এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Muhammad Sadequzzaman Sharif | ১৬ জুন ২০১৭ ০৩:২৩366373
  • সেমি ফাইনালে ভারতের কাছে হেরে গেছি দেখে আমার মন খারাপ? প্রশ্নই উঠে না। কারন আমি জানি বাংলাদেশের জন্য সেমি ফাইনাল খেলাটাই কি জিনিস। আমি বা আমার জেনারেশন সবাই জানে এ কথা। যারা আজব সব দাবি দাওয়া নিয়ে খেলা দেখতে বসেছিল হয় তারা বাংলাদেশের খেলা দেখা শুরু করেছে যখন থেকে বাংলাদেশ টুকটাক জেতা শুরু করেছে তখন থেকে আর না হয় তাদের বিস্মৃতি জনিত সমস্যা আছে!! ক্রিকেট জ্ঞানের অজ্ঞানতা থাকতে পারে দুই পক্ষেরই।
    আমাদের মন খারাপের প্রশ্নই উঠে না কারন আমরা সেই সময়ের সমর্থক যখন বাংলাদেশের বছরে খেলা থাকত ২/৩ খুব বেশি হলে ৪/৫। আমরা হা করে থাকতাম ওই কয় ম্যাচের জন্যই। আমাদের তখন দাবি দাওয়াও খুব বেশি ছিল না। দুই হাত তুলে আল্লার কাছে চাইতাম যেন অন্তত ১০০ টা রান করে আসে দল। ১০০ এর নিচে যেন কোন মতেই অল আউট না হয় তার জন্য কি আহাজারি। মানত করতাম যেন অন্তত ফুল অভার খেলে আসে ব্যাটিং এ নেমে। যেদিন ফুল অভার খেলে ফেলতে পারত সে দিন কি ফুর্তি আমাদের। আরে, ফুল ওভার তো অনেক বড় বিষয়, আমাদের আলোচনা থামতই না হয়ত একটা চারের মার নিয়ে বা একটা ছক্কার শট নিয়ে। ঘুরের ফিরে একই কথা, কি ড্রাইভটা করছে দেখছস? ডাউন দা উইকেটে এসে ছয়টা দেখছস? ওয়াসিম আকরাম কে মারছে!! আমরা ফিট খুসিতে। বিদ্যুৎ অপি, গোল্লা আমাদের হিরো তখন। শান্ত আমদের দুর্ধর্ষ ফাস্ট বোলার!!!
    আসরাফুল জীবনের প্রথম ম্যাচে নেমেই চার মারল একটা, এই কথা মনে হয় আমি নিজেই এক বছর ধরে বলে বেড়িয়েছি। আমাদের খেলা কেউ দেখায় না। একদিন শুনলাম নিউ জিল্যান্ডে বাংলাদেশের কোন এক তরুন পেসার নাকি আগুন ঝরা বল করছে, ঘণ্টায় ১৪০/১৪৫ কিলো বেগে বল করছে সব। ঠিক মত চিনি না, নাম শুনলাম মাসরাফি। লীগে নাম শুনি নাই কিছু না, এই ছেলে কই থেকে এসে এই ধরনের বল করা শুরু করে দিল! এ নিয়ে বেশি ভাবি নাই, কারন আমরা তখন আকাশে উড়ছি, আমাদের কোন বোলার এত গতিতে বল করছে, কয় কি!!!!
    আমরা সেই যুগের সমর্থক। যখন আমাদের খেলা দেখার জন্য কোন ব্যবস্থা ছিল না। টিভি সবার বাড়িতে এসে পৌছায় নাই তখনো আর স্যাটালাইট সংযোগ তো বহু দুরের জিনিস। কাকলি গেস্ট হাউজের অফিস রুমে একটা কালার টিভি ছিল ডিসের লাইন সংযোগ সহ, আমরা হুমড়ি খেয়ে ওইখানেই খেলা দেখছি।চ্যাম্বার অফ কমার্সের অফিসে খেলা দেখা হইছে সব চেয়ে বেশি। সারা শহরের মানুষ এসে হাজির হত খেলা দেখার জন্য। বাড়ি থেকে অনেক খানি দূরে, দুপুরে এসে খাওয়া দাওয়া করে আবার যাওয়াও সম্ভব না। তাই পেটে কিল মেরে বা চানাচুর মুড়ি কিছু একটা খেয়ে পার করে দিতাম মধ্যাহ্ন বিরতির সময়টা।
    বাংলাদেশের খেলা ছিল খুব কম। এশিয়া কাপ বা আইসিসির কোন একটা টুর্নামেন্টে হয়ত একটা বা দুইটা ম্যাচ খেলার সুযোগ পেত। আমরা স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে আবেদন পত্র লিখতাম - আজকে বাংলাদেশের সাথে অমুক দেশের খেলা হবে, খেলা শুরু হবে অমুক সময়, এই খেলা দেখার সুযোগ করে দিয়ে আমাদের মাঝে ক্রিকেটীয় চেতনা গড়ে তুলতে আমাদের কে অর্ধ দিবস পরে ছুটি দিতে আপনার আজ্ঞা হয়!! আজকের নবীন সমর্থকদের কাছে হয়ত আশ্চর্য লাগছে শুনতে কিন্তু এটা দিনের আলোর মত সত্য এবং আরও সত্য হচ্ছে আমরা ছুটি পেতাম। টিফিনের পর পুরো স্কুল ছুটি হয়ে যেত! চোখ কপালে উঠলেও কিসছু করার নাই।
    আমরা অপির এক সেঞ্চুরি নিয়ে বসে ছিলাম ৬ বছর! পরের সেঞ্চুরি দেখতে আমাদের কয়েকবার করে কলিজা পুরাতে হয়েছে। বিদ্যুতের সেই ৯৫ রানে আউট!! কেঁদে বুক ভাসায় দেই যেন এমন অবস্থা। পরের সেঞ্চুরি দেখলাম আসরাফুলের ঐতিহাসিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষের সেঞ্চুরি। যে আতাহার আলী এখন ধারাভাষ্য দিয়ে বেরায় তার সর্বোচ্চ ৭৭ রানের ইনিংস দেখে শিহরিত হইছি আমরা।
    আমি জানি আমার চেয়ে সিনিয়রদের আরও দারুন দারুন অভিজ্ঞতা আছে। তাদের কথা আমি আর কি বলব। তবে এভাবেই আজকের জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে আমাদের ক্রিকেট। এখন বিপক্ষ দল কে তা আর আমরা হিসাব করি না। দল হেরে গেলেই আমাদের মাথায় শর্ট সার্কিট হয়ে যায়।মাথার আউলা ভাব ছাড়তে সময় লাগে কয়েকদিন।এমন কি পুরুষ দলের ভাল খেলা দেখতে দেখতে মহিলা দলকেও প্রেসার দিয়ে বসে থাকি, খেলা জিতে না কেন? ওরা খেলা শুরু করছে কয়দিন ধরে তার হিসাবের সময় নাই আমাদের।
    ভারতের বা অন্য দলের বর্তমান সমর্থকরা অনেক কিছু পেলেও আমাদের মত চোখের সামনে নিজেদের কলিজার টুকরা দলকে এই ভাবে ধীরে ধীরে বাচ্চা থেকে পরিনিত পর্যায়ে যেতে দেখে নাই কেউ।(যারা দেখছে তারা সম্ভবত এত দিনে ….) বর্তমানে হয়ত শ্রীলঙ্কার সমর্থকরাই আমাদের মত দাবি করতে পারবে।
    কাজেই আমাদের কাছে এই হার কিছু না।আমাদের ভালবাসার দল চ্যাম্পিয়ন ট্রফির সেমি ফাইনাল খেলছে, এর চেয়ে বড় পাওয়া আমাদের এক জীবনে আর কি হতে পারে? আমারা এখন ৬ নাম্বার দল!! কোন দিন স্বপ্নেও ভেবে দেখছিলাম কি? তোমরা যারা আজকের খেলা নিয়ে মন খারাপ করতে চাও করতে পার।বিচার বিশ্লেষণ কর বেশি বেশি করে। কিন্তু আমি আমার পাওয়া পেয়ে গেছি এবং সম্ভবত আমার জেনারেশনের সবার অবস্থাও তাই। ভালবাসি বাংলাদেশ কে, বাংলাদেশ ক্রিকেট টিম কে, ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট সবাই কে। ভারত কে জয়ের জন্য শুভেচ্ছা।
  • Ishan | 180.202.222.2 | ১৬ জুন ২০১৭ ০৫:৫৪366381
  • অনেকদিন পরে ক্রিকেট নিয়ে একটা ঠিকঠাক লেখা পড়লাম। বাংলাদেশের উত্থান হয়ে অবধি নেটে খিস্তিখাস্তাই কেবল চোখে পড়ে।
  • S | 184.45.155.75 | ১৬ জুন ২০১৭ ০৯:১৪366382
  • খুব ভালো লাগলো লেখাটা পড়ে। আমি যখন ক্রিকেট খেলা দেখতে শুরু করি, ততদিনে ভারত একবার বিশ্বকাপ পেয়ে গেছে। তবুও একটু কঠিন প্রতিপক্ষ হলেই হারতো (বিশেষত কম ব্যবধানে হারাটা খুব খারাপ লাগতো)। সেখান থেকে এখনকার কোহলিদের টীমটা অনেক বেশি স্টেডি, শক্তিশালী। হয়তো অন্য দলগুলো-ও তত স্ট্রঙ্গ নেই।

    এখন আর খেলা দেখিনা। অনেকদিন হলো খেলা দেখা ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু ইউটিউবে খেলা হলেই যে গালাগালির বন্যা বয়ে যায়, সেটা দেখে অবাক হই। আগে ইন্ডিয়া পাকিস্তান ম্যাচেও এমন গালাগালি হতোনা, রেষারেষি থাকতো এখনকার থেকেও বেশি। অথচ, এখন ভারত বাংলাদেশ খেলাতেও থাকে শুধুই গালাগালি। বেশিরভাগ লোকেদের কোনো ক্রিকেটিয় গ্যান আছে বলে মনে হয়না। কোনো ক্রিকেটিয় অ্যানালিসিস থাকেনা। আপনি যেমন বললেন কোনো চার বা ছয় নিয়ে আলোচোনা নেই, ব্যাটিঙ্গ ইনিংস নিয়ে নেই, বোলিঙ্গ স্পেল নিয়ে নেই। এরা বোধয় জেতা হারা ছাড়া আর কিছুই বোঝেনা।

    আগে যখন ক্রিকেট খেলা দেখতাম তখন মনে হতো কবে সেই দিন আসবে যেদিন চারটে উপমহাদেশিয় দল খ্লবে সেমিফাইনালে। এইবারে অনেকটা এসেছে। বাংলাদেশের উত্থান খুব ইন্টারেস্টিঙ্গ ঘটনা। কিন্তু খেলায় হেরেও মজা পেতে না শিখলে ক্রিকেট দেখে আনন্দ নেই।
  • pi | 57.29.251.127 | ১৬ জুন ২০১৭ ০৯:৩৫366384
  • সত্যিই খুব ভাল লাগল লেখাটা।
  • robu | 213.132.214.87 | ১৬ জুন ২০১৭ ০৯:৩৫366383
  • The rise of the Bangladesh cricket team has been one of the biggest stories of the cricketing word in recent years. The team has evolved from being a pariah to a weak side whose test-playing status was questioned to a scrappy maverick side to occasional giant killers to its present status as a worthy cricketing force. All through this rise, cricket in Bangladesh, as elsewhere in the subcontinent, has been a potent vehicle for nationalism.

    Before 1971, cricket was scorned by East Bengalis because it was seen as a game that lighter-skinned sharif elites played. I once heard an anecdote revealing this attitude from a person who was visiting a veteran left-wing trade unionist in Barisal, Bangladesh. The veteran fighter of the masses was irritated by the enthusiasm for cricket among Barisal’s youth. “Amago polapain khyalbe cricket? Cricket khyallbe Hanif Mohammed. (Our boys will play cricket? Cricket is for Hanif Mohammed),” he said. Hanif Mohammed was a legendary cricketer from Jamnagar and then West Pakistan. For the trade unionist, as for many others, cricket and Bengalis were incompatible.

    Things have certainly changed since then, especially after the Bangladesh Cricket Board’s team made an appearance in the 1999 World Cup and attained test-playing status in 2000.

    The enemy's enemy

    Initially written off as a “basket case” after 1971, Bangladesh cricket's rise has been seen as the victorious struggle of an underdog people fighting against insurmountable odds. It echoes the popular narrative of the 1971 Bangladesh liberation struggle and the nation-state formation itself. Multiple politicians from Bangladesh have associated cricket wins against Pakistan as revenge for the atrocities of 1971.

    Cricket comes with the nation-state’s hegemonic assumptions. And when the nation-state’s ideology is a contested one, cricket reflects these contestations. Before Bangladesh team’s emergence as an admirable cricketing force, the audience’s allegiance was mostly divided between the teams of the Pakistan Cricket Board and the Board of Cricket Control in India. The rifts, visible most clearly during India-Pakistan matches, were as much about domestic political attitudes and self-identities as they were about cricket.

    Support for a team was defined more by what the supporter opposed. For some, the original sin of Pakistan defined their predominant dislike, translating into support for the India team. On the other hand, the Pakistan team gained the support of those for whom the regional hegemonic moves by the Indian Union in general – and anti-Bangladesh actions like the killings by the Border Security Force in particular – served as the primary dislike.

    Apart from these, there were true and alleged undercurrents.

    For one, there was the odious suggestion that the Hindus of Bangladesh tended to support India since their religion supposedly tied them to the Indian Union, their “natural” and “logical” post-1947 homeland. This had sad consequences, ranging from harmless taunts to not-so-harmless aspersions of “disloyalty”. (The similarity to the India Union, where Muslims are accused of supporting Pakistan cricket, is unmistakable.)

    For another, there was the insinuation that a shared Muslim-ness is the basis of support for Pakistan, and that this support equalled disrespect to the lakhs killed in 1971 by the Pakistani occupation forces. This, in turn, led to the more damaging inference that such support is a sign of their collaboration with Pakistan or their razakar political stance.

    What's in the news?

    With Bangladesh becoming a worthy team, much of the energies now manifest during the Bangladesh-vs-Pakistan or Bangladesh-vs-India matches, where the pro-Bangladesh sentiment is at times coupled with anti-Pakistan or anti-India sentiment, as the case may be.

    Immediate political events cast their shadows on the matches too. A few years ago, after a Bangladesh team victory over India, a Facebook picture went viral showing a crouching tiger amidst tall south Bengal grass. “Amra kantatar-e noy, maathe mari (We vanquish you in the cricket field, not in barbed wire),” the caption read, referring to the Indian Border Security Force’s sordid record of often gunning down people it considers criminal trespassers from Bangladesh. Naturally, there’s anger at this in Bangladesh, which already bears a sense of powerlessness due to the Indian Union’s superior military prowess and its geostrategic location that links Bangladesh’s economic life strongly to the Indian Union.

    The post-partition nation-states of the subcontinent, whose hegemonic self-identities carry the indelible imprint of Partition-era fault lines, make it very difficult for people to hold multiple loyalties or “wrong” loyalties. That’s true for cricket too. It is, therefore, not easy being a genuine fan of the Indian or Bangladeshi or Pakistani team while being the citizen of the “wrong” nation-state.

    No-one can doubt that Bengal was partitioned in 1947 on the basis of religion, with West Bengal conceived as the Hindu Bengali dominated homeland and East Bengal as the Muslim Bengali dominated homeland. Nobody can also doubt that the West fared much better than the East in providing security to its minorities. Nonetheless, it is a fact that there have been more Hindu East Bengalis in the Bangladesh team at any given time than Hindu West Bengalis in any other international cricket team.

    When the Bangladesh team wins big against any team other than India, the press in West Bengal is typically jubilant. However, when the Bangladesh team defeats India, the loyalties of West Bengalis understandably remain unacknowledged, unpublished and undiscussed.

    In the right context

    With corporate money banking heavily on cricket hyper-nationalism, the game is often reduced to war by other means. With cricket stars being elevated to the dubious status of warrior-gods, it’s important that this phenomenon is put in the context of greater society, beyond nationalism and pride. Few do this better than Mashrafe Mortaza, the philosopher-captain-hero of the Bangladesh team.

    He says, “I am a cricketer but can I save a life? A doctor can. But no-one claps for the best doctor in the country. Create myths around them. They will save more lives. They are the stars. The labourers are the stars, they build the country. What have we built using cricket? Can we make even a brick using cricket? Does paddy grow on the cricket field? Those who make courtyards using bricks, make things at factories, grow crops in the fields – they are the stars.”

    Mortaza continues: “What do we do? If I say it very bluntly – we take money, we perform. Like a singer or an actor, we do performing art. Nothing more. The Muktijoddhad [1971 Liberation warriors] didn’t face bullets to get money on winning. Who is being compared to whom? If there are any heroes in cricket, they are Rakibul Hasans or martyrs like [Abdul Halim] Jewel... Rakibul Bhai had dared to enter the cricket field with ‘Joy Bangla’ inscribed on his bat [before the 1971 Liberation]. That’s big. Even bigger was his going to the front with his father’s gun. Shohid (martyr) Jewel left cricket and joined the crack platoon [a 1971 Liberation war guerrilla formation]. That’s bravery. Dealing with fast-bowling has romanticism and duty, not bravery.”

    On cricket-based patriotism, Mortaza says, “I say, those who cry ‘patriotism, patriotism’ around cricket, if all of them for one day did not drop banana skin on the streets or did not spit on the streets or obeyed traffic rules, the country would have changed. This huge energy was not wasted after cricket and was used to do one’s work honestly even for a day, that would be showing patriotism. I don’t understand the definition of patriotism of these people.”

    https://thefield.scroll.in/804696/why-cricket-has-been-a-potent-vehicle-for-nationalism-in-bangladesh
  • avi | 57.11.9.214 | ১৬ জুন ২০১৭ ০৯:৪৮366385
  • ক্রিকেট নিয়ে না ভেবে শুধু জেতা-হারা নিয়ে লাফানো, আমাদের প্লেয়ারকে আউট দিয়েছে মানে আম্পায়ার চোর - এসব ব্যাপার আগেও ছিল। কিন্তু আগে ফেসবুক ছিল না, ইউটিউব ছিল না। নিজের আড্ডার বাইরে নিজেকে প্রকাশ করতে হলে কাগজে চিঠি পাঠাতে হত, তারা মিনিমাম একটা স্ট্যান্ডার্ডের নিচে হলে ছাপাতে রাজি হত না, ফলে বস্তুসব এতবেশি বাইরে আসতো না।
    আরেকটা ব্যাপার, ইন্টারনেটে সবই থেকে যায়, পুরোনো ঘটনা তুলে আনায় এর অবদান ব্যাপক। নব্বইয়ের দশকে অনেকবারই দেখেছি পাকিস্তানের কাছে হেরে যাওয়ার পর আজহারকে গালি দেওয়া হচ্ছে, বলা হচ্ছে এ তো পাকিস্তানের সাথে মন দিয়ে খেলবেই না ইত্যাদি। কিন্তু যেই আজহার বিশ্বকাপের বড় খেলায় সাকলিনকে উড়িয়ে ছয় মেরে জেতাচ্ছেন, একই লোক আজহারের ছবি টাঙিয়ে একাকার, তখন আর কেউ মনে করছে না দুবছর আগে এ কী বলেছিল। এখন কিন্তু কথায় কথায় কোনকালে মুস্তাফিজের কাটার নিয়ে মাথা মুড়িয়ে দেওয়া মিম বানানো হয়েছিল, তার ছবি উঠে এসে লোকজনকে তাতিয়ে রাখছে।
    আর ভারতের এই দলটা কুড়ি বছর আগেরটার থেকে সবদিক থেকেই অনেক বেটার। বস্তুত সৌরভের দলের মধ্যেও প্যাশন ছিল, প্রচুর প্রতিভা ছিল, কিন্তু এই সময়ের টিম অনেক বেশি পেশাদার, তখনকার অজিদের মতো, এরা নিঃশব্দে জিতে যায়। পার্থক্য সবচেয়ে বেশি বোলিং আর ফিল্ডিং-এ। সেকালের একটা যুবরাজ বা কাইফ, আগের দশকের একটা আজহার, এখন পুরো ইতিহাস।
  • সেখ সাহেবুল হক | ১৬ জুন ২০১৭ ০৯:৫৮366386
  • সমাপতন
    ----------------------------------------------------
    “সৌম্য সরকার মালাউনের বাচ্চা! নাহলে স্বজাতি ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে অমন শূন্য করে ফিরে যায়?”
    এই ভাবনার মুখে জুতো মেরে ছোটবেলার একটা ঘটনার উল্লেখ করছি।

    ২০০২ সালের ন্যাটওয়েস্ট ট্রফির ফাইনাল। টসে জিতে ইংল্যান্ড ব্যাট নিয়েছে। আমার বাড়িতে টিভি ছিলো না। যেই ওষুধের দোকানে খেলা দেখতাম সেই ‘গিরি ফার্মেসী’ খোলেনি। অগত্যা আমি আর ভাই ‘সোনালী শিবির অ্যাথলেটিক ক্লাবে’ একপ্রকার বাধ্য হয়ে খেলা দেখতে গিয়েছি। দুটো ক্রিকেটপাগল বাচ্চা ছেলে বাবাকে লুকিয়েই ক্লাবে গেছে। ক্লাবে গেছি, বাবা জানলে পিঠে চামড়া তুলে দেবেন।

    ক্লাবে গিয়ে দেখি, টিভির সামনে ভিড়। পেছনের দিকটা অসম্ভব ধোঁয়াটে, তাস খেলা চলছে। সমানে গালাগালি চলছে তাসের দান ফেলার সাথে সাথে।

    খেলা শুরু হলো। ইংল্যান্ডের শুরুতেই জাহির খানের বলে নিক নাইট দ্রুত ফিরে গেলেন। কিন্তু ফর্মে থাকা মার্কাস ট্রেসকোথিক এবং অভিজ্ঞ নাসের হুসেন উভয়েই দক্ষতার সাথে স্কোরকে ছোট্টছোট্ট পার্টে এগিয়ে নিয়ে গেলেন।

    এরই মধ্যে ট্রেসকোথিক বা নাসের হুসেন, যার হোক একটা হাফচান্স ক্যাচ মিস করে মহম্মদ কাইফ। আসলে সেই সময়ের সেরা ফিল্ডারদের একজন মহম্মদ কাইফ বলেই ওটাকে ক্যাচের কাছাকাছি আনতে পেরেছিলো।
    পেছোনের সারি থেকে গালাগালি ভেসে এলো - “শালা খা*কি* ছেলে, মোল্লা বাচ্চা গুলাকে কেন লিছে। সালা মনকে পাকিস্থানে পাঠাইতে হবে(শালাদের পাকিস্তানে পাঠাতে হবে)।”
    স্পষ্ট মনে আছে। এতো খারাপ লেগেছিলো তার কিছুক্ষণ পরেই উঠে চলে এসেছিলাম।

    রেডিওতেই বাকি ম্যাচ শুনেছিলাম। জোড়া সেঞ্চুরির উপর ভর করে ইংল্যান্ড তুলেছিলো ৩২৫ রান। ভারতের জয়ের আশা ক্ষীণ ছিলো। কিন্তু সৌরভ আর সেওয়াগের দৌলতে প্রায় বলে বলে একশোর উপর পাটনারশিপ হয়ে যাওয়াতে একটা আশা তৈরী হয়।
    কিন্তু ১৫০ এর ভিতর ৫ টা উইকেট ফেলে দিয়ে দারুণভাবে ম্যাচে ফেরে ইংল্যান্ড।
    দীনেশ মোঙ্গিয়া, দ্রাবিড় এবং একমাত্র ভরসা সচিন আউট হয়ে যাওয়ায় টিভি বন্ধ হয়ে যায় প্রায় সব বাড়িতে। আমি আর ভাই কিন্তু তখনো রেডিওয় কান পেতে আছি, সামনে বই খোলা।

    যুবরাজ সিং নামটা বেশ চেনা। হিরোটাইপ দেখতে একটা প্লেয়ার, বেশ স্টাইল মারে। মিনি বিশ্বকাপে অষ্ট্রেলিয়াকে ধুয়ে দিয়ে ৮৪ করেছিলো। কিন্তু সে কি পারবে!
    এইসব ভাবতে ভাবতে ক্রিজে মহম্মদ কাইফ। দুজনের অবিশ্বাস্য পাটনারশিপে খেলা ধরে ফেললো ভারত।
    যুবরাজ আউট হয়ে গেলেও, কাইফ শেষপর্যন্ত ছিলো। জাহির খানের উইনিং স্ট্রোকের উপর ভর করে ৩২৫ রান তাড়া করে ভারত জিতে যায়।

    সচিনের বড় রান ছাড়াও জেতা যায়। বিশেষত মিডিল অর্ডার আর লোয়ার অর্ডার ম্যাচ জেতাতে পারে এই বিশ্বাস এনে দিয়েছিলো অল্পবয়সী কাইফ-যুবরাজ। সৌরভের টি-শার্ট ওড়ানো লর্ডসের গ্যালারি অন্য উত্থান লিখেছিলো।

    গোটা পাড়ায় শোরগোল, হইচই। আমার অশিক্ষিতা দাদি বলে উঠেছিলেন - “ভাই ডাকাত পড়েছে নাকি, এতো চব(হইচই) হ্যচ্ছে…”।
    মহম্মদ কাইফকে মোল্লা, খা*কি* ছেলে, মীরজাফর ভাবা তরুণেরাই বাজি ফাটিয়ে নেচেছিলো।

    সৌম্য সরকারকে মালাউন বা ভারতের দালাল বলার লোকেরাও যেমন আছে, মহম্মদ কাইফকে খা*কি* ছেলে বা পাকিস্তানি দালাল বলার লোকও এদেশে ছিল, আছে, থাকবে।
    জয়ের উচ্ছাসে এসব চাপা পড়ে যায় ঠিকই, হারলেই একটা অংশকে এসব বলতে দেখি।

    সৌরভের জার্সিওড়ানো সেদিন চোখে দেখতে পাইনি, শুনেছিলাম। এই আক্ষেপ যেমন ছিলো, তেমনি মনে হয়েছিলো মহম্মদ কাইফকে নোংরা গালাগালি দেওয়া বদমাশগুলোর অধিকার ছিলো না সেদিনের জয়ের পর হইহল্লা করে বাজি ফাটানোর।

    #হককথা
  • Shubhro | 213.110.242.6 | ১৬ জুন ২০১৭ ১০:৫৯366387
  • এই অত্যধিক গালাগালি আর নোংরামি টা কিন্তু বাংলাদেশ একটু ভালো খেলতে শুরু করার পরেই চালু হয়েছে।
    কে-ইন্সিডেন্স বলে মনে হয় না।
  • S | 184.45.155.75 | ১৬ জুন ২০১৭ ১১:০৭366388
  • একদম #হককথা বলেছেন। আজহারউদ্দিনের ক্ষেত্রেও এটা হয়েছিলো, পরেরদিকে। ৯০এর প্রথমদিক অবধি উনার খেলাই সবথ্কে ভালো লাগতো দেখতে। মনে হতো টিমে এই একজনই আছেন যিনি দেশের জন্য খেলেন, বাকিরা সব নিজেদের জন্য খেলে। ৯০এর মাঝামাঝি ব্যাপারটা বদলে গেলো, বোধয় বেটিঙ্গের কারণে। তখন অনেক সময় আশে পাশে উনার নামে এমন মন্তব্য শুনতে পেতাম। অথচ তখনও উনার রেকর্ড পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খুব খুব ভালো। আর উনার কাপ্তান থাকার সময়ই ভারত পাকিস্তানকে নিয়মিত হারাতে শুরু করলো।

    তবুও মনে হয় যে এখন ইন্টারনেটে যে অসভ্যতাটা দেখি সেইটা আগে ছিলোনা। হয়তো অ্যানোনিমাসলি গালাগালি দেওয়ার সুযোগ এই ফ্রাস্ট্রেশনে ভড়া জেনারেশনের কেউ ছাড়তে চায়না।

    বিদ্রঃ বেটিঙ্গ নিয়ে কেলেন্কারিতে সবথেকে কস্ট পেয়েছিলাম ক্রোনিয়ের নাম দেখে। তখন উনি আমাদের হিরো। দক্ষিন আফ্রিকা আমার খুব প্রিয় দল ছিলো।
  • cricfan | 131.241.218.132 | ১৬ জুন ২০১৭ ১৪:৩৭366374
  • বাংলাদেশ ক্রিকেটে এখন পাকিস্তান শ্রীলংকার থেকেও ভালো খেলে।সাবাস । তামিম,সাকিব, মুস্তাফিজুর এশিয়া একাদশেও স্থান পাবে। ওদিকে জিম্বাবোয়ে টিম বর্ণবিদ্বেষে ডুবে গেলো ।আর একটি এশীয় টিম কে লক্ষ্য রাখবেন - আফগানিস্তান। কদিন আগে রশিদ খান স্পিনার টি ওয়েস্ট ইন্ডিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ কে ODI তে হারিয়ে দিয়েছে ১৮ রানে ৬ উইকেট নিয়ে। ওরাও অনেক দূর যাবে। ভারত এই মুহূর্তে অতুলনীয় খেলছে তাই আর কিছু বললাম না । যারা ওই মুস্তাফিজুর কাটার নিয়ে নোংরা মিম বানিয়েছিলো তারা আদতে মুস্তাফিজুরের ক্রিকেটিং স্কিলের অসম্মান করেছিল ।
  • b | 135.20.82.164 | ১৬ জুন ২০১৭ ১৫:০২366375
  • "এখন ইন্টারনেটে যে অসভ্যতাটা দেখি সেইটা আগে ছিলোনা। হয়তো অ্যানোনিমাসলি গালাগালি দেওয়ার সুযোগ এই ফ্রাস্ট্রেশনে ভরা জেনারেশনের কেউ ছাড়তে চায়না।"

    একদম। একদম। একদম।
  • b | 135.20.82.164 | ১৬ জুন ২০১৭ ১৫:০৩366376
  • সাহেবুলবাবু কি বাগমারী এরিয়াতে থাকতেন?
  • from FB | 213.110.242.6 | ১৬ জুন ২০১৭ ১৯:০২366377
  • by Aneek Chakraborty
    মুশকিলটা হ'ল, আমি কিছুতেই স্বীকার করব না আমি একটা কাজ একটু কম পারি। অন্যজন আমার চেয়ে হয়ত সেটা বেশি পারে, ভালো করে পারে। হয়ত সে অনেকদিন ধরে কাজটা করছে, অনেক পরিশ্রম করেছে, বা স্পষ্টতই হয়ত সে আমার চেয়ে বেশি দক্ষ। এটা কিছুতেই স্বীকার করব না। আমি তাকে অপমান করব, হাজারটা বাহানা মারব আমার না-পারার, গোটা পৃথিবী আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত প্রচার করে বেড়াব। প্রয়োজনে ছিঁচকাঁদুনে হতে রাজি, গামবাট সাজতে রাজি, নিজের ছোঁড়া কাদায় নিজের মুখখানা বিশ্রীভাবে লেপে নিয়ে পাঁচমাথার মোড়ে নির্লজ্জ হয়ে দাঁড়াতে রাজি, কিন্তু কিছুতেই স্বীকার করতে রাজি নই আমি একটি নির্দিষ্ট কাজে অন্যের চেয়ে কম পারদর্শী।
    এটা শুধু বাংলাদেশীদের নয়, এই তৃতীয় বিশ্বের প্রায় সবার মধ্যেই কমবেশি দেখা যায়। এটা আসলে আসে অশিক্ষা আর হীনম্মন্যতা থেকে, ছোটবেলা থেকে একটা কাজ না করে শুধু কাঠি করার কালচার থেকে। ভারত ক্রিকেটটা বাংলাদেশের চেয়ে অনেক ভালো খেলে, অনেক দক্ষভাবে খেলে, অনেক প্রফেশনালি খেলে এটা স্বীকার করলে কেউ আপনাদের ছোট ভাববে না, বরং আপনাদের শিক্ষিত এবং রুচিসম্পন্ন একজন মানুষ ভাববে। আপনারা আবেগ দিয়ে খেলেন, এই সবে কিছু বছর হ'ল ক্রিকেট খেলা শুরু করেছেন, সে তুলনায় যথেষ্ট পরিণত ক্রিকেট খেলেন, কিন্তু ভারত আপনাদের চেয়ে ক্রিকেটে অনেক বেশি শক্তিশালী একটি দল- এই বাস্তবটা স্বীকার করতে অসুবিধে কোথায় বুঝি না। আমরাও অনেক কিছু পারি না। বিশ্ব ফুটবলে পিছিয়ে, অলিম্পিকে পিছিয়ে, খেলা ছাড়া আরও পাঁচটা বিষয়েও পিছিয়ে। এবার আমরা যদি অলিম্পিক হ'লে বলি আমেরিকা আর চীন লবিবাজি করে পদক জোটায়, নোংরা মিম বানাই তাদের নিয়ে, ফুটবল বিশ্বকাপ এলে যুক্তি দিই আহা আমরা কত আবেগী ফুটবল নিয়ে বাকি পৃথিবী শুধু আমাদের চক্রান্ত করেই ফুটবলটা খেলতে দিলো না- তাহলে কারোরই কিছু যায় আসবে না। আমরাই হাস্যাস্পদ হব।
    আপনার ফিনফিনে আবেগ আর মোটা দাগের ছোটলোকামির যৌথ ককটেল আপনাদের কাছেই রাখুন। এবং তারপর সত্যিটাকে সত্যি বলে স্বীকার করুন। ছোটবেলায় যখন ক্রিকেট মেখে খাই, ক্রিকেট নিয়ে ঘুমোই তখন ভারত প্রায়ই অস্ট্রেলিয়ার হাতে রীতিমতো পর্যুদস্ত হত। খুব কষ্ট হত। কিন্তু এই নোংরামোটা করতাম না। নিজেকে বলতাম, ভারত চেষ্টা করেছে, কিন্তু পারে নি, অস্ট্রেলিয়া তাকে আউটপারফর্ম করেছে। এই আউটপারফর্ম কথাটার মানে কি বোঝেন আপনারা? একটা লড়াইয়ের মঞ্চে যে আপনার পেটি আবেগ পেরিয়ে তারপরে পারফর্ম করতে হয় এটা বোঝেন? না বুঝলে একটাই কথা বলি, বুঝে উঠুন। সবাই সব জিনিস পারে না। যে বেশি পারে তার সেই পারদর্শিতাকে, শ্রমকে সম্মান দিতে শিখুন, এবং সে কাজটা নিজে সেই লেভেলে পারার ইচ্ছে থাকলে সমপরিমাণ শ্রম, দক্ষতা এবং সময় দিতে শিখুন। হ্যাঁ, সবকিছুর ওপরে সময়। ধৈর্য ধরতে শিখুন একটু। ভারত আজ বাংলাদেশের কাছে বাই এনি চান্স হেরে গেলেও ভারত বাংলাদেশের চেয়ে অনেক, অনেক গুণ বেশি ক্রিকেট দক্ষ- এই সত্যিটার কোনও নড়চড় হত না। আবেগী তাকায় একটা নির্দিষ্ট দিনের দিকে, বোদ্ধা তাকায় একটা টাইমলাইনের দিকে। সেখানে তাকালে ধারাবাহিকতা মাপা যায়, মাপা যায় একজনের গুণগত মান। এবং সেই টাইমলাইনের দিকে তাকালে দেখা যায় ভারত অন্তত বিগত দেড় দশক ধরে অত্যন্ত ধারাবাহিকভাবেই ক্রিকেটটা ভালো খেলছে। সে খেলছে তার কারণ কী তা নিয়ে আপনি টেবিল গরম করুন, আমার ইন্টারেস্ট নেই, কিন্তু খেলছে যে এটা সত্যি। সে হয়ত আর চার পাঁচটা খেলা বা অন্য আর চার পাঁচটা সামাজিক ক্ষেত্রে সেই দক্ষতা দেখাতে পারেনি, কিন্তু তা বলে আমরা যদি কোনও গ্লোবাল মিটের আগে বাকি দক্ষ দেশের রাষ্ট্রনেতা বা তাদের পতাকা নিয়ে নোংরামি করতে বসি আর হাপুস নয়নে কেঁদে ভাসাই 'সবাই চক্রান্ত করছে আমাদের বিরুদ্ধে' বলে তাহলে সেটাকেই প্রকৃত ছোটলোকামি বলে। এবং হ্যাঁ, তাতে সত্যিটার একবর্ণও বদল হয় না। পারদর্শিতার সেই লড়াইয়ের শেষে আমরা শুধু ফলাফল দিয়ে হারি না, আমরা মানুষ হিসেবেও হাস্যাস্পদ হয়ে উঠি বাকি পৃথিবীর কাছে।
    প্রিয় বাংলাদেশি মানুষেরা, আপনারাও ঠিক এভাবেই হাস্যাস্পদ হয়ে উঠছেন। বাংলাদেশ দল হিসেবে অত্যন্ত ভালো ক্রিকেট খেলে, ক্রিকেট প্রতিভাও যথেষ্ট, কিন্তু পৃথিবীর অন্যান্য সমস্ত জিনিসের মতনই তার পরিণতিবোধ আসতে আরও সময় লাগবে। হ্যাঁ, সময়। আরেকটু ধৈর্যশীল হতে হবে আপনাদের। এবং হ্যাঁ, তারপরেও একটা খেলায় জেতা হারা থাকবে। তাকেও মেনে নিতে হবে হাল্কাভাবে। একটা জেতা হারার ওপর নির্ভর করে পৃথিবী কোথাও গিয়ে শেষ হয়ে যাচ্ছে না। এবং এই পুরো পদ্ধতিটার মধ্যে দিয়েই দল হিসেবে, দর্শক হিসেবে, দেশ হিসেবে আমরা স্ব স্ব ক্ষেত্রে পরিণত হয়ে উঠব। এগুলো অনেক বড় বড় কথা, বুঝতে গেলে আগে অসভ্যতামিটা ছাড়তে হবে। আপনাদের এভাবে প্রতিবার হাস্যাস্পদ দেখতে ভালো লাগে না।
  • S | 184.45.155.75 | ১৬ জুন ২০১৭ ২১:৪৭366378
  • বাকি সব ঠিকই বলেছেন। কিন্তু এইখানেই একটা আপত্তি থেকে গেলোঃ
    "এটা শুধু বাংলাদেশীদের নয়, এই তৃতীয় বিশ্বের প্রায় সবার মধ্যেই কমবেশি দেখা যায়। এটা আসলে আসে অশিক্ষা আর হীনম্মন্যতা থেকে, ছোটবেলা থেকে একটা কাজ না করে শুধু কাঠি করার কালচার থেকে।"

    প্রথম বিশ্বে নেই বললেন কি করে?
  • b | 24.139.196.6 | ১৭ জুন ২০১৭ ০১:০৮366379
  • অনীক চক্রবর্তীর কত সময় মাইরি।
  • Muhammad Sadequzzaman Sharif | ১৭ জুন ২০১৭ ০১:১৮366380
  • শুধু কি পরের গাছের আম দেখে হিংসায় মরছি আমরা? শুধু মাত্র এই কারনেই ভারত কে যা না তা ভাবে গালি দিচ্ছে আমার দেশের কিছু আবাল?ভারত এখন দুর্দান্ত টিম কোন সন্দেহ নেই। যারা ভারত কে খেলার জন্য গালি গালাজ করছে তাদের জন্য সমবেদনা। কারন তারা মানসিক ভাবে সুস্থ না।আপনাদের সাফল্যে সবাই গালিগালাজ করছে এমন মনে করার কোন কারন নেই, কোন যুক্তিও নেই। বাংলাদেশ কে যত ছোট দল ভাবছেন সম্ভবত তত ছোট দল আর বাংলাদেশ নাই। নিয়মিত দেশের মাটিতে জিতছি আমরা এখন। ভারত নিজেও সিরিজ হেরে এসেছে আমাদের দেশ থেকে। বিদেশের মাটিতে জেতা শুরু হয়েছে, সামনে আরও হবে আশা করি। কেন আমার দেশের মানুষ চরম ভারত বিরোধী হয়ে গেছে বা যাচ্ছে তাই বরং বলি -

    আমাদের প্রচুর সমস্যা ভাই।ক্রিকেট অনেক ছোট ব্যাপার।সরকারের গদি নির্ধারণ হয়ে যাচ্ছে আপানাদের দেশ কে গালি দেওয়া না দেওয়া নিয়ে। আমার দেশের রাজনীতিতে ভারত কার্ড একটা শক্তিশালী কার্ড। একজন একে পক্ষে খেলছে আরেকজন বিপক্ষে। সকাল বিকাল ভারত কে গালি দেওয়া কেউ কেউ নৈতিক দায়িত্ব বলে মনে করে। এ সব সময়ই আছে, আপনারা শুধু ক্রিকেটের সময় বুঝতে পারেন। প্রতিনিয়ত উস্কে দেওয়া হয় মানুষ কে ভারত বিরোধী প্রচারনার জন্য। আপনারা জানেন কি না জানি না। আমাদের দেশে এই ধরনের কথাও হয় যে হাসিনা মোদীর সাথে চুক্তি করে আর্মি, পুলিশে ভারত থেকে লোক এনে ঢুকাচ্ছে। হাজার হাজার ভারতীয় আমাদের সেনাবাহিনি পুলিশ বাহিনিতে আছে বলে অনেক অনেক মানুষ বিশ্বাস করে। কয়েক বছর আগে ইনকিলাব পত্রিকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল শুধু এই কারনে যে তারা প্রকাশ করেছিল, ভারতীয় সেনাবাহিনী নাকি আমাদের সিমান্ত অতিক্রম করে এসে আমাদের দেশের ভিতরে অপারেশন চালিয়েছে। এখন পরিস্থিতি যখন এমন, যখন এই ধরনের বক্তব্য অনেকে মনে প্রানে বিশ্বাসও করে তখন গালি গালাজ না করে কি করবে? তাদের হাতে অস্ত্রই তো ওই একটা।

    তবে দায় ভারতের নাই একদম তা বলতে পারবেন না।গালি এক তরফা হয় না কখনই। বলবেন বাংলাদেশ শুরু করেছে? তো? আপনারাও শুরু করে দিলেন? একই তো হলো তাহলে ব্যাপারটা!! তবে আমি দায় বলতে আরও অন্য কিছু বলতে চাচ্ছি। ভারতের সাথে আমাদের যে নানা বিষয় নিয়ে সমস্যা আছে তার বড় প্রভাব পরে এসে খেলার সময়। সারা বছর ধরে দেখছে ভারত সিমান্তে গুলি করে মানুষ মারছে, ন্যায্য পানি দিচ্ছে না, খরায় পরে আছে দেশ, দেখছে তাদের টিভি চ্যানেল সব ঘরে এসে বসে আছে অথচ আমাদের একটা চ্যানেলকেও ঢুকতে দিচ্ছে না, দেখছে ভারতীয় পণ্যে দেশ সয়লাব হয়ে যাচ্ছে অথচ আমাদে পণ্য ঢুকতে পারছে না ভারতে, এই রকম নানা সময়ের নানা ক্ষোভ এসে হাজির হয় ক্রিকেট মাঠে। অন্য কিছুতে তো আর চোখের সামনে, নগদ নগদ জবাব দেওয়ার কোন ব্যবস্থা নাই, আর যেহেতু ক্রিকেটে একটু আকটু লড়াই করতে পারি তাই জেতার জন্য তাই মরিয়া হয়ে উঠে মানুষ। কিন্তু তারপরেও যে অসুস্থ প্র্যাকটিস চালু হয়েছে তার কোন আসলে ব্যাখ্যা হয় না, এবং আগেই বলেছে যারা করে তারা সুস্থ না।

    শিক্ষা একটা বড় ফ্যাক্টর। এমন সব মানুষ ফেসবুক ইউজ করছে যাদের ন্যূনতম বেসিক জ্ঞান নেই।মুরাদ টাকলা নামে একটা পেজ আছে ফেসবুকে, একটু ঢু মারলে দেখতে পাবেন কারা এরা যারা ফেসবুক চালাচ্ছে। যেহেতু লিখলেই হয় তাহলে লিখতে সমস্যা কি? এরা আছে সব সময়, সবখানে। যারা ভাবছেন এরা শুধু ভারত কে বা ভারতীয় খেলোয়াড়দের গালি গালাজ করে তারা ভুল ভাবছেন। ভাবছেন সৌম্য হিন্দু বলে সৌম্য করে গালি দিয়েছে? ভুল ভাবছেন। এরা তামিম কে ছাড়ে নাই, সাকিব সাকিবের বউ কে ছাড়ে নাই,নাসিরের বোন নিয়ে একটা ছবি পোস্ট করেছিল ফেসবুকে, এদের কার্যকলাপে লজ্জায় অপমানে নাসির ছবি সরায় নিয়েছিল সে সময়। কাজেই এরা আছে এরা হয়ত থাকবে। আপনি ঠিক করবেন আপনি কাদের কে যুক্তি পুর্ণ মনে করবেন, আপনি চিন্তা করবেন কাদের কথাকে আপনি গ্রাহ্য করবেন।
    আপনার বিচার বুদ্ধির উপরে নির্ভর করবে আপনি কোন বাংলাদেশের চেহারা দেখতে চান।
    সমাজে তারা যেমন আছে আমরাও আছি। আপনরা দেখছেন এদের কে বছরে এক দুই বার, আমরা দেখছি প্রতিনিয়ত। আমাদের লড়াই করতে হয় প্রতিদিন।ভারতের দালাল ট্যাগ খেতে হয় যখন তখন। কিন্তু আমরা জানি কোনটা সঠিক আর কোনটা অন্যায়। খেলার মাঠের জবাব মাঠেই দিতে হবে অনলাইনে না এই জ্ঞান টুকু আমাদের এখনো আছে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঠিক অথবা ভুল মতামত দিন