এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • ভগবান সত্য সাঁই - বিশ্বাস এবং যুক্তির উপান্ত

    রাম পুনিয়নি লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ২৩ মে ২০১১ | ৫৬৭ বার পঠিত
  • বাংলায় ভাবানুবাদ- রামকৃষ্ণ ভট্টাচার্য্য

    ২৪ শে এপ্রিল, ২০১১ তে সত্য সাঁই বাবার প্রয়াণ কেবল দেশের নানাপ্রান্তে ছড়িয়ে থাকা তাঁর ভক্তদেরই মধ্যেই নয়, যাঁরা পূর্তাপূর্তি তে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের যাওয়া আসা, খাওয়া দাওয়া প্রভৃতির দেখভাল করেন; হৈ হৈ করে ভজন - গান গেয়ে যান - সবার মধ্যেই এক সংকট তৈরী করে ফেলেছে। দেশে ও বিদেশে তাঁর অসংখ্য ভক্তরা তাঁর প্রয়াণের জন্য শোক পালন করছেন। এঁদের মধ্যে গুরুত্ত্বপূর্ণ রাজনৈতিক এবং ব্যাবসায়ী জগতের লোকজনও প্রচুর।

    ঘটনা হলো- সাঁই বাবার "বিশাল সাম্রাজ্যের' উত্তরাধিকারী কারা হবেন; তাই নিয়ে এখন জোরকদমে আলোচনা চলছে। সন্দেহাতীত ভাবে "ভগবান' সাঁই বাবার অনুগামীর সংখ্যা অসংখ্য এবং সেইজন্য ভগবানের ধন-দৌলত অজস্র আর সেই ধন-দৌলত অন্যান্য অধুনা জাগ্রত ভগবানের থেকে অনেক অনেক বেশী। শেষেরটার ঠিক প্রামাণ্য তথ্য দেওয়া যাবে না। কারণ হিসেবে বলা যায়, এই ধন-দৌলত এর প্রদানকারীরা নিজেরাও ভগবানের লোক, আর ঠিক সেই কারণেই এই সব দানের উৎস জানা যায় না। তাছাড়াও, এই সব পার্থিব জাগতিক দান যাঁরা সত্ত্বত্যাগ করে দিয়েছেন, সেখানে লোকপাল এর মত কোন জিনিস চাপাতে কেউ সাহস করবেন কিনা জানা নেই। বলাই বাহুল্য, ভগবানের লোকেদের এই সব দানের একটা অংশ ঢাক ঢোল পিটিয়ে আম জনতার চোখের সামনে সামাজিক প্রয়োজনে ব্যবহার করা হয়।

    "ভগবানের' জীবন অনেক বিতর্কের মধ্যে দিয়ে পঙ্কলিপ্ত। উনি শূন্য থেকে বিভূতি আর সোনার চেন আনার ব্যাপারে দক্ষ ছিলেন। আগে তিনি এইচ. এমটি ঘড়ি আনতেন, কিন্তু সেই ঘড়িগুলোতে তৈরীর তারিখ লেখা থাকতো বলে, বন্ধ করে দ্যান। যুক্তিবাদীরা তাঁর সঙ্গে অনেকবার মোলাকাত করে বুঝিয়ে দিয়েছেন - এগুলো হাতের কারসাজি। এর স্বপক্ষে মিছিলেরও আয়োজন করে বুঝিয়েছেন, এইগুলো নেহাতই হাতের কৌশলী কারসাজি। এর মধ্যে কোনো অলৌকিক ব্যাপার নেই । স্বনামধন্য যাদুকর পি.সি. সরকার (জুনিয়ার) এই অলৌকিক ব্যাপারের প্রতিদ্বন্দী হতে চেয়েছিলেন। সাঁই বাবাকে শূন্য থেকে কুমড়ো আনার জন্য বলা হয়েছিল, কিন্তু তিনি যুক্তিগ্রাহ্য কারণেই আনতে অস্বীকার করেন।

    এসব সত্ত্বেও অবিচল থেকে, সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকে তাঁর অনুগামীর বা ভক্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়তে থাকে। নিজেকে পুর্নজন্ম নেওয়া সির্দ্দির সাঁই বাবা বলে দাবী করা এই বাবা, অতি-অতি স্বচ্ছল ছিলেন এবং সোনার সিংহাসনে বসতেন। সির্দ্দির সাঁই বাবার ছিল কৃচ্ছসাধনের জীব গাছতলায় - প্রায় অনাহারে দিন কাটত। সম্পদের চূড়াতে বসে থাকা এই স্বঘোষিত পুর্নজন্ম নেওয়া সাঁই বাবা নিজেকে স্বয়ং ভগবান বলেই প্রচার করতেন। ইনি আরও বলেছিলেন, ৯৬ বছরে তিনি তার মরদেহ ত্যাগ করবেন! কিন্তু, দুর্ভাগ্যের ব্যাপার, তিনি ৮৫ বছরের বেশী বাঁচতে পারলেন না! নিজের অলৌকিক শক্তিতে অন্যকে যিনি বাঁচিয়েছেন, তিনি নিজেই বাঁচার জন্য হাসপাতালের কৃত্রিম জীবন রক্ষাকারী যন্ত্রের ভেতর ঢুকে পড়েও, তাঁর নিজের করা ভবিষ্যবাণীকে সফল করতে পারলেন না!!

    ভগবান সাঁইয়ের জীবনে আরও একটি বিতর্কিত ব্যাপার ছিল, যেটা তিনি অনায়াসে অতিক্রম করেছিলেন! তাঁর যৌন-ক্ষুধা সম্বন্ধে নানা মহল থেকে বিভিন্ন অভিযোগ থাকলেও, গোটা পৃথিবীতে তাঁর ফুলে-ফেঁপে ওঠা ভক্তবৃন্দের অচল বিশ্বাস একটুও টলে নি। টম ব্র¦ক তাঁর নিজস্ব অভিজ্ঞতার কথা একটা বইতে লিখেছেন। (Avatar of the Night: Hidden Side of Sai Baba)। সত্য সাঁইয়ের করা আকাশকুসুম দাবী এবং তাঁর যৌনজীবন নিয়ে কয়েকটা চলচিত্র তৈরী হয়েছে। "গুরু বাষ্টার', "সিক্রেট স্বামী' এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য। কুলকুণ্ডলীনি শক্তি জাগ্রত করার কৌশল শেখাবার নামে, যুবকদের ওপর যৌন অত্যাচার করার খবরও প্রচারের আলোয় এসেছে। তাঁর নিজস্ব বাসস্থানে, তিনি নিজে একটা খুনের ঘটনার সাক্ষী থাকলেও, আইনের হাত আধ্যাত্মিক জগত পর্যন্ত পৌঁছয় না বলে, একটা পর্যায় পর্যন্ত গিয়ে সব থেমে গিয়েছিল। সমাজের উঁচুমহলের সাথে মাখামাখি থাকাতে, হাতের কৌশল থেকে খুন পর্যন্ত সব ঘটনাগুলো উপেক্ষিত হতে হতে আম জনতার স্মৃতি থেকে ক্রমশ ফিকে হয়ে মুছে গেছে।

    একটা কথা না বললে সাঁই বাবার প্রতি অবিচার করা হবে। তিনিই একমাত্র ব্যক্তি নন, যিনি নিজেকে স্বঘোষিত ভগবান বলে প্রচার করেছেন! তাঁরও আগে রজনীশ, স্বঘোষিত আচার্য্য রজনীশ হয়েছিলেন এবং ক্রমে ক্রমে ভগবান রজনীশ থেকে ঈশ্বরের পর্যায়ে নিজেকে নিয়ে গেছিলেন।

    যাই হোক, সাঁইবাবার প্রয়াণের পর ক্ষমতাতে উচ্চপ্রতিষ্ঠিত শিম্পাঞ্জীরা মধু খাওয়ার জন্য মৌমাছির মত তাঁর মরদেহের চারপাশে ভিড় জমিয়েছিলেন। কেউ জানেন না, এই রাজ্য বা কেন্দ্রীয় আধিকারিকরা যে ভীড় জমিয়েছেন - সেটা ব্যক্তি না সরকারী পর্যায়ে! কেউ জানেন না, এই ধরণের সম্মান দেখানো সংবিধান সম্মত কিনা! আমরা সবাই জানি - এ ধরণের বিশ্বাস বা শ্রদ্ধাজ্ঞাপন ব্যক্তিগত স্তরে সংবিধান সম্মত, কিন্তু রাজনৈতিক এবং সরকারী স্তরে নৈব নৈব চ! আমাদের সংবিধান বার বার যুক্তিপূর্ণ চিন্তাকে প্রচার করতে বলে। আব্রাহাম কুভুর এবং প্রেমানন্দের মতো যুক্তিবাদীদের প্রতিবাদ; ক্ষমতার কেন্দ্র, অগ্রাহ্য করেছেন। তাঁদের তোলা প্রশ্নগুলোর জবাব দেওয়া বা কর্ণপাত করার কোনো প্রয়োজন, ওই ক্ষমতাসীনরা, বোধ করেন নি। কোনো একজন, বেশ মনোজ্ঞ মন্তব্য করেছেন এই ব্যাপারে! দুই ধরণের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এই ভগবানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। প্রথম জনেরা দুর্নীতিগ্রস্ত এবং তাদের পাপ লুকোবার চেষ্টা করে আর দ্বিতীয় জনেরা অকপট কিন্তু প্রথম দলের সঙ্গে কাজ করেন।

    ঝোড়ো অর্থহীন বিশ্বাস এইসব ভগবানদের কারিকুরি ফাঁস করার চেষ্টাকে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার ফলে, কুকীর্ত্তি প্রমাণ করা কষ্টকর হয়ে উঠছে। গত শতাব্দীর সত্তরের দশকে ছিল এল.এস.ডি আর এখন হয়েছে এই সব ভগবানদের ক্রমবর্ধমান ক্ষমতালিপ্সু বাহিনী!! যেসব হাতের কৌশল যাদুকরেরা দেখান, সেইসব দেখিয়ে এরা প্রচুর সম্পদ পুঞ্জীভূত করছে, আর তার সামান্য পরিমাণ, সামাজিক এবং লোকহিতকর কাজে ব্যয় করে লোকদেখানো প্রচুর প্রচার হচ্ছে। সবাই এটা বোঝেন যে এইসব কীর্ত্তি ফাঁস করা আর স্রোতের বিপরীতে সাঁতার দেওয়া একই ব্যাপার! তাঁরা এটাও বোঝেন, এই ধরণের কুকীর্ত্তি ফাঁস করার জন্য সমাজের বহুলাংশ থেকে একটা সমর্থন প্রয়োজন।

    আমরা সাগ্রহে এবং ঔৎসুক্যের সঙ্গে নজরে রাখব, ভগবান সাঁই বাবার পরবর্তী সংস্করণ কী ভাবে আমাদের সামনে আবির্ভূত হবেন!!! এটাও দেখার বিষয়, এই সব ভক্তরা কী ভাবে সেই ভগবানকে নেবেন এবং পুজো করবেন!!!!! এর মধ্যেই আমাদের নজর থাকবে, কিভাবে যুক্তিজালের বিশ্বাসযোগ্যতা এইসব ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে ওঠা ভগবানদের প্রতিহত করে!
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ২৩ মে ২০১১ | ৫৬৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • ভোরের পাখি | 133.108.246.132 (*) | ২৭ আগস্ট ২০১৫ ০৬:২৯89009
  • পাগলে কিনা বলে ছাগলে কিনা খাই
  • প্রকাশ | 133.108.246.132 (*) | ২৭ আগস্ট ২০১৫ ০৬:৪০89010
  • তোদের কি কোন কাজ নাই ?ভারতবর্ষ সহ সারা বিশ্বে যাঁর এত আনুসারি তার সমন্ধে আজে বাজে লিখিস।তোদের কারনে আজও ভারতবর্ষের করুন অবস্হা । তাহলে তোরা কি........?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা খুশি মতামত দিন