দেশের মধ্যে আসামে এনার্সি হয়েছে। বারো লক্ষ মানুষ রাষ্ট্রহীন । তাদের ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো শুরু হয়েছে নারীপুরুষ বাছাই না করেই। গতকালের টেলিগ্রাফ লিখেছে এই ক' মাসেই ডিটেনশন ক্যাম্পে মৃতের সঙখ্যা ছাব্বিশ ছাড়িয়ে গেছে। সারা দেশে লাগু হলে এ সংখ্যা কতো হবে সহজেই অনুমান করা যায়। কিন্তু যেটা দূরে বসে অনুমান করা কষ্ট সেটা হলো এনার্সির চাপে মেয়েদের অপরিসীম দুর্দশা। লোক আদালতের বিচারক হিসেবে ঘন ঘন কলকাতা কর্পোরেশনে যেতে হয়। ... ...
লাল রঙের বড় বাড়িটার সামনে দিয়ে গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকবার হেঁটে গেছে রাজিয়া। কখনো একা। কখনো ওর দলের সঙ্গে। কিন্তু কখনও ভেতরে ঢোকার সাহস হয় নি। বাড়িটার সামনে দুদিকে দুটো রোয়াক। তাতে অলস দুপুরে রিকশাওয়ালারা গামছা ঘুরিয়ে হাওয়া খেতে খেতে বিশ্রাম নেয়, অন্য সময়ে কুন্ডলী পাকিয়ে ঘুমোয় রাস্তার নেড়িগুলো। দুটো রোয়াকের মাঝখানে একটা সবুজ রঙের কারুকাজ করা কাঠের দরজা। এত ভারী যে ছোটবেলায় রাজিয়ার ওগুলোকে লোহার বলে মনে হত। সেই বিরাট দরজাটা ডান পাশে আটকানো একটা শ্বেতপাথরের নামফলক। তার ওপর কালো দিয়ে প্যাঁচ ... ...
বন্ধুরা, রাগ করবেন না, এমন উত্তাল সময়ে ঠাট্টা করছি ভেবে। যথেষ্ট চিন্তার মধ্যেও, টেনশনের মধ্যেও, চিরকাল ঠাট্টা করতে করতেই বড়ো হয়েছি। তাই এই দুঃসময়ে এই পোস্ট দেখে মনে হবে ঠাট্টা। কিন্তু পড়ুন, যদি ধৈর্যে কুলোয়। ব্যাপারটা হলো– অনেকদিন অর্থমন্ত্রকের সংবাদ পাচ্ছি না। নানা বিশিষ্ট জনের লেখা, ট্যুইট ইত্যাদি পড়ে জানতে পারা যাচ্ছে, তিনি, অর্থাৎ এই ভারতীয় অর্থনীতি, এখন নাকি আই সিএইউ তে। ফলে দুশ্চিন্তা ব্যাপারটা বেড়ে গেলো। ফলে কেসটা ঠাট্টা নয়। আমরা এক সময়ে অর্থমন্ত্রক বলতে একটা জটিল ব্যাপার বুঝতাম ... ...
শীত ভাল করে পড়তে না পড়তেই মেলার সীজন শুরু হয়ে গেছে। গুরু এবারে ওমনিপ্রেজেন্ট – গাদাগুচ্ছের মেলাতে অংশ নেবার মনস্থ করেছে। একেবারে সূচনাপর্বেই সোনারপুর মেলা – বোতীনবাবুর দৌলতে তার কথা এখন এখানে অনেকেই জানেন। তো সেই সোনারপুর বইমেলাকেই পদধূলি দিয়ে ধন্য করব এরম একটা সুদুদ্দেশে শনিবার সন্ধ্যেবেলা বেরিয়েছিলাম। মারিয়া আগেই হাত তুলে রেখেছিল, তাই মারিয়ার সাথে গড়িয়ার মোড়ে দেখা করাই সমীচিন মনে করলাম। মারিয়া কামস টু গড়িয়া, সেথা হতে সোনারপুর অটো করিয়া, এই হল গে পেলান। ... ...
রামলাল রাস্তা পার হইতে যাইবেন, কিছু গেরুয়া ফেট্টি বাঁধা চ্যাংড়া যুবক মোড়ে বসিয়া তাস পিটাইতেছিল— অকস্মাৎ একজন তাহার পানে তাকাইল। রামলাল সতর্ক হইলেন। হাত মুষ্টিবদ্ধ করিলেন, তুলিয়া, ক্ষীণকন্ঠে বলিলেন, 'জ্যায় শ্রীরাম।'পূর্বে ভুল হইত। অকস্মাৎ কেহ না কেহ পথের এক মোড় হইতে অন্য মোড়ে অব্যর্থ ডাকিত, 'কে যায়?' সম্বিৎ ফিরিয়া রামলাল উচ্চারণ করিতেন, 'জয় শ্রীরাম।' দুর্বল শরীর, প্রখর গ্রীষ্মেও একটি গেরুয়া উত্তরীয় সর্বদা গলায় জড়াইয়া রাখিতেন। উহা একটি রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা কবচ। প্রখর গ্রীষ্মের হাল্কা ... ...
পৃথিবীতে ছোট বড় মিলিয়ে ২০০র' কাছাকাছি দেশ, তার প্রায় প্রতিটিতেই বাঙালীর পদধূলি পড়েছে। তবে নিউজিল্যাণ্ড নামে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে একটি দ্বীপমালা আছে, সে দেশের সঙ্গে ভারতীয়দের তথা বাঙালীদের আশ্চর্য ও বিশেষ সব সম্পর্ক, অনেকে জানেন নিশ্চয়ই। সে সব সম্পর্কের সূত্রপাত আজ প্রায় দুশো বছরেরও বেশী, ইস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানীর আমলে। উনবিংশ শতকের গোড়ার দিক থেকে, যখন ভারতের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ারও যোগাযোগ স্থাপিত হয়নি, তখন থেকেই ব্রিটিশ জাহাজের লস্কর হয়ে চট্টগ্রামের বাঙালী নাবিকরা নিউজিল্যাণ্ডে ... ...
মহামহিম মোদী নিঃসন্দেহে ইতিহাসে নাম তুলে ফেলেছেন। আজ থেকে পাঁচশো বছর পরে, ইশকুল-বইয়ে নিশ্চয়ই লেখা হবে, ভারতবর্ষে এমন একজন মহাসম্রাট এসেছিলেন, যিনি কাশ্মীরে টিভি সম্প্রচার বন্ধ করে কাশ্মীরিদের উদ্দেশে টিভিতে ভাষণ দিতেন। যিনি উত্তর-পূর্ব ভারতে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতবাসীকে টুইট করতেন। যিনি বাংলায় দশ কোটি লোককে রাষ্ট্রহীন করার কল বানিয়ে, তারপর তাদেরই রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি নষ্ট না করার উপদেশ দিতেন। ... ...
এই ঘোর অন্ধকার সময়ে আরেকবার ফিরে দেখি ১৯৪৭ এর রক্তমাখা দিনগুলোকে। সেই দিনগুলো পার করে যাঁরা বেঁচে আছেন এখনও তাঁদেরই একজনের গল্প রইল আজকে। পড়ুন, জানুন, নিজের দিকে তাকান... ‘আমাদের হিন্দু ভাইয়েরা হিন্দুস্তানে জন্মায়, বড় হয়, সারাজীবন কাটিয়ে যখন মারা যায় তখন তাদের দাহ করে সেই ছাই গঙ্গানদীর পুণ্যপ্রবাহে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। তারা বয়ে চলে গঙ্গার স্রোতধারায়, যদিও গঙ্গার জল শেষপর্যন্ত গিয়ে মেশে সাগরে, সে জল তখন আর শুধু হিন্দুস্তানের নয়। আমরা মুসলমানরা এদেশে জন্মাই, বড় হই ... ...
ব্রিটিশরা যখন ভারত ছেড়ে চলে যাবে এই ব্যাপারটা নিশ্চিত হয়ে গেল, তখন দুটো প্রধান সমস্যা এসে দাঁড়ালো আমাদের স্বাধীনতার সামনে। একটি অবশ্যই দেশ ভাগ সংক্রান্ত। বহু আলাপ-আলোচনা, তর্ক-বিতর্ক, বহু রক্তাক্ত হিংসা দাঙ্গার পর্ব পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত দেখা গেল দেশভাগ হচ্ছেই। অবিভক্ত ভারত - ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে ভাগ হয়ে যাচ্ছে। দ্বিতীয় যে সমস্যাটি দেখা গেল সেটি হলো দেশীয় রাজ্যগুলির ভবিষ্যৎ কি হবে সেটা ... ...
‘কপাল মানুষের সঙ্গে সঙ্গে যায়। পালানোর কি আর উপায় আছে!’- এই সপ্তাহে শরীর ‘খারাপ’ থাকার কথা। কিন্তু, কিছু টাকার খুবই দরকার। সকালে পেট-না-হওয়ার ওষুধ গিলে, সন্ধেয় লিপস্টিক পাউডার ডলে প্রস্তুত থাকলে কী হবে, খদ্দের এলে তো! রাত প্রায় একটা। এই গলির কার্যত কোনো জীবনযাত্রা নেই। ঘুণধরা জীবনগুলি স্মৃতিরও অতীত সময় থেকে যেন এক বিন্দুতে দাঁড়িয়ে। তেলচিটে বিছানা। কালী, দুর্গা, বোম্বাইয়া নায়িকার ছবি আঁটা চুন-ঝরা দেওয়ালের খুপরিগুলির জলবায়ু চিরকালই স্যাঁতসেঁতে। ইতিহাস সবারই উনিশ-বিশ। কান পাতলে দীর্ঘশ্বাসদের ব ... ...
নেদারল্যান্ডের হেগ শহরে অবস্থিত আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস—আইসিজে) মিয়ানমারের বিরুদ্ধে করা গাম্বিয়ার মামলার শুনানি শুরু হয়েছে আজকে। শান্তি প্রাসাদে শান্তি আসবে কিনা তার আইনই লড়াই শুরু আজকে থেকে। নেদারল্যান্ডের হেগ শহরের পিস প্যালেসেই আইসিজে অবস্থিত। হেগ শহরেই আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট—আইসিসি) আরেকটি মামলা চলমান। তবে আইসিজের মামলার একটু আলাদা তাৎপর্য রয়েছে। আইসিজে জাতিসংঘ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত, মামলার রায় বাস্তবায়নে পরবর্তীতে জাতিসংঘর সাহা ... ...
একুশে পদকপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অজয় রায় (৮৪) আর নেই। সোমবার ( ৯ ডিসেম্বর) দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। অধ্যাপক অজয় দীর্ঘদিন বার্ধক্যজনিত নানা অসুখে ভুগছিলেন। ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি তার ছেলে মুক্তমনা ব্লগার-বিজ্ঞান লেখক অভিজিৎ রায়কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় জঙ্গিরা কুপিয়ে খুন করে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত অভিজিতের স্ত্রী, আরেক মুক্তমনা ব্লগার বন্যা আহমেদও জঙ্গি হামলায় আহত হন। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এই ব্লগ ... ...
ইয়ে, স-অ-অ-অ-ব দেখছে। বড়দা সব দেখছে। বড়দা স্রেফ দেখেনি ওইখানে এক দিন রাম জন্মালেন, তার পর কারা বিদেশ থেকে এসে যেন ভেঙেটেঙে মসজিদ স্থাপন করল, কেন না বড়দা তখন ঘুমোচ্ছিলেন। ঘুম ভাঙল যখন, চোখ কচলেটচলে দেখলেন মস্ত ব্যাপার এ, বড়দা বললেন, ভেঙে ফেলো মসজিদ, জমি ছিনিয়ে লাও, ওখানে মন্দির ছিল আর মন্দিরই হবে। দেশসুদ্ধু লোকের অবশ্য এত চমৎকার দিব্যদৃষ্টি ছিল না, তারা মৃদু স্বরে কুঁইকুঁই করে বলতে গেল, ইয়ে মানে চোখে তো দেখলাম না। বড়দা ঠাণ্ডা গলায় বললেন, বাবু, যা বলছি মেনে নে না। মন্দির ছিল, মন্দিরই হবে। ওখানে শা ... ...
যেকোন নারকীয় ধর্ষণের ঘটনা সংবাদ মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়ে সামনে আসার পর নাগরিক হিসাবে আমাদের একটা ঈমানি দায়িত্ব থাকে। দায়িত্বটা হল অভিযুক্ত ধর্ষকের কঠোরতম শাস্তির দাবি করা। কঠোরতম শাস্তি বলতে কারোর কাছে মৃত্যুদন্ড। কেউ একটু এগিয়ে ধর্ষকের পুরুষাঙ্গ কেটে নেওয়ার কথা বলে। আবার কেউ আরও একটু এগিয়ে ধর্ষককে কুচিকুচি করে কেটে নুনলঙ্কা মাখানোর বিধান দেন । কাল একটা গ্রুপে দেখলাম একজন অতি দরদী নাগরিক বলেছে "শ্লা রেপিষ্টের মা বোনকে রেপ করা হোক, তবেই রেপিষ্ট বুঝবে জ্বালা"। ধর্ষণের বিরুদ্ধে কঠোর 'প্রতিবাদ' করতে গ ... ...
বাঙালি মধ্যবিত্তের মার্জিত ও পরিশীলিত হাবভাব দেখতে বেশ লাগে। অপসংস্কৃতি নিয়ে বাঙালি চিরকাল ওয়াকিবহাল ছিল। আজও আছে। বেশ লাগে। কিন্তু, বুকে হাত দিয়ে বলুন, আপনার প্রবল ক্ষোভ ও অপমানে আপনার কি খুব পরিশীলিত, গঙ্গাজলে ধোওয়া আদ্যন্ত সাত্ত্বিক শব্দ মনে পড়ে? না প্রাণভরে বেশ খারাপ খারাপ কথা উচ্চারণ করতে মন চায়? আপনি কি কিশোর বয়সে, তরুণ বয়সে একটিও খারাপ উচ্চারণ-অযোগ্য অসাংবিধানিক অমার্জিত শব্দ বলেন নি? ঠাট্টাছলেও বলেন নি? বেশ, যদি একদমই না বলে থাকেন তাহলে তো আপনি প্রায় বোধি গাছের তলায় বসে আছেন, চরাচর আপনার ... ...
দা আইরিশম্যান। সিনেমা প্রেমীদের জন্য মার্টিন স্করসিসের নতুন বিস্ময়। ট্যাক্সি ড্রাইভার, গুডফেলাস, ক্যাসিনো, গ্যাংস অব নিউইয়র্ক, দা অ্যাভিয়েটর, দ্য ডিপার্টেড, শাটার আইল্যান্ড, দ্য উল্ফ অব ওয়াল স্ট্রিট, সাইলেন্টের পরের জায়গা দা আইরিশম্যান। বর্তমান সময়ের সেরা পরিচালক কী স্করসিস? কিংবা সর্বকালের সেরা? তর্ক থাকতে পারে কিন্তু তিনি যে সেরাদের একজন তা নিয়ে নিশ্চয়ই কোন তর্ক নেই। সর্বকালের সেরাদের ছোট তালিকায়ও অনায়াসে তার জায়গা হয়ে যাবে। ( দা আইরিশম্যান নিয়ে বলতেে গিয়ে স্করসিস নিয়ে আলাপের কিছু নাই। স্করসি ... ...
পূর্ণেন্দু পত্রী মশাই মার্জনা করবেন - তোকে আমরা কী দিইনি নরেন? আগুন জ্বালিয়ে হোলি খেলবি বলে আমরা তোকে দিয়েছি এক ট্রেন ভর্তি করসেবক। দেদার মুসলমান মারবি বলে তুলে দিয়েছি পুরো গুজরাট। তোর রাজধর্ম পালন করতে ইচ্ছে করে বলে পাঠিয়ে দিয়েছি স্বয়ং আদবানীজীকে, কড়ি নিন্দার সাথে আশীর্বাণী পাঞ্চ করিয়ে খাইয়েছি তোকে। সমস্ত বিরোধী দল, বিরোধী জাতকে বলেছি সরে যাও, নরেন এখন ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার খেলা খেলবে। তোকে আমরা কী দিইনি নরেন? মঞ্চে আদবাণী, মুরলী মনোহরদের সাইড করে ... ...
আরজামাস বলে একটা শহর ছিল। ছোট্ট শহর, অনেক দূরের, অন্য মহাদেশে। অনেক ছোটবেলায় চিনে ফেলেছিলাম। ভৌগোলিক দূরত্ব টের পাইনি।টের পেতে দেননি আর্কাদি গাইদার নামের এক রুশ লেখক। মেদিনীপুর জেলার আদি ও অবিভক্ত কমিউনিস্ট পার্টির নেতা, কিংবদন্তীপ্রতিম দেবেন দাস, আমার দিদিকে ছোটবেলায় একটি বই উপহার দিয়েছিলেন। বইটির নাম- 'ইশকুল'। লেখকের নাম আর্কাদি গাইদার ... ...
একদিন দুঃসাহসের পাখায় ভর করে,ছুঁতে চেয়েছিলাম কবিতার শরীর ... ...
তুমি ভালবাসতে চেয়েছিলে।আমিও । ... ...