এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কে | 113.245.197.178 | ২৮ মে ২০১৩ ২১:৫৫609660
  • রিইউনিয়ন - কৌস্তভ ভট্টাচার্য

    ডিপার্টমেন্টাল রিইউনিয়নে অনেক বছর পর আসা নীহারিকার।

    কলেজ ছেড়ে বেরিয়েছে তা প্রায় সাত বছর হয়ে গেল।প্রথমবার এসেছিলো বেরোবার পর পরই।এটা দ্বিতীয়বার।আসলে নীহারিকা আসতে চায়না প্রজ্বলকে এড়াতে। কি দরকার পুরোনো গল্পের মুখোমুখি হয়ে খারাপ লাগাটা জাগিয়ে তোলার।

    তাও এবার এলো। আসলে স্বাতী এমনভাবে বললো যে না আসাটা বড়ো খারাপ দেখায়।

    - 'আয় না নীহা।এখন বিয়ে থা হয়ে গেছে তোর। মেয়ে স্কুলে পড়ে - এখনো পালিয়ে বেড়াবি?'

    - 'পালিয়ে বেড়ানো নয় রে। আসলে একটা আনকম্ফর্টেবেল সিচুয়েশনে কে পড়তে চায়।'

    - 'আরে বাবা তোর দিক থেকে তো কোনো গন্ডগোল কোনোকালেই ছিলোনা।তুই কেন বেকার বেকার নিজের ওপর চাপ বাড়াচ্ছিস?'

    - 'তাও।'

    - 'আর একটা বিটার এক্সপিরিয়েন্সই কি সব? আমরা কেউ নই? বন্ধুত্বের দাম নেই কোনো?'

    অগত্যা।

    না পৌঁছে দেখল প্রজ্বল আসেনি তখনো।প্রজ্বলকে বাদ দিয়ে ওদের পুরোনো গ্রুপটা গল্প করছে একজোট হয়ে - দীপ্তেশ, সন্দীপন, রাকা, স্বাতী আর ফিরোজ। এরমধ্যে রাকা এখন আবার মিসেস দীপ্তেশ।

    রাকা নীহারিকাকে দেখে চেঁচিয়ে উঠলো

    -'নীহা, ইউ ডুমুরের ফুল, নাও দিস ইজ কল্ড আ রিইউনিয়ন'।

    স্বাতী বললো

    -'আমি সত্যিই ভাবতে পারিনি তুই শেষমেষ আসবি'।

    -'ওয়েল - আই অ্যাম আনপ্রেডিক্টেবল ইউ সি'।

    ওদের এই গ্রুপটায় প্রজ্বল ছিলো সবচেয়ে মিয়োনো মেম্বার। উত্তর কোলকাতার পুরোনো বনেদী পরিবারের ছেলে। কিন্তু যখন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে এলো তখন বাড়ির অবস্থা বিশেষ ভালো না। চুপচাপ থাকতো বরাবরই।অথচ সে যে এমন একটা কান্ড ঘটিয়ে ফেলবে কে জানতো!

    সেটা কলেজের লাস্ট ইয়ার। প্রজ্বল যাকে বলে চিরকালই বাবা-মার ভালো ছেলে।তরল কি ধোঁয়া কিছুতেই বিশেষ আসক্তি নেই। আসলে দোষটা দীপ্তেশরই। বেচারাকে চেপে ধরে বেশ খানিকটা রাম খাইয়ে দিয়েছিলো। সেদিন প্রজ্বল আধমাতাল অবস্থায় একটাই কথা বলে গেছিলো-

    'নীহাকে বলিস আমি কোনোদিন ওকে বিরক্ত করবোনা'।

    সমস্যাটা হচ্ছে মাল খাওয়ার গ্রুপে শুধু ওরা কয়েকজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু বাদে বাইরের লোকও ছিলো।তো কথাটা চাউর হতে বেশি সময় লাগেনি। ক্যান্টিনে নীহারিকা ঢুকলেই একটা আওয়াজ আসতো কোথাও না কোথাও থেকে-

    'নীহারিকা প্রজ্বল তোকে কোনোদিন বিরক্ত করবেনা'।

    তারপর লাস্ট সেমিস্টার সামনে থাকায় ব্যাপারটা আর বেশি দূর গড়ায়নি।

    প্রথম রিইউনিয়নে প্রজ্বল নীহারিকাকে কিছু বলতে এসেছিলো। নীহারিকার থমথমে মুখ দেখে কিছু না বলেই চলে গেছিলো।

    এবারের রিইউনিয়নে জুনিয়রগুলো কিন্তু ব্যবস্থাপত্র করেছে বেশ ভালোই। ক্যান্টিনের চালু ক্যাটারার দিয়ে না করিয়ে বিজলী গ্রীল এনেছে। তাই রাত্তিরের ডিনারটা ভালোই হলো।

    তারপর বেশ একটা ভালো ব্যান্ড এনেছিলো। তার সাথে রাকা আর দীপ্তেশ বেশ খানিকটা কোমর দোলালো। শুধু এইচ-ও-ডি প্রথম দিকের বক্তৃতাটা ছাড়া কেউই বিশেষ বোর হয়নি।

    নীহারিকা আর ডিজে নাইটের জন্য দাঁড়ায়নি। মেয়েটাকে শ্বাশুড়ির কাছে রেখে এসেছে।

    স্বাতী ওকে গাড়ি অবধি তুলে দিতে এসেছিলো।

    নীহারিকাকে গাড়িতে তুলে স্বাতী বললো

    -'থ্যাঙ্কস নীহা। থ্যাঙ্কস ফর কামিং'।

    নীহারিকা হাসলো।

    -'দেখলি তো বেকার বেকার চাপ নিচ্ছিলি'।

    -'বেকার বেকারই বটে'।

    -'বাড়ি পৌঁছে একটা কল করিস। রাত হয়েছে।'

    -'তুইও করিস একটা। একটা কথা-'

    -'কি?'

    -'ও সত্যিই এলোনা!'
  • ঐশিক | 132.181.132.130 | ২৯ মে ২০১৩ ১১:৫৩609661
  • বেশ লাগলো
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লড়াকু প্রতিক্রিয়া দিন