এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • বিদ্যালয় উঠে যাচ্ছে কেন?

    Eman Bhasha লেখকের গ্রাহক হোন
    ১০ মার্চ ২০২৩ | ৫০২ বার পঠিত | রেটিং ৪ (১ জন)
  • বিদ্যালয় উঠে যাওয়ার একাধিক কারণ।
    ১. সন্তান  সংখ্যা কমে যাওয়া।
    আগে আগে যেখানে এক দম্পতির চার পাঁচ জন ছেলে মেয়ে থাকতো, এখন অধিকাংশ ক্ষেত্রে একজন।
    ২. ইংরেজি মাধ্যমের প্রতি আসক্তি। ছেলে হলে ইংরেজি মাধ্যমে। মেয়ে হলে বাংলা মাধ্যমের একটু আশা আছে
    ৩. শিক্ষক শিক্ষিকাদের অশ্রদ্ধা ছাত্র ছাত্রীদের প্রতি। অভিভাবকের প্রতি
    ৪. শিক্ষক শিক্ষিকারা ৮০ ভাগ দূর থেকে আসেন।
    এলাকায় সংযোগ কম।
    ৫. নিজেরা বেতন নেন সরকার পোষিত বিদ্যালয় থেকে মাইনে বাড়ানোর আন্দোলনে যত সক্রিয় পড়ানোতে তত নন।
    ৬. নিজেরা সরকারের বিদ্যালয়ের চাকরি করবেন আর ছেলে মেয়ে পড়াবেন ইংরেজি মাধ্যমে।
    ৭. নয়ের দশকের শেষে  এস ইউ সি দলের প্রাথমিকে ইংরেজি ফেরানোর আন্দোলন। তাতে ১৯৯৭ এ এস এবং আইয়ের সম্মেলনে তৎকালীন অর্থমন্ত্রীর ধুনো দেওয়া এবং ডায়মন্ডহারবারে এস এফ আইয়ের এক সভা থেকে তৎকালীন এস এফ আই রাজ্য সম্পাদকের আল টপকা মন্তব্য। তার পরদিনই এস ইউ সি ঝোপ বুঝে কোপ মারতে সরস্বতী পূজার পরদিন বাংলা বন্ধ ডেকে দিল। পর পর তিন দিন শনি, রবি, সোম, বন্ধ মোটামুটি সফল। ব্যস। জ্যোতিবাবুও বলে বসলেন, ভাবছি।
    ৮. পবিত্র সরকার কমিটি বসল। নানা ধানাই পানাই করে, প্রাথমিকে ইংরেজি শিক্ষার বিরুদ্ধে বহু সওয়াল করে লেখা হল, জনমতের দাবিতে দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে ইংরেজি ফেরানো হোক।
    ৯. অশোক মিত্র, অমিয় বাগচি, মৃণালিনী দাশগুপ্ত, অমিতাভ চৌধুরী, সন্দীপন চট্টোপাধ্যায় পরমেশ আচার্য, দেবেশ রায়, মালিনী ভট্টাচার্য, মিহির ভট্টাচার্য প্রমুখ আন্দোলন করলেন ভাষা ও চেতনা সমিতির ডাকে।
    বিধানসভা অভিযান হলো। খুব গেট ঝাঁকালাম।
    কিন্তু ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়ের ঢল নেমে গেল।
    সরকার ঢালাও অনুমতি দিতে শুরু করল। শিক্ষা ব্যবসা জোরদার।
    ১০. জীবন ধারার ছাপ চেতনাকে গড়ে।
    নেতাদের ছেলে মেয়েরা ইংরেজি মাধ্যমে গেলেন। ১৯৯৯ এ নতুন বেতন কাঠামো এল। এক একজনের দুই থেকে চার হাজার মাইনে বাড়ল। শিক্ষক শিক্ষিকারা নিজেদের উচ্চ মধ্যবিত্ত ভাবতে শুরু করলেন। 
    ক্রিকেট খেলার জগতে সৌরভ জাঁকিয়ে বসলেন।‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌কোক  পেপসি সিপিএম সম্মেলনে ফাউন্টেন বসিয়ে দিল। দেদার খাও। নজরুল মঞ্চে। 
    সল্ট লেকে সিটি সেন্টার নামক শপিং মল এল। বিগবাজার এসছিল বাগুইআটির পাশে ১৯৯৭এর পরে।
    কমিউন্যালিজম বাড়ল।
    কমিউনিজমের জায়গা নিল কনজিউমারিজম।
    অনেকেই মনে করতে লাগলেন, ইংরেজি জানলেই ছেলের বিদেশে বাস পাকা।
    ১১. শিক্ষক শিক্ষিকারা একদল শিশুকে ইংরেজি মাধ্যমে ভর্তি করতে লাগলেন। নিজেদের অপদার্থ প্রমাণ করছেন জেনেও।
    আর এখন তো এলাকায় থাকার ব্যাপার নেই।
    বিবেক ব্যাপারটাও ধামাচাপা।
    নার্সিং হোমে ভর্তি, রেস্টুরেন্টে খাওয়া, বেড়াতে যাওয়া, শপিং মলে বাজারের মতো ছেলে মেয়ে ইংরেজি মাধ্যমে পড়ে -- একটা সোস্যাল স্টেটাস হয়ে দাঁড়ায়।
     
    এই কালিদাসরাও দায়ী।
    এরপরে আরো বিষয় আছে

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • দীপ | 42.110.137.59 | ১০ মার্চ ২০২৩ ০০:৪৭517208
  • এটা কোথাকার গাধা রে? ১৯৪৭ সালে ভারতের জনসংখ্যা চল্লিশ কোটি। এখন প্রায় ১৪০ কোটি।
    আবার বলছে চারপাঁচজন করে সন্তান নিতে হবে! ভাবলেই আঁতকে উঠতে হয়! 
    চীন কিন্তু নিজের জনসংখ্যা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছে।
  • lcm | ১০ মার্চ ২০২৩ ০১:৫৯517209
  • ইন্ডিয়াতে স্কুল গোয়িং পপুলেশন কমছে - সেট ঠিক।

    অ্যাকচুয়ালি শিফটটা শুরু হয়েছে ২০১০-২০১২ নাগাদ।

    এটা ভারতের পপুলেশনের ইউনাইটেড নেশনস এর প্রজেকশন কার্ভ, ২০১৯ এ তৈরি, তখন এই বদলের অনেকটা শুরু হয়ে গেছে।

    এই ছবির একদম নীচের দিকে আছে দেখুন - অনুর্ধ্ব-১৫ এর কার্ভ, এটা মোটামুটি ২০১৫ সালের পর থেকে নীচে নামতে আরম্ভ করেছে, অর্থাৎ ১৫ বছর বয়েসের নীচের পপুলেশন কমছে। ৫ বছরের নীচের কার্ভও নামছে, সেটা অফ কোর্স আর একটু আগে থেকে।

    আর এখন, এই ২০২৩ সালে যদি দেখেন, সব এজ রেঞ্জের পপুলেশনই কমছে, শুধু ২৫-৬৪ রেঞ্জে বাড়ছে, কারণ সময়ের সাথে সাথে আরও মানুষ এই বয়েসের রেঞ্জে ঢুকছেন।

    তো এই হিসেব অনুযায়ী, ইন্ডিয়াতে স্কুল অ্যাটেন্ডিং পপুলেশন আরও কমবে।
     
  • হজবরল | 107.189.8.65 | ১০ মার্চ ২০২৩ ০২:৪৭517210
  • শহরের বাংলা স্কুল বন্ধ হবার পিছনে এসব কারণ থাকতে পারে। গ্রামের স্কুল উঠে যাবার কারণ কি? ওখানেও অলি গলিতে ইংরেজি মাধ্যম গজিয়ে উঠেছে নাকি আজকাল?
  • dc | 2a02:26f7:d6d0:680d:0:2ddf:d37e:7626 | ১০ মার্চ ২০২৩ ০৮:০৯517212
  • কোভিড শকের ফলে স্কুল অ্যাটেন্ডিং পপুলেশন কতোটা কমলো, সেটা আবার কবে আগের জায়গায় ফিরবে, এসবও দেখা উচিত। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঠিক অথবা ভুল মতামত দিন