এই পুরো ব্যাপারটা যদি দেখেন, এর মধ্যে "শিক্ষা হল অধিকার" বা মানকল্যাণের কোনো জায়গা নেই। বোর্ড একটি অর্থকরী প্রতিষ্ঠান, তারা অনুমোদনের বিনিময়ে পয়সা নেয়। দেয়না। স্কুলও একটি অর্থকরী প্রতিষ্ঠান। তারা সম্পূর্ণ বেসরকারি। তারা টাকা তোলে ছাত্রদের কাছ থেকে। তার থেকে শিক্ষকদের মাইনে দেয়। নিয়োগও করে তারা এবং মাইনেও তারাই ঠিক করে। মাইনে ঠিক কী হবে, তার আইন নেই, কিছু উপদেশ আছে। ফলে সেটা কোম্পানির ইচ্ছে। এক কথায় পুরোটাই ব্যবসা। কত ফি হবে, কত মাইনে হবে, সবশুদ্ধ। কোথাও কোনো নির্দিষ্টতা নেই। হ্যাঁ, কোম্পানির মালিক লাভের গুড় পকেটে নিয়ে বাড়ি যেতে পারবেননা। কিন্তু তাঁরা গুষ্টিসহ ডিরেক্টর হয়ে মোটা টাকা মাইনে নিলে সেটা সম্পূর্ণ বৈধ। ... ...
এতদিন পর্যন্ত বিধর্মীরা তেড়ে লাভ-জিহাদ চালিয়ে যাচ্ছিল, এবার পাল্টা হিসেবে হুপচতুর্দশীতে তাদের ধর্মস্থানের সামনে লাফালাফি শুরু হল। এর নাম দেওয়া হল লাফ-জিহাদ। আর যারা লাফ দেয়, তাদের নাম হল ল্যাজোদ্ধা। সব চেয়ে বড় ব্যাপার হল হুগলীতে। বলাগড়ের কাছে গুপ্তিপাড়া বলে এক জায়গায় পুরোনো ভাঙা মসজিদের নিচে পাওয়া গেল এক হনুমানের ল্যাজ। হনুমানকে মেরেই ওই মসজিদ তৈরি হয়, জানার পর তৎক্ষণাৎ মসজিদ ভেঙে ফেলা হল। স্বয়ং উনিজি হাজির হয়ে গুপ্তিপাড়ার নাম বদলে করে দিলেন হুপ্তিপাড়া। সেখানে তৈরি হল এক বিরাট হুপমন্দির। পুজোর নতুন নাম হল হুপাসনা। ... ...
বিখ্যাত ঐতিহাসিক রঙ্গনা রানাকৌতের মতে, মিডিয়া আবিষ্কার হয় ভারত স্বাধীন হবার কুড়ি বছর আগে। তার আগে ছিল প্রস্তরযুগ। লোকে শিকার করে আমিষ খেত। ইন্টারনেট এবং কেবল টিভি আবিষ্কার করার উদ্দেশ্য ছিল, এই অন্ধকার থেকে মানুষকে আলোর দিকে নিয়ে আসা। কিন্তু তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকারের অপদার্থতার ফলে, কাজটা করা যায়নি। ইন্টারনেট আবিষ্কারের পরও দেখা যায় মানুষকে কষ্ট করে ভেবে-ভেবে গুগল সার্চ করতে হচ্ছে। এমনকি টিভি চালালেও উঠে উঠে চ্যানেল বদলাতে হচ্ছে। বনে বনে ঘুরে শিকার করার থেকে কাজটা কম কষ্টের নয়। ... ...
দেশের শ্রমজীবী মানুষের রাজনৈতিক চেতনা বিকাশ ঘটানোর বদলে পরনির্ভরশীল করে তোলার এমন সস্তার রাজনীতির চাষ, শ্রমজীবী মানুষের উন্নত-জীবনের ভাবনাকে আটকে দেওয়ার কাজ যে কতটা ক্ষতিকর তা এখন হারে হারে টের পাওয়া যায়। এর ফলে রাষ্ট্র শ্রমিকের কাজের বোঝা বিনা বিরোধিতায় ক্রমাগত বাড়িয়ে চলে, শ্রমজীবী মানুষকে ধর্মীয় মোহে মাতিয়ে তুলে একের পর এক জনবিরোধী আইনগুলিকে জ্যান্ত করে লগ্নি পুঁজির স্বার্থ রক্ষা করে, একের পর এক স্ব-তান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে নিজেদের কব্জায় নিতে পারে। ... ...
বাংলায় কেন এরকম হয়না, এটা নেটে সাড়ে তিন মিনিট সার্চ করলেই জানা যেত। জানা যেত, যে, সিনেমাটার অন্যতম প্রযোজক শ্রীমতি জ্যোতি দেশপান্ডে ( সার্চ করেই জানলাম), যিনি ভায়াকম ১৮র সিইও, যেটা মূলত রিলায়েন্সের কোম্পানি । নারী থেকে ফুটবল, সিনেমা থেকে রাজনীতি, সবকিছুই এখন যাঁদের হোলসেল বিজনেস, যাঁদের অনুমতি ছাড়া একটা পাতাও পড়েনা নানা বাগানে, এই সিনেমার পিছনে সেই আম্বানিদের কল্যাণ এবং দক্ষিণহস্ত আছে, তাই এইরকম 'ব্যতিক্রমী' সিনেমা হয়েছে হিন্দিতে। আম্বানি বা অন্য বড়ো খেলোয়াড়রা ( যেমন নেটফ্লিক্স বা অ্যামাজন) কখনই বাংলা সিনেমায় বিনিয়োগ করবেননা, তাই বাংলায় হবেনা। আশ্চর্যের কিছুই নেই, এটাই যুগের হাওয়া। বিশেষ করে আম্বানিদের নিয়ে এ কোনো নতুন কথা নয়, যে তাঁরা ওয়েস্ট-ইন্ডিয়া-কোম্পানির অংশ, পূব দিকে থেকে সম্পদ জমা করেন পশ্চিমে, মুকেশ এই সেদিন নিজেই বলেছেন, তাঁরা আদ্যন্ত গুজরাতি, বেশিরভাগ বিনিয়োগই ওইদিকে। ফলে বাংলায় কেন হয়না, কেন হিন্দিতে হয়, প্রশ্নটা "ওদিকে বিয়ে খেতে বিল গেটস আসে, এদিকে কেন আসেনা"র মতোই বেকার এবং অশ্লীল। ... ...
এসবের মধ্যেই জানা যায়, মুখ্যমন্ত্রী হাইকোর্টকে বিজেপির দালাল বলে কেলোর কীর্তি করেছেন। বলেছিলেন আগেই, হাইকোর্ট বিশেষ রা কাড়েনি, শুধু এক বিচারপতি বলেছিলেন, এবার পঞ্চাশ হাজার চাকরি খেয়ে নেব কিন্তু। সেটায় কারোরই তেমন কিছু ক্ষতি হয়নি। বিজেপিরও কোনো সমস্যা ছিলনা। কিন্তু কার কোথায় নরম জায়গা আছে কে জানে, কোথা থেকে ব্যাপারটা গায়ে লেগে যায় বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের এবং তিনি নাকি আবার মামলা করতে চলেছেন। এবার আর শিক্ষকদের না, চাকরি খাবেন আস্ত মুখ্যমন্ত্রীর। ... ...
মামলার গোড়া থেকে আমার করা সারসংক্ষেপ এরকমঃ ১। অযোগ্যদের সরানো নয়, পুরো প্যানেল যে বাতিল (সেট অ্যাসাইড) করতে হবে, এবং আবার অ্যাপয়েন্টমেন্ট দিতে হবে, এই দাবীটা প্রাথমিক ভাবে তোলেন বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য। ২। পিটিশনারদের আইনজীবী আশিষ কুমার চৌধুরি, এরকম কোনো দাবী তোলেননি, অন্তত তুলেছেন বলে লেখা নেই। চৌধুরি বলেন, যে, দুটো অনিয়ম হয়েছে। এক, পার্সোনালিটি টেস্টের নম্বর বাকি নম্বরের সঙ্গে যোগ করা হয়নি। দুই, সিনিয়ারিটি বিবেচনা করা হয়নি। এছাড়াও তিনি কিছু খুচরো অনিয়মের কথা বলেন। সবকটাতেই র্যাঙ্ক বদলে যায়, ফলে প্রকৃত যোগ্য চাকরি নাও পেতে পারেন, বা পিছিয়ে যেতে পারে। ... ...
অনেকেই জানেননা, ভারতবর্ষে প্রথম পাঁচ বছরের হিন্দুত্ববাদী সরকারের কাছা খুলে দিয়েছিল একটা প্রতিস্পর্ধী মিডিয়া, যার নাম তেহেলকা। শুরু করেছিলেন তরুণ তেজপাল এবং অনিরুদ্ধ বহাল। বাজপেয়ি জমানা তখন 'শাইনিং', তেহেলকা নিয়ে এল স্টিং অপারেশন 'অপারেশন ওয়েস্ট এন্ড'। তাতে দেখা গেল বিজেপি সভাপতি বঙ্গারু লক্ষণ থেকে শুরু করে সরকারি দল এবং দপ্তরের কচি এবং বাস্তুঘুঘুরা প্রতিরক্ষার নাম করে পয়স খান। তাঁরা আবার কারগিল-কারগিল কর ভোটও চান। তখনও ওয়াশিং মেশিন জমানা আসেনি। ভাবতেও আশ্চর্য লাগে এই এক স্টিং অপারেশনের ঠেলায়, প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হয়েছিল। জেল হয়েছিল বিজেপি সভাপতির। সরকার খড়্গহস্ত হয়েছিল তেহেলকার উপরে। তেহেলকা প্রায় উঠে যাবার উপক্রম হয়। অনিরুদ্ধ বহাল তেহেলকা ছেড়ে কোবরাপোস্ট খোলেন। কিন্তু, বাজপেয়ি সরকার জেলে পোরেনি দুজনের কাউকেই। মোদি জমানার আগে ওরকম ভাবাই মুশকিল ছিল। ... ...
উনিজির কোনো এক অর্থনৈতিক উপদেষ্টার নাম সঞ্জীব সান্যাল। তিনি বাঙালি সম্পর্কে চাড্ডিরা যা বলে এবং ভবে থাকে, আরেকবার বলেছেন। মোদ্দা কথা হল, বাঙালি ধূমপান করে, মদের গ্লাসে চুমুক দিয়ে সারা বিশ্বের ব্যাপারে জ্ঞান দেয়, আর মৃণাল সেনের সেনের ছবি দেখে, এই হল তার অধঃপতনের কারণ। এইসব অর্থনৈতিক উপদেষ্টাকে কোথা থেকে বেছে আনা হয় কে জানে, উনিজি বলেই সম্ভব। কিন্তু সেটা কথা না, কথা হল এই নিয়ে বাঙালিরও তেমন আলোড়ন নেই। এমনকি মমতাশঙ্কর নিয়েও যতটা আলোড়ন, তার ধারেকাছেও নেই। কারণ, এই গল্পটা দিয়ে দিয়ে শিক্ষিত বাঙালিকে একরকম করে খাইয়ে দেওয়া গেছে। "বাঙালি অপদার্থ" বললে তারা জাতিবিদ্বেষ খুঁজে পায়না, পবন সিং এর মতো লোকে বাঙালি মেয়েদের নিয়মিত ব্যবধানে "মাল" বললে তাদের কিছু এসে যায়না। ... ...
আগে ভারতবর্ষ স্বর্গরাজ্য ছিলনা, শিল্পপতিরা এমনকি স্বাধীনতার আগে থেকেই পার্টিতে পয়সা দিতেন। জিডি বিড়লার আত্মজীবনী পড়লেই দেখা যাবে, কংগ্রেসের পিছনে তিনি কত টাকা ঢেলেছিলেন, স্বাধীনতার আগেই। ইংরেজের সঙ্গে দরকষাকষির জন্য কংগ্রেসকে তাঁর দরকার ছিল। গোলটেবিল বৈঠকেও উপস্থিত হয়েছিলেন এক আধবার। টাটা কোনো পয়সা-টয়সা দিতেননা, কারণ ইংরেজ তাঁকে পুষত। নিজের স্বার্থেই। ... ...
সংখ্যাগুলো সবই কোটি টাকার অঙ্কে। আর কোম্পানিগুলোও খুবই বিখ্যাত। ১। ফিউচার গেমিং অ্যান্ড হোটেল সার্ভিসেস। কোম্পানিটি চালান লটারিসম্রাট সান্তিয়াগো মার্তিন। বহু বছর ধরে ইডি-সিবিআই এর নজরে আছেন, রেডও হয়েছে অনেকবার। কিন্তু ইডি সবাইকে ধরেনা। তার জন্য মূল্য চোকাতে হয় নিশ্চয়ই। কোম্পানি দিয়েছে ১৩০০ কোটি টাকারও বেশি। কোন দেবতার পায়ে গেছে, আন্দাজ করার জন্য কোনো পুরস্কার নেই। ২। মেঘা ইঞ্জিনিয়ারিং। তেলেঙ্গনার দুই রেড্ডির কোম্পানি। ২০১৯ এ আয়কর হানা হয়েছিল আপিসে। ক্যাগ রিপোর্টেও এদেরকে হাজার পাঁচেক কোটি টাকা অতিরিক্ত পাইয়ে দেওয়া হয়েছে সরকারের দিক থেকে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। তদন্ত কোথাও এগিয়েছে বলে খবর নেই। অভিযোগ বড়, মূল্যও বড়। ... ...
সংশোধন করে কী হবে? সে বলেননি। কিন্তু আন্দাজ করা যায়। হিন্দুরাষ্ট্র হবে। অবাধ বাঙালি বিতাড়ন হবে। বাংলা হবে হিন্দুস্তান। একনায়কতন্ত্রের দিকে কয়েকধাপ এগোনো হবে। রাজ্য সরকারগুলো এখনই প্রায় মিউনিসিপ্যালিটি, তাকে ক্লাবের পর্যায়ে নামিয়ে আনা হবে। তা তুলেও দেওয়া হতে পারে। তারপর দেশজুড়ে একদিকে হিন্দি-হিন্দু--হিন্দুস্তান, অন্যদিকে আদানি-আম্বানির রাজত্ব। তাদের অনুদান নিয়ে শাসক দল ফেঁপে উঠবে, লুঠ-তরাজের অবাধ বন্দোবস্তো করে দেবে, বিনিময়ে পেটোয়া গণমাধ্যম জুড়ে সর্বক্ষণ গেয়ে চলা হবে, দেশে স্বর্গরাজ্য এসে গেছে। ... ...
আধার দেশ গরিব ... ...
সাফল্যমণ্ডিত, কারণ, এই পুরোটাই করা হবে ধীরেসুস্থে। পাকিস্তানের মতো জোরেসোরে না। সইয়ে সইয়ে। ৫৬ সালে বাংলা-বিহার সংযুক্তির প্রস্তাব এলে আন্দোলনে ফেটে পড়বে বাংলা। পিছিয়ে আসা হবে সেই সিদ্ধান্ত থেকে। তার কমাস পরেই ভাষাভিত্তিক রাজ্যের সিদ্ধান্তে শিলমোহর দেওয়া হবে আইন করে। একই সঙ্গে বোম্বেকে দেওয়া হবে খোলা মাঠ। ৫৭ সালে তৈরি হবে নতুন রেডিও চ্যানেল। বিবিধ ভারতী। যা মূলত বোম্বে সিনেমার গানকে সর্বভারতীয় জায়গায় পৌঁছে দেবার সরকারি ব্যবস্থা। বোম্বের প্রচার প্রসার , ফুলে ফেঁপে ওঠা চলবে অবাধে। বোম্বের তারকারা হয়ে উঠবেন আন্তর্জাতিক তারকা। পাশাপাশি রেডিওতে বহুভাষিক সর্বভারতীয় সম্প্রচার কিন্তু বন্ধ হবেনা, কয়েক দশক। পুরোটা সইয়ে নিয়ে অবশেষে আশির দশকে এসে, দূরদর্শনের যুগে সর্বভারতীয় টিভি হয়ে উঠবে বাধ্যতামূলক হিন্দি শিক্ষার কার্যক্রম। ... ...
ছেলেটার নাম অ্যারন বুশনেল। বয়স ২৫। খবরটা পড়ে, দেখে, এবং শুনে, প্রথমেই মনে হল, তা বলে এইভাবে? অন্য কিছু কি করা যেতনা? তারপর মনে হল, ধাক্কা কত বেশি হলে, তবেই এ জিনিস করা যায়। এ ছেলে ছিল সামরিকবাহিনীতে সাইবারডিফেন্স অপারেশন স্পেশালিস্ট। যেটা ঝপ করে মনে করিয়ে দেবে এডওয়ার্ড স্নোডেনের কথা। তিনিও ছিলেন, যদ্দূর জানা যায়, সাইবার নজরদারির কাজে।ওইসব গোপন কাজে, এমন কিছু থাকে, যা, মানুষের মাথাই ওলটপালট করে দেয়। বুশনেল বলেছে প্যালেস্তাইনে গণহত্যা। স্নোডেনের সময় ছিল আফগানিস্তান। আফগানিস্তানের উপর একটা সিনেমা দেখছিলাম, তাতে গ্রামকে গ্রাম লোক, ড্রোনহানায় হয় নেই, নয়তো পঙ্গু। একটা গ্রামে ড্রোন হত্যা করেছিল এক মুরুব্বিকে। তারপর তাঁর সমাধির অনুষ্ঠানে আবার ড্রোনহানা। মরে আরও কিছু লোক। ... ...
কিন্তু কথা হল, সব চ্যানেল-ট্যানেল কিনে ফেলেও, অপছন্দের সিনেমাকে আটকে, এজেন্সি দিয়ে ভয়-টয় দেখিয়েও গোদীবাবুর ঠিক শান্তি নেই। পিছনে পাপ লেগে থাকলে যা হয়। এখনও দুচাট্টে লোক এদিক সেদিক খুচরো ট্যাঁফোঁ করে চলেছে, কে কখন বলে দেয় 'রাজা তুই ন্যাংটো' তার ঠিক নেই। এই আমার মতো কিছু তেএঁটে আছে, যারা মিডিয়ার শত প্ররোচনাতেও গোদীবিরোধিতা থেকে কিছুতেই নড়বেনা। তাদের থামাতে এবার এসে গেছে ভারতের নতুন সম্প্রচার বিলের খসড়া। পাশ হলে তার আওতায় এসে যাবে প্রায় সবকিছু। টিভি, কেবল তো ছিলই, ওটিটি, ইন্টারনেট, সমাজমাধ্যম। খুব সম্ভবত এই লেখাটা, নতুন বিল এলে 'সম্প্রচার'এর আওতায় পড়বে। এসব কাপড় খুলে দেওয়া লেখা, তাই বিলে বলা আছে, খবর বা সাম্প্রতিক বিষয়ে সম্প্রচার করতে হলে সব্বাইকে 'নিয়ম' বা কোড মেনে চলতে হবে। কী নিয়ম? না, সেটা বলা নেই। সরকার বা কর্তৃপক্ষ যখন যা ঠিক করে দেবে তাই। নইলে জেল-জরিমানা, সবই আছে। ... ...
এই ‘নির্বাচনী বন্ড’ কেবল বিজেপিদলটির দ্বারা নয় বরং গোটা রাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর সাহায্যেই নির্মিত হয়েছে, যা বিজেপি-মোদি সরকারের ব্রাহ্মণ্যবাদী সামন্ততান্ত্রিক কায়দার ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রের ঐতিহাসিক দুর্নীতি রূপেই ভবিষ্যতে উল্লেখিত থাকবে। যার ফলে আজ সংসদীয় গণতন্ত্র পুঁজিতান্ত্রিক ট্র্যাজেডিতে পরিণত হয়েছে, জনগণের ন্যূনতম গণতান্ত্রিক অধিকার এখানে সম্পূর্ন কমেডি হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশের এমন বিপন্ন অবস্থায় দাঁড়িয়ে জনগণের বাস্তবিক অবস্থা সব মিলিয়ে মিশিয়ে ট্র্যাজিকমেডি চরিত্রে পরিণতি হয়েছে। যদিও দেশের বিজেপি-বিরোধী দলগুলির দুর্নীতিবাজ নেতাদের দৌলতে, যাঁদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের উপরে উঠে দাঁড়িয়েই বিজেপি-মোদি সরকার রাষ্ট্রের একেকটি স্তম্ভ কে হাতিয়ার করে, ব্রাহ্মণ্যবাদী সামন্ততান্ত্রিক কায়দার ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রের আবির্ভাব ঘটিয়েছে। তবুও এখন বিজেপি-বিরোধীদলগুলির এই একচেটিয়া লগ্নিপুঁজি-তন্ত্রের বিরোধিতা করে, নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে ধীরে ধীরে দেশের নিপীড়িত-শোষিত কৃষক-শ্রমিক-আদিবাসী-সংখ্যালঘু, ছোট-মাঝারি ব্যবসাদারদের দ্বারস্থ হওয়ার ফলে দেশের জন-গণতন্ত্রের ভবিষ্যত ইতিবাচক দিক বহন করতে পারে। ... ...
বইমেলার শেষদিনে পৌরসভার চুক্তিভিত্তিক সাফাইকর্মী’রা জানালেন, বইমেলা শেষে আবার অন্য কোন মেলায় কিংবা অন্য কোথাও তাঁদের কাজ খুঁজতে হবে। কিন্তু পরেরবার তাঁরা পৌরসভার কর্তাদের বলবেন খানিক মজুরি বাড়াতে। কিন্তু এঁদের কথা মানবে কে? সরকারতো সব ব্যাপারেই বলেন বিরোধীরা উস্কিয়েছে এঁদের। আর গিল্ড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন রাজনীতি করা চলবে না বইমেলা নিয়ে অথবা বইমেলা প্রাঙ্গণের ভেতরে। আর বেশি কিছু করলে, সামনেই উত্তর বিধাননগর থানার পুলিশবাবু’রা আছেন, আশা করা যায় সবটা সামলে নেবেন। এইরকম কয়েকশো উদাহরণ বইমেলার ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে সাজানো রয়েছে। ... ...
বিহারে "জন সুরাজ"-এর প্রবর্তক প্রশান্ত কিশোর বিশ্বাস করেন ক্রান্তিকারী গণতান্ত্রিক বা রাষ্ট্রবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে দেশে কোনো বিকাশ হওয়া সম্ভব নয়। বৈপ্লবিক আন্দোলন একটি তেজ হাতিয়ার যা দিয়ে একটি মহীরুহ কেটে ফেলা যায়, মানে ক্ষমতাসীন শাসককে ক্ষমতাচ্যূত করা যায় কিন্তু আন্দোলনের মাধ্যমে কোনো ‘নতুন ব্যবস্থা’ {System} বানানো সম্ভব নয় {যার দ্বারা দেশে, সমাজে দীর্ঘমেয়াদী পজিটিভ আউটকাম আসতে পারে}। ... ...
মানুষ কিন্তু নির্বাচন পছন্দ করে। কেন জানি মানুষের ধারণা যে ভোট দিতে পারলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। এই যে একদলের নির্বাচন হচ্ছে, মানুষের এইটা নিয়ে কোন আগ্রহই থাকবে না, এমন হওয়ার কথা না? কিন্তু তা হচ্ছে না! আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক প্রজ্ঞাই বলেন আর যাই বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী দাঁড় করিয়ে দিয়ে এই নির্বাচন জমিয়ে দিয়েছে। শহরের মানুষ কিছু নাক উঁচু ভাব দেখাচ্ছে, ম্যালা তত্ত্ব কপাচাচ্ছে ( যেমন আমি নিজেই!) কিন্তু গ্রামের মানুষ, যেখানে সবচেয়ে বেশি ভোটার, তারা সবাই ভোট দেওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে অপেক্ষা করছে। যারা ভাবছেন যে ভোটার শূন্য নির্বাচন হতে যাচ্ছে তারা সম্ভবত ধোঁকা খেতে যাচ্ছেন। কালকে বিপুল পরিমাণ মানুষ ভোট দিবে এইটা আমি এখনই বলে দিতে পারছি। কারণ আমি সাধারণ মানুষের এই নির্বাচন নিয়ে যে উচ্ছ্বাস তা দেখেছি। মিথ্যা বলব না, এইটা আমাকে বিরক্ত করেছে। সব ফেলে এই নির্বাচনের জন্য এত আগ্রহ? ... ...