পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত বিদ্যালয়ে বাংলা বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব পাশ হয়েছে মন্ত্রীসভায়। একই সঙ্গে শিক্ষা কমিশন তৈরি এবং বেসরকারি বিদ্যালয়কে নিয়ন্ত্রণের প্রস্তাবও। দেখে খুবই আনন্দ পেলাম, বলা বাহুল্য। কিন্তু কথা হল, এখনও কিছুই হয়নি। রাজ্য সরকার বিল পাশ করায় বিধানসভায়। তারপর সেই বিল যায় রাজ্যপালের কাছে। তারপর, দিল্লির কর্তাদের পছন্দ না হলে সেই বিল অনন্তকাল ঝুলিয়ে রাখার প্রথা আছে। এক্ষেত্রেও তাই হবে কিনা না জানা পর্যন্ত উল্লাসের বিশেষ কারণ নেই। এসব আটকে যাবে, আশঙ্কা করার যথেষ্ট কারণ আছে। গত কালই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, হিন্দিকে ধীরে-ধীরে মেনে নিতে হবে বলে দাবী করেছেন। তার আগের দিন, সুপ্রিম কোর্টে বলা হয়েছে, হিন্দি ভারতের রাষ্ট্রভাষা। কেন্দ্রীয় স্তরে এটাই ... ...
হনুমান খুব বড় বীর। পুরোনো বাংলা পুঁথিতে লেখা আছে, পবনের ছেলে বজরংবলি হেলায় লঙ্কা করিল জয়। উপনিষদে লেখা আছে, ন হন্যতে হনুমান, অর্থাৎ, হনুমানকে মারা কঠিন না, অসম্ভব। পুরোনো সংস্কৃত শ্লোকে আছে, স্বদেশে পূজ্যতে রাজা / হনুমান সর্বত্র পূজ্যতে। অর্থাৎ, দেশের বাইরে প্রধানমন্ত্রীকে কেউ পাত্তা না দিলেও, হনুমানমন্দির আমেরিকাতেও আছে।হনুমান খুব বড় বিজ্ঞানী। হনুমানই প্রথম ইন্টারনেট আবিষ্কার করেন। ইলেকট্রনের গতিতে লঙ্কায় তিনি আগুনকে ভাইরাল করে দিয়েছিলেন। ইন্টারনেটের চোটেই স্বর্ণলঙ্কা পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এরপর প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণার জন্য পৃথিবীতে চালু করেন হনুমানমন্দির। সেগুলিকে ছোটো করে, মানমন্দির বলা হয়। সেখানে আগে গ্রহ, তারা, এসব নিয়ে গবেষণা হত, পরে হোয়াটসঅ্যাপ ইউনিভার্সিটি আবিষ্কৃত ... ...
দিল্লির শীর্ষ আদালতের খবর। গত কালের। খবরটা অত্যন্ত জরুরি, কিন্তু বিশেষ কোথাও পাবেননা। তাই আমিই লিখি।খবরটা প্রাথমিকভাবে একটা মামলার। শিলিগুড়িতে একটা অ্যাক্সিডেন্ট হয়, কিছুদিন আগে। সেই নিয়ে উত্তরপ্রদেশের এক ব্যক্তি ক্ষতিপূরণের মামলা করেন, শিলিগুড়ির এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। মামলাটা হয় উত্তরপ্রদেশে। তাতে শিলিগুড়ির ব্যক্তি সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন, যে, যেহেতু ঘটনাটা শিলিগুড়ির, সাক্ষীসাবুদও সেখানকার, তাই মামলাটা সেখানেই সরানো হোক। এছাড়াও, আরও একটা ব্যাপার ছিল, যে, সাক্ষীসাবুদ, এবং অভিযুক্ত, সকলেই বাঙালি, তাদের হিন্দি ভাষায় অস্বাচ্ছন্দ আছে।শীর্ষ আদালতের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত, আবেদনটা খারিজ করেন। তার নানা আইনী যুক্তি এবং মারপ্যাঁচ থাকতেই পারে। সেটা খবর না। খবর হল, তিনি যা বলেছেন। এনডিটিভি ওয়েবসাইটে উদ্ধৃতি ... ...
জেনোসাইড, সিলেট। ২৫ মার্চ রাতেই পাকিস্তান সেনাবাহিনী হত্যাযজ্ঞ শুরু করে শহরে। ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলসের বাঙ্গালী সৈণিকরা ও প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু করেন। ২৫ মার্চে আগরতলা মামলার আসামী, পাকিস্তান আর্মি থেকে বহিস্কৃত ক্যাপ্টেম মুত্তালিব প্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু করেছিলেন সিলেট শহরে। হবিগঞ্জের দিক থেকে ব্রিগেডিয়ার সিআর দত্তের নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনীর আরেকটি দল ও এগিয়ে আসে সিলেটকে শত্রু মুক্ত করতে। কিন্তু ৮ এপ্রিল পাকিস্তান সেনাবাহিনী বিমান আক্রমন শুরু করলে মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটতে বাধ হন। পাকিস্তান আর্মি সিলেট শহরের নিয়ন্ত্রন নিয়ে আরো ভয়ংকর তান্ডব শুরু করে। তারা ব্যাংকের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বাঙ্গালী পুলিশদের হত্যা করে। ৯ এপ্রিল সিলেট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল আক্রমন করে কর্তব্যরত অবস্থায় সার্জারী ... ...
ওয়েস্ট-বেঙ্গল মেমোরান্ডামটা কী, কেউ কেউ জানতে চেয়েছেন। সংক্ষেপে লিখে দেওয়া যাক, কারণ বিগত চল্লিশ বছরের ঘটনাবলী নিয়ে কোনো বই-টই এখনও লেখা হয়নি। ইতিহাসবিদরা একটু লেটে চলেন। জরুরি অবস্থার পর, ১৯৭৭ সালে ক্ষমতায় আসে বামফ্রন্ট। সেই সরকারের অন্যতম অ্যাজেন্ডা ছিল যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পুনরুদ্ধার। এবং রাজ্যের হাতে আরও বেশি ক্ষমতার দাবী। এই নিয়ে একটা দাবীপত্র প্রকাশ করা হয়। তৎকালীন কেন্দ্রীয় জনতা সরকারের কাছে পাঠানোও হয়। সেই মূল চিঠিটা এখন পাওয়া শক্ত। তবে তার মূল দাবীদাওয়া গুলো ছিল মোটামুটি এরকমঃ১। সংবিধানের ইউনিয়ন শব্দটা বদলে যুক্তরাষ্ট্র করতে হবে।২। প্রতিরক্ষা, বিদেশ, মুদ্রা, যোগাযোগ ছাড়া কেন্দ্রের হাতে আর কিছু থাকবেনা। সবই রাজ্যের হাতে দিতে হবে।৩। রাজ্যে ... ...
মুর্শিদাবাদ। সে সময় পৃথিবীর অন্যতম সমৃদ্ধ, ধনী শহর। ক্লাইভ লিখেছিলেন, লন্ডনের সঙ্গে মুর্শিদাবাদের একটাই তফাত। সেটা হল, লন্ডনের ব্যাঙ্কারদের চেয়ে অনেক অনেক ধনী শেঠরা মুর্শিদাবাদে বসবাস করেন। ব্যাপারটা আদৌ অস্বাভাবিক না। জগৎ শেঠদের থেকে টাকা ধার নিতেন মুঘল সম্রাটরা। জগতের শেঠ, উপাধিটাই মুঘল সম্রাটের দেওয়া। মারাঠারা কোটি খানেক টাকা, সে আমলের কোটিখানেক, লুঠ করার পরেও, শেঠরা বিজনেস-অ্যাজ-ইউজুয়াল চালিয়ে গিয়েছিলেন অষ্টাদশ শতকের প্রথমার্ধ্বে। চালাবেন নাই বা কেন। বাংলা তখন পূর্ব গোলার্ধের অন্যতম বাণিজ্য কেন্দ্র। বণিকরা আসছে সারা পৃথিবী থেকে। মসলিন ছড়িয়ে যাচ্ছে সারা পৃথিবীতে। নগদ দিয়ে কিনে নিয়ে যাচ্ছে ডাচ, মুর, ইংরেজরা। "এখানে সোনারূপো আসে, বেরোয়না"। বলেছিলেন এক বণিক। সে মুর্শিদাবাদ থাকেনি। ... ...
ফেবু থেকে নিজস্ব সংবাদদাতাঃ সাধারণভাবে নতুন কোনো জোট ঘোষণা হলে সমর্থকদের মধ্যে উল্লাসের বাণ ডাকে, কিন্তু খুবই অদ্ভুত ব্যাপার, যে, I.N.D.I.A জোট ঘোষণা করার পর থেকেই ফেবু বিপ্লবীদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে অভ্রংলিহ নীরবতা। তাঁরা এতদিন দাঁড়িপাল্লায় তুলে বিশ্বের সবাইকে ফ্যাসিস্ত বলে এসেছেন, এখন জোটের ব্যাপারটা ঠিক হজম করতে পারছেননা। বরং আমজনতার মধ্যেই এই নিয়ে উৎসাহের অন্ত নেই। মিমের বন্যায় ভেবে যাচ্ছে সমাজমাধ্যম। পশ্চিমবঙ্গের এক অধ্যাপক লিখেছেন, "নোভোট্টুর নতুন নাম হল ইন্ডিয়া"। ততটা বিখ্যাত নন এমন এক রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী বলেছেন, "আয় তবে সহচরী/ একসাথে চালচুরি / সাথে আছে ইয়েচুরি / নাহি ভয়"। বাংলার ডিলান বলে পরিচিত প্রবীণ এক প্রফেটের গান অনুসরণ ... ...
উনিজি ফরাসি শিখেছেন, সেই খবর দেখে, আমার একটা পুরোনো গপ্পো মনে পড়ল। উনিজি নিজমুখে তো বলবেননা, তাই আমিই বলি। শুনুন। সে অনেকদিন আগের কথা। উনিজির ভাষাশিক্ষা তখন সবে শুরু হয়েছে। ফরাসি শেখার আগে উনি তখন ইংরিজি শিখছেন। বেশিদূর এগোননি। পাপ্পু নামের এক পিছনপাকা ছোকরা তাঁকে খুবই জ্বালায়। সে একদিন জিজ্ঞাসা করল, "তোমরা তো খুবই রিগ্রেসিভ, বিদেশী ভাষা শিখলে ম্লেচ্ছ হয়ে যাবেনা?উনিজি তখন ছোটো, রিগ্রেসিভ একটা কঠিন শব্দ। মানে জানেননা। তাই হাঁ করে রইলেন। সেই পিছনপাকা ছোকরা তাই দেখে বলল, "আরে রিগ্রেসিভ মানে জানোনা? প্রোগ্রেসিভের উল্টো। অ্যান্টোনিম।"উনিজি তখনও অ্যান্টোনিম কাকে বলে জানেননা। ছোকরাকে তাই জবাব দেওয়া হলনা। কিন্তু মাথায় জেদ চেপে ... ...
হিন্দুবীর কীভাবে হবেন? ধরুন, আপনার ঘরের ছাদ ঢালাই হচ্ছে। হবার পর আপনি রাজমিস্ত্রিকে জিজ্ঞাসা করলেন, "মাথার উপর ভেঙে পড়বেনা তো?" রাজমিস্ত্রি উত্তর দিলেন, "সে আমি কী জানি। মা কালীর পুজো দিন। সকলই তাঁর ইচ্ছে"। কিংবা ধরুন, বাড়ির সামনে ব্রিজ হচ্ছে। উদ্বোধনের আগে মন্ত্রীমশাই ইঞ্জিনিয়ারকে জিজ্ঞাসা করলেন, "এর উপর দিয়ে গাড়ি চালালে টিকবে তো?" ইঞ্জিনিয়ার স্মিত হাস্যে বললেন, "সেটা তো আমার জানার কথা না। কাল মা শেতলার পুজো দিয়েছি, তিনি চাইলে ব্রিজ থাকবে, নইলে আপনি উঠলেই ভেঙে পড়তে পারে"। এবার ধরুন, চাঁদে গরুর-গাড়ি পাঠানো হচ্ছে। একদল বিজ্ঞানী প্রচুর ঢাকঢোল পেটালেন। আপনি জিজ্ঞাসা করলেন, "এ গাড়ি চলবে তো?" বিজ্ঞানীরা বললেন, "চলা তো পরের কথা, ... ...
চাঁদে কি আপনি কখনও জমি কিনবেন? না। সোনা-রুপো-তামা-প্লাটিনাম তুলে এনে আপনার ব্যাঙ্কের লকারে জমা করা হবে? না। চন্দ্রাভিযানে বিজ্ঞানের নতুন দিগন্ত খুলে যাবে? না। অন্যের মহাকাশযান আকাশে পাঠিয়ে কিছু রোজগার নিশ্চয়ই হয়, কিন্তু সে তো চন্দ্রযান না পাঠিয়েও হয়। এতে নতুন যা হবে, তা হল গুচ্ছের টাকা খরচা হবে, কে জানে ঠিকাদারিতে কার কপাল খুলবে। যারই খুলুক, আপনার না। কিন্তু তাতে কি, আপনার কাজ হাততালি দেওয়া, দেবেন, ব্যস।আপনি কি পাকিস্তানে গিয়ে, নিদেনপক্ষে কাশ্মীরে, কখনও জমি কিনবেন? না। ঘোড়াড্ডিমের একটা সীমান্তে দুই দেশের প্রচুর সৈন্য জড়ো করে, এদিক সেদিক সার্জিকাল-স্ট্রাইক করলে বাজার-দোকান-দেশ-বিদেশ কোথাও কি আপনাকে কেউ একটাও সেলাম ঠুকবে? না। গুচ্ছের ... ...