হঠাৎই অফিসের কাজে জাপান চলে গেলাম। গৌতমদা বলল – এই যে তুই জাপান চলে যাচ্ছিস ... আমিও ইউরোপ চলে যাবো ভাবছি। খুব ভালোবাসতো আমাকে, আর আমিও। জাপানে পৌঁছে একদিন ফোন করলাম। গৌতমদা প্রচণ্ড এক্সাইটেড আমার ফোন পেয়ে, বলল – সুব্রত, উফফ তুই কীভাবে বরফের মধ্যে ঘুরছিস ভাবতে পারছিনা! আচ্ছা শোন, এপ্রিলের ১৭ তারিখে যাদবপুর এ কনসার্ট আছে। চলে আসিস”। আমার যাওয়ারও কথা ছিল সেই সময় দেশে, তা কোনও কারণে পিছিয়ে গেলো। মিস করলাম কনসার্টটা। একটু খটকা লেগেছিলো, কী ব্যপার, ছন্দপতন হচ্ছে নাকি! আগে গৌতমদা বললে শত বাধা সত্ত্বেও অফিস কাটিয়ে ঠিক হাজির হয়ে যেতাম। শুধু যেতাম বললে ভুল হবে, এরকম হতো যে, হঠাৎই খেয়াল করতাম গৌতমদার সাথে ট্যাক্সি করে কনসার্ট করতে যাচ্ছি,আর, ফিরতাম এক সপ্তাহ পর। যাই হোক, সেবার দেশে ফেরার পর, সল্ট লেকে BE park এ গান আড্ডা হল আবার।আমি জাপান থেকে গৌতমদার জন্য একটা Pan flute কিনে এনেছিলাম (সেটা আজ ও আছে গৌতমদার ঘরে সাজানো), বলল যে নেক্সট অ্যালবামে ওটা ইউজ করবে। গৌতমদা was gifted in such a way যে কোন মিউজিকাল ইন্সট্রুমেন্ট প্রথম বার তুলে নিয়েই বাজাতে পারত। আর একসেট বিদেশি গিটারের স্ট্রিং। তা গৌতমদার তখন কোন গিটারই নেই! আসলে একটা করে গিটার কিনত আর গিটার শিখতে সদ্যআগ্রহী কাউকে দিয়ে দিত, তো বলল ঠিক আছে আরেকটা গিটার কিনবে কয়েকদিনের মধ্যেই, তারপর স্ট্রিংগুলো লাগাবে। সেই দিন আমাদের গান স্বাভাবিক ভাবেই চলল প্রায় রাত দুটো অবধি। যেমন চলত আর কী! তারপর আমরা আমদের এক বন্ধুর গাড়ি করে ট্যাক্সি ধরিয়ে দিলাম ফুলবাগান থেকে। বিদায় জানানোর আগে আমরা সেই প্রথম দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরলাম। বোধ হয় আমি পরের দিনই জাপান চলে যাবো সেই জন্যেই হয়তো। বসন্তকালের সেই রাতে হুল্লোড় করতে করতে আমরা ফিরে এলাম, আর গৌতমদার ট্যাক্সি আস্তে আস্তে সেই ধূসর রাত্রে মিলিয়ে গেলো... ... ...
গান্ধিজিকে অন স্ক্রিন এক হাত নিলেন ন্যাশনালিস্ট 'গো'স্বামী। ... ...
তো কেদারনাথ মজুমদার পুরা রামায়ণখান দুর্ধর্ষভাবে বিশ্লেষণ কইরা সাইরা একটু মিন মিন কইরা যুক্তি দেখান যে রামায়ণের উত্তরকাণ্ডে রামের গোসব যজ্ঞের কথা আছে কিন্তু গরু খাওয়ার কথা তো পাই নাই। মনে হয় এইটা বঙ্কিমের সেই বিশ্লেষণের ধাচেই পড়ে। আমরা বুঝতে পারি কেদারনাথ কেন সেইটা পাশ কাইটা যান বা কমজোর গলায় কন- না তো। নাই তো। গোসব যজ্ঞের কথা আছে কিন্তু গরুর মাংস দিয়া মাখাইয়া ভাত খাইবার কথা তো নাই। যাউকগা। রামায়ণ সমাজে গরু খাওয়ার প্রচলন তো আছিলই উল্টা গরুর মাংসটাই আছিল শ্রেষ্ঠ মাংস বইলা গণ্য। গরু খাওয়া বন্ধ হয় মূলত বৌদ্ধ ধর্মের প্রভাবে… রামায়ণ সমাজে গরু খাওয়া হইত না; গোসব যজ্ঞ কইরা মূলত মধু দিয়া রান্না করা গরুর মাংস গাঙে ফালায় দেয়া হইত দেবতাগো খাইবার লাইগা; এইসব কথা কেউ কইলে অন্যদিকে ধইরা নিতে হইব যে তিনি বা তিনারা রামের বয়স বুদ্ধদেবের থাইকা কমাইয়া নিয়া আসছেন। আর রামায়ণরেও কইরা দিতে চাইছেন বৌদ্ধ উত্তর সাহিত্য... ... ...
অমর্ত্য সেন বলেছেন "monumental blunder", আমাদের দেশের স্বাস্থ্য-ব্যবস্থা নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে হতাশ নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের এই দীর্ঘশ্বাসে আমরা শঙ্কিত হয়ে উঠি। হাসপাতালের সামনে মুমূর্ষু রোগীর অন্তহীন প্রতীক্ষা, জরুরি বিভাগে মৃতপ্রায় মানুষের শয্যার জন্য হাহাকার, সম্ভ্রমহীন চিকিৎসা পরিষেবা ও সর্বোপরি রোগী-চিকিৎসক সম্পর্কের পারস্পরিক আস্থাহীনতা - এই নিয়ে আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা। পীড়িত মানুষ হাসপাতালের কাছে একটি সংখ্যামাত্র, যা ভিক্টর হুগোর কয়েদী চরিত্রটি মনে করিয়ে দেয় "I am not a man. I am a number"। চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে ক্ষোভ তাই সর্বত্র। চিকিৎসকের তথাকথিত অমানবিকতার কাহিনিও তাই যে মানুষের মুখে মুখে ফিরবে তা কোন অত্যাশ্চর্য রূপকথা নয়, এ চূড়ান্ত বাস্তব। এই "অমানবিকতা ও স্বার্থপরতা" কি চিকিৎসাব্যবস্থার ত্রুটি নাকি স্বাস্থ্যকর্মীদের এ সহজাত অভ্যাস ? তারা কি মানবিক মূল্যবোধের উচ্চতর আদর্শ থেকে পতিত হয়েছে, তারা কি উচ্চবর্গের প্রাণী? নাকী তারা এক অলীক স্বপ্নরাজ্যের অধিবাসী, যেখানে মূল্যবোধের অভাবই শাশ্বত সত্য!! সংবাদপত্র চিকিৎসার ময়না তদন্ত করে - কী করলে একটি মানুষ বাঁচতে পারতেন কিন্তু হৃদয়হীন চিকিৎসকের নিষ্ঠুরতার বলি হয়ে অকালে চলে গেলেন, তার মর্মস্পর্শী উপাখ্যানে নিজের অজান্তে চোয়াল শক্ত হয়ে ওঠে। বিচারক-মন ন্যায় প্রতিষ্ঠায় ব্যাকুল হয়ে ওঠে। প্রয়োজনীয় কিন্তু ব্রতচ্যুত এই ক্রুর চিকিৎসক-নামক প্রাণীটিকে একাঘ্নী বাণে বিদ্ধ করবার জন্য নিজেকেই অর্জুন বলে ভাবতে ইচ্ছে করে! তাৎক্ষণিক বিচারে দোষী সাব্যস্ত এই পাপীদের শাস্তি মনে আনে অদ্ভুত প্রশান্তি, বিপন্নতাবোধও কি একটু কমে! দেশে চিকিৎসা ব্যবস্থা আদতে একটি ব্যবসা, ধনী আর দরিদ্রের ব্যবধান সেখানে দৃষ্টিকটুভাবে প্রকট। চিকিৎসকরাও সেই ব্যবস্থার অঙ্গ। যে দেশে সংবাদপত্র ভরে কোন স্বাস্থ্যকর বাণী শোনা যায় না, যেখানে লুটপাট, ধর্ষণ, উচ্চপদাধিকারীদের নৈতিক পতনের রসালো বর্ণনায় আমরা অভ্যস্ত, সেখানে চিকিৎসককুল কী করে নিষ্কলঙ্ক থাকবেন তা ভাবা দুষ্কর। তবু যখন প্রিয়জন বিয়োগ-ব্যথা মেনে নিতে পারি না, ব্যবস্থার ত্রুটির চেয়ে চিকিৎসকের ব্যক্তিগত বিচ্যুতি বড় হয়ে দেখা দেয়। মনে মনে ভাবি, চিকিৎসা-ব্যবস্থায় যেন এই বৈশ্য মনোভাব না থাকলেই সব নিখুঁত হত - নিষ্কলঙ্ক আয়েশার ভ্রুযুগলের একতিল খামতি হল এই ভণ্ড চিকিৎসকের উপস্থিতি। ... ...
পরবর্তী সময়ে প্রমাণিত হল, মা ছাড়াও অন্যরা এ দায়িত্ব বেশ নিতে পারে। কোলের শিশুটিকে নামিয়ে রেখে যখন দেশান্তরে যেতে হয়, তখনও মায়ের কোল ছেড়ে মাসির আদরে শিশুটি ভালোই থাকে। এরপরে স্কুলে ভরতির পালা। এদিক-ওদিক স্কুলে স্কুলে ঘুরে যে জ্ঞানটা পেলাম, সেটা হল মায়েরা চাকরী করলে সেই সন্তানেরা মানুষ হয় না। অতএব কোন কোন স্কুল চাকরী করা মায়েদের সন্তান ভর্তি করে না। কেউ বা ইন্টারভ্যুতে মায়ের ডিউটি-আওয়ারস শুনলে সেই যে চোখ মাথায় তোলে, শিশুটি দরজা দিয়ে বেরনর আগে আর সে চোখ নিচে নামে না। প্রশ্ন শুনলাম, how do you expect your daughter to grow up, if you do not give her time? উত্তরটা জানা ছিল। কারণ আমি নিজে চাকরী-করা মায়ের মেয়ে। যদিও সত্যির খাতিরে বলতেই হয় আমার মায়ের অফিসিয়াল ডিউটি আওয়ারস আমার থেকে অনেক কম ছিল, কিন্তু সাংসারিক কাজের ঘণ্টা যে মায়ের অন্তহীন ছিল! সে খবরে কারোর প্রয়োজন নেই। কিন্তু মোদ্দা কথা বুঝলাম, আমার মত ট্যাঁরা মা, যে সন্তানের স্কুলে ভর্তির মত মহান কাজের জন্য নিজের তুশ্চু চাকরী ছাড়তে রাজি না, সে রকম মা থাকাটাই স্কুলে ভর্তির জন্যে বিপদ। ... ...
এইসময় তো বাবার ব্যাঙ্কে অনেক কাজ থাকে, চেয়ার থেকে ওঠার সময়ই থাকে না , এইসময় হঠাৎ বাবা বাড়ী এল কেন --- এইসব ভাবতে ভাবতেই যুঁইয়ের স্নান সারা হয়, গোয়ালঘরের পাশ দিয়ে ঘুরে অন্দরের ঘরে এসে ঢুকে চুল আঁচড়ায়, কাজল দিয়ে কপালে একটা টিপ পরে ছোট্ট – আধা অন্ধকার ঘরের দেরাজ আয়নায় নিজেকে দেখে একবার এপাশ ফিরে, একবার ওপাশ ফিরে। মা ঘরে ঢোকে বাচ্চুকে কোলে নিয়ে, ওকে দেখেই চাপা গলায় একবার বাইরের বৈঠকখানার ভেতরদিকের দাওয়ায় আসতে বলে। যুঁই ভারী অবাক হয়, বাইরের লোক থাকলে বৈঠকখানার দিকে ওর যাওয়া মানা তো, মা’কে প্রশ্ন করার সাহস ওর নেই, যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই মা’র চোখ পড়ে ওর কপালের টিপের দিকে, চাপা গলায় প্রায় ধমকে মা ওকে টিপটা মুছে বাইরে যেতে বলে। যুঁইয়ের চোখে জল আসে – কোথাও তো একটু বাইরে যায় না কতদিন হল, ইস্কুলে যাওয়াও বন্ধ, বাড়ীর মধ্যে একটা ছোট্ট মুসুর দানার মত টিপ – তাও মুছতে হবে! মা ততক্ষণে অধৈর্য্য হয়ে এগিয়ে এসে নিজের আঁচল দিয়ে ঘষে ঘষে মুছে দেয় টিপটা – একটু পিছিয়ে গিয়ে দেখে নেয় কপালে টিপের কোনও চিহ্ন থেকে গেল কিনা – বাচ্চু হাত বাড়ায় যুঁইয়ের কোলে আসবে – মা হাত টেনে নিয়ে শক্ত করে বাচ্চুকে কোলে চেপে ধরে হাঁটা দেয়। যুঁই কেমন আবছামত বুঝতে পারে কোথাও একটা কিছু গোলমাল হয়েছে, বড় গোলমাল। ... ...
বন্যার জলের মত অভিযোগ আসতে লাগল। ভুল চিকিৎসায় পা কেটে বাদ দেওয়া, যে সব চিকিৎসা করাই হয়নি তার অর্থ আদায় করা, বিদেশে ভ্রমণরত...... , মৃত রোগীকে বাড়ির লোকের অমতে ভেন্টিলেটরে চাপিয়ে দশ লক্ষ টাকার ফর্দ ধরানো, হৃদধমনীর মধ্যে যে ‘স্টেন্ট’ বসানো হয়েছে বলে টাকা নেওয়া হয়েছে – রোগীর মৃত্যুর পর ময়নাতদন্তে সেই বস্তুগুলির অস্তিত্ব খুঁজে না পাওয়া, এককথায় গুণতে গেলে গুণের নাই শেষ। বহু দিনের পুঞ্জীভূত অবরুদ্ধ অভিযোগ, অশ্রু, ক্ষোভ, ভুল চিকিৎসায় বা অবহেলায় স্বজন হারানর যন্ত্রণা এবং বারবার প্রতারিত হওয়ার ক্রোধ হড়পা বানের মতো নেমে এল মুদ্রিত ও বৈদ্যুতিন মাধ্যমের পাতায় পাতায়। সাংবাদিক মহলে হৈ হৈ পড়ে গেল – কে কত রোমাঞ্চকর, অশ্রুসিক্ত, ভয়াবহ ঘটনা তুলে ধরতে পারেন এই বেসরকারি চিকিৎসা ব্যবসাকে কেন্দ্র করে। ... ...
এই টুকরো খবর এবং ছবিগুলি ঠিক যে ভাবে হাতে এসেছে, সেভাবেই তোলা হল। ধূলাগড় নিয়ে অজস্র উড়ো খবর ইত্যাদিতে অন্তর্জাল ছেয়ে যাবার পরে এই ছবি এবং খবর বিশেষ গুরুত্ব বহন করে বলেই মনে হয়। পঁচিশে বৈশাখে পরস্পরকে রাখি পরিয়ে আপন করে নিয়ে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতি শ্রদ্ধা জানালেন প্রায় ২০০-২৫০ হিন্দু মুসলমান। তারপর একে অপরকে রাখি বেঁধে শুরু হয় পদযাত্রা আর তার সাথে মৈত্রীর বার্তা হাতে নিয়ে হাতে হাতে সোনালি সুতো বেঁধে দেওয়ার পালা। হাওড়া জেলার এই অঞ্চল, যেখানে বিগত ডিসেম্বর মাসে ইদ মিলাদ উন নাবি উপলক্ষে সাম্প্রদায়িক সংঘাত দেখা গিয়েছিল, সেই অঞ্চলের বহু সাধারণ মানুষ অভাবনীয় স্বতঃস্ফূর্ততার সাথে যোগ দিলেন এই উৎসবে। ... ...
ট্রপিকাল থেকে ছাড়া পেয়েছি প্রায় দু’মাস। এখনও দুই সপ্তাহান্তে একবার যেতে হয় হাসপাতালের আউটডোরে। লাইন দিতে হয়। টিকিট কাটতে হয়। অপেক্ষায় থাকতে হয়, কখন খিটখিটে দিদিটা নাম ধরে ডাকবে। কোন ডাক্তার যে দেখবে, ভগা জানে। কমবয়সী ডাক্তারগুলো হেসে কথা বলে, আমার সঙ্গে নয় সবার সঙ্গে। মৃদু কথা বলে। কেন? এখনও তালেবর হ’য়ে ওঠেনি তাই ? আমাকে ওরা পরীক্ষা করে, তারপর বসিয়ে রাখে ডাক্তার সাহার জন্য। তিনি এলে আবার পরীক্ষা করেন। ওষুধ লিখে দেন। সে ওষুধের জন্য ফার্মাসীতে দীর্ঘ লাইন দিতে হয়। তারপর উইণ্ডোতে পৌঁছালে ভোরিকোনাজল আছে কি না সেটা দেখতে স্টোরে পাঠানো হয়। থাকলে পেয়ে যাই। নৈলে পরদিন লাইন। একদিন তো অধৈর্য হয়ে বেরিয়ে যাবার মুখে ডাক্তার সাহার সঙ্গে দেখা হয়ে গেল। ‘দাঁড়ান, দাঁড়ান, কোথায় যাচ্ছেন’ বলে রাস্তার পাশে একটা হাফ ওয়ালে বসেই পেট টিপে, স্টেথো লাগিয়ে, অজস্র প্রশ্ন করে তবে ছাড়লেন। লাইনে দাঁড়ানো অসংখ্য রুগী সাক্ষী রইলেন এই অপূর্ব চিকিৎসার। ... ...
সত্যি মেয়েটাকে বিপদে ফেলেছি। বেচারী যে পরিবেশে অভ্যস্ত, তা থেকে ছিন্ন করেছি। প্রথম প্রথম তো একটু অসুবিধে হবেই। এখন নাসিমার তৎপরতা দেখে মনে হচ্ছে, এখানে যে তাকে থাকতে হবে, মেনে নিয়েছে। কিছু কিছু অসুবিধের সম্মুখীন হচ্ছে। কিছু কিছু খটকার সামনে পড়ছে। সে পড়ুক। এখন ইচ্ছেমতো গোছগাছ করছে, ঘর সাজাচ্ছে। বেশ খুঁতখুঁতে, তাই সময় লাগে বেশি। আজ বোধহয় অনেক রাত পর্যন্ত কাজ করবে। নাসিমাকে নিরস্ত করা যাবে না। নাসিমার এমনই স্বভাব। আমি বাধা দিই না। ও কাজ করতে থাকে। আর আমি লেখাপড়া করতে থাকি। আমার নজরে থাকে নাসিমার গতিবিধি। চলাফেরার চেনা ধরন ঠিকঠাক আছে কি না বুঝি। কোথাও ছন্দপতন হলে আগাম ধরতে পারি। ঠিকই আছে। ঠিকই চলছে। এখানে বসবাস করা যাবে। সামনের মাস থেকে বাড়ি করব। লেবার কনট্রাক্ট দেব। চোখের সামনে বাড়ি উঠছে। কোন্টা কীরকম হবে, নাসিমা ইচ্ছেমতো বানিয়ে নিতে পারবে। অফিসের লোনও স্যাংশান হয়ে গেছে। নাসিমারও স্বপ্ন নতুন একটা নিজস্ব বাড়ি। ... ...
কিন্তু ওরা বোঝেনি আমরাও ভেতরে ভেতরে তৈরি ছিলাম। ন্যাকড়ার বল বানিয়ে কেরোসিনে চোবানো হল। বোমা বাঁধা হল। এমনকি টেরিটরিয়াল আর্মিতে কাজ করে এরকম কিছু লোক বন্দুকের যোগান দিল। বোমা-লাঠি-বন্দুক নিয়ে গঠিত হল প্রতিরোধ বাহিনী। এরপর বাবা কী বলবে আমি জানি। বাবা আজ সংক্ষেপে বলছে, তবু আমি জানি বাবা কী বলবে। ছেলেটি কঠিন চোখে বাবার দিকে তাকিয়ে আছে। আমার বুকের ভেতর ছটফট করছে হাওয়া। বাবাকে থামাতেই হবে। গলা তুলে ডাকার চেষ্টা করি, বাবা, বাবা ও... । বাবা হুঙ্কার দিয়ে ওঠে, বন্দে মাতারম! ফিয়ার্স লেনে, সাগর দত্ত লেনে প্রচুর হিন্দু মরছে। ঠিক হল একটা হিন্দুর লাশ দেখলে দশটা মুসলমানের লাশ ফেলতে হবে। একদিকের হিন্দুদের রেসকিউ করলাম, অন্যদিকে হিন্দু হত্যার বদলা। লাশে লাশে ভরে গেল কলকাতা। আর এ সময়েই লুটে এনেছিলাম এ ঘড়ি। এক মুসলমানের অন্দরমহল থেকে। সেই ১৯৪৬! আজ কত বছর? কত বছর হল? ... ...
এরপর পিনাকীর বয়ান– দরজার ফাঁক দিয়ে তাকিয়ে দেখি একতালার বারান্দায় পাঞ্জাবী পরা লম্বা সাদা দাড়ি, টুপি মাথায় এক বুড়া লোক বসে পেপার পড়ছে। সেটা দেখে তো আমার ভয় বেড়ে গেল আরও। ভাবি এই হুজুর যদি এখন দেখে এক ধুতি পরা লোক তার বাড়িতে উঁকি ঝুঁকি মারছে, তাহলে না জানি কোন ঝামেলা বাঁধায়? আমি সাহস করে লোহার গেটে ধাক্কা দিই। দাড়ি, টুপি ভদ্রলোক পেপার হাতে নিয়েই বাগান পার হয়ে লোহার গেট খোলেন। আমাদের দেখে একটু কপাল কুচকান। আমি তাকে লম্বা করে একটা সালাম দেই– ‘আসসালামালাইকুম চাচা। উনি কোলকাতা থেকে এসেছেন, একসময় এই বাড়িটা উনার বাবার ছিল, বাড়িটা জাস্ট একটু দেখতে এসেছেন।’ বলেই আমি বেশ নার্ভাস থাকি। কে জানে ভদ্রলোক এই নিউইয়র্ক কিন্ডারগার্ডেনের দীনিয়াতের টিচার কিনা। ছুটির দিনে হয়তো একটু আরাম করে বসছেন পেপার পড়তে, সেইখানে এক লোক কোলকাতা থেকে এসে যদি বলে এই বাড়ি আমার ছিল, তাহলে তার ভালো লাগার কথা না। পুরা ব্যাপারটায় একটা গ্যাঞ্জাম লেগে যাবার সম্ভাবনা আছে। ... ...
পরিত্যক্ত কবরখানার ভাঙ্গা দেওয়ালে হেলান দিয়ে গিরিরাজ বিড়ি খেতে খেতে চারপাশটা জরিপ করে নিল একবার । আগের থেকে অনেক বেশি জরাজীর্ন লাগছে জায়গাটা। অবশ্য সেটা স্বাভাবিক। রক্ষণাবেক্ষণ তো আর হয়নি গত এক বছরে! চারিপাশে ছাতামাথা বন্য গাছের দল নুয়ে পড়েছে। জমাট বাঁধা অন্ধকারের মধ্যে গাছের দলকে আলাদা করে আর বোঝা যাচ্ছে না, বরং সবশুদ্ধ তালগোল পাকিয়ে একটা জগাখিচুড়ি লাগছে। পাঁচিল ফাটিয়ে উঠে এসেছে অশ্বত্থের চারা। লণ্ডভণ্ড কবরগুলোর ওপরে বুনোঝোপের আড্ডা। হাঁটতে গেলে জঙ্গুলে শেকড় পা জড়িয়ে ধরে। মেঘ কেটে চাঁদের আলো পিছলে গেলে মনে হবে ফ্যাটফ্যাটে সাদা জংগল সমগ্র জায়গাটার দখল নিয়ে নিচ্ছে। গিরিরাজের আচমকা মনে হল, জঙ্গল আস্তে আস্তে তাদেরও হয়ত ঘিরে ধরছে। আর এখান থেকে বেরোবার পথ নেই। দুম করে বুকটা একটু কেঁপে গেল। তারপর আত্মসচেতন হয়ে ফালতু চিন্তা ঝেড়ে ফেলবার জন্য বিড়িতে জোরে জোরে টান দিয়ে মাথা ঝাঁকাল কয়েকবার। আজকের রাতে মগজ স্থির রাখা খুব জরুরী। ... ...
পার্বতী মেয়েটি বুদ্ধিমতী, ভীষণই বুদ্ধিমতী। তবে তার এই বুদ্ধিমত্তার সাথে যুক্ত হয়েছে গ্রাম্য অশালীন কৌতূহল আর অসহ্য বাচালতা। ‘রাজলক্ষ্মী’তে আসার পর পরই তা টের পেয়েছে মোনা, আর যতটা সম্ভব সাবধান থেকেছে আচরণে-কথায়। পারতপক্ষে সমীরের সাথে একা-একা কথাই বলেনি। সবার সাথে মিলে কথা বলার সময়ও যথাসাধ্য নির্বিকার থেকেছে, কখনও সাথে আসা আরও দু-বন্ধু নিশি-দ্যুতির চেয়েও বেশি। ভরা পূর্নিমায় সমীরদের শত বছরের পুরনো দালানের ছাদে বসে বন্যার ‘আজ জোছনা রাতে সবাই গেছে বনে’ শুনতে ইচ্ছে হলেও প্রাণপণে তা দমিয়ে রেখেছে। দমিয়ে রেখেছে বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে চলা পাহাড়ী ছড়ায় সমীরের হাতে হাত রেখে পা ভেজানোর ইচ্ছেটাও। তবু বিকেলের জলখাবারে সমীরের বৌদি টেবিলে ফুলকো লুচি আর ছানার ডালনা এনে দিলে ওরা যখন ভীষণ উচ্ছ্বসিত হয়– শোন, শোন এগুলো মোটেই তোদের আজিজ সুপারের লুচি নয়, খেয়ে দেখ কী ভীষণ মোলায়েম আর টেস্টি, আরে এগুলো হল আসল লুচি, আজিজ সুপারে যা খাই ওগুলো তো ক্লোন রে ক্লোন, লুচির ক্লোন– তখন সমীর মুখ টিপে হেসে– খাও খাও, নিজের বাড়ি মনে করে খাও– বলে যখন মোনার প্লেটে আরও দুটি লুচি তুলে দেয়, তখন আর কারো চোখে না হোক পার্বতীর চোখে সন্দেহ ছাপিয়ে ‘চোর ধরে ফেলা’র মতো সাফল্যের আনন্দ পড়তে ভুল হয় না মোনার। নিশি-দ্যুতির সাথে বিষয়টি নিয়ে আলাপও করে মোনা। ওরা উড়িয়ে দেয়– দুর, গৃ-হ-প-রি-চা-রি-কা এত পাত্তা দেয়ার দরকার আছে? পাত্তা তো মোনা দিনে চায়নি। কিন্তু ওর মুখে লেগে থাকা রহস্যময় হাসি, চপলা দৃষ্টি, সুযোগ পেলেই গা ঘেঁষে অযাচিত কৌতূহল কেমন যেন উদ্দেশ্যমূলক মনে হয়। পাত্তা না দিয়ে উপায় থাকে না। সমীরকে বলেও ফেলে একবার– তোমাদের কাজের মেয়েটি ভারি ইঁচড়ে পাকা তো..., সমীর সুযোগ পেয়েই টিপ্পনি কাটে– ও বাবা এরই মাঝে শ্বশুরবাড়ি নিয়ে কমপ্লেন শুরু হয়ে গেল? আপাত বিষয়টা হাসিঠাট্টার মাঝে ফুরিয়ে গেলেও শেষতক তো আর শেষরক্ষা হল না, পচা শামুকে পা কাটার মতো পার্বতীর কারণেই ঘটনা ঘোট পাকিয়ে গেল। ... ...
নেহাতই চক্ষুলজ্জা বশে নেহাম্যাডাম একটি প্ল্যান বানিয়ে আনলেন, যার মাথামুন্ডু, এবিসিডি, শুরু বা শেষ কিসুই নাই, যেটি অনায়াসে যেকোন সুস্থবুদ্ধি লোকের সেরিব্রাল অ্যাটাক ঘটানোর উপযুক্ত। হাতে সময় একেবারেই নাই, চাগরির দায় বড় বিষম, হিড়িম্বা রাত জেগে এক্ষপির প্ল্যান বানালেন, প্রত্যেকের দায়িত্ব আলাদা শীটে লিখে দিলেন। অন সেকেন্ড থট, যত সলিউশন বানাতে হবে, প্রতিটি তৈরি করার মেথডও লিখে হাতে হাতে ধরিয়ে দিলেন। (আগে একবার নেহা স্ট্যান্ডার্ড অ্যাসিড সল্যুশন বানানোর জন্য “একটু হেল্প” চেয়েছিল।) ... ...
কর্মরতা মহিলা গোষ্ঠীর একপ্রান্তে আছেন মহিলা শ্রমিকরা, যাঁরা চাষের কাজে, মাটি কাটায়, রাস্তা তৈরীতে, রাজমিস্ত্রির কাজে লেগে আছেন। আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংগঠন (ILO)-র একটা সাম্প্রতিক সমীক্ষা বলছে এশিয়ার মধ্যে ভারত আর পাকিস্তানে মহিলা শ্রমিকের সংখ্যা সবচেয়ে কম আর সেই সংখ্যাটা ক্রমাগত কমছে। ১৯৯৯-২০০০ সালে যে হারটা ২৫.৯% ছিল এখন সেটা কমে হয়েছে ২১.৯%। কিন্তু আমাদের অভিজ্ঞতা বলে কাজের সুযোগ পেলে নিম্নবিত্ত পরিবারের মেয়েরা পিছিয়ে থাকেন না, যদি না তাঁর যাতয়াতের রাস্তাটা খুব কঠিন বা কাজের জায়গাটা খুব দুরের হয়। দুই ক্ষেত্রেই বাচ্চাকে ছেড়ে অনেকক্ষণ থাকতে হয়, এইটার সঙ্গে মেয়েরা কিছুতেই সমঝোতা করতে পারেন না। তাই যেসব জায়গায় পাকা রাস্তা হয়েছে বা বাচ্চা রাখার সুবিধে আছে এনরেগা প্রকল্পের সাফল্য সেখানে অনেক বড়, সেখানে অনেক বেশি মহিলা কাজে আসছেন। কিন্তু শহরের দিকে নিম্নবিত্ত পরিবারের মহিলারা অনেকে দূরে গিয়ে বাঁধা মজুরীর কাজের বদলে বরং বাড়ির কাছাকাছি অনেক কম মাইনের পরিচারিকার কাজ (বা সেলাইয়ের কাজ বা এই ধরণের কোনও অসংগঠিত ক্ষেত্রে কাজ) করছেন যাতে সংসারের দেখাশোনাটাও চালানো যায়। বাঁধা মজুরীর কাজে মহিলা শ্রমিকের সংখ্যা কমে যাওয়ার অনেক কারণের মধ্যে একটা হল এটা। অর্থাৎ সংসার ও বাচ্চাকে দেখাশোনা করার দায়িত্বটা এই বৃত্তের মেয়েদের কাজে আসা না আসার ক্ষেত্রে একটা বড়সড় ব্যাপার। ... ...
গরু আমাদের রাষ্ট্রমাতা। সে কেউ বলুন চাই না বলুন। আদি-অনন্তকাল ধরে আমরা গরুকে মাতৃস্থানীয় করে রেখেছি। তাই, গোমাতা নিয়ে কেউ আমাদের বোকা বানালে সেই নিয়ে আমাদের সরব হয়ে ওঠা দরকার। প্রসঙ্গতঃ, গত কয়েক দিন ধরে চীনের কিছু গুপ্তচর আমাদের দেশের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলির মাঠে-ঘাটে গরু সেজে অবাধ বিচরণ করছিল। দেশের খবর পাচার করা তাদের মূল উদ্দেশ্য। ধরা পড়ে তারা এটা স্বীকার করেছে। এরকম ভাবে গরুর ছদ্মবেশ ধারণ করে আমাদের বোকা বানানো হচ্ছে। ... ...
সাম্প্রতিক কিছু স্টাডিও বলছে, মেয়েদের অর্গ্যানাইজড সেক্টরে বেশি না আসার কারণ প্রথাগতভাবে বিয়ের পর চাকরি ছেড়ে দেওয়ার প্রবণতা। এবং কিছু ক্ষেত্রে চাকরি ছেড়ে দেবে এই ভয়ে, তাদের প্রাইভেট সেক্টর ফার্মগুলি নিতে চাইছে না। অর্থাৎ একটা পঙ্কিল আবর্তের মত কাজ করছে এই ব্যাপারটি। এর সঙ্গে সঙ্গেই ওই স্টাডি থেকে আরো দেখা যাচ্ছে যে কর্মক্ষম মহিলাদের (১৫ থেকে ৫৯ বয়সী) মাত্র ৬.৫% হাই স্কুল পাশ করেছেন। সুতরাং যে সব কাজে কলেজ-পাশের বিদ্যে দরকার বা কোন বিশেষ কাজের দক্ষতার প্রশিক্ষণ দরকার এমন ভাল মাইনের চাকরি জুটবে না সেই সব মেয়েদের, যাঁরা সামান্য লেখাপড়া করেছেন। ফলত মেয়েরা অধিকাংশই কাজ করেন খুব খারাপ মাইনেতে। ... ...
আমরা বলেছি দক্ষ স্বাস্হ্যকর্মীর যোগান বাড়াতে হবে। এরপর বলেছি যে, অত্যাবশ্যক ওষুধপত্র ও রোগ নির্ণায়ের পরীক্ষা নিরীক্ষার খরচ যদি সরকার বহন করে, যা কিনা দেশের জিডিপি-র ০.৫%, তাহলে চিকিৎসা খাতে ব্যক্তিগত ব্যয়ের অঙ্কটা যথেষ্ট পরিমাণে কমানো যাবে। এই পদক্ষেপগুলো নিলে সরকারি স্বাস্হ্য ব্যবস্হার প্রতি লোকেদের আস্হা বাড়বে। তামিলনাড়ুর মডেল অনুসরণ করে রাজস্হান সরকার যখন বিনামূল্যে অত্যাবশ্যক ওষুধপত্র সরবরাহ শুরু করল, সরকারি প্রাথমিক স্বাস্হ্য কেন্দ্রগুলোতে চিকিৎসার সুযোগ নেওয়া লোকের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছিল। তার মানে সরকারি স্বাস্হ্য ব্যবস্হার প্রতি লোকেদের আস্হা বৃদ্ধি পেয়েছিল। এরপর আমরা বললাম যে বেসরকারি স্বাস্হ্য প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর যথাযথ নজরদারি ব্যবস্হা চালু করা হোক, নানাধরণের স্বাস্হ্য বিমা প্রকল্পগুলোর বদলে সারা দেশে একটাই স্বাস্হ্য বিমা প্রকল্প চালু করা হোক, এমন একটা চুক্তি করা হোক যাতে বেসরকারি স্বাস্হ্য পরিষেবা সংস্হাগুলো দায়িত্বপূর্ণ ভাবে ও দায়বদ্ধতার সাথে সরকারি স্বাস্হ্য পরিষেবা সংস্হাগুলোর পরিপূরক হিসাবে কাজ করে। ... ...
সমস্ত চিকিৎসা বিনামূল্যে হবে শুনে মনে হতে পারে, ‘এই তো! আমাদের সবার জন্যে স্বাস্থ্যের স্বপ্ন সত্যি হল বুঝি।’ কিন্তু আসল ছবিটা কিন্তু সেরকম দাঁড়াচ্ছে না। সব বিনামূল্যে পাওয়া যাবে ঘোষণা হয়ে গেলেও অনেক কিছুই কিন্তু যথেষ্ট পরিমাণে পাওয়া যাচ্ছে না, সব ওষুধ মিলছে না, অপারেশন, রেডিওথেরাপি, কেমোথেরাপির জন্যে রোগীদের লম্বা ডেট দেওয়া হচ্ছে, পেসমেকার, স্টেন্ট, প্রস্থেসিস যথেষ্ট পরিমাণে পাওয়া না যাওয়ার কারণে রোগীদের ঘোরানো হচ্ছে। পরিকাঠামো, ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের সংখ্যা না বাড়িয়ে সব বিনামূল্যে পাওয়া যাবে ঘোষণা করে দেওয়ায় চিকিৎসার মান ক্রমশ নেমেই চলেছে, কোথাও বাচ্চা পুড়ে যাচ্ছে ওয়ার্মারে, কোথাও পেশেন্ট পার্টি ডাক্তার-নার্স পেটাচ্ছে। আসলে যেটা নেই-ই সেটা ফ্রিতে পাওয়া যাচ্ছে বলে ঘোষণা করে দেওয়ার ফল ভুগছেন রোগী ডাক্তার কর্মচারী সকলেই। ... ...