এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ধারাবাহিক  উপন্যাস  শনিবারবেলা

  • সীমানা - ৪৫

    শেখরনাথ মুখোপাধ্যায়
    ধারাবাহিক | উপন্যাস | ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ১১২ বার পঠিত
  • ছবি: সুনন্দ পাত্র


    ৪৫
    কেমন আছেন নজরুল?


    স্তব্ধ হয়ে বসে আছে নজরুল।

    অস্ত্রোপচারের পর আজ অষ্টম দিনে জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে ঠিক বারটা দশ মিনিটে শেষ নিশ্বাস ফেললেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ। গত দু'দিন ধরেই প্রায় আচ্ছন্নের মতো ছিলেন কবি।

    অদূরেই টেলিফোন। মাঝে-মাঝেই কেউ ঢুকছে ঘরে, টেলিফোনে মৃদুকণ্ঠে কিছু কথা বলছে, তারপর যথাস্থানে যন্ত্রটা রেখে আবার চলে যাচ্ছে ঘর ছেড়ে। বেশ কিছুক্ষণ এইভাবে চলার পর এক সময় সমস্ত নিস্তব্ধতা ভেঙে কর্কশ টেলিফোনকণ্ঠ নোটিশ দেয়। নজরুল তাকায় ফোনটার দিকে, ওঠে না, বসেই থাকে। দ্রুতপদে ঘরে ঢোকেন সুরেশ চক্রবর্তী, বেতার জগতের তিনি নিয়ন্ত্রক। কয়েক সেকেণ্ড কথা বলার পর ফোনটা রেখে দিয়ে বলেন, সজনীকান্তবাবু ফোন করেছিলেন, বেরিয়ে পড়েছে।

    বলেই, নজরুলকে কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়েই প্রায় দৌড়োতে দৌড়োতে ঘর থেকে বেরিয়ে যান সুরেশ। একটু পর ঘরে ঢোকে নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায়; নজরুলকে বলে, শুরু করিয়ে দিয়ে এলাম, কাজিদা। তুমি কি পারবে?

    নিঃশব্দে মাথা নাড়িয়ে কাজি জানিয়ে দেয় সে পারবে না।

    ঠিক আছে, দুজন অ্যানাউন্সারকে আমি বলে দিয়েছি, ওদের মধ্যেই একজন চালাচ্ছে এখন। জোড়াসাঁকোর বাড়ি থেকে এই মাত্র বেরিয়ে এখন সেন্ট্রাল অ্যাভিন্যুয়ের দিকে আসছে। তোমার কবিতাটা রেডি রেখ, আর পার যদি, একটু পরে কমেনট্রীতে এস একবার, কিছুক্ষণের জন্যে হলেও। আজকের দিনে লোকে তোমার গলা তো নিশ্চয়ই শুনতে চাইবে, বলেই দ্রুতপদে বেরিয়ে যায় নৃপেন।

    নজরুল এবারেও কোন জবাব দেয়নি। সামনে একটা দড়ি-বাঁধা ফাইল, সে খোলে সেটা। একেবারে ওপরের কাগজখানা হাতে তুলে নেয়, যা লেখা আছে কাগজে তাতে চোখ বোলায় একটু, আবার রেখে দেয় ফাইলে। ঘরে আরেকবার ঢোকে নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ; এবার একটু দ্রুততর, বলে, মানুষকে কন্ট্রোল করতে পারছে না পুলিশ, ধাক্কাধাক্কি হাতাহাতি চলছে। এবার ধারাবিবরণী একটু বন্ধ করে তোমার কবিতাটা পড়া দরকার। কোনরকমে এই কথাগুলো বলে নিজের একটা হাত সে বাড়িয়ে দেয় নজরুলের দিকে। নজরুল নৃপেনের হাতটা ধরে, ফাইলটাও সঙ্গে নেয়। ধীরে ধীরে ঘর থেকে বেরিয়ে স্টুডিওর ভেতরে যায় ওরা, পাশাপাশি দুটো চেয়ারে বসে। যে দু'জন মাইকের সামনে বসেছিল, দুজনেরই কানে একটা করে ইয়ারফোন। শবযাত্রার সঙ্গে অতি ধীরগতিতে রেডিওর গাড়ি চলতে চলতে শবযাত্রার যে সংক্ষিপ্ত ধারাবিবরণী সরাসরি পাঠিয়ে দিচ্ছে রেডিওর স্টুডিওয়, ইয়ারফোনে তা শুনে প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই সম্প্রচারযোগ্য ভাষায় তার তাৎক্ষণিক অনুবাদ করে দুজন ঘোষকের একজন বেতারে তা পাঠিয়ে দিচ্ছে তার নিজস্ব কণ্ঠস্বরে। দ্বিতীয় জন, এখন যে শুধু ইয়ারফোনেই মনোযোগী, চেয়ারে বসে-থাকা নজরুল-নৃপেনের দিকে সে হাত তুলে ইঙ্গিত করতেই নৃপেন কাজির হাতে হাত রাখে। কাজি একটুও সময় নষ্ট না করে পড়তে শুরু করে:


    দুপুরের রবি পড়িয়াছে ঢলে অস্তপথের কোলে
    শ্রাবণের মেঘ ছুটে এল দলে দলে
    উদাস গগনতলে
    বিশ্বের রবি ভারতের কবি.......


    নৃপেনের সদাসতর্ক কর্ণদ্বয় খেয়াল করে কাজির কণ্ঠস্বর কম্পিত এবং জিহ্বা স্খলিত, 'ভারতের' শব্দটিকে সে ভাওতেও উচ্চারণ করেছে। সময়ের একটুও অপচয় না-করে সে কাজির হস্তধৃত কাগজে চোখ রেখে কাজির সঙ্গে সঙ্গে পড়ে যেতে থাকে:

    …...শ্যাম বাংলার হৃদয়ের ছবি
    তুমি চলে যাবে বলে।
    তব ধরিত্রী মাতার রোদন তুমি শুনেছিলে না কি,
    তাই কি রোগের ছলনা করিয়া মেলিলে না আর আঁখি?
    আজ বাংলার নাড়িতে নাড়িতে বেদনা উঠেছে জাগি
    কাঁদিছে সাগর-নদী-অরণ্য, হে কবি, তোমার লাগি।


    পড়তে পড়তেই নৃপেন কাজির জিহ্বার জড়তা-আরষ্টতার বৃদ্ধি খেয়াল করে এবং শেষ স্তবক পর্যন্ত তাকে সঙ্গ দেয়:

    ******
    আমরা তোমারে ভেবেছি শ্রীভগবানের আশীর্বাদ,
    সে-আশিস যেন লয় নাহি করে মৃত্যুর অবসাদ।
    বিদায়ের বেলা চুম্বন লয়ে যাও তব শ্রীচরণে,
    যে লোকেই থাক হতভাগ্য এ জাতিরে রাখিও মনে।


    এই কবিতার আবৃত্তি শেষ হলেই সম্প্রচাররত ঘোষক দুজনকে হাত দেখিয়ে “আবার আসছি, তোমরা চালিয়ে যাও” ইঙ্গিত করে নজরুলের হাত ধরে স্টুডিও থেকে বেরিয়ে আসে নৃপেন, সোজা ঢুকে যায় রিহার্স্যালের ঘরে। সেখানে তানপুরা এবং তবলাসহ বসে আছেন শিল্পীরা এবং একজন গায়িকা। গতকাল প্রায় সারাদিনই কবিগুরু সংজ্ঞাহীন অবস্থায় ছিলেন, অবশ্যম্ভাবী ভবিষ্যতের কথা ভেবে নজরুলকে দিয়ে ছোট একটা সঙ্গীতাঞ্জলি কালই লেখানো এবং সুরপ্রয়োগ করানো হয়েছিল। মহিলাটি গতকাল থেকেই অনেক বার অভ্যেস করেছেন গানটি। এখন নৃপেনের নির্দেশে গানটি তিনি একবার গাইলেন। নজরুলের আঁখিদ্বয় মুদিত এবং মূর্তিবৎ নির্বাক নিশ্চল দেহ। ইঙ্গিতে মহিলাকে আবার গাইবার নির্দেশ দেয় নৃপেন। তারপর আরও কয়েকবার। হঠাৎ এক সময় এই গানের মধ্যেই নিজের শরীরে একটা ঝটকা দিয়ে চোখ খোলে কাজি, কিছুক্ষণ বসে বসে শোনে গান, তারপর যোগও দেয়। মহিলার সঙ্গে নজরুলের কণ্ঠে সম্পূর্ণ গানটি একবার গীত হলে হাত দেখিয়ে মহিলাকে এবং যন্ত্রীদের থামায় নৃপেন। তারই নির্দেশে এবার স্টুডিওয় প্রবেশ করে ওরা। নিঃশব্দে তবলা এবং তানপুরা নিয়ে আসে একজন। সকলেই প্রস্তুত হয়ে বসে। ঘোষকরা ইঙ্গিত করলে গাওয়া হয় গান:


    ঘুমাইতে দাও শ্রান্ত রবিরে, জাগায়ো না জাগায়ো না,
    সারা জীবন যে আলো দিল, ডেকে তার ঘুম ভাঙায়ো না।
    যে সহস্র করে রূপরস দিয়া
    জননীর কোলে পড়িল ঢলিয়া,
    তাহারে শান্তি-চন্দন দাও। ক্রন্দনে রাঙায়ো না।

    ****


    জোড়াসাঁকো থেকে নিমতলা কতটাই বা! তবুও, যে-মানুষের মরদেহ, সেই মানুষের ক্ষেত্রে জনতার আকাঙ্ক্ষা তো তাঁকে শেষ দেখাই শুধু নয়, অতি আক্রমণাত্মক জনসাধারণ মরদেহ স্পর্শও করতে চায়। তথাকথিত সাধারণ ভদ্রলোকদের বোধ হয় মাথা খারাপ হয়ে গেছে। স্পর্শ শুধু নয়, এমন ঘটনা ঘটছে যার জন্যে লজ্জায় মুখ-ঢাকা উচিত বাঙালির। শুধু কবির চুল-দাড়িই নয়, এমনকি পরিহিত বস্ত্রেরও, পারলে ছোট একটু কণাও, সংগ্রহ করতে ব্যস্ত মানুষ। পুলিশ সামলাতে পারছে না, শববাহকরা দিশেহারা। কলকাতার রাস্তার এ-অবস্থায় নজরুলকে একা-একা ছাড়লেন না রেডিও অফিসের দায়িত্বশীল অধিকারীরা। একেই শরীর ভালো নয়, তার ওপর এই গণ্ডগোলে গার্স্টিন প্লেস থেকে উত্তর কলকাতায় নজরুলের বাড়ি পর্যন্ত সুস্থ দেহে পৌঁছনো অসম্ভব বলেই মনে হল তাঁদের। দুপুরের খাওয়া তাকে খাইয়ে দেওয়া হল রেডিওর অফিসেই, তার পর রেডিওরই একটা গাড়িতে নৃপেন সঙ্গে গিয়ে পৌঁছিয়ে দিয়ে আসতে গেল নজরুলকে।

    নজরুলের বাড়িতে যখন পৌঁছল নৃপেন ততক্ষণে গাড়িতে ঘুমিয়ে পড়েছে নজরুল। ধীরে ধীরে তাকে নিয়ে যাওয়া হল উপরে। আধো-জাগা নজরুল কোন রকমে নৃপেনের কাঁধে ভর দিয়ে ওপরে ওঠবার পর তাকে শুইয়ে দেওয়া হল বিছানায়। শুয়েই অঘোরে ঘুমিয়ে পড়ে নজরুল।

    বাইরের ঘরে এক ভদ্রলোক বসেছিলেন। তিনিও নৃপেনকে সাহায্য করলেন নজরুলকে বিছানায় তুলে দিতে। ভদ্রলোককে চেনে না নৃপেন। নজরুলের শাশুড়ি গিরিবালা নৃপেনকে চা খাওয়াবার জন্যে বসিয়ে ভেতরে গেলেন। যে ভদ্রলোক বসেছিলেন আগের থেকেই, তাঁর সঙ্গে আলাপ জমে উঠল নৃপেনের। জানা গেল ভদ্রলোকের নাম জসীমউদ্‌দীন।

    আপনিই জসীমউদ্‌দীন? – খুশি স্পষ্ট নৃপেনের গলায়; আরে, আপনি তো বিখ্যাত মানুষ, কাজিদার খুব ঘনিষ্ঠও তো, কিন্তু শুনেছিলাম আপনি ঢাকায় থাকেন।

    ঠিকই শুনেছেন, ঢাকাতেই থাকি, যদিও আমার বাড়ি ফরিদপুরে। ঢাকার য়্যুনিভার্সিটিতে মাষ্টারি করি। কাজিদার সঙ্গে আমার আলাপ আমার প্রায় শৈশবেই, কাজিদা তখন সদ্য হাবিলদারি ছেড়ে কলকাতায় এসেছেন, থাকেন বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতির বাড়িতে। ঢাকা থেকে কলকাতায় এলে একবার অন্তত কাজিদার – আমি কিন্তু কাজিদা নামে কোনদিনই ডাকি না ওঁকে, আমি বলি কবি-ভাই – তো, কবি-ভাইয়ের সঙ্গে, দেখা করে যাই। এবার এখানে এসেছিলাম জোড়াসাঁকোয় গিয়ে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে দেখা করব মনে করে। ঢাকাতেই কবিগুরুর অসুস্থতার কথা শুনেছিলাম। কপাল মন্দ আমার, আর কোনদিনই দেখা হবে না।

    সে তো ঠিকই, বলে নৃপেন, কারো সঙ্গেই কবির দেখা হবে না আর কোনদিনই। কিন্তু দেখুন কেমন সৌভাগ্য আমার, কপালজোরে রেডিও অফিসে কাজিদা অসুস্থ হয়ে পড়লেন, তাই তাঁকে পৌঁছিয়ে দিতে এসে আপনার মতো মানুষের সঙ্গে আলাপ হয়ে গেল। ঐ কী যেন বলে না, সব খারাপ এর পরেই ভালো একটা কিছু থাকে, মেঘ দেখে কেউ করিসনে ভয়, আড়ালে তার সূর্য হাসে!

    আমাকে দেখেই যদি সূর্যের হাসির কথা মনে পড়ে আপনার তাহলে তো আমার খুবই খুশি হওয়া উচিত, জবাব দেন জসীমউদ্‌দীন, কিন্তু আপনি যখন ধরে ধরে কবি-ভাইকে নিয়ে এলেন, কেমন জানি হু হু করে উঠল আমার বুকের মধ্যে। কবি-ভাইয়ের এই চেহারা আমি দুঃস্বপ্নেও দেখিনি কখনও। আপনি বললেন উনি অসুস্থ, কী অসুস্থতা? কী হয়েছে ওঁর?

    কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের অসুস্থতার পর এবারটা যখন শান্তিনিকেতন থেকে নিয়ে আসা হল কবিকে, নৃপেন বলে, প্রথমে
    এ-ব্যাপারে কিছু জানতই না কাজিদা, শুনেছে অনেক পরে। খবর পেয়ে যখন জোড়াসাঁকোয় যায় দেখা করতে, ততদিনে অপারেশন হয়ে গেছে। গিয়ে কবিকে দেখেছে, কিন্তু কথা বলতে পারেনি। কবি শুয়েছিলেন, যন্ত্রণাক্লিষ্ট মুখ দেখে মাটিতে মাথা ঠেকিয়ে প্রণাম করে চলে এসেছে, বলতে থাকে নৃপেন, কাজিদার নিজের মুখে শুনেছি, জীবনে প্রথমবার যখন গুরুদেবকে দেখেছে, তখন তাঁর পায়ে মাথা রেখে কতক্ষণ ছিল মনেও নেই তা। কবি যখন বললেন, ওরে, আমার পা যে ভিজে যাচ্ছে, তখন তাঁর পা ছেড়ে মুখ তুলে তাকিয়েছে তাঁর দিকে। এবারটা কিন্তু শুয়ে থাকা কবিকে সাহস করে ছুঁয়ে প্রণাম করতেও পারেনি। তারপর থেকেই কাজিদা কেমন জানি আচ্ছন্নের মতো, প্রায় স্তব্ধ। আমরাই তবুও জোর করে রেডিওয় নিয়ে আসছিলাম রোজ, কবিতা-টবিতা গান-টান লিখিয়ে নিচ্ছিলাম ওঁকে দিয়ে, গানে সুরও দিয়েছেন, কিন্তু আজ মৃত্যুর খবর শোনার পর মনে হল শক্‌টা আরও বেড়েছে।

    হ্যাঁ, কবি-ভাই স্বভাবতই আমুদে, বলে জসীমউদ্‌দীন, কোন কষ্টে কখনো হতাশ দেখিনি। আজ কিন্তু ওই মুখ দেখে আমার কান্না পাচ্ছে। আপনি জানেন, বছর দশ-বার আগে – কি, তারও বেশিই হয়তো হবে – কবি-ভাই একবার কেন্দ্রীয় আইনসভার ইলেকশনে দাঁড়িয়েছিলেন? নমিনেশন দিয়েছিল কংগ্রেস, কিন্তু ওইটুকুই, তারপর কোন সাপোর্ট দেয়নি। তখন কবি-ভাই থাকতেন কৃষ্ণনগরে, শেষ পর্যন্ত একদিন কলকাতায় এসে বিধানবাবুর সঙ্গে দেখা করলেন। সারাটা বিকেল বিধানবাবু বসিয়ে রাখলেন, তাঁর তখন প্র্যাকটিসের সময়, তারপর সেই বিকেলের প্র্যাকটিসের সমস্ত আয়, তিনশো টাকার কিছু বেশি, দিয়ে বিদায় করলেন কবি-ভাইকে। তখন বঙ্গীয় কৃষক-শ্রমিক দলের অফিস হ্যারিসন রোডে, সেখানে মুজফ্‌ফর হোসেন আর হালীম সাহেব থাকতেনও, সেই রাত্তিরটা ওঁদের সঙ্গে কাটালেন কবি-ভাই। মুজফ্‌ফর সাহেব বারবার করে কবি-ভাইকে বোঝালেন, পুব-বাংলার পাঁচ জেলা নিয়ে মাত্র আঠের হাজার ভোটার। প্রায় সব ভোটারই জমিদার-তালুকদার শ্রেণীর লোক, এদের সঙ্গে শুধু যোগাযোগ করারই খরচ হাজার-হাজার টাকা, মাত্র তিনশো টাকা পকেটে নিয়ে কবি-ভাই যেন এই ইলেকশনে না লড়ে। কিন্তু, কিছু মনে করবেন না ভাই যা বলব এখন তাই শুনে, বাঁদরকে সাঁকো নাড়াতে বারণ করলে সে কি কথা শোনে!

    ওদের কথার মধ্যেই এবার ঘরে ঢুকলেন গিরিবালা দেবী, তাঁর হাতে চা-বিস্কুট। জসীমউদ্‌দীনের শেষ কথাটা বোধ হয় শুনতে পেয়েছিলেন তিনি। হেসে বললেন, তোমার চেয়ে খানিকটা বড় যদিও নুরু, যা তুমি বলেছ কথাটা ঠিকই। মাথায় যদি ঢোকে কিছু একবার, তা করবেই। যতই বারণ কর, শুনবে না। তারপর নৃপেনকে বললেন, আমাকে তো তুমি চেন না বাবা, তোমাদের কাজিদার আমি শাশুড়ি। আমার নিজের একটিই মেয়ে, ছেলে নেই। নুরুকে আমি ছেলেই করে নিয়েছি। তারপর মুখটা একটু মাথার কাপড় টেনে আড়াল করে – মনে হল উদ্গতপ্রায় অশ্রু কোনরকমে দমন করে – বাড়ির ভেতরে ঢুকে গেলেন গিরিবালা।

    চা-বিস্কুট আগেই জসীমউদ্‌দীনের সামনের টেবিলটায় রেখে দিয়েছিলেন গিরিবালা, উনি ভেতরে যাবার পর বলতে থাকেন জসীমউদ্‌দীন, আমি কবি-ভাইয়ের চেয়ে সাড়ে তিন বছরের ছোট, পঁচিশ-ছাব্বিশ বছর বয়েস আমার তখন, মনে আছে তখন গরমের সময়, পদ্মাতীরে আমাদের বাড়িতে একদিন হঠাৎ হাজির কবি-ভাই। বললেন, ফরিদপুরে এসেছেন ইলেকশনের ক্যাম্পেইন করতে। সব শুনে আমি বললুম, করেছেন কী কবি-ভাই, এই ইলেকশনে দাঁড়াবার দুর্মতি কেন হল আপনার? আপনি জানেন না এ দেশের গোঁড়া মুসলিম সমাজ আপনাকে কাফের বলে ফতোয়া দিয়েছে?

    আরে, সে ফতোয়ায় কী হবে, এই দেখ্‌ – বলে স্যুটকেস খুলে এক বাণ্ডিল কাগজ বের করে আমাকে দেখান কবি-ভাই। দেখি, পুব-বাংলার বিখ্যাত পীর বাদশা মিঞার সার্টিফিকেট। কবি-ভাই বললেন, তুই ভাবিস না জসীম, এই সার্টিফিকেটের পর সবাই আমাকে ভোট দেবে। ঢাকায় আমি নিরানব্বই পারসেন্ট ভোট পাব। তোদের ফরিদপুর থেকে কিছু ভোট পেলে এবার আইন-সভায় আমি যাবই যাব।

    এই সরল মানুষকে কী আর বলা যাবে! দু-দিন পর ইলেকশন। ফরিদপুর শহরের বিখ্যাত মৌলভী তমিজউদ্দিন খান সাহেব সেবার আইনসভায় নিম্ন-পরিষদের প্রার্থী। তাঁকেও বাদশা মিঞা সার্টিফিকেট দিয়েছেন। পরের দিন আমরা দুজন তাঁর বাড়িতে হাজির, বলতে থাকেন জসীমউদ্‌দীন, মিঞাসাহেব তখন তাঁর সমর্থক-পারিষদদের নিয়ে দরবার সাজিয়ে বসেছেন। কবি-ভাই বাদশা মিঞার সার্টিফিকেট খুলে দেখাতেই ওই পারিষদদের একজন রেগেমেগে বললেন, তুমি তো নজরুল ইসলাম? কোন মুসলমান তোমাকে ভোট দেবে না। তুমি তো কাফের।

    কবি-ভাই কিন্তু একটুও বিচলিত হলেন না। বললেন, সে ঠিক আছে, কাকে ভোট দেবেন সে পরের ব্যাপার, এখন আমার দুয়েকটা কবিতা শুনুন। বলেই, কারো অনুমতির জন্যে অপেক্ষা না-করেই কবি শুরু করলেন তাঁর মহরম কবিতার আবৃত্তি। সে কী আবৃত্তি, নিজের কানে না শুনলে বোঝা যাবে না কী তার আবেদন! যে পারিষদটি অত উগ্রভাবে
    কবি-ভাইকে কাফের বলেছিল, তার চোখ দিয়ে দেখা গেল অবিরল ধারা বইছে। এইভাবে আবৃত্তির পর আবৃত্তি চললই, মনে হল কবি-ভাইয়েরও মূড এসে গেছে, ইলেকশনের কথা বোধ হয় ভুলেই গেছেন তিনি! আমি আর পারলাম না, মাঝখানে এক সময় আমি বলে উঠলাম, কবিতার আবৃত্তি আপনারা শুনছেন, শুনুন। কবি কিন্তু আজ একটা বিশেষ কাজে এখানে এসেছেন। আসন্ন নির্বাচনে উনি আপনাদের ভোটপ্রার্থী।

    তাইতো তাইতো – বলতে বলতে তমিজউদ্দিন খান সাহেব তখন হাত ধরে কবি-ভাইকে ভেতরে নিয়ে গেলেন। কিছুক্ষণ পর ওঁরা ফিরে এলে আবার শুরু হল আবৃত্তি। চলছে তো চলছেই, সবাই যেন সেই স্রোতেই নিমজ্জিত। কেউ এমনকি খেতেও ডাকল না কবিকে। না ডাকুক, আমি মনে মনে ভাবলাম, যাক, নিশ্চিন্ত তো হওয়া গেল। ভোটটা তো অন্তত পাওয়া যাবে। তমিজ মিঞার বাড়ি থেকে আমাদের বাড়ি পঁয়তাল্লিশ মিনিটের হাঁটাপথ। ফেরার পথে যেমন-তেমন একটা হোটেলে মাছি তাড়াতে তাড়াতে কবি-ভাইকে প্রায়-অখাদ্য দুপুরের খাবার খাইয়ে ফিরে এলাম।

    দুদিন পরেই ভোট। প্রিসাইডিং অফিসার মুখ-চেনা। কাজি নজরুল ইসলামের নামও শুনেছে সে। ভোটের সময় কবি-ভাই পোলিং বুথে বসে থাকতে চাইছেন শুনে সে তো মহাখুশি। খাবার-দাবার প্যাক করে কবি-ভাইকে ঠিক সময়ে বসিয়ে দিয়ে এলাম। একজন করে ভোটার ঢুকছে, কবির সঙ্গে গল্প করছে, তারপর নিজের মতো ভোট দিয়ে ফিরে আসছে। সেই রাত্তিরে কবি-ভাই ভারী খুশি। বললেন, জিতব তো ঠিকই, কথা হচ্ছে কত ভোটে জিতব। তারপর ছেলেমানুষের মতো
    মাথা-টাথা নেড়ে বললেন, জসীম, এবার থেকে প্রায়ই আমাকে দিল্লী যেতে হবে। আমি যখন যাব, তুইও যাবি সঙ্গে।

    আশ্চর্য মানুষ এই কবি-ভাই, পরের দিন আমরা সকাল বেলাতেই গোসল করতে গেলাম নদীতে। খানিকটা সাঁতার-টাতার কাটার পর কবি-ভাই আমার খুব কাছে এসে মুখ গম্ভীর করে বললেন, সেদিন তমিজ মিঞা আমাকে আলাদা করে ডেকে নিয়ে গিয়ে কী বলল জানিস? বলল, পীর বাদশা মিঞা যতই সার্টিফিকেট দিন আপনাকে, ইসলামি খবরের কাগজ-টাগজে যা লেখা হয়েছে আপনাকে নিয়ে এতদিন ধরে, আপনার কাফের নাম সহজে ঘুচবে না। মুখে আপনাকে না-বললেও আল্লার বান্দারা আপনাকে ভোট দেবে না কেউ। আপনি চেষ্টা করে দেখতে পারেন, আমি যা বুঝি তা-ই বললাম। জানিস জসীম, আমারও মনে হচ্ছে তা-ই, কাফেরকে ভোট দেবে না কেউ। আমি আজ সকালেই ঢাকায় যাই, দেখি অন্তত জামানতটা বাঁচাতে পারি কিনা।

    যে লোক কাল রাত্তিরেও মাঝে-মাঝেই দিল্লী যেতে হবে বলে সঙ্গী জোটানোর কথা বলেছে, আজ সে নিরুত্তাপ মুখে ঢাকায় চলে গেল জামানত বাঁচাতে! মুখে কিন্তু সেই একই হাসিটি!

    কিন্তু কী হল ইলেকশনে শেষ অবধি?– ডুবন্ত নৌকোর শেষ যাত্রীটার মতো মুখে জিজ্ঞেস করে নৃপেন।

    যা হবার। হেরে গেলেন কবি-ভাই।

    আর জামানত?

    জব্দ। কিন্তু যেমন স্বভাব কবি-ভাইয়ের, কোন দুঃখ মনে রাখেননি কখনো। তার পরেও তো কত-কতবার দেখা হয়েছে। সব সময় একই রকমের উচ্ছ্বাস, একই হো হো অট্টহাসি, আর মুখে, দে গোরুর গা ধুইয়ে!

    কিন্তু এ-সব তো অনেক কম বয়েসে, বলে নৃপেন, ইদানিং কি সেই উচ্ছ্বাস, সেই নিয়ম-না-মানা প্রাণচাঞ্চল্য আর দেখেছেন?

    আপনার কথার কী জবাব দেব জানি না নৃপেনবাবু, আজকাল তো আমি অনেক কম আসি। আর আসি যখন, নিজের সুবিধে মতন। সব সময় যে কবি-ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হয় তা-ও নয়। এমন অনেক দিন হয়েছে, কবি-ভাইকে না পেয়ে খালা-আম্মা আর ভাবীর সঙ্গে গল্প করে ফিরে গেছি। তবে, আট মাস আগে একবার দেখা হয়েছিল। ঢাকায়।

    ঢাকা-রেডিওর উদ্বোধনে গত ডিসেম্বরে এসেছিলেন কবি-ভাই। পরের দিন ঢাকা য়্যুনিভার্সিটিতে সলিমুল্লাহ্‌ হল-এ তাঁর আসবার কথা সকাল আটটায়। সময়ানুবর্তী কবি-ভাই কোনদিনই ন'ন, সেদিনও এলেন ঘন্টাদুয়েক দেরি করে, দশটার সময়। আমার সঙ্গে দেখা হওয়ায় ভারী খুশি। বললেন, এবারের এই চাকরিতে তোকে বেশ মানিয়েছে। ছেলেমেয়েগুলোর দিকে তুই তাকাচ্ছিস, আর তোর চোখ-মুখ দিয়ে স্নেহ যেন ঝরে ঝরে পড়ছে। আমি বলে দিচ্ছি মিলিয়ে নিস। মানুষ হবে তোর ছাত্রছাত্রীরা।

    এইসব বলার পর কবি-ভাই গান ধরলেন, আমি চলে গেলাম আমার ক্লাসে।

    তিনটে নাগাদ আমার শেষ ক্লাস। ক্লাসে দেখি ছেলের সংখ্যা খুবই কম, মেয়ে একজনও নেই। জিজ্ঞেস করে জানা গেল, সলিমুল্লাহ্‌ হলের পর কবি-ভাইকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ফজলুল হক হল-এ, সেখানে গান চলছে। অনুপস্থিত ছেলেমেয়েরা সবাই সেখানেই। ক্লাসে ছুটি দিয়ে আমি চলে গেলাম ফজলুল হক হলে, কবি-ভাই চোখ বুজে তন্ময় হয়ে গেয়ে চলেছেন গান। ছেলেমেয়েরা কী বুঝছিল আমি জানি না, আমার কিন্তু দেখেই মনে হল কবি-ভাইয়ের সমস্ত অঙ্গ ক্লান্তিতে ভরা। সকাল থেকে নিশ্চয়ই অভুক্তই আছেন। ফিসফিস করে একেবারে পেছনের সারির একটা ছেলেকে জিজ্ঞেস করলাম, কী খেয়েছেন কবি? সে বলল, খাননি। সেই যে সকালে বসেছেন, একনাগাড়ে বসেই আছেন, কখনও কথা বলছেন, কখনও গান। যেটা গাইছিলেন সেটা শেষ হলে কবি-ভাইয়ের অনুমতি না-নিয়েই আমি সভাভঙ্গ ঘোষণা করে দিলাম। সেটা অন্যায়, ওঁর অনুমতি আমার নিশ্চয়ই নেওয়া উচিত ছিল, কিন্তু রাগে তখন আমার গা রী রী করছে। ছেলেমেয়েরা সবাই চলে গেলে ওখানেই কিছু খাবার আনিয়ে খাওয়ালাম কবি-ভাইকে। উনি খেলেন, কিন্তু খুব শান্ত হাসিতে মুখ ভরিয়ে আমাকে বললেন, রাগ করিস না, ওরা ভারী সুন্দর, আল্লাহ্‌-র ওরা ভারী প্রিয়।

    এভাবে কবি-ভাইকে কথা বলতে আগে কখনো শুনিনি, মাথা নীচু করে চুপ করে রইলাম।

    পরে ছেলেদের কাছে শুনেছি, উনি নাকি ওদের বলেছেন, আল্লাহ্‌-র সঙ্গে ওঁর দেখা হয়েছে, কিন্তু সে-কথা জনসাধারণ্যে বলার সময় এখনও আসেনি। ওদের বলছেন, কারণ আল্লাহ্‌ নিজে ওদের ভারী ভালোবাসেন, আল্লাহ্‌-র ওরা খুব প্রিয়।



    ক্রমশ...

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • ধারাবাহিক | ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ১১২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যুদ্ধ চেয়ে মতামত দিন