এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • কলতান আর চিউয়িং গাম ১

    Anjan Banerjee লেখকের গ্রাহক হোন
    ২১ জুলাই ২০২৩ | ৩৫১ বার পঠিত | রেটিং ৪.৩ (৩ জন)
  • বসন্ত জাগ্রত দ্বারে। হাল্কা শীত মাখা নরম রোদে চোবানো বাতাস বইছে সকাল থেকে। হাওয়ায় কেমন যেন ছুটির মেজাজ। প্রেরকের আজ কিছুতেই অফিসে যেতে ইচ্ছে করছে না। তিতিরকে বলল, ‘চল কোথাও বেরিয়ে পড়ি ... কি সুন্দর ওয়েদার.... আজ আর অফিস যেতে ইচ্ছে করছে না ...’।

    তিতির কিচেনে কি যেন বানাচ্ছিল। কাজ করতে করতেই বলল, ‘ব্যাস ... বছর পড়তে না পড়তেই বাবুর শুরু হয়ে গেল অফিস কামাই করার হিড়িক। কোথাও যেতে হবে না... একদম অফিস কামাই করবে না বলছি ... বছরের শেষে গিয়ে শোচনীয় অবস্থা হবে ... সব ছুটি খতম। আর্জেন্ট দরকার থাকলেও ছুটি নিতে পারে না... ও : ...’।

    প্রেরক কোন জবাব দিল না। মানে, তর্কাতর্কির মধ্যে গেল না। পাশবালিশ আঁকড়ে শুয়ে থাকল। সে জানে তিতির যতই বকবক করুক আজ আর তাকে অফিসে পাঠানো যাবে না।
    মাস ছয়েক হল বিয়ে হয়েছে ওদের। অনেক টানাপোড়েন, সংঘাত অতিক্রম করে ওরা নতুন জীবনে প্রবেশ করেছে। মনের ভিতর শঙ্কার একটা তিরতিরে স্রোত অবিরত বয়ে যাচ্ছে ঠিকই, তবে নতুন নরম মনোরম একটুখানি আলো এসে পড়েছে ওদের জীবনের চাতালে। প্রেরক সাদামাটা বেসরকারি অফিসের কর্মচারি। সল্টলেকে সেক্টর ফাইভে অফিস। নিষ্প্রভ অফিসে গতানুগতিক লোকজন। বিয়ের পর ইতিউতি অনেকেই শুভেচ্ছা জানিয়েছে। কেউ কোন অস্বস্তিকর বাক্যালাপ করেনি। অসীম পালের মতো দু একজন রসিকজন রাতের ঘুমের ক্ষতি কিভাবে পুষিয়ে নেওয়া যাবে সে ব্যাপারে কিছু সরস পরামর্শ দিলেন। এ দুনিয়ায় সবাই যে সবাইকে আড়চোখে দেখছে এ কথাটা আন্তরিকভাবে অবিশ্বাস করতে ইচ্ছে হল। তিতিরের স্কুল মানকুন্ডুতে। সকাল আটটায় বাড়ি থেকে বেরোয় টিফিনের রুটি তরকারি গুছিয়ে নিয়ে। হাওড়া স্টেশনে গিয়ে নটা পঁচিশের ব্যান্ডেল লোকাল ধরে। তারাসুন্দরী বালিকা বিদ্যালয়ে সাতজন শিক্ষিকা। ক্লাস এইট পর্যন্ত আছে। যাকে বলে আপার প্রাইমারি। এখনকার দুর্নীতির ধামাক্কা আর স্কুল ড্রপ আউটের ডামাডোলের প্রেক্ষিতে দেখলে তারাসুন্দরীর অবস্থা বেশ ঈর্ষনীয় বলতে হবে। প্রায় একশ কুড়ি জন স্টুডেন্ট আছে। বৈশাখী ঘোষদস্তিদার বাংলা আর ইতিহাস পড়ায়। পড়ায় মানে, ওই আর কি ...। দিনগত পাপক্ষয়... কাকে আর পড়াবে, আর কি বা পড়াবে !

    তিতির বৈশাখীর দেবীর থেকে মোটামুটি বছর দশেকের ছোট। ঘটনাক্রমে স্কুলে ঢোকার মুখে গেটের কাছে আজ দুজনের দেখা হয়ে গেল। বৈশাখী দিদিমনি ইঙ্গিতপূর্ণভাবে একগাল হেসে বলল, ‘কি খ...বর! সব ঠিকঠাক চলছে তো?’
    তিতির ঠোঁট টিপে হেসে বলল, ‘ও...ই আর কি ...’
    তবে বৈশাখী ঘোষদস্তিদার মানুষ ভাল। মানে কারো সাতে পাঁচে থাকে না আর কি। কারো পেছনে কাঠি করার কুশলতায় তেমন দড় নয়।

    বৈশাখীদি হাসিমুখে রসালাপ করলেও টিচার্স রুমে ঢোকার পর তিতির একটা অন্য গন্ধ পেল। অনন্যা, সুদেষ্ণাদি এবং আরও দুজন নীচুস্বরে, গম্ভীরমুখে কি যেন আলোচনা করছিল, তিতিরকে ঘরে ঢুকতে দেখে চুপ করে গেল। বৈশাখীদি চাঁচাছোলা ভাষায় বলল, ‘কি হল ... চুপ করে গেলে যে সব... কিসের মিটিং হচ্ছিল... সিক্রেট কিছু নাকি?’
    সুদেষ্ণা দত্ত তাড়াতাড়ি বলল, ‘আরে না না ... মিটিং আবার কি! এমনি কথা বলছিলাম ...’।

    বৈশাখীদি কাঁধের ব্যাগ নামালেন। ছোট্ট একটা রুমাল দিয়ে মুখের, গলার ঘাম মুছতে মুছতে বললেন, ‘ওঃ, আর পারি না... জীবন বেরিয়ে গেল ট্রেনে কি ভিড় ... আর কদ্দিন টানতে পারব না জানিনা ...’

    অনন্যা বলল, ‘আর বোল না .... লেডিজ কামরাতে উঠেও শান্তি নেই ... যা ঝগড়া করে সব, বাপরে!‘মিনিট খানেক সবাই চুপচাপ। বৈশাখীদি তার টিফিনের কৌটোটা বার করে একবার দেখে নিলেন ঠিকঠাক আছে কিনা। সুদেষ্ণা দত্ত হঠাৎ বলল, ‘কাল যা ঝামেলা হল ছুটির সময় ... তুমি আর তিতির চলে যাওয়ার পরে ...’
    – ‘ঝামেলা মানে ? কিসের ঝামেলা ...’, বৈশাখী ঘোষদস্তিদার অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করেন।

    ---- ‘ওই গার্জেনরা এসে চেঁচামেচি করছিল ...মানে, ওই তিতিরের ব্যাপারটা নিয়ে ....’
    --- ‘তিতিরের ব্যাপার! ওর আবার কি ব্যাপার?’
    --- ‘সেটা হেডমিসট্রেস বলবে ... তিতিরকে কালই খুঁজছিল ... ডাকবে বোধহয় প্রেয়ারের পরে ....’

    সুদেষ্ণার কথাটা শেষ হতেই প্রেয়ারের ঘন্টা পড়ল।
    সবাই উঠে দাড়াল বাইরে যাবার জন্য। তিতিরের বুকে অস্বস্তির ধোঁয়া দলা পাকিয়ে উঠতে লাগল।

    প্রধান শিক্ষয়ত্রী তনুশ্রী সেনগুপ্ত যথেষ্ট অনুভূতিশীল। তিতির ঘরে ঢোকার পর উনি বললেন, ‘বস ... বস তিতির ...’। তিতির সন্তর্পণে টেবিলের উল্টোদিকের চেয়ারে বসল একরাশ অস্বস্তি নিয়ে। মিসেস সেনগুপ্ত মাথা নীচু করে দরখাস্ত ধরণের কি একটা কাগজ পড়তে লাগলেন ভুরু কুঁচকে। পড়া শেষ হলে কাগজটা তিতিরের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললেন, ‘নাও .... পড় ... পড়া শেষ হলে মুখ তুলে তিতির তনুশ্রী ম্যাডামের দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইল। ‘কি করব বল ... আমি অসহায় .... কালকে গার্জেনদের একটা গ্রুপ খুব ঝামেলা করে গেছে। আমি অবশ্য স্কুলের সেক্রেটারির কাছে পুরো রিপোর্ট পাঠিয়েছি ... কিন্তু কোন লাভ হবে বলে মনে হয় না। তারও তো কিছু পলিটিক্যাল অবলিগেশান আছে ...’

    ---- ‘কিন্তু দিদি আমি তো এখন পুরোপুরি সুস্থ আছি ... প্রেরক, মানে আমার হাসব্যান্ডও তো ... ’, তিতিরের কথা শেষ হতে দিলেন না তনুশ্রী ম্যাডাম। তিনি বললেন, ‘মানছি ...’। চোখ থেকে চশমাটা খুলে রুমাল দিয়ে মুছতে লাগলেন তনুশ্রীদেবী।
    ---- ‘আসলে সাধারণ মানুষ তো বিশেষ বিজ্ঞান সচেতন নয়। তারা ভয় পায়’। ম্যাডাম চশমাটা আবার নাকের ওপর লাগিয়ে নিলেন। বলতে লাগলেন, ‘ভাবে এটা একটা ছোঁয়াচে রোগ। মাস অ্যাওয়্যারনেস তৈরী হয়নি একেবারেই এটাই মুস্কিল। স্কুল ম্যানেজমেন্ট চিন্তা ভাবনা করছিল তোমার ব্যাপারটা নিয়ে, কিন্তু আলটিমেটলি রিস্ক নিতে পারল না ... রিস্ক আসলে আমরা কেউই নিতে অভ্যস্ত নই ...’। মিসেস সেনগুপ্ত ফাইল খুলে কি একটা কাগজে চোখ ডুবিয়ে বসে রইলেন। তিনি বোধহয় বেশ একটা অস্বস্তির মধ্যে আছেন এবং তিতিরের ব্যাপারটা থেকে সরে যেতে চাইছেন। তিতিরের অনেক কিছু বলার ছিল, কিন্তু এ নিয়ে আর কথা বাড়াতে তার সম্মানে এবং রুচিতে বাঁধল। সে বলল, ‘দিদি... আমার আর কোন ফর্মালিটি নেই তো... আমি যেতে পারি?’
    ----- ‘হ্যাঁ... মানে ... আচ্ছা ... ঠিক আছে ...’

    তিতির আর টিচার্স রুমেও গেল না। ব্যাগ কাঁধেই ছিল। যাকে বলে এক বস্ত্রে বেরিয়ে যাওয়া, অনেকটা সেইভাবে তারাসুন্দরী বালিকা বিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে রাস্তায় গিয়ে দাঁড়াল।

    প্রেরক রাতে বসে বলল, ‘আমার অফিসে তেমন কিছু হয়নি ... অন্তত এখন পর্যন্ত। তুমি চিন্তা কোর না তোমার তো আর ইল্যিগ্যাল অ্যাপয়েন্টমেন্ট হয়নি ... অন্য কোথাও অ্যাপ্লাই কর’

    ---- ‘কিন্তু সেখানেও তো মেডিক্যাল টেস্ট হবে। আর তা'লেই তো ...’, তিতির বলে।

    ----‘হ্যাঁ সেটা ঠিক কথা। কিন্তু লড়াই তো করতেই হবে। এটাই তো আমাদের ভবিতব্য। দেখা যাক কি হয় ...’

    একটু পরে দুজনে ঘুমোতে গেল। মানে, শুয়ে পড়ল। কিন্তু শুলেই কি আর ঘুম আসে। তিতির বলল, ‘ঘুমোলে নাকি?’

    ----’নাঃ ঘুম আসছে না। কি অদ্ভুত জীবন আমাদের ... দুজনের একই ডিজিজ ...’, প্রেরক চিত হয়ে শোয়।
    তিতির প্রেরকের দিকে ফিরে ওকে জড়িয়ে ধরে শোয় ৷ বুকের কাছে মুখ গুঁজে বলে, ‘আমরা দুজনেই এইচ আই ভি পজিটিভ। ভাগ্যের কোন খেলায় যে আমরা দুজনে একসঙ্গে জুড়ে গেলাম ... এখন কি হবে ... ক'দিনই বা বাঁচৰ ! আমরা দুজনই নিজেদের বাড়ি ঘর ছেড়েছুড়ে চলে এলাম কি যে পরিণতি আমাদের ...’। তিতির প্রেরককে নিবিড়ভাবে আঁকড়ে ধরে। প্রেরক তিতিরের পিঠে গভীর স্নেহার্দ হাত বোলাতে থাকে। বলে, ‘পরিণতি কি হবে জানিনা। তবে লড়াই কিন্তু আমরা ছাড়ব না তোমায় বলে রাখলাম তিতির। আমরা কিন্তু লড়াই ছাড়ব না। কি ঠিক তো?

    তিতির চোখ বুজে প্রেরকের বুকে মুখ গুঁজে বলল, ‘হুঁ ...ঠিক ঠিক ....’।

    আজ সকালবেলায় তিতির বলল, ‘চল আজ আমরা গড়ের মাঠে গিয়ে বসে থাকি একটা গাছের তলায়। কেমন ভাল লাগবে দেখ ...’। প্রেরক এক কথায় রাজি।
    ----- ‘চল তাই যাই ......কাজকর্ম শিকেয় তুলে দিলাম .... আজ হোক হেলাফেলা সারা বেলা ......’

    দুজনে ধর্মতলায় নেমে দেখে লোকে লোকারণ্য, হৈ হৈ কান্ড। তিতির বলল,’চল আমরা হাঁটতে হাঁটতে মেয়ো রোডের দিকে যাই। ওখানে গিয়ে এক জায়গায় বসব’।
    ---- ‘হ্যাঁ তাই চল। চল রাস্তা ক্রস করি। রাস্তা পেরোতে গিয়ে আটকে গেল ওরা। এস এন ব্যানার্জি রোড দিয়ে একটা বড়সড় মিছিল এসে হাজির হল। রাস্তা পার হয়ে ওয়াই চ্যানেলের দিকে যাচ্ছে। ওখানে পোডিয়াম থেকে স্লোগান শাউটিং শুরু হল। প্রেরক একজন মধ্যবয়স্ক ভদ্রলোককে জিজ্ঞাসা করল,‘কাদের মিটিং দাদা?’ ভদ্রলোক ব্যস্তভাবে ওয়াই চ্যানেলের দিকে যেতে যেতে বললেন, ‘এগারোটা সংগঠন এক হয়েছে মশায় .... জোর খেলা হবে ... এবার বুঝবে ঠেলা ... ’, ভদ্রলোক দ্রুতবেগে ওদিকে চলে গেলেন। ইস্যুটা ঠিক কি সেটা জানা হল না। কারা ঠেলা বুঝবে সেটাও পরিষ্কার হল না। পর পর পাঁচটা পুলিশের গাড়ি এসে দাঁড়াল। লাঠি আর ঢাল নিয়ে গাড়িগুলো থেকে মাথায় লোহার টুপি পরা পুলিশ বেরোতে লাগল টপাটপ ৷

    জোরালো গলায় এক জন কমবয়সী মেয়ে কাদের যেন তুলোধোনা করে কি সব বলছে। হঠাৎ কিছু লোক কোন দলের কে জানে, চিৎকার করে স্টেজের বক্তৃতা করা মেয়েটাকে গালাগালি দিতে লাগল। ধুন্ধুমার কান্ড বেঁধে গেল এরপর ...
    স্টেজের একপাশে প্রচন্ড চিৎকার চেঁচামেচি হচ্ছে। কারা যেন ওখানে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েছে। কোথা থেকে মেট্রো সিনেমার উল্টো দিকে সার দিয়ে দাঁড় করানো পুলিশভ্যানগুলোর দিকে একটার পর একটা ঢিল এসে পড়তে লাগল ডোরিনা ক্রসিংয়ের দিক থেকে। দশ বারোজন পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকশানে নেমে পড়ল। লাঠি উঁচিয়ে ঢাল বাগিয়ে ছুটে গেল ওই দিকে। মুড়ি মুড়কির মতো ইঁটের টুকরো উড়ে আসছে পুলিশ বাহিনীর দিকে। রাস্তার লোকজন ছোটাছুটি করছে নিরাপদ জায়গায় নিজেদের নিয়ে যাবার জন্য। তিতিরের হাত ধরে প্রেরক কে সি দাসের মোড়ের দিকে ছুট লাগাল।

    গড়ের মাঠে গাছতলায় বসার পরিকল্পনা মাথায় উঠল।
    কেসি দাসের দোকানের সামনে গাড়ি বারান্দার তলায় লোকজন গিজগিজ করছে। তিতির আর প্রেরক কোনরকমে ওই ভিড়ের মধ্যে গিয়ে সেঁধল। সকলেই নিরাপদ কোণে নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চেষ্টায় গুঁতোগুঁতি করছে। এদিকে ওয়াই চ্যানেলের ওদিকটায় হাঙ্গামা কিরকম পাকিয়ে উঠেছে সে ব্যাপারেও জনতার কৌতূহল প্রবল। গন্ডগোল জোরালো আকার ধারণ করল।
    পুলিশ পরপর কটা কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটাল। চারপাশে ভয় আর উত্তেজনা চারিয়ে গেল। গাড়িবারান্দার নীচে ওদিকের উত্তেজনা ও আশঙ্কার ঢেউ লেগে এখানে জমা লোকজনের মধ্যে ঠেলাঠেলি শুরু হল। কার যেন কনুইয়ের গুঁতো লাগল তিতিরের বুকের পাঁজরায়। আচমকা ব্যথা পেয়ে তিতির বলে উঠল, ‘আঃ কি করছেন দেখুন একটু ...’

    পাশের ছাব্বিশ সাতাশ বছরের এক যুবতী লজ্জা পেয়ে উঠল, ‘সরি সরি, এত ধাক্কাধাক্কি হচ্ছে না ...’

    তিতির পাশে মুখ ঘুরিয়ে মেয়েটাকে দেখে অবাক হয়ে গেল।
    ---- ‘আরে চিরশ্রী না? কতদিন পরে ...’

    ---- ‘কি আশ্চর্য .... তিতির তুই!’

    চিরশ্রী তিতিরের স্কুল জীবনের বন্ধু। কলেজের ফার্স্ট ইয়ার পর্যন্ত দুজনের ভালরকমই যোগাযোগ ছিল। তারপর আস্তে আস্তে যোগাযোগ শিথিল হতে শুরু করে নানা কারণে। বছর চারেক ধরে দুজনের কোন দেখা সাক্ষাত নেই। ছিটকে গেছে একে অপরের থেকে। দুজন দুজনের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল বেশ কিছুক্ষণ।

    তিতির বলল, ‘বিয়ে টিয়ে করেছিস নাকি?’

    ----’নাঃ ওসব চক্করে পড়িনি এখনও। পড়ার ইচ্ছেও নেই ...’
    ---- ‘কেন রে .... এত বৈরাগ্য কিসের?’, তিতির হাসিমুখে চিরশ্রীর দিকে তাকিয়ে থাকে।
    ----- ‘আরে না না... ওসব বৈরাগ্য টেরাগ্যে আমি বিশ্বাসী নই। বরং ঠিক উল্টো রাস্তার পথিক আমি .... তা আমাকে যেমনই ভাবিস।’
    ---- ‘মানে?’
    ---- ‘মানে টানে এখন থাক ..... তোর ফোন নাম্বারটা বল.....’, চিরশ্রী বলে।
    ---- ‘হ্যাঁ বলছি ...’

    নাম্বারটা পাবার পর চিরশ্রী বলে, ‘তোকে একটা মিসকল দিচ্ছি, নাম্বারটা সেভ করে নিস’
    ----- ‘ঠিক আছে’
    প্রেরককে দেখিয়ে তিতির বলল, ‘আমার হাসব্যান্ড ...’
    প্রেরক হাতজোড় করে বলল, ‘আসুন একদিন ....’

    ---- ‘হ্যাঁ .... ইচ্ছে রইল ... আপনারাও আসুন না একদিন ... ফোনে সব বলে দেব ...’

    ভিড়ের মধ্যে গুঁতোগুঁতি করতে করতে ওরা কথাবার্তা চালাচ্ছিল। ওদিকে ওয়াই চ্যানেল, ডোরিনা ক্রসিংয়ের কাছে পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ। ধর্মতলার মোড়েও অনেক পুলিশ।

    সে যাই হোক, পরিস্থিতি আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হতে লাগল। ওয়াই চ্যানেলের মিটিং এর পরে আর তেমন জমল না। যদিও স্টেজের সামনে অন্তত শ দুয়েক লোক কোথাও নড়েনি। এত বিপজ্জনক পরিবেশের মধ্যেও অনড় হয়ে দাঁড়িয়ে বা বসে রইল প্রতিবাদে অনড় হয়ে।
    একটু পরে গাড়িবারান্দার তলা থেকে তিরতির করে মানুষ বেরিয়ে রাস্তায় ছড়িয়ে পড়তে লাগল।

    চিরশ্রী বলল, ‘আজ তাহলে আমি আসি তিতির। অনেক কাজ পড়ে আছে। ফোন করিস। আসি দাদা......’, প্রেরকের দিকে তাকিয়ে হেসে বলল।
    ও চলে যাবার পরে তিতিরের খেয়াল হল চিরশ্রীকে কিছুই তো জিজ্ঞাসা করা হল না। ও কোথায় থাকে, কি করে, ওর মা বাবা কেমন আছে কিছুই জানা হল না। ভাবল, ঠিক আছে, একদিন ফোন করে ওর সঙ্গে ভাল করে কথা বলতে হবে।

    প্রেরক আর তিতির কৌতূহলবশত ওয়াই চ্যানেলে গিয়ে শ্রোতাদের পিছন দিকে গিয়ে দাঁড়াল। একজন তরুণ বক্তা তাদের কর্মস্থলের দাবিদাওয়া প্রসঙ্গে নানা যুক্তিজাল বিস্তার করছে জোরালো গলায়। এমনভাবে বলছে যে দেশের আর সবাই পরম স্বচ্ছলতার মধ্যে জীবন কাটাচ্ছে, তারাই শুধু সর্বহারা এবং নিপীড়িত। প্রেরক মনে মনে না ভেবে পারল না যে, কমপক্ষে চল্লিশ থেকে ষাট হাজারের মধ্যে এদের মাসিক রোজগার। চাকরি সারা জীবনের জন্য সুরক্ষিত। চাকরি জীবনের পরেও সুরক্ষার বর্ম আছে আমৃত্যু, শুধু তার নয়, পরিবারেরও। প্রেরকের মনে পড়ে গেল, দীপু মাসি মানে, দীপালি কর্মকারের কথা। আউসগ্রামে একটা স্কুলে মিড ডে মিলের খাবার রান্না করে। ডেলি হিসেবে টাকা পায়। সাকুল্যে দেড় হাজার। নো ওয়ার্ক নো পে। আগে বা পরে সুরক্ষার কোন প্রশ্নই নেই। ছুটির দিনে কোন বেতন নেই। আরও মনে পড়ল, কার্তিকপুরের আশাকর্মী সুমিতা মন্ডলের কথা। তার হাল তো আরও খারাপ। তার ওপর কাজের বাইরে গিয়ে নানা ঝুঁকিপূর্ণ কাজে জোর করে ঠেলে দেওয়া হয় প্রায়ই।

    তিতির বলে উঠল, ‘এখানে হাঁ করে দাঁড়িয়ে থেকে কি হবে। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে তো সেই একই কথা ...’
    ---- ‘হ্যাঁ ... সেটাই ভাল ... চল ...’

    *********** ********* ********** ********

    প্রিন্স আনোয়ার শা রোডে সাড়ে আটশো স্কোয়্যার ফুটের ফ্ল্যাট। অনুভবরা থাকে তিনতলায়। অনুভবরা মানে, অনুভব আর তার লিভ ইন পার্টনার শ্রীতমা। দুজনেই চাকরি করে। অনুভব আই টি সেক্টরে, আর শ্রীতমা একটা অ্যাড এজেন্সিতে অ্যাসিস্ট্যান্ট কোঅর্ডিনেটর।

    দুজনেরই বয়স তিরিশের আশেপাশে হবে। দুজনকে দেখে বেশ সাদাসিধে ধরণের বলেই মনে হয়। আবাসনের কারো সঙ্গে খুব ঘনিষ্ঠতা না থাকলেও, কারো সঙ্গেই ওদের সম্পর্ক খারাপ নয়। অনুভব আর শ্রীতমার ডাকনাম হল কিট্টু আর তিখি। দু একজন বন্ধুবান্ধব ছাড়া তাদের এ ফ্ল্যাটে কাউকে আসতে দেখা যায় না ৷ মা বাবা বা কোন আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে এদের যোগাযোগ আছে বলে মনে হয় না। তারা কোথায় থাকে অ্যাপার্টমেন্টের কেউ জানে না। ফাল্গুনের শেষ প্রহর। গরমের আঁচ বাড়ছে আস্তে আস্তে। অনুভব আর শ্রীতমা নীচে নামল। অনুভব শেয়ারের ট্যাক্সি ধরল যাদবপুর যাওয়ার জন্য। শ্রীতমা উল্টো ফুটে গিয়ে দাঁড়াল বিবাদি বাগের মিনিবাস ধরবে বলে।

    ******************************************

    চৈত্র মাস হলে কি হবে মেঘমেদুর বর্ষাভেজা দিন। আজ রবিবার। তিতির ঠিক করেছে আজ খিচুড়ি আর ডিমভাজা বানাবে। সঙ্গে পাঁপড়। কাল এক প্যাকেট বিকানীরের পাঁপড় নিয়ে এসেছে। প্রেরকের খুব পছন্দের মেনু। আজ আর বাজারে যাওয়ার দরকার নেই।

    তিতির বলল,’আজ সকাল থেকে কেমন যেন আনইজি ফিল করছি ... মনে হচ্ছে জ্বর আসবে .... প্রেরক খবরের কাগজ পড়ছিল। কাগজটা মুডে রেখে দিল। বলল,’আমারও শরীরটা ঠিক নেই। এ আর ভি টি টা বন্ধ করা ঠিক হয়নি। আবার চালু করতে করতে হবে ...’

    ---- ‘দুটো তো নেওয়া হয়েছে... আর একটা বাকি। এভাবে আর বাঁচতে ভাল লাগে না .... ‘তিতিরের গলায় বিষণ্ণতা।
    ------ ‘না না এ কথা বোল না। মরার কথা শুনতে আমার ভাল লাগে না। আমরা বাঁচব। ঠিক বাঁচব। একটা উপায় নিশ্চয়ই বেরবে। দেখি ফোন করে ... দেবাশিস দত্তর একটা অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিই ...’
    ----- ‘দেখ’
    প্রেরক ফোন করল ডক্টর দত্তর গিরীশ পার্কের চেম্বারে। সহজেই ডেট পাওয়া গেল। আগামী পরশুদিন সন্ধে সাতটার সময়। ডক্টর দত্তর বয়স বেশী না। পঁয়তাল্লিশের নীচেই হবে। সবচেয়ে বড় গুন হল, উনি তার রুগীদের প্রতি অত্যন্ত সহৃদয় এবং আন্তরিক। তিনি কাউকে ভাবতেই দেন না যে, সে মারা যেতে পারে।

    সে যাই হোক, তিতির বেশ তরিযুত করে খিচুড়ি রান্না করল এবং ওদের দুজনের দিব্যি খাওয়াও হল। কিন্তু খাওয়ার পাঁচ মিনিটের মধ্যে প্রেরক পুরো খাবারটাই বমি করে দিল।
    তিতির তার চোখে মুখে জল দিয়ে, ধরে এনে বিছানায় বসিয়ে দিল। বেশ জ্বর এসেছে মনে হচ্ছে। তিতির উৎকণ্ঠায় অস্থির হয়ে উঠল।

    পাশের ফ্ল্যাটের ভদ্রমহিলা তিতিরদের খুব ভালবাসেন। অত্যন্ত উদার ও সজ্জন মানষ। তিনি এদের কেস হিস্ট্রি জানা সত্ত্বেও এদের প্রতি অত্যন্ত স্নেহপ্রবণ। তিতির উদভ্রান্ত হয়ে তার শরণাপন্ন হল। তিনি সব কাজ ফেলে তড়িঘড়ি এসে হাজির হলেন। প্রেরকের শারীরিক অবস্থা আন্দাজ করে প্রাথমিক ব্যবস্থা হিসেবে ঘর থেকে প্যারাসিটামল ট্যাবলেট এবং অ্যান্টাসিড নিয়ে এলেন। বললেন, ‘অরূপ মিত্রকে একবার দেখিয়ে নিও। সন্ধে সাতটা থেকে নটা পর্যন্ত বসে। নাম লেখাবার দরকার নেই। তোমরা একা একা থাক। ভয় লাগে আমার। মা বাবার সঙ্গে যোগাযোগটা রেখ। আগে যা হয়েছে সব ভুলে যাও। তোমাদের একজনের কিছু হলে আর একজনের কি হবে বল তো....... বড় চিন্তা হয় তোমাদের জন্য।’
    ----- ‘আশীর্বাদ করুন মাসিমা দুজনে যাতে একসঙ্গে যেতে পারি’, তিতির বলল।
    ----- ‘ছিঃ ..... ও কথা বলতে নেই মা .... সব ঠিক হয়ে যাবে। ভদ্রমহিলা একটু পরে — এখন আসি মা .... অনেক কাজ পড়ে আছে ..... দরকার হলে ডেক ..’, বলে চলে গেলেন।

    তিতির বলল, ‘এখন একটু বেটার ফিল করছ ? অরূপ মিত্রকে দেখাতে যাবে নাকি রাত্রে?’
    -----‘আরে না না.... কি হবে ওদের দেখিয়ে? একেবারে দেবাশিস দত্তকেই দেখাব। এই তো পরশুদিন ডেট আছে ...’
    তিতির বলল, ‘কাল থেকে তো আমি বেকার একদম। কি যে করি .....’

    ----- ‘অত ভেব না.... দেখছি কি করা যায় ....'

    ------ ‘কি আর দেখবে ..... আমরা তো আর কিছু
    দিতে টিতে পারব না .....'

    ----- ‘সেটা অবশ্য ঠিক, তবু দেখা যাক .......'

    প্রেরক মাথা নীচু করে কি যেন ভাবতে লাগল। একটু পরে বলল, ‘তোমার তো অনেক বন্ধুবান্ধব আছে .... অনেকেই ওয়েল এস্ট্যাবলিশড ... বলে দেখতে পার...’
    ----- ‘তা দেখতে পারি .... কোন লাভ হবে বলে মনে হয় না। প্রায় সকলেই প্রাইভেট সেক্টরে আছে। ওই যে সেদিন দেখা হল ... চিরশ্রী ... ও আর শ্রীতমা বলে আর একজন একটা রিনাউনড অ্যাড এজেন্সিতে আছে। চিরশ্রীকে বলে দেখতে পারি। ওসব কোম্পানিতে অবশ্য যতদূর জানি মেডিকেল টেডিকেলের ব্যাপার নেই। বলে দেখতে পারি ... তবে কিছু হবে বলে মনে হয় না। রিক্রুটমেন্ট সব জায়গাতেই ওভারস্যাচুরেটেড। আচ্ছা দেখি, চিরশ্রীকে একটা ফোন করি ...’
    -----‘আজ তো সানডে ....’হ্যাঁ করে দেখ’

    ********************************************
    ( চলবে )
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • যোষিতা | ২১ জুলাই ২০২৩ ১৩:৩১521490
  • অসম্ভব ভালো হচ্ছে। দ্বিতীয় পর্ব জলদি চাই।
  • Anjan Banerjee | ২১ জুলাই ২০২৩ ১৪:১০521491
  • যোষিতা,  
     
    ২ নং টা দিয়ে দিয়েছি, এবার ৩ নং দেব । অনেক ধন্যবাদ  আপনাকে ।
  • Mousumi Banerjee | ২৪ জুলাই ২০২৩ ১৭:৪৬521651
  • ভালো লাগল। 
  • বিপ্লব রহমান | ২৫ জুলাই ২০২৩ ০৮:৫০521704
  • "আমরা দুজনেই এইচ আই ভি পজিটিভ। ভাগ্যের কোন খেলায় যে আমরা দুজনে একসঙ্গে জুড়ে গেলাম ..."
     
    বেশি নাটুকে হয়ে গেল না!? 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খারাপ-ভাল প্রতিক্রিয়া দিন