এই পুরো ব্যাপারটা যদি দেখেন, এর মধ্যে "শিক্ষা হল অধিকার" বা মানকল্যাণের কোনো জায়গা নেই। বোর্ড একটি অর্থকরী প্রতিষ্ঠান, তারা অনুমোদনের বিনিময়ে পয়সা নেয়। দেয়না। স্কুলও একটি অর্থকরী প্রতিষ্ঠান। তারা সম্পূর্ণ বেসরকারি। তারা টাকা তোলে ছাত্রদের কাছ থেকে। তার থেকে শিক্ষকদের মাইনে দেয়। নিয়োগও করে তারা এবং মাইনেও তারাই ঠিক করে। মাইনে ঠিক কী হবে, তার আইন নেই, কিছু উপদেশ আছে। ফলে সেটা কোম্পানির ইচ্ছে। এক কথায় পুরোটাই ব্যবসা। কত ফি হবে, কত মাইনে হবে, সবশুদ্ধ। কোথাও কোনো নির্দিষ্টতা নেই। হ্যাঁ, কোম্পানির মালিক লাভের গুড় পকেটে নিয়ে বাড়ি যেতে পারবেননা। কিন্তু তাঁরা গুষ্টিসহ ডিরেক্টর হয়ে মোটা টাকা মাইনে নিলে সেটা সম্পূর্ণ বৈধ। ... ...
এতদিন পর্যন্ত বিধর্মীরা তেড়ে লাভ-জিহাদ চালিয়ে যাচ্ছিল, এবার পাল্টা হিসেবে হুপচতুর্দশীতে তাদের ধর্মস্থানের সামনে লাফালাফি শুরু হল। এর নাম দেওয়া হল লাফ-জিহাদ। আর যারা লাফ দেয়, তাদের নাম হল ল্যাজোদ্ধা। সব চেয়ে বড় ব্যাপার হল হুগলীতে। বলাগড়ের কাছে গুপ্তিপাড়া বলে এক জায়গায় পুরোনো ভাঙা মসজিদের নিচে পাওয়া গেল এক হনুমানের ল্যাজ। হনুমানকে মেরেই ওই মসজিদ তৈরি হয়, জানার পর তৎক্ষণাৎ মসজিদ ভেঙে ফেলা হল। স্বয়ং উনিজি হাজির হয়ে গুপ্তিপাড়ার নাম বদলে করে দিলেন হুপ্তিপাড়া। সেখানে তৈরি হল এক বিরাট হুপমন্দির। পুজোর নতুন নাম হল হুপাসনা। ... ...
বিখ্যাত ঐতিহাসিক রঙ্গনা রানাকৌতের মতে, মিডিয়া আবিষ্কার হয় ভারত স্বাধীন হবার কুড়ি বছর আগে। তার আগে ছিল প্রস্তরযুগ। লোকে শিকার করে আমিষ খেত। ইন্টারনেট এবং কেবল টিভি আবিষ্কার করার উদ্দেশ্য ছিল, এই অন্ধকার থেকে মানুষকে আলোর দিকে নিয়ে আসা। কিন্তু তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকারের অপদার্থতার ফলে, কাজটা করা যায়নি। ইন্টারনেট আবিষ্কারের পরও দেখা যায় মানুষকে কষ্ট করে ভেবে-ভেবে গুগল সার্চ করতে হচ্ছে। এমনকি টিভি চালালেও উঠে উঠে চ্যানেল বদলাতে হচ্ছে। বনে বনে ঘুরে শিকার করার থেকে কাজটা কম কষ্টের নয়। ... ...
বাংলায় কেন এরকম হয়না, এটা নেটে সাড়ে তিন মিনিট সার্চ করলেই জানা যেত। জানা যেত, যে, সিনেমাটার অন্যতম প্রযোজক শ্রীমতি জ্যোতি দেশপান্ডে ( সার্চ করেই জানলাম), যিনি ভায়াকম ১৮র সিইও, যেটা মূলত রিলায়েন্সের কোম্পানি । নারী থেকে ফুটবল, সিনেমা থেকে রাজনীতি, সবকিছুই এখন যাঁদের হোলসেল বিজনেস, যাঁদের অনুমতি ছাড়া একটা পাতাও পড়েনা নানা বাগানে, এই সিনেমার পিছনে সেই আম্বানিদের কল্যাণ এবং দক্ষিণহস্ত আছে, তাই এইরকম 'ব্যতিক্রমী' সিনেমা হয়েছে হিন্দিতে। আম্বানি বা অন্য বড়ো খেলোয়াড়রা ( যেমন নেটফ্লিক্স বা অ্যামাজন) কখনই বাংলা সিনেমায় বিনিয়োগ করবেননা, তাই বাংলায় হবেনা। আশ্চর্যের কিছুই নেই, এটাই যুগের হাওয়া। বিশেষ করে আম্বানিদের নিয়ে এ কোনো নতুন কথা নয়, যে তাঁরা ওয়েস্ট-ইন্ডিয়া-কোম্পানির অংশ, পূব দিকে থেকে সম্পদ জমা করেন পশ্চিমে, মুকেশ এই সেদিন নিজেই বলেছেন, তাঁরা আদ্যন্ত গুজরাতি, বেশিরভাগ বিনিয়োগই ওইদিকে। ফলে বাংলায় কেন হয়না, কেন হিন্দিতে হয়, প্রশ্নটা "ওদিকে বিয়ে খেতে বিল গেটস আসে, এদিকে কেন আসেনা"র মতোই বেকার এবং অশ্লীল। ... ...
এসবের মধ্যেই জানা যায়, মুখ্যমন্ত্রী হাইকোর্টকে বিজেপির দালাল বলে কেলোর কীর্তি করেছেন। বলেছিলেন আগেই, হাইকোর্ট বিশেষ রা কাড়েনি, শুধু এক বিচারপতি বলেছিলেন, এবার পঞ্চাশ হাজার চাকরি খেয়ে নেব কিন্তু। সেটায় কারোরই তেমন কিছু ক্ষতি হয়নি। বিজেপিরও কোনো সমস্যা ছিলনা। কিন্তু কার কোথায় নরম জায়গা আছে কে জানে, কোথা থেকে ব্যাপারটা গায়ে লেগে যায় বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের এবং তিনি নাকি আবার মামলা করতে চলেছেন। এবার আর শিক্ষকদের না, চাকরি খাবেন আস্ত মুখ্যমন্ত্রীর। ... ...
মামলার গোড়া থেকে আমার করা সারসংক্ষেপ এরকমঃ ১। অযোগ্যদের সরানো নয়, পুরো প্যানেল যে বাতিল (সেট অ্যাসাইড) করতে হবে, এবং আবার অ্যাপয়েন্টমেন্ট দিতে হবে, এই দাবীটা প্রাথমিক ভাবে তোলেন বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য। ২। পিটিশনারদের আইনজীবী আশিষ কুমার চৌধুরি, এরকম কোনো দাবী তোলেননি, অন্তত তুলেছেন বলে লেখা নেই। চৌধুরি বলেন, যে, দুটো অনিয়ম হয়েছে। এক, পার্সোনালিটি টেস্টের নম্বর বাকি নম্বরের সঙ্গে যোগ করা হয়নি। দুই, সিনিয়ারিটি বিবেচনা করা হয়নি। এছাড়াও তিনি কিছু খুচরো অনিয়মের কথা বলেন। সবকটাতেই র্যাঙ্ক বদলে যায়, ফলে প্রকৃত যোগ্য চাকরি নাও পেতে পারেন, বা পিছিয়ে যেতে পারে। ... ...
অনেকেই জানেননা, ভারতবর্ষে প্রথম পাঁচ বছরের হিন্দুত্ববাদী সরকারের কাছা খুলে দিয়েছিল একটা প্রতিস্পর্ধী মিডিয়া, যার নাম তেহেলকা। শুরু করেছিলেন তরুণ তেজপাল এবং অনিরুদ্ধ বহাল। বাজপেয়ি জমানা তখন 'শাইনিং', তেহেলকা নিয়ে এল স্টিং অপারেশন 'অপারেশন ওয়েস্ট এন্ড'। তাতে দেখা গেল বিজেপি সভাপতি বঙ্গারু লক্ষণ থেকে শুরু করে সরকারি দল এবং দপ্তরের কচি এবং বাস্তুঘুঘুরা প্রতিরক্ষার নাম করে পয়স খান। তাঁরা আবার কারগিল-কারগিল কর ভোটও চান। তখনও ওয়াশিং মেশিন জমানা আসেনি। ভাবতেও আশ্চর্য লাগে এই এক স্টিং অপারেশনের ঠেলায়, প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হয়েছিল। জেল হয়েছিল বিজেপি সভাপতির। সরকার খড়্গহস্ত হয়েছিল তেহেলকার উপরে। তেহেলকা প্রায় উঠে যাবার উপক্রম হয়। অনিরুদ্ধ বহাল তেহেলকা ছেড়ে কোবরাপোস্ট খোলেন। কিন্তু, বাজপেয়ি সরকার জেলে পোরেনি দুজনের কাউকেই। মোদি জমানার আগে ওরকম ভাবাই মুশকিল ছিল। ... ...
উনিজির কোনো এক অর্থনৈতিক উপদেষ্টার নাম সঞ্জীব সান্যাল। তিনি বাঙালি সম্পর্কে চাড্ডিরা যা বলে এবং ভবে থাকে, আরেকবার বলেছেন। মোদ্দা কথা হল, বাঙালি ধূমপান করে, মদের গ্লাসে চুমুক দিয়ে সারা বিশ্বের ব্যাপারে জ্ঞান দেয়, আর মৃণাল সেনের সেনের ছবি দেখে, এই হল তার অধঃপতনের কারণ। এইসব অর্থনৈতিক উপদেষ্টাকে কোথা থেকে বেছে আনা হয় কে জানে, উনিজি বলেই সম্ভব। কিন্তু সেটা কথা না, কথা হল এই নিয়ে বাঙালিরও তেমন আলোড়ন নেই। এমনকি মমতাশঙ্কর নিয়েও যতটা আলোড়ন, তার ধারেকাছেও নেই। কারণ, এই গল্পটা দিয়ে দিয়ে শিক্ষিত বাঙালিকে একরকম করে খাইয়ে দেওয়া গেছে। "বাঙালি অপদার্থ" বললে তারা জাতিবিদ্বেষ খুঁজে পায়না, পবন সিং এর মতো লোকে বাঙালি মেয়েদের নিয়মিত ব্যবধানে "মাল" বললে তাদের কিছু এসে যায়না। ... ...
বক্ষবিভাজিকা নিয়ে এত হুজ্জুতি স্রেফ মনুষ্যসমাজেই দেখা যায়। হামলে দেখা হোক, নিন্দে করা হোক বা দেখানো। সে অবশ্য মনুষ্যপ্রজাতি অনেক ক্ষেত্রেই একমেবাদ্বিতীয়ম। এর আগে কেউ জামাকাপড়ও পরেনি, পরমাণু বোমও বানায়নি। কিন্তু তার পরেও জিনিসটা জৈবিকভাবেই রহস্যজনক। কারণ দুখানা জিনিস কোন যুক্তিতে এরকম, কেউ জানেনা। এক হল পুরুষের যৌনাঙ্গ। সেটা এতটাই বাইরে, এতটাই অরক্ষিত যে আক্রমণের লক্ষ্য। ওই জন্যই খেলতে গেলে আলাদা করে গার্ড নিতে হয়, '... তে ক্যাঁত করে লাথি মারব' এই সব প্রবাদের জন্ম হয়েছে। জায়গাটাকে এতটাই দুর্বল করে রেখে বিবর্তনের নিরিখে পুং দের কী লাভ হয়েছে কে জানে। কিন্তু সেটা আপাত কারেন্ট অ্যাফেয়ার্সে না। আজকের বিষয় হল মহিলাদের বুক। সেটাও সম্পূর্ণ উদ্ভট অপ্রয়োজনীয় একটা ব্যাপার। দুগ্ধগ্রন্থির জন্য অত জায়গা লাগেনা। শিম্পাঞ্জি কি গরিলা, কারো স্তন অত বড় না। গরু তো লিটার-লিটার দুধ দেয়। অনুপাতে তারও আকার বেশ কম। ... ...
আগে ভারতবর্ষ স্বর্গরাজ্য ছিলনা, শিল্পপতিরা এমনকি স্বাধীনতার আগে থেকেই পার্টিতে পয়সা দিতেন। জিডি বিড়লার আত্মজীবনী পড়লেই দেখা যাবে, কংগ্রেসের পিছনে তিনি কত টাকা ঢেলেছিলেন, স্বাধীনতার আগেই। ইংরেজের সঙ্গে দরকষাকষির জন্য কংগ্রেসকে তাঁর দরকার ছিল। গোলটেবিল বৈঠকেও উপস্থিত হয়েছিলেন এক আধবার। টাটা কোনো পয়সা-টয়সা দিতেননা, কারণ ইংরেজ তাঁকে পুষত। নিজের স্বার্থেই। ... ...