এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • ইস্রায়েল আর প্যালেস্টাইনের গল্প  

    Nabhajit লেখকের গ্রাহক হোন
    ২৬ অক্টোবর ২০২৩ | ৭৫১ বার পঠিত


















  • এ বছর ২০২৩ ফেব্রুয়ারী তে গেছিলাম ইস্রায়েল আর ওয়েস্টব্যাঙ্ক ঘুরতে। ওয়েস্টব্যাঙ্কের প্ল্যান শুরুতে ছিল না। ওয়েস্টব্যাঙ্ক প্যালেস্টাইনে। আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছিল লন্ডন থেকে টেল আভিভ। আমাদের ধারণায় ইস্রায়েল আর প্যালেস্টাইন অবিরাম যুদ্ধক্লান্ত দুটো দেশ। আজ আমি চেষ্টা করবো কিছু ভুল ভাঙাতে। ইতিহাস আর আধুনিক সাংবাদিকতা নিয়ে আমার ধারণা যে দুটোই আংশিক ভাবে পক্ষপাতদুষ্ট। তাই আমি নিজেই চেটে চুষে দেখার সংকল্প নিয়ে আজ পর্যন্ত পঞ্চাশ এর বেশি দেশ ঘুরেছি। সামান্য পড়াশোনাও করি কোনো দেশ ঘুরতে যাওয়ার আগে। কোনো ট্যুর কোম্পানির বাসে বসে ঘুরি না। নিজেই গাড়ি চালিয়ে ঘুরি অথবা লোকাল ট্রান্সপোর্ট নিয়ে শহর, গ্রাম, জঙ্গল আর সমুদ্রতট ঘুরে বেড়াই। স্থানীয় মানুষের সাথে থাকি, তাদের কথা শুনি।

    টেল আভিভ প্রথম দর্শনে পালিশ করা মুম্বাই মনে হয়েছে। সমুদ্রের ধারে ঝকঝকে তকতকে একটা নতুন শহর তৈরী হচ্ছে, কিছুটা হয়ে গেছে তার পাশেই পুরোনো ঐতিহ্য নিয়ে এখনো দাঁড়িয়ে আছে ওল্ড জাফ্ফা। বেন গুরিয়ান এয়ারপোর্ট থেকে ট্রেনে শহরে এসে লোকাল বাস, ট্যাক্সি বা উবের নিয়ে গন্তব্যে পৌঁছে যাওয়া যায়। লোকজন ইংরেজি বলে। 

    ইহুদি বললেই একটা ছবি মাথায় আসে, একটা কানা উঁচু করা টুপি, দু কানের পাশে জুলফি থেকে দুটো টিকি বা মাথায় কিপা পড়া কিছু মানুষ। আসল ছবিটা একদম আলাদা।  ঠিক যেমন একজন সাধারণ হিন্দু বা সৈয়দ মুজতবা বা জাভেদ আখতার এর মতো মুসলমান বা কেরালার লুঙ্গি পড়া কোনো খৃস্টানকে দেখে তাদের ধর্ম বোঝা যাবে না, ঠিক তেমন টেল আভিভ এর অধিকাংশ ইহুদিকে দেখে বোঝার উপায় নেই তাদের ধর্ম কি। অনেকটা আমাদের মতোই দেখতে। কাজ নিয়ে ব্যাস্ত, ক্লান্ত কিন্তু ভীষণভাবে মার্জিত জাত। অকারণে অযাচিত সাহায্যের হাত নেই ঠিক, কিন্তু সাহায্য চাইলে সকলেই রাজি। বাসে বসে বাস স্টপের নাম বলছে কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না, কাউকে জিজ্ঞাসা করতেই বলে দিচ্ছে কখন নামতে হবে। এ প্রসঙ্গে আরো একটা কথা বলা উচিত, ইস্রায়েল-এ মুসলমানের শতকরা ভাগ ১৮, ভারতে মুসলমান এর শতকরা ভাগের প্রায় কাছাকাছি। পথে ঘাটে অনেক মুসলিম দেখতে পাওয়া যায় যাদের বেশিরভাগের চেহারায় তাদের ধর্ম প্রকাশ পায় না। তারাও সমান ভাবে সভ্য ও মার্জিত। ট্যাক্সি ড্রাইভার বেশির ভাগ মুসলমান (এখানে বলে আরব), তারা কিছুটা চেষ্টা করে লোক ঠকাতে কিন্তু তার সাথে ধর্মের কোনো যোগ নেই। লোক ঠকানো যে কোনো দেশেই মানুষের স্বভাব।

    ইস্রায়েল তৈরী হয় ১৯৪৮ এ। ইসরাইলের পার্লিয়ামেন্টকে বলে কেনেসেট (Knesset), ১২০ জন মেম্বার এর মধ্যে ১০ জন আরব মুসলমান, শতকরা ৮ দশমিক ৩ শতাংশ। ভারতের পার্লিয়ামেন্টে মাত্র ৫ শতাংশ মুসলমান। ভারতে সাধারণত মুসলমান ভোটারের প্রতিনিধি মুসলমান হয় কিন্তু ইসরায়েলে সেরকম নয়, কারণ মুসলমানরা দল বেঁধে এক জায়গায় থাকে না, ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে সর্বত্র। ওই দেশে বাড়িওলা মানুষের ধর্ম দেখে বাড়ি ভাড়া দেয় না।

    টেল আভিভ শহরের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে আছে ইতিহাস আর শিল্পের ছোঁয়া, আর আছে জনতার বাজার। মাল্টিপ্লেক্স আছে কিন্তু গড়িয়াহাট বা বড় বাজার ও আছে, কলকাতার মতো। রাস্তার ধারে দেওয়ালে গ্রাফিটি আছে কিন্তু নোংরা গ্রাফিটি না, একটা ছবি দিয়েছি। আর পাঁচটা দেশের মতো ইসরাইলের ও কিছু নিজস্ব খাবার আছে। ইস্রায়েল যখন তৈরী হয় তখন ইহুদিরা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে ইসরায়েলে এসে থাকতে শুরু করে, তাই ট্রাডিশনাল খাবার বলতে এখানে তেমন কিছু নেই। ইউরোপিয়ান, রাশিয়ান, পোলিশ, মধ্য প্রাচ্য এমনকি ভারতীয় খাবারের স্বাদও আছে ইসরাইলের খাবার দাবারে। মজার ব্যাপার আমি বাজারে আমসত্ত্ব আর জিলিপি দেখেছি। যদিও ইহুদিরা আমসত্ত্ব দুধে ফেলে তাতে কদলী দলে খায় কি না জানি না।
    টেল আভিভ থেকে ট্রেন ধরে জেরুসালেম, মাত্র প্রায় এক ঘন্টা লাগে। জেরুসালেম ইসরাইলের রাজধানী, টেল আভিভ হলো অর্থনৈতিক রাজধানী। জেরুসালেম শুনলেই মনে হবে সারা শহরে বিভিন্ন ধর্মের ঘন্টা বাজছ। একদম সেরকম নয়, সুন্দর সাজানো শহর, নতুন নতুন বাড়িঘর এর সাথে মিশে আছে পুরোনো ঐতিহ্যময় অট্টালিকা যার আনাচে কানাচে শুধু ইতিহাস। চাট্টিখানি কথা নয়, তিন তিনটে ধর্মের উৎপত্তি এখানেই, যদিও পুরোনো শহরকে চার ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ইহুদি, খ্রীষ্টান, ইসলামিক আর আর্মেনিয়ান। শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান, যদিও সিকিউরিটির লোকজন AK47 নিয়ে ঘুরছে। রাস্তায় লোকজন বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যবহার দেখিয়েছে। ফিলিস্তিনিরা জেরুসালেমকে তাদের রাজধানী বলে দাবি করে। 

    একদিন সকালে ঘুমভেঙ্গে দেখি আকাশ মেঘলা। রাস্তায় টুরিস্ট কম। ভাবছি কি করবো, হঠাৎ মাথায় এলো বেথলেহেম ঘুরে এলে কেমন হয়! বেথলেহেম প্যালেস্টাইনের দখলে, বর্ডার পার করে যেতে হবে। রাস্তায় দুচারটে ট্যাক্সিকে জিজ্ঞাসা করলাম, একজন আরবি ড্রাইভার রাজি হলো। বললো আমরা যেন পাসপোর্ট না দেখাই। আমি জিজ্ঞাসা করলাম তাহলে কি করে বর্ডার পার করবো? ও বললো আমাদের মার্কিন টুরিস্ট বলে নিয়ে যাবে, বর্ডারের গার্ডরা মার্কিনদের কথা শুনলেই ভয় পায়, কিছু বলে না। রাজি হয়ে গাড়িতে চললাম ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক-এর রাস্তায়। ৪৫ মিনিট লাগলো বর্ডার পার করতে। মার্কিন শব্দ ভালো কাজ করেছে। আমার যদিও ব্রিটিশ পাসপোর্ট। বেথলেহেমের দরজার উল্টোদিকে একটা মসজিদ, যেখানে লাউড স্পিকারে নামাজ পড়া চলছিল। যীশুর 'জন্মস্থান' দেখলাম, তারপর ওয়েস্ট ব্যাংকের রাস্তায় ঘুরে বেড়ালাম। অকল্পনীয় দারিদ্র, নোংরা রাস্তা, বাড়িঘর, রাস্তায় প্লাষ্টিক ব্যাগ উড়ে বেড়াচ্ছে, সব কিছুই ধূসর। একটা প্যালেসটিন ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কও চোখে পড়লো। কে বা করা যে এই ব্যাংকে ইনভেস্ট করে জানি না। মজার কথা হলো, প্যালেস্টাইনের কোনো নিজস্ব মুদ্রা নেই, ওরা এখনো শেকেল ব্যবহার করে। শেকেল ইসরাইলের কারেন্সী। আমি অর্থনীতির ছাত্র নই কিন্তু চার্টার্ড একাউন্টেন্ট, এটুকু বুঝি যে প্যালেস্টাইনের অর্থনীতি এখনো  ইসরাইলের হাতে। তাহলে কি করে চালায় নতুন দেশ? কে করে এদের বাজেট? একটা কফি শপে একজন ভদ্র দেখতে লোকের সাথে আড্ডা মারতে লাগলাম। আমাদের কল্পনায় মহান পিএলও লিডার আরাফাত-এর নাম করতেই লোকটার চোখে মুখে বিরক্তি দেখলাম।
    ওই লোকটা পড়াশুনা করেছে ইংল্যান্ডে। এখন প্যালেস্টাইনের একটা ল ফার্মের মালিক। ও যা বললো আর আমি সামান্য পড়াশোনা করে বিবেক বুদ্ধি দিয়ে যা বুঝেছি তা সংক্ষেপে এ রকম  -

    ইসরায়েল আর প্যালেস্টাইনের লড়াই কিন্তু ধর্মের লড়াই নয়, জায়গা দখলের লড়াই। ইসরাইল তৈরী হয়েছিল প্যালেস্টাইনের জমিতে তাই ফিলিস্তিনিদের মনে হয় ইসরাইল তাদের দেশ দখল করেছে, কিন্তু আমরা যদি চার হাজার বছর পিছিয়ে গিয়ে দেখি তাহলে দেখবো এই দেশ তা ইহুদীদেরই ছিল। যীশু তো খ্রীষ্টান ছিল না, না ছিল মোহাম্মদ। যীশুর মৃত্যর পর থেকে শুরু হলো হিংসা আর ঘৃণা। ইহুদি বিতারণ শুরু হলো, অটোমান রাজ এলো তখনও ইহুদি হত্যা চললো, তারপর দু দুটো বিশ্বযুদ্ধ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ৬০ লক্ষ ইহুদি বিনাশ করলো হিটলার। তাছাড়াও রাশিয়া আর ইউরোপে লাখে লাখে ইহুদিদের মারা হয়েছে।  পৃথিবীর সব দেশেই ইহুদিদের প্রতি ঘৃণার প্রকাশ দেখা গেছে যাকে আমরা আজ বলি সেমিটিসম। ভারত একমাত্র দেশ যেখানে ইহুদিদের মনে হয়নি তাদের প্রতি বৈষম্য দেখানো হয়েছে। এই কথা নাকি ইসরাইলের সংবিধানে লেখা আছে। আমি ইসরাইলের সংবিধান পড়িনি কিন্তু অনেক তথ্যে দেখেছি এর উল্লেখ আছে।

    অনেক প্রতিবেদনে দেখছি বলা হয়েছে যে ইস্রায়েল ১৯৪৮ থেকে আজ পর্যন্ত প্যালেস্টাইনের অনেক জায়গা দখল করে নিয়েছে, কোনঠাসা করে দিয়েছে ফিলিস্তিনিদের। কথাটা একদম উড়িয়ে দেয়া যায় না, কিন্তু ফিলিস্তিনিদের মধ্যেও কোথাও কোনো মতবিরোধ ছিল যে তারা আলাদা থাকতে চায় নাকি ইসরাইলের সাথেই মিলেমিশে থাকতে চায়। 

    ১৯৭৩ - ইজিপ্ট আর সিরিয়া যৌথ ভাবে আচমকা লড়াই শুরু করে ইসরাইলের ওপর। উদেশ্য সুয়েজ ক্যানেল-এর সম্পূর্ণ দখল নেওয়া। যদিও একজন ইজিপ্সিয়ান মিনিস্টার এবং ডাবল এজেন্ট আশরাফ মারওয়ান ইস্রায়েলকে জানিয়েছিল যে ইজিপ্ট যুদ্ধ শুরু করবে, তোমরা চাইলে সেই যুদ্ধ দমন করতে পারো। যুদ্ধে শুধু নিরীহ মানুষের প্রাণ যায়। ইস্রায়েল আশরাফ এর কথা শোনে নি, সেই যুদ্ধে প্রায় ১৭০০০ মানুষের প্রাণ যায়। ছয় দিন চলে সেই যুদ্ধ, ইজিপ্ট গোহারান হারে আর তার বদলে গাজা স্ট্রিপ চলে আসে ইসরাইলের দখলে। গাজার লোকজন ছিল ফিলিস্তিনি। এতদিন ইজিপ্ট এর দখলে ছিল এখন তারা হয়ে গেলো প্যালেস্টাইনের একটা অংশ। কিন্তু প্যালেস্টাইন আর গাজার মধ্যে ইস্রায়েল। ঠিক যেমন পশ্চিম পাকিস্তান আর পূর্ব পাকিস্তান, বাংলাদেশ তৈরী হওয়ার আগে। স্বভাবতই দুটো ভূমি খন্ডকে শাসন করা মুশকিল হচ্ছিলো।

    শুরু হলো প্যালেস্টাইনকে সম্পূর্ণ স্বাধীন করার লড়াই, ইসরাইলের হাত থেকে জমি পুনর্দখল করার লড়াই, শাসন ভার নিজেদের হাতে তুলে নেওয়ার লড়াই। ইয়াসার আরাফাত-এর আবির্ভাব। প্যালেস্টিনিয়ান লিবারেশন অর্গানিজশন এর জন্ম।  লড়াই চলেই থেকেছে ২০-এর দশক থেকে ২১-এর দশক ধরে। ইসরাইলের তৎকালীন প্রধান মন্ত্রী আইজাক রাবিন (Yitzhak Rabin) এর শান্তি প্রস্তাব আর ইয়াসার আরাফাতের নেতৃত্বে শান্তি চুক্তি 'অসলো একর্ড' সই হলো ১৯৯০ সালে। চুক্তি অনুযায়ী প্যালেস্টাইনের সার্বভৌমত্ব স্থাপিত হলো, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে গাজা অসলো চুক্তি মানলো না। গাজা-তে জন্ম হলো হামাসের। কেউ বললো হামাস বিপ্লবী, কেউ বললো সন্ত্রাসী। ইসরাইলের অতি ডানপন্থীরা বেঁকে বসলো। দেখা গেলো ইসরাইলের প্যালেস্টাইন নিয়ে যত মাথা ব্যথা তার চেয়ে বেশি সমস্যা অতি বাম ইহুদি আর অতি ডান ইহুদিদের অন্তর্দন্দ্ব। কিছু ইহুদিরা চাইতে লাগলো ইহুদি রাষ্ট্র যেখানে ফিলিস্তিনিদের জায়গা নেই, অন্যদিকে সাধারণ মানুষ চাইছিলো শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান। পৃথিবীতে শান্তির জন্য যারা লড়াই করেছে তারা নিজেদের লোকের হাতেই খুন হয়েছেন যেমন আমাদের গান্ধী আর ইসরাইলের আইজাক রাবিন। রাবিনকে ফিলিস্তিনিরা মারেনি, মেরেছে একজন ইহুদি।

    আরো কিছু কথা বলে আমার প্রতিবেদন শেষ করছি। 

    ১) সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে খবরের কাগজে যখন ছবি দেখি যে এক ফিলিস্তিনি বাপ তার  শিশুর মৃতদেহ জড়িয়ে কাঁদছে, দেখলে যে কোনো সংবেদনশীল মানুষের মনে হবে ইসরায়েলিরা হিংস্র আর নির্মম। কিন্তু আমরা কতবার দেখেছি যখন কোনো ইহুদীর মৃত্যুকে ঘিরে কোনো খবর প্রকাশ পেয়েছে? হামাস থেকেই কিন্তু প্রথম মিসাইল ছোড়া হয়েছিল ইসরায়েলে। 

    ২) আমরা ইউরোপের বাজারে হন্ডুরাসের কলা দেখি, ইজিপ্টের পেয়ারা দেখি, বাংলাদেশের জামা কাপড় দেখতে পাই, পাকিস্তানের আম পাই, আরও কত দেশের কত জিনিস কিন্তু আজ পর্যন্ত আমি প্যালেস্টাইনের কোনো প্রোডাক্ট বাজারে দেখিনি। প্যালেস্টাইনে কিছু তৈরিই হয় না, ওদের কোনো শিল্প নেই, বাণিজ্য ও নেই, পুরো দেশটাই ইসরাইলের টাকায় চলে, কিন্তু ওদের সার্বভৌমত্ব চাই। তা কিকরে সম্ভব?

    ৩) প্যালেস্টাইনে তাও একটা অথরিটি আছে যার নাম প্যালেস্টিনিয়ান অথরিটি, গাজা তাদেরও মানে না। তা সত্বেও গাজার হামাসের হাতে এতো মিসাইল আর একে৪৭ কোথা থেকে আসে? এই প্রশ্ন কোনো সাংবাদিক এখনো কেন করে নি? তার কারণ পৃথিবীতে সব চেয়ে বড় ব্যবসা হলো যুদ্ধ। ইস্রায়েল আর ফিলিস্তিনি-দের যুদ্ধে মাতিয়ে রাখলে অস্ত্র বিক্রি হবে। গাজার হামাস-দের অস্ত্রের পয়সা দেবে আরব দেশ আর কিছু ইউরোপিয়ান দেশ যারা চায় না ইসরাইলের ব্যবসা বাড়ুক। এতো যুদ্ধ করেও ইসরাইল সারা পৃথিবীর সব চেয়ে বড় জেনেরিক মেডিসিন কোম্পানি চালায়, নিজেদের অস্ত্র নিজেরাই তৈরী করে। ইউরোপ থেকে ওদের কিনতে হয় না তাই ইসরাইল নিয়ে কারোর কোনো মাথা ব্যথা নেই। মার্কিন অর্থনীতিতে ইহুদিদের ভীষণ প্রভাব, ইউরোপে হাজার ব্যবসা চালায় ইহুদিরা, বেলজিয়ামে ডায়মন্ড কাটিং ব্যবসা ইহুদিরা চালায়, আর কাজ করে ভারতীয় শ্রমিকরা। 

    ৪) গাজা যখন ইজিপ্টের দখলে ছিল তখনও গাজার ফিলিস্তিনিরা মার খেত এজিপ্টিয়ানদের হাতে, তখন তো ঐস্লামিক দেশ গুলো ফিলিস্তিনি ভাইদের জন্য এতো উতলা হতো না। আজ কেন এতো দরদ? শুধু কি এই জন্য যে আজ তারা ইসরাইলের দখলে তাই?
        
    প্রশ্ন অনেক কিন্তু উত্তর নেই। সেমিটিসম আজও আছে, ইহুদি মরলে এখনো কিছু লোক ভাবে ওরা পুরোনো পাপের (যীশু হত্যা) ফল পাচ্ছে।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • ং: | 182.160.100.45 | ২৬ অক্টোবর ২০২৩ ১৬:২১525183
  • এই গ্রুপে কাউকে ছোট না করার, অপমানে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে নেবার উদ্দেশ্য ছাড়া এত ভাল ও গোছানো লেখাও হয়? অসাধারণ লেখা। আর আমি পড়তে ও টাইপ করতে সবসময়ই ভালবাসি। 
  • dc | 2401:4900:1cd0:87b:8118:f525:179f:a171 | ২৬ অক্টোবর ২০২৩ ১৭:০৭525185
  • আমি প্রথম দিন থেকে ভাবছি হামাস হঠাত এই সময়ে ইজরায়েলকে আক্রমন করলো কেন, বিশেষ করে যখন কিছুদিন ধরে স্ট্যাটাস কো তৈরি হয়েছিল। একটা কারন হয়তো, এমবিএস ইসরায়েলের সাথে ইকোনমিক প্যাক্ট অনেকটাই পাকা করে ফেলেছিল। সৌদি আরব আর ইসরায়েলের সম্পর্ক নর্মালাইজ হয়ে গেলে বাকি আরব দুনিয়ার সাথেও ইকোনমিক সম্পর্ক তৈরি হতো, তাহলে প্যালেস্টিনিয়ান সমস্যা ব্যাক বার্নারে চলে যেতো। আর এনডিটিভি তে দেখছি বাইডেন নাকি বলেছে যে ইন্ডিয়া-মিডল ইস্ট-য়ুরোপ ইকোনমিক করিডর তৈরি করার জন্য কথা চলছিল, সেটা থামানোও আরেকটা কারন হতে পারে। এগুলো হলে ইরানের রিজিওনাল লিভারেজ কমে যেতে পারতো, সেইজন্য হয়তো হামাসকে দিয়ে আক্রমন করালো। 
     
    বড়ো করে ডিসক্লেমারঃ এসবই আমার স্পেকুলেশান। পরে হয়তো দেখা যাবে অন্য কোন কারন ছিল। 
  • ং: | 182.160.100.45 | ২৬ অক্টোবর ২০২৩ ১৭:২১525186
  • বাবা- ডিসির মুখেও এত গোছানো কথা? সে ত’ সারাদিন হিন্দি-ইংরেজি-বাংলা গান পোস্ট করে আর মেয়েদের ভার্জিনিটির সনদ দেয় বলেই জানতাম। সূর্য থেকে পৃথিবীর সমান দূরত্বে বসে ডিসি সনদ দিতে পারে যে কোন্ নারীটি কুমারী ও কে নয়? এহেন ডিসি একবার বিজ্ঞানের উপর একটি জটিল প্রবন্ধও লিখেছিল। কিন্তÍ তার আগেই ’গ্রুকর্ত্রী’র পূজায় অন্য কোন ছায়াচরিত্রকে তার এত হ্যাটা-ঝ্যাটা করতে হয়েছিল যে ছায়াচরিত্র প্রবন্ধের প্রশংসা না করতে পেরেই ভেগে গেছিল। শুভ সন্ধ্যা- ডিসি। যাক- তুমিও ফেক আমিও ফেক।
  • :-) | 2405:8100:8000:5ca1::fb:a3fa | ২৬ অক্টোবর ২০২৩ ১৭:৩৩525187
  • সফুরা পপ থেকে বরিশালি কাটুয়ার ঠিকানা পাওয়া যাচ্ছে।
  • Kanai | 2405:201:24:180f:c5e4:34e3:fcc7:59cb | ২৭ অক্টোবর ২০২৩ ০০:১৯525207
  • লেখাটা ভালো লাগলো। কিছু ভালো প্রশ্ন উঠেছে। ভাবার বিষয়।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভেবেচিন্তে প্রতিক্রিয়া দিন