এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • ষষ্ঠ পাণ্ডব | ২৭ মে ২০১৯ ১৩:১৬383673
  • এক কালে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অভ স্টুডেন্টস (আইইউএস) নামের একটা সংগঠন ছিল। সেটাকে মোটামুটিভাবে সারা দুনিয়ার প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর ফেডারেশন বলা যেত। পুরোপুরি বলা যেত না এই কারণে যে সে সময়ে ছাত্র সংগঠনগুলোতে মতদ্বৈততা এতো প্রকট হতো যে কখনো কখনো কোথাও সেটা খুনোখুনিতেও গড়াতো। তাই সব প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন আইইউএস-এর সাথে ছিল না। আজকের দুনিয়ায় আইইউএস টিকে আছে কিনা জানি না। তাদের নাম বা খবর শুনি না বহুকাল হয়।

    ১৯৯৩ সালে আইইউএস-এর দক্ষিণ এশীয় অংশ ‘মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা’ বিষয়ক একটা সেমিনার আয়োজন করে। তিন দিনের এই অনুষ্ঠানে ভারত থেকে এআইএসএফ, এআইএসবি আর এসএফআই; পাকিস্তান থেকে জিয়ে সিন্ধ ত্বরকী পসন্দ স্টুডেন্ট ফেডারেশন, নেপাল থেকে অল নেপাল ন্যাশনাল ফ্রি স্টুডেন্টস ইউনিয়ন আর বার্মা থেকে আরাকানী একটা গ্রুপের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছিলেন। বাংলাদেশ থেকে ছয়টা ছাত্র সংগঠন অংশ নিয়েছিল — বাংলাদেশ ছাত্র লীগ (আওয়ামী লীগ), বাংলাদেশ ছাত্র লীগ (জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল), বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ও বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী। এই ছয়টি সংগঠনের কোন একটি থেকে এই অধম সেমিনারটিতে অংশ নিয়েছিল।

    সেমিনারে এআইএসএফ থেকে এসেছিলেন সোনি বি থেঙ্গামম, শুভ্রাংশু ভট্টাচার্য আর সুরঙ্গমা ভট্টাচার্য। সোনি পরবর্তীতে কেরালাতে জনপ্রতিনিধি হিসাবে নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং তথ্য কমিশনারও হয়েছিলেন। সম্প্রতি জানতে পারলাম তিনি ২০১৬-তে মারা গেছেন। এমন প্রাণশক্তিতে ভরপুর একজন মানুষের অকালে চিরবিদায় মানতে আমার কষ্ট হয়। শুভ্রাংশু আর সুরঙ্গমা পরে আর রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন কিনা তা জানি না। এআইএসবি থেকে এসেছিলেন জি. দেবরাজন আর রতন ঘোষ। বহুকাল হয় দেবরাজন জাতীয় পর্যায়ের নেতা হয়ে গেছেন। রতনদা’র খবর আর পাইনি। এসএফআই থেকে কারা এসেছিলেন সেটা আজ আর কিছু মনে নেই।

    ১৯৯১ সালের লোকসভা আর পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে বামেদের তখন জয়জয়কার। সেটা নিয়ে দেখলাম ভারতের প্রতিনিধিদের কেউ কেউ বেশ আহ্লাদিত এবং আত্মবিশ্বাসী। তাদের কারো কারো ধারণা ভারতে মৌলবাদীদের পতন শুরু হয়ে গেছে এবং তারা আর মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না। অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় অভারতীয়দের কেউ কেউ পাকিস্তান ও বাংলাদেশে তো বটেই এমনকি ভারতেও মৌলবাদীদের প্রবল উত্থানের সম্ভাবনার কথা বলেছিলেন — সেটা উপস্থিত ভারতীয়রা মানেননি। বাংলাদেশীদের কেউ কেউও তখন মনে করেছেন — দেশে গণতন্ত্র এসে গেছে, মৌলবাদীরা কোনঠাসা হচ্ছে, সামনে প্রগতিশীলদের সম্ভাবনা উজ্জ্বল। আমাদের কেউ সেদিন ঘুণাক্ষরেও ভাবতে পারেনি আমাদের হিসাবের বাইরে থাকা নেপালে ১৫ বছরের মধ্যে শাহ্‌ ডায়নাস্টি তো বটেই এমনকি রাজতন্ত্রই উঠে যাবে। এবং নেপালে কমিউনিস্টরা ক্ষমতায়ও বসবে।

    ১৯৯৩ সালের পরের ২৬ বছরের ইতিহাস সবাই জানেন। পাকিস্তানে বামেরা কোনদিন রাজনৈতিক নিয়ামক হয়ে উঠতে পারেনি। আজকের বাংলাদেশে সংসদীয় বামেরা পরনির্ভর-হীনবল আর বিপ্লবী বামেরা লুপ্তপ্রায়। শেষ আশা ছিল ভারতে। ২০১৯-এ সেখানে সংসদীয় বামেরা লুপ্তপ্রায় আর বিপ্লবী বামেরা শক্তিবিনাশী ফিশন প্রক্রিয়ায়। এই মন্তব্যের প্রবল বিরোধিতা করার লোকের অভাব হবে না কিন্তু তাতেও অবস্থার বৈপ্লবিক পরিবর্তনের আশু কোন সম্ভাবনা তৈরি হবে না।

    এই সময়কালটিকে আমার কাছে ‘মৌষল পর্ব’ বলে মনে হয় না, ‘ক্রান্তিকাল’ বলেও মনে হয় না। মৌষল পর্বের পরে মহাপ্রস্থানিক পর্ব পেরিয়ে স্বর্গারোহণ ঘটে। ক্রান্তিকালের শেষে নতুন কিছুর অবির্ভাব ঘটে। স্বর্গারোহণের মতো ধনাত্মক কিছু বা নতুন কিছুর মতো আশাজাগানিয়া কিছু আমাদের জীবদ্দশায় তো বটেই, তার পরের আরও অনির্ধারিত কাল জুড়ে আসবে বলে মনে হয় না।

    যারা সব সময়ে দিগন্তে রজতরেখা দেখতে পান তারা বলেন — হতাশা ছড়াবেন না। আমি বলি, হতাশা ছড়াবো কেন, আশা করার যৌক্তিক কারণগুলো দেখান তো দেখি! বলুন দেখি, কী কী উপায়ে যৌক্তিক সময়সীমার মধ্যে বর্তমান অবস্থার অবসান ঘটানো যায়?
  • Ela | 230123.142.90078.184 | ২৭ মে ২০১৯ ১৩:৫৩383674
  • হতাশা ছড়াবেন না এটা বলি না, কারণ আশা ছড়ানোর যৌক্তিক কারণের সত্যিই হয়তো অভাব ঘটছে চারদিকে। তাও বলব, আশা হারাবেন না। আমাদের ঠাকুমা-দিদিমা’রা বলতেন, যতক্ষণ শ্বাস, ততক্ষণ আশ। এই আপাতসামান্য কথাটা আমাকে জীবনের অনেক কঠিন সময়ে সাহস দিয়েছে।

    “জানি তারও পথ দিয়ে বয়ে যাবে কাল / কোথায় ভাসায়ে দেবে সাম্রাজ্যের দেশবেড়া জাল / জানি তার পণ্যবাহী সেনা / জ্যোতিষ্কলোকের পথে রেখামাত্র চিহ্ন রাখিবে না…”

    ভরসা থাকুক।
  • রঞ্জন | 238912.69.011212.210 | ২৭ মে ২০১৯ ১৪:২৮383675
  • ্ঠিক বলছেন এলা।
    বিজেপিও তো একসময় পার্লামেন্টে দুটো সিটে নেমে এসেছিল। ৪০০র বেশি সীট পাওয়া রাজীব গান্ধীও একদিন রূপকথা হয়ে গেলেন। এমার্জেন্সি ও তার পতনের কথা নাই বললাম।
    'ইয়ে রাত ভী গুজর জায়েগী'!
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঠিক অথবা ভুল মতামত দিন