এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • ইমিগ্রেশন! ইমিগ্রেশন!!

    সে
    অন্যান্য | ০৯ ডিসেম্বর ২০১৪ | ৫৩৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সে | 188.83.87.102 | ০৯ ডিসেম্বর ২০১৪ ২০:০৪656453
  • এখানে তুলে রাখছি।
  • সে | 188.83.87.102 | ০৯ ডিসেম্বর ২০১৪ ২০:০৫656456
  • ইতালীতে বরাবরই খুব চুরি হয়। ভেনিসেও চুরি হয়েছিলো। মিলানে দেখেছি সামনে লোক এসে কথা বলে, ভুলিয়ে ভালিয়ে অন্যমনস্ক করে ব্যাগ ছিন্তাই করতে চায়। আমার নিজের সঙ্গেই এমন হয়েছে। পারেনি যদিও।
    ইল্লিগ্যাল ইমিগ্রেন্ট কিনা সেটা শিওর নই, কিন্তু মিলানে যারা ভুলিয়ে ভালিয়ে চুরি করে তারা আফ্রিকান কন্টিনেন্টের লোক। এভাবে ডেমোগ্র্যাফিক্যালি সেগ্‌মেন্টাইজ করাটা খুবই পোলিটিক্যালি ইন্‌কারেক্ট কিন্তু এটাই তো সত্যি। মেয়ের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।
    ইতালীতে ট্যাক্সি ড্রাইভাররা নতুন টুরিস্ট দেখলে বেশি ঘুরিয়ে বেশি মিটার বাড়ায় সেটাও দেখেছি। কিন্তু মিলানে যা দেখেছি নিজের চোখে সেটায় পোলিটিক্যালি কারেক্ট থাকবার উপায় নেই।
    এমনিতেই এগুলো হচ্ছে ট্যুরিস্ট স্পট। এরা জানে যে টুরিস্টরা সবসময় যথেষ্ট সতর্ক নাও থাকতে পারে।

    আরেকটা জায়গা হচ্ছে দোমোদোসোলা। এটা ঠিক টুরিস্ট স্পট নয়। বাজার। খুব ভালো কোয়ালিটির ঘরোয়া চীজ কিনতে ওখানে গেছি কয়েকবার। সুইস্‌ বর্ডার থেকে অল্প ভেতরে। সেখানেও একই দৃশ্য। তক্কে তক্কে থাকে এরা। যা শুনেছি ওদের গ্যাং আছে। চুরি ছিন্তাই করায়। ইল্লিগ্যাল ইমিগ্রেন্টরা কোনো একটা ডনের হয়ে কাজ করে। কাজই হচ্ছে চুরি করা। কিংবা ব্র্যান্ডেড প্রোডাক্টের ফেক বিক্রি করা। পুলিশ দেখছে কিছুই বলছে না। এদের কোনো আইডি নেই। কেউ এদের আইডি চেক করবে না। বাংলাদেশিও দেখেছি। কয়েকবছর ধরে থাকে, তারপরে কোনো একটা উপায়ে সেজোর্নো (রেসিডেন্শিয়াল পার্মিট) র জন্যে অ্যাপ্লাই করে দেয়। একবার পেয়ে গেলে ব্যাস, তখন এরা মুক্ত। অবাধে যাতায়াত করবে।

    name: d mail: country:

    IP Address : 144.159.168.72 (*) Date:09 Dec 2014 -- 03:41 PM

    ওরে বাবা ব্রাসেলস থেকে ঘুরতে গেছিলাম লাক্সেমবার্গ। সেখানে আমাদের আপিসের দুজনের বিজনেস ভিসা ছিল, তাদের এক পাকিস্তানের আদি বাসিন্দা পরামর্শ দিয়েছিল পাসপোর্ট ফাড়কে কহীঁপে ছুপে যেতে। ওদের নাকি নেটওয়ার্ক আছে, একবছর দুই বছর লুকিয়ে থাকতে সাহায্য করবে। তারপর কোনো উপায়ে ইউরোপে লিগ্যাল বাসিন্দা হয়ে যাওয়া যাবে।

    name: সে mail: country:

    IP Address : 188.83.87.102 (*) Date:09 Dec 2014 -- 03:44 PM

    দারিদ্র্য ও যুদ্ধ ইত্যাদি চলছে এইসমস্ত দেশ থেকে ইয়োরোপে ইমিগ্রেশন বরাবর চলছে। ইয়োরোপিয়ান ইউনিয়নের পলিসি হচ্ছে যে এদের একটা কন্টিন্‌জেন্ট আছে। রিফিউজি নেবার। কোটা আছে। সেই কোটা একসীড করে গেছে বহু আগেই। আর নেবে না। এখন লোক আসা তো এভাবে বন্ধ হয় না। ও চলবেই। যারা আসছে, তারা যদি এমন একটা দেশে যায়, যেখানে ওদের অ্যাসেপ্ট করবে না, তখন অন্য কোনো ই ইউ স্টেট ও ওদের নেবে না। এটাই এগ্রীমেন্ট। এরা অধিকাংশই ইংরিজি অথবা ফ্রেঞ্চ স্পীকিং। কলোনিয়ালিজমের পুরোনো দেশগুলো।
    এখন ইংল্যান্ড আয়ারল্যান্ডে ঢুকতে গেলে খুব সমস্যা। চারিদিকে জল। ইউরোস্টারের টানেলপথে কন্টেনারের ভেতর দিয়ে ঢুকতে হবে। সেখানেও এক্স রে মেশিন বসানো আছে ইংল্যান্ডের বর্ডার পোর্ট এন্ট্রিগুলোতে। সহজ উপায় হোলো বোটে করে ইতালীতে ঢুকে যাও, বা স্পেনে।

    অনেক ঘটনা জানি। বলছি। পোলিটিক্যালি কারেক্ট থাকতে পারব না আগেই বলে দিচ্ছি।

    এগুলো হচ্ছে চক্র। এল্‌ ডোরাডোর লোভে পড়ে কত কী যে হয় তা বলে শেষ করা যাবে না।
    আমার নিজেরই এমন চেনা লোক কিছু আছে। একবার "গো হা" বলে একজনের কথা লিখেছিলাম সম্ভবতঃ। ওঁর স্ত্রী মালায়ালাম ভাষার কবি। রাষ্ট্রপতির হাত থেকে পুরষ্কারপ্রাপ্তা। গো হা নিজেও এমন একজন।
    সেটা অবশ্য অন্য ঘটনা, এতটা ডেস্পারেট নয়। কিন্তু ডেস্পারেশন খুব বেশি হচ্ছে আফ্রিকার দিক থেকে। বিরাট জলসীমা। শয়ে শয়ে লোক নৌকাডুবিতে মরে যাচ্ছে, তবু আসছে। প্রতিবছর। মরোক্কো থেকে নিয়মিত এরকম বোট ছাড়ে স্পেন অভিমূখে। দালালদের প্রচুর অর্থ দিতে হয়। একটা ফ্যামিলি থেকে একজনকে পাঠাতে পারলেই হোলো। ধার দেনা করে এমনকি নিজেদের ফ্যামিলি মেম্বারকে জামিনে রেখেও এরা আসে। ডুবে মরলে সব শেষ। বেঁচে ডাঙ্গায় উঠলে তখন দুটো অপশান। ডিপোর্টেশান বা রিফিউজি স্টেটাস। এদের আইসোলেশানে রাখে। হেল্থ চেক হয়। খাঁচার মতো বেড়া দেয়া টেরিটোরি। অসুখ বিসুখ আছে কিনা। তারপরে এদের তো কোনো কাগজপত্র থাকে না। সঁ পাপিয়ে। এরা নিজেদের আইডেন্টিটি প্রকাশ করে না। দেশের নাম বলে না। দেশের নাম জানলেই তো দেশে ফেরৎ পাঠাবে। দুঃখ কষ্টের গল্প অনেক বেশি বেশি করে বানিয়ে বানিয়ে বলে। যারা বিভাগীয় অফিসার- কর্মচারী তারাও জানে কে সত্যি বলছে কে মিথ্যে। তাদের ট্রেনিং আছে, অভিজ্ঞতা আছে। কিন্তু যতক্ষণ কান্ট্রি অফ ওরিজিন না জানতে পারছে, ফেরৎ পাঠাতে পারছে না। মাসের পর মাস, হয়ত বছর কেটে যাবে। খেতে পরতে দিতে হবে, হাতখরচের টাকা দিতে হবে। এর মধ্যে খবর নেওয়া চলবে। যেগুলোকে জেনুইন কেস হিসেবে বুঝবে তারা অ্যাসাইলাম পাবে। এদিকে বাকীরা? তাদের কী হবে? খুবই গোলমেলে ব্যাপার। এদের মধ্যে অনেকে তখন ঐ ভেতরে ভেতরে খোঁজ খবর নেয়, বিয়ে করে ফ্যালে। তখন তাদের থাকতে দিতেই হবে। শুধু থাকা নয়। পার্মানেন্ট রেসিডেন্শিয়াল পার্মিট। এবং অল্প কয়েক বছর পরেই সিটিজেনশিপ।

    ভারত থেকেও প্রচুর লোক আসে। বাংলাদেশ থেকে আরো বেশি। পাঞ্জাব থেকে যারা আসে তাদের মধ্যে শুধু পুরুষই নয়, প্রচুর সংখ্যক মেয়ে। যারা ফ্লাইটে আসছে, তারা পছন্দের দেশে সরাসরি ঢুকে পড়ছে। বোট, কন্টেনার এসবের ঝামেলা নেই। এদের দিয়েই অবৈধ ব্যবসা চালানো সবচেয়ে সহজ। কারণ এরা লুকিয়ে থাকতে চায়। অনেকরকম ব্যাপারে লিপ্ত থাকে। রান্নার কাজে, ক্লিনিং এর কাজে, ফার্মিং, সোয়েটশপ, প্রস্টিটিউশান, ডোমেস্টিক স্লেভারি।

    name: d mail: country:

    IP Address : 144.159.168.72 (*) Date:09 Dec 2014 -- 04:26 PM

    লিখুন সে।

    এই সিরিজটায় এমন ইমিগ্রেশানের গল্প আছে।
    http://www.sachalayatan.com/tirondaz/18604
    এঁরই আরো একটা সিরিজ ছিল, এখন খুঁজে পাচ্ছি না।

    name: সে mail: country:

    IP Address : 188.83.87.102 (*) Date:09 Dec 2014 -- 04:27 PM

    একটা উদাহরণ দিচ্ছি। জানি কিন্তু পুলিশে যেতে পারবো না। অথচ আমার কাছে প্রমাণ রয়েছে।
    জুরিখ শহরের একটু বাইরে সিলাউ বলে একটা ছোট্টো জায়গা। পাহাড়ি নদী সীল বয়ে চলেছে তিরতির করে। মাঝে মধ্যে ফ্ল্যাশ ফ্লাড হয়। তখন তিরিশ সেকেন্ডের মধ্যে ছুটে পালাতে হবে। সাইরেন বাজলেই। নইলে মৃত্যু হওয়াও অসম্ভব নয়। সাইরেন বাজলেই হাতে থাকবে তিরিশ সেকেন্ড সময়। সেই সিলাউয়ে একটা আদ্যিকালের পুরোনো বাড়ীতে আমার মেয়ের একটা বন্ধু থাকে। ওরা অনেকে মিলে একটা বাড়ী ভাড়া করে রয়েছে। খরচ কম পড়ে এতে। সেই বন্ধুর মুখেই শোনা।
    কাছেই একটা প্রকান্ড বাড়ী। বড়োলোকের বাড়ী। এরা ইন্ডিয়ান অরিজিন। বাড়ীতে স্বামীস্ত্রী থাকেন। বড়ো একটা প্রতিবেশীদের সঙ্গে মেশেন না। ঐ দুজন ছাড়া কারোকে দেখা যায় না ঢুকতে বেরোতে। তা সেই বন্ধুগুলো কী একটা কারণে ঐ বাড়ীতে গিয়েছে। সম্ভবতঃ লোক্যাল কোনো এজেন্ডায় সই সংগ্রহ করতে বা কিছু একটা হবে। বেল বাজাচ্ছে। কেউ খুলছে না। তখন ভেবেছে বাড়ীতে কেউ নেই। হঠাৎ একজন লক্ষ্য করে যে কাচের জানলার আড়ালে কে যন দেখছে। ওরা সেদিকে যেতেই সে ভেতরে সরে যায়। তখন ওরা জানলার কাছে গিয়ে তাকে ডাকে। সে ভয়ে ভয়ে এগিয়ে আসে। জার্মান জানে না। হিন্দি বলছে, আর ভাঙা ভঙা ইংরিজি। বহুকাল সেই ঐ বাড়ীতে ডোমেস্টিক স্লেভ। সে অবশ্য বিশেষ কিছু বলে না। শুধু বলে মনিবেরা এখন বাড়ীতে নেই। পরে আসবেন। যখন তাকে বলা হয় যে মনিব এলে আপনি বলে দেবেন যে আমারা এসেছিলাম, তখন সে বলে যে তা সে করতে পারবে না। মনিবের হুকুম বাইরের কোনো লোকের সঙ্গে কথা বলা বারন। সে পালাতেও চায় না। ওভাবেই রয়েছে বছরের পর বছর। স্থানীয় কমিউন/গেমাইন্ডে র খাতায় সে রেজিস্টার্ড ও নয়। সম্পূর্ণ গণনাহীন একটা মনুষ্যপ্রাণী।
    সে যদি নিজে মুক্তির দাবি করত, তাকে সাহায্য করা যেত। কিন্তু সে সেই মানসিকতায় নেই। ঐ বাড়ীতেই সে কাজ করে চলেছে বছরের পর বছর। মনিব হয়ত দেশে তার পরিবারকে টাকা পাঠাচ্ছে।
    কোনোদিন যদি বড়ো আকারের ফ্ল্যাশ ফ্লাড হয়, ঐ মহিলা বেরোতে পারবে না। সে ঐ বাড়ীতে বন্দী।

    ইতালীতে প্রচুর এরকম সোয়েটশপ আছে। জামা কাপড় ড্রেস ব্যাগ মোবাইলের কভার এইসব বানায়। ফেক জিনিস। চাইনীজ মালিক। চাইনীজ স্লেভ।

    এখানে আমার বাড়ীর খুব কাছেই একটা ইন্ডিয়ান রেস্টোরেন্ট আছে। মহারাণী। সেখানেও ইল্লিগ্যাল ইমিগ্র্যান্টরা কাজ করে। কিংবা ওয়ার্কপার্মিটহীন কর্মচারী। আমি নিজের চোখে দেখেছি। রিপোর্টও করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু রিপোর্ট করলে আমার নিজেরই সমস্যা বাড়বে। বলছি।

    name: . mail: country:

    IP Address : 59.207.222.236 (*) Date:09 Dec 2014 -- 05:05 PM

    আলজেরিয়া আর মরোক্কো থেকে প্রচুর লোক আসে ইঊ তে, এটা জানা কথা। কিন্তু এটাতো সেই পাশের বাড়ীতে রোজ ভাল খাওয়া আর নিজেদের হাঁড়ি না চড়ার গল্প।

    name: সে mail: country:

    IP Address : 188.83.87.102 (*) Date:09 Dec 2014 -- 05:13 PM

    কিছু ব্রিটিশ বন্ধুবান্ধব আছে, এরা ইন্ডিয়ান ফুড খেতে খুব ভালোবাসে। তাদের খাওয়াতে নিয়ে যাই ঐ সমস্ত ইন্ডিয়ান রেস্টোরেন্টে। হয়ত আগে ফোন করে বা সশরীরে গিয়ে টেবিল বুক করে এলাম। সকালের দিকে কাস্টমার নেই। সাফাইয়ের কাজ চলছে। আমি হয়ত ঠিক কোন টেবিলটা চাই সেটা দেখিয়ে বলে দেবো। মালিক তো সবসময় হেঁ হেঁ হেঁ হেঁ করছে।
    তখনো মালিক আসে নি, আমি ঢুকে পড়েছি। দেখি চেয়ারগুলো উল্টিয়ে টেবিলের ওপরে তোলা। ন্যাতা বুলোনো চলছে। আমায় ঢুকতে দেখেই দুড়দাড় সব পালিয়ে গেল। তারপরে আমি আরেকটু ভেতরে ঢুকে দাঁড়াতেই দেখলাম এক এক করে সব এসে আবার কাজে লেগে গেল। খুব হাসছে। যেন কী একটা মজার ব্যাপার হয়েছে। দুজন লোক। একজন একটু মধ্যবয়সী অন্যজন যুবক। আমি তাকে নাম জিগ্যেস করলাম। (নাম পাল্টে লিখছি)।
    মিস্টার প্যাটেল আসেননি।
    না। একটু পরে আসবেন। আর আধাঘন্টা লাগবে। আপনি কি টেবিল বুক করবেন? (যুবক বললেন)
    হ্যাঁ। আপনি এখানেই কাজ করেন?
    হ্যাঁ। আমি স্টুডেন্ট।
    বাঃ। কোন ইউনিভার্সিটিতে পড়েন?
    জেনিভায়।
    জেনিভায় পড়েন! আর জুরিখে কাজ করেন? ক্লাস কামাই হয় না? সেতো অনেক দূর। চার সাড়ে চার ঘন্টাতো লাগবেই এখান থেকে যেতে।
    যুবক লজ্জা লজ্জা মুখে হাসে।
    কী পড়েন?
    ম্যানেজমেন্ট।
    বাহ। কতদিন বাকি আছে? এখন ছুটি চলছে নিশ্চয়?
    সে চুপ করে থাকে। পরে আস্তে আস্তে মুখ খোলে। স্টুডেন্ট হিসেবে জাস্ট নাম লেখাতে হয়। এই ম্যানেজমেন্ট ইন্স্টিটিউটে কোনো ক্লাস হয় না। কোনো ক্লাসরুমই নেই। শুধু স্টুডেন্ট ভিসা এরা ব্যবস্থা করে দেয়। তাহলেই ল্গ্যালী ৪০% কাজ করবার অধিকার হয়ে গেল। তারপরে কে ৪০% কাজ করছে কে ১০০% সেসব কেউ দেখবে না। এরকম করে শয়ে শয়ে "স্টুডেন্ট" আসে এদেশে। আর আছে হস্‌পিট্যালিটি স্ট্রীম। অসংখ্য হোটেল ম্যানেজমেন্ট ইন্স্‌টিটিউট। অধিকাংশই লুৎসার্ণে। এদেরও অস্তিত্ব বড়োজোর একটা কি দুটো ঘর, আবার অনেক ইন্স্টিটিউটের কোনো ঘরও নেই। সবটাই কাগজপত্র। লুৎসার্ণ ও জেনিভা হচ্ছে এই অসদ্‌ব্যবসার আড্ডা।
    এখন এই তথাকথিত "স্টুডেন্ট"রা প্রথমেই এদেশে এসে যেটা করে, সেটা হচ্ছে- বিয়ে। বিয়ে করতে গেলে গোটা তিনেক জিনিস লাগে।
    ১। পাসপোর্ট
    ২। বার্থ সার্টিফিকেট
    ৩। এটা সবথেকে জরুরী - আনম্যারেড সার্টিফিকেট।

    তিন নম্বর আইটেমটা খুব টাটকা হওয়া দরকার। নট ওল্ডার দ্যান অ্যা মান্থ ওঅর টু্‌।
    এবার পাত্র বা পাত্রী খুঁজে নিয়ে, দরদাম করে বিয়ে।

    আগে রেট ছিলো ৩০ হাজার ফ্র্যাঙ্ক। তারপরে রেট বেড়ে যায়। ডাউন পেমেন্ট খুব রিস্কি। ইন্স্টলমেন্টে করলে রেট বেশি। অন্যান্য হাঙ্গামা। ফ্ল্যাটের ভাড়া, ট্যাক্স, অন্যান্য বেনিফিটের খরচ, সুইস্‌ বউ/বর এর হুমকি, ব্ল্যাকমেইলিং, এটা না করলে ডিভোর্স দিয়ে দেবো, এক্ষুনি অ্যাতো টাকা চাই, নাহলেই ডিভোর্স, এইসমস্ত।
    প্রথমত তিরিশ চল্লিশ হাজার ডাউন পেমেন্ট চাট্টিখানি কথা নয়, তার ওপরে রয়েছে পুলিশ চেকিং। পেপার ম্যারেজ জানতে পারলে ঝামেলা হবে। তাই বিয়েটাকে সত্যিকারের বিয়ের মতো দেখাতে হয়। অন্ততঃ সাত বছর। পাঁচ বছরতো খুব সাবধানে থাকতে হবে। আবার যাকে বিয়ে করা হয়েছেম সে ও ডিভোর্স করতে পারলেই বাঁচে। তখন আরেকটা বিয়ের জন্যে সে এলিজিব্‌ল্‌ ক্যান্ডিডেট।
    উঁহু এটা ভেবে বসবেন না যেন যে যারা বিয়ে করছে, তারা সব ইউরোপীয়ান বংশোদ্ভুত সুইস্‌। এরা হচ্ছে অধিকাংশই আগের পোড় খাওয়া ইমিগ্র্যান্ট। প্রথমে নিজেরা পয়সা দিয়ে বিয়ে করেছিলো, এখন পয়সা নিয়ে করছে।
    কথায় কথায় অন্য প্রসঙ্গে চলে গেছি। অবশ্যই এইসমস্ত তথ্য সেই যুবক আমায় দেয় নি। এসব তথ আমি আগে থেকেই জানি।
    তো ঐ অন্য মাঝবয়সী যে ঘর মুছছিলো, সে কোনো কথা বলে না। সে একেবারেই উইদাউট পেপার। পোল্যান্ড অবধি এসেছিলো প্রথমে। তারপরে বাইরোড কন্টেনারে করে এদেশে এসেছে কিন্তু কোনোদিনো রেসিডেন্শিয়াল পার্মিট পাবে না। আবার তিরিশ হাজার ওকে কেউ ধারও দিচ্ছে না। কারন ও চোকাতে পারবে না। এবং ঐ তিন তিনটে কাগজ ওর কাছে নেই। একটা আছে। সেটা হচ্ছে পাসপোর্ট।
    তাহলে উপায়?
    উপায় আছে। ও স্লেভ হয়ে লুকিয়ে রইল। অল্প কিছু কিছু করে টাকা জমালো। এইভাবেই সেই পাঞ্জাবী লোকটিকে দেখে এসেছিলাম। কিন্তু এই কাহিনির একটা হ্যাপী এন্ডিং আছে।

    পরে সে খবর পেয়েছিলাম।
    লোকটাকি সারাটা জীবন ঐ মহারাণী রেস্টোরেন্টে টেবিলের নীচে লুকিয়ে থাকবে নাকি? তাতো হয় না। লোকটাকে আরো অনেকে খবর দিলো ইতালীতে গিয়ে ব্যবস্থা করতে। কীরকম? না ইতালীতে গিয়ে বিয়ে করো। ইয়োরোপিয়ান ইউনিয়ানে অত কাগজের কড়াকড়ি নেই, তিনখানা কাগজ লাগবে না। সে তখন বাই রোড ইতালী চলে গেল। বেরোনোর সময় সুইস্‌ ইমিগ্রেশন তাকাবেও না মুখের দিকে। ঢুকবার সময় চেক করতে পারে। ইতালীতে গিয়ে অনেক অনেক কম খরচে বিয়ে করে সগর্বে বুক ফুলিয়ে সে আবার ফিরে এসেছে মহারাণীতে। কিন্তু এখন সে যেহেতু লিগ্যাল, তাই তার চাকরিটা খোয়া গিয়েছে। লিগ্যাল ওয়ার্কারের যে সমস্ত সোশ্যাল বেনিফিট, যেমন স্যালারী, মালিক আর সেসব দিতে চাইছে না।

    name: সে mail: country:

    IP Address : 188.83.87.102 (*) Date:09 Dec 2014 -- 06:04 PM

    এবার ঐ আনম্যারেড সার্টিফিকেটও জালি হতে পারে। তাই এখন নতুন উপায় বের করেছে এরা চোর ধরতে। মিনিস্ট্রি অফ এক্স্‌টার্নাল অ্যাফেয়ার্স, পাতিয়ালা হাউস, দিল্লি অথবা রিজিওনাল মেয়া থেকে এগুলো অ্যাপোস্টাইল করে আনাতে হবে। কোলকাতায় যেমন রয়েছে একটা আইস্‌স্কেটিং রিঙ্কের উল্টোফুটে।
    এবার আরো গল্প আছে।
    গ্যাঙ্গেস বলে একটা রেস্টুরেন্টের মালিক। কোলকাতার লোক। কিন্তু বাংলা বলেন না। ঊর্দুভাষী। কোলকাতাতেও খুবই পয়সা ওয়ালা পরিবার। বিরাট পারিবারিক ব্যবসা। এলিয়ট রোডে বাড়ি আছে। তিনি দারিদ্র্যের তাড়নায় এবং পোলিটিক্যাল অত্যাচারে অত্তিষ্ঠ হয়ে টুরিস্ট ভিসা নিয়ে এদেশে এসে অ্যাসাইলাম চাইলেন। দেশে গেলেই সরকারের গুণ্ডারা ওনাকে মেরে ফেলবে। যাইহোক এখানকার সরকার খোঁজখবর নিতে লাগল। মিস্টার ইয়ুসুফ (আসল নাম নয়) প্রস্তুত হয়েই এসেছিলেন। ডাউন পেমেন্ট করে বিয়েটা করে ফেললেন। আনম্যরেড সার্টিফিকেট তো ছিলো ই সঙ্গে। ব্যাস। তারপরে আরো পুঁজি যা ছিলো তা দিয়ে একটা রেস্টোরেন্ট খুলে ফেললেন। নিয়মিত দেশে যান (এখন দারিদ্র্যও ঘুচে গেছে দেশে, পোলিটিক্যাল গুণ্ডাও তাঁকে খুন করতে আসে না)। দেশে তখন দেখে শুনে একটি সুন্দরী সুশীলার সঙ্গে ধুমধাম করে বিয়ে হয়ে গেল। ইয়ুসুফ ফিরে আসেন, আবার যান, নতুন বউয়ের জন্যে খুব ঘন ঘন দেশে যান। এই করতে করতে পর পর দুটি সন্তান জন্ম নিলো দেশে। একটি ছেলে একটি মেয়ে। এদিকে সুইস বিবাহের তিন বছর কেটে গিয়েছে আর তিন চার বছর কাটলেই আগে পাস্পোর্ট তারপরে ডিভোর্স বা ভাইসি ভার্সা। দুটো ই নির্বিঘ্নে সমাধা হয়ে গেল।
    এখন দেশে গিয়ে নিজের বউকে আবার বিয়ে করে ম্যারেজ সার্টিফিকেটসহ নিয়ে এলেই ষোলোকলা পূর্ণ হবে। এর মধ্যে আরো একটা রেস্টোরেন্ট হয়েছে। বাচ্চাদুটোকেও এদেশে এনে স্কুলে ভর্তি করতে হবে। শ্বশুরবাড়ী থেকেও চাপ দিচ্ছে ময়েকে কবে নিয়ে যাবে? তারাও খুবই ধনী পরিবার।
    বিয়ের সার্টিফিকেট জমা দিয়ে বৌয়ের ভিসা ইন্‌ভিটিশনের জন্যে অ্যাপ্লাই করতেই আরেক গেরো। নতুন নিয়ম হয়েছে। বাচ্চাদের তিনি দেখিয়েছেন বৌয়ের আগের বিয়ের বাচ্চা। বৌয়ের আগে বিয়ে হয়েছিলো, সেই বিয়ের বাচ্চা। কিন্তু উনি দুই বাচ্চাসহ এই মহিলাকে বিয়ে করেছেন এবং তার বাচ্চাদুটোকেও এখানে আনতে চান। এই মহানুভবতার গল্প শুনতে সুইস ইমিগ্রেশন অথরিটি অভ্যস্থ। এমন গল্প গত পনেরো কুড়ি বছর ধরে কত ইন্ডিয়ান পাকিস্তানি বাংলাদেশি যে বলেছে তার ইয়ত্তা নেই। তাই এখন নতুন নিয়ম তৈরী হয়েছে। বাচ্চাগুলোর ডিএনে টেস্ট হবে। মায়ের ডিএনে তো মিলবেই, কিন্তু এই নতুন বাপের সঙ্গে যেন না মেলে। এই টেস্ট কিন্তু ইন্ডিয়ান অথরিটি করবে না। করবে সুইস অথরিটি, ইন্ডিয়ায়। ওরা আর বিশ্বাস করতে চাইছে না এই পুনঃ পুনঃ মহানুভবতা। তাহলে এখন উপায়?
    ঘাবড়াবেন না। ইন্ডিয়ানদের ব্রেন খুব শার্প। ইয়ুসুফ বললেন যে তিনি একটা দুষ্কর্ম করে ফেলেছেন। একটা নয়, পর পর দুটো। এখানে সুইস স্ত্রী বর্তমানে তিনি দেশে গিয়ে অন্যের বিবাহিতা স্ত্রীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক রেখেছিলেন। সেইভাবেই জন্মেছে দুটো সন্তান। সেইজন্যেই তো সেই মহিলার ডিভোর্স হয়ে গেল এবং এখন নিজের সন্তানদের জন্যেই উনি সেই মহিলাকে বিয়ে করে... ইত্যাদি। নিখুঁত গল্প। এমনকি ইয়ুসুফের সুইস স্ত্রীরও কোনো বক্তব্য এখানে গ্রাহ্য হবে না, ডিভোর্স তো হয়েই গিয়েছে।
    ডিএনে রিপোর্টের সঙ্গে সঙ্গেই বাচ্চাদুটো সুইস পাসপোর্ট পেয়ে গেল, যেহেতু তাদের বাবা সুইস। স্ত্রীও চলে এলেন বাচ্চাদুটোকে নিয়ে। তারপরে এরা সুখে দিন কাটাতে লাগল।
  • সে | 188.83.87.102 | ০৯ ডিসেম্বর ২০১৪ ২০:০৬656457
  • একটা সময় আনএম্‌প্লয়েড ছিলাম। চাকরি চলে গেছে। ছাঁটাই।
    তখন আন্‌এম্‌প্লয়মেন্ট ইন্‌শিওরেন্সে যেতে হয়, ওরা সব নোট টোট করে, ইত্যাদি। সেখানে একটা ইন্ডিয়ান (সুইস পাসপোর্ট) মেয়ের সঙ্গে আলাপ হোলো। ভুল লিখলাম। সুইস পাসপোর্ট অ্যাপ্লাই করেছে তখনো হাতে পায় নি। পেলেই ডিভোর্স করবে। হরপ্রীত কি গুরপ্রীত ঠিক মনে নেই নাম আন্দাজে লিখছি। তখন লাঞ্চ ব্রেক চলছে, আমরা কাফেটেরিয়ায় বসে কফি স্যান্ডুইচ এসব খাচ্ছি। ওরও চাকরি গেছে। কোনো হোটেলে কাজ করত নয়ত হাসপাতালে। তা ও ও ঐ লুৎসার্ণের হোটেল ম্যানেজমেন্ট ইন্স্টিটিউটের ফসল। টোটাল কুড়িলাখ ধার করেছিলো বাপের কাছে। আট বছর হয়ে গেছে। এদেশে এসেছে ছাত্র হয়ে। বিয়ে করেছে। চাকরি করেছে। বাপের ঋণ রিফাণ্ড করেছে। নিজের বিয়ের পেমেন্ট ইন্স্টলমেন্টে দিয়েছে। মেয়েদের অবশ্য কম পেমেন্ট করতে হয় যদি হাজবেন্ডের সাথে একসঙ্গে থাকতে রাজি হয়। এসব ও আমাকে মন খুলে বলেছিলো। কিন্তু তাই বলে এক সংসার ভেবো না। যার যার খরচ তার তার। ফ্ল্যাটের ভাড়া থেকে শুরু করে খাবার দাবার হিজ হিজ হুজ হুজ। ইদানীং দেশ থেকে বাপ খুব চাপ দিচ্ছে আরো টাকার জন্যে। খুবই স্বাভাবিক। ছেলে থাকলেও তো বাপ টাকা চাইত। মেয়েও তো ছেলেরই মতো। ওরা তিন বোন ভাই নেই। ও ই বড়ো। চেষ্টা করছে পরের বোন দুটোকে আনানোর। এক বারে পারবে না, স্টেপ বাই স্টেপ। কিন্তু বাপ অধৈর্য। বলছে হয় পাঠানোর ব্যবস্থা কর, নয় বিয়ের খরচ দে। ও ভেবে দেখেছে যে বিয়ের চেয়ে, বাইরে পাঠিয়ে বিয়ে দেওয়ালে "নিজের পায়ে" বোনগুলো ভালো করে দাঁড়াতে পারবে। সম্পূর্ণ অপরিচিতের সঙ্গে অনেক বেশি খোলাখুলি আলোচনা করা যায়, তাই ও আমার মতামত চাইছিলো। আমার ভিউ পয়েন্ট। এর মধ্যে আবার চাকরিটাও চলে গেছে। খুব চিন্তায় পড়েছে দেখলাম সে।

    আবার সে খুব রেগেও ছিলো বাপমায়ের ওপরে।
    বিশলাখ দিয়েছিলো বাপ। সমস্ত শোধ করেছে। তার বেশিই করেছে। এখনো টাকা পাঠায় নিয়মিত।
    বিশলাখে একটা মেয়ের বিয়ে দেওয়া যায় আজকের দিনে? ঠিক আছে বাপ ওর থেকে বিশ লাখ ধার নিক। ও দেবে। ব্যাঙ্ক থেকে ফ্রেন্ড্স্‌ দের থেকে লোন নিয়ে দিয়ে দেবে। কিন্তু তাতে কি কিছু হবে?
    এই যে এখন ওর তিরিশ পঁয়ত্রিশ বছর বয়স হয়ে গেল, এই যে আট বছর ধরে এতকিছু করে চলেছে, এর কোনো ভ্যালু বাপ মা দিচ্ছে না। তারা বুঝবে কেমন করে?
    অ্যাই তোর কাছে সিগারেট আছে? ডাফালগান আছে? সরদর্দ হচ্ছে।
  • সে | 188.83.87.102 | ০৯ ডিসেম্বর ২০১৪ ২০:২৭656458
  • name: Tim mail: country:

    IP Address : 101.185.15.63 (*) Date:09 Dec 2014 -- 08:12 PM

    এই গল্পগুলো বেশ ইন্টারেস্টিং। আম্রিকাতেও এইসব বিয়েটিয়ের গল্প হয়। দুয়েকটা দেখেছি। তবে উপমহাদেশের গ্র্যাড স্টুডেন্ট ওখানে যেটা করে সেটা হলো বাচ্চা। কম খরচে চার্চ বা হ্যানত্যান সংস্থা থেকে হেল্প নিয়ে গ্র্যাজুয়েট করার আগে বাচ্চাটা করে নেয়। এছাড়া গাইডকে বা কমিটিকে গিয়ে কাঁচুমাচু মুখে বিয়ে করছি একটু দেখবেন এসবও হতে দেখেছি। ঃ-)
    আগে অনেক ইল্লিগাল কোং ছিলো ঐ ম্যানেজমেন্ট ইন্স্টির মত। তাদের খাতায় দেখানো থাকতো অমুক এত টাকা মাইনেয় চাগ্রি করে। এই বলে ওয়ার্ক ভিসা হতো। তারপর পোকিতো চাগ্রি খুঁজতে বেরোতো লোকে। ফ্লেভার্স সিনেমাটায় খানিকটা দেখিয়েছিলো। এখন মনে হয় একটু কমেছে এসব। এই সেদিন ইউক্রেনের এক অধ্যাপক বন্ধু (এখন ইউএস নাগরিক) কে শুনলাম পাঁচঘন্টা ডিটেইন করে রেখেছিলো এমনিই।

    একদিকে এসব হয়, আবার অন্যদিকে লিগালি নিজ যোগ্যতায় খেটে খাওয়া লোকেদের জন্য মমতার প্রিয় গাছ অপেক্ষা করে থাকে।
  • Tim | 101.185.15.63 | ০৯ ডিসেম্বর ২০১৪ ২১:২৫656459
  • আরেকটা গল্প। একটি ছেলে, ধরে নেওয়া যাক নাম রমেশ। দক্ষিণ ভারত থেকে ফার্মেসি পড়তে এসেছিলো। একদিন বললো, আমি তো ফান্ডিং পাইনি, কিন্তু আমাদের ওখানে সবাই বাইরে আসতে চায়, নানা ফিকির আছে। তা, সে তার বাবার নামে কাগজে কলমে একটা ব্যাঙ্ক খুলে সেই ব্যাঙ্কের থেকে লোন স্যাংশন করে নিয়ে ফান্ডিং দেখিয়ে অ্যাডমিশন পেয়েছে। পড়াশুনোর সার্টিফিকেটও কিছু কিছু সন্দেহজনক, কিন্তু ছোট স্কুল এসব তখন অত চেক করতে পারতোনা। যখন কথা হচ্ছিলো তখন সে চাগ্রি খুঁজছে, দুমাস আর ভিসা আছে থাকার বাড়ি নেই বলে একজনের লিভিং রুমে মেঝেতে থাকে ইত্যাদি। কিন্তু খুব স্পিরিটেড তখনও।
    এরপর অবশ্য হ্যাপি এন্ডিং। ক্যালিফোর্নিয়ায় চাগ্রি পেলো একেবারে শেষ মুহূর্তে। রূপকথায় যেমন হয়।

    ওপরে যে বললাম ভুয়ো চাগ্রি দেখিয়ে ইমিগ্রেশন, সেটা যে করেছিলো সেও সেটল্ড। পোকিতো চাগ্রি পাওয়ার পরে বে করেছে। পণ হিসেবে দিল্লিতে একটা ফ্ল্যাট পেয়েছে। মস্তির ছেলে ছিলো সারাদিন পার্টি ইত্যাদি করতো দেখতাম (আমার বিল্ডিং এই থাকতো অন্য ঘরে)। আন্ডারগ্র্যাড বিয়ার পং ইঃ ইঃ। একবার বাড়িতে আগুন লাগিয়ে ফেলেছিলো। সেই গল্পটায় আবার কিছুটা প্রেম ও রুমানিয়ার একজন চেলোবাদক আর একজন ড্রামার আছে তাই কোন টইতে লিখবো ভেবে না পাওয়ায় আপাতত থামলুম। ঃ-)
  • সে | 188.83.87.102 | ০৯ ডিসেম্বর ২০১৪ ২১:৫৫656460
  • গোহা-র গল্পটা এখানে লিখেছিলাম হয়ত। যখন লিখেছিলাম, তখন ভেবেছিলাম হ্যাপি এন্ডিং হয়েই গেছে। কিন্তু মাসখানেক আগে গোহা কে নিমন্ত্রন করেছিলাম। সে এসে যা বলল তাতে আমার মাথা ঘুরে গেছে।
  • lcm | 118.91.116.131 | ১০ ডিসেম্বর ২০১৪ ১০:০০656461
  • ফ্লোরেন্সে বিখ্যাত ডুয়োমো - গম্বুজে চড়ে নেমে এসেছি। সামনের চত্বরে গিফ্‌টের দোকান। ইতালিয়ান মালিক বিশাল ভুঁড়ি নিয়ে একটা চেয়ারে বসে বিয়ার খাচ্ছে। একটি বাংলাদেশী ছেলে একাই দোকান সামলাচ্ছে। আমরা দোকানে ঢুকছি দেখে মালিক ইতালিয়ান ভাষায় কি একটা ছেলেটাকে চেঁচিয়ে বলল মনে হল। ছেলেটি বাঙালী জেনে খুশী হল মনে হল, বলল - নিয়ে যান, আমি শস্তায় দিয়া দিব, ও জানবে না, যতই চেঁচাক। বলল সাত-আট মাস হল ওখানে কাজ করছে। বললাম, গম্বুজের ওপর থেকে দারুণ ভিউ। ছেলেটি খুব করুণভাবে বলল - আজ অবধি ওটার ভেতরে যাওয়া হয় নাই, কপালে থাকলে যাবো একদিন, কিন্তু এই মালিক যেতে দিলে হয়।

    প্যারিস থেকে ভেনিস-এর রাত্রীব্যাপী ট্রেন। রাতে খাবারের জন্য ডিনার কারের দিকে যাচ্ছি। বগির শেষে দেখি একটি ছেলে জুবুথুবু হয়ে গুটিয়ে দাঁড়িয়ে আছে - দেখে ভারতীয় উপমহাদেশীয় মনে হল। খাবার নিয়ে ফেরার সময় দেখলাম টিকিট চেকারের সঙ্গে কি কথা হচ্ছে ওর, বোঝাপড়া হচ্ছে মনে হল। রাতে টিকিটমাস্টার এলেন, পাশপোর্ট আর টিকিট ওর কাছে জমা দিয়ে দিতে বলল, রাতে যখন সুইৎজারল্যান্ডে ট্রেন ঢুকবে বা ভোর রাতে ইতালিতে ঢুকবে তখন আর ঘুমে বিরক্ত করবে না, টিকিটমাস্টারই চেকপোস্টে সব চেক করিয়ে রেখে দেবেন। কেমন যেন ঐ ছেলেটার কথা মনে হল। ও কি সারারাত ওখানেই থাকবে, ওর কি কোনো রিজার্ভেশন নেই। বেরিয়ে বগির কোনে দিয়ে হাঁটতে গিয়ে দেখি - টিকিটমাস্টরে গভীর পরামর্শ দিচ্ছে আর বাথরুমটা দেখাচ্ছে, আমাকে দেখে খুব বিরক্ত আর সন্দিহানভাবে তাকালো - আমি চটজলদি বাথরুমে ঢুকে পড়লাম।

    ভেনিসে গন্ডোলা চড়া হচ্ছে। এক জায়গায় নামা হল। সেখানে একটা মার্কেট। দুপুরের দিক। একটা ফলের দোকানে একটা ছেলে বসে আছে। দোকান মানে অস্থায়ী দোকান। কথায় কথায় জানা গেল বাংলাদেশী। বাংলায় কথা শুরু। বলল, ইতালির কোন এক শহরে পড়তে এসেছে - ম্যানেজমেন্ট (সে-র লেখায় ম্যানেজমেন্ট পড়তে আসা দেখে মনে পড়ল)। এটা ওর দাদার ফলের দোকান। কিন্তু ছেলেটিকে দেখে খুব প্রাণচঞ্চল মনে হল, ট্রেনের ছেলেটির মতন ভয়ে গুটিশুটি নয়। কথায় কথায় জানালো, পার্মানেন্ট রেসিডেন্সির চেষ্টা করছে। ইমেইল ঠিকানা দিল।

    প্যারিসে আইফেল টাওয়ারের সামনের চওড়া রাস্তা। সন্ধেবেলা। হঠাৎ হৈ চৈ। যারা রাস্তায় ছোট আইফেল টাওয়ার বিক্রি করতে বসেছিল, বেশীর ভাগই ভারতীয় উপমাহাদেশের (মানে দেখে মনে হল), তারা হঠাৎ তাদের চাদরের মধ্যে সব টাওয়ার নিয়ে গুটিয়ে রাস্তার ওপারে। কিন্তু কেবারে পালিয়ে গেল না, দাঁড়িয়ে রইল। মুহূর্তের মধ্যে একটি পুলিশের গাড়ি বাতি টাতি জ্বালিয়ে হাজির। দুটি পুলিশ গাড়ি থেকে নেমে ওপারের বস্তা হাতে ছেলেগুলির দিকে তাকালো, ওরা কয়েক ফুট পিছিয়ে গেল। ফিরে আসার সময় দেখি আবার ছেলেগুলি বিক্রিবাটা শুরু করে দিয়েছে। মনে পড়ে গেল, আশির দশকে ধর্মতলায় এস এন ব্যানার্জি রোডের মুখে এমন দেখতাম - কলকাতা পুলিশের গাড়ি এলেই হিন্দি-উর্দুভাষী হকারেরা তাদের সামগ্রী গুটিয়ে রাস্তার ওপারে, খানিক বাদে পুলিশ চলে গেলে আবার এসে হাজির।
  • . | 59.207.222.236 | ১০ ডিসেম্বর ২০১৪ ১০:৪৯656462
  • রোমা টার্মিনি স্টেশন থেকে বেরিয়ে বাঁয়ের দিকে তাকালেই দেখতে পাবেন বাংলায় লেখা আছে - এখানে বাঙালী খানা পাওয়া যায়। সমস্ত গলিটি বাংলাদেশী দোকানে ভর্তি - ইন্ডিয়ান খাবারের দোকান নামে চালায়। আমাদের খেতে দিয়েছিক যে ওয়েটারটি তার পাড়াতুতো দাদার দোকান। সে নাকি ১মিল ইউরো দিয়ে দোকানটি কিনেছে!! এর এখনও ভিসা নাই ঠিক্ঠাক, তাই দাদার দোকানেই কাজ করে, একবার কাগজ ঠিক হয়ে গেলে নিজেই দোকান দেবে বললো। ডিনার শেষে সে আমাদের সঙ্গে উজিয়ে ৩ স্টেশন এসে হোটেলে পৌঁছে দিয়ে গেল। যদিও সহ্ধর্মিণি সারা রাস্তা ভয়ে ছিলেন "ও" কেন এসে আস্তানা দেখে যাচ্ছে পরে যদি আবার সাহায্য চাইতে আসে?
  • lcm | 118.91.116.131 | ১০ ডিসেম্বর ২০১৪ ১০:৫৩656463
  • এহে, ছিল নাকি! টার্মিনি থেকে রাতে হেঁটে বেরিয়েছি, খেয়াল করি নাই। অবশ্য তখন ট্যাক্সি নেবার তাড়া।
  • ASG | 192.73.66.34 | ১০ ডিসেম্বর ২০১৪ ১১:১৮656454
  • টার্মিনির বাইরে রাস্তাটার নাম প্রিন্সিপিয়া আমেদিয়া। পুরোপুরি বাংলাদেশী দের আড্ডা । দারুন ঢাকাই পরোটা পাওয়া যায় ।
  • যম | 181.1.248.47 | ১১ ডিসেম্বর ২০১৪ ১৯:২২656455
  • ১৬ কোটি বাংলাদেশির মধ্যে ১২ কোটি মনে হয় অন্য দেশে অনৈতিকভাবে আছে :) বাংলাদেশের প্রকৃত জনঘনত্ব এখন খুব কম হওয়া উচিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খেলতে খেলতে মতামত দিন