পছন্দ | জমিয়ে রাখুন | পুনঃপ্রচার |
বাহ !
ভার্তুরোর খাতা
~~~~~~~~~~~~~
৬.
জ্বর ধরে আছে যেন বাড়ি ভাড়া ,
চাপা নক নক
মাঝরাত ছিঁড়ে ছিঁড়ে
ভ্রূ প্লা কিং ছুটে
যাচ্ছে ট্রেইন! শ্যাফ্ট -বেয়ারিং -
শ্যাফট , জালাহাল্লি
জাংশন জুড়ে , কে
আছে কোথায়! ভালো বলছি -
বকুলদি , অগাস্টে চলে আয় ,এই দেশে
পুজো অব্ধি টেনে দেওয়া প্রচণ্ড খিটেল ।।
৭.
সমস্ত রক্তের রঙ লাল
নয় , যেমন আমার দাঁতে
রঙ্গনের
বোঁটা , কী ব্যাপার ,
দরজা খোলো -
আবার এসেছে ওই , ছেলে ?
বাড়িঅলা ডেকে যায় , ফিরিঅলা নজর
এড়িয়ে , ক্রমশঃ বিনয়ে তাকে জল
দিই , রক্তসুরাসার
তপ্ত মাখন রঙে , অতিথি বিলাসে
মাতে ফুলেদের মা-টি ।।
৮.
হলুদ টী-এর মত ধান
ক্ষেত আলে আলে,
কালাচ বাতাস
হলুদ টিয়ের মত ধান
ক্ষেত , আলে আলে
কালাচ বাতাস
সিলিংএ হাঁড়ির মত ডিসি ফ্যান
নীচে হানা বাড়ি ।।
৯.
নতুন লিখব কেন , কেনই
বা সোনামুখ করে সে
খাবেনা,
অবেলার ছন্দরস
দিনান্তে ঢেকে রাখা
গরিবের দুইমাত্রা রুটি
প্রতীক মুখুটি আসে,আমি
গেলে, জানি,
আত্তপি নাই কিছু, ছোট
বউ, শুধু আমাদের
গন্ধ
সাবানখানি তাহাকে দিওনা।।
১০.
দুইটি বিন্দুর মাঝে, ফিতে
ফ্যালে অমর মুস্তাফি ;
ছত্রিশ হাজার ফ্রেম,
ঘরময় ব্রোমিনের ঝাঁঝ ,
স্টুডিও কথাটা খুব চলতেচে
আজকাল, রান্নাঘরবাদ্রুম কী
চাই বলেন ,
বলব কী, খুলিময়
ছত্রিশ হাজার ফ্রেম,
ভোকাটা পায়ের নীচে
গলা পীচ, বাড়ি ফেরা এ যাত্রা হলনা।।
১১.
ডাকাতিয়া মুখ ঢেকে, রমণী
কেনেন লালফুটি , বালিয়াড়ি
খোলা আজ আধ বেলা,
এরূপ নিয়মে, কন্ঠমনি
জ্বলে যায়, জ্বর কত
প্রশ্নটি মেলেনা , এত রং
চেপে থেকে , তবেই না তক্ষক হয়েছি।।
১২.
তিনটি হাঁসের ডিমে
তৃতীয়টি ভেসে ওঠে,
সহমৃতা দ্বিতীয় প্রথম -
অহো কী নক্ষত্রযোগ;
সাধ ছিল, লালে লাল
ভুলে ভাসমান ধীসামান্য
সুখ -
গিগলিত শিশু নয়, নয় নিবোধত
নারী, শুধু এক্টু ঝোল মেখে
একেলার মধ্যযাম, তাও
সব নষ্ট হল, সাল্ফারে, চিলে নিলো
ঘুম, উঠনে পা খুলে বসে কী বিশ্রী
হেসে গেল পদ্য মুখপুড়ি ।।
এক একটা দিন
এক একটা দিন বড় খারাপ যায়
যে ইলিশটা আমি ষোলশো করে নিলাম
অন্য কেউ তা চোদ্দশো তে পেয়েছে শুনলে,
ফেসবুকে দেওয়া মারকাটারি ছবিতে
দিনশেষে পঞ্চাশের কম মন্তব্য এলে
অথবা কারও বিচ্যুতি দেখে বেদম না ঝাড়লে।
এক একটা দিন বড় প্রফুল্ল লাগে
বাজারে সকলের সামনে পুরনো পাওনাদার
কলার চেপে একটা থাপ্পড় না কষালে।
শুধু নিজের জন্যই বেড়ে উঠছিল
ফুটপাথ ও পাশের দেওয়ালের মাঝখানে
ধুলোটে বেনামি চারা।
এই ঋতুতেই টাইমকলের মতো রোদ পৌঁছয়
দিনে একঘন্টার জন্য ওখানে আজকাল।
যাদের বাড়ির দেওয়াল, তারা বোগেনভেলিয়ায়
জল দিলে দু-এক ফোঁটা উচ্ছিষ্ট এও কুড়িয়েছে।
শরতের ঝকঝকে রোদ্দুর উৎসবে
রুগ্ন শীর্ণ চারা দুটো মাত্র ফুলে ঝলমল।
কেউই দেখে নি -
ছ'টা মাত্র পাতা ও দুটি ডাল ওই ফুল দুটো নিয়ে
গত শনিবার সারাদিন আনন্দ বিহ্বল।
১৩ নভেম্বর
কী যেন বলতে এসেছিগাছের পাতার রঙ মুছে যাচ্ছিল দ্রুতকলকাতা সলজ্জ কুয়াশায় ঢেকে দিচ্ছিলখানাখন্দগুলো পশম চাদরে - তাতে ভেসে ভেসেবাস যাচ্ছিল দেখেছে সকলে।
কী যেন সবাই বলাবলি করে বাসেসমস্যা, পুরনো কথা দেখা হ'লে অনেকদিন পর। কাছাকাছি থাকলে পরের দিনের কথা - কি রান্না হবে?কাল আসবি কি কলেজে?
বাসটি রাস্তার চেনা, কাল বাস আসবে না বলেছেরাস্তা জানলা থেকে মুখ ঘোরাল ভিতরেঅন্য বাস কি চলে না রাস্তায়বা এই বাস অন্য রাস্তা নেবেমাপসই লাগসই কিছু?
সে কলকাতার, রেশম কুয়াশায় মুখ ঢাকাপশমে বুনছে বসন্ত বাসাটি একটাই দুই মাথাপিছু।
ভাগ্যিস, বিখ্যাত নই।
তাই ভাবি, মরার পরেও
এক আধটা কুয়াশা ভেজা কাঁধ
হয়তো বা জুটে যাবে। বৎসরান্তে তারা
যেহবান্ধবা বলে গেয়ে উঠবে গান ,
নদী বইবে ছলাৎছল, যেভাবে বয়,
মেন মে কাম অ্যান্ড মেন মে গো
ভাগ্যিস বিখ্যাত নই।
আমার জন্যে কোনো রাজনৈতিক বা অরাজনৈতিক
শকুনের, শকুনির
প্রতীক্ষা থাকবে না।
কিছুক্ষণের মধ্যেই
তুমি আর কিছুক্ষণের মধ্যে আসবে
আর কিছুক্ষণ পরেই ভুলে যাব
কোন শব্দ কোথায় বসতে চেয়ে ঠেলাঠেলি
দূরের শহরগামী শেষ বাসে -
কত রাত হয়ে যাবে - শেষ স্টপে যেতে
সাইকেল স্ট্যান্ডের লোক
ঘুমচোখে তালা খুলে দেবে বটে -
যদি আগের দিনের মতো রেগে
হাওয়া খুলে দিয়ে রাখে -
বাসে জায়গা পেয়েছে ঠিক
হাওয়াও অঢেল
চাঁদের আলোতে কালো কালো গাছের ছায়া
ঘুম নিয়ে আসে বলে -
তুমি চলে এলে….
যখন ভিতরে ঝড়, জিভের কারেন্ট নুনে
চিড়িক চিড়িক স্পার্ক
আলোটা বদলাচ্ছিল
সি আই টি মোড়ে -
সামনের মিনিবাস থেকে নামছে তো নামছেই
প্রিয় নৌকারা মাছধরা সরঞ্জাম সমেত
ওই তো হাবুল কাকা, গদাধর, নেতাই, জগন্নাথ,
নিমাইটা কী তালঢ্যাঙা হয়েছে রে বাবা
পল্টুর চুল অত ছোট - তাই তো
পরেশ দা চলে গেল দেখতে দেখতে চার মাস।
পিছনের বাসের পাদানিতে আলতো
আটকে রয়েছি, স্টপ এলে নেমে দাঁড়াই
বাসটা চললে ফের উঠি -
চোখে মুখে ফুরুফুরে হাওয়া -
প্রতি স্টপে আলো বদলায়
নামে ওঠে মানুষ, সরঞ্জাম
জিভে কারেন্ট নুন এত ঝড় বৃষ্টি ভিতরে
আমার আর কি বা আসা যাওয়া….
হেমন্তের গাছে, শুকনো পাতারা সব
ট্যাবলেট ক্যাপস্যুল হয়ে আছে
কুয়াশায় গোলাপি সিরাপ
টবে শিশু চন্দ্রমল্লিকা ডালিয়ার চারা
চেটে চেটে খাচ্ছিল টনিকের শিশি
তার মোড়কে জিরাফ।
অসুখ চলে গিয়েছিল ওষুধের প্রকোপে
এখন বিসুখের সময়ে
সারারাত্রি গায়ের চাপা, অস্বস্তি নিরুপণের
যাবতীয় অধ্যাবসায়
ভেদ করে মৌখিক পরীক্ষায় ডাকে প্রস্তুতিহীন
"ঘুম হচ্ছে না, খিদে নেই, কী একটা অস্বস্তি যেন"
সারাক্ষণ, অনিয়ন্ত্রিত, একটানা বিসুখের নোটিস
দিন-রাত্রি এমনকি ঠিকানা-বিহীন…
গারদের ভিতর যখন একটা জানলা অবধি নেই
স্বপ্নে উড়ন্ত বিমানের ল্যাজ থেকে
কালো বিশ্রী ধোঁয়া আকাশে লাটপাট খায়
সামনেই সমুদ্রতট, সেখানে কত রকমের পাখি
বালি রঙের কুকুরেরা ঢেউয়ের সঙ্গে খেলে।
একটা কথা নেই যখন তখন রেডিওতে
নানান ভাষার সংবাদ, টিভিতে কুচকাওয়াজ
ও সারা পৃথিবীময় অজস্র ট্যমেটো স্বেচ্ছায়
খামোখা থেঁতলে গিয়ে রাস্তা লাল করে দিচ্ছে
বিসুখের গারদের ভিতর ইচ্ছে ও অনিচ্ছে...
কাল পার্স খুঁজে পাচ্ছিলাম না,
তার আগেরদিন অনুষঙ্গ শব্দটা -
আড্ডা মারতে গেছিল বলে ময়লা
পারিপার্শ্বিক দিয়ে কাজ চালাতে হ'ল
যার বাইরেটা ব্যবহারে জীর্ণ - ভিতর অন্ধকার।
পছন্দ হয় না, বাচ্চা ছেলে পেয়েছে নাকি
যে যখন খুশি হাত বুলিয়ে লেখাবে
লিখিত অক্ষরের ওপর। ভেবেছেটা কি?
নৌকা ছেড়ে দিয়েছি - সে তো স্বেচ্ছায় নিরুদ্দেশ
যাব বলে - তাও বারবার ঘরে কেন টেনে আনে?
পার্স হারিয়ে যায়, চশমা খুঁজে পাই না
গাছে জল দেওয়াও হয়না সময়ে….