এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  রাজনীতি

  • দূরে কোথায় ১৮ 

    হীরেন সিংহরায় লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | রাজনীতি | ০৫ মে ২০২২ | ১৫৬০ বার পঠিত | রেটিং ৩ (১ জন)
  • পুতিন নামা

    আমাদের লন্ডনে অফিসে এক শীর্ষ অধিকারী এলেন খোদ গথাম সিটি থেকে। জানা গেলো তাঁর নাম লিংক হফমান। লিংক শব্দটা আজকাল বাজারে খুব চালু। কথায় কথায় শুনি এ ওকে বলছেন লিংকটা পাঠিয়ে দেবেন। সেকালে পরিবহন বাবদে এটার ব্যবহার হতো যেমন লিংক রোড, বান্দ্রার বিখ্যাত লিঙ্কিং রোড। কিন্তু কারো নাম কি করে লিংক হয়? এ কৌতূহলটা জেগে উঠল মনে। তিনি  আমার কর্তা নন, গ্লোবাল কর্পোরেট দেখেন, যার বাঙলা নাম এম এন সি! সিটি ব্যাঙ্ক আপন বদান্যতায় তখন আমাদের  নামাঙ্কিত প্যাড ছাপানোর সুবিধে দিতো (কষ্ট  কাটিঙের নামে সেই সুব্যবস্থা অচিরেই বাতিল হয়)-  ওপরে লেখা সিটি ব্যাঙ্ক নিচে আমাদের নাম। একদিন তাঁর অফিসে কি কাজে গেছি। লিংকের সেক্রেটারি নিকোলার (বলকানে এটি ছেলেদের নাম, যেমন নিকোলা টেসলা) সঙ্গে গল্প করার সময় লক্ষ্য করলাম লিংকের প্যাড, তাতে লেখা

    A Linc Hofmann IV

    প্রবল জ্ঞানস্পৃহা জেগে উঠলো -এখানে কি কোন সাঙ্কেতিক ইঙ্গিত লুকিয়ে আছে? পায়ে ধরে সাধা রা দিলো না রাধা?   নিকোলাকে জিজ্ঞেস করলাম  পুরো নামটা কি জানো? সে বললে না, তবে জানি ওঁর ছেলের নাম এ লিংক হফমান ভি বা পাঁচ।

    আপনারা এ অবধি পড়ে লিংকের নামের উৎসটি নির্ঘাত ধরে ফেলেছেন জানি। আমার সময় লেগেছিল।  অনেক অঙ্ক কষে উত্তরটা পেলাম -

    এ       আব্রাহাম

    লিংক        লিঙ্কন

    পদবি        হফমান

    IV       চতুর্থ

    স্বচ্ছন্দে ধরে  নেওয়া যায় তাঁর প্রপিতামহের নাম ছিল আব্রাহাম লিঙ্কন হফমান।  নিজেকে আব্রাহাম লিঙ্কন বলে পরিচয় দেওয়াটা হয়তো বিড়ম্বনার ব্যাপার ছিল। তাই বলে বাপ পিতেমোর সাধের  নামটা উড়িয়ে দিয়ে হ্যাঙ্ক বা জিম বলে  ডাকলে কি ভালো শোনাবে? কেউ একটা রাস্তা বের করলেন -  প্রতি পুরুষে আব্রাহাম লিঙ্কন হফমান নামটি রইল, রাজা রাজড়াদের স্টাইলে একটি রোমান নিউমারাল যোগ করে। জর্জ দি ফিফথ যদি হয় তাহলে লিংক হফমান চতুর্থ  হবে না কেন? ছেলের নাম দিয়েছেন লিংক হফমান পঞ্চম।  এতদিনে হয়তো লিংক হফমান ষষ্ঠ কোথাও আবির্ভূত হয়েছেন। এই পদ্ধতিতে একটিমাত্র মাত্র ফ্যাঁকড়া আছে – কেবল প্রথম পুত্রের ওপরে এই নামাবলি চড়িয়ে দেওয়া যায়। একাধিক পুত্র হলে তারা যদু মধু বা জন জেমস নামের অধিকারী হয়।

    যতদিন হয় হোক। যব তক দুনিয়া রহে রহেগা তেরা নাম মেরা নাম!  

    প্রসঙ্গটা উঠলো মহামতি পুতিনের কারণে। তাঁর পুরোনাম ভ্লাদিমির ভ্লাদিমিরোভিচ পুতিন। ভ্লাদিমির একটি স্লাভিক শব্দ, অর্থ রাজকুমার মতান্তরে যশস্বী রাজকুমার। তাঁর পিতামহ স্পিরিদন ইভানোভিচ  পুতিন ছিলেন ভ্লাদিমির ইলিয়িচ উলিয়ানভ উরফ লেনিনের খাস  রাঁধুনি, পরে তিনি  স্টালিনের হেঁসেল সামলেছেন। শোনা যায় জার্মানদের বিরুদ্ধে মহান দেশপ্রেমিক লড়াইয়ের সময় কেজিবিতে  গুপ্তচরের কাজ করেছেন। হয়তো লেনিনের সম্মানে স্পিরিদন আপন সন্তানের নাম দিলেন ভ্লাদিমির। সেই ভ্লাদিমির স্পিরিদনোভিচ পুতিন তাঁর পুত্রের নামও দিলেন ভ্লাদিমির, আমাদের লিংক হফমানের মতো। ভাবতে পারেন নি তাঁর ছোট ভ্লাদিমির একদিন যশস্বী রাজকুমার না হোক যশস্বী নেতা  হবেন। রাষ্ট্রপতি পুতিনের ছেলে নেই, থাকলেও তিনি ভ্লাদিমির নামটি আরেক দফা দিতে পারতেন না। রাশিয়ান নামকরণ প্রথা সেটি মঞ্জুর করে না। এক নাম মিলেগা দোবারা, তিনবার নয়!

    আত্ম পরিচিতির মধ্যে পিতাকে নিত্যি স্মরণ করার প্রথা ভারতের বেশ কিছু অঞ্চলে চালু আছে। সুনীল গাভাসকারকে কোন ফর্ম ভর্তি করার সময় বাবার নাম আলাদা করে লিখতে হয় নি।  সে রহস্য তাঁর আপন নামের ভেতরে সমাহিত।  স্কুলের খাতাতেই লেখা আছে সুনীল মনোহর গাভাসকার।  রাশিয়ান নামাঙ্কন একই প্রকারের। তবে এক্ষেত্রে রাশিয়ানরা বলবেন সুনীল মনোহরপুত্র (মনোহরোভিচ) গাভাসকার। ভ্লাদিমির পুত্র ভ্লাদিমিরোভিচ  পুতিন। যেমন আমাদের গ্রামের পথে ডাক শুনেছি, 'এই হাবুর ছেলে, একটা কথা শুনে যা বাবা'।  সেটাও তো সেই এক সুরে বাঁধা!

    ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতির নাম  ভলোদিমির (রাশিয়ান উচ্চারণে ভ্লাদিমির) জেলেনসকি। তাঁর পিতার নাম অলেকসানদার।  

    আধুনিক রাশিয়াতে সবচেয়ে জনপ্রিয় ছেলেদের নামের তালিকায় ভ্লাদিমির খুঁজে পাওয়া যায় না। ইভান ইগর আলেকসান্দার  ভিকতর পাভেল আন্তণ সেখানে স্বনামধন্য! 

    কত অজানারে

    বাড়ির বেল বাজতে থাকে নিয়মিত। মাঝে মাঝে মনে হয় 'পশ্চিম আজি খুলিয়াছে দ্বার সেথা হতে সবে আনে উপহার'! কেউ কেউ আসেন, দান সামগ্রী সমর্পণ করে চলে যান।  কেউ বা দু দণ্ড থেমে গল্প করেন।

    উনআশি বছরের জিনি উইলসন এসেছিলেন ওয়েব্রিজ থেকে। তাঁর মায়ের দিক ফরাসি, আদি বাড়ি আমিয়াঁ (বর্তমান ফরাসি রাষ্ট্রপতি সেই শহরের মানুষ) যেটি আমাদের ফ্রান্সর গ্রাম থেকে বেশি দূর নয়।  ১৭৫৫ সালে তাঁদের পরিবারের এক  মসিওঁ  একেত (Hecquet) ফরাসি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির চাকরি নিয়ে ভারতে যান। ইংরেজের সঙ্গে  মাদ্রাজের যুদ্ধে জোসেফ দুপ্লের পরাজয়ের পরে  পন্দিচেরিতে বাসা বাঁধেন। কালক্রমে একেত পরিবার ইংরেজের ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিতে যোগ দিয়ে ভারতে থেকে যান। প্রায় একশো বছর বাদে জিনির বৃদ্ধ প্রপিতামহ  M S N Hequet কোম্পানির হয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং কর্মে বিশেষ  খ্যাতি অর্জন করেছিলেন।

    সুক্কুরের ল্যান্সডাউন (তদানীন্তন ভাইসরয়ের নামে)  ব্রিজের ক্যানটিলিভারে M S N Hequet নাম ক্ষোদিত আছে। ১৮৮৯ সালে চালু তৎকালীন বিশ্বের এই বৃহত্তম ক্যানটিলিভার ব্রিজ করাচী হতে  লাহোরের সরাসরি রেল যোগাযোগ সম্পন্ন করে। তার আগে  সুক্কুরে সিন্ধু নদ পার হতে হতো ফেরিতে, এককালে আমাদের ফারাক্কার মতন।   পারিবারিক সংগ্রহ থেকে কিনা জানি না,   ১৮৮৯ সালে সেই সেতুর উদ্বোধনের একটি জীর্ণ ছবি পাঠিয়েছেন - একেবারে ডান দিকে দাড়ি ওলা মানুষটি এম এস এন একেত।  নিঃশব্দ ফরাসি এইচ  ততদিনে বাঙময় - ইংরেজরা তাঁকে হেকেট বলে ডাকে।। দুশো বছর ভারতে কাটিয়ে জিনির পিতামাতা কলকাতা থেকে বিলেতের জাহাজে ওঠেন ১৯৫০  সালে।  কলকাতার কিছু স্মৃতি আছে তাঁর! আবির মুখারজির গ্রন্থাবলীর একনিষ্ঠ পাঠিকা।  তাঁর 'রাইজিং ম্যান' গোয়েন্দা উপন্যাসটি ১৯১৯ সালের কলকাতার ওপরে আধারিত এবং সেখানে জিনির পিত্রালয়ের সঠিক বর্ণনা আছে।


    সুক্কুর - ল্যানসডাউন সেতু উদ্বোধনে (১৮৮৯)

    জানালেন ইউক্রেনের উদ্বাস্তুদের সঙ্গে আপন অভিজ্ঞতা মেলাতে পারেন কিছুটা। পাঁচের দশকে  সদ্য যুদ্ধ বিজয়ী দেশ ইংল্যান্ডে দেখেছেন কঠিন জীবন - কয়লার র‍্যাশন, প্রাত্যহিক প্রয়োজনের বস্তু ক্রমশ দুর্লভ।  চকোলেটের র‍্যাশন চলেছে ১৯৫৬ অবধি!

    আফটার দি ইক্লিপ্স

    দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধ শেষ হবার বত্রিশ বছর বাদে জার্মানি যাই। ড্রেসনার ব্যাঙ্কে ট্রেনিঙের সময় কিছু মানুষের সঙ্গে আলাপ হয়েছিলো যারা কিশোর বয়েসে সারা রাত শুনেছেন শত্রু  বিমানের, অ্যান্টি এয়ার ক্র্যাফট গানের, বোমার আওয়াজ। ভোরের আলো ফুটলে  দেখেছেন নিজেদের, পাড়া পড়শির বাড়ির চাল, দেওয়াল উড়ে গেছে। রাস্তায় কলের পাইপ ফেটে জলের ফোয়ারা বইছে।  সকাল হতেই শহরের পথে পথে পৌর সভার দমকল বাহিনী, ইলেকট্রিক মিস্ত্রি, কলের মিস্ত্রিরা বেরিয়ে পড়েছেন,  পাইপ সারাচ্ছেন, বিদ্যুৎ সংযোগ করেছেন। নুরেমবেরগের হেলমুট বলেছিলেন বেলা নটার ভেতরে কলে জল আর ঘরের বিদ্যুৎ বাতি চালু হয়ে যেতো। জন জীবন প্রায় স্বাভাবিক!

    আমেরিকানরা  দখল নেওয়ার পরে বোমায় বিধ্বস্ত নুরেমবেরগে এক মাস কলের জল বা বিজলি বাতি কোনটাই পাওয়া যায় নি।

    আজ এতো বছর বাদে হেলমুটের গল্প মনে পড়লো। ইউক্রেনের মিকোলায়েভ থেকে দু জন এসেছেন, বহু পথ ঘুরে।  জানা গেলো রাশিয়ান সৈন্যগণ জ্বালানো পোড়ানো এবং বলাৎকার কর্ম সমাপ্ত করার পরে বীর দর্পে লুণ্ঠন কর্মে লিপ্ত হয়েছে। পথ চলতি ইউক্রেনীয়  নাগরিকের ফোন বাজেয়াপ্ত করা, ব্যাগ কেড়ে নেওয়া,  গাড়ি থামিয়ে চালককে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে সে গাড়ির দখল নেওয়া রাশিয়ান সৈন্যদের প্রাত্যহিক ক্রীড়া।   সমস্ত দোকানের পাল্লা শক্ত কাঠ দিয়ে সিল করে নাগরিকরা মেট্রো স্টেশনে বসবাস করছেন।  কলের জল বন্ধ অনেকদিন।  দাঁও মতন দাম দিলে বোতলের জল কোথাও বা মেলে।  বিজলি বাতি জ্বলে না বহুদিন।


    মিকোলায়েভ

    ইয়ুলিয়া বললেন হয়তো একদিন ফিরে যাবো।  সেদিন কি কোনো  মিকোলায়েভ থাকবে?
    মারিউপোল?


    মারিউপোল - বোমা বর্ষণের আগে ও পরে

    মে ৫, ২০২২

    পুঃ এপ্রিল মাসের ৪  তারিখে  দুটি বন্ডের জন্য রাশিয়ান সরকারের প্রদেয় অর্থের পরিমাণ ছিল ৬৫ কোটি ডলার  । রাশিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কের যে ডলার আমেরিকায় জমা আছে তার ওপরে স্যাঙ্কশনের কুলুপ লাগানো। মহামতি পুতিন বলেছিলেন  সে তালা খোলা না হলে দেয় ঋণ রুবেলে শোধ করবেন। তাতে নিবেশকরা খুশি হন নি।  উলটে সরকারকে খেলাপি বা দেউলে বলে  বাজারে বদনাম করবেন এমন ধমকি দিচ্ছিলেন।  একমাস বিলম্বে গতকাল রাশিয়ান সরকার আপন মাটির ভাঁড় ভেঙ্গে কৌটো খুলে  দুটি বন্ডের জন্য প্রদেয় ৬৫ কোটি ডলার নিবেশকদের অ্যাকাউনটে পাঠিয়ে দিয়ে আপাতত ঋণমুক্ত হলেন।  অন্যথায় মহান অক্টোবর বিপ্লবের একশো বছর বাদে রাশিয়ার আবার দেউলিয়া দেশের খাতায় নাম লেখানো অবধারিত ছিল।
     
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ০৫ মে ২০২২ | ১৫৬০ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    Duck in Bangla  - Argha Bagchi
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • যোষিতা | ০৫ মে ২০২২ ১৯:৫৭507262
  • একটা স্বীকারোক্তি করি। প্রথম দিকে আমি এই যুদ্ধের স্বপক্ষে ছিলাম। ক্রমে এই মত আমার পালটেছে। হয়ত ব্রেইনওয়াশড হয়ে কাটিয়েছি দীর্ঘ সময়। দীর্ঘ তিন চার সপ্তাহ এই নিয়ে ভালো করে ভেবেছি এবং সব মিলিয়ে এই হত্যাকাণ্ড আমার মনকে ক্লান্ত করে দিয়েছে। এত মানুষের লাঞ্ছনা সত্যিই সহ্য করা যায় না। যুদ্ধের স্বপক্ষে রাশিয়ার যুক্তিগুলো আংশিক সত্যি হলেও থামবার কোনও লক্ষন নেই। যুদ্ধের নিয়মকানুন যে তারা মানছে না তার প্রমাণও প্রচুর। তিনমাস ধরে কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারল না। ফল ভোগ করছে প্রচুর নিরীহ মানুষ। ডিনাৎসীফিকেশন বলে যে কথাটা উঠেছিল, সেটা মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। আমার অবস্থানটা এখানেই জানিয়ে গেলাম।
  • dc | 171.60.197.250 | ০৫ মে ২০২২ ২০:৫৮507265
  • "ইয়ুলিয়া বললেন হয়তো একদিন ফিরে যাবো।  সেদিন কি কোনো  মিকোলায়েভ থাকবে? মারিউপোল?"
     
    মনে হয় থাকবে। স্ট্যালিনগ্রাড মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েও সিক্সথ আর্মি হেরে গেছিল। আর্মি গ্রুপ সেন্টারও পিছু হটেছিল, স্ট্যালিনগ্রাড উঠে দাঁড়িয়েছিল। হয়তো মারিউপোলও একদিন সেরকম আবার গড়ে উঠবে। 
  • Debanjan Banerjee | ০৫ মে ২০২২ ২৩:৫৫507267
  • যুদ্ধের চলমান ছবিটি তুলে ধরবার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ হিরেনবাবু l একটি প্রশ্ন আছে l যুদ্ধ যত দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে তত সারা পৃথিবীতে পাল্লা দিয়ে ইনফ্লেশন বা মূল্যবৃদ্ধি বাড়ছে l সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক গুলিও যথারিতি সুদের হার বাড়াচ্ছে l আমেরিকাতে গত কোয়ার্টার নেগেটিভ গ্রোথ ছিলো এবং আরেকটি কোয়ার্টার গেলেই আম্রিকা সরকারীভাবে রিসেশন হয়ে যাবে যেজন্য প্রায় ২ দশক পরে ওখানেও সূদের হার বাড়ছে l একজন ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকার হিসেবে আপনার কি মনে হয় এই বৈশ্বিক মূল্যবৃদ্ধি কেন ? আপনার উত্তরের অপেক্ষাতে রইলাম l
  • যোষিতা | ০৬ মে ২০২২ ০০:১০507268
  • যুদ্ধের জন্যই কি এই ইনফ্লেশন এবং অর্থনৈতিক মন্দা পুরো দায়ী? নাকি এই মন্দা ছিল অবধারিত, যুদ্ধ না হলেও মন্দা আসতই। 
  • হীরেন সিংহরায় | ০৬ মে ২০২২ ০২:৪৬507274
  • যোশিতার সংগে  সহমত।  মন্দা ও মুদ্রাস্ফীতি অবধারিত ছিল। দ্বিতীয় বিশ্ব মন্দার( ২০০৮-১১) মোকাবিলা করতে গিয়ে যে সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল তার ভেতরেই আজকের মন্দার ভূত নিহিত। কেউ একবার সেই টাকা ছাপানোর কথা মনে করুন- যাকে আদর করে বলা হয়েছিল quantitative easing ! তার সংগে চলল কম সুদের বন্যা ! আমার প্রিয় অর্থনীতিবিদ মেনসকি বলেছিলেন Stability is destabilising! 
  • Amit | 203.221.199.169 | ০৬ মে ২০২২ ০২:৪৯507275
  • শহর গড়ে তোলা যায়। হয়তো আরো বড়ো করে গড়া যায়। কিন্তু যাদের জীবন বরবাদ হলো সেগুলো আর কোনোদিন ফেরত পাওয়া যায়না। 
     
    এক ইরানিয়ান কলিগ এর সাথে কালকেই কথা হচ্ছিলো। সে বড়ো হয়ে উঠেছে ইরান ইরাক যুদ্ধের সময় এক বর্ডার শহরে। রোজ রাত্তিরে ব্যোম ফেলার আওয়াজ হলেই সবাই ছুটে গিয়ে সিঁড়ির তলায় সবাই জড়াজড়ি করে বসে থাকতো। ওর ঠাকুমা ভগবানের  কাছে প্রে করতেন মরলে যেন সবাই একসাথে মরে। কোনোদিন দিনের বেলা বোম পড়লে বাবা হয়তো অফিসে , কোনো ফোন নেই তখন। সন্ধেবেলা না ফেরা অবধি বাড়ির সবাই ধরে নিলো আর ফিরবে না। পূরো যুদ্ধের সাত বছর এভাবে কাটিয়েছে। যদিও ওর নিয়ারেস্ট কেও মরেনি , ওর আশেপাশে র প্রচুর চেনা শোনা লোক / বন্ধু মারা গেছে। 
     
    আমাকে বলছিল সেই চাইল্ডহুড ট্রমা এমন হয়ে আছে যে এখনো জোরে কোনো আওয়াজ হলেই ওর হার্টবিট বেড়ে যায়। রাস্তায় টায়ার ফাটলেও চমকে ওঠে। 
     
    দেশ যারা চালায় তাদের আর কি। তারা নিজের নাম ইতিহাসে তোলার জন্যে ব্যস্ত। কয়েকশো বা হাজার আম আদমি মরলে কিচ্ছু আসে যায়না। জাস্ট কল্যাটারাল ড্যামেজ। অন্তত ডেমোক্রেসি গুলোতে প্রশ্ন তোলা যায় , ফল হোক বা না হোক। ডিক্টেটর রেজিমে গুলোতে প্রশ্ন তুললেও হয় পয়সনিং বা গুলাগ। 
  • Ranjan Roy | ০৬ মে ২০২২ ০৬:১৫507277
  • অমিতের সঙ্গে একমত।
  • Ranjan Roy | ০৬ মে ২০২২ ০৬:১৬507278
  • যুদ্ধ নয়, যুদ্ধ নয়-- তোলো আওয়াজ!7
  • dc | 2401:4900:2313:da09:8aa:a01d:6fa6:391a | ০৬ মে ২০২২ ০৮:০০507280
  • অমিতের সাথে সম্পূর্ণ একমত। ইরান, ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া, স্লোভাকিয়া, ইউক্রেন ইত্যাদি অঞ্চলের কতো মানুষ যে ট্রমাটাইজড হয়েছেন, হচ্ছেন, তার কোন হিসেব নেই। 
  • যোষিতা | ০৬ মে ২০২২ ১০:৩৬507285
  • রাশিয়ার ওপর একটা লেখা লিখব অমিত। রাশিয়ার ভেতরের পরিবর্তন যা আমার দেখা। চলমান শতাব্দীতে রাশিয়াতে যেগুলো হচ্ছে বা হয়ে চলেছে সেসবের সঙ্গে বিংশ শতাব্দীর হিসেব কীভাবে পাল্টেছে। গত এক দেড় মাসে একটু একটু করে তথ্য সংগ্রহ করেছি। যে সোভিয়েত দেশে দীর্ঘ সময় এবং জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সময় কেটেছে তার সঙ্গে বর্তমানের রাশিয়ার ফারাক, এবং কেন এই ফারাক, সেটা জানবার পরে একটা ট্রমার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। লুটেপুটে খাওয়া কাকে বলে, শিক্ষিত মানুষ কেন মনুষ্যত্ব ত্যাগ করে ( মনুষ্যত্ব হারায় নি) তার যদিও কোনও যুক্তি হয় না। 
  • aranya | 2601:84:4600:5410:fd18:10a5:5581:27cc | ০৬ মে ২০২২ ২২:২২507323
  • কোন যুদ্ধ কি সত্যি ই এক দিনের জন্য ও সমর্থন করা যায়? 
    আমরা নিয়ম তৈরী করেছি - কিছু জিনিস ওয়ার ক্রাইম। কিন্তু ওয়ার ব্যাপার- টাই তো ক্রাইম। ক্রাইম এগেইনস্ট হিউম্যানিটি 
    যদি কোন দেশের মানুষ, সম্প্রদায়ের ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়া হয়, যেমন ১৯৭১-এর বাংলাদেশ, মানুষ অস্তিত্ব রক্ষার জন্য লড়ে, সেই লড়াই সমর্থনযোগ্য 
     
    - সে-র পোস্টের প্রেক্ষিতে 
  • যোষিতা | ০৬ মে ২০২২ ২২:২৭507325
  • জীবনযুদ্ধ সমর্থন করেন?
  • aranya | 2601:84:4600:5410:fd18:10a5:5581:27cc | ০৬ মে ২০২২ ২২:৩২507326
  • মানুষ মানুষকে খুন করছে - এটা সমর্থন করি না
  • aranya | 2601:84:4600:5410:fd18:10a5:5581:27cc | ০৬ মে ২০২২ ২২:৩৩507327
  • যদি না, আত্মরক্ষার জন্য হয়। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যুদ্ধ চেয়ে মতামত দিন