এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • টুকরো কথা : আমি ও গুরু

    MoRa মড়া লেখকের গ্রাহক হোন
    ০৪ অক্টোবর ২০২৩ | ৩০৬ বার পঠিত
  • গুরু সম্বন্ধে জেনেছিলাম ২০২২ এর এক্কেরে শেষের দিকে। তাও যোগ দিতে ২০২৩ পৌঁছে গেছিল। আরে সময় এত তাড়াতাড়ি দৌড়ায় কি বলবো! পায়ে পা মিলিয়ে চলার তো দুষ্কর। অবশ্য এত দেরি হওয়ার কারণ অবশ্যই আমার কুঁড়েমি। তারপর নিয়মিত না হোক কখনো সখনো এসে হরিদাস পালদের লেখ্য গুলো গিলতে চেষ্টা করতাম, অবশ্য হজম হয়নি কখনো, তা বলাই বাহুল্য।
    লিখালিখির বাজে অভ্যেস ছোটবেলা থেকেই ছিল, তবু গুরু-তে, মানে বুঝছেন গুরু-তে লিখালিখি করার কথা কখনো ভুলেও মাথায় নিয়ে আসিনি। একে তো নিজের লেখা নিজেকেই পড়ে ভালো লাগে না, তায় আবার গুরুর মত সাইটে..! নেভার..! আমি বরং বেশি করে জোর দিয়ে লেগে পড়লাম বুলবুলভাজা চিবোতে।
    তবে সেপ্টেম্বর এর শেষে আমার অনেক পুরনো একটা লেখা ড্রাফট থেকে তুলে সংশোধনের চেষ্টা করছি, করছি তো করছিই... তাও তিনদিন। তারপর নিজের লেখা পড়ে নিজেরই চোখ কপালে..! নাহ্! যুগান্তকারী কিছু তো লিখতে পারিনি, তবে যুগান্তকারী লেখকের ভাষা ব্যবহারের ইস্টাইল ছাপতে গিয়ে যা গজঘন্ট করে ফেলেছি, তাতেই গর্বে বুক পনেরো হাত।
    এরপর আর ভাববার সময় নিইনি, ফটাস করে গুরুতে ঢুকেই খেরোর খাতায় ছেপে, দিলাম টিপে - জমা দিন। ব্যাস!
    পরের দিনটা একটু ব্যস্ততায় কাটলো, তা নিয়ে পড়ে কথা বলা যাবে বরং। তারও পরের দিন সকালে গুরুর কথার আর আমার গরুর কথা মনে পড়লো, কি জানি কতটা চরতে পেরেছে..! অনতিবিলম্বে, তাও ধরুন ঘন্টা চারেক পর ঢুকে পড়লাম গুরুর অন্তর্জালে। খেরোর খাতা - খুলতেই চোখ ঠিকরে মেঝেতে গিয়ে পড়লো। তা অবশ্য নিজেকে সামলে নিতে বেশি দেরি হলনা। 
    ইন্টারনেট এর গ্লিচের খুব পুরনো সম্পর্ক। আমার জন্মের অনেক আগে থেকেই। যেমন আমার বাবা-মার। যেমন আদা-কাঁচকলার। গুরুতেও এমন হওয়া অস্বাভাবিক কিছুই নয়। এটাই স্বাভাবিক। 
    আমার লেখা ১০০ বার লোকে পড়বে, এটা ভাবার চেয়ে আমার সাথে আমার ক্রাশের বিয়ে হয়ে গেছে, এটা ভাবা অনেক সহজ। অনেকবার রিফ্রেশ করার পরও ফোনটাকে বিমান মোডে পাঠিয়ে আবার চেষ্টা করলাম, যদি আসল সত্যটা অনুসন্ধান করতে পারি। 
    হঠাৎ করেই কিছুক্ষন আগে দেখা সংখ্যাটা পাল্টে গেলো, তবে কমলো না, যেমনটা হওয়া উচিত ছিল, বরং দু ধাপ লাফিয়ে বেড়ে গেল ।
    আমি আরো ঘন্টা খানেক বিরতি নিলাম। অতঃপর বুঝতে পারলাম, ইহা সত্য। এবং আদতেই এমন ঘটেছে।
    কিন্তু এত সহজে আমি স্বীকার করে নেওয়ার বান্দা নই। বাংলা সিনেমার মিঠুন চক্কত্তি-কে সেই কবে ছোটবেলা থেকে দেখে এটুকু শিখেছি, সাড়ে সতেরো হাজার ভিলেন একসাথে গুলি চালাতে থাকলেও একটা একটাকার কয়েন ঘিরে বেঁচে থাকা সম্ভব। 
    অতঃপর আমাকে একটা হেস্তনেস্ত করতেই হবে। হয়তো আমি স্বপ্ন দেখছি, নয়তো আমি পাগল হয়ে গেছি। পাগল হওয়ার ব্যাপারটা সহজেই নাকচ করা যায়, কারণ এখনো আমার প্রাক্তন কে আমি মনে প্রাণে ভালোবাসি। তবুও টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন বলে একটা ব্যাপার থাকে, তাই নিজের মনকে মানাতে দুবার ওর নাম চিৎকার করে ডাকলাম। কেউ শুনলো না, না শোনারই কথা, তার বিয়ে হয়ে গেছে, এখন ওরা বিদেশে।
    এবার তবে প্রথম অপশন-টাই বাকি। এবং এখন আমি পুরোটাই নিশ্চিত যে আমি স্বপ্ন দেখছি। তবু চেক করে নেওয়া উচিত। যেমন ভাবা তেমন কাজ। আধা সের ওজনের ঘুষি পাকিয়ে নিজেই নিজের নাকে দিলাম এক সাউথ সিনেমার ঘুঁষি। এই ঘুঁষি-তে তেইশ হাজার গুন্ডা উড়ে গিয়ে বাংলাদেশে গিয়ে পড়ত আরামসে। দুচ্ছাই! কেউ একটা চান্স দিল না হিরো হতে। 
    তবে দিলাম তো ঘুঁষি, ভেবেছিলাম নির্ঘাত ঘুম ভেঙে খাটে জেগে উঠবো, কিন্তু আচমকা ঘুঁষি খেয়ে পড়লাম পিছনে উল্টে, মাথা গিয়ে লাগলো মেঝেতে।
    এখন আমি হাসপাতাল নামক মিনি-স্বর্গে আছি, দুদিন হলো। এ নিয়ে পরে কোনোদিন বিস্তারিত আড্ডা দেওয়া যাবে। তবে হাসপাতালকে স্বর্গ বলার কারণ কিছু অবশ্য নেই। শুধু যা আমার নার্সটি বড় মিষ্টি। আজ একটু ফ্লার্ট করতেই ইঞ্জেকশন এর পর ফুঁ দিয়ে ব্যাথা করছে কিনা জানতে চাইলো। 
    আমি ভালো আছি। আর মনে তো হচ্ছে আমার নার্স যিনি আছেন উনি আমাকে সুস্থ করেও তুলবেন। তবে কোথাও একটু দুর্বলতা থেকেই যাবে মনে হয়। সেক্ষেত্রে আমার পরিবারের বড়দের মাথা গলানোর জন্য উস্কে দিতেই হবে। থাক, আর মোবাইল না ঘেঁটে আমার নার্সের কথা ভাবাই এই মুহূর্তে সুখকর হবে বলে মনে হয়।
    গুরু-কে অসংখ্য ধন্যবাদ।
    ঋণী রইলাম।
    বি: দ্র: 
    ১. গতকাল একজন তান্ত্রিক এসে ছিলেন। যাওয়ার সময় বললেন আমাকে নাকি ভূতে পেয়েছে। অবশ্য ভূতে তো পেয়েছে, কিন্তু সেক্ষেত্রে আমার পিতা-মাতা যদি তান্ত্রিক না এনে পুরোহিত নিয়ে আসতেন তবে উপাচার হয়েই যেত।
    ২. এখান থেকে বাড়ি গেলেই নাকি আমাকে কোথাও নিয়ে যাওয়া হবে। কলকাতার কে একজন প্রফেসর। আমি আজ ওনার নাম গুগলে সার্চ করে জানলাম উনি একজন সাইকোথেরাপিষ্ট।
     
    MoRa মড়া

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • ং: | 182.160.100.45 | ০৪ অক্টোবর ২০২৩ ১৪:২৯524241
  • এই সাইটের একমাত্র প্রাপ্তি হলো প্রচুর গাঁজার ধোঁয়ায় সৃষ্ট লেখা পাওয়া যায় যা লেখক বা লেখকেরা নিজেরাও believe করেন না বোধ করি। আর নার্সের ফুঁ দেয়াটা তার পেশাগত কাজেরও অংশ হতে পারে এবং নার্সকেও ফুঁ দেবারও অন্য কেউ বা কারাও থাকতে পারে। নতুন নার্স বা নার্সদের পেশাগত দক্ষতাও কম হতে পারে। সেক্ষেত্রে পুরণো নার্সদের তত্ত্বাবধানেই রোগীর জন্য থাকা অধিকতর স্বাস্থ্যকর বলে মনে হয়। বিশেষত: যেহেতু তাঁদের পক্ষেই রোগীর যাবতীয় কেস-হিস্ট্রি এবং তার খুঁটি-নাটি সবকিছু জানা সম্ভব। :)
  • MoRa মড়া | ০৪ অক্টোবর ২০২৩ ১৭:০৭524248
  • উপরিউক্ত মন্তব্য পড়ে আমিও এখন বুঝতে পারছি যে লেখক বা লেখকেরা এই সাইটের গুপ্তধন হোন বা নাই হোন, এই সাইটের মহৎ প্রাপ্তি হলো খৈনি টিপ দিয়ে আখাম্বা সিরিয়াসনেস পেছনে গুঁজে দিতে ব্যস্ত পাঠক নামক ব্যা: শ্রেণীর মানুষরা, যারা sarcasm বুঝতে না পেরে অযথা গাঁজার নামে কলঙ্ক রটাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। যাবতীয় কেস হিস্ট্রি ফলো করলে ব্যা: শ্রেণীর এইসব মানুষদের মুখ লুকোনোর জায়গা পাওয়াও দুষ্কর হয়ে উঠবে। তখন নিজের সিরিঞ্জ নিজেকেই ফুঁ দিয়ে বাঁচতে হবে এটুকুও বুঝে উঠতে নাকানিচুবানি খেতে হবে এদের। devil
  • ং: | 182.160.100.45 | ০৫ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:১৬524296
  • না- না- আমারই ভুল হয়েছে। ’গাঁজা’ অত্যন্ত ভাল ও উপকারী এক ধরণের হার্ব। ভুল বা অন্যায়ের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা গেল। আচ্ছা...আপনার জন্য একটি ছোট্ট ক্যুইজ। ভারতীয় পুরাণে শিব যেমন গাঁজা-সিদ্ধি-ভাং-চরস ভালবাসেন, পশ্চিমা পুরাণের কোন্ চরিত্রটি পপি ফুলের বীজ খেতে ভালবাসতেন? পপি ফুলের বীজেও নেশা হয়। ক্যুইজটা কি পারবেন? কি মনে হয়? 
     
    এরপরে ভাই/বোন- (মানে আপনি বোনও ত’ হতে পারেন। ভাই-ই যে তার নিশ্চয়তা কি?) -আর আপনাদের এখানে একটিও কথা নয়। তুশ্চু সব বিষয়ে আপনারা সাত সমুদ্র ছেঁচে একাকার করেন। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঠিক অথবা ভুল মতামত দিন