শুরু হল রাহুল দাশগুপ্ত'র ধারাবাহিক উপন্যাস - সার্টিফিকেট। ... ...
যাঁরা মারা গেছেন বিজয় রজকের চোখে তাঁদের অধিকাংশই দাঙ্গাকারী নন। বিশেষত, যদি খতিয়ে দেখা হয়, তাহলে বোঝা যাবে যে নিহতদের কেউই অতীতে কোনো অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। এখন সবকিছুতেই সাম্প্রদায়িক রং লাগানো হচ্ছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এমন জায়গায় দাঙ্গা শুরু হয়েছে যেখানে হিন্দু বসতি শেষ হচ্ছে আর মুসলিম বসতি শুরু হচ্ছে—বর্ডার জাতীয় এলাকায়। ... ...
এর মধ্যে একটা কাণ্ড ঘটে গেলো, এক দুপুরবেলা। বাইরের ঘরে বসে ছিলো তুলিকা আর জয়ি, দুজনে মিলে প্ল্যান করছিলো কেমন হবে পরের সংখ্যা শাম্বর প্রচ্ছদ। তুলির সামনে একটা বড় সাদা কাগজ, হাতে পেনসিল, একটা দুটো আঁচড় পড়েছে কাগজটায়, আর গলা ছেড়ে গাইছে জয়ি, মরি লো মরি আমায় বাঁশিতে ডেকেছে কে, এমন সময় বাইরের থেকে জোরে জোরে দরজায় ধাক্কার শব্দ, আর তার সাথে উচ্চকিত কণ্ঠ: কে গায় আমার গান, আমার গান গাইছে কে! থেমে যায় জয়ি, একটু ঘাবড়িয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসু চোখমুখে তাকায় তুলির দিকে। ঠোঁট উলটিয়ে, বিস্ফারিত চোখে, দুটো হাতের কব্জি ঘুরিয়ে বোঝায় তুলি সে-ও বুঝছে না কিছু। এমন সময় আবার দরজায় ধাক্কা: কে গাইছে আমার গান? ... ...
অবৈধভাবে নদীবক্ষ খননের জন্য কাশ্মীর এখন সংবাদের শিরোনামে। কয়েক মাস আগেই নীলামের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়েছে শতাধিক নদীবক্ষ থেকে মিনেরালস ( বালি, পাথর, নুড়ি) ছেঁকে নেবার ব্যাপারটি। যে কম্পানিগুলি নীলামে জিতেছে তারা পরিবেশসংক্রান্ত ছাড়পত্রের জন্য অপেক্ষা না করেই পরদিন থেকেই খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করে দিয়েছে। তার কোনো বিহিত না করেই উল্টো চাপ দিয়ে সরকারি হুকুমনামা এসে গেল যে পরিবেশসংক্রান্ত ছাড়পত্র দেবার ব্যাপারটিই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেরে ফেলতে হবে। আশ্চর্য কী যে একদিনে পঞ্চাশেরও বেশি মিটিং সেরে ফেলা হবে। ... ...
'আজ থেকে সাড়ে তিনশো বছর আগে ইউরোপের শিক্ষিত মানুষেরা সভ্যতার আলো নিয়ে উত্তর আমেরিকায় পৌঁছেছিল। ওখানকার আদি বাসিন্দা অসভ্য রেড ইন্ডিয়ানদের যখন কিছুতেই বশ করতে পারছিল না, তখন কি করেছিল জানেন? হত দরিদ্র রেড ইন্ডিয়ানদের মধ্যে শয়ে শয়ে কম্বল বিতরণ করেছিল।' 'সেতো অত্যন্ত ভালো কাজ। সভ্য মানুষদের মত কাজ।' আমি হাসলাম। বললাম, 'কম্বলগুলো ছিল হাসপাতালে স্মল পক্সে আক্রান্ত মৃত রোগীদের। উত্তর আমেরিকা স্মল পক্স মুক্ত অঞ্চল ছিল। তাই এই রোগের বিরুদ্ধে রেড ইন্ডিয়ানদের কোনরকম গোষ্ঠী ইমিউনিটিও ছিল না। ফলে কয়েক বছরের মধ্যে কয়েক লাখ রেড ইন্ডিয়ান স্মল পক্সের মহামারীতে মারা গেল। আমেরিকা শেষমেশ সত্যিকারের সভ্য দেশ হয়ে উঠল।' ... ...
হারুনের এই ঝড়ের মতো হাজির হওয়া, হাত নাড়িয়ে নাড়িয়ে মজাদার কিসসা বলে এতগুলো ঝানু ব্যাবসাদারকে মাতিয়ে রাখা আবার ঝুপ করে অন্ধকার পথে মিলিয়ে যাওয়া এসবই একজন হাঁ করে গিলছিল। তার নাম হরিণ। বারো-তেরো বছরের বালক। এসেছে শান্তিপুরের দুকুল আর মলমল নিয়ে, দামোদর শেঠের তল্পিবাহক হয়ে। ফাই-ফরমাশ খাটে। শেঠের গা হাত পা টিপে দেয়। মাথায় তেল মাখিয়ে দেয়। শেঠ খাটিয়ে নেবে কিন্তু খেতে পরতে দেবে, কিছু টঙ্কাও আসবে গরিবের সংসারে। এই ভেবেই তাকে যেতে দিল তার বাপ। তা মন্দ লাগছে না হরিণের, এই শেঠের সঙ্গে ঘুরে বেড়াতে। তবে এই ভর হেমন্ত সন্ধ্যায় তার বাড়ির কথা মনে পড়ে। আকাশে মস্ত চাঁদ। জোছনার মধ্যে সে পিঠেপুলির গন্ধ পায়। নারকেলে গুড়ের পাক দেওয়ার গন্ধ। ... ...
কী হয়েছে না হয়েছে তা সকলেই জানতে পারে। লোকে সাধারণত পার্টি আর মিডিয়া থেকে পাওয়া তথ্যের উপর নির্ভর করেন, কিন্তু সেসব তথ্যে পক্ষপাতদুষ্টতা থাকে। এরকম একটি সাম্প্রদায়িকভাবে বিভক্ত অঞ্চলে, যেখানে যে-কোনো সময় দাঙ্গার আগুন জ্বলে উঠতে পারে, সেখানে মানুষের সঙ্গে কথা বলা যথেষ্ট কঠিন কাজ, বিশেষ করে যারা পরিবারের লোকজনদের হারিয়েছেন তাঁদের সঙ্গে কথা বলা। মৃত্যুর বিভিন্ন কারণ বাদ দিয়েই আমরা মৃতদের পরিবারের সঙ্গে কথাবার্তা বলব বলে পরিকল্পনা করলাম। ... ...
আমি ভিজিট রেখে বাকি টাকা ফেরত দিচ্ছিলাম, ছেলেটির বাবা বলল, ডাক্তারবাবু, দয়া করে টাকাটা রেখে দিন। সবার তো দেওয়ার ক্ষমতা নেই। আমার ছোট্ট একটা মুদির দোকান আছে। লকডাউনে লোকজনের অবস্থা নিজের চোখে দেখেছি। তেমন কয়েকজনকে যদি পয়সা না নিয়ে দেখে দেন। ক্ষমতা থাকলে আরও দিতাম। আমি কিছুতেই নেব না। আর ছেলেটির বাবা দুহাত জোর করে দাঁড়িয়ে আছে। বলছে, আমি গরীব ডাক্তারবাবু, কিন্তু আমারও তো কিছু করতে ইচ্ছে করে। গরীব? কে গরীব? যে তার সীমিত সাধ্য নিয়েও এই অকালে অন্যের পাশে দাঁড়াতে চাইছে? নাকি গরীব তারা, যারা এই মহামারীর সময়েও সুযোগের সদ্ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকা ব্যাংক ব্যালেন্স বাড়াচ্ছে? ... ...
জয়মালিকা সেনের কর্মকাণ্ডের ঠিক ঠিক মতো সামাজিক-রাজনৈতিক ব্যাখ্যা খুঁজে পান না সোমেশ্বর। শুনেছেন, শুরু হয়েছিলো বনসৃজনের পরিকল্পনা নিয়ে। পাথুরে, ঊষর পাহাড়িয়া জমিতে বহু গাছ পুঁতেছিলেন তিনি এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ কিছু বন্ধুবান্ধব, এবং বহু যত্নে বাঁচিয়েছিলেন তাদের, বাড়িয়েও ছিলেন। কত গাছ? হদিশ করা মুশকিল। হয়তো এক লক্ষ, পাঁচ লক্ষও হয়তো বা। এ সবই শোনা কথা। জয়মালিকা নিজেই ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন সংখ্যার কথা বলেন। কিন্তু আসলে সংখ্যাটি অপ্রয়োজনীয়, অপ্রাসঙ্গিক। জমি এবং প্রকৃতির চরিত্র অনেকটাই বদলিয়ে দেবার মতো যথেষ্ট সংখ্যক বৃক্ষরোপণ যে হয়েছিলো, সে বিষয়ে তো সন্দেহ নেই। আজ এখানে ধান ফলে, প্রতিটি মরশুমে শাক-সবজিও ফলানো হয়। বড় বড় ফলের গাছ, আম-কাঁঠাল-আতা-গাবের অভাব নেই। ফুল ফোটে হাজারো রকমের, বসন্তে অশোক-পলাশের লাল, নীল পাহাড়ের পটে অপরূপ শোভা ধরে। গো পালন হয়, প্রায় পঁয়ত্রিশ-চল্লিশটা ষাঁড়-গোরু-মোষের সংসার। ... ...
একবার একটি রুগ্ন ছেলেকে নিয়ে কী বিষম বিপদই না হয়েছিলো। মধ্য এশিয়ার যে অঞ্চল থেকে শাহেনশাহ বাবর এসে হিন্দুস্তানের দখল নিলেন, সেই বীররসসিক্ত ফরগনার আসেপাশে কোথাও একটি পরিবারের গল্প। বাড়ির ছেলেটি ছোট থেকেই রুগ্ন, প্রায় নানা অসুখ বিসুখে ভোগে। মধ্য এশিয়ার মানুষদের সাথে যাঁরা মিশেছেন তাঁরা জানবেন --- শারীরিক দুর্বলতা ওখানে একটা ভীষণরকম লজ্জার ব্যাপার। গল্পের রুগ্ন ছেলেটি, বাংলায় হলে হ্যত তার নাম হত অমল, সোভিয়েত আজ্ঞাধীন বর্তমান উজবেকিস্তানে তারই নাম হলো স্পার্টাক। তো, স্পার্টাক ছোট থেকেই বাড়িসুদ্ধ সবার আলোচ্য বস্তু। আমাদের দেশে হলে মা ঠাকুমা আজ এই মন্দির কাল সেই পীরের থানে মানত করত -- হেই বাবা রোগ ভালো করে দাও। কিন্তু স্থানমাহাত্ম্য এমনই, স্পার্টাককে নিয়ে বাড়ির লোকের আলোচনা --এর বোধহয় স্পার্মকাউন্ট খুব একটা ভালো হবেনা। ... ...
হাসিখুশি আমার প্রথম বই। তখন আমি পড়তে শিখে গিয়েছি মনে হয়। কবে আমার অক্ষরজ্ঞান হয় তা আর মনে নেই। ক্লাস ওয়ান-টু পড়িনি, একেবারে ক্লাস থ্রিতে ভর্তি হয়েছিলাম বেলগাছিয়ার মনোহর একাডেমিতে। বাড়িতে আমার প্রথম শিক্ষক ছিলেন রাখালবাবু। বস্তিতে থাকতেন, তাঁর ভাই বাজারে আলু বিক্রি করতেন। তা আমি পরে দেখেছি। এঁরা সব পূর্ববঙ্গের মানুষ। অবস্থার ফেরে জীবন এমন হয়েছিল। বাজারে যে চায়ের দোকান ছিল ব্রজেনবাবুর, তাঁর পুত্র তপন আমাদের বন্ধু। তারাও ছিল বড় ঘর। অবস্থার ফেরে তার বাবা এপারে এসে চায়ের দোকান করে সংসার নির্বাহ করতেন। তপনের বোন শিখা আমার বোন অপর্ণার সহপাঠী। তাকে আমাদের এক বন্ধু ছোটন, এখন সে বেঁচে নেই, বলত চা-উলি। খুব খারাপ লাগত। ছোটনরা ব্যবসায়ী পরিবারের ছেলে। এসব যেমন বলত, আবার তপনের সঙ্গে মিশতও। এমনিতে সেই সময়ে ধনী দরিদ্রে ভেদাভেদ ছিল না বিশেষ। পূর্ববঙ্গে জমি নির্ভর মানুষ দেশভাগে কী বিপন্ন হয়েছিল তা এখন বুঝতে পারি। ... ...
কিন্তু টিন গুদাম, দর্মা লাইন, এবং ২৪ নং বাড়িতে লুটের প্রেক্ষিত কী ছিল? আমরা জানতে পারি যে এর পিছনে এমন কিছু কারণ রয়েছে, যার শিকড় অনেক গভীরে প্রোথিত, আর রয়েছে ইন্ধন জোগানোর ঘটনা। ভাটপাড়া বিধানসভা নির্বাচন পশ্চিমবঙ্গের সাম্প্রতিক দুই প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দল বিজেপি এবং তৃণমূলের যুদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। অর্জুন সিংহের ছেলে পবন সিংহের বিরুদ্ধে মদন মিত্রকে তৃণমূলের পক্ষ থেকে নির্বাচনি প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করানো হয়। অর্জুন সিংহ ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রে বিজয়ী হওয়ার ফলে, তাঁকে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিতে হয়। আর তার ফলেই ভাটপাড়া বিধানসভায় বিধায়কের আসনটি খালি হয়। মদন মিত্রের কাছে এটা ছিল ‘ওয়াটারলুর যুদ্ধ’র সমান। ... ...
ভদ্রমহিলা উঠে দাঁড়ালেন। বললেন, 'যদি রিপোর্ট পজিটিভ আসে তখন কি করব? বাড়ির বাইরে তো বেরোতে পারবো না? না না..... এখন টেস্ট করা যাবে না। এমনিতেই কোথা থেকে টাকা জোগাড় করবো সেই চিন্তায় ঘুম নেই।' ... ...
ছেলেটার কিছুই করার নেই তখন, কিছু করার ইচ্ছেও নেই বোধ হয়। টিলা থেকে নেমে একটু হাঁটা-চলা করে আবার এসে বসলো ঐ টিলার ওপরেই। ঝোলা গোছের কিছু একটা সঙ্গে ছিলো তার, সেটা থেকে বের করলো মিইয়ে যাওয়া একটা মুড়ির মোড়ক, সেটা খুলে মুড়িটা খেয়ে খানিকটা হেঁটে একটা ঝর্ণার জল খেয়ে নিলো পেট ভরে, তারপর আবার ঐ টিলার ওপরেই ফিরে এসে শুয়ে পড়লো চিৎ হয়ে। সন্ধ্যে হয়ে এসেছে তখন, ওপরের নীল আকাশটায় লেগেছে সূর্যাস্তের রঙের ছোঁয়া, ভাসমান এক-একটা সাদা মেঘ এসে সেই নীল ক্যানভাসে লাল-কমলা রঙের ওপর ছোট ছোট প্যাটার্ণ তৈরি করছে; সেই অপরূপ দৃশ্যের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে কখন যেন বুজে এলো তার ক্লান্ত চোখ দুটো, না জেনেই ঘুমিয়ে পড়লো সে। ... ...
মেয়েদের সবার নাম হয় গুলরুখ , গুলচেহরা বা গুলবদন । আরেক গুলরুখের আনাগোনাও শুনতে পেয়েছিলাম আরও বেশ কিছু পরে । ইতিহাসে এইসব গুলরুখদের নাম লেখা থাকে না । সেই গুলরুখের ভালোবাসার সখী ছিল জাহান আরা । গুলরুখ, জাহান আরার জন্য কত নতুন গান বাঁধত । কত নাচের মুদ্রা শিখত শুধুমাত্র শাহজাদির মন মাতানোর জন্য । এরকমই একটা সন্ধে নিয়ে এসেছিল গুলরুখের যত্নে শেখা নাচ , জাহান আরার সামনে । সবে সন্ধে নেমেছে । একটা একটা করে বাতিদানে বাতি জ্বালিয়ে দিচ্ছে মহলের মেয়েরা । টানা বারান্দায় সারি দিয়ে প্রদীপ । সে যে কী অপূর্ব দৃশ্য ! ... ...
সেদিন বাজারের কাছে অনিলদার সংগে দেখা। দেখলাম আরো রোগা হয়ে গেছেন। হাতে একটা লাঠি। আমায় দেখতে পান নি।আমিই এগিয়ে গিয়ে কথা বললাম। খুব খুশি আমায় দেখে। বললেন - তোমার বৌদি চলে গেছে জানো। হঠাৎ তিন দিনের জ্বরে চলে গেল। একা হয়ে পড়েছি বড্ড, বুঝলে। চোখেও কম দেখি আজকাল। তাই বই পড়াও বন্ধ। তারপর একটু চুপ করে রইলেন, তারপর বললেন - আমি এখন এক বৃদ্ধাশ্রমে থাকি বাসু। না, স্ব-ইচ্ছায়। ছেলেটা নিজে দেখেই বিয়ে করলো এক সময়। আমায় বলতে পারছিল না। ওর মাকে বলে যে আমার শ্বেতী থাকাটা ওর হবু বৌএর পছন্দ নয়। আমরা সংগে না থাকলে সে বিয়ে করতে পারে। আমি বলি - বিয়ে করুক ও। কলকাতার দিকে ফ্লাট কিনুক। আমি কিছু টাকা দিচ্ছি। ... ...
সাধারণত রোগ সেরে গেলে কেউ ডাক্তারের কাছে ফেরত আসেন না। যারা আসেন, হয় তাদের জ্বর কমেনি অথবা পেটে ব্যথা আরও বেড়েছে। প্রথম দিকে হতাশ হয়ে পড়তাম। ভাবতাম, কারোরই তো অসুখ কমাতে পারছি না। আস্তে আস্তে বুঝলাম, দশ জনের মধ্যে দু- তিনজন ফেরত আসছেন। বাকিরা সুস্থ আছেন বলেই আসছেন না। দিনকে দিন অভিজ্ঞতা বাড়ছে। এখন আর সহজে আনন্দ, মন খারাপ, হতাশা এইসব হয় না। কতো রকমের মানুষ যে হয়! সাধারণ মানুষ, ‘ডাক্তার বাবু, আমি ঠিক হয়ে যাবো তো?’ ... ...
আমাদের তথ্যানুসন্ধানের কাজ শুরু হয় ২০১৮-র এমন এক সময়, যখন ভাটপাড়ার অধিবাসীদের দৈনন্দিন জীবন আগুন আর ছাইয়ের উপর দাঁড়িয়েছিল। ভাটপাড়া নাগরিক অধিকার রক্ষা কমিটির সহায়তায় আমরা বিভিন্ন সময়ে কিছু ফিল্ড সার্ভে-ও করেছিলাম। বছরখানেক পেরিয়ে এসে আমরা যখন পুরোনো বিবৃতিগুলির পর্যালোচনায় বসেছি, ঠিক তখনই কিছু নতুন শব্দকে কেন্দ্র করে নতুন করে এক উত্তেজনাকর পরিস্থিতি রূপ নিতে শুরু করেছে—‘নিজামউদ্দিন-মুসলিম-করোনা’। ইতিমধ্যে তেলিনিপাড়াতেও দাঙ্গা শুরু হয়ে যায়, এবং ফলস্বরূপ হুগলি নদীর দু-পারেই সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ... ...
মাওরীদের হাতে টাসমানের বেশ কয়েকজন সঙ্গী নিহত হন। এই ঘটনার পর টাসমান আর সে দেশে পা রাখেন নি, ফিরে যান। যে দ্বীপটি তিনি আবিষ্কার করেন তার নাম পরে পরিবর্তিত করে রাখা হয় নিউ জিল্যাণ্ড। এর পর একশো বছরের ওপর এই দ্বীপে ইউরোপীয়দের পা পড়েনি। একশো আঠাশ বছর পর ১৭৭০ সালে ইংরেজ নাবিক ক্যাপটেন কুক আসবেন নিউজিল্যাণ্ডে, শুরু হবে সে দেশের এক কলোনিয়াল ইতিহাসের দীর্ঘ অধ্যায়। ... ...
গত শতকের ষাটের দশক থেকে আজকের দিন পর্যন্ত, প্রায় ছ'টি দশক ব্যাপ্ত শেখরনাথ মুখোপাধ্যায়ের উপন্যাস বৃত্তরৈখিক প্রকাশিত হচ্ছে ধারাবাহিক ভাবে। ... ...