এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • শিবাংশু | 127.197.248.203 | ২৭ ডিসেম্বর ২০১২ ০৯:১৯579329
  • শত জলঝর্ণার....

    ইন্টারকমে সুজিত ওর বস সুরেশ খানওয়ালকরকে খুঁজছিলো একটা বাজার পর থেকেই। দুচারবার রিং হলো, কেউ তুললো না। কোন মিটিঙে আছে, কে জানে। আড়াইটা নাগাদ ওপাশ থেকে গম্ভীর গলা, সুরেশ হিয়ার... সুজিত স্বরটা একটু নরম করে বললো, বস, ওয়ান রিক্যুয়েস্ট... ইয়েস, টেল মী...
    আজ তিন অঠারাহ পকড়না হ্যাঁয়, সাম পার্সোনাল ওয়র্ক...
    এনি প্রব্লেম?
    নো, নো, নো সাচ থিং , টেবিল খালি কর দিয়া ...
    ওকে, নো প্রবলেম, গো...

    কব্জির দিকে তাকিয়ে দেখে ঘড়ি বলছে' দুটো চল্লিশ। চার্চগেট থেকে নরিম্যান পয়েন্টে ওর অফিস তুলসিয়ানি চেম্বার হেঁটে ঠিক বিশ মিনিট। এক্ষুনি বন্ধ করতে পারলে সোয়া তিনটের মধ্যে চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম পৌঁছে যাবে ঠিক। পাশের টেবিলের মকরন্দ রাঘোবা মুলে লাঞ্চ থেকে এখুনি ফিরে এলো।
    ম্যাক, আই অ্যাম অফ ফর টুডে...
    ক্যা জি বিবি বুলায়া হ্যাঁয় ক্যা...
    নহি বাবু, মেরা বিবি অভি বুলাতিউলাতি নহি হ্যাঁয়...
    জিয়ো... বলে বুড়ো আঙুল দেখালো ম্যাক।

    ২.

    লিফটের কাছে এসে সুজিত একটু এদিকওদিক দেখে নেয়। কেউ দেখছে নাতো? ওর তো রোজ সন্ধেবেলা আট উনিশ ধরার রুটিন। এতো ভোর ভোর বেরোতে কেমন যেন দ্বিধা হয়। তবে মুম্বাই এমন একটা জায়গা যেখানে কেউ কারুর ধার ধারেনা। শুধু নিজের মনেই বাধা। নীচে নেমে ফুল স্টিমে হাঁটতে থাকে সুজিত। এখান থেকে চার্চগেট পর্যন্ত শহরটা ভারি সুন্দর সাজানো। উঁচু উঁচু অফিস বাড়ি, পার্ক, হেজঘেরা বাগান, হাওয়ায় ভাসা নারকেল গাছ দিয়ে ল্যান্ডস্কেপিং করা মুম্বাইয়ের বাণিজ্যকেন্দ্রের হৃদপিন্ড এখানে। রোজ যখন বাড়ি ফেরে অন্ধকারে শুধু গাড়িঘোড়া বাঁচাতে বাঁচাতেই স্টেশন পৌঁছে যায়। ফিরে দেখা হয়না কিছুই। আজকেও তাড়ায় আছে, কিন্তু দেখতে ইচ্ছে করছে ম্যাক্সিমাম সিটির ম্যাক্সিমাম সবুজ আর রাণীসাহেবার স্থাপত্য। মনটা কি একটু ভালো আছে তার?

    ৩.
    তিনটের পর অনুরাধার তেমন কাজ থাকে না কিছু। বুবলু ফিরে আসে আড়াইটার মধ্যে। তার ব্যাগবোঝা সামলে স্নান করিয়ে খাবার টেবিলের কাজ তিনটের মধ্যে সারা। এই সময়টা অনেকক্ষণ ঘুমায় বুবলু। ছেলেটার খুব খিদে পায় ইশকুল থেকে ফিরে। নিজে থেকে সব কিছু খেয়ে নেয় ইশ্কুলের গল্প করতে করতে। ছেলেটা বড়ো লক্ষ্মী তার। ওর বন্ধুদের মায়েরা যখনই কথা বলে, তখনই বাচ্চাদের খাওয়ানো নিয়ে কতোশতো অভিযোগ। নিজের ক্লাস ফোরের বাচ্চাকে কতো পরিণত লাগে তার। ওর বাবার মতো-ই যেন কুল, প্র্যাক্টিক্যাল। সুজিতের কথা মনে আসতেই কেমন যেন একটা তিক্ততা বোধ করে সে। বারো বছর হলো তারা বিবাহিত। তার আগেও তিন বছর ধরে মেলামেশা। নিজেদের পছন্দের বিয়ে যে এভাবে দুপক্ষের বাড়িতেও মসৃণ মেনে নেওয়া হয়, এটা একটা উদাহরণ হতে পারে। সুজিত একটু চাপা ছেলে, সেল্ফ মেড। গ্রামের ছেলে, মফসসলে পড়াশোনা। প্রথম কলকাতায় আসা শিবপুরে পড়তে। মহানগরের পালিশটা লাগতে সময় লেগেছে। তবে এখনও বোধ হয় পুরো লাগেনি। খাওয়ার পর শব্দ করে ঢেঁকুর তোলা থেকে পায়ে চটি গায়ে কোটজাতীয় পোষাক নির্বিবাদে পরে ফেলতে পারে। অনুরাধারা বহুপুরুষের কলকাতাবাসী । লা মার্ট-প্রেসিডেন্সি মার্কা চমকটা বেশ প্রকট থাকে তার গৌরী উজ্জ্বল ত্বক, কোঁকড়া বাবরি চুল আর ঈষৎ অহংকারী ওষ্ঠে। হয়তো তাকে মানিয়েও যায়। পদস্থ বাবার একমাত্র সন্তান সে। পৃথিবীতে কিছু চাওয়ার পর একটা না পাওয়ার সম্ভাবনাও যে থাকতে পারে, বিয়ের আগে সে ধারণা তার ছিলোনা। বেয়াইবেয়ানকে দেখে তার বাবামা খুব একটা আশ্বস্ত ছিলেন না ঠিকই, কিন্তু সুজিত তাঁদের হতাশ করেনি। তাঁরা নিশ্চিন্ত ছিলেন আর অনুরাধা ছিলো সিম্পলি মুগ্ধ। সুজিতের সতত মার্জিতপনার কাছে সমর্পিত না থাকার অভ্যেসকে তার মনে হতো গ্রামীণ সরলতা। একটা ভানহীন বুদ্ধির ছায়ায় আশ্রয় খুঁজে পেতো সে। বারো বছরের খরা সেই শ্যামল ছায়াকে নিয়ে চলে গেছে, বেঁচে আছে শুধু রুক্ষ রোদের নির্মমতা। শেষ বর্ষার ধারাপাতের শব্দ তার কাছে এখন দূরগামী ট্রেনের বাঁশি। শোনা যায়, ছোঁয়া যায়না আর।

    ৪.

    সুজিত চারটে সিঁড়ি লাফিয়ে উদগ্রীব চোখে খুঁজতে থাকে চার নম্বরে বোরিভিলি লেগেছে কি না? নাহ ট্রেন এখনও ঢোকেনি, কিন্তু এতো ভিড় কেন? প্ল্যাটফর্মে পৌঁছে জানতে পারে গোরেগাওঁর পর ট্র্যাকশন ছিঁড়ে দুটো বোরিভিলি ফাস্ট ক্যান্সেল হয়ে গেছে। তিনটে আঠেরো মাহিম থেকে আন্ধেরি, সব ঠেকে থামবে, এমনকি ভিলে পার্লেতেও। মানে গোরেগাওঁ নেমে বাস ধরে বাড়ি, পুরো সোয়া দুঘন্টা, তাও যদি আরো কিছু লাফড়া না হয়। আবার মেজাজটা খিঁচড়ে গেলো। আজকাল বড্ডো দ্রুত মেজাজ খারাপ করে ফেলে সে। আজ থেকে দশ বছর আগে যেটা কল্পনাতীত ছিলো, সেই অনুরাধার উপরেও প্রায়ই চেঁচামেচি করে। অনুরাধা প্রায়শঃই জবাব দেয়না। ঠোঁট চেপে থাকে। তার এই ব্যবহার আরো অসহ্য মনে হয় সুজিতের। ইগনোর করছে, আমাকে? বেশ কিছুক্ষণ চলার পর দাঁত চিপে অস্ফুটস্বরে অনুরাধা বলে ওঠে, ঝিকড়তলার অভ্যেস এখনও যায়নি। ঝিকড়তলায় সুজিতের গ্রামের বাড়ি। ওর মনে হয় মাথাটা যেন ফেটে পড়বে। পৃথিবীকে এমন অন্ধ অরন্তুদ কখনও মনে হয়নি তার, ভাবেওনি কখনও কোনোদিন এরকম মনে হবে। জীবনের সেই স্বাদ, সুপক্ক যবের ঘ্রাণ হেমন্তের বিকেলের....

    কোন কুয়াশায় হারিয়েছে পাকদন্ডির পথরেখা, মনেই পড়েনা।

    ৫.

    বুবলু শুয়ে পড়লে অনুরাধা একটু গা এলিয়ে শুয়ে থাকে। টুকটাক পড়াটড়া, গান শোনা, ফেসবুক, এই সময়েই বাঁধা। আজ কিন্তু তার কিচ্ছু করতে ইচ্ছে করছে না। আজ এগারো-ই মার্চ, বারোবছর আগে সে এইদিন সুজিতের সহধর্মিণী হয়েছিলো। 'সহধর্মিণী' শব্দটা কোনও উত্তাপ আনেনা তার মনে বহুদিন। যেন অভ্যেসবশে কপালের উপরে চুলের ফাঁকে অবহেলাময় পরে নেওয়া প্রায় অদৃশ্য সিঁদুরবিন্দু। না পরলেও হয়, তবু পরার ছল। সহধর্ম হওয়ার চাইতে বড়ো ছল কি আর কিছু আছে? জানলামই না ধর্মটা কী ছিলো শেষ পর্যন্ত। তার আবার 'ধর্মিণী'। শীতল মনস্কতায় ভাবতে চায়, সম্পর্কটি কি মৃত? শুধু শবদেহ বয়ে নিয়ে চলা। সুজিতের কোম্পানি দেশের একটা বৃহত্তম নির্মাণসংস্থা। পেশাগত দিক দিয়ে সুজিত এর মধ্যেই আশামাফিক স্বীকৃতি পেয়েছে। অর্থকরী কোনও অপ্রাচুর্য নেই। সময়ের উদ্বর্তনে উঠে আসা মধু তাদের অনেক রয়েছে। কিন্তু মননের মধু? সুজিত কবিতা পড়লে তাকে কবিতাটা পড়তে বলতো হয়তো।

    প্রথম তাদের দেখা হয় বাংলা সঙ্গীতমেলায়। শিবপুরের ব্লেজার গায়ে অনেকগুলি বালক মেলার বাইরে ধোঁয়া ফুঁকতে ফুঁকতে মেয়ে দেখছিলো। গান শোনার ইচ্ছে তাদের বিশেষ ছিলো এমন বোধ হয়নি।অনুরাধার বন্ধু পৃথার তখনকার দেহরক্ষী প্রতিমও ছিলো সেখানে। সেই সূত্রেই ওদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে দুদন্ড কথা। কয়েকটি দুর্দান্ত কলকাত্তাই সুন্দরী মেয়ের সামনে পড়ে সুজিতের নার্ভাস ধোঁয়া ছাড়া অনুরাধার এখনও মনে আছে। ছেলেটার চোখে ছিলো বিকীর্ণ বিস্ময় আর সরল মুগ্ধতা। নাহ, কোনো সর্বনাশ ছিলোনা, কিন্তু অনুরাধার ভিতর কেউ পঞ্চমের তারে একটা ঝংকার তুলেছিলো। তার অনুরণন রয়ে গিয়েছিলো বহুক্ষণ। পৃথার কাছে সুজিতের খোঁজ চাইলে সে খুব নৈর্ব্যক্তিকভাবে বলেছিলো, এহ্হ, আর কাউকে পেলিনা। দেখবি গোলাপফুল আঁকা টিনের সুটকেস হাতে বিয়ে করতে আসবে। অনুরাধা শুধু হেসেছিলো, প্রতিবাদ করেনি। আজ ভাবে এতো আত্মবিশ্বাস ছিলো তার অতো অল্পবয়সে। আজ কী হয়ে গেলো? এতো বিপন্ন কেন বোধ করে সে সারাদিন?

    বিয়ে হয়ে যাবার পর সে প্রশ্ন করেছিলো সুজিতকে। আচ্ছা, বলোতো, সেদিন তোমরা অতো ভালো গান না শুনে বাইরে শুধু মেয়ে দেখতে দাঁড়িয়েছিলে কেন? সুজিত বলেছিলো, দ্যাখো ঐ সব কালচার মিনিস্ট্রিতে আমার কোনও ঠেক নেই। ঐ সব এরিয়া তোমার জন্য।
    শুধু কালচার....?
    নাহ, হোম মিনিস্ট্রিও তোমার, আমাকে শুধু ফাইনান্সটা দিও ব্যস, আর কিছু চাইনা..

    তখন মনে হয়েছিলো নিজের সীমাবদ্ধতা নিয়ে যার ভিতর এতো আত্মবিশ্বাস তার কাছে চোখ বুজে নিজেকে সমর্পণ করা যায়। করেও তো ছিলো। এমন নয়, সুজিত করেনি। অসম্ভব ভরসা, গর্ব, পরিপূর্ণতা পেতো সে অনুরাধার কাছে এসে। রাস্তায় লোকজন অনুরাধার দিকে ফিরে চাইলে তার মুখে ঝিলিক দেওয়া হাসি দেখে অনুরাধার বিরক্তিও তার পরম উপভোগ্য। অথচ সব নিয়ে অনুরাধার ভালো লাগাটাও প্রচ্ছন্ন থাকেনি কখনও। কলকাতা ছেড়ে মুম্বাই আসার সময় অনুরাধার অনিচ্ছে তাকে হয়তো বাড়ির থেকে দূর একটা ভালো চাকরি থেকে নিরস্ত করতে পারতো। কিন্তু অনুরাধা তার মানুষটিকে স্থিত, সফল, সম্পন্ন দেখতে চেয়েছিলো। দেখেও ছিলো তো । গৃহকোণের সোফায় বসে অলস ভঙ্গিতে সন্ধেবেলা ঈষৎ সুরাপান করতে করতে সঙ্গিনীর সঙ্গে বয়স্যালাপ। বাতাসে নিখিল বন্দোপাধ্যায়ের গারায় পঞ্চম আর শিশুদের কলধ্বনি। বিবাহিত জীবনের স্বাদ, কোথাও রাখেনি কোনও খাদ....

    আবার বছর বারো পরে তার সঙ্গে আজ যখন দেখা হয়, তখন সে একটি রাত্রি সাড়ে দশটায় বাড়িফেরা মহানগরের ক্লান্ত নাগরিক। জীবনের সব রস ঝরে গেছে জীবন টিকিয়ে রাখার বিড়ম্বনায়। ভালো লাগার জায়গাগুলি সে আর মনে রাখতে পারেনা। শুধু মনে থাকে একটা ভুল হয়ে গেছে কোথাও। অনুরাধা আর তার কেউ নয়।

    ৬.

    অনেকদিন থেকেই ভাবছে সে। একদিন মুখোমুখি বসে কথা বলবে সুজিতের সঙ্গে। এভাবে একটা সম্পর্ক বয়ে বেড়ানো সম্ভব হচ্ছেনা। বড়ো ব্যবহৃত মনে হয় নিজেকে, ক্লান্ত বঞ্চিতবোধ হয়। যতোদূর সে জানে সুজিতের কোনও অন্য নারীর প্রতি সংলিপ্তি নেই। রাত পর্যন্ত বসে তরল আগুনের নেশা করা ছাড়া বাড়ির চারদেওয়ালের ভিতর সে আর কিছুতে তৃপ্তি পায়না। বিচ্ছিন্নতা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, সে অনুরাধার শরীর স্পর্শ করলে নারীটি চমকে ওঠে, আড়ষ্ট হয়ে যায়। বাধা দেয়না, নির্বাধও হয়না। কতোদিন ধরে তাদের খেলে যাওয়া চেনা শরীরের অচেনা খেলা আর টানেনা। সুজিত জোর করেনা। সে ধর্ষণ করতে শেখেনি। শুধু কষ্ট পেতে শিখেছে। অনুরাধা আলিঙ্গনের মধ্যে চোখ বুজে চুপ থাকে, সুজিত বুঝতে পারে নারীটি আর তার কেউ নয়। বিনিদ্র ঘুমে আজি যে রজনী যায়, ফিরাইবে তায় কেমনে?

    ৭.

    ট্রেনটা দ্রুত প্ল্যাটফর্মে এসে থেমে যায় এবং কয়েক হাজার মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়ে দরজার দিকে। প্রথম প্রথম সুজিত যখন মুম্বাই এসেছিলো, বুঝতেই পারতো না কীভাবে ট্রেনের ভিতর নিজেকে গলিয়ে দিতে পারবে। দাঁড়িয়ে থাকতো তাকিয়ে। একের পর এক ট্রেন চলে যেতো, সে দাঁড়িয়ে থাকতো শূণ্য প্ল্যাটফর্মে। পলকের মধ্যে আবার ভিড়, আবার ট্রেন। কিন্তু জমাট মানুষের পাঁচিল পেরিয়ে ভিতরে ঢোকার অভ্যেস হতে বেশ সময় লেগেছিলো। এখন তো আর অসুবিধে হয়না তেমন। কিন্তু মুম্বাইয়ের জীবনযাত্রার সব চেয়ে বড়ো পাপ এই লোক্যাল ট্রেনের যাত্রা। কিন্তু বিকল্পও তো নেই। নিজের গাড়ি ? হায়, সন্ধেবেলা নরিম্যান পয়েন্ট থেকে গোরেগাওঁ ওয়েস্ট রুদ্ধশ্বাস ট্র্যাফিকে আড়াই ঘন্টার নরক যাত্রা। তার চেয়ে অন্ততঃ ট্রেন ভালো। ভিতরে বসার জায়গা পাওয়া গেলোনা, তবে দুটো বেঞ্চির মধ্যে পা গলানোর ফুটখানেক জায়গা নসিবে ছিলো। তাই বা কম কী? ট্রেনটা চলছে থেমে থেমে। এইভাবে বোরিভিলি পৌঁছোতে মনে হয় সন্ধে হয়ে যাবে। আন্ধেরি পৌঁছোতে একটু সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারলো সুজিত। নাহ, মনে হয় ততোটা দেরি হবেনা। অনুরাধা বোধ হয় বেশ অবাক হয়ে যাবে। একদিন যেটা স্বাভাবিক ছিলো, আজ সেটা নাটকও মনে করতে পারে। যাকগে, যা ভাববে ভাবুক । সুজিত যা ভালো বুঝেছে সেটা করবে। গোরেগাওঁতে নেমে প্ল্যাটফর্মে অভ্যেস মতো পার্স, মোবাইল চেক করে নিতে গিয়ে চমকে উঠলো। পার্সটা নেই , নিশ্চয় পিকপকেট হয়ে গেছে। খুব কিছু টাকাপয়সা ছিলোনা, কিন্তু দরকারি কাগজপত্র ছিলো ওর মধ্যে। ট্রেনের মান্থলিটা ছিলো। বুকপকেটে হাত দিয়ে দেখে কিছু টাকা রয়েছে সেখানে, কাজ চলে যাবে। বাইরে এসে স্টেশনবাজারের ফুলের বিপণীতে দাঁড়ায়। একটা ভালো ফুলের তোড়া নিয়ে যাবে আজকে। যদি অনুর মেজাজ ভালো থাকে, তবে কোথাও গিয়ে একটা মোমবাতির নৈশভোজ করবে আজ। ভুলেই গিয়েছে সে একদিন বেঁচে ছিলো। এখনও রয়েছে, তবে বেঁচে আছে কি না সতত মনে থাকেনা। মালাকারকে নির্দেশ দিয়ে একটা সিগারেট ধরালো সে। তার ঘড়িতে তখন ছ'টা বাজছে।

    ৮.
    অনুরাধার যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে তাদের বিয়ের তারিখ আজও সুজিত মনে রাখে কি না। তার বিয়েতে বন্ধু অরিজিৎ জীবনানন্দের কাব্যসংগ্রহ উপহার দিয়ে নামপাতায় লিখে দিয়েছিলো, 'সবিতা, মানুষজন্ম আমরা পেয়েছি, কোনও এক বসন্তের রাতে'। অনুরাধা ভাবে, সেই বসন্তের রাতগুলো পথের পাতার মতো তাহার বুকের কাছে পড়ে আছে। অনেক ঘুমের ঘোরে ভরিবে কি মন ... নাহ, মন শুধু কলসির জলের মতো গড়িয়ে নিঃশেষ, আর ভরেনা। আচ্ছা, যদি অরিজিৎকে বিয়ে করতাম, কেমন হতো? নায়কোচিত বহু গুণ ছিলো ওর, আর ছিলো অনুরাধার চোখের দিকে সঘন চাউনি। তার সেই চোখদুটো একটু জ্বালা করে ওঠে।

    ল্যান্ডলাইন ফোনটা বাজছে। অনুরাধা চোখ তুলে দেওয়াল ঘড়িটার দিকে তাকায়, সাড়ে পাঁচটা। কে ফোন করছে এখন? ল্যান্ডলাইনে ফোন আসা তো প্রায় বন্ধই হয়ে গেছে। অলস গলায় বলে, হ্যালো... ওপাশ থেকে একটা অচেনা পরুষ কণ্ঠ বলে, মিসেস চৌধুরি? ইয়েস, ... সরি ,ম্যাঁয় আরপিএফ ইনস্পেক্টর ধোলে বোলতা হুঁ..
    অনুরাধা অবাক হয়, আরপিএফ ? হাঁ, বোলিয়ে..
    ম্যাডাম, সরি, আপকি হাজবেন্ড সুজিত চৌধুরি কা এক অ্যাক্সিডেন্ট হো গয়া..
    অনুরাধা প্রায় আর্তনাদ করে ওঠে, অ্যাক্সিডেন্ট..? কব , কঁহা, ক্যয়সে হ্যাঁয় উয়োহ..?

    একঘন্টা পহলে, সেন্ট্রাল স্টেশন মেঁ ট্রেন সে গির গয়ে থে... জেব সে উনকা পার্স মিলি.. সরি, হি ইজ নো মোর... আপ অভভি জিআরপি থানা মাহিম মেঁ .....

    ইনস্পেক্টর কিছু বলছিলো, কিন্তু অনুরাধা কিছু শুনতে পাচ্ছিলো না। রিসিভারটা হাত থেকে পড়ে গেছে সিনেমার মতো। বিছানায় পড়ে ছিলো সে, চেতনায় শুধু জেগেছিলো ছোটোবেলায় প্রথম শোনা মোড় ঘুরলেই পুরীর সমুদ্রের গর্জন....

    ৯.

    ফুলের বাস্কেটটা দারুণ বানিয়েছে। ভাগ্যিস বুকপকেটে কিছু টাকা রয়ে গিয়েছিলো। সুজিত জানেনা এটা দেখে অনুরাধা খুশি হবে কি না, কিন্তু তার খুব খুশি লাগছে। চার রঙের গোলাপ মাঝখানে, চারদিকে পাতা আর ঝাউ। ফুলগুলো একেবারে ফ্রেশ, কী সুন্দর মোহন মৃদু সুবাস তাদের। সুজিতের মনটা ভেসে যায় বারোবছর আগে তার বরাসনে বসে থাকার স্মৃতির গালিচায়। গোলাপের সিংহাসন ছিলো সেখানে, এরকমই মেদুর পুষ্পগন্ধময় , সময়ের উদ্বর্তনে উঠে আসা বধূ, সব ছিলো তার...

    আজ একটা অটো নিয়েছে সে। ফুলের ঝুড়ি নিয়ে বাসে যাওয়া যায়না। দশ মিনিটের মধ্যে পৌঁছে যাবে। ফ্ল্যাটবাড়ির সামনে নেমে অটোর পয়সা মেটায়। যাক, কুলিয়ে গেলো শেষ পর্যন্ত। নয়তো বাড়ি থেকে এনে দিতে হতো। একেবারে বেইজ্জত।

    লিফটে উঠে আসে, দরজার সামনে এসে বেল টেপে। একবার, একটু থেমে দুবার। কোনও সাড়া নেই। অনুরাধা অনেকবার বলেছে, একটা ডুপ্লিকেট চাবি সঙ্গে রাখতে। কিন্তু সুজিতের জেদ। আমি কি ব্যাচেলর নাকি, তালা খুলে ঘরে ঢুকবো ? আমি বাড়ি ফিরলে দরজা খুলে কাউকে দাঁড়াতে হবে। অনুরাধা ঘরের দরজা রোজ খুলে দেয়, কিন্তু মনের জানালাটা বন্ধই থাকে। একটু চিন্তিতভাবে আবার বেল টিপলো সুজিত। ঘুমিয়ে পড়েছে নাকি? কিন্তু তবুও এতোবার বাজানোর পর তো শুনতে পেতো। এবার মনে হলো কেউ দরজার দিকে আসছে। শিথিল হাতে ভিতর থেকে লকটা খুললো কেউ। রোজকার মতো-ই দরজার সামনে দাঁড়িয়ে অনুরাধা। কিন্তু কী হয়েছে ওর। বিস্রস্ত, বিপর্যস্ত, বিধ্বস্ত। অসম্ভব আকূতিতে কেঁদে চলেছে। সুজিত চিন্তিত হয়, বুবলুর কিছু হলো নাকি? কিছু প্রশ্ন করার সুযোগ দিলোনা সেই নারী। একটানে ঘরের মধ্যে টেনে নিলো সুজিতকে। বুকের মধ্যে ঝাঁপিয়ে পড়ে অস্পষ্ট সজল স্বরে বলতে লাগলো, তোমার কী হয়েছে, কী হয়েছে তোমার? আমাকে কেন এতো কষ্ট দিলে?

    সুজিত বুঝতে পারেনা, সত্যিই কী হয়েছে। অনুরাধাকে জড়িয়ে ধরে সোফায় এসে বসে। অনু তুমি এমন করে কাঁদছো কেন? আমার তো কিছু হয়নি। নাহ, তুমি আমায় ছেড়ে চলে যাবে ভেবেছো.. আরে ধ্যুৎ, কোথায় যাবো তোমায় ছেড়ে? তা তুমি যদি নেহাৎ তাড়িয়ে দাও, তবে চলে যাবো যেদিকে দুচোখ যায়.... দেবে নাকি? তীব্রভাবে আঁকড়ে ধরে অনুরাধা, তাদের ওষ্ঠ মিলিত হয় বহুদিন পরে, বহু আষাঢ়ের ওপার থেকে বর্ষা নামে শত জলঝর্ণার মতো.... কোথায় ছিলো এতো জল, তারা ভুলেই গিয়েছিলো।

    ফোনটা আবার বেজে ওঠে। সুজিত ধরে, হ্যালো, ওপাশ থেকে একটি কণ্ঠ বলে ওঠে, ম্যাঁয় ইনস্পেক্টর ধোলে বোলতা হুঁ, আপ কব তক আইয়েগা? রিসিভারটা কেড়ে নেয় অনুরাধা। কান্না কাতর স্বরে বলতে থাকে , কভি নহি, কভি নহি জায়েঙ্গে উওহ....
  • ঐশিক | 132.181.132.130 | ২৭ ডিসেম্বর ২০১২ ১০:৫৪579331
  • খুব ভালো লাগলো শিবাংশুদা
  • ranjan roy | 24.99.69.175 | ২৮ ডিসেম্বর ২০১২ ০২:০৭579332
  • শিবাংশু,
    কী আশ্চর্য ছোট ছোট তুলির আঁচড়ে আঁকা হয়েছে বিবাহিত জীবনের বিপন্নতা, একলা নিঃসঙ্গ হয়ে যাওয়ার বোধ
  • kumu | 132.160.159.184 | ২৮ ডিসেম্বর ২০১২ ১১:৫১579333
  • শিবাংশুর লেখা অতি সুন্দর,ছোট্ট ছোট্ট তুলির টান।
    পাপী মন,সবচেয়ে ভাল্লাগলো গল্পের শুরুতে অনায়াসে ছুটি পাওয়াটা।
  • sch | 132.160.114.140 | ২৮ ডিসেম্বর ২০১২ ১৫:২৯579334
  • যিনি "হরিতকী ফলের মতন" লেখেন তার কাছ থেকে প্রত্যাশা অনেক অনেক বেশি থাকে। ঈশ্বর তো প্রতি খেলায় শতরান করেন

    ভাষা, বিন্যাস অনবদ্য কিন্তু ছোট গল্পের (এটা ছোট গল্প ধরেই পড়লাম) প্রত্যাশিত সাসপেন্স অনেক আগেই শেষ। ৭ নম্বরে
    "গোরেগাওঁতে নেমে প্ল্যাটফর্মে অভ্যেস মতো পার্স, মোবাইল চেক করে নিতে গিয়ে চমকে উঠলো। পার্সটা নেই , নিশ্চয় পিকপকেট হয়ে গেছে" - ওখানেই কিন্তু পরবর্তী সাস্পেন্স খুন হয়ে গেছে। চমকে ওঠাতেই শেষ করা যেত। তাহলে হয়তো টানটা অনেক চাবুক হয়ে থাকতো। তবু পড়ে যেতে হল ভাষার অমোঘ গুনে।

    শেষে " রিসিভারটা কেড়ে নেয় অনুরাধা। কান্না কাতর স্বরে বলতে থাকে , কভি নহি, কভি নহি জায়েঙ্গে উওহ...." দরকার ছিল কি খুব? তপন সিনহার অন্তর্ধানের শেষের দিকে সৌমিত্রর একটা লম্বা দায়ালগ গোটা সিনেমার বারোটা বাজিয়ে দিয়েছিল। অনেক সময় সাইলেন্স ইস মোর poignant
  • ranjan roy | 24.96.67.135 | ২৯ ডিসেম্বর ২০১২ ০৮:১৬579335
  • শিবাংশু আমার প্রিয় লেখক। ওঁর লেখা একাধিক বার পড়ি। দ্বিতীয় পাঠে sch এর বক্তব্যের সাথে অনেকটাই একমত হলাম, বিশেষতঃ গল্পের শেষভাগে। যদিও আমাকে মুগ্ধ করেছে দাম্পত্যের বিপন্নতার ছবি।
  • শিবাংশু | 127.197.239.1 | ২৯ ডিসেম্বর ২০১২ ১০:৪৫579336
  • ঐশিক, রঞ্জন, কুমু,

    কী বলি...? ধন্যবাদ...? ঃ-)

    sch,

    যে ব্যাপারটা আমাকে কুণ্ঠিত, অথবা লজ্জিত করছে, তা হলো যে অভিনিবেশ নিয়ে আপনি লেখাটি পড়েছেন, আমার তরফে সেই অভিনিবেশ ছিলোনা। একটা তাৎক্ষণিক লেখা। এক বন্ধুর কাছে তার আরেক বন্ধুর বিচ্ছেদকাহিনী শুনে লিখে ফেলা । অন্যায় যেটা হয়েছে, এই পাতায় দেবার আগে কিছুদিন ফেলে রাখা যেতো। যেটা আমার অভ্যেস। আপনার পর্যবেক্ষণ সঠিক ও আমিও এরকমই মনে করি। তবে একটা কথা, হেনরীয় চমক সচেতনভাবেই এড়িয়ে গিয়েছি, কারণ এই 'গল্প'টার কেন্দ্র অন্য কোথাও রাখতে চেয়েছিলুম।

    ধন্যবাদ। ঃ-)
  • kumu | 132.160.159.184 | ২৯ ডিসেম্বর ২০১২ ১২:১২579337
  • সসংকোচ নিবেদন,কেমন হয় যদি অনামা নিহত ব্যক্তির জন্য একটু বেদনা থাকে,শেষ পর্যন্ত ফোনটা কোথাও তো সত্যিই যাবে-
  • | 24.97.18.185 | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ১৭:২৪579338
  • বাঃ পড়তে ভাল লাগল।

    একদম শেষের অনুরাধার কথাগুলো অপ্রয়োজনীয় মনে হল। ওটা না থাকলেই ভাল হত। শেষটা কিঞ্চিৎ দুর্বল করেছে গল্পটাকে। 'শেষ হয়ে হইল না শেষ' ব্যপারটা ঠিক আসে নি আর কি।

    sch এর সাথে চমক নিয়ে আমি দ্বিমত। সব গল্পে, বিশেষতঃ ছোটগল্পে চমক বা একটা ধাক্কা থাকাটা বাঞ্ছনীয় এমনটা আমি বিশ্বাস করি না।
  • nina | 79.141.168.137 | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ০৫:০৫579330
  • ঠিক জমল না---আইসক্রীমটা!
    ছোটবেলায় মা বাড়ীতে আইসক্রীম বানাত---কখনও লেবু কখনও আম কিম্বা ভ্যানিলা এসেন্স----উদ্গ্রীব হয়ে থাকতাম ---ঠান্ডা নরম মিষ্টি স্বাদেগন্ধে বেশ মা মা ---কখন বাটিতে পাব--চামচ ডুবিয়ে খাব--আঃ
    কিন্তু মাঝে মাঝে ঠিক জমতনা আইসক্রীমটা--কেমন যেন ভেতরে একটু বরফের কুচির মতন জলের স্বাদ এসে যেত-----মানে কখনো কেমন একটা আনইভন হত---কোথাও বেশ স্মুথ ক্রীমের স্বাদ অবর কোথাও একটু জোলো কচকচে---
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। দ্বিধা না করে প্রতিক্রিয়া দিন