এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • আমার কথা ও গল্পগাছা

    Mousumi Banerjee লেখকের গ্রাহক হোন
    ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ৩২৭ বার পঠিত
  • পর্ব ২
    বেনারস পর্ব ২
     
    ভীড় রাস্তা, যানজট পার করে রামাপুর লাকসা রোডে রামকৃষ্ণ মিশনের গেস্ট হাউসে এসে পৌঁছলাম। গেটের উপরে লেখা দেখে মন পৌঁছিয়ে গেল গত শতাব্দীর শুরুতে। ১৯০০ সালের কথা। স্বামী বিবেকানন্দের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনজন তরুণ শ্রী চারুচন্দ্র দাস (পরবর্তীতে স্বামী শুভানন্দ), শ্রী কেদারনাথ মৌলিক (স্বামী অচলানন্দ) ও যামিনী রঞ্জন মজুমদার কোনোওরকমে 'চার আনা' যোগাড় করে শুরু করেছিলেন 'দরিদ্র জনের সেবার্থে এই সেবাশ্রম' 'জীব জ্ঞানে শিব সেবা' র আদর্শ রূপদান এর প্রচেষ্টায়। প্রথমে শুরু হয়েছিল কাশীর জঙ্গমবাড়ি এলাকায় ছোট একটি ভাড়া বাড়িতে ডিসপেনসারি করে। পরে ১৯০১ সালে রামাপুরে একটি বড় বাড়িতে সেবাশ্রমের ঠিকানা হয়। ১৯০২ সালে স্বামী বিবেকানন্দ এই দরিদ্র, দৃঢ়প্রতিজ্ঞ যুবকদের কর্মকাণ্ডে অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছিলেন । তাঁর নির্দেশে এই হাসপাতালের নাম রামকৃষ্ণ মিশন সেবাপ্রতিষ্ঠান বা Ramakrishna Mission Home of Service নামে পরিচয় লাভ করে। এই প্রতিষ্ঠানের সাহায্যার্থে স্বামীজী নিজেই সেই সময় আর্থিক সাহায্যের আবেদন জানিয়েছিলেন।স্বামীজীর দেহাবসানের পর ভগিনী নিবেদিতাও এই হাসপাতাল তৈরীর জন্য অর্থ সংগ্রহ সচেষ্ট হয়েছিলেন। ১৯০৬ সালে মিশন শাখার বর্তমান জমিটি কেনা হয়। বেলুড় মঠ ও মিশনের প্রথম অধ্যক্ষ, স্বামী ব্রহ্মানন্দ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। স্বামী বিজ্ঞানানন্দ সমস্ত কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা করেছিলেন। 

    জিনিসপত্র নিয়ে গেটের কাছে আসতেই গেট রক্ষক এগিয়ে এলেন। নিয়মানুযায়ী কাগজপত্রে লেখালেখি শেষ করে লটবহর সমেত পৌঁছলাম অতিথি নিবাসের একটি ঘরে। বেলা তিনটে বেজে গিয়েছে । হাত মুখ ধুয়ে তড়িঘড়ি একবারটি অদ্বৈত আশ্রম মন্দিরে দিব্যত্রয়ীকে দর্শন ও প্রণাম সেরে তীর্থদেবতা শ্রীশ্রী বিশ্বনাথের দর্শনের আশা নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। 

    কাশীর সরু রাস্তা, বিশ্বনাথের গলির কথা কারোরই অজানা নয়। আমারও ছিল না। কিন্তু বেনারস শহর এখন নতুন রূপে সেজে ওঠায় সেসব গলিপথে না গিয়েই শ্রী মন্দিরের মূল ফটকে গিয়ে পৌঁছলাম। লাইনে দাঁড়িয়ে পড়লাম। ভালোই ব্যবস্থা। ঠেলাঠেলি নেই। মোবাইল ফোন জমা করতেই হল। আমার হাত ব্যাগে চিরুনী থাকায় ব্যাগটিকেও জমা করে যেতে হল। রেলিং এর মধ্যে দিয়ে লাইন এগোচ্ছে। থেকে থেকেই 'হর হর মহাদেব' ধ্বনি ভক্তদের মুখে। কি যেন এক ভালোলাগা! ধীরে ধীরে কিছুটা এগিয়ে গিয়েই মন্দির চত্বরে পৌঁছিয়ে গেলাম। চারিদিক তাকিয়ে দেখতে দেখতে মন্দিরের মূল অংশে পৌঁছে গেলাম। ভক্তদের সহায়তায় পুরুষ ও মহিলা মিলে বেশ কয়েকজন প্রহরী প্রহরায় রত। তাঁদের সহযোগিতায় সারিবদ্ধ অবস্থাতে সহজেই জ্যোতির্লিঙ্গের দর্শন হয়েও গেল। দর্শন হল, মন ভরল না। মনে মনে ভাবছি – প্রভু, আজই তো কিছু আগে এসে পৌঁছলাম তোমার দরবারে। দূর থেকেই দর্শন হল তোমারই কৃপায়। হাতে যে কটা দিন আছে যদি কৃপা কর নিশ্চয়ই পূজো ভালো করে দিতে পারব। 

    এবার গেস্ট হাউসে ফেরার পালা। ভোর রাতে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলাম। বেশ ক্লান্তি বোধ হচ্ছে তখন। সন্ধ্যা হয়ে আসছে তখন। বেনারসের রাস্তা আলোয় ঝলমল করছে। এইবার যাব অদ্বৈত আশ্রমের মন্দিরে। যেখানে মন্দির আলো করে বসে আছেন রাজরাজেশ্বর প্রাণপ্রিয় প্রভুদেব, শ্রীরামকৃষ্ণ। সঙ্গে শ্রীশ্রীমা ও স্বামী বিবেকানন্দ। সন্ধ্যারতির সময় হয়ে আসছে। গেট দিয়ে ঢুকতেই কানে এল খণ্ডন -ভববন্ধন .... তাড়াতাড়ি গিয়ে জায়গা নিলাম। পার হয়ে গেল ঘন্টাখানেক সময়। এরপর রাতের খাওয়া সেরে ঘরে গিয়ে হাত, মুখ ধুয়ে বিছানায় যেতেই ঘুমিয়ে পড়তে সময় লাগল না।

    ক্রমশঃ
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
    পর্ব ২
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সৃষ্টিছাড়া | 2405:201:a41e:a049:3c3e:3498:9a1f:90c6 | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২০:৩৬523182
  • এতো আধ্যাত্মিক আঁতলামি! 
  • Mousumi Banerjee | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২০:২১523715
  • @সৃষ্টিছাড়া 
    ধন্যবাদ জানালাম লেখাটি পড়ে মন্তব্য করবার জন্য। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। না ঘাবড়ে প্রতিক্রিয়া দিন