গোবলয়ে বিজেপির কাছে কংগ্রেস যে হেরে ভূত হল, তার কারণ খুব সোজা। গোবলয়ে বিজেপি মস্তিষ্ক প্রক্ষালন প্রায় সম্পূর্ণ করেছে, ওসব জায়গায় বিজেপির গরম হিন্দুত্বের সঙ্গে কংগ্রেসের নরম ধর্মীয় নীতির বিশেষ তফাতও চোখে পড়েনা, ফলে স্রেফ কংগ্রেস-বনাম-বিজেপি লড়াই হলে বিজেপিই জিতবে। একমাত্র উল্টো কিছু হতে পারত, যদি বিজেপি কীভাবে দেশকে ফ্যসিবাদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছে, এবার সাড়ে-সব্বোনাশ করে ... ...
অ্যানিমাল আমি দেখিনি। কিন্তু নানা সমালোচনা পড়লাম। একজন সমালোচক লিখেছেন, "আপনার আলফা মেল আপনার কাছেই রাখুন"। আরেকজন সমালোচক লিখেছেন "দর্শককেই স্থির করতে হবে তাঁরা বিনোদনের নামে কী দেখতে চান"।দর্শক বেছেবুছে দেখছে বলেই সিনেমা চলছে, কাজেই দায় নিশ্চয়ই দর্শকেরই। খুব খাঁটি কথা। কিন্তু বাকিরা কী করছে? আমি কৌতুহলী হয়ে গুগলে একটু সার্চ দিয়ে দেখি, বাংলার দুই সর্ববৃহৎ ... ...
উপনিবেশ কী? একটা জাতির বা জনগোষ্ঠীর উপর যখন অন্য কারো চূড়ান্ত প্রভুত্ব করে। কী করে করে? এক, জনগোষ্ঠীর নিজস্ব পুঁজি এবং উৎপাদন ধ্বংস করে দেওয়া হয়, সম্পদ চালান করে দেওয়া হয় অন্যত্র। দুই, তার গোটা বাজার দখল করে ফেলা হয়। তার পুঁজি দিয়ে মাল বানিয়ে তাকেই বেচা হয়, কিন্তু মুনাফাটা পকেটে পোরে অন্য পাড়ার বড়দা। এবং তিন, সবচেয়ে গুরুত্ব্পূর্ণ, সাংস্কৃতিকভাবে এই পুরো প্রক্রিয়াটাকে বৈধতা দেওয়া হয়। তার জন্য তৈরি হয় এক 'শিক্ষিত' শ্রেণী। যারা তোতাপাখির মতো ... ...
কয়েক বছর আগের কথা। শীতশেষের বিকেল। শ্মশ্রুময় এক প্রখ্যাত কবির সঙ্গে কথা হচ্ছে। নেহাৎই কেজো কথা। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে হবে-হবে, বিষণ্ণ যে সব সন্ধ্যায় কৈশোরের কথা মনে পড়ে যায়, হঠাৎই কবি বললেন, ওই গানটা একটু করুন তো। ওই পৌষ-ফাগুনের মেলা। উনি চিরকালই এভাবে দ্রুত প্রসঙ্গান্তরে যান। এছাড়াও আমাকে আপনি বলেন, কেন কে জানে। যা হোক, গান করতে আর কী আছে। আমি শুরু করে দিলাম, কান্না হাসির ... ...
সিঙ্গুর থেকে আমাদের ছিল ঘন্টায় ঘন্টায় ট্রেন। সকালে হাওড়া যাবার একটা ট্রেনের সময় ছিল আটটা বাইশ। লোকে বলত সাড়ে আটটার ট্রেন। আমাদের পাড়ার ডেলি প্যাসেঞ্জার কাজুদা (নাম পরিবর্তিত) সেই ট্রেন ধরতে বাড়ি থেকেই বেরোতো সাড়ে আটটায়। সাড়ে আটটার ট্রেন ধরতে তার আগে লোকে বেরোবে কেন? বাড়ি থেকে স্টেশন ছিল ১০ মিনিট। এবং বেশিরভাগ দিনই ট্রেন পেয়ে যেত। এক আধদিন ফস্কালে বিলাপ করতে শোনা যেত - “ট্রেনগুলো আজকাল ... ...
বিশ্বকাপ ক্রিকেটের দৌলতে চারদিকে এখন 'দিল দিল আফগানিস্তান'। দু বছর আগেই অবস্থাটা অন্য ছিল। তখন ছিল 'হায় হায় আফগানিস্তান'। দিল-দিল ছাড়ুন, তালিবান রাজত্বের আফগানিস্তান নিয়ে 'ততটা খারাপ অবস্থা নয়' বলার জন্যই এক কাবুল-ফেরতার কী হেনস্থা। আমিও লিখেছিলাম, যে, তালিবানকে মৌলবাদী হিসেবে দেখার সঙ্গে আমেরিকান সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ভূমিকাটাও দেখা দরকার, তাতে লোকে প্রায় মারতে আসে আর কী। কারণ, টিভিতে জলজ্যান্ত ... ...
পুজো আমি একদম মিস করিনা। পুজো একটা বিভীষিকা। তার একটা কারণ নারীঘটিত। পুজো এলেই আমাকে মেয়েদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতে হয়। তাতে আমার অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের একটু ভূমিকা থাকলেও মূল দোষটা অবশ্যই মেয়েদের। প্রথমত, পুজোয় মেয়েরা সাজে। সাজাটা বড় কথা নয়, এমন সব জিনিসপত্তর পরে, যা অকল্পনীয়। হয়তো একটা শাড়ি পরল, যেটা দেখতে গামছার মতো। কিংবা একটা অদ্ভুত-দর্শন বস্তু, যা দুহাজার বছর আগে ক্লিওপেট্রা পরতেন। একটা পাজামার নামই হল হারেম প্যান্ট। তা, এইসব পরে মিউজিয়ামে ঢুকে থাকলে কোনো সমস্যা ছিলনা, কিন্তু সেগুলো পরে তারা রাস্তায় বেরোয়। এবং মধ্যরাত্রে রাস্তায় বেরোয়। সেই রাস্তায় আবার কত-কিলোওয়াটের-কে-জানে হ্যালোজেন কিংবা নিয়ন আলো জ্বলে। আলোটা অবশ্য মেয়েদের ... ...
জিনিসটা কিন্তু সত্যি-সত্যিই হচ্ছে। আপনি-আমি যখন নিজের জীবন কাটাচ্ছি, পূর্ব গোলার্ধে লোকে যখন নাক ডাকিয়ে সুখনিদ্রায়, ইউরোপের লোকে যখন ডিনার সেরে মিষ্টি কী খাওয়া যায় ভাবছে, আমেরিকার লোক যখন মাইনে পাবে বলে আপিসে খাটাখাটনি করছে কিংবা বসকে তেল দিচ্ছে, ঠিক তখনই প্যালেস্তাইনের আস্ত হাসপাতাল কিন্তু বোমাবর্ষণে গুঁড়িয়ে যাচ্ছে। সত্যি-সত্যিই ওখানে জল নেই, বিদ্যুৎ নেই, খাবার নেই, সত্যি ... ...
গুরুচণ্ডা৯ একটি প্রকাশনাও। আমরা ছাপি চটি বই, সস্তা ও পুষ্টিকর। প্রায় প্রতিটি বইয়ের মাথায় চটির ছাপও থাকে। কেন থাকে? চটি বলতে আমরা কী বুঝি? এবং সর্বোপরি কেন ছাপি? স্রেফ আরেকটা প্রকাশনা হব বলে? না ছেপে কি চটি হয়না? এই ব্যাপারটা নিয়ে বোধহয় বছর ছয়েক আগে আমি এই লেখাটা লিখি। নাম ছিল 'কী ছাপি কেন ছাপি'। তারপর স্বহস্তে প্রিন্ট এবং ভাঁজ করে চারপাতার বইয়ের আকারে বইমেলায় ছাড়ি। লেখাও ছিল, 'একটি তন্বী চটি বা এক ধরণের লিফলেট ... ...
ফেসবুকে বাংলা বইয়ের গ্রুপগুলো হয়েছে এক অদ্ভুত জায়গা। কদিন আগে সুবোধ সরকার আনন্দবাজারে একটা লেখা লিখেছিলেন। তাতে এরকম একটা লাইন ছিল, যে, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় সা বলতে জানতেন, তারপর কোনো বাঙালি লেখক আর পারেননি। পেরেছেন কি পারেননি, সে নিয়ে মতভেদ থাকাই স্বাভাবিক, তর্কাতর্কিও। কিন্তু ও মা, কোথায় কী। একখানা বইয়ের গ্রুপ খুলে দেখি, গাদা গাদা লোকে প্রশ্ন করছেন, এই সা বলাটা কী জিনিস। এত অ-আ-ক-খ থাকতে খামোখা লোকে সা বলবে কেন। তারও হাজারে হাজারে উত্তর। এবং সেসব আরও চমকপ্রদ। কেউ বলছেন সা মানে স্বাগতম। কেউ বলছেন সা মানে সাধারণজ্ঞান। দু-একজন মিনমিন করে সা মানে ষড়জ, সেটা বলার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সেসবে কে ... ...