে পিতৃ গৃহে চলে যান এবং সেখানেই বসবাস করতে শুরু করেন। ছোট্ট শহরে লাল বাহাদুরের স্কুল জীবন খুব একটা উল্লেখযোগ্য ছিল না। কিন্তু দারিদ্র্যের মধ্যেও তাঁর শৈশব কেটেছে হাসি-খুশি ও খেলাধূলার মাধ্যমে।

    বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিদেশি শাসন থেকে মুক্তিলাভের জন্য ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতি লাল বাহাদুর আকর্ষণ অনুভব করতে থাকেন। ভারতে ব্রিটিশ শাসনকে সমর্থন করার জন্য মহাত্মা গান্ধী ঐ সময় ভারতীয় রাজন্যবর্গের সঙ্গে যে কোন ধরণের সংশ্রব ত্যাগ করেন। এই ঘটনা লাল বাহাদুরের মনে বিশেষ দাগ কেটেছিল। তাঁর বয়স ছিল তখন মাত্র ১১। কিন্তু দেশের জাতীয় প্রেক্ষাপটে তাঁর ভবিষ্যৎ ভূমিকার সূচনা কিন্তু তখনই দেখা দিয়েছিল।

    মহাত্মা গান্ধী যখন অসহযোগ আন্দোলনে যোগদানের জন্য দেশবাসীর উদ্দেশে আহ্বান জানিয়েছিলেন লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর বয়স তখন মাত্র ১৬ বছর। গান্ধীজির আহ্বানে সাড়া দিয়ে লেখাপড়া ছেড়ে তিনি আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়লেন। তাঁর মায়ের সমস্ত আশা তখন বিলীন হয়ে গেলেও কোনভাবেই লাল বাহাদুরকে আর ফিরিয়ে আনা গেল না। কারণ, তিনি তখন মনস্থির করেই ফেলেছেন যে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নিজেকে উৎসর্গ করবেন। তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজন সকলেই বুঝতে পেরেছিলেন যে লাল বাহাদুরকে কোনভাবেই আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। বাইরে খুব নরম প্রকৃতির মানুষ হলেও মনেপ্রাণে তিনি ছিলেন দৃঢ়চেতা।

    লাল বাহাদুর শাস্ত্রী বারাণসীর কাশী বিদ্যাপীঠে যোগ দিলেন। ব্রিটিশ শাসনকে অগ্রাহ্য করে যে ক’টি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছিল কাশী বিদ্যাপীঠ ছিল তারই অন্যতম। এই প্রতিষ্ঠানে তিনি দেশের চিন্তাবিদ, মনস্বী ও জাতীয়তাবাদী নেতাদের সংস্পর্শে এলেন। এই বিদ্যাপীঠ থেকে ‘শাস্ত্রী’ অর্থাৎ এক স্নাতক ডিগ্রি তিনি লাভ করলেন। পরে, তাঁর নামের সঙ্গে ‘শাস্ত্রী’ কথাটি অবিচ্ছেদ্যভাবে যুক্ত হয়ে যায়। ১৯৩০ সালে সাম্রাজ্যবাদী লবণ আইন ভঙ্গ করতে মহাত্মা গান্ধী ডান্ডি অভিযান করেন। সারা দেশ তাঁর এই প্রতীকী প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে। কোনরকম পিছুটান না রেখেই লাল বাহাদুর শাস্ত্রী ঝাঁপিয়ে পড়েন দেশের স্বাধীনতার আন্দোলনে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন আন্দোলনে যুক্ত থাকার জন্য দীর্ঘ সাত বছর তাঁকে ব্রিটিশের কারাগারে কাটাতে হয়। এই সমস্ত ঘটনা তাঁর মনকে আরও দৃঢ় ও শক্তিশালী করে তোলে বিদেশী অপশাসনের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করার সঙ্কল্প নিয়ে।

    স্বাধীনতার পরেই ক্ষমতায় আসে কংগ্রেস। আপাত শান্ত লাল বাহাদুরের মধ্যে যে এক তেজস্বী ও দীপ্ত মানসিকতা রয়েছে স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় থেকেই দেশের নেতারা তা বুঝতে পেরেছিলেন। তাই, ১৯৪৬ সালে কংগ্রেস সরকার গঠিত হওয়ার পর দেশের শাসন ব্যবস্থায় এক গঠনমূলক ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার জন্য ডাক দেওয়া হল তাঁকে। নিজের রাজ্য উত্তর প্রদেশে তাঁকে সংসদীয় সচিব নিযুক্ত করা হয়। অচিরেই তাঁকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় স্বরাষ্ট্র দপ্তরের দায়িত্ব দেওয়া হল। তাঁর কঠোর শ্রম ও দক্ষতার কথা উত্তর প্রদেশের দিনগুলি থেকেই লোকের মুখে মুখে ফিরত। ১৯৫১ সালে নয়াদিল্লিতে এসে তিনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বেশ কয়েকটি দপ্তর একে একে সামলাতে শুরু করলেন। রেল, পরিবহণ ও যোগাযোগ, শিল্প ও বাণিজ্য, স্বরাষ্ট্র সহ বিভিন্ন দপ্তরের মন্ত্রী থাকার সময় তাঁর দক্ষতা ও কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে গেছেন তিনি। পণ্ডিত নেহরুর অসুস্থতার সময় তাঁকে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী ঘোষণা করা হয়। আর, এইভাবেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় তাঁর গুরুত্ব ক্রমশ বাড়তে থাকে। এক রেল দুর্ঘটনায় বহু প্রাণহানির ঘটনার দায় স্বীকার করে নিয়ে তিনি রেলমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন। তাঁর এই নজিরবিহীন ব্যক্তিত্ব ও মানসিকতা সংসদ তথা সমগ্র দেশবাসীর ভূয়সী প্রশংসা এনে দিয়েছিল। এই ঘটনা সম্পর্কে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু সংসদে ভাষণদানকালে লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর সংহত মানসিকতা ও মহান আদর্শবাদের কথার সপ্রশংস উল্লেখ করেন। তিনি বলেন যে, লাল বাহাদুরের রেলমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগপত্র তিনি খুশি মনেই গ্রহণ করছেন। কারণ, সাংবিধানিক দিক থেকে তা খুবই যুক্তিপূর্ণ যদিও সকলেই অবগত যে রেল দুর্ঘটনার জন্য লাল বাহাদুরজি কোনভাবেই দায়ী নন। রেল দুর্ঘটনার ওপর দীর্ঘ বিতর্কের জবাবে লাল বাহাদুর শাস্ত্রী বলেছিলেন, “সম্ভবত আমি খর্বকায় ও মৃদুভাষী হওয়ায় দেশবাসী মনে করেন আমি হয়তো দৃঢ়চেতা নই। শারীরিক দিক থেকে বলবান না হলেও আমি মনে করি ভেতরে ভেতরে কিন্তু আমি মোটেই দুর্বল নই।” মন্ত্রীত্বের কাজে যুক্ত থাকার অবসরেও লাল বাহাদুর শাস্ত্রী কংগ্রেসের সাংগঠনিক দিকটি দেখাশোনা করে গেছেন। ১৯৫২ , ১৯৫৭ এবং ১৯৬২ সালের সাধারণ নির্বাচনে কংগ্রেসের ব্যাপক জয়ের পেছনে তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতা ও নিরলস শ্রমের যে এক বিরাট অবদান ছিল একথা দেশবাসী মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতেন। লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর দীর্ঘ কর্মজীবন ছিল ৩০ বছরেরও বেশি। এই সময়কালে একজন দক্ষ ও দৃঢ় মানসিকতার মানুষ বলেই তিনি পরিচিতি লাভ করেছিলেন। তিনি ছিলেন সাধারণের প্রতিভূ। অথচ আচার-আচরণে তিনি ছিলেন খুবই বিনয়ী ও সংযমী। কিন্তু মনেপ্রাণে এবং সংকল্পে তিনি ছিলেন খুবই শক্তিশালী ও অবিচল। সাধারণ মানুষকে বোঝার ক্ষমতা তাঁর ছিল অসাধারণ। দেশকে প্রগতির পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে তিনি ছিলেন এক কাণ্ডারী। মহাত্মা গান্ধীর রাজনৈতিক শিক্ষাদর্শে অনুপ্রাণিত ছিলেন তিনি। “কঠোর পরিশ্রম প্রার্থনারই সমতুল্য” – একথাই মনে করতেন তিনি। মহাত্মা গান্ধীর আদর্শ ও ঐতিহ্য অনুসরণ করেই লাল বাহাদুর শাস্ত্রী ভারতীয় সংস্কৃতিতে আজও অবিস্মরণীয় হয়ে রয়েছেন। ভারতের দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন লালবাহাদুর শাস্ত্রী (Lal Bahadur Shastri)। সাধারণ মানুষ হিসেবেই তাঁকে দেশের মানুষ চিনতেন। তাঁর সরল জীবনযাপন আজও দেশের মানুষের কাছে আলোচনার অন্যতম বিষয়। পাশাপাশি তাঁর মৃত্যু রহস্য এখনও আলোচনার বিষয দেশবাসীর কাছে। কারণ তাঁর মৃত্যুর ৫৬ বছর পরেও তাঁর বেশ কিছু রহস্য (death mystry) রয়ে গেছে। যার সমাধান এখনও হয়নি। অনেকেই তাঁর মৃত্যুকে সাধারণ মৃত্যু বলতে রাজি নন। গভীর ষড়যন্ত্র দেখতে পান দেশের দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুর পিছনে।

    ১৯৬৫ সালের ভারত, পাকিস্থান যুদ্ধে মুখের ওপর জবাব দিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্থানের সেনাবাহিনীকে সম্পূর্ণরূপে পর্যদুস্ত করে। পাকিস্থান শান্তি চুক্তির প্রস্তাব দেয় এবং সেই চুক্তিতে সই করার জন্য লাল বাহাদুর শাস্ত্রীজী তাসখন্দে পাড়ি দেন। ১৯৬৬ সালের ১০ই জানুয়ারী শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সেই চুক্তি স্বাক্ষরের সময়ে এক রহস্যজনক ব্যক্তিও উপস্থিত ছিলেন, ছবিতে যা দেখতে পাওয়া যায়। রহস্যজনক এই কারণেই যে ছবির সেই ব্যক্তির সাথে নেতাজীর চেহারার মিল খুঁজে পাওয়া যায় (পরবর্তীতে অনেকেই কিন্তু বিজ্ঞানসম্মতভাবে প্রমাণ করেছেন সেই রহস্যজনক ব্যক্তি নেতাজী, অন্যকেউ নন)। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ভারতের রাষ্ট্রদূত টি এন কাউল। সেই রাতে কাউলের নিজস্ব রাঁধুনি জান মোহাম্মদের হাতের খাবার খেয়েছিলেন শাস্ত্রী। রাত ১১.৩০ মিনিটে জান মোহাম্মদের এনে দেওয়া এক গ্লাস দুধও খান তিনি। তারপরই রাত ১ টা ৩০ মিনিট নাগাদ অসুস্থ বোধ করেন তিনি। তড়িঘড়ি করে তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসককে খবর দেওয়া হয়। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। তাঁর অসুস্থ হয়ে পড়ার পরে কোনও ডাক্তারের রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। এদিকে, সোভিয়েত গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবি শাস্ত্রীকে বিষ দেওয়া হয়েছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল। গ্রেপ্তার করা হয় শাস্ত্রীজীর রুশ খানসামা আহমেদ সাতারভকে। এমনকি মরদেহ দেশে ফিরলে দেখা যায় লালবাহাদুর শাস্ত্রীজীর শরীরে নীল আর সাদা রঙের দাগ। পেটে ও গলার পিছনে কাটা দাগ ছিল। এগুলির কিসের দাগ, তা আজও স্পষ্ট নয়। পরিবারের সদস্যদের দাবি নীলসাদা দাগগুলি বিষক্রিয়ার দাগ। কিন্তু এতকিছু ঘটা সত্ত্বেও অদ্ভুতভাবে ময়নাতদন্তে বাদ সাধেন গুলজারিলাল নন্দা। এছাড়াও শাস্ত্রীর মৃত্যুর অন্যতম সন্দেহভাজন জান মোহাম্মদকে গ্রেপ্তার করা হলেও পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু পুলিশ রিপোর্ট অনুযায়ী সে নিরুদ্দেশ (আবার কেউ কেউ বলেন সেই জান মোহাম্মদ পাকিস্থানে পালিয়ে গিয়েছিল)। সংসদের লাইব্রেরিতেও দেশের দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুর কোনও রেকর্ড নেই।

    বহু টালবাহানার পরে লাল বাহাদুর শাস্ত্রীজীর মৃত্যু রহস্যেরও তদন্ত কমিশন বসেছিল। নেতাজী বা আরও অনেকের মতোই শাস্ত্রীজীর মৃত্যুও তো রহস্যে ঘেরা। সেই তদন্ত কমিশন শাস্ত্রীজীর ব্যক্তিগত ডাক্তার এবং ব্যক্তিগত ভৃত্য যাঁরা শাস্ত্রীজীর সাথে তাসখন্দে গিয়েছিলেন, তাঁদের ডেকেছিল স্বাক্ষী হিসেবে। সেটা ১৯৭৭ সাল। ভৃত্য রামনাথ ও ব্যক্তিগত ডাক্তার আর এন চুগ, দুজনেরই সংসদীয় সংস্থার সামনে উপস্থিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই একটি পথদুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁরই সঙ্গে মৃত্যু হয় তার দুই ছেলে ও দুই স্ত্রীর। তাঁর ব্যক্তিগত ভৃত্য রামনাথেরও মৃত্যু হয় পথদুর্ঘটনায়। এটি ষড়যন্ত্রের একটি অংশ হিসেবেই তুলে ধরেন শাস্ত্রীজির ঘনিষ্টরা। শাস্ত্রীজীর দুই ছেলে, সুনীল শাস্ত্রী ও অনিল শাস্ত্রীর মৃত্যুও যথেষ্ট রহস্যজনক ভাবে হয়েছিল। শাস্ত্রীজীর মৃত্যু সংক্রান্ত ফাইলগুলো আজ অব্দি সরকার প্রকাশ করেনি, নেতাজীর মতই সেই ফাইলগুলো গোপনীয় ছাপ ধারণ করে ফেলেছে।

    ২০০৮ সালে সাংবাদিক গ্রেগরি ডাগলাস, রবার্ট ক্রাউলি, সেন্ট্রাল ক্রাউলি, সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির এজেন্টের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে নিশ্চিত করে বলেছিলেন যে, লালবাহাদুর শাস্ত্রী এমনকি ডক্টর হোমি ভাবার মৃত্যুর পিছনেও আমেরিকার গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ-র হাত রয়েছে। ভারতের একটি সংস্কামুখী রাষ্ট্রহিসেবে আত্মপ্রকাশ করার চেষ্টা করেছিল লালবাহাদুর শাস্ত্রীর হাত ধরে। পাশাপাশি পারমাণবিক ফ্রন্টে ভারত-রাশিয়য়ার আধিপত্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি হুমকি হিসেবে দেখেছিল। তারই অবসান ঘটাতেও গুপ্ত হত্যার পরিকল্পনা করেছিল বলেও দাবি করেছিলেন সেই সাংবাদিকরা। আবার কিছুদিন আগে নেতাজী গবেষক শ্রী অনুজ ধরের লালবাহাদুর শাস্ত্রীর মৃত্যু সংক্রান্ত একটি আরটিআই দায়ের করেছিলন, যার উত্তরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জানান হয় যে, নথি প্রকাশ পেলে ভারতের বিদেশ নীতির পরিপ্রেক্ষিতে তা ক্ষতিকারক হবে। তাই মৃত্যু সংক্রান্ত নথি প্রকাশ করা যাবে না।

    শাস্ত্রীজী এবং ডঃ হোমি জাহাঙ্গীর ভাবার রহস্যজনক মৃত্যুর সাথে ভারতবর্ষ - রাশিয়ার মিলিত অক্ষ এবং পারমাণবিক শক্তিধর দেশ হিসেবে ভারতবর্ষের উত্থানকে মিলিয়ে আমেরিকার মাথা ব্যথার কারণকেই দায়ী করেন সকলে। এই যুক্তি ডঃ ভাবার ক্ষেত্রে সঠিক বলে প্রতিপন্ন হলেও শাস্ত্রীজীর ক্ষেত্রে বোধহয় একশো শতাংশ সঠিক নয়। শাস্ত্রীজীর ইস্পাত কঠিন মানসিকতার প্রমাণ ভারত, পাকিস্থানের যুদ্ধে সকলেই পেয়েছে। যুদ্ধের পরে রাশিয়ার (তদানীন্তন সোভিয়েত ইউনিয়ন) মধ্যস্ততায় শান্তি চুক্তি সম্পাদনা হওয়া এবং সেটা আবার সোভিয়েত ইউনিয়নেরই একটি জায়গায় (তাসখন্দে) হওয়া ভারত, রাশিয়ার মিলিত অক্ষশক্তির আগামীদিনের বাড়বাড়ন্ত অবস্থাকেই ইঙ্গিত করে। সুতরাং সেটা আমেরিকার কপালে ভাঁজ ফেলবেই। কিন্তু সেই শান্তি চুক্তির পরিবৃত্তে আরও একটি লোকের উপস্থিতি ছিল, নেতাজী। শাস্ত্রীজীর পরিবারের দাবি ছিল, তিনি চুক্তির দিন রাত্রে শোয়ার আগে তাদের ফোনে জানিয়েছিলেন, দেশে ফিরে এমন একজনের কথা দেশবাসীকে জানাবেন যাতে দেশবাসী চমকে যাবে। ছবির সেই রহস্যজনক ব্যক্তির নেতাজী হিসেবে প্রতিপন্ন হওয়ার পরে স্বাভাবিকভাবেই ধরা হয় শাস্ত্রীজী নেতাজীর কথা বলেছিলেন তাঁর পরিবারকে। ভারতবর্ষ - রাশিয়ার মিলিত অক্ষ এবং পারমাণবিক শক্তিধর দেশ হিসেবে ভারতবর্ষের উত্থান, শাস্ত্রীজীর ইস্পাত কঠিন মানসিকতা ও সেই সময়ের যুদ্ধোত্তর পরিস্থিতি, সব মিলিয়ে ভাবলে বলা যায়, শাস্ত্রীজী চাইলে নেতাজীর বেঁচে থাকার কথা বিশ্বকে জানিয়ে দিতে পারতেন। আমেরিকা বা ইংল্যান্ড ভারতবর্ষের কিছু করতে পারতো না। আর নেতাজী ফিরে এলে আমেরিকা বা ব্রিটিশ অক্ষের নাম পৃথিবীর ইতিহাস থেকে মুছে যেত। ভারত - রাশিয়ার অক্ষ পৃথিবীতে শাসন করতো। কিন্তু শাস্ত্রীজীর আকস্মিক মৃত্যু রাশিয়াকে দশ পা পিছিয়ে আসতে বাধ্য করে। বলা যেতে পারে প্ল্যান-এ ছেড়ে প্ল্যান-বি তে চলে যেতে হয় রাশিয়াকে। সেই কারণেই কি শাস্ত্রীজীর রহস্যময় মৃত্যু হলেও রাশিয়া ভারতবর্ষের মতই নীরব হয়ে যায়। প্রাথমিকভাবে কিছু নির্দিষ্ট পদক্ষেপ করলেও আর এগোয়নি তারা। যে গুলজারিলাল নন্দা, শাস্ত্রীজীর দেহের পোস্টমর্টেম করতে বাঁধা দেয়, তাঁকে নির্ভর করে রাশিয়া কিভাবে কোনো পরিকল্পনা করতে পারে!!!

    তথ্যসূত্র—
    ১) ‘বিমান দুর্ঘটনা, নাকি চক্রান্তে মৃত্যু হোমি ভাবার’, পীযূষ আশ, এই সময়
    ২) ‘আল্পসে হোমি ভাবার বিমান ভেঙে পড়েছিল সিআইএ’র ষড়যন্ত্রে?’, আনন্দবাজার পত্রিকা
    ৩) ‘হোমি জাহাঙ্গির ভাবা— পরমাণু শক্তির কারিগর’, প্রদীপ দেব, মুক্তমনা ব্লগ
    ৪) ‘Sabotage or accident? The theories about how India lost nuclear energy pioneer Homi Bhabha’, Neera Majumdar, The Print
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • Amit | 220.240.246.36 | ০৫ অক্টোবর ২০২৩ ১৬:১১524307
  • "শাস্ত্রীর সাথে ছবিতে যাঁকে দেখা গেছে - পরবর্তীতে অনেকেই কিন্তু বিজ্ঞানসম্মতভাবে প্রমাণ করেছেন সেই রহস্যজনক ব্যক্তি নেতাজী, অন্যকেউ নন"
    - কে বা কারা এবং কোথায় এটা প্রমান করেছে ? সোর্স ?
  • | ০৬ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:২৬524330
  • "শাস্ত্রীর সাথে ছবিতে যাঁকে দেখা গেছে - পরবর্তীতে অনেকেই কিন্তু বিজ্ঞানসম্মতভাবে প্রমাণ করেছেন সেই রহস্যজনক ব্যক্তি নেতাজী, অন্যকেউ নন" - 
    বলেন কি মশাই? কই সেই বিজ্ঞানসম্মত প্রমাণগুলোর রেফারেন্স দিন দেখি একটু। 
     
  • Surajit Dasgupta | ০৬ অক্টোবর ২০২৩ ২১:২৯524342
  • আপনাদের অবগতির জন্য জানাই, ১৯৬৬ সালে ১০ জানুয়ারি রাশিয়ার তাসখন্দে রুশ রাষ্ট্রপ্রধান পেজিগিন, পাক প্রেসিডেন্ট আয়ুব খান, জুলফিকর আলি ভুট্টো ও ভারতের দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রীর উপস্থিতিতে যে চুক্তি সম্পাদিত হয়েছিলো। চুক্তি সম্পাদনার পরে যেসব ছবি উঠেছিল তারমধ্যে এক রহস‍্যময় ব‍্যাক্তির ছবি দেখা যায়। ব্রিটেনের ফেসম‍্যাপিং বিশেষজ্ঞ জন মেরিল তাঁর ফরেনসিক রিপোর্টে জানিয়েছেন যে, ভারতীয় নেতা সুভাষচন্দ্র বসুর মুখবায়বের সঙ্গে প্রচুর মিল রয়েছে সেই রহস্যময় ব্যক্তির। তাসখন্দ চুক্তির সময়ে রেডিও মস্কো থেকে নেতাজী ভাষণ দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের ফাইলে (সিক্রেট ফাইল ২ (৬৪)/৫৬-৬৮ পি,এম) (previously classified and now declassified file) স্পষ্টভাবে পাওয়া যায় যে, নেতাজী তাসখন্দ চুক্তির সময়ে রেডিও মস্কো থেকে বেতার ভাষণ দিয়েছিলেন। ওই ফাইলের ১৫৩ পাতা থেকে অনেকগুলো পাতা জুড়ে সেই বক্তৃতা লেখা আছে। সেই ফাইলের বিবরণ ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মুখার্জী কমিশনকে জানিয়েছিল। India's Biggest Cover Up (Anuj Dhar), চক্রব্যুহে নেতাজী (কেশব ভট্টাচার্য্য), Connundrum (Anuj Dhar) ইত্যাদি বইগুলোতে বিস্তারিত আলোচনা করা আছে, দেখে নিতে পারেন।
  • r2h | 192.139.20.199 | ০৬ অক্টোবর ২০২৩ ২১:৫৩524344
  •  
    এই ছবিতে বাঁদিকে দুজন ফর্সা লোকের মাঝে ও একজন হাসিখুশি বৃদ্ধের বাঁদিকে কোনাকুনি ওপরে ওপরের ভদ্রলোক নেতাজী, এমন অনেকে বলেন।
    আমাদের স্কুলে তেইশে জানুয়ারী বিশাল শোভাযাত্রা সহ ট্যাবলো হতো, তাতে প্রতিবছর উঁচু ক্লাসের একটি করে সুদর্শন ছেলেকে নেতাজী সাজানো হত। আর কী কান্ড, গোল চশমা পরিয়ে দিলেই একেবারে নেতাজীর মত লাগতো দেখতে।

    আমার একটাই ধন্দ, নেতাজী যদি তখন আত্মগোপন করে থাকেন তাহলে এমন একটা হাই ভিজিবিলিটি জায়গায় উপস্থিত হলেন কেন?
  • dc | 2401:4900:1cd1:89ff:cc27:2b3e:261a:1c1c | ০৬ অক্টোবর ২০২৩ ২২:১১524345
  • এই ছবির ব্যপারে জানতাম না, গুগল করে বেশ কিছু লিংক পড়লাম। জানলাম যে ইনি তাশকেন্ট ম্যান নামে পরিচিত। 
     
    তবে আমারও একখানি প্রশ্ন আছেঃ নেতাজী যদি মস্কোতে ছিলেনই, তো আত্মগোপন করে ছিলেন কেন? ওনার ব্যপারে যেটুকু পড়েছি (খুবই কম পড়েছি), তাতে তো উনি আত্মগোপন করে থাকার মতো লোক ছিলেন বলে মনে হয়নি! উল্টে, কোনরকমে যদি প্রচার করে দিতে পারতেন যে আমি বেঁচে আছি, রাশিয়াতে আছি কিন্তু দেশে ফিরতে চাই, তাহলে তো ইমিডিয়েটলি ভারতের জনগন ওনাকে ফিরিয়ে আনার জন্য হৈচৈ শুরু করে দিত! 
  • Surajit Dasgupta | ০৬ অক্টোবর ২০২৩ ২২:৩৩524348
  • নেতাজী যা যা আশা করেছিলেন ভারতবাসীর কাছ থেকে, সেগুলো কিন্তু বাস্তবে ঘটেনি। তিনি আশা করেছিলেন আজাদ হিন্দ ফৌজ যখন ভারতবর্ষের মাটিতে প্রবেশ করবে তখন বাঙালি এবং উত্তর - পূর্ব ভারতের লোকেরা হাজারে হাজারে ফৌজে যোগ দেবে। বাস্তবে কেউ আসেনি। তিনি আশা করেছিলেন তিনি প্রকাশিত হতে চাইছেন এটা ভারতবাসী জানতে পারলে তারা উন্মত্ত হয়ে উঠবে, সাদরে গ্রহণ করবে নেতাজীকে। কিন্তু তাও হয়নি। নেতাজী, নেহেরু বেঁচে থাকাকালীন  অনেকবার ও অনেকভাবে চেষ্টা করেছিলেন খবর ছড়িয়ে দেওয়ার যে নেতাজী প্রকাশিত হয়েছেন। নেহেরু যেহেতু চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন যে নেতাজী প্রকাশিত হলে তাঁকে মিত্রশক্তির হাতে তুলে দেবেন তাই এটা প্রকাশিত হওয়ার আগের কৌশল ছিল বলেই মনে হয়। আবার লালবাহাদুর শাস্ত্রীর পরের সময়েও সম্ভবতঃ তিনি ভরসা পাননি সোজা ব্যাটে খেলার। রাধাকৃষ্ণান থেকে বিজয়লক্ষ্মী পণ্ডিত অনেকের মাধ্যমেই তিনি নেহেরুর কাছে সংবাদ পাঠিয়েছিলেন বা মনের প্রকাশিত হওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু নেহেরু সাড়া দেয়নি। একমাত্র লালবাহাদুর শাস্ত্রীর এই সময়টাতেই পরিস্থিতি নেতাজীর অনুকূলে ছিল। কারণটা লেখায় উল্লেখ করেছি। এটা একেবারেই নিজস্ব বিশ্লেষণ। আর তিনি কিন্তু নেতাজীর চেহারায় ধরা দেননি, ছবিতে স্পষ্ট। খানিকটা হলেও চেহারায় মেকাপ আছে। এক দেখায় বোঝা যায়না। 
  • | ০৬ অক্টোবর ২০২৩ ২২:৪০524349
  • ঠিক যা সন্দেহ করেছিলাম। 
    অনুজ ধর তো থ্রি কোয়ার্টার চাড্ডি।  তেনার নেতাজীর উপরে বই পড়েছি। বেশ ইসে টাইপ। 
     
    মুখার্জী কমিশানের রিপোর্ট পড়ি নি  কিছু খাবলা কোট ছাড়া। সেটা কেসি এ টই দেখলে কনফার্ম করতে পারবেন। 
     
  • Surajit Dasgupta | ০৬ অক্টোবর ২০২৩ ২৩:০০524351
  • অনুজ ধর ছাড়াও আরও বইয়ের নাম করেছি। এছাড়াও অনেক বই বাজারে পাওয়া যায়। আপনি বই না পড়ে, মুখার্জী কমিশনের রিপোর্ট না পড়ে মন্তব্য করছেন। মুখার্জী কমিশনের রিপোর্টটা বিস্তারিত পড়ুন আগে, অবশ্য যদি আপনি মুখার্জী সাহেবের বিদ্যা বুদ্ধিকে গুরুত্ব দেন তাহলে।
  • dc | 2401:4900:1cd1:89ff:9131:421f:58d6:2b6 | ০৬ অক্টোবর ২০২৩ ২৩:১৭524354
  • "তিনি আশা করেছিলেন তিনি প্রকাশিত হতে চাইছেন এটা ভারতবাসী জানতে পারলে তারা উন্মত্ত হয়ে উঠবে, সাদরে গ্রহণ করবে নেতাজীকে। কিন্তু তাও হয়নি। নেতাজী, নেহেরু বেঁচে থাকাকালীন  অনেকবার ও অনেকভাবে চেষ্টা করেছিলেন খবর ছড়িয়ে দেওয়ার যে নেতাজী প্রকাশিত হয়েছেন"
     
    এখানটা বিশ্বাসযোগ্য মনে হচ্ছে না। নেতাজী কি কি চেষ্টা করেছিলেন? তার কি কি প্রমান আছে? 
     
    তাছাড়া নেতাজি কোন একটা সময়ে বেতার ভাষণ দিতেন না? ওরকম কিছু একটা বেতার ভাষণ দিলেই তো পারতেন! বা ইন্টারন্যাশনাল নিউজ এজেন্সিদের কাছে খবর পাঠালেই তো পারতেন! তারা তো খবরটা লুফে নিত! 
     
    আর নেহরু মিত্রশক্তির হাতে তুলে দেবেন বলে চুক্তি করেছিলেন তো কি, মিত্রশক্তির কাছে তো নেতাজি সরাসরি আর পাবলিকলি নিজেই হাজির হয়ে যেতে পারতেন! মিত্রশক্তি বড়োজোর ওনাকে ট্রায়ালে দাঁড় করাতে পারতো, কিন্তু সেটা করতে গেলেও তো ভারতে বিরাট বড়ো রিয়্যাকশান হতো! মানে নেতাজি বেঁচে আছেন, এই খবরটা নিজেই স্কুপ অফ দ্য সেঞ্চুরি হতে পারতো। নেতাজির নিজের দিক থেকে তো আত্মগোপন করে থাকার কোন মানেই দেখি না। 
  • war criminal | 146.70.42.202 | ০৬ অক্টোবর ২০২৩ ২৩:৩৩524355
  • এই যে কানাডায় যে ৯৮ বছরের লোকটা নাজি বলে ধরা পড়েছে, একে পোল্যান্ড সরকার ফেরত চেয়েছে শাস্তি দেবার জন্য। এত বছর পরেও। তাহলে নেতাজি সেসময়ে ফিরলে কি হতো সহজেই অনুমেয়। নেহরু সরকার চেপে দিয়েছে খবরটা।
  • dc | 2401:4900:1cd1:89ff:4929:bfaa:23fb:f682 | ০৬ অক্টোবর ২০২৩ ২৩:৪৮524356
  • নেতাজি কি নাজি লেভেলের ওয়ার ক্রিমিনাল ছিল? ঐ সময়ে ফিরলে হয়তো ওনার ট্রায়াল হতো, কিন্তু তাতেও তো হৈচৈ পড়ে যেতো! 
  • r2h | 192.139.20.199 | ০৭ অক্টোবর ২০২৩ ০০:১৪524357
  • ঐ লেভেলের না হলেও, বিশ্বযুদ্ধ সবে শেষ হয়েছে, ক্ষত তাজা, বিচার তো হতোই, আর তার ফল খুব একটা সুবিধের হতো না। শত্রুর শত্রুর সঙ্গে হাত মিলিয়ে রাজনৈতিক চাল যদি মেনে নেওয়া যায়ও, তাঁর এমনকি ব্যক্তিগত চিঠিপত্র কোথাও-ও নাজি জার্মানি বা হিটলারের বিরুদ্ধে একটা কথাও শোনা যায় না (এটা কে যেন একজন ঐতিহাসিক পয়েন্ট আউট করেছেন)। তোজো, হিটলার - খুবই ভয়াবহ কুসঙ্গ।
    ওয়ার ক্রিমিনাল না হলে কোলাবরেটর হিসেবে তো গন্য হতেনই।

    অন্যদিকে, আজ এতবছর পর নেতাজীর যা ভাবমূর্তি, ঐসময়, এক প্রায় সমসাময়িক রাজনীতিবিদ হিসেবে একই ভাবমূর্তি ছিল কিনা তা জানি না। আর শুধু বাঙালীদের নেতাজী আবেগ দিয়ে তো হবে না, তাও আবার ভাঙা বাংলা। সদ্য স্বাধীন ভাঙা দেশের হাজার ঝামেলায় নেতাজীকে নিয়ে দেশের বৃহত্তর অংশে কেমন কী হত তা ভাবার অবকাশ আছে।

    ব্যক্তিগতভাবে আমি নেতাজী বিমান দুর্ঘটনার পরেও বেঁচে ছিলেন বা থাকলেও নিজে সিদ্ধান্ত নেওয়ার বা দর্শন দেওয়ার অবস্থায় ছিলেন এমন কিছু বিশ্বাস করার কোন কারন দেখি না। আমার ধারনা উনি খুবই সাহসী ও ডেয়ারডেভিল ধরনের লোক ছিলেন, বৃটিশ তথা মিত্রশক্তির হাতে আটক হওয়ার ভয়ে সাধু সেজে ঘাপটি মেরে হিমালয়ে বসে থাকবেন - এটা ঠিক হজম হয় না।
  • &/ | 107.77.237.218 | ০৭ অক্টোবর ২০২৩ ০১:২৮524358
  • যিনি প্রকাশিত হলে ভারত- রাশিয়া অক্ষ দুনিয়া জয় করতে পারত বলে বলা হচ্ছে (এই লেখায়) ,তাঁকে লুকিয়ে রাখবেই বা কেন রাশিয়া ? কেমন ঘেঁটে যাচ্ছে না ?
  • british propaganda leaflet | 93.125.114.16 | ০৭ অক্টোবর ২০২৩ ০১:৩১524359
  • 'Quisling Son of India'. British propaganda leaflet aimed at Indian National Army soldiers showing a 'traitorous' Subhas Chandra Bose delivering India to a bloodthirsty Japan. (circa 1941-44)
     
    r/IndianHistory - India: 'Quisling Son of India'. British propaganda leaflet aimed at Indian National Army soldiers showing a 'traitorous' Subhas Chandra Bose delivering India to a bloodthirsty Japan. How many INA soldiers were familiar with Vidkun Quisling? C.1941-44.
  • dc | 2401:4900:1cd1:89ff:4929:bfaa:23fb:f682 | ০৭ অক্টোবর ২০২৩ ০১:৫১524360
  • "বৃটিশ তথা মিত্রশক্তির হাতে আটক হওয়ার ভয়ে সাধু সেজে ঘাপটি মেরে হিমালয়ে বসে থাকবেন - এটা ঠিক হজম হয় না"
     
    আমিও এটাই বলতে চাইছি। ব্রিটিশরা বা নেহরু শাস্তি দেবে, এই ভয়ে ঘাপটি মেরে লুকিয়ে বসে থাকার মতো লোক ছিলেন না বলে মনে হয়না। তাছাড়া পাবলিক ট্রায়াল হলে জনমত ওনার দিকে যেতেও পারে, বা নেহরু সরকার ক্ষমা করতে বাধ্য হতে পারে, এসব বোঝার মতো রাজনৈতিক বিচক্ষণতাও ওনার ছিলো। বিনা কারনে লুকিয়ে বসে থাকবেন কেন? 
  • dc | 2401:4900:1cd1:89ff:4929:bfaa:23fb:f682 | ০৭ অক্টোবর ২০২৩ ০১:৫৬524361
  • অতোই যদি শাস্তির ভয় থ্হকতো তাহলে তো ইন্ডিয়া থেকে জার্মানি অবধি যেতেনই না! কলকাতাতেই বসে থাকতে পারতেন। 
  • r2h | 192.139.20.199 | ০৭ অক্টোবর ২০২৩ ০২:০৩524362
  • হ্যাঁ, সেটাই। শাস্তির ভয়ে লুকিয়ে থাকা, এটা মেলে না।
  • &/ | 107.77.237.218 | ০৭ অক্টোবর ২০২৩ ০৩:০০524363
  • হুতেন্দ্র, দুজন ফর্সা লোকের মাঝে যে হাসিখুশি বৃদ্ধ ,তাঁর পরিচয় কি জানা গেছে ? বা ওই ফর্সা লোকেদের ? ওদের চেপে ধরলেই তো তাহলে নেতাজী ছিলেন কিনা সেটা ....
  • র২হ | 96.230.209.161 | ০৭ অক্টোবর ২০২৩ ০৩:১৪524364
  • কী জানি, আমি ওই গুগল টুগল করে পেলাম আরকি। যাঁরা পড়াশুনো গবেষণা এসব করেছেন তাঁদের জানা উচিত - একটা আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মিটিঙে কেউ চেনে না এমন লোক ঢুকতে পারেন কিনা!
  • lcm | ০৭ অক্টোবর ২০২৩ ০৩:১৮524365
  • লালবাহাদুর শাস্ত্রীর সঙ্গে ছবিতে ঐ ভদ্রলোক নেতাজি কিনা জানি না, তবে শাস্ত্রীজির পিছনে বাঁ দিক থেকে মুখ বেরিয়ে আছে - উনি যে অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানিয়ে আমার কোন সন্দেহ নেই।   
  • র২হ | 96.230.209.161 | ০৭ অক্টোবর ২০২৩ ০৪:০২524366
  • র২হ | 96.230.209.161 | ০৭ অক্টোবর ২০২৩ ০৪:০৩524367
  • ঃD
  • &/ | 107.77.237.218 | ০৭ অক্টোবর ২০২৩ ০৪:১১524368
  • মাফলার দেখে বলছেন ? :)
  • Amit | 120.22.135.142 | ০৭ অক্টোবর ২০২৩ ০৪:২৯524369
  • যেনাকে নেতাজি বলা হচ্ছে সেটার সঙ্গে আমার স্কুলের এক টিচার এর হুবহু মিল। এখন একটু বুড়ো হয়ে গ্যাছেন। নাহলে  সিজিতদা প্রসেনজিৎ এর ​​​​​​​বদলে ​​​​​​​ওনাকে ​​​​​​​ধরে ​​​​​​​গুমনামী ​​​​​​​বানাতেন। 
     
    না। ​​​​​​​সিরিয়াসলি ​​​​​​​এরকম ​​​​​​​নমুনা ​​​​​​​কে ​​​​​​​বিজ্ঞানসম্মত ​​​​​​​প্রমান ​​​​​​​ধরতে ​​​​​​​গেলে জ্যাবনে চাপ আছে। 
     
    :) 
  • &/ | 107.77.237.218 | ০৭ অক্টোবর ২০২৩ ০৪:৪২524370
  • আমার এক ঘনিষ্ঠ আত্মীয়কে পাড়ার ছেলেছোকরারা নেতাজীকাকু বলে ডাকত। মাথায় টাক আর চোখে চশমা ছাড়া আমি তো আর মিল পাইনি। তবে সাদা পাঞ্জাবি ধুতি পরতেন প্রায়ই কিন্তু  সে তো অনেকেই তখন পরতেন  
  • :|: | 174.251.161.181 | ০৭ অক্টোবর ২০২৩ ০৪:৫৯524373
  • এক সময়ে ক্লাশে সুভাষ নামক এক সহপাঠী ছিলো। তার পাশে কেউ চট করে বসতে চাইতোনা। কারণ সেদিনের জন্য পাশে বসা ছাত্রটির নাম হয়ে যাবে নেতাজী। এই দুটিই পাশাপাশি বসে কিনা! 
    বাদ্যও নেতাজি কোনটি সাজিয়াছিলেন আর কোনটি হইয়াছিলেন সে বিষয়ে কী রায় বেরোলো জানতে মঞ্চায়। 
  • taskhent man | 195.154.215.112 | ০৭ অক্টোবর ২০২৩ ০৫:০৪524374
  • গুরুর সবজান্তা পোঙা পন্ডিতগণ তাচ্ছিল্য করলেও একজন নিরপেক্ষ ব্রিটিশ ফরেনসিক এক্সপার্ট তাসখন্দের ছবি ও ভিডিও আধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পরীক্ষা করে ৬২ পাতার রিপোর্ট দিয়েছেন ইনিই নেতাজি। সেসব অবিশ্যি এরা জানেও না মানেও না। ফুটোপন্ডিতিই সার!
     
    KOLKATA: In the first ever visual evidence of Subhas Bose two decades after he was declared dead in an alleged plane crash, Netaji researchers have produced a forensic face-mapping report by a British expert that has found strong resemblance between Bose and a man photographed with former PM Lal Bahadur Shastri during the Indo-Pak peace talks in Tashkent in 1966. 
     
    According to Neil Miller, who has presented expert opinion in cases at UK high courts and the International Court of Justice in Hague, the face mapping of the mystery man seen in the Tashkent “lends support leaning on strong support to the contention that the person seen in the picture and Subhas Chandra Bose are one and the same person”. 
     
    The forensic face mapping was commissioned by former Mission Netaji member and Dutch national of Indian origin Siddhartha Satbhai. The 36-year-old software professional, who had earlier highlighted the ‘Paris Man’ (an unidentified bearded man resembling Bose posing as a journalist in a group photo taken in Paris on January 25, 1969 during the Vietnam peace talks between the US and North Vietnam), sourced photographs and video footage from a variety of sources — British Pathe Online video archive, Topham Picture Point in UK’s Kent, RIA Novosti in Russia and Chughtai Museum in Pakistan’s Lahore as well as from the Anonymous Group—and had them analyzed by Miller.
     
    Face-mapping reveals Netaji Subhas Chandra Bose may have been with Lal Bahadur Shastri at Tashkent in 1966
     
    Miller examined the evidence for a month and then submitted a 62-page report last month, wherein he noted that there were noticeable similarities in the facial features of the two men, including ears, eyes, forehead, nose, lips and chin. The differences, like the hairline, could be attributed to image quality , capture angles, and items such as glasses and clothing that mask certain areas.

    "Serious consideration must be given to the conten tion that the Tashkent Man (TM) and Subhas Chandra Bose (SCB) share very similar facial features and could potentially be one and the same person. In a level of support scale, the imagery -both still and moving -lends support, leaning towards strong support, to the contention that TM and SCB are one and the same person," Miller noted in the report.
     
    The confirmation could have been stronger had the resolution of the photographs and video footage been better. In all the cases, TM appears behind others and, therefore, at a distance from cameras.
    Researchers and Netaji followers in Kolkata helped Satbhai raise £800 to pay Miller's fee. Though they had initially tried to rope in an Indian expert, no one was willing to take it up. They then turned to an international expert, convinced that the report would be more credible with the examination free of bias.
     
    Once the report arrived, they followed it up with RTI applications to the ministry of external affairs inquiring about the identity of TM.The government initially did not send a reply and then referred the matter to different desks, which said they had no information.
     
  • lcm | ০৭ অক্টোবর ২০২৩ ০৬:৩৬524375
  • ২০১৫ সালের খবর, বেসিক্যালি বলছে - ".. share very similar facial features..."
    দুটো মানুষের ফেসিয়াল ফিচার একই রকম হতেই পারে।
    তবে, ৮০০ পাউন্ড দিয়ে ৬২ পাতার রিপোর্ট লিখিয়েছে, এটা হেব্বি ডিল পেয়েছিল। নিল মিলার দেখ্লাম, ফ্রড এক্সামিনার, ফিজিক্যাল এডুকেশন +আইটি তে কলেজে ডিগ্রি - এটাও হেব্বি কম্বিনেশন, https://www.linkedin.com/in/neilsmiller10/
    জয়গুরু!
  • Amit | 163.116.192.114 | ০৭ অক্টোবর ২০২৩ ০৬:৫৬524376
  • অনেক মিসিং লিংক আছে - শুধু একখান ছবি দিয়ে হয়না ভাই সকল। নেতাজি রাশিয়াতে যেখানে ইন্ডিয়ার প্রধান মন্ত্রী শাস্ত্রী + পাক পিএম + রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ফরেন মিনিস্টার থেকে  গোটা দুনিয়ার মিডিয়া সবাই  যেখানে হাজির , এমন রীতিমতো হাই প্রোফাইল  শান্তি চুক্তি র মিটিং এ , দিব্যি সমস্ত সিকিউরিটি প্রোটোকল কাটিয়ে সশরীরে হটাৎ করে হাজির হয়ে গ্যালেন আর দিব্যি সব্বার সাথে ঠেলা ঠেলি করে ঢুকে একখান হাই প্রোফাইল গ্রূপ ছবিও তুলে ফেললেন ? 
     
    আর কেউ সেখানে তাকে চিনতে পারলো না- আলাপ করতে পারলোনা- বাকীদের সাথে ইন্ট্রো করাতে পারলোনা- গ্রূপ ছবিতে তিনি কেন ঢুকে গ্যালেন জিগালো না , তিনি পান ভোজন কিছু করলেন কিনা তার কোনো খবর নেই- ইন্ডিয়ান এমব্যাসির এতো গুচ্ছ গুচ্ছ লোক যেখানে থাকার কথা (সবাই ১০০-% নেহরু র গুপ্তচর এটা একটু কষ্ট কল্পনা আর কি) , তাঁদের মধ্যে অন্তত একজনকেও কোথাও খুঁজে পাওয়া গেলোনা তার সাথে সেখানে আলাপ করতে পেরেছেন ? আর কোথাও নাহোক অন্তত ১৯৭৭ এ মোরারজি সরকার আসার পরে তো তাদের কেউ মুখ খুলতে পারতো ? 
     
    তিনি মিটিং এ কেন এলেন ? কোন অধিকারে এলেন ? সিকিউরিটি প্রোটোকল কিভাবে তাকে ঢুকতে দিলো ? কার সাথে এলেন , কার সাথে গ্যালেন সেসবের কোথাও কোনো খবর নেই ? আর শাস্ত্রীজির মতো হাই-ইন্টিগ্রিটি র লোক যিনি এককথায় মিনিস্ট্রি ছেড়ে দ্যান , তিনি এমন একটা গুপ্ত তথ্য যেটার বিশাল সরকারি ইম্পর্টেন্স আছে - তিনি আর সবাইকে ছেড়ে শুধু নিজের ফ্যামিলিকে ফোনে বলতে গেলেন ? তেনার এমন ফ্যামিলি নেপোটিজম এর অন্য নমুনা আছে আর কোথাও ? 
     
    নাকি নেতাজি চলমান অশরীরী ? কেবল ছবি তোলার সময় প্রকট হলেন - তাপ্পর ভ্যানিশ ? কেবল একখান  ব্ল্যাক & হোয়াইট ছবি দেখে একজন তথাকথিত এক্সপার্ট (???) এর ওপিনিয়ন ই ভরসা ?
  • &/ | 107.77.237.218 | ০৭ অক্টোবর ২০২৩ ০৭:০৪524377
  • 'তারে ধরি ধরি মনে করি ধরিতে পারি না' ---মনে হয় ওই মিটিং এর লোকেরা গাইছিলেন নিজ নিজ ভাষায় । ফটোতে দেখা গেল এদিকে কেউ মুখোমুখি দেখলে না !!!
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ক্যাবাত বা দুচ্ছাই মতামত দিন