এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • পর্বে পর্বে কবিতা - তৃতীয় পর্ব

    pi
    অন্যান্য | ১৭ ডিসেম্বর ২০১১ | ৫৫৪১০ বার পঠিত | রেটিং ৪.৭ (৩ জন)
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • ফরিদা | ২৬ অক্টোবর ২০১৮ ২২:৫২507963
  • চোয়াল শক্ত, হাত মুষ্টিবদ্ধ, মাথা নিচু করে
    গণগণে চাহনি ও কাঠফাটা হাসি মাখতে মাখতে
    সে ধীরলয়ে পৌঁছয়
    বড় শহরের স্টেশন চৌকাঠে, লেটে বেশ অবেলায়।

    কাছেই, ঝকঝকে সুগন্ধি এক্সপ্রেস দেখে
    সিগনাল আনত সবুজ
    ল্যাজ নাড়ে পতাকারা,
    এক একটি কামরায় গুটিকয় মানুষ
    অজস্র সামগ্রী নিয়ে দরজায় এসে কুলী খোঁজে।
    ট্যাক্সির দালালটি হাসিমুখে কুশল শুধোয়-

    পাশের প্ল্যাটফর্মে অন্যজন খালিপেটে তেতেপুড়ে এসে
    জনতার সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিশ্চিন্ত করল বোধ হয়।
  • ফরিদা | ০৪ নভেম্বর ২০১৮ ০৬:৪২507964
  • ২০
    এইভাবে মরীচিকা পথ,
    এইভাবে শাণিত অসুখ
    এইরূপ অনর্থ শপথ
    অজান্তে ভয় পাওয়া মুখ

    কোনখানে দেখেছ বলো তো
    কার কাছে শব্দ লাইনে
    সিগনালে সবুজ জ্বলত
    মাসান্তে বোনাস মাইনে —

    সে ও দেখি মুখ ফিরিয়েছে
    চিঠি লেখে, লেখে না ঠিকানা
    একাধারে ভালোও বেসেছে
    জানে, পথ কোথাও যায় না।

    ২১
    এইভাবে চোখ তাকিয়েছে,
    বাকিদের অগ্রাহ্য করে, হাওয়ায় সামনে চলে আসা
    চুলের গুচ্ছ সরিয়েছে আঙুল পলকে
    যেন এক্ষুণি না দেখলে ব্যর্থ হবে তীর্থভ্রমণও
    আলো কমে এসেছে, দ্রষ্টব্য খানিকটা দূরেই, উদাসীন
    তা সত্ত্বেও চোখ, হ্যাংলার মতো লতা পাতা আত্মীয়তা ভুলে
    সে সন্ধ্যার নির্জনতা বুকে চেপে তাকিয়েছে।

    এর আগে কি কখনও দেখেনি মেঘ?
    কখনও আসে নি যেন তারা সবান্ধবে সরাইখানায়
    পান ভোজন ঠাট্টা রসিকতায় সম্পৃক্ত হয়ে মেতে উঠে
    আচমকা দেখে নি অনেকটা দেরি হয়ে গেল আজও?
    অনেকটা পথ ফিরতে হবে, অনেকটা জনহীন পথ পেরোলে
    অনেক নিঃশব্দ পাড়া, দৃশ্যহীন বাড়িঘর, পুকুর বাগান,
    তবে যদি আরতির আগে পৌঁছন যায় শব্দের ঠাকুরদালান।

    ২২
    সবকিছুই সুচারু সাজান নয় ঠিক,
    পাখার হাওয়ায় ওড়ে পত্রিকার প্রথম দু'পাতা
    বাসী খবরের কাগজের শুকনো পাপড়ি
    মনে হয় হেঁটে যাচ্ছি ক্রমশ পৃথিবীর গভীর অভ্যন্তরে
    যতদূরে যাই, তত টান পড়ে।

    একটু গুটিয়ে নিলে ছোট চাদরেই সংস্থান হ'ত জানি
    কানের ওপর থেকে পায়ের পাতা অবধি ওম পাওয়া যেত
    ঘুমের মধ্যেও কোথাও না কোথাও
    আসা যাওয়া কাজকর্ম লেগেই থাকে বলে
    এদিকে চাদরের আশ্রয় ছেড়ে
    পায়ের পাতা, হাত বাইরে বেরিয়ে খামোখা ঠান্ডা হয়
    মনে হয় এদিকে ডুবে যাচ্ছি জলে।

    ২৩
    সামলান যায় না সবকিছু কৌটোর মধ্যে ঢালতে গেলে
    পোস্তদানা, সর্ষেদানা, চিনি ডাল লবণের কণা থেকে
    কয়েকটি হারিয়েই যায় বারংবার। দলছুট কয়েকজন
    সাধারণের ছদ্মবেশে আমাদের কাছাকাছিই থাকে।
    এছাড়াও শখ করে কিনে যত্নে তুলে রাখা মহার্ঘ দুস্প্রাপ্য
    মশলাসমূহ, কোনও একদিন হয়ত সামান্য একচিমটে
    ব্যবহৃত হয় কি হয় না, থাকে অন্ধকার রান্নাঘরের তাকে
    প্রিয় ভুলে যাওয়া ঝিলমিলে নাম, কী যেন ভাষায় ডাকে।

    জড়ো হয় সাধ আহ্লাদের কোটোবাটারা৷ তেলচিটে ঢাকনা
    হাতে পড়লেই বোঝা যায় এটি প্রার্থিত জিরের কৌটো নয়
    দৈনন্দিন তাড়াহুড়োয় এরা কীভাবে যেন সামনে চলে আসে।
    রান্নাঘরের তাকে স্থান অকুলান, দেখাও যায় না পরিষ্কার
    উপরন্তু নিচু হ'লে চাপ পড়ে বয়স্ক হাঁটুতে, কাজের সময়ে
    অকাজের অকর্মার ঢেঁকি সাধ আহ্লাদগুলি মহা অন্তরায়।
  • Tim | 89900.228.90056.67 | ০৪ নভেম্বর ২০১৮ ০৯:৩৪507965
  • একটু খবর নেওয়া বাকি থেকে গেল-
    বাইরে তখন রোদ, হাওয়া দিচ্ছে, ছাতে শুকোচ্ছে শাড়ি
    আকাশে একটু পুজোর ছিটে লেগে রয়েছে,
    পাশের বাড়ি থেকে কেউ ডাকলো কি?
    তোরা খেয়েছিস? তোরা না তোমরা বলি মনে পড়েনা
    বাবা খুব রাগি ছিলো তো, বেয়াদপি দেখলেই রেগে যেত
    ইশকুল যেতাম ফিরে এসে আর বেরোনো নেই। তখন
    পাশের ছাদে ঘুঘু ডেকে উঠলো, ঘুঘু না অন্য পাখি কেজানে
    পাখি হলে বেশ হতো না? অনেকদিন পাখি দেখিনা।
    অনেকদিন পাখিতে জ্বালায় নি হাওয়ায় বিরক্ত করে নি। এ তোমার বউ হয়? বাহ দিব্যি, আমার তো অনেক সময়। ভালো হলো, এলে।
    হ্যাঁ টিভি আছে, এরা সব দেখে। আমার লাগেনা, দেখিনি তো সেভাবে। সিনেমা দেখতে যেতাম সে অনেকদিন আগে।

    এখুনি সূর্য্য ডুবে যাবে। জানলার বাইরে সোজা গলিটা, ঐখানে
    পরপর গেরস্তবাড়ি। একে একে আলো ঝলকাবে।
    অ্যান্টিব্যাক্ট্রিনের বাড়ি থেকে ভেসে আসবে সুর, আপিসফেরত মানুষ
    আলোকিত ফোন। সন্ধ্যার এলোমেলো হাওয়া- বৃষ্টি হতেও পারে।
    মনে আছে কোন কোন দিন, ভিজেছি নাগাড়ে
    আর বাবা বকেছিলো, খুব রাগি ছিলো তো - বেয়াদপি দেখলেই
    কষে বকে দিত। একবার বেরোতাম ফিরে এসে আর
    বেরোবার জো নেই। সে এক দিন ছিলো।
    বাইরে ভোর হচ্ছে, হাওয়া দিচ্ছে, শাড়িটা শিশিরেই পড়ে রইলো।
    আজ ছুটি। আরেকটু পর রক্ত লেগে থাকবে আকাশে।
  • ফরিদা | ০৬ নভেম্বর ২০১৮ ০৫:১৮507966
  • ভূতচতুর্দশী রাতে ফের জেগে ওঠে
    বিদেহী আত্মারা, আনন্দে আত্মহারা হয়ে
    পথে পথে ছোটে, ঘাসে গড়াগড়ি খায়
    দুরন্ত হাইওয়ে জুড়ে ছুটে চলা গাড়ি ভেদ করে
    স্পষ্ট খিলখিল শব্দে হেসে ওঠে।

    এইবেলা জানা গেল, অনেকে নিজস্ব
    গন্ধ ফিরিয়ে আনেন, ধূপকাঠি বেচে যান
    ধূ ধূ গলিপথে মধ্যরাতে,
    ভূতুরে কাণ্ডকারখানা যত —
    গরম জলের স্পর্শে, হাত পা ছড়িয়ে দেন শেষবার
    সামান্য শিরা উপশিরা লেখা পরিচয় পত্র দেখা যায়
    চায়ের পাতার মতো।
  • nabagata | 4512.139.232323.72 | ০২ জানুয়ারি ২০১৯ ১৮:৩৯507967
  • বেহাগ-সকাল

    বলা নেই, কওয়া নেই, হঠাৎ এমন
    বেহাগ সকাল হয়ে বেজে উঠলে
    আর কি শুয়ে থাকা যায় !
    ছুটির ঘুমের দফারফা

    মানছি, দোষটা আমারি
    মাঝরাতে ঠেলে তুলে গানটা তোর
    কানে না ঢুকিয়ে দিলেও হতো

    কি যে ঝাঁপতালের চক্করে পড়ে গেলাম
    শুনশান শীতের আকাশ
    অখণ্ড অনুনাদী স্তম্ভের মতো

    কম্বু-মধুর স্বরে বেজে উঠলো,
    বাজতেই লাগলো

    গানের একেকটা ঘাটে
    আমাদের গলা আর আঙ্গুল আছড়ে পড়ছিলো আর
    আমরা কখনো মেঘ কখনো বাতাস
    কখনো ভরা পূর্ণিমার জোয়ার হতে হতে

    রাতের অপার শরীরে ভেসে যাচ্ছিলাম

    নিশির ডাকের মতো এইসব মায়া
    রোদ ফুটলে সচরাচর উবে যায়
    আজ দেখছি তোর পেছন ছাড়ে নি
    আমাকেও টেনে তুললি

    ওদিকে একটু বাদেই হাজার কাজের ডাক
    দমাদ্দম ডোরবেল বাজাতে থাকবে
    বেহাগ থেকে টেনে হিঁচড়ে তোকে
    বাড়ির কোণে কোণে গুঁজে দেবে
    রান্নাঘর থেকে ওয়াশিং মেশিনে

    .... কি যে করি,
    আজ সব অন্যরকম
    যদি আয়নায় হাত ছোঁয়ালেই
    একটা আশ্চর্য গোপন দরজা খুলে যায়
    তোর ছায়াকে দশহাতে দশটা কাজ ধরিয়ে
    আমরা দিব্যি একের পর এক
    মাত্রা পার হয়ে
    মিশে যাই অফুরন্ত বেহাগ-সকালে
  • কবিতা | 232312.172.0123.90 | ০৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:১২507968
  • এতটা পীড়নে মদে ধ্বংসে সে না আসে তো থাক
    এতটা নিঃশ্বাস রোধে রোদে বৃষ্টিতে অতীতের ঝোঁকে
    এতটা জাদুর ঘোরে এত এত শোকে বিষাদী সে না আসে সে বিশ্বাসাঘাতিনী সে থাক
    এত রাতে যাদিও সে ঘড়ি ধরে সবাকার মত বলে রাত
    এতই স্পর্শে তার আলাভোলা এতই সে দূরবর্তিনী
    এত সে খেয়ালি রাগ সন্ধ্যায় লাগেনা কি সুর

    দূর থেকে কি আসে হুইসিল
    তোমার শহরে থাক কবিতার আতুপুতু ছোঁয়া

    অধরা সে যেরকম মানুষের গান, কল্পনা
    এতটা পীড়নে মদে ধ্বংসে সে না আসে তো থাক

    সে থাক ছন্দ ঘিরে সে থাক কবিতা কল্পলতা
    দূরে থাক, এতটা পীড়নে মদে অতীতে ও ধ্বংসের ঝোঁকে।
  • শ্ব | 340112.124.566712.112 | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:১৯507969
  • #

    চশমাটা পরলেই মুখটা কেমন বেঁকে যেতে থাকে ,একবার
    ভুল করে বসে পড়েছিলুম সেই থেকে , তার পরেও কয়েকবার
    বসে পড়েছি ,তবে সেগুলোর জন্যেতো প্রথমবারের বসে পড়া
    দায়ী ,আর দায়ী ইয়েদু নামের একটা বেগুনি ল্যাব্রাডোর যাকে
    ওর মালিক এতো স্বাধীনতা দিয়েছে এতো এতো এতো যে রোজ
    আমার বিস্কুট চেয়ে খায় ,আর তারপরেও পেট ভরেনা বলে নেড়িদের
    সঙ্গে মারপিট করে বাঁ পায়ে একটা দগদগে ঘা, আধখানা কান খোয়া
    গ্যাছে ,যদিও এই নেড়িদের এমনি অভ্যেস যে খারাপ তা নয় , ওদের
    যে লোকাল কাউন্সিলর নাম লাউলাউ ,আমি রোজ রাতে চৌকোতে
    ফেরার সময় অনেক অভিযোগ জানাতে জানাতে পাশে পাশে আসে ,
    এ পাড়ার , সে পাড়ার , কেন্দ্রের , রাজ্যের , মেজাজ ভালো থাকলে
    গলার তলায় মুশমুশ করে দি তার ,আর ততক্ষনে আমার চৌকো এসে
    পরে , নকল রেনেসাঁ পেন্টিংয়ের ভাঙা তেলা আলোয় ইয়েদু -এলসি
    সবাই চেঁচায় ,মাতে আবার ত্রিকোণ ,গোল নানা শেপের খেলায় , আর
    আমি একটা চৌকোর মধ্যে ঢুকে মেঝেতেই বসে পড়ি কখনো সখনো ,
    সারাদিনের চোখ খুলে রেখে চশমাটা পরে নি আর মুখটা কেমন বেঁকে যেতে থাকে ।।
  • dd | 90045.207.5656.233 | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৮:২২507970
  • বাঃ বাঃ।

    (তবে আমি তো জানতেম উচ্চরণটা রেনেসাঁস।)
  • শ্ব | 340112.124.566712.227 | ১৩ মে ২০১৯ ০৫:০৬507971
  • বৈড়াল # ২৩
    ~~~~~~~~~

    দুটো সবুজ বেড়াল
    দুপুরের রোড ঘেঁষা রাস্তায় ,

    পেরোতে গিয়ে ,রোজ
    বিকেলের দিকে ওঠে ঝড় , এমনিতে
    সব ঠিক , বৃষ্টিও থেমে যায় ; , তখন

    সুযোগ বুঝে দোকানির ,
    সবুজ রং এর দাম বেশি চাওয়া -

    এই ঘিরে বৈধতাম্যাওম্যাও !
    এইসব
    সারাদিন কানে আসে ,শুনি ,
    যেতে আস্তে শুনে দেখি , আর দেখি -

    সভাগেহে - দেয়ালে - কোহ্বলে
    আঁকা :
    শ্যাম রায় ; অবলোকী , রেখার মার্জার ।।
  • শ্ব | 340112.124.566712.193 | ১৩ জুন ২০১৯ ০৪:৫৯507973
  • #আমার কী নেশা হয়েছে
    ~~~~~~~~~~~~~~~~~~

    আমি একটা স্থির ছবির দিকে তাকিয়ে
    ভাবছি ; কী ব্যাপার অনেক্ষন হয়ে গ্যালো ,
    এরা নড়ছেনা ক্যানো !আমার পাশের দেয়ালে
    একটা প্লাস্টিকের হাওয়া গত কদিন ধরে ,
    পায়রার ডানার মধ্যে আটকে পড়ে ঝটপটাচ্ছে ,
    তাকে ডেকে বললুম : অনেকদিন হলো সেই
    ডানওয়ালা ভেড়াদের গপ্পো বলা হয়নি , তো
    হলোকী - সেবার সে ভেড়াদের দেশে , একটা
    তামার তার ছাদ থেকে নেবে এসেছে ওটা
    কী রে ?
    দাঁড়া টেনে দেখি ! প্রচন্ড ছাই আর
    ইলেক্ট্রিপোড়ার মাঝে -ছাদ ছিঁড়ে মৃত দুটি
    হাতথেকে বাদামি আলোর মতো হেঁটে যায়
    বনের নিদাঘ । এরকম ভেবে নিলে , দড়ি
    বেয়ে নেবে আসে ঝুঝুলন্ত কার্বন বডি ,
    ল্যাম্পশেড জুড়ে-কালোকালো কাঁথাপাড় -
    ফিলিগ্রি , আর তার -নীচেই সবুজ ;
    তার পায়রার ডানা , শুধু, নড়ছেনা কেন !।
  • শ্ব | 236712.158.565612.163 | ১০ জুলাই ২০১৯ ০৩:৫০507974
  • পরস্ব
    ~~~~

    কমলালেবুর মতো সারাগায়
    বিকেলের রোদে,
    আরেকটু ঘন হয়ে আসে তার
    চূড়ামণি ঘোর ,
    ওপাড়ার বৌঝিরা :
    বিষ কই ?
    এতো শুধু আলো ! কাক-দ্বীপ
    ঘিরে তার জমা হয় আঁধারের কণা ;

    হিসেবের খাতা বেয়ে , ওল্লারা
    ফুজিয়ামাগামী ,
    হিরোহিতো বাতাসেতে পলকের
    কাঁচগাড়ি ওড়ে,
    এবার ওদের দেশে
    খরা নাকি !
    ক্ষেতে হাওয়া সাপ, শুকনো মোরগ
    ফুলে, হাঁটে কীট , স-রোদ বিছানো ;

    এবার ওদের দেশে মাঝিয়াল
    গীতি ছিল যত ,
    ভাঁটির কাদায় খেলো, কর্কটে
    খেলো,মহাশোলে ,
    শুলোর দেশের মেয়ে
    শরশয্যা
    নেবে দেহ পেতে, ওলো' কে
    আছিস রবে হুলু দিলো অনসূয়াকূল;

    ভাঁটির পারের থেকে,কিছুদূরে
    জুয়াড়ির দান ,
    করবী দিয়েছে মুখে, সে বিরাট
    শিশু আনমনে ,
    শুলোর দেশের মেয়ে
    শরশয্যা
    নিলো দেহ পেতে, যমকে
    উর্দ্ধগামী , নীশিথের জলভারে থির ;

    কমলালেবুর মতো সারাগায় চূড়ামণি ঘোর
    তিতাফুল তিতাফুল, ছুঁলে তাকে আর ছোঁয়া মানা ।।
  • Atoz | 237812.69.4545.143 | ১০ জুলাই ২০১৯ ০৪:০০507975
  • নিশীথের ?
  • মঞ্জিস রায় | 237812.68.454512.192 | ০৪ আগস্ট ২০১৯ ১১:০৯507976
  • খোঁজ
    মঞ্জিস রায়
    দূরবর্তী সরলতামাখা হেডলাইট
    ছুঁয়ে যায় অন্ধকারচেরা রাতপাহারা
    নির্জন সার্কিটহাউস ঢুলে পড়ে
    ঘুমহীন কদমগাছের কোলে
    মোমজ্বলা শুখা গ্রামে বিনিদ্র জেগে থাকে
    ঝর্ণারাত্তিরের চোখ
    পাহাড়ের গর্ভে বেজে ওঠে
    সে আসছে

    হয়ত আমার ছিঁড়ে ফেলা কবিতারা
    কিংবা কোনও হিজিবিজি ডায়েরির পাতা

    কখনো বা গুপ্তঘাতকের মত
    খাদের ধারে চেয়ে থাকি অপলক
    দেখতে দেখতে একা শুধু একা
  • শ্ব | 236712.158.676712.56 | ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৯:১৮507977
  • বৈড়াল #২৭
    --------------

    একটা পেট ঘষে ঘষে হাঁটা কবন্ধ
    ডাইনোর মতো
    আকাশ ; আর কোনাকুনি বহে আসছে
    জং ধরা স্ক্রু , দৃশ্যগুলি জন্মমাত্র উপগত
    পরস্পরে ; কিন্তু তোমারি মতো

    উহারাও মার্জারের সঙ্গ ভালোবাসে ,
    বেড়াল পুরোনো হলে , যেমতি ঘরের কোণে গৃধিনীর ছায়া ।।
  • মঞ্জিস রায় | 237812.69.563412.81 | ৩১ অক্টোবর ২০১৯ ২২:২০507978
  • এখানে রাত
    মঞ্জিস রায়
    সরলরেখার মত একটানা নিঃশ্বাস ছেড়ে
    রোদ্দুরের শেষ টুকরো ঠোঁটে উড়ে গেল
    তোমার দলছুট চড়াই l
    অ্যাম্বুলেন্সের উদ্বিগ্ন সাইরেন,
    জানলা বন্ধ হয়ে আসা
    আরও একবার তোমাকে দাঁড় করায়
    পরিকল্পিত কুয়াশার মাঝে,
    সমস্ত না রাখা কথারা পাক-খায়
    তবুও শেষ আশ্বাস নিয়ে এসে
    রাতের চাদর জড়িয়ে দেয় আকাশপ্রদীপ
  • রঞ্জন | 124512.101.89900.39 | ০৫ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:৫৯507979
  • কাশ্মীর ২০১৯
    ==========
    ঈশ্বরের উদ্যানে কাল সারারাত টুপটাপ
    ঝরেছে শিশির।
    হিমেল হাওয়ারা সব দলবেঁধে হানা দিচ্ছে আখরোট আপেলের গাছে
    --- কোথায় লুকিয়ে আছে কাঠবেড়ালির দল ?
    চিনার দেবদার ওক আর পাইনের বন
    সার সার মাথানীচু ,
    চুপচাপ চোখ রাখে পায়ের আঙুলে।

    ঈশ্বরের উদ্যানে কাল সারারাত টুপটাপ
    ঝরেছে শিশির।।
  • ফরিদা | ০৭ নভেম্বর ২০১৯ ১২:২৬507980
  • হপ্তান্তে

    শরীর অথবা পোশাকের কথা শুনে
    মাংস কিনতে যাই রবিবার সকালে
    পথে নেড়ি কুকুরকে বিস্কুট দিই।
    তারও আগে ঘুম ভাঙতেই বারান্দার টবে
    মুমূর্ষু গন্ধরাজ গাছে মেপে ঢালি এক মগ শ্লাঘা
    সুবিনয় তর্পণ জানিয়ে পৃথিবীকে বলি -
    "গত রাতে হাততালি দিয়ে মশা মারার
    পাপস্খালন কোরো দিকি ভালোয় ভালোয়"।
    সে যেন বা পাড়ার মুদিখানা দোকান
    খাতা চলে সম্বৎসর - মাঝে মধ্যে গরমিলে
    চাপানউতোর ভরসন্ধ্যায় একগাদা খদ্দেরের ভিড়ে -
    "কী সব ভুলভাল লিখছ আজকাল,
    গেল বুধবারে কখন পাউরুটি নিয়েছি আমি?
    সেদিন তো চমৎকার ভোজ, জন্মদিন ছিল
    বাড়ি গমগমে, বারান্দা টবে গন্ধরাজ ফুলের মিছিলও।"
  • b | 237812.69.563412.15 | ০৭ নভেম্বর ২০১৯ ১৩:৪৮507981
  • ১৩ই আগস্ট
    --------------
    বৃষ্টি থেমেছে, অল্পক্ষণ।
    আকাশ এখন ঝকঝকে নীল, সুন্দর, কদিন পরেই,
    শ্রাবণে শরতে মিশে যাবে।
    বাইরে
    কচিকাঁচাদের দল, উচ্ছল, মনে বড় আশা
    উই শ্যাল ওভারকাম। আর মানুষের চোখে, হাতে, কাপড়ের ভাঁজে
    অযাচিত দয়া ঝরে পড়ে, আমি পোড়া কাগজের মত,
    কুঁকড়ে যাই, সামান্য মানুষ, এতখানি প্রাপ্য ছিলো না তো!

    ভাত খেতে বসি। উঠোন উপুড় করে ঢেলে দেয় রোদ।
    আকাশ, শ্রাবণ আর কচিকাঁচাদল,
    লালবাড়ি, এতগুলি মানুষের সোনা ঝরা মুখ
    ক্রমাগত নিঃশব্দ কোরাসে
    একসাথে বলে যায় কানের ভিতরে,
    "খাও, ভালো করে খাও।
    ভাত আছে, পোস্তর টক।

    ধনঞ্জয়, কালকে ঝোলাব।"
  • রঞ্জন | 124512.101.780112.215 | ০৮ নভেম্বর ২০১৯ ০০:০৫507982
  • @বি,
    মন ছুঁয়ে গেল। কিন্তু ১৩ই অগাস্ট ? এটাই কি সেই দিন ?
  • b | 237812.68.454512.252 | ০৮ নভেম্বর ২০১৯ ১০:০১507984
  • খাইসে।
    হ্যাঁ, ১৪ আগস্ট, ২০০৪।
  • ফরিদা | ১০ নভেম্বর ২০১৯ ০৮:৪২507985
  • পলিপ্যাক

    সাইকেলের হ্যাণ্ডেল থেকে ঝোলা স্বচ্ছ পলিপ্যাকে
    হাফকিলো আলু, আড়াইশো পেঁয়াজ আর
    বিনামূল্যের পাঁচ-ছ'টি কাঁচালঙ্কা স্পষ্ট দেখা গেল
    মধ্যরাতের অল্প রাস্তার আলোয়।

    অথচ সাইকেল আরোহীর অবয়ব টুকু ছাড়া
    তার পোশাক, পরিচ্ছদ, ব্যাক্তিত্ব, চিন্তাভাবনা
    কিছুই বোঝার উপায় নেই।
    সাইকেলটিরও একই দশা। বোধ হয় বিয়েতে পাওয়া
    একই সঙ্গে লজঝড়ে হয়েছে দু'জনায়
    দাম্পত্যের প্রায় রৌপ্যজয়ন্তী বর্ষে ভাঙা রাস্তায়
    অল্প আলোতে স্বচ্ছ পলিপ্যাকে
    আলু পেঁয়াজ নিয়ে বাড়ি ফেরে তারা।

    কে বিক্রি করে ওইসব এত রাতে?
    কোন রাজকার্য থাকে এতক্ষন?
    এত রাতে রান্না চাপাবে? বাড়ি কতদূরে ওদের?
    অনিঃশেষ অনর্থক আয়ু নিয়ে
    কে কোথায় অপেক্ষায় থাকে হেমন্তের রাতে
    উনুনে কড়া চাপিয়ে সামান্য রোদের?
  • ফরিদা | ১৩ নভেম্বর ২০১৯ ২১:০৮507986
  • এখনও আশ্বস্ত হই

    সব রাস্তা পেরোনো যায় না, সব পাখি ওড়ে নি সর্বোচ্চে
    চিরকালীন হতে চাওয়া স্বপ্নাদ্য মন্ত্রপূত কবিতারা
    শেষ অবধি সময়ে টাইপ করে ওঠার অভাবে মরে গেছে
    আশ্বস্ত হই, যাবজ্জীবনের অধিকাংশ পার হয়ে গেছে।

    হয়ত কয়েক মুহূর্ত পরে অন্ধ হয়ে যাব,
    ফোন ভেঙে যাবে, আঙুলেরা অসাড়
    চিন্তার মধ্যে বাজারে ছুটবে হবে নষ্ট করে তাকে
    হয়ত পরে সেই ফোন কখনোই আসবে না তার।

    এই ভালো, যতক্ষণ পারি, দেখি – আলো কীভাবে কমতে কমতে
    বাড়ির অমতে অন্ধকারে মেশে ভালোবসে। কোন পাখি শেষ অবধি থাকে
    কোন মেঘ কতক্ষণ রঙ মেখে শেষ বয়সে বদলায় ধূসরে।

    চেটে খাব শালপাতা স্বাদের পরেও যতক্ষণ গন্ধ পাওয়া যায়
    অন্ধ হয়ে যাওয়ার আগে পর্যন্ত ছুটব বাজারে
    যদি সস্তায় তাজা আনাজ পাওয়া যায় –
    যতদূর চোখ যায়, আসমুদ্র দেখে যাব আমি
    সব লেখা মঞ্চে ওঠে না, ছাপা দূরস্থান, লেখাই হয়নি
    দেখছি তাদের - সাধারণ ছদ্মবেশে এক একটা বড্ড হারামি।
  • b | 237812.69.453412.170 | ২৮ নভেম্বর ২০১৯ ১৪:৫১507987
  • #লুডউইগ

    মহাযুদ্ধ শেষ হলে ক্লান্ত মানুষেরা
    ঘরে ফেরে। তারা ভাবে, সব কিছু একই থেকে যাবে।
    অথচ ভাঁটার টানে সময়ের ইতঃস্তত বিক্ষিপ্ত জঞ্জালে
    বোঝা যায় অভিধানে অনন্তযৌবন বলে কোনো শব্দ নেই

    এই কথা ভেবে সৈনিক উর্দি খুলে দার্শনিক হয়
    অথবা মাস্টার।
    একই সাথে দুটো হতে কোনো বাধা
    আছে বলে, বোঝেনি সে।

    জোয়ারের প্রতীক্ষায় জাল বোনা।
    আপাততঃ আর কোনো কাজ
    শূন্যতায় চুপ করে থাকা ভালো, এই কথা
    বলে গেছে প্রাচ্য নাট্যকার।
  • nabagata | 124512.101.89900.231 | ২১ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৩:৫৩507988
  • সেক্যুলার

    আজকাল ওরা বিরক্ত হয়. রোজ পড়তে বসেই একঘেয়ে লাইন কটা

    একে তো সিভিক্স পছন্দের বিষয় নয়, স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে আর ছুঁয়েও

    দেখবে না এইসব হাবিজাবি। তবু সকাল-সন্ধ্যে রেওয়াজ করার মতো

    ওদের মুখস্থ ধরি. কোনোদিন বলে. বেশির ভাগ দিন রেগে অন্য বই

    মুখে তুলে নেয়. তবু আমি বাতিল রেকর্ডের মতো কানের কাছে আওড়াই।

    বেদ তো এভাবেই নাকি, মুখে মুখে। অক্ষর আর কদিনের ! মুছে ফেলা যায়,

    ছিঁড়ে বা পুড়িয়ে, আরও সহজ ডিজিটাল মেঘ থেকে উড়িয়ে দেয়া। আঙুলের

    এক টোকায়। স্মৃতিকে এখনো ততটা কব্জা করা যায় নি. মগজে কারফিউ

    জারি করলেও অলিগলি খুঁজে নেয় ঠিক. ছাইগাদা থেকে পুঁইচারার মতো

    মাথা তোলে। পোক্ত ইটের ফাটলে অশ্বথের মতো. স্মৃতিতে একবার বীজ পুতলে

    অতলে চারিয়ে যায়. হারিয়ে যায় না. অভাবিত ক্ষনে ঠিক ফিরে আসে হঠাৎ-আলোর

    বীজপত্র হয়ে. কথাগুলো তাই জপমালার মতো জোরে জোরে নাড়াচাড়া করি ,

    ইন্ডিয়া ইজ আ সেক্যুলার সোসালিষ্ট রিপাবলিক. সোসালিষ্ট, সেক্যুলার। সেক্যুলার

    .... সেক্যুলার.... ধূসর পর্দার ওপার থেকে স্বর ভেসে আসে. কাঁপা বয়সী গলায়

    `` হ্যাঁরে, সত্যি সত্যি কথাগুল ছাপা ছিল বইয়ে. বাবা বলতো মুখস্থ করতে। রোজ. "
  • ডা:শুভায়ু দে | 162.158.167.117 | ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ২০:২৫729664
  • সেদিন রাতে একলা শুয়ে বুক দেখেছি,হাত নেড়েছি
    কামুক মনে প্রেম ছিল না,অলপ্পেয়ে চিন্তাধারায়
    তুই যেন আর তুই নেই সেই,স্বপ্ন দেখি তোর মতো কেউ
    খিমচে ধরে রস ঢেলে দেয়,তোর বুকে তে ভিজছি তখন

    ভিজতে ভিজতে বৃষ্টি এল,বস্তু ছাড়াও আরেকটা প্রেম
    আরেক ভাষায় রিয়্যালিজম,দর্শনে তে চিবোই তোকে
    সাদা-কালোর মাঝেই যে এক শরীর আছে।জানিস নাকি!
    বুক-জ্যামিতি মাপতে গিয়ে আলো-আঁধার কে গুণেছে?

    আরাম নেব আরাম দেব।এর মাঝে কি আসতে পারে
    ফোকোট প্রেম সেই তো সেই মারবে লাথি, যেমনি মারে।
    হাড়-হাবাতে খিদে গুলো বেরিয়ে পড়ে রাত-নিশীথে।
    স্রোতস্বিনী নদী এসে ডিগবাজি খায় পাহাড় ধারে।

    আঁচড় গুলো ক্ষত বাড়ায়,খিদে বাড়ায়।প্রেম বাড়ে না।
    আলিঙ্গনের আঙুল জুড়ে কাম থেকে যায় আর বাসনা।।
  • b | 172.69.135.147 | ১২ মার্চ ২০২০ ২০:২১729944
  • অথ সংখ্যালঘু
    ------------------------
    একটা বাঘের সাথে সারাদিন
    কথাবার্তা হাসিঠাট্টা খাওয়াদাওয়া কাজকর্ম দাঁতরসিকতা
    নিচু হয়ে, ভালো হয়ে
    ঠাকুর ঠাকুর
    তাকে নিয়ে সারাদিন কাটে

    তারপরে সন্ধ্যে হলে উঠোনের পাশে
    কার চোখ সারারাত জ্বলে
    মনকে প্রবোধ দিই হয়ত জোনাকি
    আর জেগে বসে থাকি, মনে পড়ে ভাই বলেছিলো
    ওসব কিছুই নয়, কিন্তু ফেরে নি
  • বহতা অংশুমালী মুখোপাধ্যায় | 162.158.158.230 | ১৫ মার্চ ২০২০ ২১:৩৪730044
  • দাও কোত্থাও চলে না যাওয়ার শান্ত ভঙ্গীটি
    ----------------------------------------------

    আমার আপনার কাছে এক্ষুনি চিকিৎসা দরকার
    তীব্র জ্বালা, গুপ্ত রোগ, চৈতন্য শিকড়ে
    একটা আলোবিহীন মেঠো পথ, লণ্ঠনজ্বালা
    চায়ের দোকান, বেঞ্চ, উদাসীন বিরক্ত চা-ওলা
    এইসব উপচার
    একান্ত ওষুধ
    আর কোত্থাও চলে না যাওয়ার শান্ত ভঙ্গীটি

    কিন্তু সে হাসপাতাল অনেক দূরের
    অনেক বসন্ত দিয়ে তাকে কিনতে হয়
    বহুবার হাতে ঘাড় রেখে ভোররাতে
    জেগে উঠে খুশি হেসে মুঠোর ভিতর
    অন্য হাত নিয়ে
    শুয়ে পড়তে হয়
    বহুদিন, স্বাবলম্বী নানান সঙ্গীতে
    বহু চিত্র, কিছু চিত্র তার
    আকাশ এমনি এঁকে দেয়
    কিছু চিত্র লোহু দিয়ে
    কানে আলতো কামড় দিয়েও
    হঠাৎ জড়িয়ে ধরে, আঁকা যায়
    দূরান্তের নানান সংগ্রহে
    বাসা বাঁধবার নানা ফর্মায় বাবুই এর মতো
    গোবরে জোনাকি গেঁথে পাশাপাশি শুয়ে

    এইসব সুয়োরানী দুয়োরানী সাধ
    যে সমস্ত সাধ নিয়ে ঘাট থেকে সপ্তডিঙা চলে যায়, মাঝি মাল্লার
    একান্ত অনুরোধে অমঙ্গলের
    দুয়ারে ফেলতে কাঁটা দুয়োরানী নাও ছুঁয়ে দেয়,
    ছেড়ে দেয়, অনিচ্ছায়, লোভের রাজাকে
    তারপরে বাঙলার মাঠে ঘাটে শাড়ি ছিঁড়ে পড়ে থাকে
    স্তনে হাত রেখে
    মনে হয় কবে রাজা রেখেছিল
    মনে পড়ে কোন একবার
    একান্ত দুইতে চেয়ে নওল গোয়ালা
    কুঁড়ের সামনে থেকে ফিরে গেছে
    নালিঘাস পায়ে পায়ে বেঁধে

    উফ আমার একান্ত অসুখ
    গা গরম ভিতরে ভিতরে
    উফ আমার এক্ষুনি চিকিৎসার বড় দরকার
    শুধু সেই হাসপাতাল বড় দূরে
    ফেলে আসা অনেক বসন্ত দূরে আছে
    ------------------------
  • Samanwoy PAL | ১৭ মার্চ ২০২০ ০১:৫৮730067
  • মধ্যবিত্ত

    শত-সহস্র শব্দ তার,

    সে বলে উঠতে পারেনি -

    প্রতিবাদে উঠে দাঁড়াতে পারেনি,

    নিস্তরঙ্গ জীবনের হাতছানি উপেক্ষা কি করা যায়?

    এমন সুস্থ চাকুরি , অসুস্থ এক দেশে,

    এমন সুন্দর জীবন , কুৎসিত এক সমাজে,

    পারেনি এক লহমায় ঝেড়ে ফেলতে;

    তার গলায় যে দ্বায়িত্ব- কর্তব্যের শিকল,

    আর একটা কমজোরি মেরুদন্ড পিঠে।

    এ নিয়ে দেশদ্ধারে সোচ্চার হওয়াও যে স্বপ্ন,

    তা সে হয়তো জানে।

    তাই নীরবে মেনে নেয় সব,

    কখনো বা চায়ের দোকানে কাগজ পড়তে পড়তে

    তর্ক করে তারই মতো এক অসহায়ের সাথে;

    কারণ সে জানে -

    তার দশ ফুট বাই দশ ফুটের বাইরে,

    সে বিপদগ্রস্ত , সে নিরুপায়;

    মাঝে মাঝে একান্তে চোখের জল ফেলে -

    কি জানি কেন ?

    তার থেকে তো কেউ কিছু চায় নি ,

    আশাও করে না রাস্তায় নেমে সম্মুখ প্রতিরোধের,

    তাই সে নিজেকে সামলে নেয় ;

    টিফিন বক্সটা ব্যাগে নিয়ে,

    রেডি হয় ৯ টা ৩০ এর লোকাল ধরার জন্য।
  • সায়ন্তন চৌধুরী | ০৫ এপ্রিল ২০২০ ০৯:৩০730452


  • সাতটা শহর লেপ্টে গিয়ে তোমার কাঁধে হাত রেখেছে,
    ডাইনে তাকাও, মেঘলা হরিণ ট্রাফিক জ্যামে
    খুব উদাসীন হয়েও হঠাৎ সজাগ হলো।
    তেইশ নদী, ঊনিশ শ্রাবণ,
    তোমার জন্যে আমলকী বন অপেক্ষাতে
    হলুদ হলো।
    তবু তুমিই এসো শেষ বিকেলে,
    অ্যাক্রব্যাটিক আলোর নীচে
    দেখা হবে,
    দেখা হবে।



    ঘুম, সে তো আসেনি, পোস্টকার্ডে
    কিছু লিখে পাঠিয়েছিল বোধহয়,
    তাতেই দূরত্ব বজায় থাকে;
    যদিও স্বপ্ন নিজস্ব বিস্ময়ে হাজির হয়েছে বারবার —
    প্রথমবার ঠকে শিখেছিলাম,
    "কী চাই?" দরজা খুলে সটান প্রশ্ন
    করেছিলাম দ্বিতীয় দিনে,
    "বড় তেষ্টা পেয়েছে" মৃদু হেসে একগ্লাস
    জল চেয়েছিল শুধু — ফেরাতে পারিনি,
    আজও সে আমাকে অনুরোধ করে
    আকাশ দেখতে।



    চশমা পড়লে তোমায় চমৎকার দেখায়
    এ তো তুমিও জানো।
    ইচ্ছে করে এপ্রিলের অযথা মৃত্যুর দিনগুলো কেটে গেলে
    তোমার হাতে হাত রেখে পাশাপাশি হেঁটে যেতে
    কুয়াশার অনিবার্য দ্রাঘিমায়।
    তোমার সময় হলে বোলো,
    দুঃখিত আবহাওয়া গুছিয়ে রেখেছি
    আমাদের আসন্ন পোশাকে।
    হয় দেরি হোক, তবু তুমি এসো
    অন্ততঃ।



    কেননা প্রত্যাবর্তনের পরে আর কিছুই বাকি থাকে না;
    যতদূর যাওয়া যেতে পারত
    যাওয়া হয়ে গেছে।
    পৃথিবীর উদ্ধত রাস্তাগুলো সচরাচর
    মানুষ নিয়েছে কিনে —
    এখন প্রগাঢ় ইয়ার্কি পড়ে আছে।
    হাসতে হাসতে তার দম আটকে আসে,
    অদূরে থার্মোকলের এঁটো থালাগুলো
    গড়াগড়ি খায়।
    এখন অন্ধকার অনায়াসে অন্ধকারে নামে।



    কাশফুল ভিজে গেলে মানুষে অযত্ন হয় খুব,
    যদিও মানুষ ধীরে বুঝে নেয় প্রেম;
    বোঝে মেঘ,
    সাঁতার বা সাইকেল চড়া।
    নিজস্ব প্রান্তরে হেঁটে হেঁটে আমিও বুঝেছি সব
    আরো অনেকের মতো,
    ট্রাক ট্রাক কুয়াশায় এসেছে স্থবির ঘুম,
    ঘুম — তার নীচে মৃত্যুর মত প্রিয় অক্ষর খুঁজে খুঁজে
    আমার হৃদয় ক্রমে শিখে গেছে অপূর্ব প্রেরণা,
    বেদনা তোমাকে।



    চোখের অন্যরকম কোণে জল জমে আছে,
    চোখ তা জানে না।
    সারাদিন প্রিয় রঙ খুঁজতে খুঁজতে শেষে
    বিকেলের ঝরনায় পেয়েছে আবির ঢেউ,
    তারও নীচে মানুষের নিজস্ব স্মৃতি চুপ করে আছে;
    তুমি তার খোঁজ রেখ,
    অন্ততঃ মাঝে মাঝে জেনে নিও
    এখন কেমন আছে
    অথবা কী চাকরি করে নিয়মিত।
    তুমিও কিছুটা মায়া মনে ফেলে রেখ,
    যদি প্রয়োজন পড়ে কদাচিৎ।



    লাবণ্য নদীর কাছে পৃথিবী একলা,
    তাকে ছেড়ে চলে গেছে কাঠের জাহাজ;
    ফেলে রেখে বছরের সামান্য রসদ —
    কিছু শস্য, মাংস,
    জলাধার: তাও ভালো, এখানে উড়ন্ত আলো
    পাখিদের বিপর্যস্ত করে, এখানে এমন থাকা
    যেন নক্ষত্রের যৌথ খামার,
    অবশেষে মনে হয় স্বস্তি কিছু
    স্বাভাবিকভাবে পাওয়া গেল; কেননা
    মানুষের প্রয়োজন ফুরিয়েছে মানুষের প্রতি।
  • টেস্ট | 188.148.43.169 | ০৭ জুন ২০২০ ২২:৩০731881
  • টেস্ট
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লড়াকু মতামত দিন