![]() বইমেলা হোক বা নাহোক চটপট নামিয়ে নিন রঙচঙে হাতে গরম গুরুর গাইড । |
সিনেমা দেখার টাটকা অভিজ্ঞতা - মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি
Bishan Basu
চট করে আজকাল সিনেমা দেখতে যাই না। বাংলা সিনেমা তো নয়ই। যদিও, টেলিভিশনের কল্যাণে আপটুডেট থাকা হয়ে যায়।
এইভাবেই জানা যায়, এক ধাঁচের সমান্তরাল বাংলা ছবির হয়ে ওঠার গল্প। মধ্যমেধার এই রমরমার বাজারে, সিনেমার দুনিয়া আলাদা হবে, এমন দুরাশার কারণ দেখিনা। কিন্তু, এই চূড়ান্ত মিডিওক্রিটি নিয়েও আঁতলেমি দেখলে একটু গা ছমছম করে বইকি!!
ছবির চাইতেও আরো আকর্ষণীয়, এই ধরণের ছবির বেশ কিছু একনিষ্ঠ দর্শক রয়েছেন, তাঁরা। এঁরা মাল্টিপ্লেক্সে সিনেমা দেখেন, ঢোকা এবং বেরোনোর সময় সেল্ফি তুলে জানান যে তাঁরা সত্যিই সিনেমা দেখতে গিয়েছিলেন, বিচিত্র ভাষায় সিনেমা ভালোলাগার অনুভূতিও ব্যক্ত করেন।
পাশাপাশি, এঁদের একখানা জবরদস্ত মতামত রয়েছে। ফাটাকেষ্ট বা চ্যালেঞ্জ বা পাগলু গোছের সিনেমার নাম শুনলেই এঁরা একেবারে রে রে করে নাক কুঁচকান। সে বেশ কথা। কিন্তু, তার চাইতেও বড়ো সমস্যা, এঁদের কাছে এই নব্য হাঁসজারু সিনেমার পরিচালকেরা প্রত্যেকেই একেকজন নেক্সট-জেন সত্যজিৎ রায়।
সত্যজিৎ রায়কে না হয় এই শুভ বিজয়ার বাজারে ছেড়েই রাখলাম।
দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো এই, যে, প্রত্যেকটি শিল্পমাধ্যমের একটি নিজস্ব ভাষা থাকে। সেই ভাষাজ্ঞানের বেসিক ঘাটতিটা চটুল উপরচালাকি দিয়ে চাপা দেওয়া মুশকিল।
উদাহরণ হিসেবে, একখানা সিনেমা দেখার অভিজ্ঞতা হলো আজ। মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি।
আমাদের প্রজন্মের থেকে শুরু করে অনেককেই বুঁদ করে রেখেছিলো এই অসামান্য ছোট্টো উপন্যাসটি। সত্যি বলতে কি, কখনো মনখারাপ হলে ঘন্টাদুয়েক মনোজদের বাড়ি থেকে ঘুরে আসেন, এমন পাঠকপাঠিকার সংখ্যা কিছু কম নয়।
পরিচালক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়। বলেই ফেলি, আমি চন্দ্রবিন্দুর একজন ডাইহার্ড ফ্যান। এছাড়াও, অনিন্দ্যর বুদ্ধিদীপ্ত কথাবার্তা বেশ পছন্দ আমার।
তাঁর প্রথম সিনেমা, ওপেন টি বায়োস্কোপ, দেখে বেশ লেগেছিলো। না, একেবারে মহৎ শিল্পকর্ম বলে মনে হয়নি। অনিন্দ্য যেমন উইট-পান সহযোগে বাক্যালাপ করেন, মোটের উপর, তারই এক্সটেনশন। সিনেমা হয়েছিলো কিনা বলা মুশকিল, কিন্তু বেশ একটা এন্টারটেইনিং স্পেক্ট্যাকল। দ্বিতীয় ছবি, প্রজাপতি বিস্কুট, হতাশ করেছিলো, তুলনায়। একটু ভাবার পরে বুঝেছিলাম, অনিন্দ্য যেরকম শুধুই চটকদারি ডায়ালগ নির্ভর চিত্রনাট্যের উপর ভরসা করে যাত্রা শুরু করেছেন, সেই পথে এইরকম স্টেশনই আসার আশঙ্কা। আগের সিনেমার রঙীন মোড়কে বিভ্রান্ত হয়েছিলাম হয়তো, উঠন্তি মূলো পত্তনেই চিনে উঠতে পারিনি।
এইবার তাঁর দুঃসাহসিক পদক্ষেপ। মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি।
দুঘন্টার ছবি। অভিনেতা-অভিনেত্রীরা অধিকাংশই তুখোড়। শুরুতেই, নিজেকে তৈরী করেছিলাম এই ভেবে, যে, বইয়ের সাথে সিনেমাকে মেলানোর চেষ্টা করবো না। একই স্টোরিলাইন দুটো ভিন্ন মাধ্যমে বিভিন্নরূপ হতেই পারে।
কিন্তু, না। প্রথমেই লেখক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়কে পর্দায় হাজির করে, পরিচালক, খুব সম্ভব, এই বার্তা-ই দিতে চাইলেন, যে, তিনি একেবারে আগমার্কা মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি পরিবেশন করতে চাইছেন। বেশ কথা।
শীর্ষেন্দুবাবুর এই আশ্চর্য উপন্যাসটি বহুমাত্রিক। রূপকথা হয়েও তা বাস্তবধর্মী। এই বহুস্তরকে পর্দায় আনার দুঃসাহস, তার উপরে হুবহু আনার দুঃসাহস, বোধকরি কাণ্ডজ্ঞানহীনতার পরিচয়।
বড়ো শিল্পীরা, শুনেছি, স্টিললাইফ আঁকার সময়, প্রথমেই ভেবে নেন, কোন কোন বস্তু ছবিতে তিনি গ্রহণ করবেন, আর কোন কোন বস্তু বর্জন করবেন। এই নির্বাচনের মধ্যেই শিল্পীর আসল মুন্সিয়ানা।
অনিন্দ্য তেমন বোধের পরিচয় দেননি।
তিনি পুরোটাই নিয়েছেন। এবং, একেবারে লেবড়ে ফেলেছেন।
যেমন, পুরো ছবিতে, একটিবারের জন্যেও, মনোজদের বাড়িটা, মানে একটা একান্নবর্তী পরিবারের ছবিটা দানা বাঁধতে পারলো না।
শীর্ষেন্দুবাবুর এই ধরণের গল্পগুলির একটা আশ্চর্য বৈশিষ্ট্য, চরিত্রগুলোর অনায়াস সারল্য, যাতে, এমনকি নেগেটিভ শেডের চরিত্রগুলোকেও সহজেই ভালোবেসে ফেলা যায়।
গল্পের বরদাচরণের নির্দোষ দেখনদারি ছাপিয়ে সিনেমায় চরিত্রটি উপরচালাক এবং বিরক্তিকর। চিত্রনাট্যের দুর্বলতা, নাকি অভিনেতার ব্যক্তিচরিত্রের অনভিপ্রেত প্রতিফলন অভিনীত চরিত্রে!!
একটি একটি করে উদাহরণ বাড়ানোই যেতো। কিন্তু, সিনেমা দেখে আমি যতোখানি বিরক্ত হয়েছি, পুরোটাই আপনাদের উপর চাড়িয়ে দিতে চাই না।
মনোজ-সরোজ, গানের শিক্ষক গণেশবাবু, গৃহশিক্ষক দুঃখহরণবাবু, সর্বোপরি মেজকা ভজু বাজারুর চরিত্রে অসামান্য কিছু অভিনয় না থাকলে দু ঘন্টা যন্ত্রণাদায়ক হয়ে থাকতো।
বিশেষভাবে বলার মতো, গোলক মাস্টারের চরিত্রে মনোজ মিত্র এবং ভজু বাজারুর চরিত্রে রজতাভ দত্তের মুখোমুখি হওয়ার দৃশ্য। অনেকদিন মনে রয়ে যাবে ওই অসামান্য চিত্রায়ন।
আবার অন্যদিকে, ডাকাতদের কালীপুজো প্রায় থীমপুজোর মতো কৃত্রিম ঠেকে।
বাংলা সিনেমার ক্রমহ্রসমান (প্রথমেই উল্লেখিত লিমিটেড এডিশন কিছু উৎসাহী বাদ দিলে) দর্শক কমানো, এই লেখার উদ্দেশ্য নয়। দ্বিতীয় সপ্তাহের রবিবারে যে হাতেগোনা কয়েকজন দেখলাম, তারপর সাপব্যাঙ যা-ই লিখি, বাড়তি ব্যবসায়িক ক্ষতির সম্ভাবনা নেই, নিশ্চিত।
শীর্ষেন্দুবাবুর এই ধাঁচের গল্পের পূর্ববর্তী চিত্রায়নসমূহের সাথে তুলনা করলে, বুদ্ধিদীপ্ত সংলাপ বা চিত্রনাট্যের দিক থেকে এ ছবি অনীক দত্তের আশ্চর্য প্রদীপের চাইতে কয়েক যোজন দূরে। তপন সিংহ মহাশয়ের নবীগঞ্জের দৈত্য অবলম্বনে আজব গাঁয়ের আজব কথা-র সিনেম্যাটিক গুণের কথা না হয় তুললামই না। অথবা, ঋতুপর্ণ ঘোষের হীরের আংটি।
অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়কে যেটুকু চিনেছি ইতোপূর্বে, সে অনুসারে, তিনি বুদ্ধিমান এমনটা হওয়ারই সম্ভাবনা। সস্তা হাততালির লোভ সামলানো কি এতোটাই দুরূহ??
দেখছেনই তো, সস্তা চটকদারির লোভ করলে চটকও মোটা দাগের হয়ে ওঠে, আর শুধুই হাততালির লোভ করলে, শেষমেশ হাততালিও জোটে না। হাতে থাকে পেনসিল। নাকি চুষিকাঠি?
এইভাবেই জানা যায়, এক ধাঁচের সমান্তরাল বাংলা ছবির হয়ে ওঠার গল্প। মধ্যমেধার এই রমরমার বাজারে, সিনেমার দুনিয়া আলাদা হবে, এমন দুরাশার কারণ দেখিনা। কিন্তু, এই চূড়ান্ত মিডিওক্রিটি নিয়েও আঁতলেমি দেখলে একটু গা ছমছম করে বইকি!!
ছবির চাইতেও আরো আকর্ষণীয়, এই ধরণের ছবির বেশ কিছু একনিষ্ঠ দর্শক রয়েছেন, তাঁরা। এঁরা মাল্টিপ্লেক্সে সিনেমা দেখেন, ঢোকা এবং বেরোনোর সময় সেল্ফি তুলে জানান যে তাঁরা সত্যিই সিনেমা দেখতে গিয়েছিলেন, বিচিত্র ভাষায় সিনেমা ভালোলাগার অনুভূতিও ব্যক্ত করেন।
পাশাপাশি, এঁদের একখানা জবরদস্ত মতামত রয়েছে। ফাটাকেষ্ট বা চ্যালেঞ্জ বা পাগলু গোছের সিনেমার নাম শুনলেই এঁরা একেবারে রে রে করে নাক কুঁচকান। সে বেশ কথা। কিন্তু, তার চাইতেও বড়ো সমস্যা, এঁদের কাছে এই নব্য হাঁসজারু সিনেমার পরিচালকেরা প্রত্যেকেই একেকজন নেক্সট-জেন সত্যজিৎ রায়।
সত্যজিৎ রায়কে না হয় এই শুভ বিজয়ার বাজারে ছেড়েই রাখলাম।
দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো এই, যে, প্রত্যেকটি শিল্পমাধ্যমের একটি নিজস্ব ভাষা থাকে। সেই ভাষাজ্ঞানের বেসিক ঘাটতিটা চটুল উপরচালাকি দিয়ে চাপা দেওয়া মুশকিল।
উদাহরণ হিসেবে, একখানা সিনেমা দেখার অভিজ্ঞতা হলো আজ। মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি।
আমাদের প্রজন্মের থেকে শুরু করে অনেককেই বুঁদ করে রেখেছিলো এই অসামান্য ছোট্টো উপন্যাসটি। সত্যি বলতে কি, কখনো মনখারাপ হলে ঘন্টাদুয়েক মনোজদের বাড়ি থেকে ঘুরে আসেন, এমন পাঠকপাঠিকার সংখ্যা কিছু কম নয়।
পরিচালক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়। বলেই ফেলি, আমি চন্দ্রবিন্দুর একজন ডাইহার্ড ফ্যান। এছাড়াও, অনিন্দ্যর বুদ্ধিদীপ্ত কথাবার্তা বেশ পছন্দ আমার।
তাঁর প্রথম সিনেমা, ওপেন টি বায়োস্কোপ, দেখে বেশ লেগেছিলো। না, একেবারে মহৎ শিল্পকর্ম বলে মনে হয়নি। অনিন্দ্য যেমন উইট-পান সহযোগে বাক্যালাপ করেন, মোটের উপর, তারই এক্সটেনশন। সিনেমা হয়েছিলো কিনা বলা মুশকিল, কিন্তু বেশ একটা এন্টারটেইনিং স্পেক্ট্যাকল। দ্বিতীয় ছবি, প্রজাপতি বিস্কুট, হতাশ করেছিলো, তুলনায়। একটু ভাবার পরে বুঝেছিলাম, অনিন্দ্য যেরকম শুধুই চটকদারি ডায়ালগ নির্ভর চিত্রনাট্যের উপর ভরসা করে যাত্রা শুরু করেছেন, সেই পথে এইরকম স্টেশনই আসার আশঙ্কা। আগের সিনেমার রঙীন মোড়কে বিভ্রান্ত হয়েছিলাম হয়তো, উঠন্তি মূলো পত্তনেই চিনে উঠতে পারিনি।
এইবার তাঁর দুঃসাহসিক পদক্ষেপ। মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি।
দুঘন্টার ছবি। অভিনেতা-অভিনেত্রীরা অধিকাংশই তুখোড়। শুরুতেই, নিজেকে তৈরী করেছিলাম এই ভেবে, যে, বইয়ের সাথে সিনেমাকে মেলানোর চেষ্টা করবো না। একই স্টোরিলাইন দুটো ভিন্ন মাধ্যমে বিভিন্নরূপ হতেই পারে।
কিন্তু, না। প্রথমেই লেখক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়কে পর্দায় হাজির করে, পরিচালক, খুব সম্ভব, এই বার্তা-ই দিতে চাইলেন, যে, তিনি একেবারে আগমার্কা মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি পরিবেশন করতে চাইছেন। বেশ কথা।
শীর্ষেন্দুবাবুর এই আশ্চর্য উপন্যাসটি বহুমাত্রিক। রূপকথা হয়েও তা বাস্তবধর্মী। এই বহুস্তরকে পর্দায় আনার দুঃসাহস, তার উপরে হুবহু আনার দুঃসাহস, বোধকরি কাণ্ডজ্ঞানহীনতার পরিচয়।
বড়ো শিল্পীরা, শুনেছি, স্টিললাইফ আঁকার সময়, প্রথমেই ভেবে নেন, কোন কোন বস্তু ছবিতে তিনি গ্রহণ করবেন, আর কোন কোন বস্তু বর্জন করবেন। এই নির্বাচনের মধ্যেই শিল্পীর আসল মুন্সিয়ানা।
অনিন্দ্য তেমন বোধের পরিচয় দেননি।
তিনি পুরোটাই নিয়েছেন। এবং, একেবারে লেবড়ে ফেলেছেন।
যেমন, পুরো ছবিতে, একটিবারের জন্যেও, মনোজদের বাড়িটা, মানে একটা একান্নবর্তী পরিবারের ছবিটা দানা বাঁধতে পারলো না।
শীর্ষেন্দুবাবুর এই ধরণের গল্পগুলির একটা আশ্চর্য বৈশিষ্ট্য, চরিত্রগুলোর অনায়াস সারল্য, যাতে, এমনকি নেগেটিভ শেডের চরিত্রগুলোকেও সহজেই ভালোবেসে ফেলা যায়।
গল্পের বরদাচরণের নির্দোষ দেখনদারি ছাপিয়ে সিনেমায় চরিত্রটি উপরচালাক এবং বিরক্তিকর। চিত্রনাট্যের দুর্বলতা, নাকি অভিনেতার ব্যক্তিচরিত্রের অনভিপ্রেত প্রতিফলন অভিনীত চরিত্রে!!
একটি একটি করে উদাহরণ বাড়ানোই যেতো। কিন্তু, সিনেমা দেখে আমি যতোখানি বিরক্ত হয়েছি, পুরোটাই আপনাদের উপর চাড়িয়ে দিতে চাই না।
মনোজ-সরোজ, গানের শিক্ষক গণেশবাবু, গৃহশিক্ষক দুঃখহরণবাবু, সর্বোপরি মেজকা ভজু বাজারুর চরিত্রে অসামান্য কিছু অভিনয় না থাকলে দু ঘন্টা যন্ত্রণাদায়ক হয়ে থাকতো।
বিশেষভাবে বলার মতো, গোলক মাস্টারের চরিত্রে মনোজ মিত্র এবং ভজু বাজারুর চরিত্রে রজতাভ দত্তের মুখোমুখি হওয়ার দৃশ্য। অনেকদিন মনে রয়ে যাবে ওই অসামান্য চিত্রায়ন।
আবার অন্যদিকে, ডাকাতদের কালীপুজো প্রায় থীমপুজোর মতো কৃত্রিম ঠেকে।
বাংলা সিনেমার ক্রমহ্রসমান (প্রথমেই উল্লেখিত লিমিটেড এডিশন কিছু উৎসাহী বাদ দিলে) দর্শক কমানো, এই লেখার উদ্দেশ্য নয়। দ্বিতীয় সপ্তাহের রবিবারে যে হাতেগোনা কয়েকজন দেখলাম, তারপর সাপব্যাঙ যা-ই লিখি, বাড়তি ব্যবসায়িক ক্ষতির সম্ভাবনা নেই, নিশ্চিত।
শীর্ষেন্দুবাবুর এই ধাঁচের গল্পের পূর্ববর্তী চিত্রায়নসমূহের সাথে তুলনা করলে, বুদ্ধিদীপ্ত সংলাপ বা চিত্রনাট্যের দিক থেকে এ ছবি অনীক দত্তের আশ্চর্য প্রদীপের চাইতে কয়েক যোজন দূরে। তপন সিংহ মহাশয়ের নবীগঞ্জের দৈত্য অবলম্বনে আজব গাঁয়ের আজব কথা-র সিনেম্যাটিক গুণের কথা না হয় তুললামই না। অথবা, ঋতুপর্ণ ঘোষের হীরের আংটি।
অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়কে যেটুকু চিনেছি ইতোপূর্বে, সে অনুসারে, তিনি বুদ্ধিমান এমনটা হওয়ারই সম্ভাবনা। সস্তা হাততালির লোভ সামলানো কি এতোটাই দুরূহ??
দেখছেনই তো, সস্তা চটকদারির লোভ করলে চটকও মোটা দাগের হয়ে ওঠে, আর শুধুই হাততালির লোভ করলে, শেষমেশ হাততালিও জোটে না। হাতে থাকে পেনসিল। নাকি চুষিকাঠি?
4276
বার পঠিত (সেপ্টেম্বর ২০১৮ থেকে)
শেয়ার করুন |
মন্তব্যের পাতাগুলিঃ [1] [2] [3] [4] এই পাতায় আছে 52 -- 71

Re: সিনেমা দেখার টাটকা অভিজ্ঞতা - মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি
ব্যবসার অ্যাঙ্গলটা দারুণ ধরেছেন।
প্লাস, এই হিসেবটা একটু ডিটেইলসে কেউ দেয় না।
ঠিক কতো টাকা টিকিট থেকে এলো, আর কতো টাকা বিভিন্ন খাতে ভুলভাল বিজ্ঞাপন থেকে এলো, সেইটা প্রকাশ্যে আনুক। যে ছবি দ্বিতীয় সপ্তাহের রবিবার মাছি মারে, তাকে বাণিজ্যসফল বলে মেনে নিতে চাপ আছে।
আর ব্যবসাই যদি শেষ কথা হয়, তাহলে তো শিবপ্রসাদ-নন্দিতা তো কান-ভেনাস ফেরত ছবিকে দাঁড় করিয়ে পাঁচ গোল দেবেন।
প্লাস, এই হিসেবটা একটু ডিটেইলসে কেউ দেয় না।
ঠিক কতো টাকা টিকিট থেকে এলো, আর কতো টাকা বিভিন্ন খাতে ভুলভাল বিজ্ঞাপন থেকে এলো, সেইটা প্রকাশ্যে আনুক। যে ছবি দ্বিতীয় সপ্তাহের রবিবার মাছি মারে, তাকে বাণিজ্যসফল বলে মেনে নিতে চাপ আছে।
আর ব্যবসাই যদি শেষ কথা হয়, তাহলে তো শিবপ্রসাদ-নন্দিতা তো কান-ভেনাস ফেরত ছবিকে দাঁড় করিয়ে পাঁচ গোল দেবেন।

Re: সিনেমা দেখার টাটকা অভিজ্ঞতা - মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি
মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি ভালো ব্যবসা করেছে চারটে কারণেঃ ১) পুজোর সময়ে অনেক বাঙালী বাড়ি ফেরেন এবং তারা নিয়ম করে বাঙলা সিনেমা দেখেন, ২) বাচ্চাদের সিনেমা এমনিতেই কম হয়, অতেব এই একটাতে বাচ্চাদের নিয়ে গেছেন অনেকে, ৩) অনেকেই বইটার জন্য সিনেমাটা দেখতে গেছিলেন এবং হতাশ হয়েছেন, ৪) চন্দ্রবিন্দু আর অনিন্দ্যর একটা ফ্যানবেস আছে।
তারপরেও আমাদের দেশে এইসব বক্স অফিসের হিসাবটা (এস্টিমেট) অনেকটাই আর্বিট্রারি এবং প্রচুর অ্যাপ্রক্সিমেশন থাকে।
তারপরেও আমাদের দেশে এইসব বক্স অফিসের হিসাবটা (এস্টিমেট) অনেকটাই আর্বিট্রারি এবং প্রচুর অ্যাপ্রক্সিমেশন থাকে।

Re: সিনেমা দেখার টাটকা অভিজ্ঞতা - মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি
বাংলা সিনেমা এখনো অনেক কম বাজেটে তৈরী হয়। কমার্শিয়াল সিনেমাও যে বাজেটে তৈরী হয়, সেটা বলিউডের একটা মাঝারি অভিনেতা অভিনেত্রীর সিনেমা পিছু মাইনেরও কম। তাই বক্স অফিসের উপরে অত নির্ভর করে থাকতে হয়্না।
প্রোডাক্ট প্রোমোশান, মিউজিক রাইটস, স্যাটেলাইটস রাইট্স বিক্রি করে বেশিরভাগ টাকা ওঠানো হয় বলেই মনে হয়।
প্রোডাক্ট প্রোমোশান, মিউজিক রাইটস, স্যাটেলাইটস রাইট্স বিক্রি করে বেশিরভাগ টাকা ওঠানো হয় বলেই মনে হয়।

Re: সিনেমা দেখার টাটকা অভিজ্ঞতা - মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি
কম বাজেট বলতে কত ? এখন কি তিরিশ লাখে ছবি সম্ভব ? " পাগলু" র বাজেট ছিল ৭ কোটি । অন্তত প্রযোজকের মুখ থেকে শোনা । ছবির এত বাজেট হবার কথা না, প্রশ্ন হল ঐ বাজেটের ছবির থেকে টাকা উঠে আসার মত বাজার কি আছে ? সম্ভবত খুব কঠিন বলে মনে হয় । সুরিন্দর ফিল্মসের নিসপাল সিং এর কপালে চিন্তার ভাঁজ দেখেছি । " চাঁদের পাহাড় " এর বাজেট নিয়ে আনন্দবাজার যে প্রচার করেছিল সব ফালতু কথা । পরে জানা যায় আফ্রিকার জঙ্গলে নয়, শুটিং হয়েছে বেথুয়াডহরিতে ।আমাদের মিডিয়া অপপ্রচার এর দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছে ।

Re: সিনেমা দেখার টাটকা অভিজ্ঞতা - মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি
সিনেমা টি দেখলাম। চিত্রনাট্য ও সংলাপ বড় দুর্বল।গানের লিরিক্স অন্তত ছোটদের পক্ষে দুর্বোধ্য।
বিক্ষিপ্ত কিছু কিছু জায়গা ভালো। মজা পাওয়া যায়।
বাচ্চারা একটু বেশি হয়তো উপভোগ করেছে, তার বেশি কিছু নয়।
পরিচালকের চিন্তা, ভাবনা ও ইন্টেলিজেন্স এ ঘাটতি আছে। তবে উনি চেষ্টা করেছেন আপ্রাণ।
বিক্ষিপ্ত কিছু কিছু জায়গা ভালো। মজা পাওয়া যায়।
বাচ্চারা একটু বেশি হয়তো উপভোগ করেছে, তার বেশি কিছু নয়।
পরিচালকের চিন্তা, ভাবনা ও ইন্টেলিজেন্স এ ঘাটতি আছে। তবে উনি চেষ্টা করেছেন আপ্রাণ।

Re: সিনেমা দেখার টাটকা অভিজ্ঞতা - মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি
শোনা যায় প্রথম সারির নায়্করা নাকি আজকাল এক দেড় কোটি নিচ্ছে। বিশ্বাস করতে মন চায়্না। কারণ এই তিন-চার বছর আগেও সংখ্যাটা ২৫-৩০ লাখ ছিলো। হঠাৎ এই মন্দার বাজারে পারিশ্রমিক কিকরে ৩-৪ গুন হয়ে গেলো সেটা বোঝা মুশকিল। অথচ প্রথম সারির অভিনেত্রীদের পারিশ্রমিক সেই তুলনায় এখনো এতো কম থাকে কি করে? বাংলা সিনেমায় যেটুকু খরচ হয় তা হলো গানে। জীত গাঙ্গুলীকে দিয়ে সুর করিয়ে, অরিজিত-মোনালি-বম্বের অবাঙালী গায়্ক গায়িকাদের দিয়ে গাওয়াতে এবং তার বিদেশে দৃশ্যায়নে খরচ আছে ভালই।

Re: সিনেমা দেখার টাটকা অভিজ্ঞতা - মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি
মাল্টিপ্লেক্ষে অসম্ভব দাম টিকিটের - আমার বাড়ির কাছে সাউথ সিটি আইনক্স - তিনটি ছানাপোনা নিয়ে আমি গেলাম - ষষ্ঠীর দিন সন্ধ্যায় টিকিটের মিনিমাম দাম ৩৪০/- করে। বম্বেতে এতো দাম নয় কিন্তু!
কফি-পপকর্ণের দাম ধরলে এক সন্ধেয় সিনিমা দেখতেই সাড়ে তিন বেরিয়ে যায় -
এতো দাম করলে তো সব ছবিই কোটি টাকার ব্যাবসা দেবে - আমি যা দেখেছি হল হাউসফুল ছিলো -
কফি-পপকর্ণের দাম ধরলে এক সন্ধেয় সিনিমা দেখতেই সাড়ে তিন বেরিয়ে যায় -
এতো দাম করলে তো সব ছবিই কোটি টাকার ব্যাবসা দেবে - আমি যা দেখেছি হল হাউসফুল ছিলো -

Re: সিনেমা দেখার টাটকা অভিজ্ঞতা - মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি
একটা গোটা জেনারেশনের বড় হওয়া ভালোবাসা যে গল্পগুলোর সাথে মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি তাদের একটি। উপরন্তু সেই একমাত্র বাংলা চ্যানেল যুগের সিরিয়াল ফেরত। সেটা সিনেমা হয়েছে বলে নিজের এবং পরের প্রজন্মের দেখতে কেমন লাগবে এই আকুতি একটা মিনিমাম ক্রাইসিস। নস্টালজিয়ার অন্য কোনো সংজ্ঞা হওয়া সম্ভব কি? এই গোল্ডেন পয়েন্টটা কাজে লাগানো হচ্ছে। মানুষকে ঠকানো হচ্ছে। এই স্মৃতির সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকে সপরিবারে একবার করে দেখলেও বাজেটের ২০ গুণ টাকা উঠে আসার কথা। দেখে ফিরে যতই গালাগাল দেওয়া হোক। সন্ধ্যা রায়ের আবাপ সাক্ষাৎকারেই বলা ছিল ২০ না ৩০ দিনে শ্যুটিং হয়ে যায়। বাজেটের পরিমাণ তো ছবি দেখেই আন্দাজ করা যায়।

Re: সিনেমা দেখার টাটকা অভিজ্ঞতা - মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি
https://en.wikipedia.org/wiki/List_of_highest-grossing_Bengali_films
etate kichu info thaake - jani na koto ta thik info
etate kichu info thaake - jani na koto ta thik info

Re: সিনেমা দেখার টাটকা অভিজ্ঞতা - মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি
আসা যাওয়ার মাঝে আমারও গোলমেলে লেগেছে। ঘুমের সময় নিয়ে একটুখানি আপোস করলেই অনেক ঝামেলা মিটে যেত। ছবি টবি, মিউজিক ওসব খুব সুন্দর।
একটু জোর করে বানানো টাইপ।
আমার এক তেলুগু বন্ধু অবশ্য আসা যাওয়ার মাঝে দেখে একেবারে উলুতপ্লুত হয়ে গিয়ে বাংলা সিনেমা দেখতে শুরু করেছিল।
একটু জোর করে বানানো টাইপ।
আমার এক তেলুগু বন্ধু অবশ্য আসা যাওয়ার মাঝে দেখে একেবারে উলুতপ্লুত হয়ে গিয়ে বাংলা সিনেমা দেখতে শুরু করেছিল।
মন্তব্যের পাতাগুলিঃ [1] [2] [3] [4] এই পাতায় আছে 52 -- 71
আপনার মতামত দেবার জন্য নিচের যেকোনো একটি লিংকে ক্লিক করুন