সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে আফ্রিকা মহাদেশের সম্বন্ধ দীর্ঘদিনের কিন্তু গত প্রায় তিরিশ বছরে রাশিয়ার সঙ্গে পরিচয় তেমন হয়তো হয় নি। বর্তমান রাশিয়ান সরকার আফ্রিকার সকল দেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার ও রাশিয়া ও আফ্রিকার পারস্পরিক বাণিজ্য বৃদ্ধির মানসে আফ্রেক্সিমব্যাঙ্কের সঙ্গে গাঁট ছড়া বাঁধতে মনস্থ করেছেন এ ব্যাঙ্ক কোন এক দেশের নয়, সারা আফ্রিকা এর মালিক । তাই এই ব্যাঙ্কের সঙ্গে কাজ করে তাঁরা সারা আফ্রিকার কাছে পৌঁছুতে চান। রাশিয়া সরবরাহ করে এক বিশাল পরিমাণ খাদ্য শস্য আফ্রিকার প্রয়াস হোক তাদের রপ্তানি বাড়ানোর । অন্য দেশের মতন ( তির্যক মন্তব্য চিনের প্রতি !) রাশিয়া টাকার থলি নিয়ে আফ্রিকা এসে সম্পত্তি ও প্রভাব কিনতে আগ্রহী নয় । ... ...
শুধু প্রতিরক্ষাই নয়, নন্দরাজারা সেচ ব্যবস্থার জন্যেও বহু ক্যানাল এবং জলাধার নির্মাণ করিয়েছিলেন। রাজ্যের সমস্ত ভূমি এবং ভূসম্পদ ও জলসম্পদের অধিকারী যে রাষ্ট্র এবং সেই যাবতীয় সম্পদই যে করযোগ্য ভারতবর্ষে সে ধারণারও প্রথম প্রবর্তন করেছিলেন নন্দরাজারাই। ... ...
আসলে এই সব কথা ওদের মনে বুড়বুড় করে সর্বক্ষণ - ঢাকা দেওয়া হাঁড়িতে ভাত ফোটার মত অনেকটা - তারপর একসময় কথা ফোটা বন্ধ হয়; সব কথারা ঠান্ডা হয়ে গিয়ে সর ফ্যালে আলটিমেটলি ; সেই জমাটবাঁধা থকথকে শাদা ফ্যান দিনের শেষে ড্রেনের মুখে নিজেরাই ঢেলে দেয় ওরা; জল দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলে, শলার ঝাঁটা দিয়ে বাড়তি জল কাচায়, তারপর শুতে যায় সেদিনের মত। ... ...
রনি, কলকাতায় মার খাচ্ছে বাংলা। এটা বলে বুঝানোর মত না। অকারণে মানুষ হিন্দি বলে! কেন বলে নিজেও জানে না। আপদমস্তক বাঙালি, কোন আন্দাজে হিন্দি বলে চলে সবাই? আমরা ঢাকা থাকা কালে হিন্দি শুনলেই মনে করতাম বিহারী কেউ আছে আশেপাশে! প্রথম নেমে যখন হিন্দি শুনলাম একজনের মুখে তখন আমার মনে হল আরে বিহারী না কি! না, বিহারী না। এরা শিক্ষিত, ভদ্র এবং সবাই হিন্দিতে কথা বলতে চায়। রিকশাওয়ালা, উবার চালক, ট্যাক্সই চালকদের দেখে আমার মনে হয়েছে এরা হয় সবাই ভিন্ন প্রদেশ থেকে এসেছে না হয় এদের মানসিক সমস্যা আছে। এই রোগের চিকিৎসা নিয়ে কলকাতা কী ভাবছে আমার জানা নাই। ভাবছে কি না তাও জানা নাই। এদিক থেকে আমরা যোজন যোজন দূরে এগিয়ে আছে। বাংলা আমাদের এখনও একমাত্র ভাষা। উবার ডাকেন, হেলিকপ্টার ডাকেন, ড্রাইভার আপনাকে আমাদের দেশে বাংলায়ই ডাক দিবে, এইটা নিয়ে কোন সন্দেহ নাই। ... ...
হাঁটতে হাঁটতে হুট করে চোখে পড়ল ধবধবে সাদা এক দালান। দেখেই বুঝা যায় গথিক স্থাপনার এক অনন্য নজির এই দালান। কাছে গেলাম, দেখি সেন্ট পল ক্যাথিড্রাল। অপূর্ব সুন্দর গির্জা। আমার মফস্বল চোখ এত সুন্দর স্থাপনা খুব কমই দেখেছে। রনি, মজার কথা হচ্ছে গির্জায় ঢুকতে টাকা নিলো! কেমন বেশরিয়তি কারবার! মানুষ ঠিকমত ধর্মকর্ম করতে পারবে না? গির্জায় যেতে টাকা নিবে? দশ টাকা দিয়ে ভিতরে ঢুকলাম। সিনেমায় যেমন চার্চ দেখি আমরা তেমন একটা চার্চ। দা ভেঞ্চি কোডের শুটিং করা যাবে চোখ বন্ধ করে। আমি ভিতরে গিয়ে বসলাম। অল্প কিছু মানুষ। নীরবে প্রার্থনা করছে। মনে হল একজনকে জিজ্ঞাস করি যে উনিও দশ টাকা দিয়ে প্রার্থনা করতে আসছেন কি না। কিন্তু তা আর করা হয় নাই। আমি দেখি সারি সারি যে চেয়ার গুলো বসানো তার উপরে মুখোমুখি করে বড় বড় চেয়ারের সারি। দুই পাসেই আছে এমন। এবং সবচেয়ে দারুণ ব্যাপার হল এখানে এখনও ব্রিটিশ আমলের চিহ্ন ধরে রেখেছে। সমগ্র ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রধান প্রধান শহরের চার্চ প্রধানদের জন্য সংরক্ষিত জায়গা এগুলা। লাহোর, বোম্বে যেমন আছে তেমনই ক্যালকাটার পাসেই লেখা ডাক্কা! প্রতিটার জন্য আলাদা আলাদা পতাকা আছে। দারুণ লাগল দেখে। ... ...
জাতীয় গ্রন্থাগারের প্রধান ফটকেই আমাকে আটকে দেওয়া হল। বললাম, লাইব্রেরীতে কেন যায়? বই দেখব, পড়ব, হাতাব! মছুয়া দারওয়ান বলল, উঁহু, এখানে ওই সব হয় না! ওই সব করতে হলে আগে থেকে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়, কবে আমি আসব তা আগে থেকেই ঠিক করে আসতে হবে। আর যদি সদস্য হওন তাহলে বই বাড়িতে নিয়ে যেতে পারবেন! তাহলে এখন? তিনি জানালেন, ‘ভিজিট’ দিয়ে আসতে পারবেন! ভিজিট দিয়েই না হয় আসলাম। নাম, ঠিকানা, ডাবল ডোজ টিকা চাইলেন, আমি টিপ্রল ডোজ টিকার কার্ড দেখিয়ে, নাম ধাম দিয়ে ঢুকলাম। ওই ঢুকা পর্যন্তই। ভিতরেও একই কাণ্ড। একজন মহিলা আমাকে নিয়ে রিডিং রুমে নিয়ে গেলেন। বললেন, ওই যে ওইটা রিডিং রুম। আমি কাছে যেতে চাইলে বললেন, উঁহু, কাছে যাওয়া যাবে না। বোঝ? আমি এদিকে একটু উঁকি দিতে চাই, নানা কোন দিকে তাকানো যাবে না! একটা ছবি তুলি? নেহি! অজ্ঞতা আর কী, চলে আসলাম। ... ...
এতদিনের গতানুগতিক জীবনে যে মস্তিষ্ক আর পাঁচটা পশুর মতোই জীবনধারণের কাজে সদা ব্যাপৃত ছিল, তার ভেতরে আসছে নতুন এক আবেগের জোয়ার। সেদিন ওই আদিম মানুষগুলি প্রথম যে অনুভবে নির্বাক হয়ে গিয়েছিল, তারা স্বপ্নেও ভাবেনি তাদের বহু প্রজন্ম পরে, এই অনুভূতির নাম দেওয়া হবে, প্রেম, ভালোবাসা। ছেলে ও মেয়ের ভালোবাসার এই অনুভূতি নিয়ে অজস্র কাব্য, কবিতা, গান, গল্প, উপন্যাস, নাটক লেখা হবে। খুলে যাবে মানব সংস্কৃতির আরেকটি দিক – যার নাম সাহিত্য। ... ...
গত ১৯ জুন,২০২২ তারিখে দুটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় পৃথিবীর দুই দেশে—প্রথমটি লাতিন আমেরিকা মহাদেশের কলম্বিয়ায়, দ্বিতীয়টি ইওরোপ মহাদেশের ফ্রান্সে। দুটি নির্বাচনের ফলাফলই শ্রমজীবী মানুষের ক্ষেত্রে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ । ... ...
স্মৃতি ঝাঁপটাতে ঝাঁপটাতে যেটুকু উঠে আসে। পাড়া, ছেলেবেলা, আত্মজন সব মিশে যায়। শুধু পরে থাকে প্রথম ঈপ্সা কে ফিরে পাওয়ার স্মৃতি লেখা.. ... ...
সদ্য পরাজিত বাম বিধায়কের দলের প্রতি সমালোচনা সবটাই কি যথার্থ? ... ...
আমার বাবাকে শেরপুরের মানুষ ধর্ম সংক্রান্ত বিষয়ে বিশেষজ্ঞ বলে মনে করতেন। সাধারণ মানুষ আব্বাকে চিনত এমন না, কিন্তু যারা এই ধারায় আছে তারা সবাই এক নামেই চিনত। শহরের বড় বড় মসজিদের ইমাম, ইসলাম বুঝে জানে এমন লোকজন আব্বাকে মান্য করত। আব্বার কথা শোনার জন্য অপেক্ষা করতে দেখেছি অনেকেই। কোন মসজিদ বা মাদ্রাসায় আব্বার নাম বললে উনার নাম শুনা মাত্র নড়েচড়ে বসত সকলেই। আব্বা আমাদের এলাকার মসজিদে নামাজ পড়তেন না, কারণ এখানে যে নামাজ পড়ায় তিনি অল্প বয়সই, আব্বা তৃপ্তি পেতেন না তার পিছনে নামাজ পড়ে। হেঁটে দূরের এক মসজিদে যেতেন শুধু মাত্র সেই ইমাম সাহেবকে আব্বার মনে হত উনার মাপের, যার সাথে কথা বলা যায়, আলাপ করা যায়। সেই ইমাম সাহেব আমাকে অনেকবার আমার কাছে আব্বার প্রাণ খোলা প্রশংসা করেছেন। এক বাক্যে স্বীকৃতি দিছেন যে আব্বার মত ধর্ম সম্পর্কে জ্ঞানী মানুষ তিনি খুব কমই দেখেছেন। তিনি পরে শেরপুরের সবচেয়ে বড় মাদ্রাসা ও মসজিদের ইমাম হয়ে ছিলেন, এবং তখনও উনার আব্বার প্রতি মুগ্ধতা কাটেনি। আব্বা যখন অসুস্থ, বিছানায় পড়ে গেছেন। তখনও আমি দেখতাম কোথা থেকে কোথা থেকে মানুষ আসত, উদ্দেশ্য আব্বার সাথে দেখা করা আর একটু আলোচনা, ইসলামের নানা বিষয় নিয়ে গল্প। আমি আব্বার এই দিকের কথা কেন বলছি? কারণ আমি আব্বাকে কোনদিন নববর্ষের বিরোধিতা করতে দেখি নাই। আব্বা নিশ্চয়ই মঙ্গল শোভা যাত্রায় অংশ নেয় নাই। কিন্তু মেজোপা যখন নববর্ষ উপলক্ষে একটা পাঞ্জাবি বা ফতুয়া এনে দিত তখন তিনি আগ্রহ নিয়েই পরতেন, খুশিতে চোখ নেচে উঠত উনার। বাব্বাহ! আমার জন্য আনছ, বলে হাতে নিতেন, হাসতেন। আমি যখন ঢাকায় ছিলাম তখন ফোন দিয়ে বলতাম, আব্বা, শুভ নববর্ষ, তিনিও সাথে সাথেই শুভেচ্ছা জানাতেন নববর্ষের। নববর্ষ উপলক্ষে ভাল মন্দ রান্না হয়েছে কি না তার খোঁজ নিতেন, আগ্রহ নিয়ে খেতেনও। আমি আমার সমস্ত জ্ঞান বাজি রেখে আপনাদের বলতে পারি যে কাঠ মোল্লা জাহান্নাম যাওয়ার নিশ্চয়তা দিচ্ছেন গলা ফাটাইয়া, আমার বাবা তার চেয়ে বেশি জানতেন, ধর্ম, ইসলাম, সমাজ, দেশ, রাষ্ট্র সম্পর্কে। ... ...
একটা অটোতে আমি। অটো চালক আমাকে দেখেই আর সবার মত বুঝে গেলেন আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। তিনি হেসে জিজ্ঞাস করলেন, বাংলাদেশ থেকে আসছেন? আমি বললাম, জি, দেখেই বুঝে ফেলছেন? তিনি উত্তর দিলেন না, হাসলেন। একটু আগানোর পরে, বাংলাদেশ তো খুব দারুণ করছে এখন। হাসিনা তো দেখায় দিচ্ছে! আর এদিকে দেখুন, সব চোর বাটপার! আমি কেন আল্লাই জানে বললাম, ভাল খারাপ সব দিকেই আছে, আমাদের ওদিকে তো আরও বেশিই আছে। লুটপাট চলে রীতিমত। তিনি ঘাড় ঘুরিয়ে আমার দিকে তাকালেন, এরপরে আবার চালাতে লাগলেন। এদিকের থেকে বেশি চোর আর কোথাও আছে? এইটা আপনে বললেই বিশ্বাস করব আমি? আমি বললাম, আরে, কি বলেন, এদিকের খবর আমরা দেখি না? এখানে তো কত পরিষ্কার ব্যবস্থা, জবাবদিহি আছে। কেউ চাইলেই একটা কিছু… তিনি হা হা হা করে হাসা শুরু করে দিলেন। আমি থেমে গেলাম। এবার তিনি আবার শুরু করলেন কোন নেতা কত খাচ্ছে, কোথায় খাচ্ছে, দেশটা যে উজাড় করে নিয়ে নিচ্ছে সব চোরেরা এইটা তিনি নিশ্চিত। কবে মুখ থুবড়ে পড়বে এইটাই এখন দেখার বিষয়। আমিও বলা শুরু করেছিলাম প্রায়। হুট করেই মনে হল অনেক আগে পড়া বেসিক আলীর কমিক স্ট্রিপের একটা পর্বের কথা। ... ...
আমি আর সায়ন ফিরছিলুম একসঙ্গে অটোতে। এইট বি থেকে গড়িয়া। সায়ন শুধালো, শিবাংশুদা, কেমন লাগলো আজ? তখনই প্রথম আমি আলাদা করে ভাবতে প্ররোচিত হলুম। ঠিকই তো। কেমন লাগলো আমার এইসব কিছু। জানি, এই প্রশ্ন তো আমাকে আবার করা হবে। করা হলো। অনেকরাতে। স্বয়ং পাইদিদি। জীবনে প্রথম এতোজন উন্মোচিত সমকামী ও বৃহন্নলা মানুষজনের সঙ্গে এতোক্ষণ কাটালুম। তাদের কথা শুনলুম। তাদের ভাবনার জগতে রু-ব-রু মহড়া নিলুম। প্রথমবার এ জীবনে।কিছু বলার আগে একটা অব্স্থান নিতে হয়। 'সামাজিক অবস্থান'। নিত্য দেখি, 'মানবিকতা' নামক একটি ... ...