এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • ছিল রুমাল হয়ে গেল বেড়াল - পরিবর্তন 

    SB
    অন্যান্য | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১০ | ৯২৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • SB | 115.117.198.0 | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১০ ১৫:৩৩459290
  • এ লেখার শিরোনামটি যাঁদের কাছে দুর্বোধ্য ঠেকছে তাঁদের জানাই প্রথম প্রথম আমারও এমনটাই হয়েছিল। অচেনা শব্দগুলি একেবারে কানের ভিতর দিয়ে মরমে নয় হৃৎপিণ্ডে গিয়ে ধাক্কা দিয়েছিল। কিন্তু পরে সব ঠিক হয়ে যায়। ঠিক হয়ে যায় কারণ শ্যাম আমাকে সবকিছু জলের মতো পরিষ্কার করে বুঝিয়ে দিয়েছিল।
    রুমালের বেড়াল হয়ে যাওয়ার কাহিনী এমনিতে অনেকেরই জানা। সেই যে প্রচণ্ড গরমে খোকা গাছতলায় শুয়ে ঘুম দিচ্ছে, এমন সময়ে ঘাম মোছবার জন্য ঘাসের ওপর রাখা রুমালটা খুঁজতে গিয়ে শোনে, ‘ম্যাও’। কী আপদ, রুমালটা ম্যাও করে কেন? না দেখা গেল, রুমাল আর রুমালই নেই, হয়ে গেছে বেড়াল। আর বেড়াল তো ‘ম্যাও’ করবেই।
    সুকুমার রায়ের আমলেই যদি এমনটা ঘটে থাকে তাহলে বিজ্ঞানের এই অগ্রগতির যুগে এমন হলে আর অবাক হওয়ার কী আছে? এসব এখন হামেশাই ঘটছে। কিন্তু ‘প্যারাডাইম’ শব্দটা আজ থেকে চার-পাঁচ বছর আগে শ্যামের মুখেই প্রথম শুনেছিলাম।
    শ্যামের কথা বলছি, কিন্তু এতক্ষণ তার পরিচয় দিইনি। শ্যাম ছিল যাকে বলে আমার সহপাঠী এবং বন্ধু। যে বয়েসে ছেলেরা এর গাছের আম, ওর বাড়ির মুরগি চুরির সঙ্গে সঙ্গে নিষিদ্ধ বইও পড়তে শেখে, সেই বয়েসে ওর সঙ্গে আমার সখ্য ছিল অটুটু। শ্যামের একটা খুব বড় গুণ ছিল, যেজন্য আমরা সকলে ওকে শ্যামখুড়ো বলে ডাকতাম, বড়দের মতো অনেক বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত নিয়ে ও আমাদের একেবারে তাক লাগিয়ে দিত। আমাদের কিশোর বয়েসে সকলে রহস্য রোমাঞ্চের যে বই কাড়াকাড়ি করে পড়তাম, তা হল স্বপনকুমারের লেখা দীপক চ্যাটার্জির কাহিনী। বাড়িতে গোয়েন্দা গল্প পড়া বারণ ছিল না, কিন্তু তা সীমাবদ্ধ ছিল ব্যোমকেশ বক্সী কিংবা হেমেন্দ্রকুমার রায়ের জয়ন্ত-মানিকে। অন্য সব সিরিজ আমরা স্কুলের টিফিনের পয়সা আর বাড়ির লোকের চোখ বাঁচিয়ে কিনতাম। তাতে বইটা হাতে আসতে একটু দেরি হতো ঠিকই কিন্তু তখন আমাদের কাছে সেটাই ছিল অনেক। এইসব দিনেই সকলে মিলে গোল হয়ে বসে প্রথম দু-এক পাতা পড়ার পরই শ্যাম গল্পের শেষে কী হবে, অপরাধীই বা কে, এসব অক্ষরে অক্ষরে মিলিয়ে দিয়ে আমাদের অবাক করে দিত।
    শেষে অবশ্য একদিন শ্যামের মেজদাদা আমাদের সকলের সামনে ওর কান পেঁচিয়ে ধরে বলেছিলেন ‘হ্যারে, নতুন যে বইটা কাল কিনে এনেছি, ‘‘খুনী কে?’’ সেটা কোথায় রেখেছিস?’ তখন জানা গেল, শ্যাম সব গল্পগুলো আগেই বাড়িতে পড়ে নিয়ে রহস্যভেদের ভান করে আমাদের চমকে দিত।
    তবে সেজন্য অবশ্য আমাদের বন্ধুত্বের কোনও হানি হয়নি, কারণ অন্য অনেক দিকে শ্যামের ওরিজিনালিটি ছিল অকৃত্রিম। তারপর অনেক বছর কেটে গেছে। সাতাত্তরে স্কুল, তারপর কলেজ পাস করে আমরা কে কোথায় ছিটকে গেছি। আমাদের গ্রামের স্কুলের কয়েক বছরের সিনিয়র জগাদা নামকরা সাংবাদিক হয়েছে। তাকে দেখে আমারও শখ হয়েছিল সাংবাদিকতা করবার। আমার বাবা ছিলেন সেকালের আদর্শবান হেডমাস্টার, ছেলেদের জন্য কিছু করে বা রেখে যাননি। কলেজে ক’বছরের জন্য এস এফ আই-এর দলে ভিড়েছিলাম, কিন্তু সেজন্য কোনও পুরস্কার বা চাকরি জোটেনি। ছেলে পড়ানোর পাশাপাশি ‘স্টিং অপারেশন’-এর মতো দু’য়েকটা স্কুপ নিউজ করতে পারলেই কেল্লা ফতে করতে পারতাম, কিন্তু হল না। ২০০৭ সাল নাগাদ আবার একদিন শ্যামের সঙ্গে দেখা।
    আমাদের গ্রাম ততদিনে গঞ্জে পরিণত হয়েছে। কলকাতা শহর এগিয়ে আসায় আমরা এখন প্রায় শহরের উপকণ্ঠে। দেখলাম আমার এক ছাত্রের পাশের বাড়িতে একটা ঘর ভাড়া নিয়ে শ্যাম আপিস খুলেছে। আপিসের নাম অদ্ভুত, তবে শ্যামের সঙ্গে মেলে। ‘দি আইডিয়া।’ আমার সঙ্গে দেখা হতেই জোর করে ধরে নিয়ে গিয়ে চা খাওয়াল। আর সেখান থেকেই শুরু হল এই পরিবর্তন বা প্যারাডাইম কাহিনী।
    শ্যামের কথা শুনে একটু অবাকই হলাম, ও নাকি আইডিয়া বিক্রি করতে চায়। লোককে ভুজুং দেবার ক্ষমতা চিরকালই ওর ভাল কিন্তু তাই বলে পয়সা নিয়ে আইডিয়া কেনা! তবে শ্যামের জ্ঞানের গভীরতা দেখে আরও বিস্মিত হলাম। বিদেশের বিশেষ করে মার্কিন দেশের পণ্ডিতেরা বাজার বিস্তার নিয়ে যেসব গবেষণা করেছেন, সেসব নাকি ওর নখদর্পণে। ওসব দেশে নাকি এখন তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট নিয়ে গবেষণা হয়, কারণ তার পরিপ্রেক্ষিতেই তৈরি হবে ওদের ‘থিওরি অব মার্কেটিং’। শ্যাম বললো, ‘আমার কাজটা হল ঠিক উলটো, ‘‘মার্কেটিং অব থিওরি’’। আইডিয়া বেচা। কোনও লক্ষ্যে এগোতে হলে কিভাবে পাবলিকের কাছে নিজের কথাগুলো নিয়ে যাওয়া যায় সেটার ট্রেনিং দেব আমি।’‘বিজ্ঞাপন এজেন্সিগুলো তো আইডিয়া বেচে’— আমি বললাম। ‘সে তো কর্পোরেট সেন্টারকে। আমি বেচব অন্যদের।’ বললো শ্যাম। ‘শ্যাম কোত্থেকে জানলি এসব?’ আমি জিজ্ঞেস করলাম।
    ‘পিসির কাছ থেকে।’ শ্যাম বলল।
    ‍‍‍পিসি?
    শ্যাম হেসে ওর পার্সোন্যাল কম্পিউটারটা দেখাল। ‘সব নেট ঘেঁটে বের করেছি বস।
    তখনই ওর কাছে প্যারাডাইম সম্পর্কে জানলাম। কী জানলাম তা ক্রমশ প্রকাশ্য।
    ‘কাল অফিস। একটা ক্লায়েন্ট আসবে। মালদার পার্টি। আইডিয়াটা গছাতে পারলে একটা লং টার্ম অর্ডার পাব বুঝলি। চাইকি ভবিষ্যতে স্টেটের ইনফর্মেশন অ্যান্ড কালচার মিনিস্টার হয়ে যেতে পারি।’
    আমি হাঁ হয়ে গেলাম।
    ‘কিন্তু খুব সিক্রেট। যা জানবি, শুনবি, কাউকে বলতে পারবি না। আর নিজের ডিজগাইস, ছদ্মবেশে থাকবি।’
    বুঝলাম ছেলেবেলায় পড়া গোয়েন্দা গল্পের পোকাগুলো এখনও ওর মাথার মধ্যে নড়েচড়ে বেড়ায়। যাইহোক আমিও স্কুপ নিউজের এই সুযোগটা ছাড়লাম না। পরদিন শ্যামের অফিসে একটা টেবিলের ছদ্মবেশ নিয়ে বসে পড়লাম।
    ক্লায়েন্ট সবিতাবাবু। সবিতা সামন্ত। সম্পন্ন ব্যবসায়ী। একটি আঞ্চলিক দলের সর্বভারতীয় নেতা। এককালে বহু জমিজমার মালিক ছিলেন কিন্তু ...বামফ্রন্ট সরকার (সবিতাবাবু এক্ষেত্রে একটি ভারী গালি ব্যবহার করেন) অপারেশন বর্গা করে সেসবের অধিকাংশ কেড়ে নিয়েছে। এর বিহিত চান তিনি। আর আঞ্চলিক দলের সর্বভারতীয় নেতার অর্থ, তিনি তাঁর অঞ্চলে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন, এবং তার নামের আগে ‘অল ইন্ডিয়া’ এই শব্দবন্ধটি বসিয়েছেন।
    সবিতা সামন্ত এলেন দামী গাড়ির কনভয় হাঁকিয়ে। পরে জেনেছিলাম তাঁর নিজেরটি ছাড়া বাকি সবগুলৈ ভাড়া করা। রাজনীতি করতে গেলে এমন ঠাঁটবাঁট বজায় রাখতে হয়, এটা ছিল তাঁর নিজস্ব থিওরি। দেখলাম দলের প্রধান হলেও তিনি স্বল্পভাষী। তাঁর হয়ে মূলত কথা বলছিলেন তাঁর দলের উপনেতারা। পরমার্থ ভট্টাচার্য, বকুল রাহা, বদন দত্ত ও তরুণ তুর্কি চাঁদ হালদার। আমি তার দলের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র দেখে চম্‌ৎকৃত হচ্ছিলাম। শ্যাম সকলের জন্য বরফঠাণ্ডা কোল্ড ড্রিঙ্ক আনালো এবং কিঞ্চিৎ গরম হওয়া পর্যন্ত রাখল আমার ওপরেই। যাহোক, স্কুপের জন্য এটুকু কষ্ট সহ্য করা যেতেই পারে। ‘সরাসরি কাজের কথায় আসা যাক।’ বলল শ্যাম। ‘আপনারা এই বামফ্রন্ট সরকারের পতন চান এবং রাইটার্সের দখল নিতে চান, এই তো?’
    সবিতাবাবু সম্মতিসূচক মাথা নাড়লেন।
    ‘দাদার অনেকদিনের শখ ওটাকে বেগ্নে রঙে দেখবেন। বেগুন দাদার প্রিয় সবজি।’ বললেন পরমার্থ।
    ‘আর টমেটো দু-চোখের বিষ।’ বলল চাঁদ হালদার। সবিতাবাবু স্মিত হাসলেন।
    বদন : কেসটা হল, কদিন ধরে দাদার মরহুম বাপ স্বর্গ থেকে দাদার স্বপ্নে এসে ল্যান্ড করছেন। মৃত্যুকালে তাঁর ইচ্ছে ছিল একটা ধর্মস্থান তৈরি করার।
    বকুল : কিন্তু যে জমিতে সেটা করবার কথা বলছেন, সেটা ঐ বর্ষায় বেহাত হয়ে গেছে —
    চাঁদ : হাত কেটে ফেলব এবার। গাঁট্টা মেরে পাট্টা কেড়ে নেব —
    পরমার্থ : আ: চাঁদু। আসলে ছোটবেলায় দাদা ক্যালেন্ডারে দেখেছিলেন (পরমার্থ দু-হাতের তর্জনী দিয়ে ক্যালেন্ডার দেখালেন) ‘যত মত তত পথ’। যে বিল্ডিংটা তৈরি হবে তার চার মুখে চারটে ধর্মস্থান। পাশে পুকুর। ক্যালেন্ডারে অবশ্য তিনটে ছিল।
    বকুল : জল, পানি, ওয়াটার। শিখরা কী বলে জলকে?
    বদন : জিজ্ঞেস করে নেব। ট্যাক্সির লোকেদের সঙ্গে আমার র‌্যাপো ভাল।
    পরমার্থ : এতে হবে কি, চার সম্প্রদায়ের ভোটও মিলল, জমি উদ্ধারও হল, আবার ধর্মস্থানও বানানো গেল। দাদার অনেকদিনের বাসনা।
    শ্যাম : আপনাদের কথা শুনলাম। এবার আমি যা বলব, শুনুন। পছন্দ হোক বা না হোক, প্রথমেই টিভির টক শো’র মতো থামিয়ে দেওয়া চলবে না।
    সবিতাবাবু : বলুন।
    শ্যাম : ইংরাজীতে একটা কথা আছে, প্যারাডাইম।
    বদন : পায়রার ডিম? শান্তির প্রতীক?
    চাঁদ : প্রতীক কী, ডিম শুনলে না? ডিমের মধ্যে শান্তি ঘুমিয়ে আছে —
    শ্যাম : হ্যাঁ তা দিলে ফুটে বেরোবে। ওসব পায়রার ডিম টিম নয়। প্যারাডাইম। PARADIGM— মানে হল, একটা নির্দিষ্ট ধারণা, চিন্তা, মূল্যবোধ এসব। একটা দৃষ্টিভঙ্গি।
    বদন : দূর ওসব দিয়ে কী হবে। সত্যিকারের পায়রার ডিম হলেও না হয় ভেজে খাওয়া যেত।অবদন নিজের রসিকতায় হাসেন। সবিতাবাবু বিরক্ত হন।
    শ্যাম : আগেই বলেছি, বাধা দেওয়া চলবে না।
    পরমার্থ : আ: বদনা চুপ কর। আপনি বলুন।
    শ্যাম : শুনুন, পশ্চিমবঙ্গে যে অ্যাদ্দিন ধরে বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় আছে তার কারণ হল —
    পরমার্থ : কারচুপি কারচুপি। বিশাল কলকাঠি নাড়া হয় এর পেছনে। অনেক ডিলিং —
    বদন : সিক্রেট কিলিং —
    বকুল : জাইগ্যান্টিক মেশিনারি —
    সবিতাবাবু মাথা নাড়েন।
    শ্যাম : উহু ওভাবে ভাবলে ব্যাপারটা গুলিয়ে যাবে। আমার assumption হল, মানুষের একটা বড় সমর্থন আছে ওঁদের পেছনে। বামপন্থাকে পছন্দ করে বাংলার একটা বড় অংশের মানুষ। ভরসা করে।
    বকুল : ওসব বিদেশী মতবাদ - টতবাদে আমাদের দরকার নেই। রবীন্দ্রনাথ, গান্ধীজী, নেতাজী থাকতে আবার স্ট্যালিন, লেনিন কেন?
    চাঁদ : সামনে পেলে কুকুর লেলিয়ে দিতাম। সবিতাবাবু চাঁদের দিকে তাকিয়ে সমর্থনসূচক স্মিত হাসি হাসেন।
    শ্যাম : সেসব ক্ষমতায় এলে করা যাবে। কিন্তু যেটা বলছিলাম, আমাদের রাজ্যে বামফ্রন্টের লাগাতার জয়ের ফলে মানুষের একটা ধারণা হয়েছে যে, এই বামপন্থীরাই আরো অনেকদিন ক্ষমতায় থাকবে। এটা প্যারাডাইম নাম্বার ওয়ান। statusquoorientedparadigm— আর এই যে এঁরাই আগমার্কা বামপন্থী, এটা প্যারাডাইম নাম্বার টু।
    বকুল : তো?
    শ্যাম : এটাকে ভাঙতে হবে। কিন্তু দক্ষিণপন্থী কথাবার্তা বলে হবে না। ওসবে কাজ হয় না এটা প্রমাণিত। বলতে হবে বামপন্থাই ঠিক পথ। কারণ পুঁজিবাদের দাঁত নখ যত বেরিয়ে আসবে, মানুষ ততই বামপন্থার দিকে ঝুঁকবে।
    পরমার্থ : এই আপনার আইডিয়া? এ তো আপনি মশাই ওঁদের হয়ে কথা বলছেন?
    শ্যাম : অধৈর্য হবেন না। শুনুন। কিন্তু সেই বামপন্থার প্রতীক হবেন আপনারা।
    ঘরে কিছুক্ষণের জন্য অপরিসীম স্তব্ধতা নেমে এল।
    চাঁদ : আমি আগেই বলেছিলাম, ফালতু সময় নষ্ট করতে যাচ্ছ দাদা। তার চে —
    শ্যাম : আমার বলা শেষ হয়নি। ভেবে দেখুন, দক্ষিণপন্থী ভোটারদের সমর্থন পেতে আপনাদের অসুবিধে নেই, কিন্তু আরেকটা অংশের ভোটার, যাঁরা মনে মনে বামপন্থাকে সমর্থন করেন, কিন্তু গভীরভাবে চিন্তা করবার সময় ও সুযোগ নেই, এমন সরল মানুষজনকে যদি বোঝানো যায় যে বামফ্রন্ট নয়, আপনারাই আসল বামপন্থী, তাহলে তাঁদের সমর্থনের একটা ভাগ আপনাদের দিকে যাবে। এই যে ধারণার পরিবর্তন, ওঁরা নন, আপনারাই বামপন্থী — এটাই প্যারাডাইম শিফ্‌ট। প্যারাডাইম টু থেকে প্যারাডাইম থ্রি। এর ফলে সরকারও পালটাবে! Statusquo থেকে radicalchange— মূল ধারণাটাই পালটে দিলে সবকিছু পালটে যাবে।
    পরমার্থ : লোকে মানবে কেন?
    বকুল : হ্যাঁ ঠিক, লোকে আমাদের বামপন্থী বলে স্বীকার করবে কেন?
    শ্যাম : আপনারা নিজেরা তো একথা বলবেন না। বলবেন বলিয়ে-কইয়ে লোকেরা। রেটরিয়ান্স। বলবেন দল বেঁধে সমস্বরে। বাই ওয়ার্ড অব মাউথ অ্যান্ড কো সাইটেশন। বামফ্রন্ট নয়, আপনারাই আসল বামপন্থী, এই নতুন থিওরি পাবলিকের কাছে বেচা হবে।
    পরমার্থ : থিওরি বেচা, জনগণকে?
    শ্যাম : রাজনীতি কিছুটা তাইই। হ্যাঁ মানুষ নিজের অভিজ্ঞতা থেকে যে জ্ঞান সঞ্চয় করে সেটা তার নিজের অর্জন, সেটা সলিড। কিন্তু অন্যের কাছে জেনে শুনে যে ধারণায় পৌঁছায় সেটা একটা পণ্য, সেটা তাকে বেচা যায়। অবশ্যই কায়দা করে। ভেবে দেখুন, এ রাজ্যে অনেক মানুষ আছেন, যাঁরা জন্মেছেন ছয়ের দশকের শেষে বা সাতের দশকে অথবা তারও পরে। তাঁদের কাছে বামপন্থীদের বলা কথাগুলো যেমন আপনাদের হয়ে করা প্রচারগুলূ তেমনি প্রোডাক্ট। এখন যদি তাঁদের বিশিষ্টজনেদের একটা অংশ বলেন, বলতেই থাকেন যে সরকারে থাকবার কারণে ওঁরা বামপন্থা থেকে সরে গেছেন এবং আপনারাই প্রকৃত বামপন্থী, তাহলে কিছু মানুষ প্রভাবিত হবেন বইকি।
    আমি টেবিল হওয়া সঙ্কেÄও বুঝতে পারছিলাম শ্যাম তার পড়া রকফেলার — কার্ণেগি ফোর্ড ফাউন্ডেশনের রিসার্চ ওয়ার্ক ঝাড়ছে।
    বকুল : কিন্তু ঐ যে বললেন বলিয়ে কইয়ে লোক, ওঁরা আমাদের হয়ে বলবেন কেন?
    শ্যাম : তাঁদের Sponsor করতে হবে, তাহলেই বলবেন। আপনাদের হয়ে গণসম্মতি বা Consensus আদায় করবেন। দেশে দেশে এমনই হয়ে চলেছে। ভাড়াটে অধ্যাপক, সম্ভাবনাময় ছাত্র, বুদ্ধিজীবী।
    চাঁদ : হাঁ, আইডিয়া মে দম হ্যায়।
    পরমার্থ : কিন্তু বামপন্থীরা তে চুপ করে বসে থাকবে না। ওরা তো আমাদের যুক্তি খণ্ডন করার চেষ্টা করবে?
    শ্যাম : সেজন্যেই কখনও কোনও সর্বদলীয় আলোচনা সভায় যাবেন না। socialpluralism বা পরস্পরবিরোধী প্যারাডাইমের সহাবস্থান তখনই সম্ভব হয় যখন কোনও সমাজে বাক স্বাধীনতা বজায় থাকে। মজার বিষয় হল, এ রাজ্যে সেটা বেশি পরিমাণেই আছে, নাহলে আর আপনারা টিকে থাকতেন কিভাবে। যাহোক, ওদের নো হোয়্যার করতে হবে ওদের কথায় কান না দিয়ে। নিজেদের প্রচার চালিয়ে যান চোখ বুঁজে।
    বদন : কিন্তু এসব করতে তো পহা লাগবে, Sponsor করবে কে, অনেক টাকা —
    শ্যাম : সেটা দেবার লোক নিশ্চয়ই পাওয়া যাবে। এশিয়ার এ দিকটায় যারা ইনভেস্ট করতে চায়, কমিউনিস্টদের বাড়বাড়ন্ত থাকলে তারা সেটা অবাধে করতে পারবে না। সেজন্যে এখানে তাদের সহায়ক সরকার প্রয়োজন। আমেরিকায় এ নিয়ে গবেষণা হয়েছে, ‘কমিউনিস্ট থ্রেট’ সঙ্কেÄও ব্যবসা চালু রাখা, বাড়ানোর উপায় নিয়ে রিসার্চ। আমি একটু আধটু খবর রাখি। Philanthropicfundingactivity-র মাধ্যমে একধরনের Socialengineering কে মদত দেওয়া হচ্ছে, যাতে আমেরিকা Global, IntellectualandEconomicHegemony অ্যাচিভ করতে পারে। গোটা বিশ্বে যাতে মার্কিন প্রাধান্য বজায় থাকে।
    বদন : হেসে হেজিমনি আর হিজিবিজি শুনতে একরকম। আমি মনে মনে বললাম, এসবের চেয়ে হিজিবিজবিজ অনেক ভাল। সবকিছুতেই মজা পায় আর হেসে খুন হয়। নিজের জগ্‌ৎ নিয়েই সুখী। অন্যের দুনিয়ার দখলদারি কেন রে বাপু!
    দেখলাম সবিতাবাবু গভীর চিন্তায় মগ্ন হয়ে হাতের কলমটা রাইটিং প্যাডের পাতার ওপর বোলাচ্ছেন। শ্যাম বলে চলেছিল —
    একটা ধামাকা তৈরি করতে হবে। বামপন্থীদের আর ওদের নিজেদের নামে ডাকবেন না। একটা অন্য নাম দিয়ে দিন। এই যে অপারেশন বর্গা করে অনেকের সর্বনাশ করেছে, নাম দিন বর্গী। আদতে এটা অবশ্য মারাঠী সেনাবাহিনীর নাম, বারগীর। কিন্তু লোকে অত খবর রাখবে না।
    বদন : বা:, বর্গী-ইতে ধান খেয়েছে, খাজনা দেব কিসে —
    বদন উত্তেজনায় টেবিল, অর্থাৎ আমার মাথা বাজিয়ে বললেন।
    পরমার্থ : ওটা বুলবুলি হবে —
    শ্যাম :Sponsored পণ্ডিতদের দিয়ে বলিয়ে নেবেন। শুদ্ধ হয়ে যাবে। আর Paradigmshift বা পরিবর্তনের একটা স্লোগান তৈরি করুন। ধরুন, বদলাও। এটা বাংলা-হিন্দি দুটৈ হল। নানাভাষার client-দের কাছে পৌঁছতে গেলে multilingual হওয়া জরুরী। এ নিয়ে আমার একটা রিসার্চ পেপার আমি ওদেশের একটা ইউনিভার্সিটিতে পাঠিয়েছি।
    শ্যাম এটা পুরোদস্তুর ব্লাফ দিল বুঝলাম, ওঁদের ইমপ্রেস করবার জন্য। অবশ্য আমিও ছাত্রদের মায়েদের ক্ষেত্রে এমনটা করে থাকি।
    বদন : বদলাও এর মধ্যে বেশ একটা বদলা বদলা গন্ধ আছে —
    শ্যাম : এবার থেকে আপনারাই আসল বামপন্থী — নির্বাচনী ইশ্তেহারেও কিছু স্লোগান রাখবেন — বিলগ্নীকরণ চলবে না। মূল্যবৃদ্ধি আটকাতে হবে —
    পরমার্থ সবটা পারব না, তাছাড়া ওদিকের লোকেরাও তো আছেন
    শ্যাম : বাঁচিয়ে সাঁচিয়ে করবেন, ওঁরা বুঝবেন ঠিক। পাবলিক না বুঝলেই হল।
    বকুল : কিন্তু বামপন্থী হতে গেলে তো আন্দোলন চাই, সেটা কীভাবে।
    শ্যাম : হবে। লোককে কিছুদিনের জন্য ভুল বুঝিয়ে, একটা জিগির তুলে খেপিয়ে দেওয়া কিছু কঠিন কাজ না। এমনিতে জীবনযুদ্ধে সব জর্জরিত, প্রতিকারের আশায় ভুল রাস্তায় যেতেও পারে। কিন্তু মিডিয়াকে সঙ্গে চাই। সবরকম। প্রিন্ট, টেলি-মিডিয়া, এমনকি রেডিও। বিজ্ঞাপন হবে, বদলাও, বদলে দাও, চল বদলাই।
    বদন ‘সুরভিত অ্যান্টিসেপ্টিক ক্রিম বেআরোলিন’-এর সুরে স্লোগানটি গেয়ে খুশি হলেন।
    শ্যাম : ওরা সকলে মিলে যখন আপনাদের ছবি দেখাবে, আপনাদের হয়ে বলবে, লিখবে — সবিতাবাবুই কৃষক শ্রমিকের আশা, মধ্যবিত্তের ভরসা সকলে মিলে বলবে — বদল চাই, বদলে দাও —
    চাঁদ : (উত্তেজনায়) ও:, জমে যাবে মাইরি। আমার কতদিনের সপ্নো আরবে একটা তেল কোম্পানির মালিক হব —
    শ্যাম : কিন্তু সবিতাবাবু, দলের প্রধান হিসেবে আপনাকে প্রচণ্ডভাবে বক্তৃতা করা রপ্ত করতে হবে। হিটলার যেমন করতেন, প্রচুর মিথ্যে আর আধা সত্যি মিলিয়ে মিশিয়ে মানুষের মাথায় ঢুকিয়ে দিতেন আর তারা উন্মত্ত হয়ে ইহুদী আর কমিউনিস্টদের ঘরবাড়িতে আগুন লাগাত, তাদের নিকেশ করত। এ বিষয়ে গোয়েবল্‌স হলেন গুরুদেব। আমি আপনাকে সাহায্য করব।
    বুঝলাম শ্যাম তথ্যমন্ত্রী হবার পথে একধাপ এগোল।
    সবিতাবাবু : কিন্তু সেটা, মু-উশি্‌কল।
    শ্যাম : কেন?
    সবিতা : আমি ইয়ে একটু তো-ওত্‌লা। মিথ্যে কী, স-ওত্যিটাও মুখ দিয়ে হোঁ-ওচট খেয়ে বেরোয়। আর ই-ইংরিজিটাও —
    পরমার্থ : আমায় দিয়ে কি হ-হবে?
    একথায় সবিতাবাবু পরমার্থর দিকে এমন রাগত চোখে তাকালেন যে এবার তিনিও হোঁচট খেলেন।
    সবিতা : (হাতের রাইটিং প্যাডটা শ্যামের দিকে বাড়িয়ে ধরে বললেন) এটা হো-ওর্ডিং এ কেমন আসবে?
    পরমার্থ : দাদার হাত চলে দারুণ। কবি, ছবিতা, মানে ছবি, কবিতা দারুণ বেরোয়। আমাদের সব স্লোগান ওনার করা। (পড়েন)
    বাংলার সবিতা
    কৃষকের অন্নদাতা
    শ্রমিকের পরিত্রাতা
    মধ্যবিত্তের ভাগ্যবিধাতা
    শাসকের অক্ষমতা
    অত্যাচারীর পরাধীনতা
    ন্যায়ের পরাক্রমতা
    শ্যাম : হ্যাঁ মিলগুলো রেকারিং ডেসিমেলের মতো আসছে বটে —
    এরপর সত্যি বলতে কি আমার একটু ঘুম ঘুম পেয়ে গিয়েছিল, তাই সবিতাবাবুরা কখন চলে গেলেন টের পাইনি। টেপ রেকর্ডার, ক্যামেরা, মোবাইল তো আমার ছিল না, কাগজে নোট, নিচ্ছিলাম, তাই শেষটায় কী হয়েছিল বলতে পারব না। তবে সবিতাবাবুর সঙ্গে ডিল্টা হয়নি। সম্ভবত ঐ কথা আটকে যাওয়ার কারণেই।
    তারপর বেশ কয়েক বছর কেটে গিয়েছে। চারপাশে অনেক পরিবর্তন দেখছি। শ্যামের বলা কথাগুলোর সঙ্গে মিলেও যাচ্ছে, কিন্তু ওরই কোনও পাত্তা নেই। অফিস উঠে গেছে। একবার বলেছিল, এসব কাজ করতে বিদেশী ডিগ্রি দরকার হয়। জাহাজের খালাসি হয়ে সেই ডিগ্রি আনতে চলে গেল কিনা কে জানে!
    স্কুপটা নিয়ে গত বছর জগাদার কাছে গিয়েছিলাম। পড়ে মুখ ব্যাজার করে বলল, এটা না হয়েছে নিউজ, না ফিচার। তাছাড়া এসবের প্রমাণ কই? আর ভাল কথা বলছি, এ লাইনে আসার চেষ্টা করিস না। সেদিন গোপন মিটিং কভার করতে গিয়ে দেখলি না টেলি মিডিয়ার মেয়েটাকে আরেকটা মেয়ে সর্বনাশ করে দেবে বলে হুমকি দিল? মারধর, ক্যামেরা ভাঙা তো ছিলই, এটা আবার একটা নতুন হ্যাজার্ড। তুই আনাড়ি, সবার সামনে এরকম ধমকি দিলে আর জীবনে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবি?’
    জগাদা অবশ্য আরও খারাপ ভাষায় কথাটা বলেছিল। আমি চলে এসেছিলাম।
    এরমধ্যে আমার জীবনেও একটা বড় পরিবর্তন ঘটে গেছে। এস এস সি পাস করে চেতনা আমাদের এখানকার একটা স্কুলে কাজ নিয়ে এসেছিল। দু’জনের প্রিয় বিষয় একই। বাংলা। বাংলার মাটি, বাংলার জল। ও যেদিন পাকাপাকিভাবে আমার জীবনে এল, এল লাল শাড়ি পরে। তারপর নিরুচ্চারে আমায় অনেক কিছুই দিয়েছে। আশ্রয়, নিরাপত্তাবোধ, আত্মসম্মান, ভাল কিছু করবার ইচ্ছে। ওকে পরিবর্তনের কথা ভাবতেই পারি না, তা সে যত বছরই কেটে যাক। আগতপ্রায় সন্তানকে প্রকৃত শিক্ষা দেবার কথা যখন ভাবি, তখন এক বুড়ো আদর্শবান মাস্টারের কথা মনে পড়ে বুকের ভেতরটা মোচড় দেয়।
    মূলত চেতনার পীড়াপীড়িতেই এ লেখাটা পাঠালাম। অনেকে অবিশ্বাস বা তাচ্ছিল্য করতে পারেন, কিন্তু জবাবে তাদের আমি সুকুমার রায়েরই ছড়ার চারটে লাইন শোনাব —
    তুচ্ছ ভেবে এ সব কথা করছে যারা হেলা,
    কুমড়োপটাশ জানতে পেলে বুঝবে তখন ঠেলা।
    দেখবে তখন কোন কথাটি কেমন করে ফলে,
    আমায় তখন দোষ দিওনা, আগেই রাখি বলে।

    (অনুলিখন: অজয় দাশগুপ্ত)

    Source:http://pnachforon.blogspot.com/2010/09/blog-post_22.html
  • Samik | 121.242.177.19 | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১০ ১৫:৪২459294
  • উরিত্তারা! ফাটাফাটি!!

    এসব লেখা টইতে না-দিয়ে গুরুচন্ডালির দফতরে পাঠান না কেন?? এক সপ্তাহের খোরাক জুটে যায় আমাদের!
  • kallol | 124.124.93.205 | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১০ ১৭:৫৪459295
  • বা:। ২০১১-র ঢাকের বাদ্যি শুরু হয়ে গেলো।
    বাজাও ভাই জোরসে। তবে কি ঢাক বাজে দুকাঠিতে। আমাদের এক কালীঘাইট্যা বলতো দোকাঠি তঙ্কÄ। একটায় ও খারাপ ও খারাপ, অন্যটায় আমি ভালো আমি ভালো।
    চলুক।
  • tatin | 130.39.149.48 | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১০ ২২:৩১459296
  • আরে OCS! গণশক্তি আজকাল এখন একদম পাব্লিক পর্ছেনা না কি! গণ-র খবরগুলো গল্প বানিয়ে লিঙ্ক দিয়ে যাচ্ছেন :D
  • Raj | 202.79.203.43 | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১০ ১১:৩৫459297
  • কল্লোলদা বাত্তোগুন্ডা , হেরিটেজ মিত্তির চেয়ারম্যান, আজীবন অ্যাটেন্ড্যান্টসহ ফাষ্টোকেলাস পাস পাওয়া বিভাসবাবুর মতই কেউ একজন একটা নাটক লিখেছে , তাতে এত খচেন ক্যান? নাটক বলেই কি সত্যি হয়ে যাবে ! ভাবী শাসকরা নাকি বিরুদ্ধ মত সইতে পারেন না সেরকম কিছু নয় তো ;-)

    আর SB ও বলিহারি কোথায় এখানে সংহতি -টংহতি-অ্যামনেষ্টির লিংক টিংক দেবেন তা নয় যত্তসব ১১র ছেলেভুলোনো গপ্পো !

  • kallol | 124.124.93.205 | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১০ ১২:৩২459298
  • রাজভাই খচি নাই। পুলকিত হই। খচে কি আর হবে। খচে যাওয়া মানে তর্কে হেরে যাওয়া। তা, তক্কোই কচ্ছি না। তো খচবো কেন?
    চালায়ে যাও ভাই। ঢাকের বাদ্যি। পূজোও তো এসে গেলো।
    আর, আমার সাথে ভাবী শাসকদের (যারাই লাইনে আছে) দূর দূরেও কোন সম্পোক্কো নাই। কাজেই তাদের কিমত সহ্য শক্তি তা নিয়ে আমার কোনও শির:পীড়া নাই।
    আপুনাদের লেগে থাকার গুণটি তারিফ যোগ্য।
  • dukhe | 122.160.114.85 | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১০ ১২:৪২459299
  • এই মরেছে ! 'নাথবতী অনাথব্‌ৎ' কিংবা 'শোয়াইক গেল যুদ্ধে'-র সঙ্গে এই লেখাটার তুলনা হচ্ছে নাকি ? ইঁইইক ।
  • kallol | 124.124.93.205 | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১০ ১৩:০৫459300
  • ওহো:। দুখেটা ভারী ইয়ে। এতে মুচ্ছো যাবার কি হলো - অ্যাঁ? অ্যাখোনোতো সুকুমার বা শরদিন্দুর সাথে তুলনা করে নাই কেউ। ধীরে রজনী, অনেক কিছুই পাবে। এট্টু ওয়েট করো।
    কি যেন বলে, ডুবন্ত মানুষের বাঁচার দায় বড়ো দায়। তাতে খড়কুটো, মাস্তুল, জাহাজ মায় হিমশৈল পজ্জন্তো আঁকড়ে ধরে লোকে।
    লড়ে যাও, বাব্বা লড়ে যাও।
  • Raj | 202.79.203.43 | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১০ ১৩:২০459301
  • সেই তো .... ডুবন্তরা সেই কবে থেকে মাও -মম -মেধাবী এনজিও- অগ্নিবাবা-ম্যাগসাইসাই যাকে পারছে ধরে ভাসতে চাইছে .. অবশেষে ভেসে উঠে অন্যদের ডুবন্ত বলে বিশেষনও দিচ্ছে !
  • Raj | 202.79.203.43 | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১০ ১৩:৩৫459291
  • আর জাতশত্রু সিপিয়েম ডুবে গিয়ে কি ধরবে সে চিন্তা নাই বা করলেন , অ্যাটলিষ্ট একটু লাটক তো করতে দিন ! আপনাদের স্বর্ণলঙ্কায় ১১র পর কে ছাই দেবে ? কেন্দ্রে নিজেদের সরকার, প্রধানমন্ত্রী - অর্থমন্ত্রী তো দুচ্ছাই মায় সাংবিধানিক রাষ্ট্রপতিও পার্টি প্রোগ্রামে এসে পিঠ চাপড়ে দিচ্ছেন ! বিপ্লব তো হয়েই গ্যাছে ;-)

    খাঁটি দুধে চোনা কটা সিপিয়েম নাহয় একটু নাটকই করুক - সেটুকু স্পেস আশা করি দেবীপুজারীরা দেবেন , আপনিই না ঔদ্ধ্যতের কথা বলে সিপিয়েমকে গাল দিতেন / দ্যান । ঠিক তেমনিই কারুর নাটক পড়ে বিষয়ের মধ্যে না ঢুকে তাঁকে ঢাক পেটাতে বলাটাও কিন্তু ঠিক ব্যঙ্গ নয় , অসহিষ্ণুতারই লক্ষণ।
  • dukhe | 122.160.114.85 | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১০ ১৩:৩৮459292
  • আ: - আবার, আবার সেই কামানগর্জন । শুরু হবে নাকি ? PT কোথায় ? Mmu ?
  • kallol | 124.124.93.205 | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১০ ১৪:৩৩459293
  • রাজভাই - তা পেটাতেই তো বোল্লাম। পেটেন না ক্যানে। বিস্তর পেটেন। কেও বাধা দিবে না। তবে ঢাক পেটানো কে ঢাক পেটানো বল্লে বুজি খচে যেতে হয়। আচ্ছাআআ। তবে কাঁসি বল্লুম। হুজুর অপরাধ স্খালন তো?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে প্রতিক্রিয়া দিন