এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • লেখালেখি পড়া - প্রথম কিস্তি

    ছোটা চণ্ডাল লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ৩১ জানুয়ারি ২০১১ | ৫৭০ বার পঠিত
  • ভূমিকা:
    অনেক অনেক আগে আমার এক বন্ধু-স্থানীয় দাদু বলেছিলেন ""লেখালিখি করছ খুব ভালো কথা, যদি কোনদিন মনে হয় ঠিকঠাক হচ্ছে না, ভেঙে পড় না, পড়া টা চালিয়ে যেও। ভালো লেখক না হোক, ভালো পাঠক হতে পারবে, সেটা খুব একটা কম পাওয়া নয়।'' সে কথা, সে চিন্তা, সেই আলাপচারণ আজও সমান ক্রিয়াশীল। সময়ের সাথে তার প্রাসঙ্গিকতা কমে নি এতটুকুও। এই পথে চলতে চলতেই লেখা, পড়া ও তাই নিয়ে বিস্তর আলাপ-আলোচনা। তার ই সূত্র ধরে কলম (পড়ুন কী-বোর্ড) ধরা। এইবার সরে আসা যাক আপাত নিষ্পাপ লিখনভঙ্গী থেকে। বিভিন্ন দিক দিয়ে বিভিন্ন ভাবে এক জায়গাতেই পৌঁছানোর চেষ্টা করব এই লেখা তে। সেই এক জায়গা বা বিষয়টি হল, লেখালিখি ও লেখালিখি পড়া - বÙতুত তাদের বিষয়-আশয় সংবাদ, ধরণ ধারণ এবং আমার চিন্তাভাবনা, (ভালো লাগা) ও না ভালো লাগা। আমার অমার্জনীয় অজ্ঞতা হেতু বিচরণ ক্ষেত্র বাংলাতেই সীমাবদ্ধ রাখা যাক, প্রয়োজনীয় উদাহরণ ব্যতিরেকে বিদেশী ভাষায় লেখালিখি সম্পর্কে কথাবার্তা বলার দু:সাহস আমি করব না। চলুন শুরু করা যাক।

    কবিতা (ও ছন্দ নিয়ে চিন্তা) এবং সমালোচনা (স্মার্ট ঝক্কাস কবিতা ও আঁতেল কবিতা):
    কবিতা পড়া অনেকের ই শুরু হয় অনেক ছোট বয়স থেকে, বিভিন্ন ভাবে, বুঝে বা না বুঝে, জেনে বা না জেনে কিছু কবিতা আমাদের ভালো লেগে যায়। এখন ছোট বয়সে পড়া সেই গুলিকে কবিতা বলাটা ঠিক হবে (যথা সুকুমার রায়) নাকি ছড়া, সে নিয়ে আমার একটু দ্বিধা আছে, সেক্ষেত্রে উদাহরণ লিখে লিখে বলা বা বোঝা দরকার এইটি কোনজন। সে কথা তাই চাপা থাক, খোঁচাখুঁচির প্রয়োজন নেই। অতএব এরপর ধীরে ধীরে বড় হই। আমরা যারা কবিতা পড়ি এবং পড়তেই থাকি বাছবিচার করে বা না করে, কবি ধরে ধরে বা সময় ধরে ধরে, তাদের মনের মধ্যে বিভিন্ন কথা, লেখা, শব্দ, লাইন ঘুরে বেড়ায়, ঘোলা জল বোতলে নিয়ে নাড়ালে যেমনটি হয়ে থাকে, তেমন ভাবেই থিতিয়ে পড়ে একসময়, থিতিয়ে থাকে। পড়তে থাকি, ভাবতে থাকি, নিজস্ব পছন্দ, অপছন্দ তৈরি হয়ে যায় সজ্ঞানে বা অজান্তেই। এক একসময় মনের মধ্যে ঝিলিক দিয়ে ওঠে কিছু শব্দ, হয়ত বা একটা আধটা লাইন, কখনো রেশ ধরে রাখি তার, কখনো বা উৎসাহী হয়ে লিখে ফেলি খাতার পাতায়। কেউ ভুলে যাই, কেউ ভুলি না, ফিরে আসি অবসরে, তাকিয়ে থাকি, সন্মোহিত হই, মনের ভিতর থেকে উঠে আসে আরো কিছু ভাঙ্গাচোরা লাইন। লিখে ফেলি, পরতে পরতে জীবনদান হয়, জন্ম হয় একটি লেখার, যা একান্ত ভাবেই আমাদের কারোর না কারোর নিজস্ব। ভালো লাগে ভীষণ, মনে পড়ে সেইসব লেখালিখি পড়া, "" কবিতা আসবে ভিতর থেকে'' অথবা ""গাছে যেমন কচি পাতা গজায় তেমনই স্বত:স্ফুর্ত ভাবে জন্ম নেবে কবিতা''। মনে পড়বে "" রাত্রে ঘুমাতে যাওয়ার আগে নিজেকে জিজ্ঞাসা কর, তোমাকে কি লিখতেই হবে, ঘুম থেকে উঠে নিজেকে জিজ্ঞাসা কর, তোমাকে কি লিখতেই হবে,যদি উত্তর হয় হ্যাঁ, তবেই লেখ।'' এইসব দৈববাণীর কাছে হাঁটু মুড়ে বসি, অতএব ভুলে যাওয়া যাক সম্ভাব্য বাস্তব। একবার ও ভাবব না যে নাড়াচাড়া হলে বোতলের থিতিয়ে পড়া বস্তুগুলি আবার উঠে আসে,ঘুরতে থাকে জলের মধ্যে, মিলেমিশে যাওয়া এই সব নতুন অচেনা পাËপ্তিযোগ কে আখরে আখরে লিখলাম না তো? সে প্রশ্ন কে করে নিজেকে? করে, অনেকেই হয়ত করে, তবে অনেক দেরী হয়ে যায় ততদিনে। বুঝে উঠতে দেরী হয়ে যায় যে অজ্ঞান প্রশংসা কতখানি ক্ষতিকারক।
    দ্বিতীয় পরিচ্ছেদের প্রথম পাতাতে টুক টুক করে হেঁটে এসে বসে পড়ে এক হেঁয়ালী, একে আমরা চিনি "ছন্দ' নামে। বিস্তর নাড়াঘাঁটা হয়েছে তাকে নিয়ে, বিষম ক্লান্ত হত, বিরক্ত ও হত হয়ত এক এক সময়, কিন্তু সময় এবং কলাকুশলীরা নাছোড়, পরিণামে এসব তারও হয়ে গেছে গা সওয়া, সহজে আর বেজে ওঠে না আপন সুরে। কিন্তু একে একে জন্ম নিচ্ছে শব্দরা, আগেই বলেছি, জেগে উঠছে কবিতারা, অতএব ছন্দ পাঠ জরুরী, কোন ভুলচুক নেই তাতে, কোন ক্ষতিও নেই। বস্তুত গবেষণা করতে গেলে যেমন সেই বিষয়ের সম্পর্কে প্রাথমিক জ্ঞান থাকাটা জরুরী, তেমনই ছন্দ পাঠ ও অনুশীলন ও একইরকম জরুরী। কিন্তু সমস্যা হল, কবিতা কোন গবেষণা লব্ধ ফলাফল নয়। এ চেষ্টা করলে আসে না,যার আসে তার আসে, যদিও ছন্দের সে সমস্যা নেই, তার সাথে অঙ্কের তেমন একটা পার্থক্য ও নেই। সে আসে, ধরা দেয়,কখনো তাড়াতাড়ি, কখনো ধীরে ধীরে। কিন্তু আমরা তো নতুন শুরু করেছি লেখা, আমরা শুরুতে ছন্দে লিখবো, বিভিন্ন চাল শিখে নেব তার, এক ই লেখা একটু শব্দ বদলে দিয়ে এক ধরণ থেকে অন্য ধরণের ছন্দের চলন বলনে যাতায়াত করার চেষ্টা করব অনায়াস, এবং আস্তে আস্তে মেক্যানিক্যাল হয়ে যাব নিজের অজান্তেই। কবিতা পড়বনা,ছন্দ পড়ব। ভাবব না, যা লিখলাম তা কোন এক ছন্দের উদাহরণ, নাকি কবিতা। কয়েকশো যোজন দূরের দুই মেরুতে দুই পা দিয়ে প্রলম্বিত দাঁড়াব। দয়া করে এখন আবার প্রশ্ন করবেন না যে তাহলে কবিতা কি, খায় নাকি মাথায় দেয়? তার জন্য দিস্তে দিস্তে পাতা খরচা হয়েছে, পড়ুন, অথবা ভাবুন, সে নিয়ে লিখতে গেলে বেলা গড়িয়ে যাবে।
    কবিতায় শব্দ চয়ন নিয়ে আমার কিছু ব্যক্তিগত মতামত আছে, তা এইরকম। কবিতা বা গদ্য যাই হোক না কেন, তাতে অচেনা, অজানা শব্দ ব্যবহার আমার পছন্দ নয়, তা সুধীন দত্ত ই লিখুন বা অন্য কেউ। এখন ""অচেনা, অজানা'' নিয়ে আছে এক মুশকিল, আমার কাছে যা ""অচেনা, অজানা'', তা অন্যের কাছে চেনা হতেই পারে। বলা যেতে পারে সাধারণত লেখালিখিতে বা কথাবার্তাতে মোটেই ব্যবহার করা হয়না এমন শব্দ, উদাহরণ চাই, তো সুধীন দত্ত পড়লেই হয়। আর আছে চোরা বাঁক, কেমন শোনা যাক। আমি একজনকে চিনতাম, যিনি মেদিনীপুর থেকে একটি লিটল ম্যাগাজিন বের করতেন, কবিতা লিখতেন, মধ্যবয়স্ক ভদ্রলোক, তার সাথে মাঝেমধ্যে কবিতা নিয়ে কথাবার্তা হত। তাঁকে একদিন একটা লেখা দেখিয়েছিলাম, তিনি পড়ে টড়ে বললেন, ""ঠিক ই আছে , শুধু একটু কঠিন করে দিবি।'' বোঝো কাণ্ড!! বলাই বাহুল্য, এরপর থেকে আমি আর তার সাথে কবিতা নিয়ে বিশেষ কথাবার্তার আগ্রহ বোধ করিনি।
    বেশ কিছু কবিতায় দেখতে পাবেন একটু আঁতু আঁতু ভাব। কিরকম? এ বাপু আমি উদাহরণ দিয়ে বোঝাতে পারব না, ও নিজেই দিব্বি বুঝে নিতে পারবেন। এখন যদি কবিতা ঘেঁটে দেখতে ইচ্ছা না করছে তো কোন ক্ষতি নেই, সিনেমা তো দেখেন অবশ্যই। বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের ""উত্তরা'' দেখেছেন তো, না দেখে থাকলে দেখেই ফেলুন, আরে হ্যাঁ হ্যাঁ, অ্যাওয়ার্ড পাওয়া বই। সমরেশ বসু লিখেছিলেন ভালো ই, সিনেমা টা মন্দ হয় নি বলতেই পারেন, কিন্তু----। সিনেমার মাঝে মাঝেই দেখবেন একদল বামন হেঁটে চলেছে, শেষ দিকে দেখবেন তারা মেয়েটিকে বলছে, আমাদের দেশে চল, সেখানে কেউ উঁচু নয়,সবাই সমান ইত্যাদি ইত্যাদি--বস্তুত এই জায়গাটা আমার ভীষণ ভাবে আরোপিত মনে হয়েছে, ঠিক যেন পোস্টার দিয়ে বলে দেওয়া যে, "" দেখেছো, এটা কিন্তু আর্ট ফিল্ম, হুঁ হুঁ বাবা!!'' ঐ কথাগুলো মুখে না বললেই হচ্ছিল না! একই রকম কথা বলা যেতে পারে ""মন্দ মেয়ের উপাখ্যান'' সিনেমাটি সম্পর্কেও, যেখানে নটবর পালধি নামে চরিত্র টি গাছের গায়ের গর্তে পোকা / পিঁপড়ে নিয়ে অদ্ভুত কাজকর্ম করে, এ যেন জোর করে পেরেক মেরে বোঝানো যে ""দেখেছো---------''। অনেকেরই অনেক কবিতায় দেখবেন এই ব্যাপারটা আছে, ভীষণ ভাবে আছে। সেসব লিখতে গেলে মহাভারত হয়ে যাবে। কবিতায় ""সবুজ রহস্যময় আত্মা''-র রহস্য তৈরি করার রাস্তা খুঁজে পেতে হয়, পেরেক ঠুকে হয় না। অতএব সজ্ঞানে কবিতা কে কঠিন করে, একটু বাঁকিয়ে চুরিয়ে লিখে আত্মপ্রসাদ লাভ করবেন না তাতে আখেরে, আপনার বা আমাদের কারুর ই লাভ হবে না, বাংলা সাহিত্যের দু:খের কথা না হয় ছেড়েই দিলাম।
    এরকম কঠিন করে দেওয়ার ইচ্ছাধারী রা যেমন আছেন, তেমন ই আছেন সহজ করে দেওয়ার অবতারেরাও। এদের লেখা পড়তে গিয়ে যে মাঝে মধ্যে ভালো একেবারেই লাগেনি তা নয় (উদা: পিনাকী ঠাকুর), তবে এত বেশী সহজ, স্মার্ট এবং নতড়ঁ ফষ করে দেওয়ার সফল চেষ্টা, যে সেটাই বেশী করে চোখে পড়ে, কানে আসে। উদাহরণ দিতেই হবে? বেশ, হাতের কাছে শ্রীজাত আছে তো নাকি, পড়ে ফেলুন। শব্দের কারুকাজ, ঝিন্‌চ্যাক লাইন আর খেলা খেলা ছন্দের চৌকাঠ পেরিয়ে যখন ভিতরে যাবেন, তখন দেখবেন বাড়ি তৈরি ই হয়নি, শুধু দরজা আর চৌকাঠ। হায় তবে যে কোথায় পড়েছিলুম, মাঠের ধারে হলুদ বাড়ি গড়েছে মিস্তিরি!
    কবিতা লেখা হোক, শব্দ খেলা নয়, ছন্দ নিয়ে খেলা এবং নিছক খেলা নয় (নেহাত ইচ্ছা করলে বাড়িতে খেলা করুন, আপনি ছন্দ-টন্দ পড়ে থাকলে আরো অনেকেই পড়েছে তাতে সন্দেহ কি!), মিষ্টি মিষ্টি সকালের ফুলের আর শিশিরের ছোঁয়া দেওয়ার প্রয়োজন নেই, জোর করে একটু স্বপ্ন-সত্যি আলো অন্ধকার ভাব অথবা আরোপিত হতাশা ভাব ঝেড়ে ফেলে শুধু কবিতা হোক (মনে রাখবেন, মানতে চান বা না চান, গোঁসাই বা সেই ভদ্রলোক, যিনি কবিতা নয়, পদ্য লিখতেন, তাদের প্রভাব অজান্তেই এসে পড়ে, এট্টু খেয়াল রাখবেন আর কি!)।
    ডিসক্লেমার: "সমারুঢ়' আপনাদের মতই আমিও পড়েছি, ওসব বলে আমাকে খামোকা গালি দেবেন না!

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ৩১ জানুয়ারি ২০১১ | ৫৭০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Anonymous | 86.166.164.84 | ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১১ ০২:৩৭89160
  • bangla para jachchhena
  • চিরপ্রশান্ত বাগচী | 122.79.36.245 (*) | ১৪ অক্টোবর ২০১৩ ০২:৫৮89161
  • জীবনানন্দ দাশেরে 'কবিতার কথা'র মত আপনার লেখা একটা বই খুব দরকার কিংবা শঙ্খ ঘোষ যেমন লিখেছেন 'কবিতার মুহূর্ত'...।।
  • চিরপ্রশান্ত বাগচী | 122.79.36.245 (*) | ১৪ অক্টোবর ২০১৩ ০৩:০৬89162
  • ভুল সংশোধনঃ
    ভুল সংশোধন
    জীবনানন্দ দাশেরে জীবনানন্দ দাশের
  • :-)) | 127.194.196.228 (*) | ১৫ অক্টোবর ২০১৩ ১২:৪৯89163
  • সবই হল, শুধু সাথে দু লাইন "সার্থক কবিতা" লিখে ফেললেই ষোলোকলা পূর্ণ হত।
  • Ranjan Roy | 24.99.37.123 (*) | ১৬ অক্টোবর ২০১৩ ০৩:৫৩89164
  • ১৯৬৮তে কলেজের বাইরে একটি পশ্চাদ্দেশ গরম করা চায়ের ঠেকে বসে হাংরি জেনারেশনের কোন কবির এমনি একটি কবিতা শুনেছিলামঃ

    ইদানীং আর কিছুই ভালো লাগছে না।
    এমনকি অনিয়মিত মাসিকে-ভোগা কবিতাও না।
    মদের বোতলে বমি ছেটানো কবিতা,
    হাড়কাটায় রাত কাটানো কবিতা,
    কবিতা বোদ্লেয়ারের সোঁদা লুঙি।
  • কল্লোল | 111.63.159.211 (*) | ১৭ অক্টোবর ২০১৩ ০৪:২৩89165
  • এবিষয়ে নিশ্চিত নিদান দিয়ে গেছেন আল মাহমুদ।

    কবিতা তো কৈশোরের স্মৃতি। সে তো ভেসে ওঠা ম্লান
    আমার মায়ের মুখ;
    নিম ডালে বসে থাকা হলুদ পাখিটি
    পাতার আগুন ঘিরে রাতজাগা ভাই-বোন
    আব্বার ফিরে আসা, সাইকেলের ঘন্টাধ্বনি-রাবেয়া রাবেয়া-
    আমার মায়ের নামে খুলে যাওয়া দক্ষিণের ভেজানো কপাট!

    কবিতা তো ফিরে যাওয়া পার হয়ে হাঁটুজল নদী
    কুয়াশায়-ঢাকা-পথ, ভোরের আজান কিম্বা নাড়ার দহন
    পিঠার পেটের ভাগে ফুলে ওঠা তিলের সৌরভ
    মাছের আঁশটে গন্ধ, উঠানে ছড়ানো জাল আর
    বাঁশঝাড়ে ঘাসে ঢাকা দাদার কবর।

    কবিতা তো ছেচল্লিশে বেড়ে ওঠা অসুখী কিশোর
    ইস্কুল পালানো সভা, স্বাধীনতা, মিছিল, নিশান
    চতুর্দিকে হতবাক দাঙ্গার আগুনে
    নিঃস্ব হয়ে ফিরে আসা অগ্রজের কাতর বর্ণনা।

    কবিতা চরের পাখি, কুড়ানো হাঁসের ডিম, গন্ধভরা ঘাস
    ম্লান মুখ বউটির দড়ি ছেঁড়া হারানো বাছুর
    গোপন চিঠির প্যাডে নীল খামে সাজানো অক্ষর
    কবিতা তো মক্তবের মেয়ে চুলখোলা আয়েশা আক্তার।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লুকিয়ে না থেকে মতামত দিন