এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  বইপত্তর

  • জাতকের গল্প

    J
    বইপত্তর | ২৩ আগস্ট ২০০৬ | ৫৭২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • J | 84.73.112.121 | ২৩ আগস্ট ২০০৬ ০১:৩৮673081
  • এখেনে বুদ্ধবাবুর জাতকের গপ্পো নয়, আমাদের নিজেদের জাতকের গপ্পো লেখা হোক বরং।
  • tan | 131.95.121.127 | ২৩ আগস্ট ২০০৬ ০২:৫৬673092
  • ধরে নিই আমরা সকলেই এখানে জাতিস্মর,এইবারে একে একে গল্পগুলো বলতে থাকি।
    যেমন গতজন্মে আমি জন্মেছিলুম চাঁদসদাগরের সময়ে,ওরই গাঁয়ে।জাহাজ বানাবার কারিগর। চাঁদ আর ওর নাবিকেরা মিলে সমুদ্রে বাণিজ্যে যেতো,ওদের জাহাজ বানাবার বরাত পেতাম আমরা।
    মাসের পর মাস নদীতীরে তক্তা সীজনিং খট খট আওয়াজে জাহাজ বানানো,আলকাতরার লেপ মারা--শয়ে শয়ে লোক কাজ করতো একসঙ্গে।
    ওদের নৌবহর যখন সমুদ্রযাত্রা করতো শুভদিনে,তখন আমরা তাকিয়ে থাকতাম পাড়ে দাঁড়িয়ে।ওরা বিদায় নিতো,আস্তে আস্তে ছোটো হয়ে আসতো বহরের সবকটি নাও,ছলছল করতো নদী আর নদীতীরের গাঁওখানির হৃদয়।
    স্বপ্নে দেখতাম সাদা পাল উড়িয়ে রাজহংসের মতন সেই চাঁদের নাও চলেছে নীল সমুদ্রের উপর দিয়ে।

  • tan | 131.95.121.127 | ২৩ আগস্ট ২০০৬ ০৩:৪৯673102
  • ওদের কে বানিয়ে দিতো নেভিগেশানের চার্ট? কে বানিয়ে দিতো সেক্সট্যান্ট যন্ত্র? কে হতো দিশারু? তারা দেখে দিক ঠিক করতো? ঐ অনন্ত নীল সমুদ্রে দিনে রাতে দিকচিহ্ন নেই কোনো,ওখানে কিকরে পথ খুঁজে পেতো ওরা? কে জানে!!! আমার ওসব জানা ছিলো না,ফিরে এলে পানশালায় যখন পার্টি দিতো চাঁদ সওদাগর, তখন সবাই ভীড় করে বড়ো বড়ো চোখ করে নাবিকদের গল্প শুনতো। ওদের গল্পে কি আর ওসব যন্তরের ডিটেল থাকতো? কখনো না,থাকতো কোন্‌ আশ্চর্য দ্বীপে কত অদ্ভুত ম্যাজিকের মতন ঘটনা ঘটেছিলো,কোথায় দ্বীপ মনে করে তিমির পিঠে নেমে পড়েছিলো কজন নাবিক,কোথায় ওন্‌ উপকূলে নেমে জঙ্গলে ঢুকে কি হয়েছিলো,কোথায় সাগরপাড়ে মস্ত মস্ত লৌহমুখ পাখী এত বড়ো যে পায়ের নখে বড়ো বড়ো ছাগল ভেড়া তুলে নেয়--এইসব যত আধা বিশ্বাস করা যায় এমন গল্প। আর ঝড়ের গল্প,উত্তাল সমুদ্রে মোচার খোলার মতন কাঁপছে নাওগুলো,জল ঢুকছে জল ঢুকছে ফুটোফাটা দিয়ে,সবাই যে যা হাতের কাছে পাচ্ছে তা দিয়ে জল সেঁচে ফেলছে।কালীর মতো কালো অন্ধকারে আকাশসমুদ্র সব লেপেপুঁছে গেছে। ঝড়ের গল্পগুলো বানানো ছিলো না,ওগুলো সত্য।
    একবারে সমুদ্রে গিয়ে আর কেউ ফিরলো না,ঝড়ের সমুদ্রে ডুবে গেলো গোটা নৌবহর,হারিয়ে গেলো সব নাবিক।

  • tan | 131.95.121.127 | ২৩ আগস্ট ২০০৬ ০৪:০১673103
  • সবাই ভেবেছিলো ঐ নাবিকেরা সবাই হারিয়ে গেছে, নাবিকদলই রইলো না, আর জাহাজের বরাৎ কোত্থেকে পাবো?
    আমাদের কারিগররা সবাই চাষেবাসে নেমে পড়লো,ধান পাট গম আখ এইসব চাষ করতাম আমরা,আস্তে আস্তে বে থা করে থিতু হয়ে গেলো সবাই, ছেলেপুলে নিয়ে সংসার হয়ে গেলো সকলের। আস্তে আস্তে সবাই ভুলে গেলো ঐ নাবিকদের কথা।ওদের বৌছেলেপুলেরা কেউ কেউ তখনও ঐ গাঁয়েই ছিলো,কেউ কেউ তখনো স্বামী ফেরার আশায় ছিলো,সাত বচ্ছর হয়ে যাবার পরে অবিশ্যি নিয়ম অনুযায়ী ওরা সধবা বেশ ত্যাগ করেছিলো।
    কিন্তু সমুদ্রে ততদিনে দেখা দিয়েছে জলদস্যুদের জাহাজ,তারা পারের গাঁয়ে গাঁয়ে হানা দিয়ে লুঠপাঠ করতে শুরু করেছে, পুড়িয়ে দেয় বাড়ীঘর,মানুষ তুলে নিয়ে যায় কোন্‌ দূর দেশে দাস করে বেচে দেবে বলে।
    সমর্থ পুরুষেরা বাধা দেবার জন্য সংঘবদ্ধ হতে থাকে, কাঠের বাঁশের ও ধাতুর অস্ত্র চালাতে শিখতে থাকে।

  • tan | 131.95.121.127 | ২৩ আগস্ট ২০০৬ ০৪:০৫673104
  • তারপরে একদিন! প্রচন্ড গ্রীষ্ম তখন, জৈষ্ঠের তাপে পুড়ে যাচ্ছে পৃথিবী।বেশ অনেকদিন বৃষ্টি নেই,খড়ের চালা টালা গরম হয়ে আছে,শুধু ফুলকিটির অপেক্ষা।
    এইসময়ে জলদস্যুরা এলো।ঘোর আগুন লেগে গেলো সারা গাঁয়ে,আর কিছুই মনে নেই।
    হয়তো ঐ আগুনে পুড়েই মারা গেছিলাম!
    পোড়া মাটির পাত্রের ভাঙা টুকরো শত শত হাজারে হাজারে ছড়িয়ে রইলো পোড়া গাঁয়ে।
  • tan | 131.95.121.127 | ২৩ আগস্ট ২০০৬ ০৪:০৭673105
  • তাড়াতাড়িতে ট্রায়াল রান মেরে একটা আধা সওদাগরি গল্প তুলে দিলাম।
    এইবারে যোদি,তোমার টার্ণ। গল্প শুনবো।
  • J | 160.62.4.10 | ২৩ আগস্ট ২০০৬ ১৩:২৮673106
  • একবার আমি জন্মেছিলাম কুকুর হয়ে। আমার নাম ছিলো শশাঙ্কশেখর। আর আমার মানুষ মনিবের নাম টমি। হাসির কিছু নেই; সত্যি সত্যিই আমাদের কুকুর-মনিবের নাম পাল্টাপাল্টি হয়ে যায় নি। টমিবাবু থাকতেন বালিগঞ্জ প্লেসে, পাঠভবন ইস্কুল তখনো তৈরী হয় নি। আমার নাম শশাঙ্কশেখর রাখার পেছনে একটা ইতিহাস ছিলো। বালিগঞ্জ প্লেসের ফ্ল্যাট বাড়িতে উঠে আসার আগে টমিবাবু থাকতেন সার্কাস রেঞ্জের একটা ভাড়া বাড়িতে। ভাড়া বাড়ি হলে কি হবে, সেই বাড়ীর ভাড়াটে হবার জন্যে মিস্টার টমিকে তখনকার দিনে বিশহাজার টাকা সেলামি দিতে হয়েছিলো। ঐ পাড়ায় ক্রমশ: তিনি টম আঙ্কল নামে পরিচিত হয়ে যান, কিন্তু সেলামির টাকা জোগাড় করবার জন্যে ওঁকে ধার নিতে হয়েছিলো শশাঙ্কশেখরবাবু বলে একজনের কাছ থেকে। আমি তখনো জন্মাই নি। জন্মাই নি বল্লে ভুল হবে, তখন আমার অন্য একটা জন্ম চলছিলো, সেটার জন্যে অন্য গল্প বলবো, কিন্তু আমার সেই কুকুর জন্ম তখনো হয়নি।
    যাইহোক, টাকা ধার নিয়ে বাড়িভাড়ার সেলামি জোগাড় করে মিস্টার টমি ওরেফে টম আঙ্কল খুব দুশ্চিন্তায় ছিলেন। বাড়ীতে ওঁর গিন্নি, মানে সুনীতা আন্টিও ভেবে ভেবে সারা কীকরে ধার শোধ করবেন। মিঞা বিবির ইচ্ছে ছিলো একটা ঘরোয়া বেকারী বানিয়ে নিজেদের বেকার জীবনের অবসান ঘটানো। পাড়া প্রতিবেশীদের সঙ্গে আলোচনা করে , শেষে সেরকম একটা বন্দোবস্তও হয়ে গেল। তখন নভেম্বর মাস। টমিবাবু সব ঠিক করে ফেলেছেন, বেকারী বাড়ীর কাছেই। ঠিক মতো শুরু করতে পারলে ডিসেম্বর জানুয়ারী তে মানে ক্রিস্টমাস আর নিউ ইয়ারের কেক বানিয়ে ভালো লাভের সম্ভবনা আছে। ওঁরা রাতদিন খেটে চলেছেন, ইতিমধ্যেই কিছু বিস্কুট, পাঁউরুটি, মাফিন এসব বানিয়ে পাড়ায় বাড়ী বাড়ী ফ্রিতে বিতরণ করে এসেছেন, পাবলিসিটির জন্যে, অল্প স্বল্প বিক্রিও হয়ে শুরু হয়ে গেছে; এসব সঙ্কেÄও শশাঙ্কশেখরের ঋণের একটা অংশও শোধ করা হয়ে ওঠে নি।
    পার্কসার্কাসের বাজারে প্রায় রোজই শশাঙ্কবাবুর সঙ্গে দেখা হচ্ছে মিস্টার টমের, কিন্তু ঋণের ব্যাপারটার জন্যে টমি কিছুতেই শশাঙ্কবাবুর সঙ্গে সহজ ভাবে কথা বলতে পারছেন না। এই অস্বস্তি থেকে নিষ্কৃতি পাবার জন্যে উনি একটু বেলা পড়লে বাজার যাওয়া শুরু করলেন। তখনকার দিনে লোকে রোজ রোজ বাজার করত, হপ্তায় একদিন বাজার করে ফ্রিজে খাবার জমিয়ে রাখার রেওয়াজ তখনো চালু হয়নি কলকাতায়।
    এদিকে ভালো খবর নিয়ে এলেন টমির গিন্নি। ক্রিস্টমাসের জন্যে বেশ কয়েকটা জায়গা থেকে অর্ডার এসেছে, তার মধ্যে দুটো দোকান প্রচুর প্লাম কেকের অর্ডার করেছে, এমনকি আগাম টাকাও কিছুটা দেবে।
    মিঞাবিবি ফের একসঙ্গে বসে সব হিসেব করে দেখলেন, কতটা লাভ হবার আশা আছে, আর ঠিকমতো হিসেব করে এগোতে পারলে কতদিনে ধারদেনা শোধ হবে।
  • J | 160.62.4.10 | ২৩ আগস্ট ২০০৬ ১৩:৪৭673107
  • হিসেবের অঙ্ক দেখে দুজনের মুখেই হাসির রেখা ফুটল। এভাবে চললে মে-জুন মাসের আগেই সব ঠিক হয়ে যাবে।
    এদিকে সাহেবপাড়ার কয়েকটা ইস্কুলেও তখন সুনীতা আন্টি টিফিনটাইমে কেক সাপ্লাইয়ের ব্যবস্থা করে ফেলেছেন, লাভ সেরকম হচ্ছে না, কিন্তু নানান লোকজনের সঙ্গে আলাপ হচ্ছে আর তৈরী হচ্ছে গুডউইল। মিসেস আথাইড যেমন বলেই ফেললেন, " সুনিটা, টুম হামারা গোয়ান পার্টিকে কে লিয়ে পর্সু কেক লেকে আয়েগা? হাম অ্যাডভান্স দেগা, সুনো চার পাউন্ড প্লাম কেক, চারপাউন্ড ব্ল্যাক ফরেস্ট অ্যান্ড সাম কুকিস, ঔর হো সকে তো এক স্পেশাল পাইন্যাপল কেক? কিৎনা দেনা হ্যায় বোলো?" এইরকম করে টুকটাক আয় হচ্ছিলো আর বেকারী থেকেও পাঁউরুটি বিক্রি হচ্ছিলো হটকেকের মতো।
    ভালো লাভ হচ্ছে দেখে, একদিন সকালে টমি বাজার গেলেন, আলুর বাজারের মুখটাতেই শশাঙ্কবাবুর সঙ্গে দেখা হয়ে গেল, শশাঙ্কবাবু তখন দামী নতুন নাইনিতান আলু বাছতে ব্যস্ত।
    যাইহোক টমি বাবুই আগবাড়িয়ে এগিয়ে গিয়ে গুডমর্নিং নমস্কার ইত্যাদি সেরে নিলেন।
    হাই ব্লাডশুগার আর ব্লাডপ্রেসারের রোগী শশাঙ্কবাবু যে রোজ লুকিয়ে বাজার ফেরৎ ডালপুরী আর নেহারী খান, সেকথা শশাঙ্কবাবুর বৌ আর ডাক্তার ছাড়া সকলেই জানত। দুজনে একই সঙ্গে গল্প করতে করতে বাজার সারলেন এবং এসে উপস্থিত হলেন ধাঙড় বাজারের মোড়ে সুলেমানের স্পেশাল ডালপুরীর দোকানে।
    কড়ায়ে টগবগ করে ফুটছে নেহারী। টমি অর্ডার দিলেন, "অ্যা বাচ্চা, দোদো জাগা মে ডালপুরী অউর নেহারী দেকে জা!"
  • J | 160.62.4.10 | ২৩ আগস্ট ২০০৬ ১৩:৫৮673108
  • শশাঙ্কবাবু বললেন, আজ টমিদাকে খুব খুশি খুশি দেখছি, কী ব্যাপার?
    টমবাবু সোজাসুজি পকেট থেকে বের করলেন কুড়িটা একশো টাকার নোট। এই কদিনের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফল। বললেন, আপনার থেকে কুড়ি নিয়েছিলাম, আপনার উপকার ভুলতে পারবো না। এই নিন দুই, বাকিটা কয়েক কিস্তিতেই মে মাসের আগেই দিয়ে দিতে পারবো আশা করছি।
    শশাঙ্কবাবু চুপচাপ টাকা গুনলেন, বুকপকেটে টাকাগুলো ভরে, মুখে শুকনো হাসি চাপিয়ে বললেন, "তাহলে ব্যবসা ভালোই চলছে আপনার, অ্যাঁ? কী বলেন?"
    টমি মুখে লাজুক হাসি, ঠিক ক্লাসে অঙ্ক কারেক্ট করলে যেমন হাসি ফুটত, তেমনি।
    বাড়ী এসে টমি গিন্নিকে বললেন, এখন থেকে শশাঙ্কবাবুকে আর এড়িয়ে যেতে হবে না।
    এরপরে টম আঙ্কল এর বেকারী ভালোই চলতে লাগলো।
    আসল ঘটনা ঘটল ক্রিস্টমাসের আগের দিন।
  • Parolin | 213.94.228.210 | ২৩ আগস্ট ২০০৬ ১৪:০৬673082
  • আমার এখোনো দ্বিতীয় জন্মই চলছে। কি কুক্ষণেই না জন্মেছিলুম নয়া পয়সা হয়ে। মুক্তি নাই।
    কত্ত মানুষ দেখলুম।ভালো মানুষ , কালো মানুষ , ছোটো মানুষ , বড় মানুষ, সুন্দর মানুষ , কুৎসিত মানুষ। চেহারার কথা বলছি না। সব মনের কথা , কত মনের মানুষই না হয়। কোন গপ্পটা ছেড়ে কোনটা বলব।
    তবে বলার মতনটা হল যখন আমি গিয়ে পড়লুম বিদ্যাসাগরের হাতে। আহা মনে হল আমার পয়সা জীবন সার্থক হল। তা বেশি দিন থাকতে পারলুম না। পাপী-তাপীদের কি আর সহ্য হয়। এক কানা ভিখিরিকে দিয়ে দিলেন পকেটের সব কটি পয়সা। আমিও ছিলুম তার মধ্যে। আর অতগুলি পয়্‌সা পেয়েই সেই কানা তার দুটি চোখ খুলে দৌড়ে দৌড়ে গেল ভাটিখানায়।
    ভাবি সব ভালো আর মন্দ গল্প গুলো কাউকে বলে যাবো। তা সময় ই আর হয় না।আজ কবছর খোকার ঘুনশিতে বাঁধা পড়ে আছি আর সে ব্যাটা মুহূর্তের জন্যেও চুপ করে বসে না। এই দ্যাখো কেমন গা মোচড়াচ্চে ঘুমের মধ্যে , বোধহয় ওঠার সময় হল। খোকা পরে ঘুমোলে আবার বলব ভালো-মন্দ গপ্প গুলো।
  • J | 160.62.4.10 | ২৩ আগস্ট ২০০৬ ১৭:০৯673083
  • প্রায় এক হপ্তা ধরেই খুব কাজের ধকল যাচ্ছিলো, কিন্তু তেইশে থেকে টমিবাবু বা তাঁর গিন্নি সুনীতা আন্টি, কারোরই মরবার ফুরসৎ নেই। কারিগরেরা তো কাজ করছেই, সেই সঙ্গে লাইন দিয়ে তৈরী হচ্ছে বাহারী সব কেক, গনগনে উনুনের মধ্যে বিরাট বিরাট লাঠির সাইজের হাতা সার সার কেককে একের পর এক লাইন দিয়ে বসিয়ে দিচ্ছে তৈরী হবার জন্যে। বেকারীর সামনে অল্প ভীড়, সবাই গরম জিনিসই কিনতে চায়। চব্বিশে দুপুরের মধ্যে সব মোটামুটি সেরে ফেলতেই হবে কারণ বড়দিনের দিন বেকারী বন্ধ থাকছে, তাই চব্বিশেও ওঁরা দম ফেলার সুযোগ পাচ্ছিলেন না। সকাল দশটা নাগাদ হন্‌হন্‌ করে হেঁটে আসতে দেখা গেল শশাঙ্কবাবুকে, সোজা বেকারীর দিকে। কী ব্যাপার? আসুন আসুন- এসব বলবার আগেই শশাঙ্কবাবু বেশ গম্ভীরমুখে বললেন, বাকী টাকাটা ওঁ তখনি চাই।
    বাকী টাকা মানে? পুরো আঠারো হাজার?
    টম আঙ্কল এর মাথা পুরো ঘুরে গেল; এতটাকা এখন কীকরে দেবো?
    শশাঙ্কবাবু তা মানতে রাজি নন, উনি ঐ পুরোটাকার ওপরে সুদ তো নিচ্ছেনই না, বরং এতদিন তাগাদা দেননি, সেই সব বলে বেশ চেঁচামেচি করতে লাগলেন।
    বেকারীর সামনে চেঁচামেচি হলে খদ্দেররা সেটা ভালো চোখে না ও দেখতে পারে, এই ভেবে টম আঙ্কল, শশাঙ্কবাবুকে আলাদা করে ভেতরে ডেকে নিয়ে যেতে চাইলেন। কিন্তু উনি ভেতরে যেতে তো রাজি ননই, উপরন্তু টমিবাবুকে চোর জোচ্চোর ইত্যাদি বলে বিস্তর চেঁচামেচি শুরু করে দিলেন।
    এদিকে বেকারীর সামনে ভীড় জমে গেল, আর আসল খদ্দেররা এক এক করে সব সরে পড়ল, আর সবচেয়ে বাজে ব্যাপার যেটা হলো, সেটা হচ্ছে টমি বাবুর সঙ্গে শশাঙ্কবাবুর হাতাহাতি লেগে গেলো।
    এই সময়ে মারামারি দেখতে জড়ো হয়েছিলো বেকারীর দুই কারিগর। তাদের গাফিলতিতে বেশ কয়েক হাজার টাকার কেক সময় মতো উনুন থেকে বের না করে আনায় ভেতরেই জ্বলে পুরো কয়লা হয়ে গেল।
    পাড়ার প্রতিবেশীরা এসে ওঁদের দুজনকে আলাদা করলেন। সব টাকা শশাঙ্কবাবুকে দেওয়া গেল না, হাজার তিনেক মতো ছিলো সেইটা সকলের সামনে গুণে নিয়ে টমিবাবুকে শাসিয়ে, টমিবাবুর নামে কুকুর পুষবার প্রতিজ্ঞা করে শশাঙ্ক বাবু সেখান থেকে চলে গেলেন।
  • J | 160.62.4.10 | ২৩ আগস্ট ২০০৬ ১৭:২৮673084
  • এরকম হুট করে কেন হামলা করলেন, সেটা কেউই বুঝে উঠতে পারলো না। কেউ কেউ বলল ঈর্ষা। কেউ বলল বেশি বেশি মদ খেয়ে খেয়ে শশাঙ্কবাবুর নাকি মাথা খারাপ হয়ে গেছে। এই দুটোর একটাও উড়িয়ে দেবার মতো নয়।
    কিন্তু বিরাট ক্ষতি হয়ে গেছে টমিবাবুর। শুধু কেক নষ্ট হওয়া নয়, অনেক খদ্দেরের কাছে কথার খেলাপ হয়ে গেল। এতো আর ডালপুরী আর নেহারী নয়, যে রান্না নষ্ট হলে আবার বানিয়ে দেওয়া যাবে।
    প্লাম কেকের ময়দার সঙ্গে কত কিছু মেশাতে হয়, সেগুলো বেশ কয়েক হপ্তা ধরে মদের মধ্যে ভিজিয়ে রাখতে হয়, সব কিছু আবার হুট করে বানানো যায় না।
    আর কয়েকঘন্টা পরে বড়োদিনের প্রার্থনা শুরু হবে গির্জায়। মন খারাপ করে থেকে কীই বা হবে। তবু মন ভালো হচ্ছে না।
    শশাঙ্কবাবুর সঙ্গে প্রায় দশবছরের চেনা জানা, এক কথায় যে লোক বিশ হাজার টাকা ঘর থেকে বের করে দিয়েছিলো সে এমন ব্যবহার করল কেমন করে? এই ইকুয়েশান কিছুতেই সলভ করতে পারল না টমিবাবু।
    মধ্যরাতের প্রার্থনা সেরে, চেনা জানা মানুষজনের সঙ্গে কুশল বিনিময় করে মেরী ক্রিস্টমাস বলতে বলতে সার্কাস রেঞ্জের মোড়ে এসে পৌঁছলেন মিঞাবিবি। রাত প্রায় দেড়টা বাজে। ফুটপাথের ওপর কুঁই কুঁই করছিল একটা বাচ্চা কুকুর। জাতে নেড়িকুত্তা। সঙ্গে মা নেই, ঠান্ডায় কষ্ট পাচ্ছে। টমিবাবু ও তাঁর গিন্নি দুজনেরই নজর পড়ল সেই কুকুর ছানাটির ওপর। দুজনেই বলতে গেলে একসঙ্গে ঝুঁকে পড়ে সেই কুকুর ছানাটিকে, মানে আমাকে আরকি, বাড়ী নিয়ে গেলেন, অল্প ঠান্ডা দুধ খেতে দিলেন, আর নিজেরা ওয়াইন খেলেন।
    সেই থেকেই আমি টমিবাবুর পোষা কুকুর হয়ে গেলাম। আর আমার নাম রাখা হলো বেশ কিছুদিন পরে।
    এদিকে সকাল হতে জানা গেলো শশাঙ্কবাবু মারা গেছেন ভোররাতে। গতকালের ঐ ঝগড়াঝাঁটিতে ওঁর খুব ব্লাডপ্রেশার বাড়ে, তারপরে হার্ট অ্যাটাক হয়েছিলো এবং শেষরাতে উনি মারা গেছেন। এবার আস্তে আস্তে আসল কথা সব বেরিয়ে পড়ল।
  • J | 160.62.4.10 | ২৩ আগস্ট ২০০৬ ১৮:০৭673085
  • টমি ওঁর বাড়ীতে যেতেই কানায় ভেঙ্গে পড়লেন শশাঙ্কবাবুর বউ।
    মোটকথা ওঁদের একমাত্র ছেলে, তার বয়েস পঁচিশ ছাব্বিশ, সে নাকি অনেকদিন ধরেই বখে যাচ্ছিলো। মদ গাঁজা ইত্যদি তো ধরেইছিলো, সেই সঙ্গে শুরু হয়েছিলো তাসের নেশা। এমনি এমনি তাস নয়, তিনপাত্তা, জুয়া। তার সাঙ্গোপাঙ্গোরাও সব বদ ছেলের দল। অনেকদিন ধরেই শশাঙ্কবাবুর কাছ থেকে ছেলে চাপ দিয়ে টাকা আদায় করছিলো, কিন্তু তেইশে রাত থেকেই সে যমুনা সিনেমার সামনে একটা বার এ তার বন্ধুদের সঙ্গে জুয়া খেলতে বসেছিলো। প্রথমদিকে অল্প কিছু সে জিতেছে, মানে সেই বন্ধুরাই কায়দা করে তাকে জিতিয়েছিলো, যাতে সে আর উঠতে না পারে, তার পর থেকে ক্রমাগত হেরেই চলেছে। সব টাকা খতম, তবু খেলবার নেশা। টাকা ফুরোলে, গলার সোনার চেনটা গেল, চেন যাবার পরে নিজের বাইকটা নিয়ে জুয়ার বাজি তে বসল ছেলে। সেটাও গেছে যখন, তখনও খেলতে চায়, ভাবখানা এমন, এরপরের দানে জিতে আবার সব ফিরিয়ে আনবে। এবার বাজি ধরে নিজের বউ কে। সেখানেও হেরে যায়। কিন্তু বউ তো তখন বাড়ীতে।
    ছেলে বলে, আমার সঙ্গে চলো বউকে নিয়ে আসছি। তাতে কেউ রাজি হয় নি। ওকে ঐ বারের মধ্যে রেখেই, ওর প্রাণের বন্ধুরা ওর বাজিতে হেরে যাওয়া বউ কে আনতে শশাঙ্কবাবুর বাড়িতে যায়। তারাও নেশা করে রয়েছে, তাদের কথাও অসংলগ্ন। তারা বউটিকে বলে তাদের সঙ্গে যেতে, এবং বাড়ীর কাউকে না জানিয়ে; জানালে নাকি তার স্বামীর বিপদ হবে। বউ টি রাজী হয়ে, চুপচাপ বাড়ী থেকে বেরোতে যাবে, সেখানে উপস্থিত শ্বশুর, - কোথায় যাচ্ছো বৌমা?
    ওদিকে ছেলের নেশাগ্রস্থ বন্ধুরা অল্প দূরেই দাঁড়িয়ে রয়েছে।
    বৌমা এদিকে ভয়ে কেঁদে ফেলেছে, শশাঙ্কবাবুও জানেন যে ছেলে গতরাতে বাড়ী ফেরেনি। একটু কথা কাটাকাটির পরে আসল খবর সব বেরিয়ে পড়ল। মোটকথা টাকা চাই। ক্যাশ। সেদিন রবিবার, ব্যাঙ্ক বন্ধ। ছেলেকে ঐ জুয়ার আড্ডা থেকে বের করে আনবার জন্যে তখন টাকা দেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। সেইজন্যেই তখন তিনি হনহনিয়ে গিয়েছিলেন টমিবাবুর বেকারীতে, কিন্তু আসল ঘটনা খুলে বলতে লজ্জা পেয়েছিলেন।
    পুলিশে খবর দিতেও ভয় ছিলো ওঁর, যদি পুলিশ ছেলেকেও অ্যারেস্ট করে নিয়ে যায়!
    টাকা না পেয়ে উনি বাড়ী ফিরে যান, রাগ দুশ্চিন্তা দু:খ এসব মিলিয়েই হয়ত অসুস্থ হয়ে পড়েন। এদিকে সন্ধ্যে অবধি টাকা না পেয়ে ওঁর ছেলের সেই গুণধর বন্ধুরা ছেলেটাকে ছেড়ে দেয়। ছেলে যখন বাড়ী ফেরে, শশাঙ্কবাবুর তখন জ্ঞান নেই। অ্যাম্বুলেন্স ডাকা হয়, আর হাসপাতালে পৌঁছবার কয়েক ঘন্টা পরেই গভীর রাতে মৃত্যু। খবর বাড়ী এসে পৌঁছয় শেষরাতে।
    টমিবাবু যে সময়ে আমাকে রাস্তা থেকে তুলে বাড়ীতে নিয়ে আসছিলেন, সেই সময়েই শশাঙ্কবাবু হার্ট অ্যাটাকে মারা যাচ্ছিলেন।
  • J | 160.62.4.10 | ২৩ আগস্ট ২০০৬ ১৮:৩২673086
  • এর কয়েকদিন পরে কোন খেয়ালে জানিনা, টমিবাবু আমার নাম দিয়েছিলেন শশাঙ্কশেখর। কুকুর ব'লে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে নয়, দিব্যি ভালোবেসে।
    আমার সঙ্গে অনেক গল্প করতেন, মনের কথা বলতেন। কখন ব্যবসায় মন্দা যাছে, কখন লাভ হচ্ছে সব বলতেন বন্ধুর মতো। আমি মুখে কিছু বলতে না পারলেও, সবই বুঝতাম। মানুষের সঙ্গ লাভ করে করে করে মানুষ হয়ে জন্মাবার কথাটাও মাথাও ঘুরত, আর সেই সঙ্গে শিখে নিচ্ছিলাম মানুষ হয়ে বাঁচার টিপ্‌স্‌ অ্যান্ড ট্রিক্‌স্‌।
  • dam | 61.246.74.169 | ২৩ আগস্ট ২০০৬ ১৯:১২673087
  • পাল্লিনের গপ্পটা আমার ভীষণ পছন্দ হয়েছে। সেই কবে বনফুলের "একটি বালিশের আত্মকথা" পড়েছিলাম -- আর তাপ্পর এই ঘষা নয়াঅ পয়সা। উফ্‌ দুরন্ত হচ্ছে, চালিয়ে যাও মা।
  • tan | 131.95.121.127 | ২৩ আগস্ট ২০০৬ ২০:৪৫673088
  • যো, দুর্দান্ত এগোচ্ছে।চালাও।চালাও।তারপরে কি হলো?
    ওদিকে ডলফিনেদের কি হলো শঙ্কুর ওখানে?

  • dd | 202.122.18.241 | ২৩ আগস্ট ২০০৬ ২১:০৪673089
  • ২১৫৩ সাল।

    আমার পরের জন্মের কথা কই। পষ্ট মনে আছে।

    আমি এক মুত্তিমান টাকা বানাবার কল। পোতি সপ্তাহে ঘন্টা দুয়েক কাজ করি। কখনো উদ্দীপনায় তিন ঘন্টাও হয়ে যায়।

    আর সারাদিন ফুত্তি করি।

    আমাদের কোম্পানি - মামুসফটে অমন ই নিয়ম।
  • Parolin | 213.94.228.210 | ২৩ আগস্ট ২০০৬ ২১:২০673090
  • যাক খোকা ঘুমোলো, কিছুটি না খেয়ে।ধুধ রুটি খেতে রোজ বমি করে খোকা নয় নয় করে সাড়ে চার বছর হল খোকার গায়ে গায়ে লেগে আছি। বড্ড মায়া পড়ে গেছে। এত দিন তো আর কারুর কাছে থাকি নি।
    বাসীর কাছে অবশ্য ছিলুম বছর্খানিক।
    একবার ঘুরতে ঘুরতে গিয়ে পড়েছিলুম এক নষ্ট মেয়ের কাছে। তখন সবে টাঁকশাল থেকে বেরিয়েছি চকচকে এক পয়্‌সা। আক্ষরিক অর্থেই নয়া পয়্‌সা। বাসী থুড়ি বাসবী তার পুরোনো পাউডারের কৌটোর মধ্যে জমিয়ে রাখতো চক্‌চকে পয়্‌সাগুলো। সেখেনেও ছিলাম বেশ ক মাস। নামেই নষ্ট মেয়ে , অমন মেয়ে আমি আর একটিও দেখিনি। কি বুদ্ধিমতী , কি কর্তব্যপরায়ণা। তেমনি ছিল তার বাবু। সাদা মনের ব্যাবসায়ী দেখেছো কখোনো ? সনাতন সাহু ছিল অমন লোক। বিশাল ব্যবসা , কোলকাতা শহরে চার চার খানা বাড়ি , চন্দন নগরে বাগানবাড়ি আবার ধুপগুড়ি না কোথায় বিরাট এক চা-বাগান। বাবু কত করে বাসী কে বলতো খারাপ পাড়া ছেড়ে তার এক বাগানবাড়িতে গিয়ে থাকতে। তা বাসী কিছুতেই রাজী হল না। বাবুকে বলে তাতে তোমার বৌ মনে দু:খ পাবে। তবে আসল কারণটা ছিল অন্য। বাসী তার বাড়িওলিকে মা মেনেছিল। যে বুড়ি তাকে ভুলিয়ে ফুসলিয়ে কাজ করে দেবো বলে গাঁ থেকে নিয়ে এল তাকেই। বুড়ি সন্ধ্যে হলে কাঁদতো। "ঠাকুর আমাকে মাপ কর , মাপ কর"। অত পাপ আর যাবে কোথায়। আর ঐ বাসী তখন বুড়িকে জড়িয়ে ধরে , কাঁদে আর বলে "আমি তো তোমাকে মাপ কোরেচি , আমার অত সব্বনাশ করার পরেও , দেখো ভগবান ও ঠিক বুজবে"। বুড়ি মরে যেতে বাসী সব চক্‌চকে পয়্‌সা গুলি কৌটো থেকে বের করে দিয়ে শিবু দালালের হাতে দিয়ে বলল ,এগুলো ছড়িয়ে দিও শিবুদা আর একটু হরিনামের ও ব্যবস্থা করে দিও।মায়ের খুব ইচ্ছে ছিল"।
    শিবুদালাল আবার ছড়াতে যাচ্চে। সব পয়্‌সাগুলি তার পকেটেই গেল।সে ছিল এক অতি কালো মনের মানুষ।
    খুব মনে পড়ে বাসীর কথা। রোজ সন্ধ্যেবেলায় বুড়ির গুনগুনিয়ে কান্না আর বাসীর স্বান্তনা।কে জানে কি হল তার। জোঁকের তো কমতি ছিল না কোলকাতা শহরে তখন।

  • Arjit | 128.240.229.65 | ২৩ আগস্ট ২০০৬ ২১:২৩673091
  • ফাজলামি চলবে?

    এককালে কলকাতার ছোকরারা ভাবতো পরের জম্মে বই-খাতা হবে।

    আর আল্টি ছিলো "এবার ম'লে সুতো হব, তাঁতীর ঘরে জন্ম লব..."
  • indo | 59.93.213.164 | ২৫ আগস্ট ২০০৬ ১২:২৭673093
  • পাল্লিন চালিয়ে যাও। জমজমাট।
  • dam | 61.246.28.219 | ২৫ আগস্ট ২০০৬ ২২:২০673094
  • অ পাল্লিন, খোকা আর ঘুমুলো না?
  • Parolin | 213.94.228.210 | ২৫ আগস্ট ২০০৬ ২৩:০৬673095
  • আর বোলো না। কি সর্বনাশটাই না গেল।
    খোকার মায়েরে গেল বিষ্যুদবার সাপে কেটেছে। যে সে সাপ নয় , একেবারে শাঁখামুটি চিতি। সন্ধ্যেবেলায় গেছিল গোয়ালে গরু কটাকে খোলের জাবনা ধরে দিতে।গোয়ালের দরজার কাছে হ্যারিকেনের টিমটিমে আলোয় দেখে এক কাঠি না কি পড়ে আছে, তা ভেবেছে পাশে এট্টূ ছুঁড়ে ফেলে দি ,টলমলে বুড়ো শ্বশুরের তো এই রাস্তাতেই যতায়াত। ওমা যে না নীচু হয়েছে ,কাঠি ফোঁস করে উঠে একেবারে ডানহাতের কব্জীতে এক্কেবারে। যা হোক , ভর সন্ধ্যেবেলায় দুই ছেলেই ঘরে ছিল। ছোটো ছেলে আবার কলেজে পড়ে , খুব চটপটে , ঠিক কোথে্‌থকে শাড়ির পাড় ছেঁড়া এনে বৌদির হাতে দু-তিন জায়্‌গায় বেঁধে মোটরবাইকের পেছনে বসিয়ে সাঁ করে নিধুডাক্তারের ঘর।
    যা হোক , বড় ফাঁড়া কাটলো।
    এই পরিবারটি বেশ। এমন শান্ত সুন্দর গেরস্থালী এত কাছ থেকে এমন করে আর আগে দেখি নাই।
    মানুষগুলো উ বড় ভালো। খোকার মা মেয়েটাই একটু পাগলাটে , অন্য রকম। এই বেশ আছে , বরের সাথে সোহাগ , দেওরের সাথে খুনসুটি ,শাশুড়ির সাথে খোশ গপ্প খোকার সাথে টুক্কি দিয়ে লুকোচুরি খেলা সব চলছে , আর তার মাঝেই যদি খোকার বাবা একবার গিয়ে নিজের মায়ের কাছটিতে গিয়ে বসে গুনগুন গপ্প জুড়লো অমনি খোকার মা নাকের পাটা ফুলিয়ে , ঘনঘন নি:শ্বাস ফেলে , মুখ কেমন ভার করে জোরে জোরে হাতা-খুন্তি খন্‌খন ঝনঝন করে রান্নাঘরে কি যেন একটা করতে লাগলো। খোকার বাবাও কি একটা যেন বোঝে , সেও দেখি চুপচাপ উঠে গিয়ে খোকাকে কোলে নিয়ে রান্নঘরে এসে ভুলভাল কি সব যেন গপ্প জোড়ে বৌএর সাথে। ক মিনিটের মধ্যে আবার খোকার মা আবার সেই হাসিখুশি আহ্লাদী মেয়েটি।
    আমি মাঝে মাঝেই ভাবি সবার ই কি দুটো চেহারা থাকে। এদের আগে এমন করে তো আর এদ্দিন ধরে মানুষের সাথে মিলে মিশে থাকি নি , তাই লক্ষও করি নি। এখন যত দেখি ততই ভাবি, ভেবে ভেবে কুল পাই না।
    এই যে ধরো খোকার কাকা। এমনিতে তার জোড়া মেলে না। পাড়ার যত অনুষ্ঠান ই বল আর রাতবিরেতে দাহই বল, সবেতেই পরেশ। মায়ের বাতের অষুধ , বাবার সুগারের অষুধ সব পরেশ জানে।খোকাকে বসিয়ে বসিয়ে আবোল তাবোল শেখাচ্চে। দাদার মোটর বাইকের তেল ফুরোলে ভত্তি করে দিচ্চে , সদাই সকলকে নিয়ে ব্যস্ত।অথচ নিজের বৌদির সাথে একটু কেমন ধারা সম্পক্ক যেন। একটু একলা হলেই " বৌদি তোমার আঙ্গুলগুলো একদম শিল্পীর আঙ্গুল , তুমি অমন আল্পনা দাও , তুমি বাসন মাজবে কেন, আমি চাকরি পেয়ে তোমার জন্যে লোক রেখে দেবো"।
    আমি আরো লক্ষ করেচি , কলেজছুটির দুপুরে বড়বৌ পেছনের বাগানে লাফিয়ে লাফিয়ে পেয়ারা পাড়ছে আর পরেশ দোতলার বারান্দা থেকে কেমন বেভুল লোভী চোখে তাকিয়ে আছে তো আছেই। মানি বড়বৌকে বেশ দেখতে , ছোটোখাট চেহারা ঢলঢলে মুখ , হাতখোঁপায় রেশম রেশম কালো চুল। তাই বলে অমন চোখে দেখতে হয়। বৌদি আর মায়ে তফাত কি।
    তবে মিছে কথা বলব না , আমারও কখোনো সখোনো মনে হয় , বড়বৌ এর সাথে আমাদের পরেশকেই মানায় ভালো। দুটি ই বেশ তরতাজা প্রাণ। বড় মহেশ নামে যা , কাজেও তাই। এক্কেরে ভোলা শিব। একটু বুড়োটেও। যাক গে যার কপালে যা থাকে।
    আজ বড়বৌ বেশ সেরে উঠেছে , অতগুলো ফোঁড় , কম ধাক্কা গেল শরীরের ওপরে। ভালো ই হল , খোকা ঠাকুমার কাছে কিছুই খায় না, বড় বজ্জাতি করে।
    সব ভালো থাক , সুখে থাক।

    রায়্‌গুষ্ঠির মতন যেন না পরিণতি হয়। তাদেরও তো ছিল ঠিক এমনি সাজানো সুখের সংসার। কেমন ছারখার হয়ে গেল বল তো ?
    অ তোমাদের তো রায়ঘরের গপ্প কিছুই বলি নি। সে এক শোনার মত গপ্প। বলবখন সময় করে।

  • ® | 203.197.96.50 | ০১ সেপ্টেম্বর ২০০৬ ০৯:৫৩673096
  • অ পাল্লিন দি বাকি টা বল, হা পিত্যেস করে বসে আচি যে
  • dam | 202.54.214.198 | ০২ সেপ্টেম্বর ২০০৬ ১২:২৯673097
  • আরে নয়া পয়সাটার হল কি?
  • Parolin | 213.94.228.210 | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০০৬ ১৬:১১673098
  • অত তাড়া দিলে হয় ?
    ক'দিন খোকার মায়ের সাথে খোকার মামাবাড়ি ঘুরে এলুম। আসানসোলের পাশে উখড়া গ্রামে। বেশ ছিল খোকা কদিন। মামাতো ভাই-বোনগুলো খোকাকে কোল থেকে নামালো না কটাদিন।বড়বোয় ও বেশ সারাদিন বাপ-মায়ের পাশটিতে বসে মহেশের পোস্টাপিসে চাকরির খবর , পরেশের পাশের খবর নিয়ে গপ্প করে গেল।বড়বৌয়ের বৌদিগুলি অবিশ্য মোটেও ভালো না। সামনে বেশ এসো বোন , বোসো বোন আর বড়বৌ দুরে গেলেই নিন্দের বন্যা। পাড়াগাঁয়ের মেয়েদের এই এক জ্বালা বোধ করি।
    দেকেচো কান্ডা রায়বাড়ির গপ্প বলতে গিয়ে উখড়ার গপ্প ফেঁদে বসে আছি।শোনো তাহলে -
    রায়বাড়ি ছিল শিলিগুড়ির এক বড় ব্যবসায়ী।ফ্ল্যাট-বাড়ি বানানোর ব্যাবসা।হাকিমপাড়ায় মস্ত তিনতলা বাড়ি।সত্যনারায়ণ রায় সেই কবে বি এ পাশ করে কদিন এটা সেটা করার পরে প্রোমোটিং এর ব্যাব্‌সাতে শেষে লক্ষীলাভ। অবিশ্য আসল লক্ষী এসেছে তার অনেক পরে ,তমলুকের মেয়ে বাণী বিয়ে হয়ে এল সেই দুর শিলিগুড়িতে।চেহারা অবিশ্য অত ভালো নয়।লম্বা চওড়া কালো-কোলো।তবে বাণী আসার পরেই নাকি সত্য রায়ের ব্যাবসা ফুলে ফেঁপে ওঠে। তাই সত্য রায়ের কাছে বাণীর সাত খুন মাপ।এসব গপ্প গিন্নী রোজ দুপুরে দক্ষিণের বারান্দায় বসে ,সামনে পানের বাটা নিয়ে রসিয়ে রসিয়ে বলতো সন্ধ্যা ঝি আর রান্নর বামুন মাসীকে।
    রায়েদের মেয়ের বয়স বারো। ঢলঢলে আহ্লাদী বড়লোকের মেয়ে সে।সারাদিন সাজ-গোজ,পুতুল-খেলনা আর ইশকুল নিয়েই তার দিন কাটে।বাপের খুব ন্যাওটা।বেশ মেয়েটি , সরল মনের ।একটু বড়লোকী দেমাক থাকলেও প্রাণে মায়া খুব।রান্নার বামুনমাসীকে চুপিচুপি তার সব পুরোনো খেলেনা, জামা দিয়ে বলে " তোমার সেই নাতনী আছে না গ্রামে তাকে দিও"।
    রায়্‌বাড়িতে আমি প্রথম ঢুকলুম এক ব্যস্ত সকালে। রায়ের ম্যানেজার বাজার করে ফিরে ফেরত পয়্‌সা সব গুনে গুনে দিল রায় গিন্নের হাতে। তাতে আমিও ছিলুম। গিন্নী পয়্‌সাগুলি দেরাজে রাখার সময় আঙ্গুল গলে আমি গড়িয়ে গিয়ে পড়লুম দেরাজের তলায়।ব্যস ওখেনেই ক হপ্তা ধুলোয়-ঝুলে মাখামাখি হয়ে।সন্ধ্যা ঝি ছিল অসম্ভব কুঁড়ে। সে আর দেরাজের তলায় ঝাঁট দিচ্চে।
    তার দিন দশেক পরেই বোধহয় সত্য রায় রাতে বাড়ি ফিরলো না।কোনো খবর না দিয়েই।রায় নাকি মাঝেই রাতে কাজে যেত ময়নাগুড়ি-ধুপগুড়ি নানা জায়্‌গাতে। সেসব রাতে দেখতুম গিন্নী সারারাত বারান্দায় নিশ্চুপ।আর সকালে ফেরার পরে সত্য রায়কে শুকনো অথচ শক্ত গলায় গিন্নী বলত "চান না ঘরে আমার শোবার ঘরে ঢুকো ন ,ওখেনে আমার রাধা-গোবিন্দ আছে"। সত্য রায় ও কেমন যেন কুঁকড়ে যেত।চানের পরে তারপর সন্ধ্যা ঝি বাবুর কাপড় চোপড় উঠিয়ে নিয়ে যেত ধোবার জন্যে।অথচ অন্য দিনে গিন্নী আগে নিজে হাতে এ পকেট সে পকেট দেখে তবেই দিত কাচার জন্যে।
    যাই হোক , পরের দিন সকালে ম্যানেজার যখন এল হিল কার্ট রোড আপিসেত চাবি নিতে,গিন্নী মুখ নীচে করে জিগালেন বাবু গত রাতে কাজে কোথায় গেছে।ম্যনেজার তো অবাক , বলে বাবু নাকি সন্ধ্যে সাড়ে সাতটা নাগাদ বাড়ি ফিরবো বলে আপিসে তালা দিয়ে বাইক নিয়ে বেরিয়ে গেছে।গিন্নী শুনে কেমন যেন টলে উঠলো।" ম্যনেজারবাবু আপনি পুলিশে একটা খবর দিন"।
    "পুলিশ কেন মা , কি হয়েছে , বাবু হয়ে্‌তা গেছেন কোথাও কাজে, ঠিক এসে পড়বেন"।
    গিন্নীও কেমন যেন হঠাৎ নিজের ভুল বুঝতে পেরেছেন এমন ধারা করে বললেন "ঠিক ঠিক , এখুনি এসে পড়বেন , কাজে কোথাও আটকে গেছেন, ম্যানেজার বাবু আজ সকালে আর আপিস খোলার দরকার নেই , বাবু এসে বিকেলে খুলবেন একেবারে"।
    ম্যানেজারবাবু কিন্তু কপালে ভাঁজ ফেলে উল্টোদিকের বারান্দায় গিয়ে কাকে যেন টুক করে একটা ফোন সেরেনিলেন।
    সকাল গড়িয়ে দুপুর , দুপুর গড়িয়ে বিকেল।বাবু আর ফিরলেন না।
    দুদিন পরে তিস্তা ব্রিজের ধারের জঙ্গলে বাবুকে পাওয়া গেল।গায়ে নাকি দশ-বারোটা ভোজালীর কোপ।হাঁ করা মুখের ওপরে ভনভন করছে বুনো নীল মাছি।গ্রামের লোকেরা পচা গন্ধ শিয়াল টিয়াল মরেছে ভেবে জঙ্গলে ঢুকে লাশ দেখতে পায়।
    তারপর পুলিশ নাকি তদন্ত করে দেখেছিল বাবু নাকি সমাজবিরোধী লোকজনের সাথে যুক্ত ছিল ,দলের মধ্যে বনিবনা না হওয়াতেই এক খুন।খুনী নাকি পালিয়ে ভুটান চলে গেছে ,ভুটান সরকারের সাহায্য নিয়ে ধরার চেষ্টা চলছে।
    রায়ি্‌গন্নী পাথর হয়ে শুনছে সবই।চোখে এক ফোঁটা জল নাই।শোক নাই,কোনো হা-হুতাশ নাই।শুধু মুখ দেখলে মনে হয় কেউ যেন এক পোঁচ কালি মাখিয়ে দিয়েছে।মেয়ে কাঁদলে শুধু মেয়েকে দু হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে মাথাটি বুকে চেপে ধরে।
    সেই দিন বিকেলে ম্যানেজার বাবু এলেন গিন্নের ঘরে , " মা ,পুলিশ সব মিথ্যে বলছে। সব বিকিয়ে গেছে মা।বাবু কোনো অন্যায় কাজ করতেন না।ঝামেলা বেশ কদিন ধরেই চলছিল।প্রকাশ তিওয়ারীর লোকজন বাবুকে খুব ফোন করছিল আর বাবুও খুব চিৎকার চেঁচামিচি করতেন ফোনে।ওরা কিছু একটা চাইছিল যেতা বাবু মানছিলেন না। আর জানেন ই তো তিওয়ারী ই তো পার্টিটা চালায়। সব শেষ করে দিল।সর্বনাশ হয়ে গেল আমাদের"।
    থমথমে গিন্নী ভাঙ্গা গলায় ম্যানের্জারের হাতদুটি চেপে ধরে বললেন আমি সব বুঝি।ওনার শুধু একটাই দোষ ছিল তার বাইরে উনি কে্‌নাদিন কোনো অন্যায় করতেই পারেন না।আপনি বাড়ি বিক্কিরি করে দেবার একটু ব্যবস্থা করে দিন।আমরা এখানের পাট চুকিয়ে তমলুক যাবো"।
    তার কদিনের মধ্যেই গিন্নী মেয়েকে নিয়ে চলে গেলেন।আসবাব পত্র সব বিক্কিরি হয়ে গেল। দেরাজ্‌টা নিতে এসে ভ্যানওয়ালা আমাকে দেখতে পেয়ে তুলে নিল।রায়বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে দেখলুম গমগমে একটা সোনারং বাড়ি কেমন খাঁ খাঁ শ্মশান্‌পুরী হয়ে গেছে।
  • J | 160.62.4.10 | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০০৬ ১৩:০৪673099
  • অসাধারণ! কী লিখছিস রে প্যারো?
  • n | 131.95.121.107 | ১৩ জুন ২০০৮ ২০:৫১673100
  • এই গল্পটা আর শেষ হলো না?
  • n | 131.95.121.107 | ১৩ জুন ২০০৮ ২০:৫৩673101
  • ঘষা পয়সা আর শশাঙ্কশেখর আর আসবে না?
    তলায় তলায় কত কি বয়ে গেছে, গঙ্গায় পদ্মায় যমুনায় বয়ে গেছে কত জল-এইসব গল্পগুলো রয়ে গেছে অসমাপ্ত।
    কেন?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। দ্বিধা না করে মতামত দিন