এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ধারাবাহিক  ইতিহাস  শনিবারবেলা

  • স্লোভাকিয়া ৩

    হীরেন সিংহরায়
    ধারাবাহিক | ইতিহাস | ১১ মে ২০২৪ | ৭৪১ বার পঠিত | রেটিং ৫ (২ জন)
  • ব্রাতিস্লাভার রাস্তায়

    ব্রাতিস্লাভা:একটি স্মারকের উপাখ্যান



    টেনিস পটীয়সী সেরেনা উইলিয়ামস উইমবলডনের অল ইংল্যান্ড টেনিস টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছেন; একজন রিপোর্টার জিজ্ঞেস করেলেন, পরের রাউন্ডে কার সঙ্গে খেলবেন জানেন কি ? উত্তরে সেরেনা বলেন,জানি না,ওই কোন ওভা হবে।

    অনুমানটা আংশিক সত্য।

    বার্লিন ওয়ালের পতন এবং ইউরোপের পূর্ব দিগন্তের লৌহ যবনিকা উন্মোচিত হবার পরে গত তিরিশ বছরে মহিলা টেনিসে পোল্যান্ড থেকে সার্বিয়া,চেক থেকে রাশিয়া কাজাখস্তানের খেলোয়াড়রা সম্পূর্ণ ভাবে বিনষ্ট করেছেন ব্রিটেন, আমেরিকা, ফ্রান্স ও অস্ট্রেলিয়ার মৌরুসি পাট্টা। কম্যুনিস্ট আমলে আমরা পেয়েছি চেকোস্লোভাকিয়ার ইয়ারোস্লাভ দ্রবনি, ইয়ান কোদেশ, সোভিয়েত ইউনিয়নের আলেকস মেত্রেভেলি (জর্জিয়ান),রোমানিয়ার ইওন সিরিয়াক, ইলি নাস্তাসে কিন্তু মেয়েদের বিশেষ দেখা যায় নি। আজকে পাশা একেবারে উলটে গেছে; পুরুষদের অনেক পেছনে ফেলে অজস্র উজ্জ্বল মহিলা তারকা আলো করে রেখেছেন দুনিয়ার টেনিসের কোর্ট।

    রাশিয়ান, চেক, স্লোভাক, বুলগারিয়ান মেয়েদের নাম শেষ হয় ওভা অথবা এভা দিয়ে; বিয়ের আগে পিতার পদবি এবং বিয়ের পরে স্বামীর পদবির সঙ্গে সম্পর্ক সূচিত করে সেটি যুক্ত হয়। রাশিয়ান মারিয়া শারাপোভা,আনা কুর্নিকোভা,স্লোভাক দানিয়েলা হানটুকোভা,চেক পেত্রা কিতোভা বুলগারিয়ান কাতারিনা মালেভার নাম সকলের জানা। অবশ্য ব্যতিক্রম আছে; কখনো এ যোগ করেও একই উদ্দেশ্য সাধিত হয় যেমন পুতিনের স্ত্রী পুতিনা, কিন্তু পুতিনের দুই কন্যার বিবাহিতা নাম যথাক্রমে কাতারিনা তিখোনোভা এবং মারিয়া ভরন্তসোভা। রাশিয়ান টেনিস প্লেয়ার দিনারা সাফিনার দাদার নাম মুরাত সাফিন,তিনিও ছিলেন টেনিস স্টার। চেকে যেমন নাভ্রাতিলোভের ( আন্তন নাভ্রাতিলোভ নামের এক চেক ব্যাঙ্কারকে চিনতাম, প্রাগের চেসকোস্লভেন্সকি অবখদনি বাঙ্কায়) মেয়ে নাভ্রাতিলোভা,এবার তিনি যদি স্টেপানকে বিয়ে করেন তার বিবাহিতা নাম হবে স্টেপানোভা। তেমনি নোভোতনির মেয়ে নোভোতনা; ইয়ানা নোভোতনা ১৯৯৮ সালে উইম্বলডনে বিজয়ী হন। টেনিসে আরেক সফল দেশ বেলারুশেও ‘এ রুল’ চালু,যেমন আরিনা সাবালেঙ্কা,তাঁর পিতা আইস হকি প্লেয়ার সেরগে সাবালেনকো।

    পোলিশ মেয়েরা সাম্প্রতিক কালে টেনিসে অসাধারণ ফলাফল দেখিয়েছেন কিন্তু তাঁরা ওভার দলে পড়েন না। সাধারণত তাঁদের নামের শেষে আ-কার যোগ হয় যেমন আনিইয়েস্কা রাদভান্সকা ( সিটি ব্যাঙ্কে আমাদের উকিল স্টেফান স্কালস্কির সঙ্গে বিয়ের পরে তার এককালের জার্মান বান্ধবীর নাম ক্লদিয়া হর্ন থেকে হলো ক্লদিয়া স্কালস্কা) অথবা স্ট্যানিস্লাভস্কির স্ত্রী স্ট্যানিস্লাভস্কা। লন্ডনের গ্রিনডলেজ ব্যাঙ্কে অনেকদিন আগের পরিচিত পাভেল পোলানসকি ঠাট্টা করে বলতেন আমরা সবাই স্কি ক্লাবের মেম্বার! পোল্যান্ডে বহু নাম শেষ হয় ভিচ (wicz) দিয়ে,এই লেজুড় পিতৃ পরিচয় স্থাপনা করে, সেটি পুত্র কন্যা বিশেষে বদলায় না। বলকানে বিশেষ করে সার্বিয়া,ক্রোয়েশিয়াতে ভিচের (vic) অথবা ইচের (ic) ছড়াছড়ি – যেমন আইনস্টাইনের প্রথম স্ত্রী মিলেভা মারিচ, সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ইভো আন্দ্রিচ (“ দ্রিনার ওপরে সেতু”) নোভাক জোকোভিচ;ক্রোয়েশিয়ান ফুটবলার লুকা মদরিচ ( রিয়াল মাদ্রিদ )।

    রোমানিয়াতে ভিচ বা ইচের তুল্য হলো স্কু যেমন চাউসেসকু কিন্তু বুলগারিয়া বাদে গোটা বলকানের কোথাও মেয়েদের পদবির সঙ্গে কোন অক্ষর যুক্ত হয় না – রোমানিয়ান স্টার সিমোনা হালেপের বাবা স্টেরে হালেপ, সারবিয়ান স্টার আনা ইভানোভিচ জার্মান ফুটবলার শোয়াইনস্টাইগারকে বিয়ে করেছেন কিন্তু তিনি কোন ইভানকোভিচকে বিয়ে করলে হতেন আনা ইভানকোভিচ। সার্বিয়ার সর্বকালের সেরা মহিলা টেনিস খেলোয়াড় মনিকা শেলেশ আদতে হাঙ্গেরিয়ান। নোভি সাদে গিয়ে দেখেছি যে দুই মহিলাকে নিয়ে সে শহর সবিশেষ গর্বিত তাঁরা মিলেভা মারিচ ও মনিকা শেলেশ। হাঙ্গেরিয়ান ভাষাটাই গোটা ইউরোপ থেকে আলাদা - মেয়েদের নামেও সেখানে কোন এভা ওভা অথবা আ-কার ই-কারের বালাই নেই।

    পিতার পরিচয়ে সন্তানের পরিচয় একটি প্রতিষ্ঠিত প্রথা। তবে প্রত্যেক প্রজন্মে সেটি বদলে যায় না (ব্যতিক্রম শুধু ইহুদিদের ক্ষেত্রে;সেটা চালু ছিল অষ্টাদশ শতক অবধি এবং বর্তমান আইসল্যান্ডে )। আমাদের দেশে কোনো কালে এক মাধবের পুত্রের নাম দেওয়া হয়েছিল মাধবানি সেটাই থেকে গেছে, মাধবানির পুত্র/ কন্যাও মাধবানি। কৃষ্ণের পুত্র কৃশনানি।

    অগ্রিম ক্ষমা চেয়ে নিয়ে জানাই, নাম মাহাত্ম্য নিয়ে আজ এই বৃহৎ গৌরচন্দ্রিকার করার কারণ আমাদের দেশের একজন মহিলা!

    শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী!

    পুরনো ব্রাতিস্লাভা প্রথম ঘুরেছি আমাদের অফিসের ইভেতার সঙ্গে। সদ্য উন্মুক্ত ম্যাকডোনালডের সোনালি আর্চের উলটো দিকে আমাকে একটা বাড়ির কোনায় দাঁড় করিয়ে দিয়ে বলল ‘দেওয়ালে কি লেখা আছে মন দিয়ে পড়ো। তুমি পুরোটার মানে বুঝবে না, এটা স্লোভাক ভাষা। কিন্তু দুটো নাম চিনতে পারবে। এঁরা তোমার দেশের লোক ছিলেন’।



    সেই নাম ফলক

    ২০ আগস্ট ১৯৩৮
    সাক্ষাতের স্মরণে
    জওহরলাল নেহরু
    তস্য কন্যা
    ইন্দিরা গান্ধিওভা
    এবং
    ভ্লাদিমির ক্লেমেন্তিস*
    ভারতের স্লোভাক ও চেক বন্ধুরা
    ব্রাতিস্লাভা - শান্তির শহর


    ১৯৩৮ সালে নেহরু কৃষ্ণ মেনন ও কন্যা ইন্দিরাকে সঙ্গে নিয়ে ইউরোপে গিয়েছিলেন। ভারতের স্বাধীনতা দাবিতে লন্ডনের ট্রাফালগার স্কোয়ারে তাঁদের সভায় পাঁচ হাজার লোক জমায়েত হন। স্পেনের গৃহযুদ্ধে রিপাবলিকান পক্ষের প্রতি ভারতের সমর্থন জানাতে সে দেশেও যান। ইউরোপের অবস্থা,বিশেষ করে চেকোস্লোভাকিয়ার পরিস্থিতি তখন অগ্নিগর্ভ- হিটলার নিত্যদিন শাসাচ্ছেন সে দেশের অর্ধেক তাঁর প্রাপ্য নইলে তিনি সেনা পাঠিয়ে জবর দখল করবেন। প্রাগের বিপন্ন সরকার খুঁজছেন আন্তর্জাতিক সচেতনতা,সহায়তা। ব্রাতিস্লাভায় এই মিটিঙের পাঁচ সপ্তাহ বাদে ২৯শে সেপ্টেম্বর, ১৯৩৮ ব্রিটেনের প্রধান মন্ত্রী চেম্বারলেন ও ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী এদুয়ারদ দালাদিয়ে তৎকালীন চেকোস্লোভাকিয়ার পশ্চিম ও পূর্বের অংশ (বেশির ভাগ জার্মান অধ্যুষিত সুদেতেনলানড) হিটলারকে উপঢৌকন দিয়ে বললেন,‘এবার ঝুট ঝামেলা বাড়াবেন না, শান্তি বজায় রাখুন’। যাদের দেশের ভাগ বাঁটোয়ারা হচ্ছে যে সভায় সেই চেকোস্লোভাকিয়ার কোন প্রতিনিধি সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। এই সুযোগে পোল্যান্ড খুবলে নেয় উত্তরের কিছু জমি এবং হাঙ্গেরি দখল করে আজকের স্লোভাকিয়ার অংশ বিশেষ (মিউনিকের এই মহান সন্তুষ্টিকরন বা অ্যাপিজমেনট অনুষ্ঠানের আলোচনায় আমরা পোল্যান্ড ও হাঙ্গেরির জমি ডাকাতির কথাটা কখনো শুনতে পাই না)।

    ছ মাস বাদে জার্মান সৈন্য চেকোস্লোভাকিয়ার সম্পূর্ণ দখল নেয়।

    বাকিটা ইতিহাস।




    নেহেরুর নামের ডাকটিকিট



    প্রায় ষাট বছর আগের এই ফলকে বানান অন্য রকম হলেও জওহরলাল নেহরুকে চিনলাম। ইংরেজি বাদে প্রায় কোনো ইউরোপীয় ভাষায় ‘জ’ ধ্বনির সমার্থক কোন অক্ষর নেই। স্লোভাকে ডি জেড দিয়ে সেই ধ্বনি সৃষ্টি করা হয়েছে (জার্মান ভাষায় এই একই ধাঁচে লেখা হয়) কিন্তু নেহরুর পরে যিনি উল্লেখিত,তাঁকে আমরা চিনি অন্য নামে। শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধির নাম পরিবর্তন করে তাঁকে গান্ধিওভা বানানো হয়েছে। তাঁরও ছাড় নেই, তাঁকেও পরিচিত হতে হবে স্লোভাক কায়দায়,স্বামীর নামের সাথে ‘ওভা’ যুক্ত হয়ে। বিশ বছর বাদে,১৯৫৮ সালের কার্লোভি ভারি (জার্মান কারলসবাদ,চার্লসের স্নানাগার!) ফিলম ফেস্টিভালে মাদার ইন্ডিয়া ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার পেলেন নারগিসোভা! এখানে একটু শর্টকাট নেওয়া হয়েছিল,সঠিক আইন মানলে পুরস্কার ফলকে লেখা হতো নারগিস রাশিদোভা (তাঁর বাবার নাম আবদুল রাশিদ) সুনীল দত্তের সঙ্গে ততদিনে বিয়েটা হলে তিনি হতেন নারগিস দত্তভা (প্রসঙ্গত এক মেক্সিকান অভিনেত্রীকে বাদ দিলে কার্লোভি ভারি ফেস্টিভালে নন কমিউনিস্ট দেশের কেউ পাত্তা পেতেন না – নারগিস সেই ট্র্যাডিশন ভাঙ্গেন,এর পরে ১৯৭২ সালে রঞ্জিত মল্লিক ইন্টারভিউ ছবির জন্য বেষ্ট অ্যাকটর এ্যাওয়ার্ড পান)। স্লোভাকিয়াতে ফিল্মের পোষ্টারে,খবর কাগজে,টেলিভিশনে শ্যারন স্টোন হন শারনে স্টোনোভা, মেরিলিন মনরো হয়ে যান মেরিলিন মনরোভা।

    ছেলেদের নামের ওপরেও কঠোর অস্ত্রোপচার হতে দেখেছি পূর্ব ইউরোপের আরেক দেশে, লিথুয়ানিয়াতে। সেটা অন্য গল্প।

    পুরনো ব্রাতিস্লাভা – স্তারে মেসতো





    ব্রাতিস্লাভার পথে পথে




    পুরনো শহর ( স্টারে মেসতো ) ধাপে ধাপে নেমে গেছে দানিউবের ঘাটে। সেখান থেকে ছবিটি অতীব মনোরম। বাঁধানো চত্বরে হাঁটলে মনে হবে টাইম মেশিনে চড়ে আপনি কয়েকশ বছর পিছিয়ে গেছেন। জীর্ণ পুরাতনের প্রতি শ্রমিক কৃষকের সরকারের অসীম অনীহা দেখেছি একাধিক দেশে। কি ভাগ্যে প্রাগ, ভিলনিউস, টালিন, বুদাপেস্ট বেঁচে গেছে। বুখারেস্টকে স্মৃতির ভার থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত করার সঙ্কল্প যিনি নিয়েছিলেন সেই নিকোলা চাউসেস্কুর অকালে নিধন না হলে তিনি সে কাজটি নিশ্চয় সম্পূর্ণ করতেন। স্তারে মেসতোর চারটে পাড়া ছিল যার মধ্যে দুটি – ভিদ্রিতসা এবং সুকারমানডেল সোভিয়েত আমলে ভেঙ্গে ফেলা হয়। যাকে সোভিয়েতরা ভেঙ্গে উঠতে পারেন নি অসম্ভব যত্নের সঙ্গে তার সংস্কার করা হয়েছে,সেটি আজ দুনিয়ার মানুষ দেখতে আসেন। দানিউবের অন্য পাড়ে অবশ্য সোভিয়েত স্থপতি কলা কৌশলীরা আরেক ব্রাতিস্লাভা সৃষ্টি করে গেছেন যাকে ব্রুটালিস্ট আর্ট বলা হয় সেখানে যাবার টুরিস্ট বাস দেখি নি।

    জানি ব্রাতিস্লাভা আপনাদের ভ্রমণ তালিকায় স্থান পাবে না, আপনারা যাবেন প্রাগে। ভ্লাতাভা (মলদাউ) নদীর ওপরে চার্লস ব্রিজের (কার্লস ব্রুইকে) ডজন খানেক পাথুরে মূর্তির পাশে দাঁড়িয়ে সাতটা সেতু দেখবেন,প্রাগ দুর্গকে পেছনে রেখে ছবি তোলাবেন, আরেক প্রস্তর তোরণ পেরিয়ে চলে যাবেন বিশাল ওয়েনসেসলাস স্কোয়ারে। ব্রাতিস্লাভার সপক্ষে বলি, ভিয়েনা থেকে স্পিড বোট বা ট্রেন ধরে একদিনের জন্যে আসুন ব্রাতিস্লাভা,মাত্তর এক ঘণ্টা লাগে। একটি ওয়ার্নিং – স্টেশন এলাকাটি মোটে আকর্ষণীয় নয়, সোভিয়েত আমলের শিল্প। জানি,জার্মান স্থাপত্যকর্মে ভরা প্রাগ এক অসাধারণ সুন্দর শহর কিন্তু ব্রাতিস্লাভায় পাবেন সারা ইউরোপের হাতের,ছেনির কাজ! রোমানরা ব্রাতিস্লাভা দুর্গের ভিত গড়েছেন দু হাজার বছর আগে, শেষ করেছেন হাঙ্গেরিয়ানরা। পাহাড়ের ওপরে সেই কেল্লার প্রাচীরে দাঁড়ালে পরিষ্কার দিনে অস্ট্রিয়া ও হাঙ্গেরি দুই দেশের সীমানা দেখা যায়, ইউরোপের একমাত্র দৃষ্টান্ত। তিনশ বছর ছিল হাঙ্গেরিয়ান রাজধানী,মারিয়া থেরেসার আমল থেকে অস্ট্রিয়ান ও হাঙ্গেরিয়ান স্থাপত্য কলার সংমিশ্রণ। রাজা ফারদিনান্দের স্ত্রী,স্পেনের রাজকন্যা মারিয়ানা দিয়ে গেছেন তাঁর দেশের কিছু স্মৃতি, তেমনি পাবেন ফরাসি, জার্মান ও অনিবার্যভাবেই ইতালিয়ান ছোঁয়া। ব্রাতিস্লাভার ইহুদি ইতিহাস দীর্ঘদিনের, স্লোভাকিয়ার একমাত্র সিনাগগ দেখা যাবে এখানে, জামোচকা স্ট্রিটে পুরনো বাড়ি ঘর। ওয়ারশ, ফ্রাঙ্কফুর্টের মতন ফেক স্টুডিও সেট নয়।। পাহাড়ের ওপরে আছে প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত দেভিন দুর্গ,স্লোভেনিয়ানরা সেই নামটির অরিজিনালিটি দাবি করেন! নাৎসি জার্মানির কবল থেকে এ শহরকে উদ্ধার করতে প্রাণ দিয়েছিলেন প্রায় সাত হাজার সোভিয়েত সৈনিক, তাঁদের নাম লেখা সমাধিস্তম্ভ আরেক পাহাড়ের ওপরে।




    পালফি প্যালেস



    ভেন্তুরসকা স্ট্রিটে পালফি প্যালেস – দুশ বছর আগে সম্রাজ্ঞী মারিয়া থেরেসার জেনারেল লেওপোলড পালফি এটির নির্মাণ করেন। কিংবদন্তি মোতাবেক ১৭৬২ সালে ছ বছরের বালক ভলফগাঙ আমাদেউস মোৎসার্ট এখানে পিয়ানো বাজিয়েছিলেন। পরে পালফি বংশধরেরা ভিয়েনায় আস্তানা গাড়েন। তাদের এক অনেক উত্তর উত্তর পুরুষ,ক্রেডিট আনসটালট ব্যাঙ্কের নিকলশ পালফি আমার দীর্ঘদিনের ব্যবসায়িক সঙ্গী (বৈঠকি আড্ডায় পঞ্চম পর্ব পশ্য)। আমি জিজ্ঞেস করলে নিকলশ অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে বলেছেন পালফি প্যালেসে মোৎসার্টের পিয়ানো বাজানোর গল্পটি তিনি বাল্যকাল থেকে শুনে এসেছেন। হয়তো পালফি পরিবারের প্রতি প্রজন্মের শিশুদের শুনতে হয়েছে - কিছুই শিখলে না! জানো মোৎসার্ট ছ বছর বয়েসে পিয়ানো বাজিয়েছেন, এই আমাদের পূর্ব পুরুষের বৈঠকখানায়। আর তোমরা? ফুটবল নয় ভিডিও গেম নিয়ে পড়ে আছো!

    তখন ফোন ক্যামেরা ছিল না,কোন ছবি কেউ এঁকে রাখেন নি, কোন সাক্ষ্য প্রমাণ নেই! বরং পালফি নামটার জন্যই নিকলশ মরমে মরে থাকেন। সে প্যালেস নেই, তিজোরি কবে শূন্য। ব্যাঙ্কে কলম পিষে বা কীবোর্ড পিটে খেতে হয়!

    আমাদের দেশে আজকাল ইনভেডার কথাটা খুব চালু, সেদিন টেলিভিশনে দেখলাম যোগী আদিত্যনাথ বলছেন ভারতের প্রকৃত পরিচয় তাজমহলে নয়, সনাতন অট্টালিকা ও মন্দিরে। ব্রাতিস্লাভা আজ পরম যত্নে রক্ষা ও পরিচর্যা করে তাদের ইনভেডারদের স্থাপত্য,শিল্পকলা। চলতি কথা আছে একশ দেশের হাতের বা পায়ের চিহ্ন ভরে রেখেছে ব্রাতিস্লাভাকে। দেভিন বা ব্রাতিস্লাভা দুর্গ থেকে আদিগন্ত দেখা যায়,ঐ উজ্জ্বল দিন ডাকে স্বপ্ন রঙ্গিন, দূরে প্রশস্ত প্রসন্ন দানিউব বয়ে যায়। আহা কি চমৎকার এই বেঁচে থাকা।




    ব্রাতিস্লাভার গলিতে পাব



    পুরনো শহরের অলিতে গলিতে পাবেন পাব- বড়ো,মাঝারি এবং ছোট। বাইরের সাইনবোর্ড দেখে এমনি কোথাও ঢুকে পড়লে মনে হবে যেন বিনা এত্তেলায় কারো বসবার ঘরে প্রবেশ করেছেন, এমনই অন্তরঙ্গ। ভাষায় আটকাবে না, হলিউড, টেলিভিশন, ইউরোভিশনের দৌলতে ইংরেজি ভাষা আজ যথেষ্ট প্রচলিত যা আমার প্রথম যাত্রায় দেখি নি। স্লোভাক বিয়ার অতি উচ্চ মানের। কোন বিয়ার ? ক্লসটরনি(মঠ মন্দিরের) না স্টারোস্লোভিইয়েনসকি(প্রাচীন স্লোভাক) পিভোভার ? নামের জটিলতায় যাওয়া অর্থহীন,যে কোন সোনালি পানীয় হাতে তুলে নিন (ডুঙ্কেল বা ডার্ক বিয়ার বিশেষ দেখি নি, সেটা আইরিশ বেলজিয়ান ও জার্মানির কলোনের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া ভালো)। নাম যাই হোক না তার স্বাদ অনবদ্য। পান করলেই মনে হয় সমস্ত ব্রিটিশ বিয়ারকে অতি সত্বর নর্দমায় ঢেলে দেওয়া উচিত। বুঝেছি কেন এ দেশে মাথা পিছু বার্ষিক বিয়ার পানের পরিমাণ জার্মানি ও চেকের সঙ্গে সমান তালে পাল্লা দেয়।

    বহুকাল আগে নিউ ইয়র্কের বার্নস অ্যান্ড নোবেলের বইয়ের দোকানে চা কফি মেলে সেটা দেখে খুব অবাক হয়েছিলাম; চায়ের দোকানে বইটা অনুষঙ্গ না বইয়ের দোকানে চা? ব্রাতিস্লাভার কোনো পাবে পা দিয়ে মনে হয়েছে এটা হয়তো স্থানীয় পাবলিক লাইব্রেরি। ডজন দুয়েক টেবিল, তাকে ঘিরে নিতান্ত অসংলগ্ন ভাবে দু চারটে করে চেয়ার। টেবিলে ছড়ানো আছে বই;অনেক ভাষায়, কোনো বইয়ের পাতা খোলা,পাশে পেন্সিল। কেউ যেন পড়তে পড়তে উঠে গেছেন,একটু বাদে ফিরবেন। সেখানে বসে যেমন খুশি বই তুলে নিয়ে যতক্ষণ খুশি পড়ার কোন বাধা নেই। কেউ এসে জিজ্ঞেস করবে না আপনি আর কিছু নেবেন কিনা। আপন তৃষ্ণা কখন কিসের জন্য জাগে সেটা যথাস্থানে জানানোটা আপনার কাজ,অযথা আপনাকে বিরক্ত করে সে তথ্য জানতে তাঁরা অনিচ্ছুক।

    মারেকের অপেক্ষায় বসে ছিলাম, এদিক ওদিক তাকিয়ে একটা বইয়ের দিকে চোখ চলে গেল – ইংরেজিতে লেখা, The Jews of Czechoslovakia,১৯৬০ নাগাদ প্রকাশিত মোটা বাঁধানো বই, আকর গ্রন্থ -উনিশ শতকের ইহুদি সমাজ, চেক সাহিত্য (কাফকা জার্মানে লেখেন কিন্তু মিলেনা ইয়েসেনসকাকে আন্তরিক চিঠি লিখেছেন চেক ভাষায়) অর্থনীতি,সংগীত, চিত্রকলা নিয়ে একটি পাঁচশ পাতার রিসার্চ পেপার, পাতায় পাতায় সুন্দর হাতে লেখা নোট! প্রামাণ্য রেফারেন্স বই, কেবল লাইব্রেরিতে প্রাপ্য। আমাকে তাতে মগ্ন দেখে আধ লিটারের বিয়ার মাগ টেবিলে দিতে এসে বার কিপার বললেন,রাখবেন বইটা? আমি খুব অবাক হয়ে বললাম, না মানে, এই পাতা ওলটাচ্ছিলাম আর কি। তিনি হেসে বললেন, নিয়ে যান, এটা আপনাকে উপহার দিলাম!






    উপহার পাওয়া The Jews of Czechoslovakia



    *ভ্লাদিমির ক্লেমেন্তিস তখন চেকোস্লোভাকিয়ার বিদেশ মন্ত্রী ছিলেন। যুদ্ধের পরে কমিউনিস্ট প্রশাসনে আবার বিদেশ দফতর সামলান কিন্তু স্টালিনেরর রোষানলে পড়েন। তাঁকে প্রতিক্রিয়াশীল ও বুর্জোয়া জাতীয়তাবাদী দাগিয়ে দিয়ে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়।




    ক্রমশ...




    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • ধারাবাহিক | ১১ মে ২০২৪ | ৭৪১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • রমিত চট্টোপাধ্যায় | ১১ মে ২০২৪ ১৪:২৪531605
  • আগেও পূর্ব ইউরোপের মহিলা এথলিটদের নামের ক্ষেত্রে একটা প্যাটার্ন লক্ষ করেছি, কিন্তু এই লেখাটা পড়ে পুরো ছবিটা স্পষ্ট হল। ভীষন ভালো লাগলো এই  ব্রাতিস্লাভা সফর, পাবে বইয়ের ঘটনা টাতো অনবদ্য। খালি মনে হয়, ভারতে কবে এমন পাব আর তার মালিকের এমন ব্যবহার নরমালাইজ হবে। 
  • Rouhin Banerjee | ১১ মে ২০২৪ ১৭:৪৪531609
  • শুধু লুকা মদরিচ নন, এবারের ক্রোয়েশিয়া বোধ হয় ১৫ জনের দলে অন্তত ১১/১২ জনের নামের শেষে ইচ। ওদের অনুসরণ করে আমার প্রিয় পোষ্য, যাকে আমি এমনিতে ফুলকি বলে ডাকি, তার আরেকটা নাম হয়েছে - ফুলিকিচ।
     
    ব্রাতিস্লাভার মানস ভ্রমণ ভারী আনন্দ দিল। @রমিত, আমাদের পাব, কাফে বা রেস্তোরাঁ মালিকদের য়াগে আমাদের কাস্টমারদের নর্মাল হতে হবে। কলকাতাতে এখন বেশ কিছু কাফে / রেস্তোরাঁতে বেশ বই টই রাখা থাকে, পড়তে কোনো বাধাও নেই, কিন্তু পড়তে কাউকেই তেমন দেখিনা। ফলে কাফে মালিকের ইচ্ছেটাও জাগার কথা না যে কাউকে একটা বই উপহার হিসাবে দিই। 
  • হীরেন সিংহরায় | ১১ মে ২০২৪ ২১:২৭531611
  • আপনাদের সকলকে আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই এতদিন সঙ্গে আছেন  পূর্ব ইউরোপের পথ চলায় 
  • Amit | 120.22.4.177 | ১২ মে ২০২৪ ০৫:৫১531615
  • এই দেশগুলো সম্মন্ধে কিছুই জানতাম না। একটা পুরো নতুন জানলা খুলে যাচ্ছে। 
  • | ১২ মে ২০২৪ ১১:০৬531617
  • রৌহীন 
    কলকাতা বা সাধরণভাবে ভারতের কোথাও  কি তেমন ব্যপকভাবে বই পড়ার সংস্কৃতি আছে বলে মনে কর?  ইউরোপে যেমন লোকজনকে দৈনিক যাতায়াতের পথে টিউবে বা বাসে বই ( কাগজের / ট্যাব কিন্ডল ইত্যাদিতে) পড়তে দেখা যায় তেমনটা ভারতে খুব একটা দেখি নি।  আমেরিকায় আমি পিটার প্যান গ্রে হাউন্ডের বাসে প্রচুর ঘুরেছি। লোকজনকে সেখানেও বই পড়তে দেখেছি।  এদিকে ইপাব পূর্ববর্তী যুগে ৯ এর দশকে যখন হাওড়া ব্যান্ডেল মেন লাইনে নিত্যযাত্রী ছিলাম তখন আমার হাতে বই দেখে  কেউ কেউ ঘাড়ের পাশ থেকে ঝুঁকে দেখতেন। সেটা সানন্দা হলে অরায় কোলেই উঠে পড়বেন দেশ হলে উঁকিঝুঁকি ( দেশেও  কিছু ছবি থাকে তো) আর অনুষ্টুপ বা ওইরকম কোন বই হলে একবার উঁকি মেরেই রেহাই। দূরপাল্লার ট্রেনে আগেও এখনো আমার মত দু একজনই বই পড়ে। আজকাল ফোন ট্যাব আর ইন্টারনেটের সহজলভ্যতায় লোকে গুচ্ছ সিনেমা ডাউনলোড করে ট্রেনে ওঠে। 
     
    পুণে ব্যাঙ্গালোরে সপ্তাহান্তে কোন পার্কে গিয়ে বসে বই পড়ার একটা চল হয়েছে। কিছু বুকক্লাব পার্ক কর্তৃপক্ষের সাথে ব্যবস্থা করে শনি বা রবি বেশ কিছু সময় (৬-৮ ঘন্টা) পার্কের বড় গাছওয়ালা এলাকায় সাইলেন্ট জোন রাখে। সেখানে গিয়ে বসে বা শুয়ে মানুষে বই পড়ে, মোবাইল অ্যালাওড নয় সে সময়। 
     
    কলকাতায় এরকম কিছু আছে কি?  কোন্নগরের আশেপাশে নেই জানি। 
     
    তো, আমাদের সংস্কৃতিতে বই পড়া একটা অতি ব্যক্তিগত বিষয়।  খানিকটা প্রিভিলেজডও বটে। সামাজিকভাবে বইপড়া তেমন অ্যাক্সেপ্টেড ব্যবহার নয়।
  • Kishore Ghosal | ১২ মে ২০২৪ ১২:৫০531618
  • হীরেনদা, 
     
    শুরুতে আপনার নাম-মাহাত্ম্য বর্ণনায়, পুত্র - কন্যার নামকরণে আমাদের দেশের আর্য সংস্কৃতির কথা মনে পড়ে গেল যে। আমাদের শ্রীরামের নাম যেমন দাশরথি, দশরথের পুত্র বলে। রাঘব - রঘু বংশের পুতি বলে। পাণ্ডবরা পাণ্ডুর পুত্র। আবার তাদের মধ্যে তিনভাই কৌন্তেয় কুন্তীর পুত্র বলে। কর্ণের নামও কৌন্তেয় হওয়া উচিৎ ছিল, কিন্তু তিনি রাধেয় নামেও পরিচিত, তিনি পালিকা মাতা রাধার পুত্র বলে। আবার দ্রৌপদী দ্রুপদের কন্যা। সংস্কৃতের প্রত্যয়গুলি ষ্ণি, ষ্ণ, ষ্ণেয় ইত্যাদি। আর স্লাভিক, চেক,  রাশিয়ানদের প্রত্যয় গুলি বললেন, ওভা, এভা, ইচ, স্কি ইত্যাদি। 
     
    অবিশ্যি সংস্কৃতের এই প্রত্যয় প্রয়োগ শুধু সন্তানদের জন্যেই নয় - সন্তানবৎ শিষ্য বা ভক্তদের জন্যেও প্রযোজ্য ছিল। যেমন গর্গ ঋষির বংশধর এবং ঋষি বাচকনুর কন্যা  ব্রহ্মবাদিনী গার্গী বা বাচকন্বী, কিংবা আমাদের গোত্র সমূহ - কশ্যপ ঋষির বংশধর, কাশ্যপ। বৎস ঋষির বংশধর বাৎস্য। বিষ্ণুর ভক্তরা বৈষ্ণব, কিংবা শিবের ভক্তরা শৈব।
     
    আপনি এমন এমন বিষয় গল্পের ছলে তুলে আনছেন - খুলে যাচ্ছে মানব-সমাজের নতুন পরিচয় - এবং আশ্চর্য ইতিহাস।    
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:8c84:3563:ceb9:20a9 | ১২ মে ২০২৪ ১৩:০১531619
  • আজকাল কিছু কিছু কাফে বা পাবে দেখি বই রাখে, যদিও সেগুলো একেবারেই র‌্যন্ডম কালেকশান। তবে এই টই আর রৌহীন এর মন্তব্য পড়ে দুটো ঘটনা মনে পড়লো। 
     
    ব্যাঙ্গালোরে হোল ইন দ্য ওয়াল কাফে বলে একটা কাফে আছে, সেটা ব্রেকফাস্ট আর ব্রাঞ্চ এর জন্য বেশ বিখ্যাত। সেখানে একবার আমার শালাবাবু ব্রেকফাস্ট খাওয়াতে নিয়ে গেছিল। এই কাফেটার দোতলায় বেশ বড়ো বই এর কালেকশান আছে - প্রায় সব দেওয়ালেই বই এর তাক, মাঝে মাঝে দুয়েকটা ছোট চেয়ার, তাছাড়া খাওয়ার টেবিল চেয়ার। আমি ঘুরে ঘুরে দেখছিলাম, এক জায়গায় দেখি ফিলোজফির দারুন একটা কালেকশান, প্রায় এক তাক ভর্তি সক্রেটিস, রাসেল, কান্ট ইত্যাদি। দেখে এতো অবাক হয়ে গেছিলাম যে ম্যানেজারকে জিগ্যেস করেছিলাম কি ব্যাপার। তিনি বলেছিলেন একজন পুরনো কাস্টমার আছেন, উনি এই তাকের সব বই একটা একটা করে দান করেছেন। সেই কাস্টমারকে আমরা দুজনেই স্যালুট করেছিলাম। 
     
    আর একবার দুর্গাপুজোয় ব্যাঙ্গালোর গেছি। শালাবাবুর বাড়ির কাছেই এক জায়গায় পুজো হয়, সেখানে সবাই মিলে সন্ধ্যাবেলা গেছি, রাতে খাওয়াদাওয়া হবে। তো আমি বসে বসে বোর হচ্ছি, খানিক পরে শালাবাবু এসে বলে সঞ্জয়দা, কাছেই একটা মাইক্রোব্রুয়ারি আছে, যাবে নাকি? সেখানেও দেখি বইএর কালেকশান, তবে সবই ফিকশান। সেই ব্রুয়ারির মালিক শালাবাবুর ভালো বন্ধু আর জায়গাটা ফাঁকা ছিল, তাই উনি খানিক পর এসে আমাদের সাথে অনেক আড্ডা দিয়েছিলেন। উনি বলেছিলেন কেউ কেউ এসে একটা টেবিলে অনেকক্ষন কাটাতে ভালোবাসেন, সাথে বই পড়েন। বই আর মদের সম্পর্ক ইত্যাদি নিয়ে অনেকক্ষন আড্ডা হয়েছিল। 
  • Kishore Ghosal | ১২ মে ২০২৪ ১৩:১৬531620
  • @ দ ম্যাডাম, 
     
    আমাদের দেশে বই পড়ার নেশা (আমি নেশাই বলব, এত ভালো নেশা আর কিছু হতে পারে না) আজকাল দেখিই না।   - "আপনাদের সময়ের সব কিছু ভালো - আর এখন সবই মন্দ" - বয়েস হয়েছে বলে তরুণ প্রজন্মের কাছে  এমন বিদ্রূপ কখনো কখনো শুনেছি।  কিন্তু তাও বলবঃ- বই পড়া মারাত্মক ভাবে কমে গেছে, 
     
    যেমন, বছর বিশেক আগেও  আমাদের পাড়া থেকে বেরিয়ে বড়ো রাস্তায় ওঠার মুখে ফুটপাথে  তিনখানা ম্যাগাজিন স্টল ছিল - বাংলা ইংরিজি, নানা বিষয়ের ম্যাগাজিনে ভরপুর থাকত স্টলগুলি, এখন আমাদের নিকটতম ম্যাগাজিন স্টল রাসবিহারী মোড় কিংবা লেক মার্কেট ফুল-বাজারের কোনায়। 
     
    ট্রেন জার্নি এবং উড়ান জার্নিতে  সাইড ব্যাগে একটা বই থাকবে না, এমন কোন দিন হয়নি। আমাদের অনেক সহযাত্রীদের সঙ্গে - অবশ্যই পাৎলা বই হলে - বই বদলাবদলি করেছি - গন্তব্যে পৌঁছে - ট্রেনে চেন্নাই, ব্যাঙ্গালোর কিংবা বোম্বাই যাওয়ার সময়। 
     
    এভাবেই ক্রমে ক্রমে আমরা  যৌবন, মধ্যবয়স পেরিয়ে, বার্ধক্যে পৌঁছে গেলাম - সেই রকম সহযাত্রী আর পাইনি - ওপরের বাংক থেকে বই থেকে  চোখ ঘোরালেই দেখি মোবাইলে মগ্ন প্রাণীরা - শিশু থেকে বৃদ্ধ- না কেউই ই-বুক পড়েন না।    
  • Rouhin Banerjee | ১২ মে ২০২৪ ১৪:২৪531622
  • দূরপাল্লার জার্নির কথায় মনে পড়ল, একবার দিল্লী থেকে নর্থ ইস্ট এক্সপ্রেসে শিলিগুড়ি আসছিলাম, রিজার্ভেশন তো ছিলই না, থাকলেও লাভ হত না। স্লিপার কামরার মাঝের বার্থগুলোও তুলে দিয়ে তাতে লোক বসেছিল। আমি নীচের একটা সিটে আরও তিনজনের সাথে চেপেচুপে বসেছিলাম এবং ওভাবেই বারসোই অবধি আসতে হয়েছিল। জল বা খাবারের জন্য জানলার ধারের লোককে টাকা দিলে তিনিই আবার সেটি আমাদের হাতে পৌঁছে দিচ্ছিলেন। সালটা সম্ভবতঃ ২০০২। তো এই জার্নিতেই আমার সদ্য কেনা হ্যারি পটার অ্যান্ড দা গবলেট অফ ফায়ার প্রায় সবটাই শেষ হয়ে গেছিল। লাস্ট দুটো চ্যাপ্টার স্টেশনেই শেষ করে তারপর রিক্সায় ইঠেছিলাম।
  • অরিন | ১২ মে ২০২৪ ১৫:০৫531623
  • আমার দেখা বেশীর ভাগ এযারপোর্টের বইয়ের দোকান ভুলভাল। এতৎসত্ত্বেও এয়ারপোর্টে দৈবাৎ গেলে সেই বইয়ের দোকানের ভেতরে চারপাশেই পোকার মত ঘুরঘুর করি | সিঙ্গাপুরের চাঙি এয়ারপোর্টের তিন নম্বর টারমিনালের বইয়ের দোকানটা এখন অবধি আমার দেখা এয়ারপোর্টের বইয়ের দোকান হিসেবে মোটামুটি উৎরে যায় | গতবার কলকাতা থেকে ফেরার সময় বেশ কিছু দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার বই সংগ্রহ করেছিলাম। 
     
    অবশ্য এয়ারপোর্টে ভাল বইয়ের সন্ধান পাওয়া সহজ নয় যে কারণে এয়ারপোর্ট ফিকশন বা নন-ফিকশন ব্যাপারটার একটা সুনাম বা দুর্নাম রয়েছে। আমার যেমন ভারতে ট্রেনে করে যাবার স্মৃতিতে হুইলারের স্টল থেকে বই ম্যাগাজিন কেনার ব্যাপারটি অমলিন, প্রচুর বই ওইভাবে জুটত, সে বইয়ের বাঁধাই ইত্যাদি যাই হোক| 
     
    এবারে কলকাতা থেকে নিউ জলপাইগুড়ি যাবার সময় যে ট্রেনটায় গেছিলাম এবং সে যে সব স্টেশনে হল্ট দিয়েছিল ম্যাগাজিন/বইয়ের স্টল বিশেষ দেখলাম না।  হতে পারে আজকাল আইপ্যাড বা কিন্ডলের কল্যাণে বা ট্যাবলেট ডিভাইস হয়ে বই পড়ার অন্যরকম সুবিধে হয়েছে | তাহলেও কাগজের বইয়ের তুল্য কিছু হয় না। আমি আজকাল আর ক্লাইমেটের কারণে প্লেনে উঠি না (খুব emergency কিছু না হলে বা transpacific/transoceanic flight বাদে প্লেনে উঠব না কখনো), তবে  বাসে বা ট্রেনে বা জাহাজে/নৌকোয় যেতে হলে পেপার বই আর বুক লাইটে দিব্য কাজ চলে যায়। 
     
    ড্রাইভ করার সময়, বাইক চালানোর সময়, বা নৌকো চালানোর সময় সিডি বা ইউএসবিতে বই রেখে কনসোল থেকে বা হেডফোনে বা হেলমেটের ভেতরে শুনতে শুনতে যেতে ভাল লাগে, তবে সব লেখক তাদের বই ঠিকমত recite করতে পারেন না, একেকজন অতি অখাদ্য (যেমন Bill Bryson, :-), গাড়ী একসিডেন্টের সমূহ সম্ভাবনা ) | 
    আমাদের এখানে একটা জমজমাট বুক ক্লাব রয়েছে, এবং সেখানে ইলেকট্রনিক বই চলে না, বহু দাগ দেওয়া একাধিক বইয়ের চর্চা কাটাছেঁড়া চলে, বুঝতে পারছেন হয়ত,  এদের বেশীর ভাগই ষাটোর্ধ জনতা। 
  • রমিত চট্টোপাধ্যায় | ১২ মে ২০২৪ ১৫:১৮531624
  • আমি যেখানেই ঘুরতে যাই, সাথে 5টা করে বই প্যাক করে নিয়ে যাই। একবার মধ্যপ্রদেশের ট্রেনে বসে বই পড়ছি, উল্টোদিকের এক অবাঙালি ভদ্রলোক ফোনে জোরে জোরে রিলস দেখছিলেন, আমি ভলিউম কম করতে বলায় একটু মনক্ষুণ্ণ হলেন। তারপর অনেক ক্ষণ ধরে আমায় লক্ষ করার পর বললেন, কেয়া হারবখত ইয়ে পড়তে রেহতে হ্যায়, আঁখ সার নেহি জাতা! 
  • dc | 172.225.219.57 | ১২ মে ২০২৪ ১৫:৩৬531625
  • ছোটবেলায় ট্রেনে করে কোথাও ঘুরতে গেলেই স্টেশনে হুইলার বা হিগিনবথামের দোকানে যেতাম। বই পড়তাম আর বাইরেটা দেখতাম। 
  • অরিন | ১২ মে ২০২৪ ১৫:৩৮531626
  • কিশোরবাবু, 'এখন আমাদের নিকটতম ম্যাগাজিন স্টল রাসবিহারী মোড় কিংবা লেক মার্কেট ফুল-বাজারের কোনায়।" লেক মার্কেট চত্বরটায় এখনো কিছু স্টল আছে,একটা ফুলের দোকানগুলোর গায়ে, আরেকটা কমলা বিলাসের গায়ে (এখন তাকে মনে হয় ব্যনানা লিফ বলে) | পুরনো স্মৃতি উসকে এপিক বলে বইয়ের দোকান একটা ছিল, এখন মনে পড়ছে না সে বইয়ের দোকান আছে না গেছে। রাসবিহারী মোড়ের দোকানটায় প্রচুর লিটল ম্যাগাজিন রাখত, এখনও সে "ঘাসবিহারী" হয়েছে বলে মনে পড়ছে না, :-), মোটামুটি ম্যাগাজিন ভালই পাওয়া যায় মনে হয়। 
  • | ১২ মে ২০২৪ ১৫:৪৩531627
  • উফফ আজকাল ফোনের সাথে হেডফোন দেয় না ফলে লোকে রিলস ভিডিওকল সবই স্পীকারে রেখে চালায়। আমি একগোছা ইউজ এন্ড থ্রো হেডফোন কিনেছি রাস্তায় ঘাটে অফার করার জন্য। 
     
    কিশোর, 
    এই ম্যাডামটা বাদ দিন প্লীজ।  নামের আগেপরে সাফিক্স প্রেফিক্সে কেমন অস্বস্তি হয়। দ'ই ঠিক আছে। 
     
    হ্যাঁ ম্যাগাজিনের স্টল আমাদের এখানেও কমেছে। লাইব্রেরীগুলো হঅয় উঠেই গেছে নয় টিমটিম করে চলে। কিন্তু লোকের পড়ার অভ্যেস কমেছে কিনা নিশ্চিত নই।  আমি নিজেই যেমন ইপাব বা মোবি কপি পেলে আর হার্ডকপিতে যাই না।  এক তো মোটা বই বেশীক্ষণ হাতে ধরে পড়লে হাত ব্যথা হয়। তাছাড়া ইংরিজি পেপারব্যকের প্রিন্ট এত ছোট হয় যে আমার পড়তে অসুবুধে হয় খুব। চিমটি দিয়ে ফন্ট বাড়ানো যায় না তো। 
     
    তা ফ্রিতেই এত রিডিং মেটেরিয়াল অ্যাভেইলেবল যে কেনার দরকার অনেক সময় পড়েই না। যেটা মনে হয় বই অনেকটাই ব্যক্তিগত হয়ে গেছে। আগেও সামাজিকভাবে খুব বেশী বইপড়ুয়া চারপাশে দেখতাম না। এখন বই সোর্সিং অন্যভাবে হচ্ছে বলেই হয়ত সেই পড়ুয়াদের সবসময় দেখা যাচ্ছে না। 
  • Kishore Ghosal | ১২ মে ২০২৪ ১৬:০২531629
  • আচ্ছা, দই সই।  
    আপনি বলতে মনে পড়ল ওগুলোকে রিলস বলে...আজকাল খুব দেখে ছেলে-বুড়ো সব্বাই...ভীষণ লাউড ...আর কিছুকিছু সাউণ্ড এফেক্ট থাকে যেগুলো কানে এলে  আমার ভেতরে একটা হিংস্র সত্ত্বা জেগে উঠতে চায়... দমিয়ে রাখি অবশ্যই ... ও হ্যাঁ  আধঘন্টা অন্তর ভরপেট খেতে না চাওয়া বাচ্চাদের মায়েরা - ওই রিলস চালিয়ে বাচ্চার হাতে ধরিয়ে দেয়...বাচ্চাগুলোও গপগপ করে খেয়ে নেয় আর ফোনটাকে লালে-ঝোলে মাখিয়ে...    
  • Kishore Ghosal | ১২ মে ২০২৪ ১৬:১৩531630
  • অরিন, 
    লেক মার্কেটের ফুলবাজার ছাড়িয়ে ল্যান্সডাউন মোড়ের দিকে যেতে ডানদিকে একটা বইয়ের দোকান আছে - সেখানে সমগ্র বইয়ের ছড়াছড়ি - শরৎ সমগ্র, নিমাই ভটচায সমগ্র শিবরাম সমগ্র ফেলুদা সমগ্র ইত্যাদি...মনোমত বই খুঁজতে গেলে কলেজ স্ট্রিট ছাড়া তেমন  নিশ্চিন্ত গতি  নেই।  
  • অরিন | 2404:4404:1732:e000:a85b:8345:50b7:7dd1 | ১২ মে ২০২৪ ১৬:২৩531631
  • কিশোর বাবু, রাসবিহারী এভিনিউ ধরে দেশপ্রিয় পার্ক পেরিয়ে গড়িয়াহাট আর গোলপার্কের মাঝামাঝি দু একটা ভাল পুরনো বইয়ের দোকান ছিল, ছোট দোকান, কিন্তু বই বললে আনিয়ে দিত (এখন জানিনা)। কলেজ স্ট্রীট হয়ত ভাল, তবে বই ব্রাউজ করা যায় না। 
    আগে পুরনো দিল্লির দরিয়াগঞ্জে ফি রবিবার করে পুরনো বইয়ের একটা দুর্দান্ত বাজার বসত, জানিনা এখন চলে কিনা। 
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:ac49:27d0:c795:86bf | ১২ মে ২০২৪ ১৭:০৪531632
  • গোলপার্ক থেকে গড়িয়াহাটের দিকে আসতে ফুটপাথে অনেক পুরনো বই এর দোকান ছিলো। ওগুলো এখন আর নেই? 
  • | ১২ মে ২০২৪ ১৯:২৩531640
  • হ্যাঁ দুটো দোকান এখনো আছে। তার মধ্যে একজন বিক্রেতার ব্যবহার বেশ খারাপ।  
     
    এছাড়া অনেকেই জানেন নিশ্চয়ই তবু যদি কারো কাজে লাগে - ২৬শে জানুয়ারী, ১লা মে আর ১৫ই আগস্ট কলেজ স্ট্রীটে প্রেসির সামনে রাস্তায়  মস্তবড় পুরানো বইয়ের বাজার বসে।  ২রা অক্টোবর এবং প্রত্যেক রবিবারেও বসে তবে অনেক ছোট,  সংগ্রহে বৈচিত্র‍্যও অনেক কম।  
  • Prativa Sarker | ১২ মে ২০২৪ ২৩:০৮531647
  • ওভা-র চক্করে ইন্দিরা গান্ধীও পড়ে রয়েছেন শুনে বেশ লাগল।
  • যোষিতা | ১৩ মে ২০২৪ ০২:০২531651
  • যথারীতি দাপটের সঙ্গে নাভ্রাতিলোভাকে বাদ দিয়েছেন দেখলাম।
    গুড জব।
    আর নাম নিয়ে যে আলোচনা, সেটা উটের পাকস্থলী।
    তবে চিন্তা নেই বই হয়ে বেরোবে বাংলা ভাষায়। পাঠক হৈ হৈ করে পাকস্থলীই জানবে।
     
  • khik khik | 71.4.186.194 | ১৩ মে ২০২৪ ১১:৪২531663
  • হয়েছে কি আগে যোষিতা মংগোলিয়ায় মামদোবাজি টাইপের গপ্প নামাতো গুচতে। এখন হিরেনবাবুর অপূর্ব অভিজ্ঞতাসমৃদ্ধ লেখার পাশে জোশিতার ঢপের গপ্প একেবারে কানা হয়ে গেছে। কেউ পাত্তা দেয়না। ফলত এই হিংসুটেপনা।
  • s | 100.36.114.105 | ১৩ মে ২০২৪ ১৭:৪৮531671
  • আগের এপিসোডগুলোর মতন আবারো খুব ভাল লাগল।

    হীরেনবাবুর দেওয়া পদবী তলিকায় আরো দু একটা যোগ করছি। আমার প্রাক্তন সহকর্মীরা অনেকেই ছিলেন ভেঙে যাওয়া সোভিয়েত ইউনিয়নের লোক। তাদের কাছেই এই লাস্ট নেম কিভাবে রাখা হয় জেনেছিলাম। জর্জিয়ার লোকের লাস্ট নেম সাধারনত হয় ইলি বা ইলাই দিয়ে। স্ট্যালিন ছিলেন জর্জিয়ান আর ওনার নামেও ইলি আছে। আর আর্মেনিয়ানরা সবাই আন। আমার সহকর্মী ছিলেন খাচাটুরিয়ান। ski হলে পোলিশ আর sky হলে রাশিয়ান বা ইউক্রেনিয়ান। এমনকি রাশিয়ান নাম শুনে জুইশ বা মুসলিম কিনা বুঝতে পারতাম।
  • হীরেন সিংহরায় | ১৪ মে ২০২৪ ০৩:২২531701
  • ধন্যবাদ ! 
     
    ঠিক ! সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রথম আন্তর্জাতিক খ্যাতি পেয়েছেন জর্জিয়ান আলেকসান্দ্র (আলেকস) মেত্রেভেলি, ১৯৭৩ সালের উইমবলডন রানার-আপ।  উইনার চেকোস্লোভাকিয়ার ইয়ান কোদেশ । স্তালিনের পদবি জুঘাশভিলি এছাড়া জর্জিয়াতে পাওয়া যায় আদজে (adze ) যেমন সোভিয়েত বিদেশ মন্ত্রী এদুয়ারদ শেভরনাদজে । এই লি   বা আদজে সবার অর্থ এক – কারো  ছেলে বা মেয়ে , আমাদের মাধবানি কিশনানির  মতো।  পঁয়ত্রিশ লক্ষ (দেশে ত্রিশ বিদেশে পাঁচ ) আর্মেনিয়ান ‘ ইয়ান’  হয়ে রইলেন , যদিও ইয়ান একটু অন্য রকম বানানেও লেখা হতে পারে । মানেটাও ওই একই, ইয়ান বোঝায় কোন কালে একজনের পুত্র বা কন্যা -যেমন আইরিশ ফিটজেরাল্ড বা ও’ব্রায়েন   পোলিশ ski রাশিয়ান sky থেকে মেয়েরা হয়ে যান  ska বা skaya! সোভিয়েত প্রশাসনের আমলে তাবৎ স্তান( ফারসি শব্দ) গুলিতে ইসলামিক নামের রাশিয়ানাইসেশন হয়েছে ।  আমার কন্যার একটি পলিটিকাল ইকনমি বইয়ের লেখিকা তাতারস্তানের  গুলমাজ শারাফুদ্দিনোভা , কাজাখস্তানের মন্ত্রী আখমেতভ ( আহমেদ ) আলিয়েভ (আলি ) ঠিক যেমনটি  আপনি লক্ষ করেছেন । প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়নের ইহুদি মূলের মানুষদের নানান নাম দেখেছি;  জার্মানিক ইহুদি লজিক দিয়ে কিছু চিনতে পারি যেমন লেখক  ইলিয়া এরেনবুরগ, লেভ ব্রনস্টাইন (ট্রটস্কি ), অলিগারক মিখাইল ফ্রিডমান কিন্তু অনেক  ক্ষেত্রে  এই থিওরি খাটে না দেখে হতাশ হই !  যেমন অলিগারক আলক্সান্দার স্মলেন্সকি , ভ্লাদিমির পোতানিন এবং অবশ্যই রোমান আব্রাহামোভিচ ( যদিও আব্রাহাম সেদিকেই ইঙ্গিত করে !)।
     
  • হীরেন সিংহরায় | ১৪ মে ২০২৪ ০৩:২৪531702
  • টেনিস প্রথম আন্তর্জাতিক খ্যাতি পেয়েছেন আলেকস মেত্রেভেলি ( টেনিস বাদ পড়ে গেছে ওপরে ) 
  • হীরেন সিংহরায় | ১৫ মে ২০২৪ ২০:৫২531766
  • স্লোভাক প্রধান মন্ত্রী আততায়ীর গুলিতে গুরুতর জখম- এক ঘন্টা আগের খবর। তাঁর মঙ্গল কামনা করি
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খারাপ-ভাল মতামত দিন