প্রেমিকাকে বিরল দুধরাজনাগ সাপের খেলা দেখাতে গিয়ে সাপ-পাগল এক যুবার সর্পদংশনে মৃত্যু স্থানীয় হাসপাতালে অ্যান্টিভেনাম সিরাম না থাকায়। কল্পধন্বন্তরির আশায় মৃতদেহ মঞ্জুষে শুইয়ে মনসার ভাসান গাইতে গাইতে গ্রামবাসীর নদীপথে যাত্রা। আশাভঙ্গে অবশেষে মৃতকে গঙ্গায় অর্পণ। তিন দশক আগের মালদা-সন্নিহিত নদীবহুল উত্তরবঙ্গের পটভূমিতে রচিত আখ্যান। অভিজিৎ সেনের নতুন উপন্যাস নাগমঙ্গল। পাঠ করলেন শিক্ষাবিদ ও লেখক অমিয় দেব ... ...
বেগম কোম্পানি সাহেবের রাতের খানায় রাখবেন রোগনি রোটি, শামি কাবাব, বড় ডেগচিতে সারা রাত জারানো মাংস আর শালগম দিয়ে বানানো শাবডেগ। সঙ্গে মাহি পোলাও। ভাগীরথীর টাটকা মাছের পোলাও, কাঁটা ছাড়া, সুগন্ধি মশল্লায় জাফরানে আর গোলাপজলে আদুরে মখমলি মাছ ফিরিঙ্গি জিভে জমবে ভালো। বেগমের ইচ্ছে ছিল বারো ঘন্টা ধরে তরিবৎ করে বানানো সাত খানা পরত দেওয়া মিঠি পরোটাও রাখা হোক। হ্যাঁ, তাও হচ্ছে বৈকি শেষ পর্যন্ত! ... ...
“আপনার নির্বাচনী কেন্দ্রে বিজেপি বিরোধী যার জয়ের সম্ভাবনা বেশি তাকে ভোট দিন”—এই স্লোগানের কার্যকারিতা নিয়েও আমাদের সন্দেহ আছে, সাধারণ মানুষ সেফোলজিস্ট নন জ্যোতিষও নন। তাহলে তাঁরা কীভাবে জানবেন কে জিতবে? গত লোক সভা নির্বাচনে ভাবা গিয়েছিল কংগ্রেস ফিরছে, কিন্তু বিজেপি আরও শক্তি নিয়েই ফিরেছে। ... ...
সাম্প্রতিকতম ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভের পরিসংখ্যান জানান দিচ্ছে যে সদ্যোজাত এবং পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর হার গুজরাটের তুলনায় পশ্চিম বাংলায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম। প্রতি ১০০০-এ গুজরাটে গড়ে ৩১.২ জন শিশুর (পাঁচ বছরের কম) মৃত্যু হয়। বাংলায় সেই সংখ্যা ২২। সদ্যোজাত শিশুর মৃত্যুর ক্ষেত্রে দুই রাজ্যের সংখ্যা যথাক্রমে ২১.৮ আর ১৫.৫। গুজরাটে অপুষ্ট শিশুর সংখ্যাও অনেক বেশি বাংলার থেকে। ... ...
পাখিদের তো আর শেখানো যায় না যে তোরা হাওড়া ব্রিজে আর মল ত্যাগ করিস না বাপু! এত তো জায়গা রয়েছে! কিন্তু দেখা গেল শুধু পাখি নয়, মানুষদের শেখানোও খুব চাপ – এত পোস্টার, অনেক সচেতনতা ক্যাম্পেনের পরেও পাবলিক পানের আর গুটকার পিক হাওড়া ব্রিজের পিলার গোড়ায় ফেলা বন্ধ করল না। পিলারের গোড়ার ঠাকুর দেবতার ছবি আটকেও তেমন সাফল্য এল না। আগে যেমন লিখেছি, পানের/গুটখার থুতু বেশ বেশ অম্ল এবং তাই লোহার জন্য ক্ষতিকারক। প্রথমে পিলারের গোড়া গুলি বার বার রঙ করা হচ্ছিল এবং পরিষ্কার করা হচ্ছিল – কিন্তুতেই কিছু হল না। বরং দেখা গেল মাত্র চার বছরে, ২০০৭ থেকে ২০১১ এর মধ্যে পান/গুটখার পিক পিলার ক্ষইয়ে দিয়েছে ৩ মিলিমিটার! দৈনিক হাওড়া ব্রিজের ফুটপাথ ব্যবহার করেন প্রায় কয়েক লক্ষ মানুষ (১-৫ লক্ষের মধ্যে)। এর মধ্যে শতকরা এক ভাগও যদি থুতু ফেলেন, তাহলে দৈনিক পিলারে থুতু ফেলছেন কয়েক হাজারের মত লোক! সংখ্যাটা নেহাৎ কম নয়! ... ...
মহামারীর প্রাদুর্ভাব নতুন কিছু নয়। বেদ-বাইবেল-পুরাণের যুগ থেকে শুরু করে ইতিহাসের বিভিন্ন পর্বে নানান কালান্তক রোগের সংক্রমণ পীড়িত করেছে মানব সভ্যতাকে। দেশ-বিদেশের সমাজ রোগের অভিঘাত মোকাবিলা করেছে বিচিত্র ভঙ্গিতে। চিকিৎসা শাস্ত্রের উন্নতি ঘটেছে, তবে তারই পাশাপাশি এলিজাবেথান ইংল্যান্ড বা ঔপনিবেশিক বঙ্গে রোগকে ঘিরে উৎপত্তি হয়েছে কৌতুককর ঘটনার, পাখা মেলেছে মানুষের অন্ধবিশ্বাস, আধিপত্য বিস্তার করতে, চলেছে কৌশলী রাজনীতির খেলা। আর নিরুপায় সাধারণ মানুষ আশ্রয় খুঁজেছে দৈব নির্ভরতায়। পাঁচ পর্বের এই লেখাটিতে মহামারীকে দেখার চেষ্টা করা হয়েছে পাঁচটি স্বতন্ত্র দৃষ্টিকোণ থেকে। কোথাও যেমন সমকালীন সাহিত্যে তার প্রতিফলন খোঁজা হয়েছে, তেমনি কোথাও আবার উঠে এসেছে রোগের বিচিত্র চিকিৎসা-পদ্ধতি এবং মারী -কেন্দ্রিক রঙ্গ-রসিকতা। ঔপনিবেশিক বঙ্গে জাতীয়তাবোধের উন্মেষের সন্ধান করতে গেলে তারও একটি সূত্র মিলবে দেশজ চিকিৎসা পদ্ধতির ওপর পাশ্চাত্য চিকিৎসাবিদ্যার আগ্রাসী ছায়া বিস্তারে। আবার কলেরার হানায় ব্রিটিশদের আতঙ্ক প্রকাশ পেয়েছে তিনশ বছর আগে হাওড়া ও কলকাতায় খোদ ব্রিটিশ সওদাগরের অর্থে ওলাবিবির মন্দির গড়ে ওঠার ঘটনায়। আর করোনা আতঙ্ক থেকে বাঁচতে এই একুশ শতকে লৌকিক দেবদেবীর তালিকায় নবতম সংযোজন করোনা মাতা। ... ...
আমি রুকু বিনায়ক। সবাই বলে আমি বুদ্ধু। ভোঁদাই। মা আমাকে গাধা বলে না মুনা বলে। পাপা বলে পুচাই। আমার দুটো হাত,দশটা হাতের আঙ্গুল,দুটো চোখ আছে,যা দিয়ে আমি ছবি আঁকা। পাপা মা বলে আমার অটিজম আছে। অটিজম কী আমি জানিনা। তবে আমি একটু কেমন যেন। আমার গাড়ীর চাকা,টেবিল ফ্যান,ছোট ছোট রবারের পুতুল ,রং,তুলি পেন্সিল ভালো লাগে। আমি লাফাতে ভালোবাসি। এ দেয়াল থেকে ও দেয়াল। সব দেয়ালে হাতের চাপ,সব দেয়ালে সর্দি,নাকের পোঁটা লাগে। মা বলে যাতা। আর মোছে। এই শিশুদিবসে বিনায়করুকু গুরুচণ্ডা৯কে ছাপতে দিয়েছে তার ডায়েরির কিছু পাতা, বেড়ানোর গল্প, আর ছবি। বিনায়করুকুর সঙ্গে একটু বেড়িয়ে আসি এদিক ওদিক। ... ...
খিল্লি। প্রচণ্ড খিল্লি। উতপটাং, চিতপটাং, মিশনারি-কুত্তাপটাং-সিক্সটিনাইন-আইন-বেয়া-ডোপ বেআইন বিল্লির ল্যাজে দিনরাত দাঁত-অঙ্গ খিঁচিয়ে-খেঁচিয়ে ইয়ে উত্তোলনে স্বাধীনতা-ভ্যালেন্টাইন-বসন্ত-বাতাসে হতাশ দশায় জীবন উদযাপনে গুপ্তধনে দোল দিয়ে যায় যাবার বেলায় আত্মনির্ভর করে তোলে নালে-ঝোলে রাম-হরিবলের মায়া জাদুবলে এই খিল্লি। ক্ষণে ক্ষণে মনে মনে শুনি অতল খিল্লির উদগ্র আহবান। ... ...
আর আজ তকের ওই ব্রেকিং নিউজে ওই “ছোট্ট” এনোমালিটুকু ছিলনা – আফজল একদম পুলিশের চাহিদামত গল্প খুব কনভেনিয়েন্টভাবে টিভির পর্দায় বলে যায়। এই স্বীকারোক্তিকে আদালত এতটাই গুরুত্ব দিয়েছেন যে অন্যান্য অসম্পূর্ণতা এবং অসঙ্গতিকে খতিয়ে দেখার প্রয়োজন মনে করেন নি মৃত্যুদণ্ড দেবার আগে। অথচ এটাই কিন্তু আফজলের একমাত্র জবানবন্দী নয়। আফজল আরেকটা জবানবন্দী দিয়েছিল – হ্যাঁ, মহামান্য আদালতের সামনে, যেখানে সে বারবার তার প্রতি আনা প্রতিটা অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এমন কি এই বহুচর্চিত এবং “গুরুত্বপূর্ণ” জবানবন্দী নিয়েও তার বক্তব্য, পুলিশ তাকে ওই জবানবন্দী লিখে দিয়েছে এবং তা মিডিয়ার সামনে বলতে বাধ্য করেছে ভয় দেখিয়ে। যে “গোপন জবানবন্দী” আজ তক ফাঁস করেছে সেটা আসলে ওই সাংবাদিক সম্মেলনের একটা রিহার্সালের রেকর্ডিং। ওই স্বীকারোক্তি দেবার জন্য পুলিশ তাকে পুরো এক দিন নগ্ন করে রেখেছে, দড়িতে বেঁধে ঝুলিয়ে রেখেছে, নিজের মূত্রপানে বাধ্য করেছে। পাঠক, এই মামলার অফিসার ইন চার্জ এবং তার সহকারীর “সুনাম”গুলো আরেকবার মনে করে দেখবেন। POTAর বলে বলীয়ান পুলিশের কাছে করা স্বীকারোক্তি আদালতের কাছে এক্ষেত্রে স্বেচ্ছায় আদালতের সামনে করা স্বীকারোক্তির চেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। ... ...
অনেকের মনে হচ্ছে একটা বার্তা দেওয়া দরকার যে সব বাঙালি একেবারে সাচ্চা হিন্দু রামভক্ত বিজেপির বানরসেনা হয়ে যায়নি। অতএব শুভ কাজে বিলম্ব না করে কয়েকজন মিলে শুরু করে দেওয়া হোল একটা ছোট্ট উদ্যোগ – বিজেপি বিরোধী বাঙালিদের গ্রুপ – বর্গী এল দেশে। ... ...
এবার পুজোয় চলুন তেপান্তর। দেখুন তেপান্তরের দুর্গাপুজো। বাংলার গ্রামীণ দুর্গোৎসবের সাবেক চেহারাটি ফুটে উঠবে আপনার চোখের সামনে। মনে পড়বে বাড়ির বড়দের কাছ থেকে শোনা, পালকি নিয়ে কলাবৌ স্নান, আরতি, ভোগ, অঞ্জলি, সিঁদুর খেলা এবং বিসর্জন মিলিয়ে পুজোর চেনা ছবিটি। মন্ডপ সংলগ্ন মাঠে বাউল-ফকিরি গান, ছৌ নাচের সঙ্গে থাকবে পুরনো দিনের পুজোর সান্ধ্য অনুষ্ঠানের অপরিহার্য অঙ্গ থিয়েটার। ভোগ ছাড়াও অতিথিদের জন্য রয়েছে খাওয়াদাওয়ার এক আন্তরিক আয়োজন। ছড়ানো সবুজ আর নানারকম পাখির ডাক আপনার মন ভালো করে দেবে। অজয় নদের তীরে সাদা বালির প্রান্তর এখন কাশফুলে ঢাকা। কাছেই রয়েছে ভারতীয় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ সংরক্ষিত ইছাই ঘোষের দেউল। ইতিহাস পাগল মানুষেরা চলে যেতে পারেন সেখানেও। ৪একর জোড়া এলাকায় ছড়ানো ছোট ছোট কটেজে অতিথিদের থাকার চমৎকার ব্যবস্থা। এমনিতে এখানে প্রায় ১০০ জন অতিথি থাকতে পারেন। তবে পুজোর সময় ভিড় এড়াতে এখানে ৬০জন পর্যটকদের জন্য থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। দশমীর দিন স্থানীয় আদিবাসীদের দাঁসাই পরব। দেখুন তাদের দাঁসাই নাচ, শহুরে সংস্কৃতি পেরিয়ে এক অন্য সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হন। ঘরে ফিরলেও তেপান্তর জেগে থাকবে আপনার অন্তরে। ... ...
ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের গোড়াপত্তনের প্রারম্ভ্রে বাঙালি জাতি সাময়িকভাবে এক বিভাজনের রাজনীতির শিকার হয় যা অবিভক্ত বাংলার ভৌগোলিক মানচিত্রকে আপামার জনসাধারণের মানসচিত্তে পশ্চিমবঙ্গ ও পূর্ববঙ্গ রূপে দ্বিখণ্ডিত করে দিয়েছিল। ১৯০৫-এর বঙ্গভঙ্গ প্রশাসনিকভাবে ১৯১১ তে রদ হলেও তা বাঙালি জাতিকে দীর্ঘস্থায়ীভাবে সামাজিক সীমারেখা দিয়ে ধর্মীয় (হিন্দু বাঙালি এবং মুসলমান বাঙালি) ও প্রাদেশিক (পূর্ববঙ্গনিবাসী 'বাঙাল' এবং পশ্চিমবঙ্গবাসী 'ঘটি') পরিচিতিতে ভাগ করে দেয়। অতএব বাঙালি জাতি ১৯১০ এর দশকের প্রেক্ষাপটে একদিকে ছিল বঙ্গভঙ্গের ক্ষতের সামাজিক অস্থিরতায় দোদুল্যমান এবং অন্যদিকে হয়ে উঠেছিল ফুটবলকে কেন্দ্র করে জাতীয়তাবাদী আবেগে বিচ্ছুরিত। এই পটভূমিকায় পয়লা অগাস্ট ১৯২০তে ইস্টবেঙ্গলের আত্মপ্রকাশ সমগ্র বাঙালির কাছে এক ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণ। সেই ইতিহাসে শুধু ফুটবল ছিল না, ছিল ফুটবলের প্রতিযোগিতাকে হাতিয়ার করে নব্য শুরু হওয়া সংকীর্ণমনা আন্তর্দেশীয় প্রাদেশিকতা ও ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতার ঘৃণ্য রাজনৈতিক অভিসন্ধিকে পরাস্ত করার শপথ। তাই বলাবাহুল্য যে ইস্টবেঙ্গলে যাত্রা শুরুই হয়েছিল লড়াইয়ের আহ্বানের মধ্যে দিয়ে। ... ...
সব চরিত্র কাল্পনিক দেখে এক সময় আমায় বোঙায় ধরেছিল। সে কথা এই মায়াপাতার লোকজন কিছু কিছু জানেন। তারও আগে রেইনকোটের ভেজা বিষাদ। কিম্বা দোসর-এর সেই সাদা -কালোর নিষ্ঠুর মায়া। মৃত্যু-অপ্রেম আর ভালোবাসার বেঁচে থাকার গিঁট-পড়া কাটাকুটির মধ্যে বিষাদ তার থাবা নামাচ্ছে। বিষাদ, স্নেহময় , তার নখ বসাচ্ছে।কর্তব্য,পূর্বনির্ধারিত। পৃথিবীর কোনো গানের সুর-কোনো জলের স্বাদ,পাতালের কোনো ভোগবতীর ধারা, ফলের রসালতা, পৃথিবীর কোনো ওষুধ, কোনো অ্যালপ্রাজোলাম-ফ্লুওক্সেটিন-সিটালোপ্রাম এই মহৎ বিষণ্ণতার শালপ্রাংশুমহাভুজ শরীরে একটি আঁচড়ও কাটতে পারে না। এই বিষণ্ণতার রাস্তা ধরে ঐ তৃতীয় মানুষটি হেঁটে হেঁটে চলে যাচ্ছেন। পাহাড়ী রাস্তার মেঘ-কুয়াশা-তিস্তাজলের মধ্য দিয়ে। সখী হাম মোহন অভিসারে যাঁউ... ... ...
হইচইয়ের 'মন্দার' নামক এই সিরিজ দেখতে বসে, সমকালীনতা নিয়ে কোনো সন্দেহের অবকাশই থাকেনা একদম প্রাথমিক কিছু দৃশ্যের পর। দেখা যায় সমুদ্রতীর, দেখা যায় মোটরসাইকেল। দেখা যায় পোলানস্কিসুলভ 'আধুনিক' হিংস্রতা। সিরিজের একদম শুরুতে সমুদ্রতীরে ডাইনি এবং তার চেলা যখন মাছকে গেঁথে ফেলে বর্শায়, সেই দৃশ্যের সঙ্গে পোলানস্কির প্রথম দৃশ্যের অদ্ভুত মিল। আলোর তফাতটুকু বাদ দিলে স্কটল্যান্ড এবং বঙ্গের সমুদ্রতীর একদম এক হয়ে যায় মরা মাছ আর মরা সৈনিকের ছটফটানিতে। ডাইনিদের পদচারণা এবং আচার-অনুষ্ঠানে। পোলানস্কির সিনেমায় ঘোড়সওয়াররা টগবগিয়ে আসে সৈকতে। মন্দারে ঘোড়া নেই, তার জায়গায় আছে মোটর সাইকেল। ধূধূ সমুদ্রসৈকত দিয়ে মন্দার মোটরসাইকেল চালিয়ে যায় পিছনে একজন আরোহীকে নিয়ে। ... ...
এমিল সিওরান আয়রন গার্ডকে সমর্থন করেছিলেন বলে তোমার পলিটিক্যালি কারেক্ট পাছা ফেটে যাচ্ছে? ব্লাডি ইউনিভার্সিটি কালচার! এরপরে ঘূর্ণির মতো একটা প্রবল বিতর্ক শুরু হয়ে যায়; উগো টোনিকে ফ্যাসিস্ট শুয়োর বলে। উত্তরে টোনি উগোকে একটা ধাক্কা দিয়ে বলে লিবারাল পুসি এবং উগোর যৌনাঙ্গ সম্পর্কে সন্দেহপ্রকাশ করে। উগো টোনির চোয়ালে একটা ঘুষি বসিয়ে দেয় এবং ওদের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। বাকিসকলে ওদের থামানোর জন্যে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। অনেকেই বিরক্ত হয়ে বিদায় নেয়; এরপরে পার্টি ভেঙে যায়। সেইরাতে মনজা থেকে মিলানে ফেরার সময় শ্রীমতী ফ্রয়ডেনরাইখ টোনিকে লক্ষ্য করছিলেন। গাড়ির ব্যাকসীটে জানলার ধারে চুপচাপ বসেছিল সে। মিলানে ঢোকার কিছুটা আগে হাইওয়ের ধারে গাড়িটা পেট্রোল পাম্পে দাঁড়িয়েছিল এবং সবাই গাড়ি থেকে নেমে এদিকওদিক ঘোরাফেরা করছিল। দূরে অন্ধকার রাতের প্রেক্ষাপটে মিলান শহরের আলোকোজ্জ্বল সিটিস্কেপ। টোনি সান্তোরো সেদিকে তাকিয়ে দ্রুত একটা সিগারেট টানছিল। হঠাৎ সে শ্রীমতী ফ্রয়ডেনরাইখের দিকে ফিরে বলল, ওরা আমাকে ইউরোসেন্ট্রিক বলে। ... ...
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক থেকে প্রচারিত 'প্রোনিং' বিষয়ক পরামর্শ - বাংলা অনুবাদ। ... ...
“Repeat a lie often enough and it becomes the truth” - নাৎসি জার্মানির যোসেফ গোয়েবেলস এর এই নীতিকে ভিত্তি করেই আজকের ভারতে যে ছায়াচ্ছন্ন সত্যের ব্যাবসা চলছে, তা আরেকবার বোঝা গেলো গত ৮ই ফেব্রুয়ারি কোলকাতা বইমেলার ঘটনায়। ধর্মকে কেন্দ্র করে রাজনীতির যে পরিবেশ তাকে বারংবার উত্তপ্ত করতে এই মিথ্যেগুলোকে বারে বারে প্রচার করা হয়। ধীরে ধীরে এরই কিছু ঘটনা সত্যি বলে মেনে নেয় কিছু মানুষ। ... ...
লীলাবতী সম্বন্ধে যা তথ্য পাওয়া যায়,তার ওপর ভিত্তি করে এটি একটি কাল্পনিক কাহিনী, প্রামাণ্য প্রবন্ধ নয়। লীলাবতী সম্বন্ধে নানা মত আছে - কেউ বলেন বাল্যবিধবা কন্যাকে সান্ত্বনা দেবার জন্য ভাস্করাচার্য পাটীগণিত অধ্যায়ের নাম রাখেন ‘লীলাবতী’। অন্য আর-এক মতে মেয়েকে পাটীগণিত শেখানোর জন্যই নাকি ভাস্করাচার্য পাটীগণিত অধ্যায়টি রচনা করেছিলেন এবং মেয়ের নামে নাম রেখেছিলেন ‘লীলাবতী’। অনেকে বলেন ভাস্করাচার্যের স্ত্রীর নাম ছিল লীলাবতী, এঁদের কোনো সন্তান ছিল না। সেই শোক ভোলার জন্য এবং স্ত্রীর নাম চিরস্মরণীয় করে রাখার জন্য তিনি পাটীগণিত গ্রন্থের নাম রাখেন ‘লীলাবতী’। ... ...
পিয়ারডোবা— বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর সংলগ্ন একরত্তি গঞ্জ। পরিমলদা-র দোকান— একরত্তি মিষ্টান্ন ভাণ্ডার। অর্ধশতক পার। সিগনেচার মিষ্টি— ল্যাংচা। বিশেষণ — পরমান্ন। নির্মাণ-রহস্য — অভিজ্ঞ শিল্পীর হাতের জাদু এবং দুধ, ঘি ও ছানা সম্পূর্ণ নিজস্ব। লুকো-ছাপার বদমাইশি নেই। যে-কোনও দিন গিয়ে দেখা যায় সেই শিল্পনির্মাণ। গন্ধ-বর্ণ-স্বাদের তীব্র উৎসব। নীলাঞ্জন হাজরা ... ...
আজ খুব বেশী রান্না হবে না। দুপুরের খাওয়া সেড়ে আজ মুড়ির ধান বানা হবে যে। আজ বাজারের ব্যাগ নিয়ে কোনো রিক্সাওয়ালাও তাই আসবে না। রান্নাঘরের মাচার নীচে রাখা সবজির ধামার তলানিতে যা আছে তা দিয়েই দুপুরের পর্ব সারা হবে। ঠাকুমা কালো পাথরের বাটি হাতে বড়ঘরের দিকে যেতেই আমি পিছু পিছু হাঁটা ধরি, ও ঠাকুমা নেলপলিশের রঙটা কত সুন্দর দেখছো? ঠাকুমা পেছনে ফেরে না, ওসব রঙ ভাল না; আমার দিদি তো রঙ ছাড়াই সুন্দর। আমি থেমে যাই। লাল বারান্দায় বসে ভাবি, কাল ফেরিওয়ালা এলে সব ফিরিয়ে দেবো। ... ...