এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • ভুবনেশ্বরী, বাঁধাকপি, মিথ্যেগুলো

    সে
    অন্যান্য | ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ | ৫৬৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সে | 94.75.173.148 | ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ১৩:১৪686696
  • পরে লিখছি।
  • আমি ও সখা | 227.164.75.225 | ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ২২:৫৫686707
  • কব্যা
  • b | 135.20.82.164 | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ১৩:০৯686712
  • সিটিং লাইক এ ক্রো ইন হোলি প্লেস। সে কবে লিখবেন?
  • সে | 94.75.173.148 | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ১৩:২৩686713
  • লিখতে যেদিন বসেছিলাম, হঠাৎই উঠে পড়তে হয়েছিলো। লিখছি এখন।
  • সে | 94.75.173.148 | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ১৪:১৮686714
  • জন হ্যাম এমি পুরষ্কার পেলেন ডন ড্রেপার চরিত্রে অভিনয়ের জন্যে। আমার প্রিয় টিভি সিরিয়াল ম্যাড মেন এর মুখ্য চরিত্র। সব্কটা সীজনই প্রাণ ভরে দেখেছি। যাঁরা ক্রিটিক তাঁদের কী কী সমালোচনা, কী কীই বা এই ধারাবাহিকের মূল বক্তব্য সেসব নিয়ে কোনো নলেজই নেই আমার। দর্শক হিসেবে আমাকে চমকে দিতো, কেমন করে একটার পর একটার মিথ্যের ওপরে দাঁড়িয়ে আছে চরিত্রগুলো। সবচেয়ে বেশি মিথ্যের ওপরে যে দাঁড়িয়ে, মিস্টার ড্রেপার, তার প্রতিই কিন্তু দর্শক হিসেবে আমার সহানুভূতি। তার নাম পরিচয় সমস্ত ভুয়ো। একটা চুরি করা আইডেন্টিটির মানুষ এই ধারাবাহিকের প্রধান চরিত্র। এমনও নয় যে তার এই মিথ্যে আইডেন্টিটিটুকুই নাটকগুলোর মূল সাসপেন্স। অনেকেই ক্রমে ক্রমে জেনে গেছে। অফিসের লোক জেনেছে, কিন্তু সেটা ধর্তব্যের মধ্যেই আনেনি। যেন এটা তেমন কোনো গুরুগম্ভীর কোনো ব্যাপারই নয়। একটা সীজনের শেষে মিঃ ড্রেপার নিজের সন্তানকে দেখিয়ে দেয় তার শৈশবের কৈশোরের বড়ো হয়ে উঠবার বাড়ীটা। একটা ব্রথেল। ঐ এপিসোডটা, বিশেষ করে ঐ সীনটুকু আমার মনে থেকে যায়। বাকি অন্য কিছু, ষাটের দশকের নারীমুক্তি, সমাজের পরিবর্তন, স্বার্থ লোভ, পুরুষদের ড্রিঙ্ক অ্যান্ড শেভ, সমস্ত কিছু ছাপিয়ে যায় চুড়ান্ত মিথ্যেবাদী মানুষগুলোর মধ্যেও একজন সাহস রাখেন নিজের সন্তানকে সত্যটুকু বলবার। অবশ্য এই লেখাটুকু ম্যাড মেন ধারাবাহিকের ওপরে ঠিক নয়। ওগুলো গল্প। পেগি ওলসন্‌ কিংবা শ্রীমতী হলোয়ে কি সত্যিই এতটা সৎ থাকতে পেরেছিলেন বা পারবেন নিজের সন্তানের কাছে? বা অন্য চরিত্রগুলো?
    ম্যাড মেন এর ঐটুকুই নাড়া দিয়েছিলো আমাকে। বাকী তো জানা গল্প। প্রেডিক্‌টেবল্‌ । টিভি সিরিয়ালে যেমনটি হয়।

    ম্যাড মেন সেই এপিসোডটা দেখতে দেখতে মনে পড়ে গিয়েছিলো ছোটোবেলার একটা ঘটনা।
    প্রায় নিঃস্তব্ধ দুপুরে ছাদের ঘরে (চিলেকোঠা শব্দটা প্রচলিত ছিলো না বাড়ীতে) চুপি চুপি ঢুকে পড়া। গুপ্তধন আবিষ্কার করবার মতো মনের অবস্থা। কেউ যেন টেরটি না পায়, ধুলো ময়লা মাকড়সার জাল ইঁদুর টিকটিকি আরশোলা ভাঙা পুরোনো আসবাব, বেতের ঝুড়ি, ভাঁজ করে রাখা ইজি চেয়ার পেরিয়ে ডিঙিয়ে উদ্ধার করতে বসা রাশি রাশি ভারা ভারা সাহিত্য পত্রিকা। সাপ্তাহিক, মাসিক, শারদীয়া। অনেক বছর আগে হয়ত কেউ রেখে গেছল এখানে। এর ওপরে বেড়াল পেচ্ছাপ করেছে বারংবার। ভিজেছে এবং শুকিয়েওছে। বিবর্ণ ভ্যাপসা নিউজপ্রিন্ট। তারই মধ্যে থেকে একটা দুটো তুলে নিয়ে ঐ ঘর থেকে বেরিয়ে আসি। বাকি গুপ্তধন থাকুক জমে আপাতত। লেখকের নাম মনে পড়ে না। রুদ্ধশ্বাসে বড়োসড়ো একটা লেক্গা পড়ে ফেলি। একটানা, এক দুপুরে। উপন্যাস নয়, বড়ো গল্প হবে। ভুবনেশ্বরী। শুরুর পৃষ্ঠায় কলম দিয়ে আঁকা এক সুন্দরী মহিলার মুখ। মাথায় আলগোছে ঘোমটা, কপালে বড়ো করে টিপ, নাকে নাকছাবি, ছবিটার ওপরে কালির ছিটে।
  • সে | 94.75.173.148 | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ১৫:১৪686715
  • গল্পটা একটা বড়ো সড়ো সুখী পরিবারকে নিয়ে, যেখানে গৃহকর্তা একজন প্রায়বৃদ্ধ মানুষ। ভুবনেশ্বরী হচ্ছেন তাঁর মা। ভুবন মা। তাঁকে কেউ চোখে দেখেনি, কিন্তু গল্প অনেক শুনেছে। তিনি মহিয়সী নারী, তাঁর অসংখ্য গুণের গল্প গৃহকর্তার মুখে শুনে শুনে বড়ো হয়েছে বাড়ীর বাচ্চারা। তাদেরও বিয়ে থা হয়েছে, সংসার সন্তান সবই আছে। সবার ওপরে আছে ভুবন মায়ের আশীর্ব্বাদ। একদিন সেই বৃদ্ধ সকলকে ডেকে এনে জড়ো করে সামনে বসান। বলে চলেন ভুবনেশ্বরী চরিত্রটির আসল রূপ। দেয়ালে টাঙানো ভুবন মায়ের অয়েল পেন্টিং করা ছবিটা আসলে ভুয়ো, এবং সব কটা গল্পই আসলে মিথ্যে। আসল ভুবনেশ্বরীর রূপগুণ কিছুই ছিলো তো না ই, বরং তিনি ছিলেন এক স্বার্থপর ঝগড়ুটে লোভী স্বার্থপর সুযোগসন্ধানী মানুষ। এইখানেই গল্পটা শেষ হয়ে যায়। আমি চুপচাপ শারদীয়াটা সরিয়ে রেখে দিই। আর কোনো গল্প পড়তে ইচ্ছে করে না। ঠিক কীরকম অনুভূতি হয় নিজেই ভালো করে বুঝে উঠতে পারি না। অসাড় লাগে নিজেকে।
    হয়ত এখন আবার পড়লে লেখকের সাহিত্যগুণের উৎকর্ষ কতটা, তিনি নারীবাদী না প্যাটিয়ার্খিতে বিশ্বাসী, কতটা পোলিটিক্যালি কারেক্ট আজকের দিনের পরিপ্রেক্ষিতে, সেমসেক্স রিলেশানশিপ সম্বন্ধে কেন কিছু বলে যান নি, সুন্দরী নারীর ডেফিনিশনে নারীকে ফর্সা রঙে আঁকিয়েছিলেন না শ্যামলা করে, ভুবন মায়ের নাক টিকোলো ছিলো না থ্যাবড়া, ভুবন মা নিজে কেন টাকা রোজগার করতেন না, এই সমস্ত দিক দেখতে বসে যাবো। তাই আর পড়ব না গল্পটা। যেটু মনের মধ্যে রেখে দিয়েছি ঐট্কুই থাকুক। তবু, ষাটের দশকে লেখা এক অনামী গল্প মনের মধ্যে ফিরে ফিরে আসে ম্যাড মেন এর ঐ এপিসোডটা দেখবার পরে। শুধু ম্যাড মেন দেখেই নয়, আশে পাশের নানান ঘটনা চরিত্র দেখে দেখে। সন্তানের কাছে কতটুকু সৎ থাকি আমরা। বন্ধুবান্ধব চেনা পরিচিত ভাই বোন আত্মীয় স্বজন এমনকি অপরিচিতরাও, এরা বিভিন্নভাবে যদিও বা জানে আমাদের অন্ধকার দিকটা, বা যদি নিজে থেকেই জানাই কখনো সখনো, তবু কেন আড়াল করে রাখা হয় সন্তানকে? সত্যটুকু ঢেকেঢুকে বা মিথ্যের প্রলেপ লাগিয়ে পরিবেশন করা হয় কেন? সমস্ত দুনিয়া হয়ত বিভিন্ন সময়ে সেসব জেনে গেছে, যাচ্ছে, অথচ সন্তান জানবে না।
    গল্পের ভুবনেশ্বরীর পুত্র সেই বৃদ্ধ শেষ বয়সে হয়ত বিবেকের দংশনে (যেটা আজকের দিনে এক্কেবারেই ইন থিং নয়) সমস্ত সত্যটুকু মেলে ধরেন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে। বা মিস্টার ড্রেপার যিনি ষাটের/সত্তরের দশকের গল্পের মানুষ, হয়ত বিবেকের তাড়নায় কিছুটা বা কোনো কারণে সত্যটুকু জানান নিজের সন্তানকে।
  • কল্লোল | 125.248.76.233 | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ১৫:৫৫686716
  • আমরা সকলেই হয়তো একটু আধটু মিথ্যে পরিচয়ে বাঁচি। আমরা অনেকেই ভাবতে ভালোবাসি - অমি যদি এমন হতাম - আর আমাদের জীবনের অভিজ্ঞতার গল্পে সেই গোপন ইচ্ছাসমূহ মিলেমিশে যেতে থাকে। এভাবেই গড়ে ওঠে আমাদের স্মৃতিভান্ডার, ক্রামশঃ যা আমদের কাছেও - সত্য - হয়ে ওঠে।
  • i | 134.171.13.42 | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ১৬:১১686717
  • ভুবনেশ্বরী বিমল করের উপন্যাস।
  • i | 134.171.13.42 | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ১৬:১২686718
  • ভালো লাগছে লেখাটা।
  • সে | 94.75.173.148 | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ১৬:৫৫686697
  • এগুলো আসলেই গল্প। তাই একটা পর্যায়ে গিয়ে নায়ক সত্যটুকু ফাঁস করে দিচ্ছে।
    কিন্তু ধরুণ প্যালানটাইনবাসী সেই বাঙালী অ্যামেরিকান পরিবারটার কথা। ছোটো পরিবার। স্বামী স্ত্রী দুটি সন্তান । বড়োটি কলেজ যাবো যাবো করছে। অভিবাসনের দরখাস্তে বা আইএনএসের কোনো নথিতে গৃহকর্তার পূর্ব ইতিহাসের সমস্ত তথ্য দেওয়া নেই। তথ্য আছে, ছেঁটে রেখে ঢেকে দেওয়া। বহুৎ টেনশনে দিন গুজরচ্ছেন এঁরা। তথ্য প্রযুক্তির যুগ, অথচ ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলতে ভয়। মুখ দেখলেই, মানুষ চিনে ফেলবে। নাম দেখলেও চিনবে। নাম পাল্টানো খুব শক্ত। ইস্কুল কলেজের সার্টিফিকেট, পাসপোর্ট, এমপ্লয়মেন্ট রিলিজ লেটার, সব নথিতে পুরোনো নাম। যদি পুরোনো সত্যটুকু বাচ্চারা জেনে ফেলে? তাদের যে কিচ্ছুটি জানানো চলবে নাকো। মাতাপিতা হবে স্ফটিকের মতো স্বচ্ছ চরিত্রের অধিকারি। তাতে কলংকের ছিটেও থাকবে না। কলঙ্ক তো খুব বেশি হয়ে গেল, অল্প বিস্তর মিথ্যাচার যেগুলো জীবনে হয়ে গেছে, বা ছোটোখাটো হেরে যাওয়াগুলো, সমস্ত ঢেকে দিতে হয় মিথ্যের প্রলেপ দিয়ে। তারপরে সেই প্রলেপটাই আসল হয়ে ওঠে ভুবনমায়ের মতো। আসল ভুবনেশ্বরীকে গল্পের লাস্ট সীনে কেউ চিনিয়ে দেয় না।
  • | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ১৭:০৫686699
  • কিন্তু বাঁধাকপির ভূমিকা কী?
  • | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ১৭:০৫686698
  • কিন্তু বাঁধাকপির ভূমিকা কী?
  • nina | 83.193.157.237 | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৯:১৪686700
  • "সে" এসেছে--একে একে অনেকে পাটি পেতে বসবে --আমি তো বসলামই-------অনেক আশা অনেক কিছু শোনার আশা----
  • সে | 94.75.173.148 | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ১৪:৪৫686701
  • আঁখো দেখি অনেক ঘটনা মনে পড়ে যায়। আশির দশকের গোড়ার দিক। তখনো কোলকাতার ব্যাঙ্কগুলোয় কম্পিউটার বসেনি, এমনকি বিদেশি ব্যাঙ্কগুলোতেও না। বর্ষাকালের শনিবারে সকাল সকাল ডালহৌসী স্কোয়ারের একটা বিদেশি ব্যাঙ্কে দেখা যায় এক মহিলাকে। সাদা শাড়ী সরু পাড়। দেখেই ঝট করে বলে দেওয়া যায় ইনি সদ্য বিধবা। কোলে একটি বছর দুয়েকের মেয়ে, সে হাঁটতে পারলেও মায়ের কোল ছাড়ছে না। পাশে আরেকটি শিশু। সাত আট বছরের বালক। মহিলাটিকে বাইরের কাউন্টার থেকে ভেতরের দিকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় যেখানে অপেক্ষাকৃত বড়বাবুরা বসেন, বা অফিসারেরা। দুটো অতিরিক্ত চেয়ার এগিয়ে দেয় কেউ। তিনি নিজে বসেন, মেয়েকে বসান পাশের চেয়ারে, ছেলেটি বসতে চায় না, তার নজর অফিসারের টেবিলের ওপরে রাখা টুকিটাকির ওপরে। কাচের পেপারওয়েটের দিকে সে হাত বাড়ায়, পেপারওয়েটের ভেতরে রঙীন ফুল, বুদ্বুদ, খুব মন দিয়ে নেড়ে চেড়ে দেখতে থাকে সে। টেবিলের ওপারের অফিসারটিকে ভ্যানিটি ব্যাগ খুলে কাগজপত্র এগিয়ে দেন মহিলাটি। স্বামীর ডেথ সার্টিফিকেট, ব্যাঙ্কের কাগজ, আরো কী কী সব খুঁটিনাটি। অফিসারটি খুব সহানুভূতির সঙ্গে শোনেন, দুয়েকটা প্রশ্ন করেন, শোনেন কীভাবে এত কম বয়্সে মারা গেলেন ওঁর স্বামী, হার্ট অ্যাটাক বা ঐ ধরণের আকষ্মিক কিছু। কথা বলতে বলতে মহিলার চোখ ভিজে যায়। ছেলেটা পেপারওয়েট হাতে মায়ের দিকে তাকিয়ে আছে। চা এনে রাখা হয় ওঁদের জন্যে। বিস্কুট। গাব্দা লেজারবুক এনে রেখে যায় টেবিলে পিওন। আরো একটা খাতা, অ্যাকাউন্টহোল্ডারদের ডিটেল্‌স্‌সহ। লাস্ট ব্যালেন্স্‌ কত ছিলো সেইটে দেখতে গিয়ে ভুরু কুঁচকে যায় অফিসারের। মিস্টার বাগচীর তো দুটো অ্যাকাউন্ট দেখতে পাচ্ছি। একটা সিঙ্গল, অন্যটাতো জয়েন্ট আপনার সঙ্গে। ওটা এখনি তুলে ফেলতে পারবেন। ও না না, সরি, ওটা আপনার সঙ্গে নয়।
    এবার চোখের জল টল মুছে মিসেস বাগচী নড়ে চড়ে বসেন। কার সঙ্গে জয়েন্ট?
    অফিসার খাতার দিকে তাকিয়ে বলেন, প্যাট্রিসিয়া জর্ডন, অ্যাড্রেস তো সেমই দেখছি। চেনেন?
    ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন মহিলা। তারপরে সামলে নিয়ে বলেন, কই দেখি! টেবিলের ওপরে ঝুঁকে পড়ে দেখতে চেষ্টা করেন। তারপরে বলেন, না আমি শুনিনিতো এই নাম কখনো। কত আছে ঐ অ্যাকাউন্টে?
    খুব বেশি নয়, চার হাজারের মতো, এরপরে ইন্টারেস্ট ক্যালকুলেট করলে একটু বাড়বে। আর ওনার সিঙ্গল অ্যাকাউন্টে আছে...
    অফিসার হিসেব করতে লেগে যান। মহিলাটিকে বেশ রেস্টলেস দেখায়। দুঃখের অভিব্যক্তি মুছে গিয়ে মুখে চিন্তার ছাপ। বাচ্চা ছেলেটা এ সমস্ত দেখছে। হঠাৎ মা ও অফিসার দুজনের খেয়াল হয় যে বাচ্চা ছেলেটার সামনে এসব আলোচনা করা ঠিক নয়। ছেলেটিকে জিগ্যেস করতে থাকেন, কোন স্কুলে পড়ো তুমি? কোন ক্লাস? স্যাটার্ডে ছুটি? এই নাও.. ড্রয়ার থেকে বের করে দেন ব্যাঙ্কের নাম লেখা রঙেন পেন। ছেলেটি তবু তাকিয়ে আছে। আশেপাশের টেবিলের থেকেও লোকে শোনে দ্যাখে ঘটনাটা। এক মহিলা স্টাফ ছেলেটিকে এসে ডাকেন, এসো আমার সঙ্গে, একটা জিনিস দেখাবো। বাচ্চাটা সেখান থেকে চলে যায়।
    মহিলা জিগ্যেস করেন, আপনি শিওর ওর দুটো অ্যাকাউন্ট এখানে? তাহলে ঐ অ্যাকাউন্টের কী করা হবে?
    ওটা জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট, আইদার অর সারভাইভার। সিঙ্গল অ্যাকাউন্ট যেটা সেটার আপনারা লিগ্যাল সাকসেসার, কিন্তু জয়েন্ট অ্যাকাউন্টে যেহেতু আপনার নাম নেই, সেক্ষেত্রে আপনি চাইলে কন্‌ট্যাক্ট করতে পারেন অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের সঙ্গে। কিন্তু সরি ওনার কন্‌ট্যাক্ট অ্যাড্রেস আমরা আপনাকে দিতে পারছি না।
    তারপরে বলেন, কীই বা দরকার এসব করে। আপনার ছেলে মেয়ে রয়েছে। ওরা এসব জানতে পারলে, কটা টাকারই তো ব্যাপার। আর উনি তো আরো রেখে গেছেন অন্য ব্যাঙ্কে, এলাইসি আছে নিশ্চয়ই?
    মহিলা মাথা নেড়ে বলতে থাকেন, ঠিক ঠিক, আসল মানুষটাই যখন চলে গেছে তখন আর কী হবে এসব চিন্তা করে।
    হ্যাঁ, একদম পজিটিভ থাকুন, বাচ্চাদের সামনে এসব আলোচনা একদম করবেন না।
  • de | 69.185.236.55 | ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ১৪:২২686702
  • আরো লেখা আসুক! পড়ছি!
  • সে | 94.75.173.148 | ০১ অক্টোবর ২০১৫ ০৩:১২686703
  • পুপেদিদির সঙ্গে কীরকম যেন একটা লতায় পাতায় সম্পর্ক আছে আমাদের। পুপেদিদি ডাকসাইটে সুন্দরী ছিলেন একসময়ে। হাইটে স্লাইট মার খেলেও প্রথমে এয়ারইন্ডিয়ার এয়ারহোস্টেস তারপরে লুফ্‌থান্‌সার। এঁকে আমি দেখিনি আগে, শুধু অনেক গল্প শুনেছি। যখন দেখা হোলো, তদ্দিনে পুপেদিদি রিটায়ার্ড চাকরি থেকে। চাকরিতে পরে এয়ারলাইন্সের গ্রাউণ্ডস্টাফ ছিলেন। জার্মানীতে বাড়ী করেছেন দীর্ঘকাল আগে। প্রথম জীবনে ঐ এয়ার ইণ্ডিয়ার এয়ারহোস্টেস থাকাকালীনই এক বিদেশী যাত্রীর সঙ্গে আলাপ পরিচয় প্রেম ও পরিণয়। জার্মান বরের সঙ্গে পুপেদিদি শ্বশুরবাড়ী চলে গেলেন। ওঁরা ছিলেন সাত বোন এক ভাই। পুপেদিদি মাঝামাঝি। ওপরে চার দিদি, পরে আরো দুই বোন এক ভাই। ওঁর অন্য দিদিদের সব বিয়ে হয়ে গেছল। এক দিদি এখানেই থাকেন সুইটজার্ল্যাণ্ডে। পাশাপাশি দুটো দেশে দুই বোন বাস করতে থাকলেন। কিন্তু পুপেদিদির ভাগ্য পরিবর্তন হচ্ছিলো। বিয়ের পরে বছর দুয়েক ঘুরতে না ঘুরতেই, ওঁর বর মারা গেলেন। দুজনের মধ্যে বয়সের ডিফারেন্স একটু বেশিই ছিলো, কিন্তু মারাত্মক কিছু বয়সও হয়নি জামাইবাবুর। সদ্য বিধবা পুপেদিদি তখন লুফ্‌থান্‌সায় কাজ করছেন। সম্পত্তি মন্দ রেখে যাননি জামাইবাবু। কিন্তু সামনে বিরাট জীবন পড়ে রয়েছে, শুধু টাকা দিয়ে কী হবে? কিছুদিনের মধ্যেই পাত্র জুটে গেল। পাঞ্জাবী ছেলে কোলকাতায় মানুষ। যুবক। পুপেদিদির পাশে দাঁড়ালে মেড ফর ইচ্‌ আদার। বলবিন্দর সিং। গড়গড় করে বাংলা বলে, দেখতে শুনতে ভালো। খুব চালাক চতুর। কিন্তু বাধ সেধেছে জার্মান গর্মেন্ট, সেকালের পশ্চিম জার্মানী। ভিসার মেয়াদ কিছুতেই বাড়াতে দিচ্ছে না। অথচ বলবিন্দর অর্থাৎ বিবি-র খুব ইচ্ছে ওখানেই থেকে যাবার। জার্মান নাগরিক পুপেদিদিকে আরেকবার ছাদনাতলায় যেতে হোলো। অতঃপর এঁরা সুখে কালাতিপাত করতে লাগলেন। এই গল্প ফ্রাঙ্কফুর্ট থেকে জুরিখ অনেক পুরোনো পাপীই জানে। কিন্তু জানে না পুপেদিদির পুত্র ও কন্যা। পুত্রটি আমার বয়সী, কন্যাটি আমার চেয়ে কিঞ্চিৎ ছোট। পুত্রকন্যা যে কিচ্ছুটি জানে না, সেই কথাটি আমাকে আগেভাগে বলে দেয়া হোলো পুপেদিদির সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতের আগে আগে। সঙ্গে কন্যা আসছে, তার সঙ্গে গপ্পো করতে গিয়ে তার মায়ের জীবনের পূর্ব ইতিহাস যেন ঘুণাক্ষরেও না এসে পড়ে। ছেলে মেয়েরা জানেনা যে মায়ের আগে একটা বিয়ে ছিলো যে স্বামী কিনা আবার জার্মান সাহেব, দুই- মা যে একবার বিধবা হয়েছেন সেটিও গোপন রাখতে হবে, তিন - বিবিজামাইবাবু যে থেকে যাবার কারণে পুপেদিদির সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে জড়িয়েছিলেন, সেটিও যেন গোপন থাকে। এসমস্ত জানতে পেলে পুপেকন্যা বড়োরকম মেন্টাল আঘাত পেতে পারে। সে এসবের কিচ্ছুটি জানেনা কিনা। সে আজন্ম জানে তার মা বাবার বিয়ে, জার্মানীতে সেটল করা, সমস্তই খুব "নর্ম্যাল" প্রসেসে হয়েছে, ঠিক বলিউডি সিনেমায় যেমন থাকে। দেখেশুনে বিয়ে, আদর্শ পরিবার। এই ইমেজটুকু বজায় রাখতে হবে। পুপেদিদি ও বিবি জাঁইবু খুব সনাতন ইণ্ডিয়ান স্টাইলে মেয়েকে মানুষ করেছেন, সতীলক্ষ্মী স্টাইলের টেমপ্লেটে। একটু টিনেজার হবার পরেই জার্মানীর ইস্কুল ছাড়িয়ে দক্ষিণ ভারতের কোন একটা জায়গায় যেন অনেক খচ্চাপাতি করে ইন্টারন্যাশানাল ইস্কুলে বোর্ডিং এ রেখে বারো ক্লাস অবধি পড়িয়েছেন। জার্মানীতে থাকলে ঐ বয়্সে মেয়ে বখে যেতে পারত নানান ছেলেছোকরার সঙ্গে মিশত, সেসব এড়াতে ঐ ব্যবস্থা। আদর্শ ইণ্ডিয়ান পরিবারের কার্বন কপি করে ছেলেমেয়েদের মানুষ করেছেন পুপেদিদি খোদ জার্মানীতে বসে। দেখে তাজ্জব লাগে। আহা যশ চোপড়া যদি বেঁচে থাকতেন! বলিউডের করণ জোহরের সিনেমার সেট মনে হয়, স্ক্রীপ্ট, ডায়ালগ সব কেমন হুবহু একইরকম যখন দেখি প্রথম সকন্যা পুপেদিদিকে। আমি আড়ষ্টতার সঙ্গে মিশি মেয়েটির সঙ্গে। তাকে অবশ্য বাংলাটা শেখানো হয় নি, কিন্তু ইংরিজি সে খুব ভালো বোঝে, বলেও ভালো। অসম্ভব মিষ্টি আর সরল সেই মেয়েটা। পুপেদিদির সমস্ত কথা আগাগোড়া বিশ্বাস করে চলেছে, দুয়েকটা গুল যেগুলো আমরা ধরতে পারছি, বুঝেও না বোঝার ভান করছি, সেগুলো পর্যন্ত মেয়েটা অকপটে বিশ্বাস করছে দেখলাম।
    কেন এই লুকোচুরি? এত ওপেন এই সমাজ। কবার বিয়ে, কবার বৈধব্য, এসবে কেউ মাথা ঘামায় না যে সমাজে, সেই সমাজের মধ্যেই নিজের সন্তানদের কাছে সমস্ত লুকিয়ে গেছেন মাতাপিতা দুজনেই, একসঙ্গে । আত্মীয় স্বজন বন্ধুবান্ধব সবাই জানে। শুধু ছেলেমেয়েদুটো জানে না। আমাদের সকলের কর্তব্য ওদের থেকে আড়াল করে রাখা এই ঘটনাগুলো। অথচ একদিন ওরা জানবেই জানবে। যেদিন পুপেদিদি কি জামাইবাবুর সময় ফুরোবে, সরকারী নথি থেকে সব তথ্য সেদিন ওদের জানানো হবে। এই জার্মান বিয়ে করা, বৈধব্য, আবার বিয়ে করা, এগুলোকি খুব লজ্জার কিছু? আমার তো মনে হয় নি একেবারেই। তবে এসব কেন লুকিয়ে রেখেছেন ওঁরা? কলঙ্ক ভেবে? কি জানি!
  • সে | 94.75.173.148 | ০১ অক্টোবর ২০১৫ ০৪:২৬686704
  • ক্যালকাটা স্কুল অফ মিউজিকের আমন্ত্রণে ইউরোপ থেকে এসেছে কয়েকজন মিউজিশিয়ান। পিয়ানো বাজাবেন ডাভিনা মুয়েলার, ভায়োলিনে ডাভিনাকন্যা ইন্দিরা মুয়েলার, আর আছে ফ্লুট্‌। বাঁশি বাজাবেন ডাভিনার বড়ো মেয়ে ক্রিস্টিনা মাইয়ার। গ্র্যাণ্ড হোটেলের একটা সুইটে রয়েছেন তিনজনে। এলাহী কিছু ব্যাপার নয়, কারণ এঁরা কেউই হাইফাই কোনো মিউজিশিয়ান নন, আবার ফেলনাও নন। ডাভিনার বড়ো মেয়ে থাকে হংকং এ, মেজ মেয়ে ইন্দিরা জার্মানীতে তার কম্পোজার বয়ফ্রেণ্ডের গ্রুপে লীড ভায়োলিন প্লেয়ার, আর ডাভিনা এসেছেন সুইটজার্ল্যাণ্ডের উত্তর পশ্চিম কোণার এক শহরতলী থেকে। পরপর তিনটে কনসার্ট হবে। অডিটোরিয়াম আগে থেকেই ঠিক আছে। টিকিটপত্রও মোটামুটি বিক্রি হয়ে গেছে, বিজ্ঞাপন থেকেও টাকা উঠেছে।
    সেসময়ে আমি টোটাল ভারতবাসী। চেনা পরিচয় সূত্রে অল্প আলাপ হলো এই তিন মিউজিশিয়ানের সঙ্গে। জানলাম ডাভিনার জন্ম কোলকাতাতেই, গ্র্যাণ্ড হোটেল থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে, কর্পোরেশন স্ট্রীটে। ওয়েলিংটন স্ট্রীট ও কর্পোরেশন স্ট্রীটের ক্রসিং এ দক্ষিণ পশ্চিম কোণের প্রথম বাড়ীটার দোতলায় কেটেছে ওঁর বাল্য, কৈশোর, প্রথম যৌবন। ঐ বাড়ীটা আমি চিনি। ডাভিনারা দোতলায় যে ফ্ল্যাটে কাটিয়েছেন, সেইটেও। পিয়ানোর এক প্রতিযোগিতায় কি পরীক্ষায় ফার্স্ট হয়ে, অ্যামেরিকায় গিয়ে বাজানোর ও শিখবার একটা তিনমাসের প্রোগ্রামে সুযোগ এসেছিলো তাঁর প্রথম যৌবনে। ব্যাস। তারপরে আর ফেরেননি কোনোদিনো ঐ বাড়ীতে। তিনমাসের সেই কোর্স চলাকালীনই দেখা হয়ে যায় ভবিষ্যতের রাজপুত্রের সঙ্গে। তরুণ ইকোনমিস্ট ডির্ক-এর সঙ্গে। ডির্ক নিয়ে আসতে চান ডাভিনাকে জার্মানীতে। তখনকার দিনে জার্মানী যেতে ভারতীয়দের ভিসা লাগত না। জার্মানীতে এসে বিয়ে করেন দুজনে। তারপরে একে একে চারটি সন্তানের জন্ম দেয় ডাভিনা। ক্রমশঃ এরা সেটল করে সুইটজার্ল্যাণ্ডে। ডির্ক ব্যাঙ্ক অফ ইন্টারন্যাশানাল অ্যাফেয়ার্সের অনেকটাই কর্তাব্যক্তি হয়ে ওঠে। দেদার টাকা, সুখের সংসার আর মিউজিক, এই নিয়ে কাটতে থাকে এদের জীবন। এদের কন্যারা সব মায়ের মতো মিউজিকের জগৎ বেছে নেয়, পুত্র বাপের মতো ফিনান্স।
    ঐ মিউজিক কনসার্টের পরে আবারো যে কোনোদিন এদের সঙ্গে দেখা হবে কষ্মিনকালেও ভাবিনি। কিন্তু যখন সুইটজারল্যাণ্ডে বাস করতে এলাম, ডাভিনার সঙ্গে যোগাযোগ করলাম। এর মধ্যে কর্পোরেশন স্ট্রীটের সেই ভাঙাচোরা দু কামার ফ্ল্যাটে কয়েকবার গিয়েছি। ডাভিনার মামার মেয়ে করুণা থাকে এখন সেখানে। সেই বলেছিলো, ওদেশে গিয়ে দিদির সঙ্গে দেখা কোরো। একবার এখানে আসতে বোলো। সেই কারণেই আরো দেখা করলাম ডাভিনার সঙ্গে। একশ কিলোমিটারের মত রাস্তা ট্রেনে করে গিয়ে উপস্থিত হলাম তার বাড়ী। প্রকাণ্ড বাগান, সুইমিং পুল, দোতলা বাড়ী, একটা অংশ আবার তিনতলা, অ্যাটিক না কী যেন বলে। একতলার ঘরে দুটো প্রকাণ্ড পিয়ানো, পেছনে মাঠে বড়োবড়ো টেবিল পেতে চায়ের আসর। সন্ধ্যে যত বাড়বে সেটাই ক্রমশঃ হয়ে উঠবে ডিনার পার্টি। নাঃ বেশ বড়োলোক বটে এরা। কোথায় কর্পোরেশন স্ট্রীটের ভাঙ্গা দুখানা ঘরে নাকি দুটো ফ্যামিলি থাকত এরা। বারান্দায় ও শুতো কয়েকজন ঘরে সবার জায়গা হোতো না। সেই ফ্ল্যাট তো দেখে এসেছি।
    টেবিলের ওপরে একে একে পরিবেশিত হয় ভালো ভালো খাবার পানীয়, অতিথিরা আসেন একে একে। ডির্ক আমার সঙ্গে এসে গল্প জোড়েন। ইনি ইণ্ডিয়া একবার গেছেন কিন্তু কোনোদিনো কোলকাতা যান নি। ডাভিনার নাকি সময়ই হয় না ওঁকে নিয়ে কোলকতা যাবার। ডির্কের খুব ইচ্ছে ডাভিনার ছোটোবেলার শহর, তার রাস্তাঘাট, ডাভিনার ইস্কুল, তাদের বাড়ীটা, সব কিছু দেখবার। অনেক গল্প শুনেছেন। ডাভিনার ছোটো মেয়ে সদ্য যুবতী, সে ও হাঁ করে বাপের কথা শোনে। অতিথিরাও কেউ কেউ। রাত বাড়ে। ওরা আমায় থেকে যেতে বলে সেরাতের জন্যে। অতিথিরা চলে যায়। অগস্টের রাত দেরী করে অন্ধকার হয়। আমরা অনেকক্ষণ বাগানে বসে গল্প করি। সবার পেটেই দুপাত্তর পড়েছে। ডাভিনা গল্প করে তার ছেলেবেলার সেই বাড়ীটার। কর্পোরেশন স্ট্রীটের দোতলার গল্প। সে এক বিশাল পুরী। প্রথমটা বাইরের মহল, তারপরে অন্দর মহল, তারপরে একদিকে রান্নার বাড়ী, সেখানে রান্না হতো। রান্নার গন্ধে যাতে মূল বাড়ীর মেজাজ নষ্ট না হয়। একটা ঘরে পিয়ানো বাজাতেন ডাভিনার দাদু। বড়োমামা থাকতেন একটু ভেতরের দিকে, নিরিবিলিতে। স্যাক্সোফোন বাজাতেন তিনি। বড়োমামার কথা বলতে বলতে চোখ চকচক করে তার। আরো রেড ওয়াইন ঢালা হয়, রাত বাড়ে, কাল তো শনিবার, কোনো তাড়া নেই। ছোটোমেয়ে হাঁ করে শোনে সব গল্প। এ গল্প তারা আগেও শুনেছে। চোখ বন্ধ করে সব দেখিয়ে দেবে, সিঁড়ি দেয়াল দরজা ডাইনিংরুম, প্রকাণ্ড সেই বাথরুমটা যেটার বাথটাবটা অ্যাত্তো বড়ো যে পরিষ্কার করতে হিমহিম খেয়ে যেতে হোতো।
    ডির্ক প্রায় ঘুমিয়েই পড়েছিলো, তাও বলে ওঠে, ওকে অ্যাতোবার করে বলেছি কোলকাতা চলো সবাই ঘুরে আসি একবার...
    ডাভিনা অল্প হাসে। আমাদের চোখে চোখে কথা হয়ে গিয়েছে। ও জানে আমি গেছলাম ওর সেই ছোটোবেলার ফ্ল্যাটটায়। করুণা ওকে যেতে বলেছে তাও বলেছি, কিন্তু এরা তা জানে না। বড়োমামার স্যাক্সোফোন বাজানোর, রেওয়াজের গল্প করতে থাকে সে। এরা জানেনা, সেই বড়োমামা পার্কস্ট্রীটের একটা বারে বাজাতেন। পরে টিবিতে মারা যান। চিকিৎসা হয় নি। বারের চাকরিটাও ছিলো না।
    ছোটো মেয়ে শুধোয়, তারপরে তোমার বড়োমামার কী হোলো? বলোনা মা, তারপরে যেন কী হোলো। ওর জানা গল্প তবু বারে বারে শুনতে চায়।
    ডাভিনা বলে চলে, ও ইয়েস, তারপরেতো ওরা আমার মামাকে দিয়ে সিনেমায় মিউজিক করাবেই। বম্বেতে নিয়ে যাবেই। টাকার লোভ দেখাতে লাগল। কিন্তু বড়োমামা ছিলেন খুব স্ট্রীক্ট্‌ প্রিন্সিপলের মানুষ। উনি রাজী হলেন না। উনি ওনার স্টুডেন্ট্‌স্‌দের ছেড়ে বম্বে গেলেন না। এইভাবে ডাভিনা বলে যাচ্ছিলো তার কোলকাতার গল্প। অনেক রাত অবধি।
  • ... | 74.233.173.203 | ০২ অক্টোবর ২০১৫ ১২:৪৯686705
  • কতদিন আগের ঘটনা এই শেষ পার্টটি?
  • cm | 127.247.98.200 | ০২ অক্টোবর ২০১৫ ১২:৫৪686706
  • বিমল করের উপন্যাস সত্যঘ্টনার ওপর নির্ভর করে, এমন কি তিনি কোথাও বলেছেন?
  • robu | 122.79.36.118 | ০৩ অক্টোবর ২০১৫ ১০:৩৬686708
  • খুব ভাল লাগছে। চলুক।
  • সে | 94.75.173.148 | ০৩ অক্টোবর ২০১৫ ১৪:৩৪686709
  • ঢেঁকিশালে পুঁটু ধান ভানে,
    বাঘ এসে দাঁড়ালো সেখানে -
    বারান্দায় বসে এই অবধি যেই চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে পড়েছি অমনি বাড়ীর ভেতর থেকে বয়স্ক কে যেন আমায় বলল চুপ করতে। কিন্তু তারই মধ্যে আরো দুটো লাইন পড়ে ফেলেছি,
    ফুলিয়ে ভীষণ দুই গোঁফ
    বলে চাই গ্লিসেরিন সোপ।
    এটুকু পড়ে আর কিছুতেই হাসি চাপতে পারিনা। যিনি আমায় থামিয়ে দিলেন, তিনি এবার বারান্দায় এসে উপস্থিত। আমায় ঘরের ভেতরে টেনে নিয়ে এলেন। কিন্তু অমন হাসির কবিতা কি না পড়ে থাকা যায়? ঘরে বসে পড়তে থাকি,
    পুঁটু বলে, ও কথাটা কী যে
    জন্মেও জানি নে তা নিজে।
    ইংরেজি টিংরেজি কিছু
    শিখিনিতো জাতে আমি নিচু।
    গোটা কবিতাটা পড়তে পড়তে হাসতে হাসতে পেটে খিল ধরে যায়। আমায় কেন পড়তে দিচ্ছিলো না? কেন খালি খালি চুপ করিয়ে দিচ্ছিলো? ওহ্যাঁ, এইবারে বুঝেছি, পাশের বাড়ীতেই রয়েছেন পুঁটু ডাক্তার। হোমিওপ্যাথির ডাক্তার। তিনি শুনে ফেলবেন বলে?
    ঐ বাড়ী থেকে কেউ অবশ্য চোখ পাকিয়ে কিছু বলে না। কাউকেই দেখা যায় না তখন। ও বাড়ীর সব কিছুই কেমন যেন চুপচাপ। সব্বাই বাড়ীর মধ্যে থাকে, বিশেষ কেউ বেরোয় টেরোয় না। ওদের বাড়ীর ঝি অনিলের মা পাড়ার মুদির দোকান থেকে সর্ষের তেল, কোলে বিস্কুট, মুড়ি, বাতাসা, মেথি, মৌরী, নুন, এসমস্ত কিনে আনে। একটা খাতা হাতে করে দোকানে যায়, মাসের শেষে হিসেব মেলায় দোকানদার। অনিলের মা কে বাদ দিলে, পুঁটুবাবু বিকেলের দিকে একবার বেরোন। খুব পুরোনো ঝরঝরে একটা কালো অস্টিন গাড়ী আছে ওঁর। সেইটে চেপে উনি ডিস্পেনসারিতে যান। ডাক্তারী করতে। বাড়ীতে কোনো রুগী আসে না। কেউ কল ও দেয় না। এপাড়ায় কেউ হোমিপ্যাথি করে না এমন নয়, অনেকের বাড়ীতেই আর্ণিকা, থুজা, পালসেটিলা, চায়না মাদার এসব পাওয়া যাবে, গোল্গোল বড়ি, ওষুধের শিশি। কিন্তু পুঁটুডাক্তারের বাড়ী কেউ ঢোকে না। পুজোর সময় চাঁদা নেয় বাইরে থেকে। একজন ঝি, একটা চাকর, এরা বাড়ীর ভেতরে যায়। আরেকটা অদ্ভুত জিনিস, ওবাড়ীর কাউকে এপাড়ায় হেঁটে যেতে দেখা যায় নি। বছরে এক কি দুবার যসি বাড়ীর মেয়েরা কি বউ বাইরে বেরোয় তো সবসময় ট্যাক্সিতে। প্রথমে ট্যাক্সি ডেকে আনা হবে। সেটা অনেকক্ষণ ওয়েটিং এ থাকবে দরজার সামনে। তারপরে বাড়ীর ভেতর থেকে মানুষজন বেরিয়ে এসে তাতে উঠবে, ট্যাক্সিওয়ালা টাং করে মিটারটা ডাউন করে দিয়ে স্টার্ট করে দেবে গাড়ি। আবার ফিরবেও এরা ট্যাক্সিতে। পাড়ায় কারোর সঙ্গে মেশে না।
    এরপরে আমিও টুকটুক করে বড়ো হচ্ছি, ও বাড়ীতেও অনেকগুলো ঘটনা ঘটে গেল। আসলে আমাদের বাড়ীর পশচিমের ঐ দোতলা সমান পাঁচিলের ওপারেই ওদের উঠোন। ছাদ থেকে সবটা দেখা যায় ও বাড়ীর ভেতরটা। পুঁটু ডাক্তারের পসার ছিলো না কোনোকালেই। অস্টিন গাড়ীটা এরপরে আর দেখা যেত না, বদলে আসত ট্যাক্সি। কিন্তু ওয়েটিং এ থাকত না বড়ো একটা। ডাক্তার ফিরতেন রিকশায় করে, ঘন্টা দু তিন পরে। তারপরে ট্যাক্সিও বন্ধ হলো, রিকশায় যাতায়াত। বাড়ীর চাক রিক্সা ডেকে আনত। সে বসে বসে ওয়েট করত। মাঝে মাঝে হাতলে ঘন্টা মেরে মেরে তাড়া দিত, তারপরে পুঁটু ডাক্তার কোট প্যান্ট পরে রিক্সায় উঠতেন, চাকর বয়ে আনত ডাক্তারীর কালো ব্যাগটা, সেটাও রিক্সায় তুলে দিত। তারপরে একসময় ডাক্তার আর বাইরে যেতেন না। রিক্সাওয়ালা বসে থেকে থেকে ঘন্টি বাজিয়ে তাড়া দিত, অনিলের মা বেরিয়ে এসে বলত আজ যাবে না, কাল এসো। তারপরে সে এসে এসে বসে থাকত প্রায় রোজই। শেষের দিকটায় তাকে দেখা যেত না। এরপরে ও বাড়ীতে বাইরে থেকে ডাক্তার এসেছিলো কয়েকদিন। অ্যালোপাথির ডাক্তার। পুঁটুবাবু শয্যা নিলেন। পুঁটুবাবুর বাবা খুব খুব বুড়ো লোক। তাকে দক্ষিণের বারান্দায় একটা ইজিচেয়ারে বসিয়ে দিত চাকর বিকেলবেলা। পুঁটুবাবুর মাও বৃদ্ধা, প্রকাণ্ড মোটা, তাকে ওঠাত বসাত হাঁটিয়ে নিয়ে যেত দুজন তিনজনে মিলে। একটা চেয়ারে বসিয়ে চান করাত ভেতরের বারান্দায়। তারপরে একদিন পুঁটুবাবুর বউ গভীররাতে ডুকরে কেঁদে উঠলেন। পরদিন আমি মর্ণিং ইস্কুলে চলে গিয়েছিলাম। ইস্কুল থেকে ফিরবার আগেই শবযাত্রা সাঙ্গ হয়ে গেছল, কিছুই দেখতে পাই নি। তবে দশবারো দিন পরে ওদের ছাদ আর আমাদের ছাদ জুড়ে বিরাট শ্রাদ্ধ হয়েছিলো। সারাটা দিন রথীন ঘোষ কীর্তন গাইলেন। খুব খরচ করেছিলো সেই শ্রাদ্ধে। খুব ভালো খাইয়েছিলো। সারা পাড়া ধন্যি ধন্যি করেছিলো। যদিও কিছু প্রাচীন লোক সে শ্রাদ্ধে যায় নি। এর পরের বছর পুঁটুবাবুর বুড়ো বাবার খুব অসুখ করল। তখন ওবাড়ীতে আসতেন পুঁটুবাবুর কাকা। সে এক অদ্ভুত দৃশ্য। সকাল সাতটা নাগাদ একটা রিকশা এসে দাঁড়াত সদর দরজার সামনে। রিকশা থেকে নামতেন পুঁটুবাবুর কাকা। শীর্ণ বেঁটেখাটো মানুষ। পরণে একটিমাত্র গামছা। আর কিচ্ছুটি নেই। রিকশা থেকে নেমে, পূর্বদিকের আকাশের পানে চেয়ে নমস্কার করে, কিছুক্ষণ নাক কাল মুলতেন নিজের। তারপরে ধাঁ করে বাড়ীর মধ্যে ঢুকে যেতেন। ঘন্টাদুয়েক ও বাড়ীতে কাটিয়ে ফের বাইরে এসে ঐরকম নাক কান মুলে রিকশায় উঠে পড়তেন। রিকশাওয়ালা অতক্ষণ বসে থাকত বাইরে। বাড়ী থেকে বেরিয়ে উনি কিন্তু সরাসরি নিজের বাড়ী, অর্থাৎ গ্রে স্ট্রীটের পৈত্রিক বাড়ীতে যেতেন না। রিক্সাওয়ালা ওঁকে নিয়ে যেত বাগবাজারের গঙ্গার দিকে। সেখানে গঙ্গাচ্চান করে, তবে বাড়ী ফিরতেন পুঁটুবাবুর কাকা। অবশ্য খুব বেশিদিন এই হুজ্জত ওঁকে পোয়াতে হয় নি। বড়োদাদাকে মৃত্যুর আগে কয়েকমাস সেবা কর্বার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। বড়োদাদাও দেহ রাখলেন, আবার ঘটা করে শ্রাদ্ধ, আবার রথীন ঘোষের কীর্তনে পাড়া কেমন পুজো পুজো মতন হয়ে গেল। এবারের নেমন্তন্নেও কিছু প্রাচীন এলেন না। এর পরে কাকা আর আসতেন না। পুঁটুবাবুর পরে তিনটি বোন। বড়ো ও মেঝ মেয়ে বিবাহিত। বড়োজনকে কোনোদিনো শ্বশুরবাড়ী থেকে আসতে দেয় নি, কেবল দাদা ও বাবার মৃত্যুতে নাকি খুব অল্প সময়ের জন্যে তিনি এসেছিলেন। মেঝজন তার ছেলেকে নিয়ে আসতেন বছরে দুতিন বার। ছেলেটি আবার আমার মতো একই ক্লাস পড়ত। ইংলিশ মিডিয়ামে। তাদের ইস্কুলে হাফিয়ার্লি পরীক্ষার রেজাল্ট বেরোনোর দিন সে মামাবাড়ী এসে হৈচৈ বাধাত। তার পাশের আনন্দে পাড়ার মহাপ্রভু মিষ্টান্ন ভাণ্ডার থেকে মিষ্টির মাক্স কিনে ফিরত ঝি। আরেকবার আসত বিজয়া করতে, এবং থার্ড টাইম ক্রীসমাসের ছুটির সময়। বারান্দায় দাঁড়িয়ে কমলালেবুর খোসা ছাড়িয়ে ছাড়িয়ে নীচে ফেলত। কোনোবারেই রাতে থাকেনি এরা। ট্যাক্সি ডেকে আনত চাকর। ওরা ফিরে যেত ঘন্টা তিন চার কাটিয়ে।
    এরপরে পুঁটুবাবুর মা মারা গেলেন। তখন আর মর্ণিং ক্লাস নয় আমার। ডে স্কুল। কিন্তু স্কুলে যাবো কেমন করে? সারা পাড়া রাস্তা গলির এমুখ থেকে ওমুখ ভিড়ে ভিড়াক্কার। দলে দলে রিক্সা আসছে। এসে চলে যাচ্ছে না। দাঁড়িয়ে থাকছে। প্রতিটি রিকসা থেকে নামছে দুজন করে মহিলা। খালি পা তাদের। কীরকম অদ্ভুত মতো দৃশ্য। পাড়ার একটা লোক ঢুকছে না ও বাড়ীতে। সবাই দূর থেকে দেখছে। ভয় মেশানো কৌতুহলের চোটে দাঁড়িয়ে দেখি। স্কুলে যেতে দেরী হয়ে যায়।
  • সে | 94.75.173.148 | ০৩ অক্টোবর ২০১৫ ১৫:১১686710
  • প্রায় শখানেকের বেশি অদ্ভুত পোশাকের মহিলারা যেন ঘিরে ধরে বাড়ী। বাড়ীর ভেতরে ঢুকে যাচ্ছে, বাইরে বেরিয়ে সে সামনের রোয়াকে বসে থাকছে কেউ, কেউ দাঁড়িয়ে। কেউ রাস্তার একপাশে উবু হয়ে বসে রইল, কেউ ঠেশ দিয়ে দেয়ালে। এদের শাড়ী পরবার ধরণে কি হাঁটা বসা দাঁড়ানোর ধরণে কী যে একটা আছে, কী যে একটা পার্থক্য আমাদের পাড়ার মেয়েদের থেকে, তা কিছুতেই বোঝানো সম্ভব নয়। কেবল সকলে হাঁ করে তাকিয়ে দেখে ওদের। কেউ কেউ বলে, বাড়িউলি মরে গেছে ওদের। তাই এসেছে ওরা।
    আবার দশবারোদিন পরে শ্রাদ্ধ হয়। আবার রথীন ঘোষ। এবার দুদিন ধরে। আরো এক কীর্তনীয়াও এসেছেন। তিনি মহিলা। নাম জানি না। এবার পাড়ার প্রায় কেউই ঢোকে না ঐ শ্রাদ্ধবাসরে। মিষ্টির বাক্সো হাতে নিয়ে নিয়ে আবারো আসছে দলে দলে মেয়ে। আবারো রিক্সার ভীড়। শালপাতায় মুড়ে ফুলের মালাও এনেছে অনেকে। শ্রাদ্ধ শেষ হলে অনেকে চলে যায়, ফের আসে সন্ধ্যেবেলা খাবার দাবারের নিমন্ত্রণে। অদ্ভুতভাবে মায়ের মৃত্যুতে ও শ্রাদ্ধে বড়ো মেঝ কোনো বোনকেই দেখা যায় নি।
    এই মৃত্যুর পরে পাড়ায় যাদের যাদের জানতে বাকি ছিলো, তারাও ডিটেলে সমস্ত জেনে যায় প্রবীনদের নলেজবেস থেকে। উত্তরপশ্চিম কোলকাতার সোনাগাছি এলাকার বেশ কটি বাড়ীর মালকিন ছিলেন এই বৃদ্ধা। প্রথম জীবনে গণিকাবৃত্তিই ছিলো পেশা, অসম্ভব ভালো নাচতে পারতেন, তারপর গ্রাহকদের মধ্যেই একজনের সঙ্গে বিয়ে। ভদ্রপাড়ায় বাড়ী ভাড়া করে বসবাস, কিন্তু আয়ের একটা বড়ো অংশ আসত ও পাড়া থেকে। মোটামুটি নিজেদের গুটিয়ে নিয়েই বসবাস করেছেন চিরটা কাল। শ্বশুরবাড়ীতে কেউ গ্রহন করেনি, এমনকি বাড়ীর ছেলেকেও তারা ত্যাগ করেছিলো। শেষের দিকে কাকাবাবু আসতেন বটে, কিন্তু সে বড্ড গ্লনিময় ব্যাপার। রোজই পাপস্খালনের জন্যে গঙ্গাচ্চান করে তবে ফিরতেন নিজের পৈত্রিক ভিটেয়। মোটকথা একটা বিরাট তল্লাটে এ খবর জানতে কারো বাকি রইল না। জানল না শুধু মেঝমেয়ের পরবর্তী প্রজন্ম। মেঝ মেয়ে আর কোনোদিনো আসেনি ও বাড়ীতে। তার ছেলে বড়ো হচ্ছে, সে যদি জেনে ফ্যালে। আর কখনো তাদের ওমুখো হতে দেখা যায় নি।
  • Nina | 83.193.157.237 | ০৬ অক্টোবর ২০১৫ ০৫:১৪686711
  • বড় ভাল লেখে এই কলম
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ক্যাবাত বা দুচ্ছাই প্রতিক্রিয়া দিন