এত বছর ধরে ভোটের আগে নেতা-মন্ত্রীদের আশ্বাস, প্রতিশ্রুতি ও ভোটের পরে ন্যূনতম অধিকারগুলি হারানোর গোলক ধাঁধায় চক্কর খেয়ে মানুষ আজ ক্লান্ত। বর্তমানে রাজনৈতিক দলগুলির রাজনৈতিক সাংস্কৃতি, রাজনৈতিক প্রচারের হিসেব-নিকেশ দেখে ভোট দিয়ে পরিবর্তনের আশা ক্রমাগত হারিয়ে ফেলছে মানুষ। তবে এই নির্বাচনে কেবল ভোটের হার কমছে যে, এমনটা নয়। 'নতুন ভারত'-এর অষ্টাদশ লোকসভার সময়ে এসেও গ্রামে বিদ্যুৎ না থাকা, রাস্তা তৈরি না হওয়া, জল না আসায় পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, মালদা জেলার কয়েকটি গ্রামের বহু শ্রমজীবী-কৃষিজীবী মানুষেরা একত্রিত হয়ে এবারের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহন না করবার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, 'ভোট বয়কটে'র ডাক দিয়েছেন। ... ...
শান্তি শান্তি করে মরিস, শান্তি কী তোর গাছের ফল? ... ...
আমাদের এই নারী উদ্যোক্তা যে শুধু আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছেই দেনাদার ছিল, তা নয়। ঋণের টাকা দিয়ে তো সে মেশিন কিনল। কিন্তু বড় বড় অর্ডারকে পূরণ করার জন্য যে সে গাদা গাদা কাপড় এনেছিল হোলসেল কাপড় সাপ্লাইয়ারদের কাছ থেকে, তাদের দেনা পরিশোধেও ছিল উপুর্যুপুরি আর ধারালো চাপ। আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আইন-সমর্থিত চাপ সামলাতে পারলেও ঐ নারী উদ্যোক্তা সরবারহকারীদের আইন-অসমর্থিত চাপ সামলাতে ব্যর্থ হয়েছিল, যার অবশ্যম্ভাবী ফল নতুন ক্রয় করা সেলাই মেশিনগুলোর অধিকাংশ নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করে দেয়া কাপড়ের স্টকের সাথে সাথে। এভাবে করোনার করাল গ্রাস সেই সাপ্লাইয়ারদের অস্বাভাবিক মুনাফা এনে দিলেও আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি ঋণের কোন টাকাই উদ্ধার করতে পারল না। ফলশ্রুতিতে তারা আইনি পদক্ষেপ শুরু করলে, আমাদের আলোচ্য নারী উদ্যোক্তা মান-সন্মান বাঁচাতে মহাজনদের দ্বারস্থ হল, যারা প্রচলিত সুদের প্রায় চার-পাঁচ গুণ হারে ঋণ দিয়ে থাকে, আর ঋণ আদায়ে তাদের থাকে আলাদা গুন্ডা বাহিনী। ফলে করোনা অস্বাভাবিক মুনাফা এনে দিল টাকার এই আদিম কারবারীদেরও! ... ...
বিখ্যাত ঐতিহাসিক রঙ্গনা রানাকৌতের মতে, মিডিয়া আবিষ্কার হয় ভারত স্বাধীন হবার কুড়ি বছর আগে। তার আগে ছিল প্রস্তরযুগ। লোকে শিকার করে আমিষ খেত। ইন্টারনেট এবং কেবল টিভি আবিষ্কার করার উদ্দেশ্য ছিল, এই অন্ধকার থেকে মানুষকে আলোর দিকে নিয়ে আসা। কিন্তু তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকারের অপদার্থতার ফলে, কাজটা করা যায়নি। ইন্টারনেট আবিষ্কারের পরও দেখা যায় মানুষকে কষ্ট করে ভেবে-ভেবে গুগল সার্চ করতে হচ্ছে। এমনকি টিভি চালালেও উঠে উঠে চ্যানেল বদলাতে হচ্ছে। বনে বনে ঘুরে শিকার করার থেকে কাজটা কম কষ্টের নয়। ... ...
এতদিন পর্যন্ত বিধর্মীরা তেড়ে লাভ-জিহাদ চালিয়ে যাচ্ছিল, এবার পাল্টা হিসেবে হুপচতুর্দশীতে তাদের ধর্মস্থানের সামনে লাফালাফি শুরু হল। এর নাম দেওয়া হল লাফ-জিহাদ। আর যারা লাফ দেয়, তাদের নাম হল ল্যাজোদ্ধা। সব চেয়ে বড় ব্যাপার হল হুগলীতে। বলাগড়ের কাছে গুপ্তিপাড়া বলে এক জায়গায় পুরোনো ভাঙা মসজিদের নিচে পাওয়া গেল এক হনুমানের ল্যাজ। হনুমানকে মেরেই ওই মসজিদ তৈরি হয়, জানার পর তৎক্ষণাৎ মসজিদ ভেঙে ফেলা হল। স্বয়ং উনিজি হাজির হয়ে গুপ্তিপাড়ার নাম বদলে করে দিলেন হুপ্তিপাড়া। সেখানে তৈরি হল এক বিরাট হুপমন্দির। পুজোর নতুন নাম হল হুপাসনা। ... ...
১৯৩৩ সালে ফ্রিৎজ জুইকি নামে এক বিজ্ঞানী দেখালেন, মোট পরমাণুর হিসেব থেকে ছায়াপথের ভর বের করতে গেলে একটা গোলমাল হচ্ছে। ছায়াপথের স্পাইরাল বাহুতে যে সমস্ত নক্ষত্র আছে, তারা সকলেই ছায়াপথের কেন্দ্রের চারদিকে আস্তে আস্তে ঘুরছে। ছায়াপথের দৃশ্যমান ভরের প্রায় পুরোটাই এই কেন্দ্র অঞ্চলে অবস্থিত (কেন্দ্রের গল্পটা সংক্ষেপে বলেছি শেষের দিকে। সেখানে যে ঠিক কী আছে, তা দেখানোর জন্যে এই বছর, ২০২০ সালে, রাইনহার্ট গেঞ্জেল এবং আন্দ্রেয়া গেজ নামে দুই বিজ্ঞানী নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন)। কিন্তু তাহলে ওই নক্ষত্রদের ঘোরার বেগ যত হওয়া উচিত, পাওয়া যাচ্ছে তার চেয়ে অনেক বেশি। জুইকি বললেন, এর একমাত্র ব্যাখ্যা মহাবিশ্বের সব ভরই দৃশ্যমান নয়। অনেকটা জিনিস আছে যা আমরা চোখে (অর্থাৎ যন্ত্রপাতি দিয়ে) দেখতে পাই না, শুধু তার মহাকর্ষীয় টান অনুভব করতে পারি। এর নাম দিলেন ডার্ক ম্যাটার বা কৃষ্ণবস্তু। ... ...
মামলার গোড়া থেকে আমার করা সারসংক্ষেপ এরকমঃ ১। অযোগ্যদের সরানো নয়, পুরো প্যানেল যে বাতিল (সেট অ্যাসাইড) করতে হবে, এবং আবার অ্যাপয়েন্টমেন্ট দিতে হবে, এই দাবীটা প্রাথমিক ভাবে তোলেন বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য। ২। পিটিশনারদের আইনজীবী আশিষ কুমার চৌধুরি, এরকম কোনো দাবী তোলেননি, অন্তত তুলেছেন বলে লেখা নেই। চৌধুরি বলেন, যে, দুটো অনিয়ম হয়েছে। এক, পার্সোনালিটি টেস্টের নম্বর বাকি নম্বরের সঙ্গে যোগ করা হয়নি। দুই, সিনিয়ারিটি বিবেচনা করা হয়নি। এছাড়াও তিনি কিছু খুচরো অনিয়মের কথা বলেন। সবকটাতেই র্যাঙ্ক বদলে যায়, ফলে প্রকৃত যোগ্য চাকরি নাও পেতে পারেন, বা পিছিয়ে যেতে পারে। ... ...
বাংলায় কেন এরকম হয়না, এটা নেটে সাড়ে তিন মিনিট সার্চ করলেই জানা যেত। জানা যেত, যে, সিনেমাটার অন্যতম প্রযোজক শ্রীমতি জ্যোতি দেশপান্ডে ( সার্চ করেই জানলাম), যিনি ভায়াকম ১৮র সিইও, যেটা মূলত রিলায়েন্সের কোম্পানি । নারী থেকে ফুটবল, সিনেমা থেকে রাজনীতি, সবকিছুই এখন যাঁদের হোলসেল বিজনেস, যাঁদের অনুমতি ছাড়া একটা পাতাও পড়েনা নানা বাগানে, এই সিনেমার পিছনে সেই আম্বানিদের কল্যাণ এবং দক্ষিণহস্ত আছে, তাই এইরকম 'ব্যতিক্রমী' সিনেমা হয়েছে হিন্দিতে। আম্বানি বা অন্য বড়ো খেলোয়াড়রা ( যেমন নেটফ্লিক্স বা অ্যামাজন) কখনই বাংলা সিনেমায় বিনিয়োগ করবেননা, তাই বাংলায় হবেনা। আশ্চর্যের কিছুই নেই, এটাই যুগের হাওয়া। বিশেষ করে আম্বানিদের নিয়ে এ কোনো নতুন কথা নয়, যে তাঁরা ওয়েস্ট-ইন্ডিয়া-কোম্পানির অংশ, পূব দিকে থেকে সম্পদ জমা করেন পশ্চিমে, মুকেশ এই সেদিন নিজেই বলেছেন, তাঁরা আদ্যন্ত গুজরাতি, বেশিরভাগ বিনিয়োগই ওইদিকে। ফলে বাংলায় কেন হয়না, কেন হিন্দিতে হয়, প্রশ্নটা "ওদিকে বিয়ে খেতে বিল গেটস আসে, এদিকে কেন আসেনা"র মতোই বেকার এবং অশ্লীল। ... ...
এসবের মধ্যেই জানা যায়, মুখ্যমন্ত্রী হাইকোর্টকে বিজেপির দালাল বলে কেলোর কীর্তি করেছেন। বলেছিলেন আগেই, হাইকোর্ট বিশেষ রা কাড়েনি, শুধু এক বিচারপতি বলেছিলেন, এবার পঞ্চাশ হাজার চাকরি খেয়ে নেব কিন্তু। সেটায় কারোরই তেমন কিছু ক্ষতি হয়নি। বিজেপিরও কোনো সমস্যা ছিলনা। কিন্তু কার কোথায় নরম জায়গা আছে কে জানে, কোথা থেকে ব্যাপারটা গায়ে লেগে যায় বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের এবং তিনি নাকি আবার মামলা করতে চলেছেন। এবার আর শিক্ষকদের না, চাকরি খাবেন আস্ত মুখ্যমন্ত্রীর। ... ...
এরপরে দুনিয়ায় আসে এক অদ্ভুত জাতি, বাংলাদেশি বাঙালী! এত বেহুশ জাতি এই দুনিয়ায় আর আছে বলে মনে হয় না। তারা এক বাক্যে এইটা পালন করা হারাম বলে রায় দিচ্ছে। আমাদের নিজস্ব একটা পঞ্জিকা আছে। নিজেদের নববর্ষ আছে, এইটা গর্বের না? না! পারলে ধরে মারে! এই রোগের চিকিৎসা আমার জানা নাই। সংস্কৃতি আর ধর্মের একটা ক্যাচাল লাগিয়ে দিয়ে ধর্মের আফিমে বুঁদ হয়ে থাকা মানুষের উপরে এরপরের দায়িত্ব দিয়ে চুপ করে বসে থাকে এই ছাগল গুলো। ইসলাম শুধু এই অঞ্চলেই আসে নাই, আরও নানা দিকে গেছে আরব থেকে। কিন্তু কেউ নিজেদের ভাষা সংস্কৃতিকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে ধর্মকে টেনে নেয়নি। ... ...
এগুলা সব সত্য, কিন্তু কথা হচ্ছে আমরা কেন মরতেছি? সব দুশ্চিন্তা আমাদেরই? আমাদের নুন আনতে পান্তা ফুরায় দশা চলছে এখন। আমাদের মাথা ঘামাইতে হচ্ছে বিশ্ব রাজনীতির কঠিনতম প্যাচ নিয়ে! মধ্যপ্রাচ্যরে দেখেন, তুরস্ক যে তুরস্ক, মুসলিম দুনিয়ার নেতা হিসেবে যারা আবির্ভূত হয়েছে অনেকের মনে, তাদের দেখেন! সবাই গরম গরম বক্তব্য দিচ্ছে, হেন করবে তেন করবে বলে যাচ্ছে অথচ সবার সাথে ইজরাইলের কূটনৈতিক, বাণিজ্যিক সব ধরণের সম্পর্ক আছে। নিজেদের আখের গুছিয়ে নিয়েই তারা যা করার তা করে যাচ্ছে। আমাদেরই এই অদ্ভুত প্রেম! ওরা নিজেরা নিজেদেরটা গুছিয়ে নিয়ে আমাদেরকে মুসলিম উম্মাহর গল্প শোনাচ্ছে, আমরা বয়কট বলে আমার প্রতিবেশী যে কোকের কোম্পানির উপরে নির্ভর করে বেঁচে আছে তারে বিপদে ফেলে দিচ্ছি। যে হাজার হাজার কর্মী কোক কোম্পানিতে কাজ করছে তাঁদেরকে একটা মানসিক অস্থিরতার মধ্যে ফেলে দিচ্ছি। ... ...
হিগস বোসন তো তৈরি হল, কিন্তু যন্ত্রে তার চিহ্ন তো ধরতে হবে? যে যন্ত্র এই সব চিহ্ন ধরে, তাদের বলে ডিটেক্টর। সার্নের সুড়ঙ্গে চার জায়গায় চারটে বিরাট ডিটেক্টর বসানো আছে, আর এক একটা ডিটেক্টরকে ভিত্তি করে বিজ্ঞানীদের এক একটা গোষ্ঠী বা কোলাবোরেশন গড়ে উঠেছে। এই চারটে গোষ্ঠীর মধ্যে দুটো কিছু নির্দিষ্ট পরীক্ষার জন্যে তৈরি করা হয়েছে, আর বাকি দুটো বড়ো ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের মতন, তাদের লক্ষ্য অনেক বিস্তৃত, সংঘর্ষের পরে যা যা তৈরি হতে পারে সবকিছুই ধরার জন্যে তারা প্রস্তুত। এই বড়ো গোষ্ঠীদুটোর একটার সংক্ষিপ্ত নাম অ্যাটলাস, অন্যটার সি এম এস। ভারতের অনেক বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠান সি এম এস গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত, তার মধ্যে কলকাতার সাহা ইনস্টিটিউট অফ নিউক্লিয়ার ফিজিক্সও আছে। ... ...
সংখ্যাগুলো সবই কোটি টাকার অঙ্কে। আর কোম্পানিগুলোও খুবই বিখ্যাত। ১। ফিউচার গেমিং অ্যান্ড হোটেল সার্ভিসেস। কোম্পানিটি চালান লটারিসম্রাট সান্তিয়াগো মার্তিন। বহু বছর ধরে ইডি-সিবিআই এর নজরে আছেন, রেডও হয়েছে অনেকবার। কিন্তু ইডি সবাইকে ধরেনা। তার জন্য মূল্য চোকাতে হয় নিশ্চয়ই। কোম্পানি দিয়েছে ১৩০০ কোটি টাকারও বেশি। কোন দেবতার পায়ে গেছে, আন্দাজ করার জন্য কোনো পুরস্কার নেই। ২। মেঘা ইঞ্জিনিয়ারিং। তেলেঙ্গনার দুই রেড্ডির কোম্পানি। ২০১৯ এ আয়কর হানা হয়েছিল আপিসে। ক্যাগ রিপোর্টেও এদেরকে হাজার পাঁচেক কোটি টাকা অতিরিক্ত পাইয়ে দেওয়া হয়েছে সরকারের দিক থেকে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। তদন্ত কোথাও এগিয়েছে বলে খবর নেই। অভিযোগ বড়, মূল্যও বড়। ... ...
অনেকেই জানেননা, ভারতবর্ষে প্রথম পাঁচ বছরের হিন্দুত্ববাদী সরকারের কাছা খুলে দিয়েছিল একটা প্রতিস্পর্ধী মিডিয়া, যার নাম তেহেলকা। শুরু করেছিলেন তরুণ তেজপাল এবং অনিরুদ্ধ বহাল। বাজপেয়ি জমানা তখন 'শাইনিং', তেহেলকা নিয়ে এল স্টিং অপারেশন 'অপারেশন ওয়েস্ট এন্ড'। তাতে দেখা গেল বিজেপি সভাপতি বঙ্গারু লক্ষণ থেকে শুরু করে সরকারি দল এবং দপ্তরের কচি এবং বাস্তুঘুঘুরা প্রতিরক্ষার নাম করে পয়স খান। তাঁরা আবার কারগিল-কারগিল কর ভোটও চান। তখনও ওয়াশিং মেশিন জমানা আসেনি। ভাবতেও আশ্চর্য লাগে এই এক স্টিং অপারেশনের ঠেলায়, প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হয়েছিল। জেল হয়েছিল বিজেপি সভাপতির। সরকার খড়্গহস্ত হয়েছিল তেহেলকার উপরে। তেহেলকা প্রায় উঠে যাবার উপক্রম হয়। অনিরুদ্ধ বহাল তেহেলকা ছেড়ে কোবরাপোস্ট খোলেন। কিন্তু, বাজপেয়ি সরকার জেলে পোরেনি দুজনের কাউকেই। মোদি জমানার আগে ওরকম ভাবাই মুশকিল ছিল। ... ...
মানুষের পোষাক সম্পূর্ণ তার চয়েজ হতে পারে না। মানুষ নিজেই সমাজের নির্মাণ। পোষাক নির্বাচনে সামাজিকতা মাথায় রাখাই সভ্যতা। ... ...
অফিসটাইমের শেয়ালদা স্টেশনের কথা ভাবুন। স্টেশন লোকে থিকথিক করছে, প্রচুর লোক এদিক থেকে ওদিকে যাচ্ছে। এই বিপুল জনসমষ্টি যেন হিগস ক্ষেত্র। এই স্টেশনের মধ্যে দিয়ে একদিক থেকে আরেক দিকে যেতে আমার আপনার মিনিট-দুই লাগবে। টিভি সিরিয়ালের মোটামুটি মুখচেনা কোনো অভিনেতার, পেরোতে আরেকটু বেশি লাগবে, কারণ আমাদের ধরে তো কেউ অটোগ্রাফ নেবে না, কিন্তু তাঁকে ধরে দু-চারজন নিশ্চয়ই নেবে। আর শাহরুখ খান বা সচিন তেন্ডুলকর (বারো বছর আগের লেখা। এখন হলে হয়তো কোহলির নাম করতাম) স্টেশন পেরোবার চেষ্টা করলে ঘণ্টাখানেক তো লাগবেই। অর্থাৎ চলার বেগ এক হলেও, এই জনসমষ্টির সঙ্গে যাঁর আদানপ্রদান যত বেশি, তাঁর একই দূরত্ব যেতে সেইমত বেশি সময় লাগবে। সুতরাং বলা যেতেই পারে, তাঁর জড়তা তত বেশি। হিগস ক্ষেত্রের মধ্যেও এই ব্যাপারটাই ঘটে। যে কণার সঙ্গে হিগস ক্ষেত্রের ভাব বেশি, তার জড়তা তত বেশি। আর জড়তাই তো ভরের মাপ। ... ...
ফুলকে নিয়ে মানুষ বড় বেশী মিথ্যা বলায় বলেই" এখন আমার পছন্দ "আগুনের ফুলকি"। আমি প্রতিটি শব্দের হাতে ধরাতে চাই প্রতিবাদের মশাল, প্রতিটি লাইনে ছড়াতে চাই বিদ্রোহের আগুন। হয়তবা সেই শপথ রক্তে ধ্বনিত হয়,আমরা কাউকে যেন কথা দিয়েছিলাম "এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য" করে যাওয়ার বলেই... হয়তবা.... ... ...
উনিজির কোনো এক অর্থনৈতিক উপদেষ্টার নাম সঞ্জীব সান্যাল। তিনি বাঙালি সম্পর্কে চাড্ডিরা যা বলে এবং ভবে থাকে, আরেকবার বলেছেন। মোদ্দা কথা হল, বাঙালি ধূমপান করে, মদের গ্লাসে চুমুক দিয়ে সারা বিশ্বের ব্যাপারে জ্ঞান দেয়, আর মৃণাল সেনের সেনের ছবি দেখে, এই হল তার অধঃপতনের কারণ। এইসব অর্থনৈতিক উপদেষ্টাকে কোথা থেকে বেছে আনা হয় কে জানে, উনিজি বলেই সম্ভব। কিন্তু সেটা কথা না, কথা হল এই নিয়ে বাঙালিরও তেমন আলোড়ন নেই। এমনকি মমতাশঙ্কর নিয়েও যতটা আলোড়ন, তার ধারেকাছেও নেই। কারণ, এই গল্পটা দিয়ে দিয়ে শিক্ষিত বাঙালিকে একরকম করে খাইয়ে দেওয়া গেছে। "বাঙালি অপদার্থ" বললে তারা জাতিবিদ্বেষ খুঁজে পায়না, পবন সিং এর মতো লোকে বাঙালি মেয়েদের নিয়মিত ব্যবধানে "মাল" বললে তাদের কিছু এসে যায়না। ... ...
সত্যেন্দ্রনাথ বসু মশাইকে দিয়েও এই গল্পটা শুরু করলে খারাপ হয় না। দুর্ভাগ্যক্রমে তিনি এমন এক দেশে জন্মেছিলেন, যে, সেখানকার লোকে তাঁর কাজ সম্পর্কে এক বিন্দু না জেনেও তাঁকে আইকন বানিয়ে দেবার আগে দু-বার ভাবে না। ইউরোপে জন্মালে বিজ্ঞানী হিসেবে তিনি আরো বেশি স্বীকৃতি পেতেন, হয়তো নোবেল পুরস্কারও পেতেন, কিন্তু হিরো-বুভুক্ষুর দল তাঁকে নিয়ে এমন উৎকট মাতামাতি করত না (কতটা উৎকট তার পরিচয় পরে দেব)। সত্যেন্দ্রনাথ ঠিক কী করেছিলেন? ... ...