আজ ঠাকুমা চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনে দিয়ে জোলাপাড়ায় ঢুকে যায়। জোলাপাড়ার বাড়িগুলোর উঠোনে উঠোনে চরকি। আর সুতো ভরা লাল নীল নলিগুলো বারান্দায় স্তুপ করা। ও ঠাকুমা, আমার পুতুলের জামায় সুতোর ফুল তুলে দেবে বলেছিলে। দেবো দিদি, ঠাকুমা খেজুর চাচার বাড়ি পেরিয়ে যায়। করিম জোলার বাড়ির উঠোনে মুরগীগুলো খোঁপ থেকে বেরিয়ে আসছে। পেছন পেছন ছানাগুলোও। করিম জোলার বাড়ি ছাড়ালেই কলেজের মাঠ। সে মাঠের ওই কোণায় মান্দার গাছ। ... ...
রোগীরা সবাই শেষে একটাই প্রশ্ন করেন, ‘ডাক্তারবাবু, ভয় নেই তো?’ উত্তর দিতে গিয়ে ইদানীং মেজাজ হারাচ্ছি। বলছি, ‘আমি জ্যোতিষী নই।’ এই প্রথম মাঝে মাঝে অন্যদের দেখে হিংসে হচ্ছে। মনে হচ্ছে আমি যদি ডাক্তার না হয়ে অন্য কিছু হতাম, বেশ হতো। বাড়িতেও সকলের মুখ ভার। রাতে ফিরে যেটুকু সময় বাড়িতে থাকছি সেটুকু সময়েও অজস্র ফোন। একটা ফোনে কথা বলতে বলতে তিনটে মিসকল হয়ে যাচ্ছে। অনেকেই হাসপাতালে বেডের জন্য, অক্সিজেন সিলিন্ডারের জন্য, ভ্যাকসিনের জন্য ফোন করছেন। এসব ব্যাপারে আমার কিছু করার ক্ষমতা নেই বলতেও খারাপ লাগছে। আমি সারাদিন রোগী দেখে বাড়ি ফিরে স্নান করি। ফোনের ঠ্যালায় স্নান করতে করতে রাত বারোটা বাজছে। ... ...
যেখানে প্রথাগত সাংবাদিকতা ব্যর্থ,যুদ্ধের ময়দানে অনুপস্থিত, নির্দিষ্ট মিডিয়া হাউসের রাজনৈতিক অবস্থান অনুযায়ী খবরকে বিকৃত উপায়ে পরিবেশন করতে বাধ্য,সেখানে স্বাধীন আমজনতার সাংবাদিকতা এখন ভবিষ্যতের নূতন প্রহরী। নাজি জের্ফের মত এই সমস্ত স্বাধীন দেশপ্রেমী সাংবাদিকরা সংবাদের দুনিয়ায় গণতন্ত্র বজায় রাখছেন। রাষ্ট্র এবং রাষ্ট্রবিরোধীদের ভূমিকার তদন্তমূলক প্রতিবেদন প্রস্তুত করছেন। সরকার এবং বিদ্রোহীরা যাতে গণতান্ত্রিক অবস্থান বজায় রাখে এবং আরও স্বছ ভাবে কাজ করতে বাধ্য হয় তার জন্য নিরলস কাজ করছেন। আর মধ্য প্রাচ্যের এই নূতন মিডিয়ার দুনিয়ায় নাজি জের্ফ এক অনবদ্য ব্যক্তিত্ব। আজকের দুনিয়া যেখানে জনসেবা ক্রমশ ক্ষীয়মাণ এবং সাংবাদিকতার চরিত্র পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে দ্রুত,সেখানে মধ্যপ্রাচ্যের এই সমস্ত স্বাধীন নাগরিক সাংবাদিকদের গ্রুপ, ক্রমে আরও বেশি বিশ্বস্ত, বেশি নিরপেক্ষ এবং প্রত্যক্ষ রাজনৈতিক মতামত গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ক্রমশ নিজেদের জায়গা করে নিচ্ছেন। অন্তত মধ্যপ্রাচ্যে নাগরিক সাংবাদিকতা প্রথাগত মিডিয়ার জায়গা সক্ষম ভাবে প্রতিস্থাপিত করতে সক্ষম হয়েছে। নাগরিক সাংবাদিকতার এই হটাৎ বিস্ফোরণ সাময়িক কোন ঘটনা নয় বরং এইটাই ভবিষ্যতের ছবি হতে চলেছে। নাজি জের্ফ যেমন বলেছিলেন “To defeat us, they would have to shut down the Internet. And they can’t do that because all of them use the Internet.” ... ...
অরণ্য তার অগণন সন্ততীদের জন্য যুগ-যুগান্ত ধরে সাজিয়ে রেখেছে খাদ্য তথা পুষ্টি-সুরক্ষা এবং স্বাস্থ্য-সুরক্ষার ঢালাও আয়োজন। কাঁকের-নারায়ণপুরের গ্রামগুলিতে বনৌষধি হিসেবে কাজে লাগে আম, আমলকি, হত্তুকী, ভেলওয়া, বজ্রদন্তী, পাঠ-জড়ী, ফলসা, বকফুল, রসনা, ভাসাম-পাত্রী, ভরহা, পোটর, হলুদ ফুল, ভুঁইনিম, নিমপাতা, মোগ্রালাটা, কুমড়ো-পাতা, ভালু-মুএসলি, সাদা মুএসলি, চার, লাসা, ফুটু, বোডা, অর্জুন গাছের ছাল, বেল, লেজোমররা, ভুঁইকুমড়ো, পৈরা-ফুটু ও নানাবিধ ব্যাঙের ছাতা, পোকামাকড়ের শুকানো মাংস প্রভৃতি থেকে তৈরী হয় নানাবিধ ওষুধ। উপশমের উপাচারও নানাবিধ। কয়েকটা উদাহারণ দেখা যাক ... ...
নলিন বলল, ‘শুনেছিলাম মুসলিমরা পৌত্তলিক নয়। এবং পৌত্তলিকতাকে ঘৃণা করে। এখানে এসে অন্য জিনিস দেখলাম। দেখলাম রীতিমতো মুর্তি গড়ে ওলাবিবির উপাসনা হচ্ছে। ওলাবিবি একা নন, সঙ্গে আছে আরও ছয় বিবি ঝোলাবিবি, আজগৈবিবি, চাঁদবিবি, বাহড়বিবি, ঝেটুনেবিবি ও আসানবিবি। তোমারা কি বিবিগান শুনেছো? বিবিগান আখ্যান অনুসারে ওলাবিবি এক কুমারী মুসলমান রাজকন্যার সন্তান। তিনি অলৌকিক উপায়ে অদৃশ্য হয়ে যান এবং পরে দেবী রূপে আবির্ভূত হন। তাঁর আবির্ভাবের কারণ ছিল দাদামশাইয়ের ও রাজ্যের সব মানুষের আরোগ্য দান। তাঁর মাথায় থাকে মস্তকাবরণী, গলায় গলবস্ত্র ও গয়না। পায়ে তিনি নাগরার জুতো পরেন। এক হাতে জাদুদণ্ড ধরে থাকেন। এই দণ্ডের মাধ্যমে তাঁর ভক্তদের রোগ দূর করেন। এই কলেরা আর ওআরএস এর কাজটাজ মিটলে আমি ঠিক করেছি শেষ জীবনে গ্রামে গ্রামে ঘুরে বাংলার লোকসংস্কৃতির চর্চা করব।’ ... ...
খোয়াবে তারা দেখতে পেয়েছে শওকত আলীর পরীর মতো মেয়েটিকে। শুনতে পেয়েছে পায়ে নূপুরেরও ঝুমঝুম শব্দ। সেই শব্দ করে মেয়েটি হাওয়ায় ভেসে ভেসে কোনো ফটো স্টুডিওতে ঢুকতে গিয়েছে। ঘরে ঢুকতে গিয়ে তার হোঁচট খাওয়ার শব্দ শুনতে শুনতে তার করুণ শঙ্খের মতো মুখটিও দেখে ফেলেছিল। সেই মুখ দেখে তারা অজান্তে গেয়ে উঠেছিল -- রূপনগরের রাজকন্যা রূপের জাদু এনেছি…। এই গানটি গাইতে গাইতে তাদের গলা ধরে এসেছিল। সেটা মনে করে আজ এই ক্ষণে পাপবোধ ঘিরে ধরে। সেই পাপবোধ থেকেই তারা নিজ নিজ স্ত্রীদের পায়ের উপর হুমড়ি খেয়ে পড়ে। আর প্রবল নদীর মতো কান্নার স্রোতধারা তাদের চোখ থেকে নেমে এসে ধুলোমাখা পায়ের পাতা ভিজিয়ে দিতে লেগেছে। আর এই স্ত্রীগণ সহসা হাওয়া থেকে পদ্মঘ্রাণ পেতে শুরু করেছে। সেই গন্ধে তাদের মনে হয় তারা আজ আর বহুগর্ভধারী শিথিল স্ত্রীগণ নয়। তারা সবাই অনাঘ্রাতা কিশোরীরত্নে পরিণত হয়ে গিয়েছে। আর তাদের পদতলে নত হওয়া লজ্জিত কিশোরটির প্রতি স্নেহ মমতা এবং ভালোবাসা বোধ করতে করতে ছায়ার মতো নরম করে নিজেকে মেলে দেয়। কয়েকটি শিশুর জন্মসূচনাধ্বনি সব কিছু ভেদ করে চারিদিক প্লাবিত করেছে। ... ...
হ্যাঁ স্যার, আসলে ওটা তো হন্টেড হাউজ। আপনি দূর থেকে আর কীভাবে বুঝবেন আমার কী অবস্থা হচ্ছে। একেবারে হুমড়ি খেয়ে পড়ছি স্যার। নাক মুখ থেতো হয়ে গিয়েছে। যাকে বলে ঘাড়ে ধাক্কা। বিশ্বাস না হয় ছবি পাঠাব স্যার? ... ...
শুভেন্দুর মূল তাস, যা বোঝা গেল দুইটি। এক, নন্দীগ্রামে মমতা বহিরাগত। দুই, সাম্প্রদায়িক বিভাজন। এই এলাকায় গত বছর দশেক ধরে আরএসএস-এর নানা সংগঠন তাদের প্রভাব বিস্তার করেছে। ফলে একটা 'মুসলিম আগ্রাসন' সংক্রান্ত টেনশন এমনিতেই আছে। শুভেন্দু অধিকারীর সাম্প্রতিক সব সাম্প্রদায়িক বিভাজনের বক্তৃতা সেই আগুনকে আরও উস্কে দিয়েছে। নন্দীগ্রামের জনবিন্যাসের অঙ্কে চোখ বোলালে দেখা যাচ্ছে ওখানে ৩০/৩৪ শতাংশ মুসলিম ভোট আছে বলে যে আলোচনা চলছে তা একটু বাড়াবাড়ি। নন্দীগ্রাম বিধানসভা গঠিত নন্দীগ্রাম ১ ও ২ ব্লক মিলিয়ে। ২০১১-র জনগণনা অনুযায়ী এই দুই ব্লক মিলিয়ে মোট ৩৩১,০৫৪ জনসংখ্যার ২৪৪,৬৬৭ জন, অর্থাৎ ৭৩.৯৬% হিন্দু, এর মধ্যে ৫৪,৫০৩ (১৬.৪৬%) জন তপসিলি জাতি ভুক্ত। আর মুসলিম জনসংখ্যা ৮৫,৬৯৬, বা ২৫.৮৮%। ... ...
আমাদের মানুষদের নীচের চোয়ালের হাড়টিকে বলা হয় ‘হনু’। যদি বুদ্ধি থাকলে কেউ আমাদের বুদ্ধিমান বলেন, কেউ ভেসে থাকলে যদি তাকে ভাসমান বলেন, তাহলে ব্যাকরণের সেই যুক্তিতে আমরা সবাই ‘হনুমান’ হবো না কেন? ‘চিকেন টপ’ টিভি চ্যানেলের স্টুডিও। শুরু হবে প্রাইম টাইম অনুষ্ঠান। অতিথি শ্রী ঘনশ্যাম কর্কট মহাশয়। আর রয়েছেন অ্যাঙ্কার, ক্যামেরাম্যান এবং অন্যান্য crew। অ্যাঙ্কার - চিকেন টপ টিভি চ্যানেলের প্রাইম টাইম অনুষ্ঠানে আপনাদের সকলকে স্বাগত। শুরু হচ্ছে আজকের অনুষ্ঠান “ইতিহাসে পাতিহাঁস”। অতিথি হিসেবে আমরা আজকে পেয়েছি “ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর হিস্টিরিয়া রিসার্চ” এর একজন স্বনাম ধন্য বাঙালি ইতিহাসবিদ শ্রীমান ঘনশ্যাম কর্কট মহাশয়কে... [ঘনশ্যাম কর্কট হাত তুলে নমস্কার করলেন] ঘনশ্যামবাবু আমাদের অনুষ্ঠানে আসবার জন্য ধন্যবাদ... ঘনশ্যাম – [হেসে] জয় বজ্রং বলি... জয় হনুমান। আর ওটা হিস্টিরিয়া নয়, হিসটরিকাল। ... ...
অফিসের কাছাকাছি একটা ট্রাফিক সিগনালে রোজ দাঁড়াতে হয়। অভ্যাসের বশে দাঁড়িয়ে পড়ল সেখানে, অথচ আজ সিগনালের রঙ সবুজ। একশ’ কিলোমিটার স্পিডের রাস্তায় সবুজ আলোয় দাঁড়িয়ে পড়েই বুঝল – ভুল করেছে, তবু, শোধরানোর চেষ্টা করল না, দাঁড়িয়েই রইল, দাঁড়িয়ে রইল ঠায় – যেন সে চলচ্ছক্তিহীন; চোখ যতদূর যায়, ঢালা পিচরাস্তায় খণ্ড খণ্ড জলতল, বাষ্প উঠছে সেখান থেকে। পঙ্কজ তার ভাগ্যের কাছে নিজের হৃৎপিণ্ড বন্ধক দিয়ে বসে রইল – যা কিছু ঘটে যেতে পারে এই মুহূর্তে – হয়তো একটা কলিশন, হয়তো চুরচুর হয়ে যাবে গাড়ি, তালগোল পাকিয়ে যাবে পঙ্কজ নিজে – শেষ হয়ে যাবে সব। ... ...
আমার জীবনে এই শিক্ষকদের প্রচুর অবদান। সব শিক্ষকের কাছেই আমি ঋণী। তবে বিতর্ক, তাৎক্ষণিক বক্তৃতা, কুইজের জগৎ আমাকে চেনান শিশির দত্ত। সত্তর দশকে স্কুলেই ছুরি খেয়েছিলেন। তাঁর সঙ্গে আমার আলাপ অদ্ভুতভাবে। ইংরেজির ক্লাস। ... ...
ধরা যাক সময়টা একশ বছর আগের। তার চেয়ে বিশ কি ত্রিশ বছর কমিয়েও দেওয়া যেতে পারে। সেই সময় রাঢ় বাংলার প্রান্তিক গ্রাম লাভপুর আকার আয়তনে ছোট হলেও বৈচিত্র্যে ভরপুর ছিল। গ্রামের সীমানা বেয়ে চলে গিয়েছে রেললাইন। কাছাকাছি জংশন স্টেশন আমোদপুরের সঙ্গে লাভপুরের যোগাযোগ ছোট লাইনের মাধ্যমে। জংশন থেকে বড় লাইন জুড়েছে বৃহত্তর দুনিয়ায়। ছোট লালরঙের আপিস ঘর শোভিত স্টেশনটাই যেন বহির্বিশ্বের সঙ্গে লাভপুরের যোগাযোগের সিংহদুয়ার। তারই মাধ্যমে বাইরের আলো-বাতাস অথবা নিত্যনতুন খবরের ঢেউ এসে পৌঁছয় এই পল্লী অঞ্চলে। স্টেশনকে কেন্দ্রে রেখে একদল মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে। ... ...
স্থানীয় মানুষের সংস্কৃতি-ভাষা বাঁচানো দরকার এই নিয়ে দ্বিমত থাকতে পারে না। কিন্তু এন আর সি মহাযজ্ঞে অসমিয়া জাতীয়তাবাদীরা আখেরে হিন্দুত্ববাদীদের খেলার বোড়ে না বনে যান। আর, “জাতি খতরে মেঁ হ্যায়” জাতীয় হুলুস্থুলু করার আগে খতরাখানা কী, অনুপ্রবেশের তথ্য কী, প্রশ্নগুলোর নির্দিষ্ট জবাব দরকার। ... ...
সত্যিই বড়ো বিচিত্র জীব মানুষ! সবকিছুকেই সে নিজের রঙে, নিজের ঢঙে সাজিয়ে নিতে চায়। মনখারাপের দিনেও সুরুচি ও শিল্পকলা তার সঙ্গ ছাড়ে না। মানুষের সাজপোশাক বলুন বা ফ্যাশন, সবকিছুর মধ্যেই তা জেগে ওঠে। বিহারের মধুবনী শিল্পীরা এখন বাঁচার তাগিদেই তৈরি করছেন মাস্ক। আর সেই মাস্কের গায়ে তারা এঁকে দিচ্ছেন মধুবনী চিত্রকলার মোটিফ। একই ঘটনা ঘটছে পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলার নয়াগ্রামে। সেখানকার পটুয়ারা করোনা মাস্কের গায়ে ফুটিয়ে তুলছেন পটচিত্রের ছোটো ছোটো ছবি। ... ...
আমিও আমার মায়ের মতো রাত জেগে ইদের আগের দিন রান্না করি। ইদের দিন বন্ধুবান্ধব আত্মীয়স্বজন মিলে সারাদিন খাই দাই আর আড্ডা দিই। টেবিলে সব সাজানো থাকে, পটে চা থাকে। বেশির ভাগ ইদে আমার মেনু হয় নানা রকম বেকিং গুডস, দুধ সেমাই, জর্দা সেমাই, কখনো কখনো চালের জর্দা, রসমালাই, সরের মিষ্টি, বা নানা রকম নাড়ু, চটপটি, কাবাব বা আলুর চপ। পোলাও, রোস্ট, বিফ কারি, বেগুনবাহার, মাটন চাপ, ইত্যাদি। আর মায়ের ট্রাডিশন ধরে রাখতে সব রকম ডাল দিয়ে খিচুড়ি। ... ...
পিটার পিওট জনস্বাস্থ্য ও বিশ্ব স্বাস্থ্য নিয়ে গবেষণা, স্নাতকোত্তর গবেষণা এবং উচ্চতর শিক্ষার জন্য বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান লন্ডন স্কুল অফ হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিকাল মেডিসিনের ডিরেক্টর।ফিনান্সিয়াল টাইমস তাঁর সম্বন্ধে বলেছে "বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত 'ভাইরাস শিকারী' "। প্রফেসর পিওট ১৯৭৬ সালে জাইরেতে ইবোলা ভাইরাসটির আবিষ্কর্তাদের মধ্যে একজন। তিনি ১৭টি বই আর ৬০০টিরও বেশি বৈজ্ঞানিক নিবন্ধ প্রকাশ করেছেন। বই এর মধ্যে আছে ২০১২ সালে WW Norton থেকে প্রকাশিত 'No Time to Lose' নামের ওঁর স্মৃতিকথা, যেটা ফরাসী, ডাচ, জাপানি এবং কোরিয়ান ভাষায় অনূদিত, আর আছে 2015 সালে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস থেকে প্রকাশিত 'AIDS between science and politics'। ... ...
কোকিলের মতো ডেকে উঠল পিনাকীবাবুর মোবাইল ফোন। এসএমএস এলে এমন ধ্বনি বাজে। উনি জানেন এই এসএমএসে কি লেখা আছে। ‘পরিবেশ রক্ষায় এগিয়ে আসুন। গাছ লাগান প্রাণ বাঁচান।’ প্রতিদিন সন্ধেবেলা এই এসএমএসটা ঢোকে। আর এগুলো পড়েই পিনাকীবাবু কোনও সিদ্ধান্তে আসতে পারছেন না। ঘর থেকে বেরিয়ে এলেন দীপা, মানে পিনাকীবাবুর স্ত্রী। বললেন, ‘তাহলে আমার মডিউলার কিচেনটা আর হল না, তাই তো? ভাগ্য করে এমন এক আধপাগলার সঙ্গে বিয়ে দিয়েছিল আমার বাবা। তুমি মোবাইল চালাও নাকি মোবাইলটা তোমাকে চালায়? অদ্ভুত মানুষ বটে।’ দীর্ঘশ্বাস ফেলে, আঁচল দিয়ে কপালের ঘাম মুছে ঘরে ফিরে গেলেন দীপা। রাত্রিবেলার খাবারদাবারের যোগাড়যন্ত্র করতে হবে এবারে। ... ...
এখানে এ কথাটাও বলা উচিত, যে “আলোচনা করার যোগ্য” হওয়ার অর্থ এই নয় যে একজন আকর্ষণীয়ভাবে অথবা সুন্দর ভাষায় একটি বিষয়ের বর্ণনা করতে পারেন। তার থেকেও বড় কথা, মজাদার ভাবটি ধরে রাখতে গিয়ে, প্রায়শই গুরুতর সূচকগুলির সাথে আপোষ করা হয়। লেখক সেই আপোষটুকু না করেই তার হাস্যরসটি দিব্যি ধরে রাখতে পেরেছেন। বইটিতে আলোচিত গল্পগুলোর সম্বন্ধে আমি কিছু বলে দিতে চাই না। তবে, আমি অবশ্যই বলব যে লেখক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে প্রোবাবিলিটি অর্থাৎ সম্ভাবনাতত্ত্বের প্রয়োগগুলিকে সহজে বোঝানোর জন্য খুব যত্ন নিয়ে গল্পগুলি বেছেছেন। একইসঙ্গে, কিছু গল্প এও ব্যাখ্যা করে যে কীভাবে সম্ভাবনাতত্ত্ব এবং পরিসংখ্যানগত (স্ট্যাটিস্টিক্যাল) ধারণার আইনের ভুল প্রয়োগ এবং ব্যাখ্যা - প্যারাডক্সিক্যাল পরিস্থিতিতে পরিণত হতে পারে। বিষয়-নির্বাচনের দক্ষতা, ভাষা ও গভীরতার ভারসাম্যের জন্য লেখককে অভিনন্দন। আমি বাংলা পড়তে পারে এমন উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী সহ সকলকে বইটি সুপারিশ করছি। লেখার ভাষা হাল্কা হলেও বইটি “সিরিয়াস-রিডিং”। যদুবাবু/জ্যোতিষ্কের লেখা প্রবন্ধ থেকে সবাই কিছু না কিছু শিখতে পারবে। ... ...
শব্দখেলায় সোমনাথের পটুত্ব আরও নানা কবিতায় ছাপ রেখে গেছে। ‘মাধব মথুরা মত যাও’ -তে শুধু অনুপ্রাসের চমৎকার ব্যবহারে চমৎকৃত হই না, অবাক দেখি ব্রজবুলির মধ্যে অবলীলায় জায়গা করে নিচ্ছে স্টেশন, গাড়ি, স্টিমার শব্দগুলি। বেখাপ্পা তো নয়ই, বরং অন্য শব্দ বসানো যাবে না এমন অমোঘ। শব্দ বার বার এই পদগুলিতে ব্রহ্ম হয়ে এসেছে, কারণ যে শব্দ, সেইই মাধব! ... ...