এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • লিঙ্গান্তরকামী (ট্রান্সজেন্ডার) অধিকার বিল, ২০১৪

    Abhijit Majumder লেখকের গ্রাহক হোন
    অন্যান্য | ১৮ মে ২০১৫ | ২৭৮৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Abhijit Majumder | ১৮ মে ২০১৫ ২৩:৫৬676013
  • লিঙ্গান্তরকামী (ট্রান্সজেন্ডার) অধিকার বিল, ২০১৪

    ২৪শে এপ্রিল ২০১৪ তারিখে রাজ্যসভা দ্বারা অনুমোদিত

    (সারসংক্ষেপ)

    ১) কারা এই বিলের আওতাভুক্ত?

    এই বিলের ধারা ২ (টি) অনুযায়ী, যে ব্যাক্তির লিঙ্গপরিচয় (জেন্ডার) তাঁর জন্মনির্ধারিত লিঙ্গের (জেন্ডারের) থেকে আলাদা, তাকে ট্রান্সজেন্ডার ব্যাক্তি হিসেবে ধরা হবে। এই সংজ্ঞা অনুযায়ী ট্রান্স-পুরুষ ও ট্রান্স-নারী, জেন্ডার ক্যুইর এবং অন্যান্য সামাজিক-সাংস্কৃতিক পরিচয় বিশিষ্ট সম্প্রদায়ভুক্ত ব্যাক্তিরা যেমন, হিজড়া, কিন্নর, আরাবনি, যোগতা ইত্যাদি এই বিলের আওতায় আসবেন। এক্ষেত্রে তাঁরা সেক্স রি-আসাইনমেন্ট অপারেশন (যাকে প্রচলিতভাবে সেক্স চেঞ্জ সার্জারী বলা হয়), হর্মোন থেরাপি, লেজার থেরাপি ইত্যাদি করিয়েছেন কি না তা ট্রান্সজেন্ডার নির্ধারনের ক্ষেত্রে গন্য হবে না।

    ২) এই বিল কি কি অধিকার সুরক্ষিত করে?

    এই বিলের দ্বিতীয় অধ্যায়ে অধিকার এবং প্রাপ্র্য সুবিধার বিষয়টি আটটি অংশে বিবৃত করা আছে। প্রধানত মৌলিক অধিকার যেমন সাম্য, জীবনের অধিকার, বাকস্বাধীনতা, সামাজিক জীবনযাপন এবং অখন্ডতা, পরিবার ইত্যাদির অধিকার এই অংশে নিশ্চিত করা হয়েছে। তার সঙ্গে যোগ করা হয়েছে অত্যাচার এবং নিপীড়নের বিরূদ্ধে সুরক্ষার অধিকার। একটি অংশে বিশেষভাবে ট্রান্সজেন্ডার শিশুদের অধিকার সুনিশ্চিত করার কথা বলা রয়েছে।

    শিক্ষা, রোজগার, সামাজিক সুরক্ষা এবং স্বাস্থ্যর মতন গুরুত্বপুর্ন বিষয়গুলিকে পরবর্তী বিভিন্ন অধ্যায়ে আরো বিস্তারিত ভাবে এই আইনের আওতাভুক্ত করা হয়েছে। যেমন শিক্ষা-সংক্রান্ত অধ্যায়ে ট্রান্সজেন্ডার ছাত্রছাত্রীদের জন্য মূলস্রোতের শিক্ষা (ইনক্লুসিভ এডুকেশান) সুনিশ্চিত করা সরকারের কর্তব্য হিসেবে গন্য করা হয়েছে। একইভাবে বিভিন্ন বয়স্ক শিক্ষা কর্মসূচিতে ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তির দায়িত্বও সরকারের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে।

    উপার্জন সংক্রান্ত অধ্যায়ে ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তিদের জন্য ভোকেশনাল ট্রেনিং এবং স্বনিযুক্তির পরিকল্পনা প্রনয়ন করতে সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই অধ্যায়ে কর্মক্ষেত্রে ট্রান্সজেন্ডার ব্যাক্তিদের বিরূদ্ধে যেকোনও রকম বৈষম্যের বিরূদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয়েছে। এখানে কর্মক্ষেত্রের সংজ্ঞার মধ্যে প্রাইভেট সেক্টরও শামিল রয়েছে।

    সামাজিক সুরক্ষা ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত অধ্যায়ে ট্রান্সজেন্ডার ব্যাক্তিদের জন্য একটি যথাযথ জীবনযাত্রার মান সুনিশ্চিত করার ব্যাপারে সরকারকে বিভিন্ন নীতি প্রনয়ন করতে বলা হয়েছে। বিভিন্ন পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে কম্যুনিটি সেন্টার গড়ে তোলা এবং নিরাপদ পানীয় জল ও শৌচালয়ের বন্দোবস্ত করা, প্রৃথক HIV ক্লিনিক খোলা ও বিনামুল্যে সেক্স চেঞ্জ অপারেশান সহ অন্যান্য স্বাস্থ্য পরিষেবার বন্দোবস্ত করা ইত্যাদি। শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং রোজগারের ক্ষেত্রে ট্রান্সজেন্ডার ব্যাক্তিদের সমাজের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনার কথাও এই অধ্যায়ে বলা হয়েছে। শুধু তাই নয়, সাংস্কৃতিক বিকাশের জন্য ট্রান্সজেন্ডার সিনেমা, নাটক, গান, নাচ ইত্যাদিকে সরকারিস্তরে উৎসাহ প্রদানের কথাও এই বিলে বলা রয়েছে।

    এই অধ্যায়ে ট্রান্সজেন্ডার ব্যাক্তিদের জন্য সীমিতভাবে সংরক্ষনের কথা বলা হয়েছে। সরকারি এবং সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এবং সরকারি চাকুরির ক্ষেত্রে ট্রান্সজেন্ডার ব্যাক্তিদের জন্য দুই শতাংশ করে আসন সংরক্ষনের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। বেসরকারি চাকরির ক্ষেত্রে নিয়োগকারীকে সরকারের তরফ থেকে উৎসাহভাতা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে করে এই বিল প্রযুক্ত হওয়ার পাঁচ বছরের মধ্যে বেসরকারি চাকরিক্ষেত্রে ট্রান্সজেন্ডার কর্মীদের সংখ্যা মোট কর্মীসংখ্যার দুই শতাংশে পৌঁছয়।

    ৩) এই আইন কার্যকরী করার দায়িত্ব কার বা কাদের?

    বেশির ভাগ ক্ষেত্রে, রাষ্ট্রর। এই অ্যাক্ট-এর নানা জায়গায় "appropriate government" এই কথাটি ব্যবহার করা হয়েছে যার আওতায় সরকারি বা সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত সমস্ত প্রতিষ্ঠান চলে আসে। যেকোনও প্রতিষ্ঠানের যেকোন ব্যাক্তিও বৈষম্যবিরোধী আইনের আওতায় আসতে পারেন। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান বলতে বিভিন্ন পরিষেবাপ্রদানকারী সংস্থার কথা বলা হচ্ছে যেমন ব্যাঙ্কিং, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিনোদন ইত্যাদি।

    ৪) এই আইনটি কিভাবে প্রয়োগ করা হবে?

    এই বিলটিতে একাধিক ফোরাম ও সমিতি গঠন করা হয়েছে। সপ্তম অনুচ্ছেদে ট্রান্সজেন্ডার ব্যাক্তিদের জন্য মহিলা কমিশনের আদলে জাতীয় ও রাজ্যস্তরের কমিশন গঠন করার কথা বলা হয়েছে। এই কমিশনগুলি প্রধানত বৈষম্য ও অধিকারহরনের অনুসন্ধান এবং সেই বিষয়ক পরামর্শপ্রদানের কাজ করবে। কমিশনগুলিকে সিভিল কোর্টের সমান ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে যাতে তারা সাক্ষীকে তলব, প্রমানাদি সংগ্রহ ইত্যাদি করতে পারে।

    এই আইন বা অন্য কোনও আইনে ট্রান্সজেন্ডার ব্যাক্তিদের অধিকারহনন বিষয়ক মামালার শুনানির জন্য বিশেষ ট্রান্সজেন্ডার আদালত তৈরী করা হবে। এটি দুভাবে করা হবে। প্রথমত।, প্রতিটি সাব-ডিভিশনে একটি কোর্টকে বিশেষ ট্রান্সজেন্ডার অধিকার আদালত বলে চিহ্নিত করা হবে যেখানে অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে ট্রান্সজেন্ডার সংক্রান্ত মামলারও শুনানী চলবে। দ্বিতীয়ত, প্রতিটি জেলায় অথবা ১০ লাখের বেশি জনসংখ্যাযুক্ত শহরে আবশ্যিকভাবে শুধুমাত্র ট্রান্সজেন্ডার অধিকার রক্ষার জন্য বিশেষ আদালত গঠন করা হবে।

    সবশেষে, দশম অধ্যায়ে অপরাধ এবং শাস্তির কথা বলা হয়েছে। কোন প্রতিষ্ঠান কোনও ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তি বা ব্যাক্তিবর্গের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরন করলে তা সিভিল অফেন্স নয় বরং ক্রিমিনাল অফেন্স বলে গন্য করা হবে। বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের ক্ষেত্রে, এই আইনে দু বছর পর্যন্ত কারাদন্ড হতে পারে।

    Text : Danish Sheikh, Alternative Law Forum

    Translation : Abhijit Majumder

    For More details, please refer

    http://orinam.net/…/rights-of-transgender-persons-bill-2014/
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে মতামত দিন