এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • কাদামাটির আধাজীবন 

    সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায় লেখকের গ্রাহক হোন
    ২২ জানুয়ারি ২০২৩ | ৬১৩ বার পঠিত | রেটিং ৪.৫ (৪ জন)
  • ১৯৭৪। দাদা তখন নবম শ্রেণি। হেঁটেই স্কুলে যায়, কারণ সাইকেল পুলিশ কেড়ে নিয়েছে। এস এফ আই করতো। তিনদিনের ছাত্র ধর্মঘট  করতে গেছিল। সস্তায় খাতা আর কেরোসিনের দাবিতে। স্কুলে ধর্মঘট করার অপরাধে সাইকেল কেড়ে নিয়েছে। সেই সাইকেল পরে উদ্ধার হয়। ১৯৭৬-এ। বাবা বলতেন, থানায় যত সিগারেট খাওয়াতে হয়েছে, সাইকেলের দাম তার অর্ধেক।
    পুলিশকে নিয়ে নানা গল্প আছে। ওই সময় এক বড় দারোগা চাকরি করতে আসেন আমাদের থানায়। তিনি নাকি কলেজে ইতিহাসের অধ্যাপক ছিলেন। তোতলামি থাকায় ছেলে মেয়েরা হাসাহাসি করত। চাকরি ছেড়ে দেন। দিয়ে পুলিশে ঢোকেন। দারোগা হন। তাঁকে নিয়ে প্রচুর মজার গল্প ছিল। একবার সিরাজ বলে এক লড়াকু সিপিএম নেতাকে জমির মাঝ বরাবর তিন কিলোমিটার ছুটে ধরে ছিলেন। ধরে, খুব পেটান। সমরবাবু কমিউনিস্টদের দরদী ছিলেন। সিরাজ চাচাকে বলেন, তোদের কাউকে আমি পেটাই না। তোকে রামধোলাই দিচ্ছি। কেন বলত? কেন? সিরাজ চাচার প্রশ্ন। তুই না কমিউনিস্ট। কাঁধে পাইপগান নিয়ে দৌড়ে পালাচ্ছিস। আমাকে একটা গুলি করতে পারলি না।
    তো, সমরবাবু তল্লাশিতে এসেছেন। আমাদের শোবার ঘরে তল্লাশি চলছে। আমাদের ঘরে একটা বড় রেডিও ছিল। সেটা দেখিয়ে বললেন, ও পিকিং রেডিও শোনা হয়। পিকিং শব্দটি সেই প্রথম কর্ণগোচর। এটা বলেই ঘাঁটতে লাগলেন বই, একটা বই পেয়ে বাকি পুলিশদের আড়াল করে বললেন, এই বাড়িতে এতবড় রেডিও অনেক কিছু পাওয়া যাবে। যাও ভালো করে সার্চ কর। বাকি পুলিশরা বের হয়ে যেতেই একটা লাল রঙের মলাট-ওয়ালা বই জামার বোতাম খুলে ভেতরে ভরে নিলেন। বানান করে পড়ে দেখি, 'রাষ্ট্র ও বিপ্লব'। ভ ই লেনিন। এই বই পেলে তো কেস দিতেই হয়। সমরবাবু আড়াল করলেন বইটিকে।
    এসব মিটল ৭৭ এ। বামফ্রন্ট ক্ষমতায় এল। তখন আলু শীতকালে এক পাল্লা মানে পাঁচ কেজির দাম ১৫ থেকে ২০ পয়সা। মানে, তিন থেকে চার পয়সা কিলো। ১৯৮১তে আলু ৩৫ পয়সা কিলো হওয়ায় কংগ্রেস দেওয়াল লিখলঃ 
    রোগের ওঁচা পচা খোস
    নেতার ওঁচা জ্যোতি বোস।
    সঙ্গে  একটা আলুর ছবি।
    'বিলিতি বেগুন' তখনও টমেটো পদবাচ্য হয় নি, ১০-১৫ পয়সা কিলো। কাঁচা লঙ্কা ফ্রি। পেঁয়াজ কুলীন। বরাবর ২০ পয়সা কিলো। একবার  পেঁয়াজ হয়ে গেল ৪০ পয়সা কেজি। আপেলও তাই। ১৯৮০-৮১তে।
    কংগ্রেস লিখলঃ 
    পেঁয়াজ আপেল একদর
    জ্যোতি প্রমোদ মাতব্বর।
    আমার লেখা না। লিখেছেন ইমানুল হক । গুরুতে বলে দেবার মতো কিছু নেই, কারণ এসব সাইটে বেরিয়েইছে নানা ধাপে। আমি বিভিন্ন প্যারাগ্রাফ এক জায়গায় জুড়ে একটু নেড়েচেড়ে দিলাম মাত্র। যেটা বলার, তা হল, 'কাদামাটির হাফলাইফ' বই হয়ে বেরোচ্ছে এবার বইমেলায়। শহুরে স্মৃতিকথা, বিপ্লব-টিপ্লব তো গুচ্ছের পড়া হল, এবার একটু গেঁয়ো-মেঠো মাটির গন্ধওয়ালা জিনিসপত্র নেড়েচেড়ে দেখা যেতেই পারে।  ভালো লাগবে।
    আর, যাঁরা গুরুর এই বইপ্রকাশের পদ্ধতিটা জানেন, তাঁরা এ-ও নিশ্চয়ই জানেন যে, গুরুর বই বেরোয় সমবায় পদ্ধতিতে। যাঁরা কোনো বই পছন্দ করেন, চান যে বইটি প্রকাশিত হোক—তাঁরা বইয়ের আংশিক অথবা সম্পূর্ণ অর্থভার গ্রহণ করেন। আমরা যাকে বলি দত্তক। এই বইটি যদি কেউ দত্তক নিতে চান, আংশিক বা সম্পূর্ণ, জানাবেন [email protected] এ মেল করে। বা এই লেখার নিচে।                                   
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Indra Mukherjee | ২২ জানুয়ারি ২০২৩ ২১:৩৮515605
  • গুরুচণ্ডালির stall no. কত ?
  • ৫০৭ | 2601:5c0:c280:d900:9773:a2cc:95b:26df | ২২ জানুয়ারি ২০২৩ ২১:৫৪515607
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আদরবাসামূলক মতামত দিন