খাড়া পাহাড়ের চূড়ায় একজনই দাঁড়াতে পারেন। সুতরাং যিনি দাঁড়াতে পারেন তাঁর মূল্যায়ন কে করবেন? আর তাঁকে মূল্যায়ন করার সাহসই বা কার হবে?
এই যেমন, একই স্বীকৃতি বিজ্ঞানে আছে, চিকিৎসা শাস্ত্রের আছে, সাহিত্যেও আছে আবার শান্তিতেও আছে। তাঁর সৃষ্টিতে লুকিয়ে আছে এক বিশ্বব্রম্ভাণ্ডের যে সাহিত্য, তার কাছে পৃথিবীর সমস্ত স্বীকৃতি অতি তুচ্ছ। আবার যে স্বীকৃতি শান্তিতে আছে সেই স্বীকৃতি সুরে নেই! কেন নেই, এর উত্তর আমি জানি না!! থাকলে কবীর সুমনের সুরের কাছে নোবেল কমিটির অনেক আগেই নিঃস্ব হয়ে যাবার কথা। আর মূল্যায়ন হলে গ্র্যামি উপাধি ওনার সৃষ্টির কাছে কিছুই না।
আমি জানি, আমি কিচ্ছু জানি না। এই বিষয় নিয়ে বলার মত আমার কোনো ডিগ্রী নেই। কিন্তু এটুকু জানি যাঁদের বলার কথা তাঁরাও বলছেন না! সুতরাং তাঁদের সঙ্গে আমার পার্থক্যটাই বা কোথায়!! আমাদের সবারই জানার থেকে অজানার পরিমাণ সীমাহীন বেশি। কবীরের সৃষ্টিও পৃথিবীর কাছে সীমাহীন বেশি। তাই এমনকি অজান্তেও তাঁরই সৃষ্টি দরকার হবে অন্যান্য সংগীত শিল্পীদের। একদিন আসবেই সমস্ত ক্লাসিকাল শিল্পীদেরও একমাত্র ভরসা এবং একমাত্র উপায় হবে ‘কবীর সুমন’। সে ভোকাল শিল্পীই হন আর যন্ত্রশিল্পীই হন। সেদিনও নতুন নতুন ক্লাসিকাল সংগীত শিল্পীরা নামের আগে ওস্তাদ, পণ্ডিত, বিদূষী উপাধি পাবেন এবং তাঁরাও নামের আগে লিখবেন। কবীর সুমন কিছু পাবেন বলে সৃষ্টি করেন না। উনি বলেন, উনি সংগীতের গোলাম।
কবীর সুমনকে যে স্বীকৃতি এখনো দেওয়া হয়নি সেই স্বীকৃতি সেই কমিটির সবচেয়ে বড়ো ব্যার্থতা। তারচেয়েও অনেক অনেক বেশি সত্য— পৃথিবীর সমস্ত স্বীকৃতি একজন কবীর সুমনের সৃষ্টির কাছে অতি তুচ্ছ।
—সুবিমল