এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • ইয়ো জিমাঃ নরকে এক দুঃস্বপ্ন

    dd
    অন্যান্য | ২১ আগস্ট ২০১৫ | ৫৬৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • dd | 116.51.27.136 | ২১ আগস্ট ২০১৫ ২২:১৭685965
  • ইটি একটি প্রবন্ধো (গার্ডিয়ান ঘরানার)। একটু সবুর করুন। পার্ট বাই পার্ট পোস্ট করছি। তারপরে পড়ুন, একটু কিছু পড়ে দেখান।
  • dd | 116.51.27.136 | ২১ আগস্ট ২০১৫ ২২:১৯685976
  • নরকে এক দুঃস্বপ্ন …..
    ******************************************

    সাধারন ম্যাপে খুঁজে পাওয়া যাবে না। এমনই ছোট্টো দ্বীপ। ত্রিভুজ বা বলা যায় একটা পরোটার মতন আকৃতি- সব মিলিয়ে মাত্র আট বর্গ মাইল আয়তন। দক্ষিনের কোনের দিকে একটি ছোটো টিলা – ৫৫০ ফীট যার উচ্চতা। মাউন্ট সুরিবাচি। এ্ছাড়া মধ্যভাগে আরো ওরকম ,আরেকটু বেঁটে আরো কয়েকটি টিলা।

    পুরোটাই আগ্নেয় শিলা আর আগ্নেয়গিরির উদগ্রীত ছাই দিয়ে ভরা। সামান্য কিছু ঝোপ ঝাড় আছে - সেগুলি দ্বীপের উত্তর ভাগে।।

    এই দ্বীপের একটি বর্ননায় এক জাপানী সেনানী বলেছিলেন "এখানে আছে শুধু গন্ধক, পানীয় জল নেই, চড়াই নেই, শালিখ নেই" আর আমেরিকানরা বলতেন পৃথিবী গড়তে গিয়ে ক্লান্ত ঈশ্বর অবশিষ্ট যতো কিছু জঞ্জাল তাই দিয়ে তৈরী করেছেন এই দ্বীপ।

    দক্ষিন ভাগে আছে গন্ধকের ছাই। প্রচন্ড উত্তাপে সেই দুর্গন্ধ ছাইএর একটা পাতলা আস্তরন বাতাস ভেসে থাকে। মনে হয় একটা আবছায়া ভুতের দেশ।

    অথচ এই দ্বীপেই দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সবথেকে রক্তক্ষয়ী লড়াই হয়েছিলো ।

    কারনটা সহজ আর উত্তরটাও জানা ছিলো শত্রু মিত্র দু পক্ষেই।

    জাপানে বোমা ফেলতে চাই কাছাকাছি একটা ঘাঁটি। সেই পরিকল্পনায় আমেরিকা জাপানের কাছে এগিয়ে আসছিলো একটার পর একটা দ্বীপ দখল করতে করতে। ইতিমধ্যেই (১৯৪৪) জাপানী দ্বীপ পতন হয়েছে সাইপান,টুলাগী, তারাওয়া, মারিয়ানা আর পেলেলিউ। সেখান থেকে দুরগামী বোমারু বিমান বি ২৯ সুপার ফরট্রেস জাপানে নিয়মিত বোমা ফেলে আসছে কিন্তু অতো দুর পাল্লার হানায় সহযোগী হিসাবে কোনো ফাইটার প্লেন থাকতে পারতো না । তখনকার দিনে কোনো ফাইটার প্লেনই অতো দুর একটানা উড়তে পারতো না। তাই অরক্ষিত আমেরিকান বোমারুরা ছিলো জাপানী ফাইটার প্লেনের সহজ শিকার।

    তাই চাই জাপানের কাছাকাছি একটি নৌ ঘাঁটী। আমেরিকার নজরে পরছে ঐ ছোট্টো দ্বীপ - ইয়ো জিমা। জানতো জাপানীরাও।

    জাপানী সেনাপতি কুরিবয়সীর উপর দায়িত্ব পরলো ইয়ো জিমাকে রক্ষার।
  • dd | 116.51.27.136 | ২১ আগস্ট ২০১৫ ২২:২০685983
  • ”আমার জীবন এক মোমবাতি

    দুই প্রান্তেই পুড়ে চলেছে

    কাটবেনা রাত টুকুও”

    ছেলেকে লেখা – তাদামাচি কুরিবয়েসি

    কুরিবয়সি - যাঁর সম্বন্ধে তার অধিকর্তা বলেছিলেন "ওর রয়েছে ভুঁড়ি ভর্তি সাহস আর লড়াকু মনোভাব"। দুরদর্শী এক সেনা নায়ক অনেকদিন আগেই যিনি বলেছিলেন আমেরিকার সাথে যুদ্ধে জাপানের পরাজয় অনিবার্য।

    এর আগের যত দ্বীপ দখলের লড়াই হয়েছিলো সেগুলি মোটামুটি একই ভাবে শেষ হয়েছিলো। আমেরিকান ফায়ার পাওয়ার আর জাপানীদের বৃথা আত্মত্যাগ। দলে দলে জাপানী মরনপনে বানজাই চিৎকার করে ছুটে এসেছেন আর আমেরিকান মেশিনগানের গুলিতে লুটিয়ে পরেছেন। এই সুইসাইড অ্যাটাকে যতই বীরত্ব বা আত্মত্যাগের রুপকথা রচনা হোক নাকেনো - ফলপ্রসু কিছুই হয় নি। বৃথা প্রানত্যাগ। জাপানীরা যুদ্ধে হেরে গেছেন। বারবার। প্রতিবার।

    আধুনিক যুদ্ধাস্ত্রের বিরুদ্ধে চাই জোরদার প্রতিরক্ষা। শুধু মরনপন লড়াইটাই শেষ কথা নয়।

    এটা বুঝেছিলেন কুরিবয়সি। তিনি জানতেন। একদিন আয়ো জিমাতেও উড়বে আমেরিকান বিজয় পতাকা।শুধু আত্মত্যাগ করেই নয় চাই প্রতিরক্ষার উপযুক্ত স্ট্র্যাটেজী।

    ইয়ো জিমার আগ্নেয়শিলার রন ভুমিতে তাই খুব সুপরিকল্পিত ভাবে তিনি গড়ে তুললেন এক দুর্ভেদ্য দুর্গ। পাথুরের জমির নীচে খুঁড়লেন দীর্ঘ টানেল। একমাত্র কিছুটা উঁচু টিলা (পাহাড় না বলাই ভালো) মাউন্ট সুরিবাছির গুহায় ও পাথরের খাঁজে খাঁজে লুকিয়ে রাখলেন কামান।

    যে কুড়ি হাজার জাপানী সেনানী ঘাঁটী গড়েছিলেন ঐ দ্বীপে তাদের প্ল্যান ছিলো শুধু যতদিন পারা যায় আমেরিকাকে ঠেকিয়ে রাখার। প্রতিটি জাপানী সেনা অন্ততঃ দশ জন আমেরিকান সেনার প্রান নেবে। পাঁচ হাজার বছরের ইতিহাসে জাপানের মুল ভুখন্ড কোনো বিদেশী সেনা দখল করে নি। মাত্র ৬৫০ মাইল দুরত্বে থেকে আয়ো জিমা মূল ভুখন্ডের এক প্রহরী, হয়তো বা শেষ প্রহরী। আমেরিকান বিজয় রথের পথে এক দুর্জেয় ব্যারিকেড। সে মতন কুরিবয়সি প্রায় ১১ মাইলের সুরংগ কাটলেন মাটীর নীচে। আট মাইল বর্গক্ষেত্রের নীচে সে এক পাতাল পুরী। আগ্নেয় শিলা কেটে গড়ে তুললেন প্রায় ১৫০০ কামরা, যাতে লুকিয়ে রাখা যায় প্রতিরক্ষী সংসপ্তক বাহীনিকে আর তাদের কামান, মর্টার আর মেশিনগান। আগ্নেয় শিলা খুব কঠিন কিছু নয়। কোদাল গাঁইতি দিয়েই মাটীর প্রায় ৬০ ফীট নীচে পর্য্যন্ত গর্ত্ত করা যেতো। কিন্তু টানেলের ভিতর ছিলো অসম্ভব গরম ,তার উপর সর্বক্ষন সালফারের কটু গন্ধ। অনেক যায়গায় মাত্র পাঁচ মিনিটের বেশী একটানা কাজ করা সম্ভব হতো না। সুরংগের মধ্যে বেশীর ভাগ সময়েই গ্যাস মাস্ক পড়ে থাকতে হতো। উত্তর থেকে দক্ষিন পর্য্যন্ত একটা বিরাট টানেলের কাজ ও শুরু হয়েছিলো কিন্তু সেটি শেষ করা সম্ভব হয় নি। দ্বীপে ছিলো তিনটি বিমান পোত। কিন্তু ক্রমাগতঃ আমেরিকান হানায় মাত্র চারটি বিমান অবশিষ্ট ছিলো জাপানীদের হাতে।

    জাপানীরা আবিষ্কার করলেন যে দ্বীপের ঐ গন্ধকের ছাই আর সিমেন্ট মিশিয়ে চমৎকার কনক্রীট তৈরী হয়। প্রায় চার ফীট পুরু দেওয়ালের অনেকগুলি পিলবক্স তারা গড়লেন।

    জাপানের মূল ভুখন্ড থেকে সামরিক সাহায্যের কোনো সম্ভাবনা নেই। কুরিবয়সির তাই আগে ভাগেই মজুত করে রেখেছিলেন প্রচুর কামান, রকেট গান,মর্টার,মেশিনগান আর পর্য্যাপ্ত গোলা বারুদ। কয়েকটি হাল্কা হা গো ট্যাংকও ছিলো তাঁদের হাতে। প্রায় আড়াই মাসের খাবার আর পানীয় জল ও মজুত।

    আমেরিকান গোয়েন্দাগিরি খুব একটা সফল ছিলো না। দ্বীপের ভু প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট গুলিও ঠিক ধরতে পারেন নি। যেটুকু খবর রেখেছিলেন তাতে তাঁদের মনে হয়েছিলো সারা দ্বীপে হাজার বারো জাপানী আছে। কামান ও অন্যান্য প্রতিরক্ষী ব্যবস্থা সম্বন্ধে কিছুই জানতেন না। শংকিত আমেরিকা তাই ট্যাকটিক হিসাবে বেছে নিলেন মুখোমুখী লড়াই ও ক্রমাগতঃ আঘাত। দশ সপ্তাহ ধরে একটানা বোমা বর্ষন হলো ঐ ছোট্টো দ্বীপে।

    রননীতি নির্ধায়করা চিন্তা করছেন কতো আমেরিকান হতাহত হবে এই যুদ্ধে ? স্যাবস্ত হলো হতাহতের সংখ্যা পনেরো হাজার হবে।

    "এই যুদ্ধ জয় নিয়ে কোনো সংশয় নেই । শুধু শংকা হয় যুদ্ধশেষে কবরের পালা শেষ হলে আর কেউ অবশিষ্ট থাকবে কিনা" আমেরিকান জেনারেল গ্রেভস এরস্কাইন।"

    "যে মুহুর্ত্তে দ্বীপে পা রাখবো তখন থেকেই আমরা লড়াইএর কেন্দ্রে এবং যুদ্ধে শেষ না হওয়া অবধি ওখানেই থাকবো। সারা রনাংগনে লুকিয়ে থাকার মতন কোনো সুরক্ষিত অঞ্চল নেই কোথাও " অনামা মেরিন

    প্রায় সাড়ে চারশো জাহাজের এক বিশাল ফ্লোটিলা রওয়ানা দিলো আয়ো জিমার উদ্দেশ্যে। তিনদিন ধরে অক্লান্ত বোমা বর্ষন চললো দ্বীপের উপর। সম্পুর্ন বিনা বাধায়। কেননা কুরিবয়েসির নিষেধ ছিলো। তারা মাটীর নীচে সুরক্ষিত ঘরের ভিতর চুপ করে বসে রইলেন। এক জাপানী সেনার জবান বন্দী ঃ " তিনদিন ধরে মাটীর নীচে আমরা লুকিয়ে রয়েছি ইঁদুরের মতন। ...নিজেকে এতো তুচ্ছ কখনো মনে করি নি। এই একতরফা আক্রমনের বিরুদ্ধে আমাদের কিছুই করার ছিলো না। ...চেষ্টা করছিলাম যাতে মাটীর আরো গভীরে চলে যেতে পারি"।

    ১৯ ফেব্রুয়ারী,১৯৪৫ । ভোরের আলো ফুটবার আগেই লড়াই শুরু হলো। আক্রমনের প্রথম দিন এক অদ্ভুত দৃশ্য। ছোটো বড় প্রায় ৪৫০ টি জাহাজ -ঘিরে রেখেছে ঐ ছোট্ট দ্বীপটিকে। যেন অভিমন্যু আর চক্রব্যুহ। ক্রমাগতঃ গোলা বর্ষন চলছে। দুর থেকে ভারী ক্রুইজার আর ব্যাটেলশিপেরা দাগাচ্ছে ১৬ ও ১৪ ইঞ্চির বিশাল কামান। আরেকটু কাছে থেকে ডেস্ট্রয়ররা। দ্বীপের একেবারে কাছে ঘেঁষে গান বোটেরা। রকেট ও মর্টারের যেন শ্রাবন ধারা। ঘন্টা খানেক পর দশ মিনিটের বিরতি। তার ই মধ্যে আকাশ ছেয়ে গেলো আমেরিকান বিমানে। অজস্র বোমা,গোলা রকেট। রয়েছে নাপাম। তাদের লোড ফুরিয়ে গেলে আবার জাহাজের গোলা। আবার আকাশ জুড়ে বিমান হানা।

    এরকম ঘন্টা তিনেকের পর প্রায় দশ হাজার মেরিন নামলেন দ্বীপে। তাঁদের সংগে রয়েছে বেশ কিছু সাঁজোয়া গাড়ী যাতে মজুত রয়েছে ভারী মেশিনগান আর ছোটো কামান। বিনা বাধায় আয়ো জিমায় আমেরিকান বুটের ছাপ পরলো।

    এখানে একটু টীকা আবশ্যক।

    ট্র্যাডিশনাল জাপানী রনকৌশল চিরকালই খুব আক্রমনাত্মক। এর আগের সব কটি দ্বীপের লড়াইতেই প্রচন্ড সংঘর্ষ হয়েছিলো আমেরিকান নৌসেনাদের "ল্যান্ডিং"এর সময়তেই - সমুদ্রতটের বেলাভুমিতে। কিন্তু কুরিবয়েসির কঠোর
    নির্দেশ ছিলো আমেরিকান সেনানীদের বিনা বাধায় নামতে দেবে। অন্ততঃ পাঁচশো গজ অগ্রসর হলে তবেই প্রতিআক্রমন শুরু হবে। এই রনকৌশল কুরিবয়সির উর্দ্ধতন ও অধস্তন সব সেনানীদের ই ঘোর অপছন্দ ছিলো। বহু বিতর্কের পর,এবং তার নিজের সেকেন্ড ইন কম্যান্ডকে বিতাড়িত করে কুরিবয়সি অবশেষে তার কৌশলকে অনুমোদিত করেন।

    ঘন্টা খানেকের মধ্যেই দশ হাজার নৌসেনা আর প্রায় চারশো গাড়ী (ট্যাংক,সাঁজোয়া,বুলডোজার,ফ্লেম থ্রোয়ার,রকেট লঞ্চার ইত্যাদি) ইয়ো জিমার মাটীতে পা রাখলেন।

    সে এক বিচিত্র অভিজ্ঞতা। বেলাভুমি আগ্নেয় গিরির গন্ধকের ছাইতে ভরপুর। হাঁটাই মুশকিল। প্রায় গোড়ালি ডুবে যায় সেই আস্তরনে। তার উপর দ্বীপের দক্ষিন ভাগে (যেখানে ল্যান্ডিং হয়েছে) সমুদ্রের প্রায় ধার থেকেই হঠাৎ করে উঁচু হয়ে গেছে প্রায় পনেরো ফীট এর খাড়াই। মেরিনেরা কষ্টে সৃষ্টে সেই চরাই পার হয়ে এগুতে লাগলেন। জাপানীরা সম্পুর্ন নিশ্চুপ।

    এই ভাবে প্রায় তিনশো গজ এগিয়ে যাবার পর হঠাৎই জাপানী আক্রমন শুরু হলো।
  • dd | 116.51.27.136 | ২১ আগস্ট ২০১৫ ২২:২১685984
  • তখন নরক খুলিয়া গেলো ......
    ************************************************

    মাটী ফুঁড়ে উঠলো হাজার জাপানী সেনা। প্রায় ছয় মাসের পরিকল্পনা। পাথরের খাঁজে,সুরিবাচি পাহাড়ের গুহায়,শুকনো নালি থেকে আগেই লুকিয়ে রাখা হয়েছিলো কামান মর্টার আর মেশিনগান।

    সেই প্রচন্ড অগ্নিবর্ষনের সামনে হকচকিয়ে গেলো মেরিনেরা। একটাই সুবিধে যে ঐ ছাইএর আস্তরনে পরে গোলার বিস্ফোরক ক্ষমতা অনেকটাই কমে যাচ্ছিলো।

    মেরিনদের পিছু হঠবার পথ নেই। সমুদ্রতটে আরো আরো নৌসেনা ও তাদের সাজ সরঞ্জাম এসে পরছে। সেখানে ফিরে যাওয়া মানে "নিশ্চিত আত্মহনন"। তাই মৃত্যুর মুখোমুখী হতে তারা সমানে পালটা লড়াই চালিয়ে যেতে লাগলেন। তাঁদের প্রাথমিক লক্ষ্য মাউন্ট সুরিবাচি।

    প্রতিটি ইঞ্চির জন্য লড়াই। প্রথমে এগিয়ে ফ্লেইল ট্যাংক। যাতে আছে লোহার চাবুক। মাটীর উপর আছড়িয়ে সেই লোহার চাবুক ফাটিয়ে দিচ্ছে মাইনগুলিকে। তার পিছনে ট্যাংক ও মোবাইল আর্টিলারী। তাঁদের লক্ষ্য জাপানী পিলবক্স ও মেশিনগানের ঘাঁটী। পিছনে পদাতিকেরা তাদের গ্রেনেড ও রাইফেল নিয়ে। গুহা ও গর্ত্তকে ঝলসে দেবার জন্য সাঁজোয়া অগ্নিবর্ষী গাড়ী। ডায়নামাইট। আকাশ থেক্কে ক্রমাগতঃ বাজপাখীর মতন নীচে উড়ে আসছে ডাইভ বম্বার। তাদের অস্ত্র কামান মেশিনগান ও রকেট। তীরের খুব কাছে দাঁড়ানো ডেস্ট্রয়ার জাহাজ থেকে অবিরল গোলা বর্ষন। স্থল জল অন্তরীক্ষ - তিন দিক দিয়ে এই আক্রমন।

    প্রথম লক্ষ্য মাউন্ট সুরিবাচির প্রতিরক্ষী জাপানী সেনারা শেষ মুহুর্ত্ত পর্য্যন্ত লড়াই চালালেন। গোলা বারুদ ফুরিয়ে গেলে তারা পাথর ছুঁড়েও আক্রমন করেছেন কিন্তু কেউ আত্মসমর্পন করেন নি। দুদিন মরনপন সংকুল যুদ্ধের পর মেরিনারা তাঁদের পতাকা তুললেন মাউন্ট সুরিবাচিতে। সেই পতাকা তোলার ফোটোটি কালক্রমে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সবথেকে বেশী প্রচারিত ফোটো হয়। পরে আমেরিকা একটি ডাকটিকিটও ছাপান ঐ ছবি দিয়ে।

    প্রচারের জন্য প্রেসিডেন্ট যে ছয়জন মার্কিন সেনা পতাকা তুলেছিলেন তাঁদের সম্বর্ধনার জন্য ডেকে পাঠান- কিন্তু ইতিমধ্যেই তাঁদের চারজন মারা গেছেন।
  • dd | 116.51.27.136 | ২১ আগস্ট ২০১৫ ২২:২৩685985
  • " নরকে এক দুঃস্বপ্ন"
    *******************************************

    অনেকে হয়তো ভেবেছিলেন তিনদিনেই দ্বীপের সব থেকে উঁচু পাহাড় কবজা হয়ে গেছে অতএব যুদ্ধ শেষ হবে তাড়াতাড়ি। না,সেরকম হয় নি। কুরিবয়েসি বরং মাউন্ট সুরুবাচিতেই প্রতিরক্ষা কম রেখেছিলেন , দু হাজারেরো কম জাপানী সেনা ছিলো সেখানে। তাঁর হেড কোয়ার্টার ছিলো দ্বীপের উত্তর ভাগে। মাটীর প্রায় ৬০ ফীট নীচে। সুরিবাচির পতনের পর আড়াই হাজার গজ দুরেই ছিলো আয়ো জিমার শেষ সীমা। সেখানে পৌছাতে মার্কিন সেনাদের লেগেছিলো আরো তিরিশ দিন। গড় অগ্রগতি ছিল দিনে মাত্র আশী গজ!!

    সারা দ্বীপেই মাটীর নীচে এক যেন আলাদা শহর। একটি কামরা ছিলো এতো বড় যে তাতে একসাথে ২০০০ লোক একসাথে থাকতে পারে আর সি গুহার ছিলো বারোটি প্রবেশদ্বার। এক গোলোকধাঁধা।

    সেই যুদ্ধের এক বিবরন ঃ একটি পিলবক্স থেকে জাপানী সেনারা কামান দাগাচ্ছিলো। মেরিন সেনারা অনেক রক্তের বিনিময়ে সেই পিলবক্স দখল করে এগিয়ে গেলেন। ভাবলেন যা হোক - একটি বাধা চুর্ন হলো, বেশ কয়েক শো গজ এগিয়ে যাওয়া গেলো। কিন্তু তাঁদের অবাক করে দিয়ে তাদের প্পিছেন থেকে মাটী ফুঁড়ে আবার কিছু জাপানী সেনারা লড়াই শুরু করলো। এই পিলবক্সগুলির একেটির সাথে আরেকটির সংযোগ ছিলো মাটীর তলা দিয়ে। সুরংগপথে।

    যুদ্ধ কিছুদিন চলার পর পুরো দক্ষিন ভাগ তখন আমেরিকানদের হাতে। একটি ফীল্ড হসপিটালে সারাদিন আহতদের সেবা করে তাঁদের তাঁবুতে সবে শুয়েছেন মার্কিন চিকিৎসকেরা। তাঁরা অবাক হয়ে শুনতে পেলেন তাঁদের পায়ের নীচে মাটীর থেকে স্পষ্ট জাপানী কথাবার্তা। আসলে একটি টানেলের উপরই ছিলো তাঁদের তাঁবু।

    কিন্তু আমেরিকান সেনানীরা এগিয়েই চলেছিলেন। দিন পনেরো যুদ্ধের পর জাপানীদের কামান ও ট্যাংকের বেশীর ভাগটাই ধ্বংশপ্রাপ্ত হয়। দ্বীপের মাঝের অংশটি ছিলো সবথেকে উঁচু নীচু,এবরো খেবরো। ফলে আমেরিকান ট্যাংক ও ভারী আর্টিলারী খুব সুবিধে করতে পারে নি কিন্তু জাহাজ ও বেশী করে বিমানের আক্রমনে জাপানীরা ক্রমাগতঃই পিছু হঠছিলেন। সাতাশে ফেব্রুয়ারীর এক বার্তায় কুরিবয়েসী স্বখেদে বলেন "আমেরিকান সেনাদের সাথে সন্মুখ সমরে আমি মোটেই ভীত নই, কিন্তু নৌকামান আর বিমান হানার কোনো উত্তর আমার জানা নেই" এর কিছুদিন পরে আরেকটি বার্ত্তায় তিনি জানান " এই বোমা বর্ষন যে কি ভয়ানক তা আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না"।

    দিন পনেরো এমন রক্তাক্ষয়ী যুদ্ধের পরে জাপানীদের কমিউনিকেশন ব্যবস্থা পুরো ভেঙে পরলো। তিন চার ভাগে বিভক্ত হয়ে ছোটো ছোটো দলে তাঁরা বিচ্ছিন্ন হয়ে পরলেন। কুরিবয়েসীর নেতৃত্ব আর সর্বাত্মক রইলো না। যার ফলে ছোটো দলে বিভক্ত জাপানীরা তাঁদের চিরাচরিত রনকৌশল অর্থাৎ সেই বানজাই চিৎকার করে বেয়োনেট উঁচিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পরা – সেটাই শুরু করলেন। এর আগে কুরিবয়েসি এইধরনের সুইসাইড অ্যাটাক নিষিদ্ধ করে দিয়েছিলেন। নির্দেশ দিয়েছিলেন নিতান্ত শেষ লড়াইতে নিঃশব্দে আক্রমন চালাতে হবে। কিন্তু নিরুদ্যম ও নেতৃত্বহীন জাপানীরা সেই নির্দেশ মানেন নি। ফলাফল হলো যেমনটি হবার কথা ছিলো।

    একটি এরকম আক্রমনে অংশ নিয়েছিলেন প্রায় হাজার খানেক জাপানী নৌসেনা। অচিরেই তাঁদের মধ্যে আটশোজন নিহত হলেন। যতই ভাবালুতা থাকুক বা আত্মত্যাগের আদর্শ, – এই ধরনের আক্রমেনে যুদ্ধ জেতা যায় না।

    দ্বীপের মধ্যভাগের লড়াই এতই প্রানঘাতী হয়েছিলো যে আমেরিকানরা মধ্যভাগের টিলাটির নাম দিয়েছিলেন মাংসের কিমার মেশিন। অবশেষে দ্বীপের দ্বিতীয় বিমানপোতটিও আমেরিকানদের দখলে এলো। ততদিনে দক্ষিন ভাগের প্রথম বিমান পোতটি চালু হয়ে গেছে। জাপানী মূল ভুখন্ডে আঘাত হেনে বি ২৯ সুপারফোরট্রেস বিমান জখমী অবস্থায় ল্যান্ড করতে পারছে ঐ রানওয়েতে। আমেরিকানদের অভীষ্ঠ লক্ষ্য অর্জিত।

    " এখানে কোনো পরিষ্কার আঘাতের চিহ্ন নেই। শুধু মৃতদেহের টুকরো টাকরা।" মৃতদেহ গুলি কে আলাদা করে বোঝা যেতো না আমেরিকান না জাপানী। কবর দেওয়া হতো কোনো বিশেষ ধর্মের অনুষ্ঠান না মেনে।

    তবু শেষবিন্দুর রক্তের লড়াই থেমে থাকে নি। রনক্লান্ত আমেরিকানরা তরিঘড়ি ১৫ মার্চ তাঁদের বিজয় ঘোষনা করলেন। দ্বীপের উত্তরাঞ্চল তখনো জাপানীদের হাতে। আরো দিন দশেক একটানা সংঘর্ষের পর ২৬শে মার্চ প্রায় দুশো জাপানী সেনা আত্মসমর্পন করলেন। আনুষ্ঠানিক ভাবে বলতে গেলে সেটাই দ্বীপ দখলের দিন। যদিও আরো দুই মাস ধরে গুহায়, নালায় লুকিয়ে থাকা জাপানীরা ক্রমাগতঃ লড়াই চালিয়ে যাবেন। ঐ দুই মাসের আত্মঘাতী সংঘর্ষে আরো দেড় হাজার জাপানী সেনা প্রান হারাবেন।
  • dd | 116.51.27.136 | ২১ আগস্ট ২০১৫ ২২:২৪685986
  • “শত্রু এখনো অপরাজিত
    আমার মৃত্যু হবে না এই রনাংগনে
    আবার জন্ম নেবো ,
    কৃপান হাতে তুলে আরো সাতবার”

    কুরিবয়েসী, সম্ভবতঃ, মার্চের মধ্যভাগেয় আত্মহত্যা করেন। জাপানী বীরেদের যেটি সবথেকে সন্মানজনক মৃত্যু। তার মৃতদেহকে আলাদা করে শনাক্ত করা যায় নি। ১৪ই মার্চ কুরিবয়েসী জাপানে জানান "লড়াই প্রায় শেষ হয়ে আসছে। সেনাদের শৌর্য্য দেখে স্বয়ং ঈশ্বরও কাঁদবেন " । এর এক সপ্তাহ পরে তিনি তার শেষ বার্ত্তা পাঠান " মাত্র চারশো সেনা অবশিষ্ট আছে। ট্যাংকের আক্রমন চলছে। শত্রুরা আমাদের আত্মসমর্পনের জন্য আহ্বান করছেন। আমাদের সেনারা শুধু হেসেছে "

    বর্গমাইলের হিসেব ধরলে সারা বিশ্বযুদ্ধে প্রতি স্কোয়ার ফুটে অতো বোমা ও গোলা বর্ষন আগে কোথাও হয়নি। ঐ ছোট্টো দ্বীপে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ লড়াই করেছিলেন, সেটাও এক বিশ্ব রেকর্ড। এতো জনসংখ্যার চাপ তখন কোনো মহানগরেও ছিলো না। বিশ্বযুদ্ধে এই একটিই লড়াই যেখানে জাপানী হতাহতের তুলনায় আমেরিকান হতাহতের সংখ্যা বেশী ছিলো।

    এর পরেও আমেরিকান সেনারা আর মাত্র একটি দ্বীপেই অভিযান চালাবেন - সেটি ওকিনাওয়া।

    এই দুই দ্বীপের ভয়ানক সংঘর্ষ ও হতাহতের সংখ্যা মার্কিনিদের পরমানু বোমা বিস্ফোরনের সিদ্ধান্তে আসতে আরো সাহায্য করেছিলো।
  • dd | 116.51.27.136 | ২১ আগস্ট ২০১৫ ২২:২৭685988
  • ব্যাস। শেষ।
  • dd | 116.51.27.136 | ২১ আগস্ট ২০১৫ ২২:২৭685987
  • "মৃত্যুর পদ্যগুলি
    শুধুই মায়া বাড়ায়
    মৃত্যু তো মৃত্যুই"

    ইয়ো জিমা যুদ্ধের পর পরই বিতর্ক শুরু হয়েছিলো এই লড়াইএর সার্থকতা নিয়ে। সত্যি কি প্রয়োজন ছিলো এতো হতাহতের বিনিময়ে দখল করা ঐ আট বর্গ মাইলের গন্ধকের স্তুপ।

    আঠারো হাজার জাপানী মৃত, প্রায় দুই হাজার জখম আর ২১৬ জন বন্দী। আর মিত্র পক্ষে ৭০০০ নিহত ও প্রায় উনিশ হাজার আহত।

    সদ্য সদ্য অবসর প্রাপ্ত চীফ ওফ নাভাল অপারেশন উইলিয়াম প্রাট ৪৫এর এপ্রিল মাসে (তখন দ্বীপের লড়াই শেষ হয়েছে মাত্র সপ্তাহ খানেক)তাঁর মতামত জানালেন "এতো রক্তপাত ঘটিয়ে এক ঈশ্বর পরিত্যক্ত দ্বীপের দখল কি খুব জরুরী ছিলো ? এই দ্বীপ স্থল সেনাদের বা নৌ সেনা - কারুরই ঘাঁটী হিসাবে কোনো কাজে আসবে না... শুধুমাত্র বি ২৯এর বিমানপোতের জন্য অন্য কোনো দ্বীপ খুঁজে নেঊয়া যেতে পারতো যার জন্য এতো প্রান হানি হতো না"।

    জাপানের প্রহরী হিসাবে আয়ো জিমার ভুমিকা খুব একটা কার্য্যকারী আর ছিলো না। দ্বীপের রেডার থেকে ,থিওরেটিক্যালি, মুল ভুখন্ডে খবর দেওয়া যেতো আগাম আমেরিকান বোমারুর হানার এবং আয়ো জিমা থেকে ইন্টারসেপ্টর যুদ্ধ বিমান আক্রমন করতে পারতো জাপান অভিমুখী বি ২৯ সুপারফর্ট্রেসকে। কিন্তু এ সবই শুধু তাত্ত্বিক আলোচনা কেননা দ্বীপ দখলের লড়াই যখন শুরুই হলো তখনই আয়ো জিমার (এবং জাপানের) বিমান প্রতিরোধের শক্তি আর কিছুই অবশিষ্ট ছিলো না। ইয়ো জিমা থেকে কিছু দুরে অবস্থিত রোটা দ্বীপ অক্ষতই ছিলো। সেখানেও ছিলো জাপানী রেডার। তাই মূল ভুখন্ডে আগামী সতর্ককবানী কিছুই কমে নি।

    তবে মার্চ মাসের ৪ তারিখে - যখন দ্বীপের উত্তরভাগে জোরদার লড়াই চলছে তখনই একটি জখমী বি ২৯ আয়ো জিমাতে ল্যান্ড করে। এই সুযোগটুকু নাথাকলে ঐ বিমান ধ্বংশ হতো। ঐ দিন থেকে শুরু করে জাপানের আত্মসমর্পন পর্য্যন্ত প্রায় ২২০০ বার বি ২৯ আয়ো জিমায় ল্যান্ড করেছিলো

    কিন্তু ওরকম জখমী বি ২৯এর সংখ্যাও খুব উল্লেখযোগ্য কিছু ছিলো না। USMC'র ক্যাপটেন রবার্ট ব্যারেল পরিসংখ্যন দিয়ে দেখান ঐ ২২০০ ল্যান্ডিংএর খুব সামান্য অংশই এমারজেন্সী ল্যান্ডিং ছিলো।

    যে কারনে ইয়ো জিমার লড়াই শুরু হয়েছিলো , যে ঐ দ্বীপ দখল করে লম্বা দৌড়ের ফাইটার বিমান রক্ষী হিসাবে পাঠানো হবে বি ২৯এর হানার সাথে, সেই রকম গোটা দশেক মিশনও আয়োজিত হয়েছিলো কিন্তু শেষ পর্য্যন্ত টেকনিক্যাল কারনে ইয়ো জিমা থেকে আর লংগ রেঞ্জ ফাইটার এস্কর্ট পাঠানো হয় নি।

    ইয়ো জিমার ইতিহাসের আর একটুই বাকী থাকে। যুদ্ধের প্রায় চল্লিশ বছর পর (১৯৮৫) ঐ দ্বীপের এক স্মারকস্তম্ভ উৎসর্গ করা হয় নিহতদের স্মরনে। ঐ লড়াইএর কিছু জাপানী ও আমেরিকান সেনারা একসাথে মিলিত হন। সেদিন দুই দল প্রৌড়ের চোখের জলে ইয়ো জিমার বুকে শান্তি ঝরে পরেছিলো।

    "মাঠেরা মরে যায়
    পুড়ে যায় ঘাসের তলপেট
    এই আমার শেষ প্রহর "
    *************************************************
  • Arpan | 125.118.14.14 | ২১ আগস্ট ২০১৫ ২৩:৩২685989
  • দুর্ধর্ষ। এক নিশ্বাসে পড়লাম।

    কিন্তু মনে হচ্ছে আগে কোথাও পড়েছিলাম। কোথায় যেন?
  • Div0 | 132.178.251.60 | ২১ আগস্ট ২০১৫ ২৩:৫১685966
  • নর্ম্যান্ডি, ওকিনাওয়া জিমা, আয়ো জিমা - আম্রিকা কম পর্যুদস্ত হয়েছে! শুধু ভাবি আম্রিকা না হয়ে যদি জাপান পরমাণু বোমা প্রথম বানিয়ে ফেলত। থিন রেড লাইন, সেভিং প্রাইভেট রায়ান, ফ্ল্যাগস অফ আওয়ার ফাদার, লেটারস ফ্রম আয়ো জিমা - আম্রিকা ফলাও করে প্রচার করেই চলেছে। মাউন্ট সুরিবাচির ওই 'হীরো'দের নিয়ে 'ওয়র বন্ড' কেনাবার নাটকও কম হয়নি।

    অসাধারণ ন্যারেশন ডিডিদা। প্যাসিফিক ফ্রন্টটা পুরো কভার করা হয়ে গেলে একটু ইয়োরোপের দিকেও মুখ তুলে তাকিও :)
  • শঙ্খ | 127.194.255.41 | ২২ আগস্ট ২০১৫ ০০:২৫685967
  • সলিড লেখা! একটাই খেদ, বড় তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেলো। আবার ফিরে ফিরে পড়লাম।

    এই প্রসঙ্গে উৎসাহীদের জন্য সেকেন্ড ওয়ার্ল্ড ওয়ারের ওপরে একটা ফিকশনাল গ্রাফিক নভেল রেকো রইলোঃ কিয়েরন গিলেন এর 'উবের'। আর্ট স্পাইজেলম্যান এর মাউজ ও খুবই ফেমাস, তবে সেটা মেইনলি হলোকাস্টের ওপরে।
  • amit | 24.202.187.137 | ২২ আগস্ট ২০১৫ ০১:৩০685968
  • এক কথায়, জাস্ট অসাধারণ লাগলো পড়ে।
  • dd | 113.227.99.53 | ২২ আগস্ট ২০১৫ ০৮:৪৯685969
  • বছোর পাচ ছয় আগে "উড়ালপুল" নামে একটা ই জিনে এটি "ছাপিয়েছিলেম"। সেই ম্যাগাজিন অধুনালুপ্ত। সেটাই আগাগোড়া টুকে দিয়েছি - নো চেঞ্জ।

    অপ্পন বোধয় হোথায় পড়েছিলো।
  • kc | 198.71.251.104 | ২২ আগস্ট ২০১৫ ০৯:২২685970
  • ডিডিদা, ভালো লাগল। আমার একটা আবদার আছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ছোট ছোট ঘটনাগুলোকে ছোট ছোট করে লিখুন। একটা টই বানিয়ে। এদুয়ার্দো গালিয়ানোর মিররসের মত করে। লিখুন প্লিজ।
  • নির | 212.78.26.26 | ২২ আগস্ট ২০১৫ ১০:১৭685971
  • ডিডিডা, ডি-ডে নিয়ে একটা লেখা চাই
  • Bratin | 122.79.38.173 | ২২ আগস্ট ২০১৫ ১০:৩৩685972
  • ডিডি দা, অসাধারন
  • . | 75.49.14.76 | ২২ আগস্ট ২০১৫ ১২:৫১685973
  • ভুঁড়ি ভর্তি সাহস আর লড়াকু মনোভাব। ওহোহো কথা হবেনা।
  • dd | 116.51.130.184 | ২২ আগস্ট ২০১৫ ২১:০২685974
  • "ভুঁড়ি ভর্ত্তি সাহস" একেবারে যথাযথ। উনি জাপানী না? তবে?

    জাপানেরা বলে কি (Ki) , চীনারা বলে চি (Chi)। টেনেটুনে বাংলায় বলা যায় life force। সে মার্শাল আর্ট হোক বা Zen ধ্যান, সব সময়েই বলা হয় চিন্তাটা মগজে নয়ে পেটে থাকে। নাই কুন্ডুলীর থেকে একটু ভিতরে- সেটাই ইমোশনের স্থান।

    উনার বায়োগ্রাফীতেও তাই লেখা ছিলো "belly full of courage"। ইন্ডিয়ানদের থাকে বুক ভর্ত্তি সাহস(বা ভালোবাসা ইঃ) কিন্তু জাপানীদের সাহস থেকে উনাদের পেটে।
  • I | 192.66.94.142 | ২২ আগস্ট ২০১৫ ২১:২৮685975
  • ওঃ, পুরো জল্লাদের মত লিখেছেন গো !
  • Du | 107.79.230.34 | ২২ আগস্ট ২০১৫ ২২:২৫685977
  • কত সাহস এইভাবে নষ্ট হয়েছে , কিন্তু তাও মাথাটা নীচুই হয়ে যায় এর সামনে।
  • T | 24.139.128.21 | ২২ আগস্ট ২০১৫ ২৩:১৫685978
  • আমি কেসিদার সাথে একমত। ভালো লেগেছে।
  • | ২৩ আগস্ট ২০১৫ ১২:১০685979
  • দুর্ধর্ষ! আরো কিছু কাহিনী লিখবেন নিশ্চয়ই?
  • b | 98.128.80.182 | ২৪ আগস্ট ২০১৫ ১৫:৩৭685980
  • সু্চিন্তিত চাড্ডি কমেন্ট।
    (চাড্ডি= চার+টি)
    ১। যদ্দুর জানি আয়ো জিমার ঐ ফোটো-টা সাজানো। প্রথমবার তুলতে পারেন নি ফোটোগ্রাফার তাই দ্বিতীয়বার তুলতে হয় আবার।

    ২। লেটার ফ্রম আয়ো জিমা কিন্তু একেবারেই জাপানি দৃষ্টিভঙ্গী থেকে তোলা। তার আগের ফ্ল্যাগ আফ আওয়ার ফাদার্স আম্রিকান সাইড ঘেঁষে।

    ৩। নর্ম্যান মেলারের নেকেড অ্যান্ড দ্য ডেড এই আয়ো জিমার ওপরে বেস করে না?

    ৪। লেখাটা দুর্ধর্ষ হয়েচে। সিরিজটাও হেভি।
  • ranjan roy | 132.161.206.24 | ২৪ আগস্ট ২০১৫ ১৮:২২685981
  • b,
    অন্য ভার্শনটা আপনি লিখুন না।ডিডিরমন লেখার পর চমৎকার যুগলবন্দী হবে। হয়ত আগামী বইমেলায় গুরুর একটি ভালো চটিবই হবে।
  • de | 24.139.119.174 | ২৫ আগস্ট ২০১৫ ১৪:৫২685982
  • উফ! ক্ষী ভালো!! ক্ষী ই ই ভালো!!
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। চটপট মতামত দিন