দেবমাল্যদের এ গ্রামে স্কুল পড়ুয়ার সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি । শিক্ষার চল আছে ভালরকম । সন্ধে ছটা বেজে গেছে । দেবমাল্য কলতানকে বলল , ' ছটা বেজে গেছে ..... লাইব্রেরী খুলে গেছে । চলুন কলতানদা ফেরবার পথে আমাদের এখানকার লাইব্রেরীটা আপনাকে দেখিয়ে নিয়ে যাই । লাইব্রেরী কালচারটা আমাদের গ্রাম এখনও ধরে রেখেছে । অনেক কমবয়সী ছেলেমেয়েও আসে ..... '----- ' হ্যা .... চল .... ' কলতানের দেখে মনে হল লাইব্রেরীটি অনেক পুরনো । ছোট মাপের একটা হল বলা যায় । দোতলাও আছে । লাইব্রেরিতে ঢুকে বেশ পুরনো দিনের আবহ পাওয়া গেল । বয়স্ক এবং অল্পবয়সী অনেকে লম্বা টেবিলের ধারে বসে ... ...
' ভাইজান আছেন নাকি ..... ও ভাইজান .... 'সকাল নটা বাজে । দেবমাল্যর কাল একটা হলফনামা জমা দেওয়ার ব্যাপার আছে বারাসাত কোর্টে বেলা দেড়টার সময় । কাল তৈরি হয়ে বেরোতে হবে বারোটা নাগাদ । কাগজপত্র গুছিয়ে নিতে হবে আজকের মধ্যেই । একটা তহবিল তছরুপের মামলা । তাছাড়া কলতান গুপ্তেরও আজ আসার কথা । তেমনই তো কথা আছে । শিয়ালদা থেকে ছটা তেত্রিশের ট্রেনটা যদি ধরে ....।একবার ফোন করে দেখবে কিনা ভাবছিল দেবমাল্য .... এমন সময়ে ' ভাইজান ..... ও ভাইজান .... ' ।কে আবার ডাকে এই সময়ে । কলতান বাইরে বেরিয়ে এল । দেখল লুঙ্গি আর হলুদ রঙের ফুলশার্ট ... ...
দেবমাল্য কলতানের ঘরে বসে আছে প্রায় চল্লিশ মিনিট। গোড়া থেকে আগা পরাণ মামলার সবটাই বলেছে সে কলতানকে। দেবমাল্যর কথার মাঝখানে একবারও ঢোকে নি কলতান। নিবিষ্ট মনে শুনে গেল ঘটনা পরম্পরা। ---- ' আপনি যে কেসটা টেক আপ করেছেন এজন্য যথেষ্ট ধন্যবাদ আপনার প্রাপ্য। ' ---- ' কলতানবাবু আপনি আমাকে তুমি বললেই আমার ভাল লাগবে .... ' ... ...
বসন্ত হেলেদুলে সেলুনের দিকে যাচ্ছিল। মন বেশ ফুরফুরে। সকাল এগারোটা বাজে। নানা তালেগোলে অনেকদিন চুল কাটা হয়নি। আজ একটু ফুরসত পাওয়া গেছে। নিত্যানন্দ হেয়ার কাটিং সেলুনে সৌরেনকে দিয়ে দলাইমলাইও করাতে হবে। ও : যা ধকল গেল .….. অ্যদ্দিন ধরে ..... বসন্ত হুসস্ করে একটা শ্বাস ফেলল মাথা নীচু করে। চোখ তুলে সামনে তাকিয়ে দেখে মৌসুমী আসছে। সঙ্গে ওর আট বছর বয়সী ল্যাম্বোটটা ঠিক আছে ... ...
লোয়ার কোর্টে পরাণ বাগ্দীর যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজা ঘোষিত হল প্রায় তিন বছর ধরে মামলাটা চলার পর। সাক্ষ্যপ্রমাণ সব পরাণের বিরুদ্ধে গেল। মানে, পরাণের পক্ষে দেবার মতো সাক্ষী পাওয়া গেল না। দেবমাল্য সরকার উকিল হিসেবে পরাণের জন্য প্রচুর লড়েছিল। কিন্তু উপযুক্ত সাক্ষ্যপ্রমাণের অভাবে পরাণকে নির্দোষ প্রমাণ করা গেল না। সেসান জজ সুহৃৎ মিত্র নিজেও বোধহয় জানেন যে পরাণ পুরোপুরি নিরপরাধ। কিন্তু তার কিছু করার ছিল না ... ...
( দ্বাদশ ও অন্তিম পর্ব ) দীপ্সিতার ফোনের জন্য সকাল থেকে অপেক্ষা করে বসে আছে কলতান । সে নিশ্চিত ছিল এ ফোনটা আসবেই । দীপ্সিতার কল এল এগারোটা নাগাদ । ------ ' হ্যা বল দীপ্সিতা ..... কিছু এসেছে ? '----- ' হ্যা স্যার ..... রিপ্লাই এসেছে । সাড়ে চারটের সময় লেকের পাশে দেখা করতে রাজি হয়েছে ..... '----- ' ওহ্ .... ফ্যান্টাস্টিক । তুমি তৈরি হয়ে যাও .... '----- ' কিন্তু .... আমার খুব ভয় করছে স্যার ... ...
পাড়ায় ঢুকতে ঢুকতে পাঁচটা বেজে গেল । স্বস্তিক দাঁড়িয়ে ছিল রাস্তার মোড়ে । ঠিক দাঁড়িয়ে ছিল না , ওখানে অস্থির পায়চারি করছিল । রুদ্রা হাঁচোড়পাঁচোড় করে এসে পড়ল সেখানে ।----- ' কি হল ..... কতক্ষণ দাঁড়িয়ে আছ ? ' তাড়াহুড়ো করে আসতে গিয়ে হাঁফিয়ে গেছে রুদ্রা ।----- ' তা ... প্রায় কুড়ি মিনিট হবে ..... '----- ' এত ট্র্যাফিক জ্যাম ... ...
কলতান দীপ্সিতাকে নিয়ে গিয়ে স্থানীয় থানায় একটা জেনারেল ডায়েরি করালো। দেখা গেল ও সি মোহন সিং কলতান গুপ্তর নামের সঙ্গে ভালভাবেই পরিচিত। কলতানকে অবশ্য এই প্রথম চোখে দেখল সে । যথেষ্ট সম্মান দেখাল কলতানকে । ----- ' আপনি চিন্তা করবেন না ..... কয়েক ঘন্টার মধ্যে ট্রেস করে ফেলব ...... ' মোহন সিং-এর স্বর আত্মবিশ্বাসী ... ...
মেসেজে ইংরেজি হরফে যা লেখা আছে সেটা হল ------ Je gache se to ar firbe na ..... michi michi mon kharap kore luv ki .... Notun kore jibonta suru karo ... tomar anek kichu pabar ache e jibon theke.... ami sob samay tomar sange achi.... ... ...
কুলচা রাত সাড়ে আটটার সময় এল হন্তদন্ত হয়ে । ----- ' আরে ..... এ ক'দিন এত প্রিঅকুপায়েড ছিলাম যে তোমার সঙ্গে একদম কানেক্ট করার সময় পাইনি ..... প্রোজেক্টের কাজ চলছে । তারপর ..... দীপ্সিতার ম্যাটারটার আউটকাম কি হল ? ' ---- ' এখন পর্যন্ত যা মনে হচ্ছে ..... আউটকাম ইজ কোয়াইট প্রমিসিং ... ...