এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  গান

  • পুজোর গান-গানের পুজো

    Somen Dey
    গান | ০১ অক্টোবর ২০১২ | ১৮৬৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Somen Dey | 125.187.58.11 | ০১ অক্টোবর ২০১২ ১২:২০575793
  • বাঙ্গালিদের চরিত্রে বীর রস নেই , ব্যাবসা বুদ্ধি নেই , শিল্পদ্যোগের আকাঙ্খা নেই , ধনবান হবার উচ্চাশা নেই , রাজা হবার সাধ নেই , কিন্তু প্রাণে গান আছে ভরপুর ।তার আছে বাঙ্গলা গানের বিশাল বৈচিত্রের সম্বৃদ্ধ ভান্ডার । কীর্তন , চর্জাগীতি ,নাট্যগীতি , বৈষ্ণব পদাবলী , শ্যামাসঙ্গীত , কবিগান , পাঁচালি গান , ভাটিয়ালি ভাওয়াইয়া , জারি সারি মুর্শিদা , দেহতত্ব , আউল বাউল , ভাদু গান টুশু গান ইত্যাদি । এই লোক গান লোকেদের মুখে মুখেই ফিরত । এর কোনো সংরক্ষনের ব্যাবস্থা ছিল না। তা না থাকার ফলে কত ভালো গান যে হারিয়ে গেছে কালের অতল গর্ভে কে জানে । মুখে মুখে ফিরে যে টুকু আমাদের সময়ে এসে পৌঁছেচে , তা শুনে আমরা বুঝতে পারি আমরা যে গানের রতনহার গুলি হারিয়ে ফেলেছি তা কত দামী ছিল । সংরক্ষন করা যায়নি কারন আমাদের না ছিল রেক`্র্ডের ব্যাবস্থা , না ছিল স্বরলিপি ছাপার বারোয়ারি ছাপাখানা। আমাদের গান ছিল স্মৃতি ও শ্রুতি বাহিত পরম্পরা । কাজেই আমরা উত্তরাধিকার সুত্রে আজ যে সব পুরোনো গান আমরা পেয়েছি , তার কিছু কিছু হয়তো বিকৃতি ঘটতে ঘটতে সাত নকলে আসল খাস্তা হয়ে গেছে।

    সায়েবরা এদেশে বনিকের মানদন্ড নিয়ে মুলত তাদের ব্যাবসা বাড়াবার জন্যেই এসেছিল সে কথা আমরা সবাই জানি । তারা তাদের এই ব্যাবসা বাড়াতে গিয়ে হয়তো অজান্তেই আমাদের বেশ কিছু উপকারও করে ফেলেছেন । উনিশশো দুই সালে যখন কোলকাতা ভারতের রাজধানী এবং এই কোলকাতা অলীক কু নাট্য রঙ্গে মজেছিল এবং কোলকাতার বাবুদের বিনোদনের গান বলতে মুলত থেটারের গানই জনপ্রিয় ছিল , তখন এক ইংরেজ কোলকাতায় এলেন তাঁর গ্রামাফোন এনড টাইপরাইটার কোম্পানি লিমিটেডের শাখা খুলতে । তাঁর নাম ছিল । ওয়াটসান হড ।বিচক্ষন হড সায়েব এ দেশে এসেই বুঝলেন এ দেশে গানের বাজার তৈরির একটা বিপুল সম্ভাবনা আছে। তিনি বিলেত থেকে ডেকে নিলেন ফ্রেড গেইসবার্গ এক রেকর্ডিংয়ের কারিগর কে । সে কালে বাবুরা গান শুনতে যেতেন হয় থেটারে নয় বাঈজি বাড়িতে । ঘরে বসে গান শোনার উপায় ছিল না। হড আর গেইসবার্গ তাক করলেন সেই সব গান গালার চাকতিতে রেকর্ড করে বাবুদের বাড়িতে পৌঁছে দিতে । সম্পন্ন বাঙ্গালিদের ঘরে ঢুকলো একটি নতুন আসবাব- গ্রামাফোন । নতুন গ্রামাফোন কোম্পানির স্লোগান হোলো ' সুখি গৃহকোন শোভে গ্রামাফোন' ।

    বিজ্ঞাপনের কাজ হল হল মানুষের অন্তর্নিহিত চাহিদা গুলি খুঁজে বের করে তার জন্যে demand তৈরি করা ।এক্ষেত্রে বিজ্ঞাপনের মাহাত্ন্য তখন থেকেই আমাদের উপর প্রভাব ফেলতে লাগলো । বাঙ্গালি সুখী হবার মাপকাঠি হিসাবে গ্রামাফোন কে দেখতে আরম্ভ করলো । একবার এক গৃহস্থের ঘরে একটি গ্রামাফোনে ঢুকিয়ে দেওয়া মানেই সে ঘরে ডিস্ক রেকর্ডের স্থায়ী চাহিদা তৈরি করে দেওয়া । সুতরাং ডিস্ক সঙ্গীতের চাহিদা বাড়তে লাগলো । এই নতুন পন্যটি বাঙ্গালির জীবন শৈলীকে কে অনেক খানি পাল্টে দিল। গোড়ার দিকে গান রেকর্ড করার জন্যে যাদের পাওয়া গেল তারা সবাই পেশাদার শিল্পী। সে সময় গান কে পেশা হিসেবে নেওয়ার ব্যাপারে কিছু ট্যাবু ছিল । তাই যারা গাইতে এলেন তারা মুলত বাইজী শ্রেনীর । যেমন গওহর জান , ইন্দুবালা , আঙ্গুরে অ বালা , কৃষ্ণভামিনী ইত্যাদি । পরে পরে অন্যান্য শিল্পীআ খুঁজে বার করা ।অ চাহিদ্রাও আসতে লাগলেন । কিন্তু তারা যে পেশাদার নয় সেটা বোঝাবার জন্যে নামের পাশে ব্র্যাকেটে এম এচার শব্দটি লিখে দিতেন । হায় বাঙ্গালির সংস্কার , , গানাকে পেশা হিসাবে নিতে নেই মনুসংহিতায় নাকি এ রকম বিধান দেওয়া আছে । তবে সমাজ সময়ের সঙ্গে পাল্টায়। ট্যাবু
    ধীরে ধীরে ভাঙ্গতে লাগলো ।দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের ভগ্নী অমলা দাশ এলেন মিস দাস ( এমেচার) নাম নিয়ে ১৯১৪ সালে । গাইলেন রবি বাবুর দুটি গান - হে মোর দেবতা ও প্রতিদিন আমি হে জীবন স্বামী । আরো অনেকে এলেন দ্বিধা সংকোচ পেরিয়ে।
    গ্রামাফোন কোম্পানির ব্যাবসা বাড়তে লাগলো হু হু করে । নামের থেকে 'টাইপরাইটার' টি ছেঁটে নতুন নাম হোলো গ্রামাফোন কোম্পানি লিমিটেড । এসপ্লানেড ইস্টের অফিসে স্থান সংকুলান হওয়ায় কোম্পানি উঠে এল বেলেঘাটায়। না না ধরনের গানের রেক`্র্ড দশ ইনচি সাইজের প্রথমে ওয়াক্স ও পরে গালার চাকতির আকারে বেরোতে লাগলো ।বিখ্যাত বাঈজি গওহর জান রেকর্ড করলেন ভক্তি সংগীত- হরি বলে ডাকো রসনা। ছুৎমার্গ ঘুচে আপামর বাঙ্গালি ভক্তি ভরে শুনলেন সেই গান। যদিও তখন খেমটা খেউড় গানের রমরমা ছিল । সায়েবরা তাদের প্রখর ব্যাবসা বুদ্ধি দিয়ে বুঝলেন বাঙ্গালি ডিস্ক রেকর্ডের গান শুনবেন সমস্ত পরিবারের সঙ্গে বসে । সুতরাং এই গানে শালীনতা থাকা দরকার । কিছু বেনো জল ঢুকলেও ডিস্ক রেকর্ডিংয়ে একটা রুচীর মাপকাঠি তৈরি হল হয়তো ব্যাবসার প্রয়োজনেই । একটি করে গান বেরোতে থাকলো আর বাঙ্গালি সাগ্রহে তা গ্রহন করতে লাগলো ।

    সাধারনত রেকর্ডের গানগুলি বেরোতো সেপটেম্বর অক্টোবর মাসে । হয়তো পুজোর কথা মাথায় রেখেই । তবে ' পুজোর গান ' এই তকমা তখনো লাগেনি । ১৯১৪ সালে সেপ্টেম্বর মাসে বেশ কিছু রেকর্ড একসঙ্গে বেরোয় এবং বিজ্ঞাপনে প্রথম লেখা হয় ' শারদীয়া পুজা উপলক্ষে' ।হাফটোন ব্লকে ছাপা সেই বিজ্ঞাপনের একদিকে সেই বিখ্যাত গ্রামফোনের সামনে প্রভুভক্ত কুকুর তার নিচে লেখা , NEW 10 INCH DOUBLE SIDED VIOLET LEBEL , বাঙ্গালা গ্রামাফোন রেকর্ড- Price Rs 3-12 each । তার পাশে একটি শাড়ী পরিহিতা নারী হাতে ফুল নিয়ে পুষ্পাঞ্জলির ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে , পিছনে কাশ ফুল , সামনে পুস্করিনী , তার ওপারে পাহাড় , পাহাড়ের ফাঁকে সু`্র্য উঠছে ।উপরে বাঙ্গলায় 'শারদীয়া' নিচে ' হিজ মাস্টারস ভয়েস' । তার নিচে যাদের গান প্রকাশিত হয়েছে তাদের নামের তালিকা ও গানের প্রথম লাইন ।
    এই হোলো পুজোর গানের যাত্রা শুরুর প্রথম বিজ্ঞাপন ও একটি বাংলা গানের স্বর্নোজ্বল অধ্যায়ের সুচনা।

    যে গান গুলি ' শারদীয় পূজা উপলক্ষে' বলে বেরোলো সেগুলি মুলত ভাক্তিগীতি , কীর্তন বা আগমনী গান । প্রথম বছরে শিল্পীরা ছিলেন - মানদা সুন্দরী দাসী , নারায়ন চন্দ্র মুখার্জী , কে মল্লিক , কেষ্টোভামিনী , চণ্ডীচরন বন্দোপাধ্যায় , শশী ভুষন দে , বেদানা দাসী। এ ছাড়া অভয়াপদ চট্টোপাধ্যায় করেছিলেন হাসির গানের রেকর্ড ।
    এর মধ্যে কে মল্লিক পরবর্তী কালে খুব জনপ্রিয় হয়েছিলেন । এঁর আসল নাম ছিল মহম্মদ কাসেম । মুসলমানের মুখে শ্যামাসঙ্গীত গ্রহনীয় হবে কিনা সে ব্যাপারে গ্রামাফোন কোম্পানি যথেষ্ট সংশয়ে ছিলেন । তাই কোনো ঝুঁকি নেননি । তখন কে জানতো তার কিছুদিন পরেই আর এক ঝাঁকড়া চুলের দুরন্ত প্রাণ মুসললমান যুবক নিজেই অনবদ্য শ্যামাসঙ্গীত রচনা করে বাঙ্গালীর হৃদয় মাত করে দেবেন । তাঁকে নাম গোপন করতে হয়নি - নজরুল ইসলামের ধর্ম নিয়ে অন্তত হিন্দুরা কোনো প্রশ্ন তোলেনি ।

    এর পর আমাদের দুর্গোৎসবের সঙ্গে ডিস্কের গানের একটা অন্তরঙ্গ সম্পর্ক তৈরি হয়ে গেল এবং সেটা ক্রমশ গভীর হতে লাগলো । নতুন নতুন সঙ্গীত শিল্পীরা রেকর্ড করতে আসতে আরম্ভ করলেন । গান গেয়ে অর্থ উপার্জনের একটা রাস্তা খুলে গেল ।বিশ শতকের প্রথম দশকে এলেন গওহর জান , লালচাঁদ বড়াল ,গোপেশ্বর বন্দোপাধ্যায়ের মত প্রবাদ প্রতীম শিল্পীরা গ্রামাফোনে রেকর্ড করতে লাগলেন ।সেই সঙ্গে এলেন কয়েক জন 'মিস ' ও এলেন , যেমন বিনোদিনী , কুমুদিনী , ভুবনেশ্বরী ইত্যাদি।
    দ্বিতীয় দশকের যা ঘটলো সেটাকে বলা যেতে পারে বাংলা গানের জগতের রেনেঁসা । কেন বলছি সেটা নাম গুলি শুনলেই বোঝা যাবে । যেমন - আশ্চর্যময়ী দাসী , এম এন ঘোষ (মন্তা বাবু ) আঙ্গুর বালা , ইন্দু বালা , কৃষ্ণ চন্দ্র দে , পঙ্কজ কুমার মল্লিক , কমলা ঝরিয়া , ধীরেন্দ্র নাথ , দিলীপ কুমার রায় দাস প্রমুখ । এরা বাংলা গানকে এক ধাপে অনেকটা এগিয়ে নিয়ে গেলেন তাঁদের কন্ঠের সম্পদ নিয়ে।

    কৃষ্ণ চন্দ্র দে ১৯১৭তে পুজোর গান করলেন - ' আর চলে না চলে না মাগো' আর অন্য পিঠে ' মা তোর মুখ দেখে কি ' । ১৯২২ সালে আঙ্গুরবালা পুজোয় রেকর্ড করলেন দুটি ভক্তিগীতি - 'কত আশা করে দুয়ারে তোমার ' ও ' কালা তোর তরে কদম তলায় ' ১৯২৩ এ ইন্দুবালা গাইলেন 'তুমি এস হে এস ' অন্য পিঠে ' ওরে মাঝি তরী হেথা বাঁধবো না ' ।
    দেশে তখন স্বাধীনতার আন্দোলন জোরদার হচ্ছে । তার ঢেউ এসে লাগলো পুজোর গানেও ।১৯২২ সালে পুজোর গানে কিছু স্বদেশ বোধের গান - ক্ষেত্রমোহন মিত্র ও অন্যান্যরা গাইলেন ' সেকালের বাংলা' ও চরখার গান ' সমবেত কন্ঠে রেকর্ড হল - ডি এল রায়ের ' বঙ্গ আমার জননী আমার '। হরেন্দ্র নাথ দত্ত রেকর্ড করলেন - বন্দে মাতরম এবং অন্য দিকে রবি ঠাকুরের ' দেশ দেশ নন্দিত করি '

    ১৯২৫ সালে দিলীপ কুমার রায় পুজোতে রেকর্ড করলেন - 'ছিল বসি কুসুম কাননে ' এবং 'রাঙ্গা জবা কে দিল তোর পায়ে ' ১৯২৫ সালেই সাহানা দেবী গাইলেন দুটি অতূল প্রসাদের গান - ' কত গান তো হল গাওয়া ' এবং 'শুধু দু দিনেরই খেলা' ১৯৩২ সালে পুজোয় কনক দাস , যিনি মুলত রবীন্দ্র নাথের গান গেয়ে প্রসিদ্ধি লাভ করেছিলেন তিনি গাইলেন দুটি অতুল প্রসাদের গান - ' কত গান তো হল গাওয়া ' আর ' শুধু দুদিনেরি খেলা ' ।

    সম্ভবত কাজি নজরুলের গানের প্রথম রেকর্ডটি বেরোয় ১৯২৫ সালের পুজোয় - হরেন্দ্র নাথ দত্তের কন্ঠে - ' জাতের নামে বজ্জাতি ' । এর পরে নজরুলের অনেক গানই পুজোর সময় প্রকাশিত হয় - যে গুলি গেয়েছিলেন - আঙ্গুর বালা , ইন্দু বালা , ধীরেন্দ্র নাথ দাস , হরি মতী , মৃনাল কান্তি দাস , যুথিকা রায় , জ্ঞানেন্দ্র নাথ গোস্বামী প্রমুখ ।

    কমলা ঝরিয়া ১৯৩০ সালে পুজোতে প্রথম রেকর্ড করলেন - 'প্রিয় যেন প্রেম ভুলনা' ও নিঠুর নয়ন বান কেন হান ' । ১৯৩১ সালে ধীরেন্দ্র নাথ দাস গাইলেন দুটি আগমনী গান - 'আজ আগমনীর আগমনে' এবং 'আজি শঙ্খে শঙ্খে মঙ্গল গাও ' ।

    এতদিন পর্যন্ত যে সব বাংলা গানের ডিস্ক প্রকাশিত হল তার বেশির ভাগই ভক্তি গীতি । তার সঙ্গে কিছু স্বদেশি গান , কিছু হাসির গান আর কিছু রবীন্দ্র অতুলপ্রসাদ ডি এল রায়ের গান । বাংলা আধুনিক গান বলে তখনো কোনো গান কে চিহ্নিত করা হয়নি । এই আধুনিক গানের তকমাটি কখন থেকে লাগলো এ নিয়ে কিছু মতভেদ আছে । একটি মত বলছে ১৯৩০ সালে ২৭ শে এপ্রিল কলকাতা বেতারে শ্রী হৃদয় রঞ্জন রায় নামক এক গায়কের অনুষ্ঠান প্রচারের সময় 'আধুনিক বাংলা গান' এই অবিধাটি ব্যবহৃত হল । তার পর থেকেই ব্যাপক ভাবে এই নামটি প্রচলিত হয়ে গেল । মতভেদে আধুনিক গান কথাটি স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ তাঁর সাম্প্রতিক গানগুলি বোঝাবার অর্থে ব্যবহার করেছিলেন । আরেকটি মত ও আছে। ১৯৩৪ সালে পুজোয় এক কিশোরী যুথিকা রায়ের প্রথম ডিস্ক বেরোলো - এক পিঠে ' আমি ভোরের যুথিকা ' আর এক পিঠে 'সাঁঝের তারকা আমি' । গানদুটি বাঙ্গালি শ্রোতা মহলে তোল পাড় ফেলে দিল । তার কারন আঙ্গুর বালা ইন্দু বালা প্রচলিত গায়ন ধারা থেকে সম্পুর্ন একটি ভিন্ন ধারার চলন যুথিকা রায়ের গানে শোনা গেল । যা বাঙ্গালির খুব পছন্দ হল । কমল দশগুপ্তের সুরে এই ডিস্ক থেকেই একেবারে নতুন আঙ্গিকে বাংলা আধুনিক গানের যাত্রা হল শুরু।

    ১৯৩০ সালে বাংলা চলচ্চিত্র সবাক হল । বাংলা সিনেমায় দর্শক মনোরঞ্জনের জন্যে প্রচুর গান ব্যাবহার করার প্রয়োজন হল । নতুন সুরকার গীতিকার গায়কদের দরকার হয়ে পড়লো । একটা নতুন দিগন্ত খুলে গেল । ডিস্ক কোম্পানি গুলিরও ব্যবসা বাড়তে লাগলো । একদিকে চলচ্চিত্রের গান অন্যদিকে বেসিক বাংলা গান । বেসিক বাংলা গান গুলি বেশির ভাগই আধুনিক গান । ক্রমশ পুজোর সময় প্রকাশিত বেসিক বাংলা গানের সংখ্যা বাড়তে লাগলো । প্রতি মাসে গানের রেকর্ড না বের করে পূজোর সময়েই সব সুরকার গায়করা তাদের শ্রেষ্ঠ গান গুলি প্রকাশ করতে শুরু করলেন ।সীনেমায় তখন স্টার তৈরি হয়নি কিন্তু বাংলা গানে অনেক তারকা আলোকিত করলেন বাংলাগানের আকাশ।

    চল্লিশের দশক থেকেই শ্রোতাদের কাছে পূজোর গানের জন্য একটা উন্মাদনা তৈরী হল । পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে এই উন্মাদনা একেবারে তুঙ্গে উঠলো । বাংলা আধুনিক গানের স্বর্ন যুগ শুরু হল । যেমন সব স্বর্ন কন্ঠের গায়ক গায়িকারা এলেন , তেমনি এলেন অসামান্য সুরকাররা আর সেই সঙ্গে এলেন অসাধারন গুনী গান লিখিয়েরা ।

    শুধু এই চল্লিশ থেকে ষাট দশকের সময় সীমায় যা সব যুগান্তকারী পুজোর গান বেরিয়েছে তা নিয়ে লেখা এই সল্প পরিসরে সম্ভব হবেনা । তাই কয়েকটি মাত্র মাইলস্টোন গানের কথাই উল্লেখ করছি ।
    ১৯৩৭ এ হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের আত্নপ্রকাশ ঘটলো ' জানিতে যদি গো তুমি' আর ' বল গো বল ' এই দুটি গান গেয়ে । তার পরের ইতিহাস তো সবাই জানে । পরের চারটি দশক ধরে তিনি সব রকমের বাংলা গান গেয়ে বাঙ্গালির কাছে অপরিহার্য অভ্যাস হয়ে উঠেছিলেন ।
    ১৯৪০ এ সুরসাগর হিমাংশু দত্তের সুরে প্রকাশিত হল 'ছিল চাঁদ মেঘের পারে '। প্রথম রেকর্ড হয় গীতশ্রী গীতা দাশের কন্ঠে , গায়িকাকে আমরা তেমন মনে রাখিনি কিন্তু গানটি আজও জনপ্রিয় পরে রীমেকও হয় । গানটি। আজও জনপ্রিয়। আর সুরকার হিমাংশু দত্তের প্রকৃত মুল্যায়ন বোধহয় আজও হয়নি

    ১৯৪২ সালে আর একটি সুললিত রোমান্টিক কন্ঠ পেল , যার নাম জগন্ময় মিত্র । তা`্র সেই বিখ্যাত নসটালজিক গান 'চিঠি' এই বছর পুজোতে মাত করলো বাঙ্গালিকে ।
    শচীন দেব বর্মন কন্ঠে ছিল লোক গানের ভঙ্গির সঙ্গে এক অদ্ভুত সোফিসটিকেশন মিশ্রন । ১৯৪৪ সে তিনি বোম্বাই পাড়ি দিলেন হিন্দি ফিল্মে সুরকার হওয়ার জন্য । কিন্তু মাঝে মাঝেই পুজোর গান করে যাচ্ছেন । কখনো
    হিমাংশু দত্তের সুরে কখনো নিজের সুরে । ১৯৫৬ সালে পুজোতে গাওয়া ' মন দিল না বঁধু ' গাটি তো রসিক বাঙ্গালির কাছে আজও সমান ভাবে জনপ্রিয় ।
    চল্লিশের দশক ছাড়িয়ে পঞ্চাশের দশক পড়তেই একে একে পুজোর গান করতে আসতে লাগলেন একেক জন সব দিক পাল গায়ক গায়িকারা ।
    ১৯৫৩ সালে পুজোয় প্রথম বাংলা আধুনিক বেসিক রেকর্ড করলেন মান্না দে । নিজের সুরে তিনি দুটি গান গাইলেন - ' কত দুরে আর' এবং 'হায় হায় গো'।
    ১৯৫৩ তে গীতা দত্ত গাইলেন কানু ঘোষের সুরে - 'আয় আয় রে ছুটে'।

    এঁরা দুজনেই তখন বোম্বাইতে হিন্দি সিনেমায় গান গেয়ে প্রচুর নাম করেছেন । কিন্তু পুজোতে বাংলা গান গাওয়ার টান এড়াতে পারতেন না।

    ১৯৫২ সালের পুজোয় শ্যামল মিত্র সুধীর লাল চক্রবর্তীর সুরে গাইলেন -' স্মৃতি তুমি বেদনা'।

    ১৯৫৩ তে পুজোয় পান্নালাল ভট্টাচার্য সেই বিখ্যাত শ্যামা সঙ্গীত বেরোলো যা নিতান্ত নাস্তিক প্রানেও ভক্তি রস সঞ্চার করতে পারে - ' মায়ের পায়ে জবা হয়ে '
    ১৯৫০ সে পুজোতে সন্ধা মুখার্জী গাইলেন ' ওগো মোর গীতিময়' রবীন চটোপাধয়ের সুরে আর ১৯৫৩ র পুজোয় গাইলেন সলিল চৌধুরির সুরে ' উজ্বল এক ঝাঁক পায়রা' ।
    ১৯৫৭ তে মানবেন্দ্র মুখার্জী গাইলেন সেই ভাসিয়ে দেওয়া রোমান্টিক গান 'আমি এত যে তোমায় ভালোবেসেছি'

    ১৯৫৩র পুজোয় উৎপলা সেন গাইলেন সলিল চৌধুরির সুরে একটি অনবদ্য সলিল-ঘরানার গান- 'প্রান্তরের গান আমার , মেঠো সুরের গান আমার '
    ১৯৫৮ তে লতা মঙ্গেসকর গাইলেন হেমন্তের সুরে ' প্রেম একবারই এসেছিল জীবনে' পরের বছর সলিল চৌধুরির সুরে গাইলেন ' না যেওনা ' তার পরের বছর গাইলেন ' ওগো আর কিছুই তো নাই '
    আশা ভোঁসলে ১৯৫৯ র পুজোয় রেকর্ড করলেন মানা দের সুরে - আমায় তুমি যে ভালো বেসেছো / জীবনে যে তাই দোলা লাগলো’

    এ পর্যন্ত পড়ে কেও কেও হয়তো স্মৃতি কাতর হয়ে ভাবছেন কি একটা সুরেলা দশক গেছে এই পঞ্চাশের দশক । যেন এ বলে আমাকে দেখ ও বলে আমাকে ।

    ষাটের দশকেও পুজোতে এই সব গায় গায়িকারা তো মাতিয়ে রাখলেনই প্রত্যেক বছর পুজোর গানের সম্ভার । সেই সঙ্গে বাঙ্গালি পেল আরো অসাধারন কিছু শিল্পীদের - ইলা বসু , মাধুরী চট্টোপাধ্যায় , আল্পনা বন্দোপাধ্যায় , সবিতা চৌধুরি , গায়ত্রী বসু ,নির্মলা মিশ্র ,আরতি মুখোপাধ্যায় , সুবীর সেন , ভুপেন হজারিকা , পিন্টু ভট্টাচার্য , নির্মলেন্দু চৌধুরি , দ্বিজেন মুখোপাধ্যায় ,অখিল বন্ধু ঘোষ , মৃনাল চক্রবর্তী এবং আরও অনেকে ।
    সত্তরের দশকে প্রযুক্তির কল্যানে এক ধাপ এগিয়ে গেল শব্দ রেকর্ডিয়ের জগত । সেই গালার চাকতি কে সরিয়ে চলে এল অডিও ক্যাসেটের যুগ ।গান রেকর্ডিং করা অনেক সহজ হয়ে গেল । আর একটি ক্যাসেটে দশ বারোটি গান অনায়াসে ধরিএ যাওয়ার ব্যাবস্থা হয়ে গেল ।
    আর ডিস্ক নয় এবার বেরোতে লাগলো এলবাম ।
    যা চেয়েছ তার কিছু বেশি দিব - মাত্র দুটি নয় একটি ১০ ইনচি চাকতির চেয়ে অনেক ছোটো মাপের একটি ক্যাসেটে দশ বারোটি গান ।

    খরচা সাপেক্ষ হওয়ার ফলে রেকর্ড কোম্পানি গুলি খুব সাবধানে পুজোর গানের শিল্পী ও গান নি`্র্বাচন করতেন । যেমন পিন্টু ভট্টাচার্য , মৃনাল মুখোপাধায় , আরতি মুখোপাধ্যায়ের মতন শিল্পীদের পুজোর গান গাইবার সুযোগ পাওয়ার জন্য অনেকদিন অপেক্ষা করতে হয়েছে। পুজোর গান গাওয়া একজন শিল্পীর পক্ষে একইসঙ্গে মর্যাদা ও স্বীকৃতির বিষয় ছিল ।
    ক্যাসেট যুগ আসার পর সে সব নিরন্ত্রন ঘুচে গেল । এন্তার বেনোজল ধুকে পড়লো।
    সব মিলে আমাদের পুজোর গানের জন্যে সারা বছর অধীর অপেক্ষার দিন আর রইল না । আর কোনো আবেগ রইল না পুজোর গান কে ঘিরে।

    'নায়ক' সিনেমায় ট্রেনে উত্তমকুমারের একই ক্যুপের সহযাত্রী সেই দেশীয় সব কিছুতে অরুচী-সম্পন্ন উচ্চ পদস্থ ভদ্রলোকটি মন্তব্য করেছিলেন ‘আমরা এখনো কোয়ালিটি নিয়ে মাথা ঘামাতে শিখিনি , আমাদের মোটো ঈ হল produce more and produce rubbish ।’ বলতে খারাপ লাগলেও বাংলা গানের ক্ষেত্রে ঠিক তাই ঘটলো ।
    আজও হয়তো পুজোর কিছু গান সি ডি হয়ে বেরোয় । কিন্তু কেও ওগুলোর জন্যে হা পিত্যেশ করে বসে থাকেনা । শয়ে শয়ে গান শ্রাবনের ধারার মত ঝরে পড়ে দোকানে দোকানে । বিক্রিও হয় , অতি আধুনিক হাই ফাই মিউজিক সিস্টেম কোথাও কোথাও বাজে কিছুদিন । তার পর হারিয়ে যায় বিস্মৃতির অতল গহ্বরে।

    আমার কাছে পুজোর গান হারিয়ে গেছে সেই দশ ইনচি বৃত্তাকার মিশ কালো গালার চাকতি গুলির সঙ্গে । যার প্রত্যেকটির সঙ্গে অনেক প্রকৃত গুনীজনের অপরিসীম সাধনার উজ্বল ইতিহাস লেখা আছে। লেখা আছে কানের ভিতর দিয়া মরমে পশিবার মন্ত্র জানা মেলডির ইতিবৃত্ত।
    সেই ডিস্কের গান গুলির উদ্দেশ্যে আমার একটি পুরানো পদ্যের কটি লাইনের লিখে শেষ করি-

    গান কখনো হয়না বুড়ো
    আমরা বুড়িয়ে যাই
    গান থেকে যায় আকাশ পারে
    আমরা হারিয়ে যাই ।
  • | 132.248.183.1 | ০১ অক্টোবর ২০১২ ১২:২০575791
  • আহা বড় ভালো বিষয় । লিখুন লিখুন।
  • lcm | 34.4.162.218 | ০১ অক্টোবর ২০১২ ১২:৪৪575794
  • বাহ! সোমেন সুন্দর লিখেছেন।
    শুধু, লেখাটা ৬০-এর দশকে এসে থমকে গেল, ডিস্ক গিয়ে ক্যাসেট এলো, সোমেন-এর লেখাও ফুরোলো।
  • | 132.248.183.1 | ০১ অক্টোবর ২০১২ ১২:৫৪575795
  • বাহ দারুন সৌমেন দা।

    এল সি এম দা, তুমি লেখো নাঃ

    ১। চন্দন পালঙ্ক শুয়ে একা একা কী হবে, জীবনে তোমায় যদি পেলাম না ( সন্ধ্যা - ৮১ কি?)

    ২। সে আমার ছোট বোন( এটাও বোধ্হয় ৮১?)

    তোমাদের সময় কথা লিখে ফ্যালো না ল্যাদ কাটিয়ে..
  • shanku | 24.97.198.108 | ০২ অক্টোবর ২০১২ ২১:৪৩575796
  • ঐ তিন-চারটি দশকের গান তো আর হবে না। কিন্তু ঐ সময়ের স্মৃতিমধুর ধারাভাষ্য যাঁরা দিতে পারেন তাঁদের কলমের দিকে চেয়ে রইলাম।
  • | 127.194.97.69 | ০২ অক্টোবর ২০১২ ২২:১০575797
  • শঙ্কু দা, আপনি যত টোপ পারেন লিখুন না। আমরা সেই সময়ের কথা একটু জানি।
  • | 127.194.97.69 | ০২ অক্টোবর ২০১২ ২২:১১575798
  • /টা
  • কল্লোল | 111.63.201.94 | ০৩ অক্টোবর ২০১২ ২১:৩৯575799
  • একদমই ঠিক। রেকর্ড যুগ শেষ হয়ে যাবার পর পূজোর গানও আর নেই।
    সে ছিলো সেই ষাঠের দশকের মাঝামাঝি । অমি তখন ইস্কুলে ক্লাশ সিক্স। গানের পোকায় কেটেছে তখনই। ছোট মাসীর দেওর স্বরাজ রায়, আমরা ডাকতাম পিন্টুদা। পরে লোকে বলতো বাংলার মান্না। পিন্টুদার ঘর তখন ছুটির দিনে আমার গয়া-কাশী-মথুরা। এর মধ্যে শরত এলো পেঁজা মেঘ, ফিরোজানীল আকাশ আর পূজোর গান নিয়ে। পিন্টুদা এক রোব্বার বল্লে - চল।
    গেলুম রাসবিহারী মোড়ে গানের বিকিকিনির ঘর মেলোডি। কেনা হলো পূজোর গানের বই। পাতায় পাতায় গান, শিল্পীদের সাদাকালো ছবি, গীতিকার-সুরকারদের নাম, রেকর্ড নম্বর সমেত পূজোর গানের সম্পূর্ণ তথ্যপঞ্জী।
    নাহ, রেকর্ড কিনিনি আমরা। বসায় তো গ্রামাফোন নাই।
    তারপর শুরু হলো একলব্য সাধনা (আজকাল বাংলায় যারে ডিসট্যান্ট লার্নিং কয়)। মেলোডির বাইরের ফুটপাথে আমাদের সাথে দাঁড়িয়ে আরও জনা পাঁচ ছয়। সকলেরই হাতে পূজোর গানের বই।
    খদ্দের আসেন, গান শোনেন রেকর্ডের এপিঠ ওপিঠ বাজিয়ে, কাটা যেন না থাকে। ভেসে আসেন মান্না-হেমন্ত-শ্যামল-দ্বিজেন-মানবেন্দ্র-সন্ধ্যা-মির্মলা-আরতি-মাধুরী-প্রতিমা-লতা-আশা.................
    আরেঃ এটা কে? কার গলা? শেষ দেখা সেই রাতে / আমি একা এই রাতে। বাহ, গলাটি বেশ। বই বলছে পিন্টু ভট্টাচার্য্য। বেশ দেখতে কিন্তু। আগেরবার ছিলো মলয় - আহা, শ্রীমতি যে কাঁদে / কাঁদে তারই আশা / সে কি এসে ফিরে গেলো / কাঁদে ভালোবাসা। সে তো আর.............।
    গানের বইয়ের পাতায় চোখ আর ভিতর থেকে ভেসে আসা গানে কান পেতে মস্তিষ্কের কোষে জড়িয়ে যাচ্ছেন সেই পূজোর মান্না-হেমন্ত-শ্যামল-দ্বিজেন-মানবেন্দ্র। নাহ, সন্ধ্যা-মির্মলা-আরতি-মাধুরী-প্রতিমা-লতা-আশা নয় - মেলোডির সামনের ফুটপাথে অর্ধেক আকাশ ঢাকা পড়ে থাকে নিষেধের পাহারাতে। তাদের ভরসা পাড়ার পূজোর মাইক।
    এভাবেই পাড়ার পূজোর জলসা ভরে যেতো গানের গন্ধে। ঐ ফুটপাথের একলব্যেরা, ঐ ঘরের ভিতরের খনারা - পাড়ার মান্না-শ্যামল-হেমন্ত-সন্ধ্যা-লতা-আশা-আরতিরা বাতাসের মতো ছড়িয়ে দিতেন পুজোর গানের সুরভি আমাদের হৃদমাঝারে।
    ক্যাসেট আসার পর সুলভ হলো গান শোনার যন্তর। তখন আর অপেক্ষায় থাকা নয়। যখন ইচ্ছে গান শোনা শুরু হলো, যখন ইচ্ছে। পুজোর জন্য আসন পেতে বসে থাকা আর রইলো না, রইলো না, সেই যে আমার.................।
  • কল্লোল | 111.63.201.94 | ০৩ অক্টোবর ২০১২ ২১:৪৯575800
  • উপরের পোস্টটি পড়তে গিয়ে মনে হলো, কাটা রেকর্ড কি বস্তু, সেটা তিরিশের নীচে অনেকেরই না জানার কথা।

    এটাতে আছে কাটা রেকর্ড হলে কি হয়।
  • সৌম্য | 111.210.209.149 | ১৫ অক্টোবর ২০১২ ১৬:০১575792
  • পুজোর গান বলতে টার মধ্যে যেমন এলবাম এর গান আছে তেমন-ই আমার কাছে পুজোর সময় যে সব advertisement বেরোত সেগুলোও একই রকম টানতো .. এই প্রসঙ্গে সব থেকে আগে যেটা মনে পরে সেটা হচ্ছে শালিমার আর কোকা কোলা -র বিজ্ঞাপন ... শালিমার এর লিঙ্ক নিচে দিলাম.. কোকা কোলা-র advertisement টার ( সপ্তমীতে প্রথম দেখা, অষ্টমী তে হাসি, নবমী তে বলতে চাওয়া তোমায় ভালোবাসি..) লিঙ্ক কেউ দিতে পারলে বিশেষ বাধিত হবো...

    শালিমার এর লিঙ্ক :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে মতামত দিন