এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  সিনেমা

  • জাগরী দেবী ও দঙ্গল

    Shovan Naskar লেখকের গ্রাহক হোন
    সিনেমা | ০২ জানুয়ারি ২০১৭ | ২০৮৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Shovan Naskar | ০২ জানুয়ারি ২০১৭ ০৮:৪৫727397
  • যাই বলুন না কেউ বাঙালি জাতির একখান ইয়ে মানে এলেম আছে মাইরি। হাজার হোক একটা খুঁত খুজে ফেলতে পারলেই ব্যাস ! ফেবুতে হাজার লাইকের ছড়াছড়ি। কেউ কেউ আবার "গুরুদেব" বলে ষষ্ঠাঙ্গে 'ফেবুপেন্নাম' ঠেকিয়ে যায়। আর এই কাজে আমরা যে সিদ্ধহস্ত সন্দেহ নেই। খুঁত না পেলে নারীবাদ-পুরুষবাদ ঢুকিয়ে দাও। ভাল কিছু দেখলেই কুকুরের আগে গন্ধ নাকে লাগে বড্ড বেশি।
    বছর পচ্চিশ-ত্রিশ বছর আগে একখান সিনেমা বেড়িয়েছিল। মতী নন্দীর কোনি। রাজ্য সরকারের একখান ট্যাগ ছিল। তারওপর সৌমিত্তির এর সিনেমা! মতী নন্দীর লেখা! আহা! বাঙালি গদ গদ। বুদ্ধিমানরা বলল, আহা সাহিত্য তো! ভাল হবেই। আমরাই সেরা সিনেমা বানাই।
    তারপর তা নিয়ে কত আদিখ্যেতা চলেই যাচ্ছে এখনো। এর মধ্যে সারা ভারতে কোথায় কি সিনেমা হচ্ছে জানি না হঠাৎ আমির খান নামক এক পাপিষ্ঠ একখান সিনেমা বানালেন দঙ্গল। সারা ভারত খুঁজেও যখন কোন খুঁত পেল না তখন বাঙালি বলল, রোসো আমি আসিতেছি। জাগরী দেবী কাগজে লিখে ফেললেন, আমি ইহার ভিতরে পুরুষতন্ত্র দেখিতেছি। কেউ কেউ ফেবুতে ঝড় তুলে বলল, আমি এর মধ্যে শৈশব চুরি দেখিতেছি। সবাই 'ফেবুপেন্নাম' করলে!
    তারা বেমালুম ভুলে মেরে দিলে কোনি যখন জল থেকে উঠে আসত ক্ষিদ্দা তখন ঢিল ছুড়ে মারত। লাঠি দিয়ে খোঁচা দিত। সেটা কোন তন্ত্র ছিল? আমাদের সময় শিক্ষকরা সুযোগ পেলেই কিল চড় দিত। তাই আমরা এক একখান জানোয়ার তৈরি হয়েছি। এখন সব দেব-দেবী তৈরি হচ্ছে। বেশ বেশ।
    শৈশব নাকি চুরি করেছে মহাবীর। জোর করে চাপিয়ে দিয়েছে কুস্তি। যে আমির থ্রি ইডিয়টস, তারে জমিন পর বানিয়েছে সে এত বোকা! আমার মনে হয় তারা হলে নয় বাড়িতে মোবাইলে দঙ্গল দেখেছে পি ডিভিভি রিপে। মহাবীর কখনই মেয়েদের ওপর চাপাননি। বাইরে মারপিট করে আসার পর বুঝেছিলেন মেয়েরা কুস্তির যোগ্য। রাত্রে মেয়ের পা টিপে দিয়েছিলেন। কোচ আর পিতার দুটো দায়িত্বও পালন করেছিলেন। বৌয়ের কাছ থেকে একবছর চেয়ে নিয়েছিলেন। এমন নয় যে না পারলেও জোর করে শেখাবেন। পরে মেয়েরা নিজে থেকেই কুস্তিতে নেমে যায়। বাবা জোর করেনি। শৈশব রক্ষা করতে যদি বলত বাবা ঘুম থেকে আটটায় ওঠো তো গীতা-ববিতার আর নাম শোনা যেত না।
    মহাবীর ছিলেন গ্রামের মানুষ। সাধারণ কেরানী। সে যে বিদ্যাসাগর বিবেকানন্দ হবে এটা কি হতে পারে? তা সত্ত্বেও শৈশব চুরি করেননি বরং ১৪ বছরে মেয়েকে বিয়ে হওয়া থেকে বাঁচিয়েছেন। এখন মাথার চুল কাটাকে কেউ যদি শৈশব নষ্ট করা বোঝায় তো কিছুই বলার নেই।
    যারা খুঁত ধরতে ব্যস্ত তারা আগে কোন বিখ্যাত স্পোর্টসম্যানের জীবনী পড়ে আসুন। স্পোর্টস মুভি গুলো দেখুন। দেখবেন দশ বছর থেকেই কঠোর অনুশীলন নে নিজেকে তৈরি করেছেন। শচীন কত্ত ছোট থেকেই দাদা আর রমাকান্তের কাছে পরিশ্রম করতেন। নিষ্ঠা পরিশ্রম দিয়ে স্পোর্টসম্যান তৈরি হয়। পড়াশুনো তো সবাই করছে।
    একটা পুরুষতান্ত্রিক সমাজে একটা মেয়েকে যে এইভাবে তুলে ধরল তাকেই আজ বাঙালিরা খুঁত ধরতে ব্যস্ত। ভাবা যায়! বাঙালি বলেই সম্ভব! জাগরীদেবী আবার নারীবাদের ধোঁয়া তুলেছেন। হয়ত উনি মহাবীরের মত চার পাঁচটা স্পোর্টসম্যান বানিয়েছেন শৈশব রক্ষা করে। তাই বলতেই পারেন।
    সব শেষে একটা গল্প বলি । বি এড করছিলাম যখন তখন একটা ছেলের সাথে আলাপ হয়। খুব মেধাবী, শান্ত নম্র। জীবনে সে শুধু শিক্ষক হতে চায়। অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে সে পড়াশোনা, হোমওয়ার্ক করত। পড়ানোর নিয়ম কানুন পুঙ্খানুপুঙ্খ মেনে চলত। ঘটনাক্রমে ওর আর আমার প্রাকটিস টিচিং পড়ল এক স্কুলেই। প্রথম কদিন ঠিকই ছিল। একদিন পড়াতে গিয়ে দেখি পাশের ক্লাস থেকে খুব আওয়াজ হচ্ছে। গিয়ে দেখি। দুটো ছেলেকে কান ধরিয়ে দাঁড় করিয়ে দুটো কে ঠ্যাঙাচ্ছে। পরে দেখা হলে বলল, ধুর নিয়মের গুষ্ঠির তুষ্ঠি। কঠোর শাসনের বিকল্প নেই।
    #শোভনস
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঝপাঝপ প্রতিক্রিয়া দিন