এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • নারী ও পুরুষঃ

    Amlan Sarkar লেখকের গ্রাহক হোন
    ০৮ মার্চ ২০২২ | ৪৩৬ বার পঠিত | রেটিং ১ (১ জন)
  • "আপন গন্ধে মম কস্তুরী মৃগ সম কোথা দিশা খুঁজে পাইনা"

    'আপন মাংসে হরিণী বৈরী' - বাংলায় প্রচলিত এই শব্দবন্ধটি হরিণ বা হরিণীর বেলায় যতটা প্রযোজ্য ঠিক ততটাই বোধহয় নারীজাতির প্রতিও প্রযোজ্য। আজ এই আন্তর্জাতিক নারী দিবসে এই প্রসঙ্গে দুচারটি কথা এই মুহূর্তে আলোচনা না করে থাকা যাচ্ছে না। 

    সভ্যতার জন্মলগ্ন থেকেই নারীজাতি বা নারী মাংসের প্রতি পুরুষ সমাজের এক অমোঘ লোলুপতা পরিলক্ষিত হয়েছে। পছন্দের নারীকে কুক্ষিগত করার জন্য পুরুষ চিরকালই সবরকম কৌশল অবলম্বন করতে পেছপা হয়নি। অনেক বড় বড় যুদ্ধের মূল কারণ এই চিরন্তন, শাশ্বত নারী। তবে মানুষ যখন অসভ্য ছিল। যখন তারা কাপড় জামা পরার কোন প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করতো না, তখন কিন্তু ব্যাপারটা ঠিক এরকম ছিল না। সেই সময় নারী পুরুষ উলঙ্গ থাকার কারণে তাদের পরস্পর পরস্পরের শরীরের প্রতি কোনো অহেতুক কৌতুহল বা আকর্ষণ তৈরি হওয়ার মত কারণ ছিল না। নিতান্তই জৈবিক তাগিদে তারা মিলিত হতেন এবং বংশ বিস্তার করতেন। পরে সভ্যতার যত বিস্তার ও বিকাশ ঘটেছে, নারী ও পুরুষের মধ্যেও ততই তৈরি হয়েছে এক রহস্যময় দূরত্ব। নারী নিজের ছলা কলা ও বর্ণাঢ্য পরিধানের মধ্যে নিজেকে আবরিত করে নিজেকে পুরুষের চোখে এক অতি আকাঙ্খিত ভোগ্য পণ্যের শামিল করে তুলেছে। নারী যত নিজেকে, নিজের শরীরকে পুরুষের চোখ থেকে আড়াল করার চেষ্টা করে গেছে, পুরুষ ততই তাদেরকে নিজের অংকশায়িনী করার সব রকম প্রয়াস চালিয়ে গেছে। পুরুষের কাছে নারীর চাহিদা দিন দিন বেড়েই গেছে। আকাঙ্খিত নারীকে পাওয়ার জন্য পুরুষ জাতি কোনও রকম পন্থা অবলম্বন করতে পেছপা হয়নি। ইতিহাস প্রসিদ্ধ অনেক বড় বড় যুদ্ধ ঘটে বেছে কোনো এক অতি আকাঙ্খিত নারীকে কেন্দ্র করেই। বড় বড় রাজা ও তাদের রাজত্ব ধ্বংস হওয়ার কেন্দ্রেও আছে বিভিন্ন নারীর ভূমিকা। নারীজাতি কে কেন্দ্র করে ঘটে গেছে পৃথিবীর কুখ্যাততম বিভিন্ন অপরাধ। 

    আপাতদৃষ্টিতে ওপরে বর্ণিত এই সমস্ত ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের মূলেই আছে কোনো না কোনো নারী। তাহলে আজ এই আন্তর্জাতিক নারী দিবসে দাঁড়িয়ে আমরা কি শিক্ষা নেব বা নারী জাতি কে কোন চোখে দেখবো? নিঃসন্দেহে এটি একটি বিতর্কিত বিষয় এবং এই পুরো ব্যাপারটি অত্যন্ত সংবেদনশীল। আসলে সম্পূর্ন বিষয়টাই আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির ওপর নির্ভরশীল। নারী জাতি কে কামনার প্রতিমূর্তি হিসাবে যেমন দেখা যায় তেমনি তাদেরকে তাদের স্নেহশীলতার জন্য মাতৃরূপে কল্পনা করতেও কোনো বাধা নেই। সবটাই দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপার। তবে এই দৃষ্টিভঙ্গি তৈরির পেছনে নারী ও পুরুষ দুই পক্ষেরই সমপর্যায়ের ভূমিকা বিদ্যমান। প্রকৃতিগত ভাবে পুরুষ জাতি একটি টেস্টোটেরণ তাড়িত কামার্ত জীব। ইন্দ্রিয়ের তাড়না কে নিয়ন্ত্রণ করে চলাটা সম্পূর্ন ভাবেই ব্যক্তি বিশেষের ব্যাপার। কেউ নিজের কামনা বাসনার ওপর লাগাম লাগিয়ে নিজেকে সুন্দর ভাবে নিয়ন্ত্রণ করে নিতে পারে আবার কেউ বা নিজেকে গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে নিজস্ব কামনা বাসনার সম্পূর্ন রূপে বশীভূত হয়ে চলা টাকেই শ্রেয় বলে বোধ করে। আবার নারী জাতিকে এ ব্যাপারে সম্পূর্ন রূপে দায় মুক্তও করে দেওয়া যায় না। "আপন মাংসে হরিণী বৈরী"- এই কথার যথার্থতা নারী জাতির থেকে বেশী কেউ বোঝে না। কিন্তু তা সত্ত্বেও নারী জাতি তাদের রূপ যৌবন ও ছলা কলা দিয়ে পুরুষ জাতকে নিজের প্রতি আগুনে ঝাঁপ দিতে যাওয়া পতঙ্গের মত আকর্ষিত করতে কোনো কসর বাকি রাখেনা। 
    আমার এই নিবন্ধের স্বল্প পরিসরের মধ্যে তাই আমরা এখানে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারি যে নারী কে আমরা কামনার প্রতিমূর্তি হিসাবে দেখবো না স্নেহশীলা মাতৃমূর্তির প্রতীক হিসেবে দেখবো তা অনেকাংশেই আমাদের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গির ওপর নির্ভরশীল এবং এর বেশ কিছুটা দায় নারী জাতির চরিত্র ও ব্যবহারের ওপরেও বর্তায়। 

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লড়াকু মতামত দিন