বাংলা শিশু-কিশোর সাহিত্যে রবি ঠাকুরের শ্রেষ্ঠ অবদান কী? আমার মতে তাঁর কবিতা। তাই নিয়েই দু'চার কথা লিখে রাখলাম এখানে। ... ...
এগারোই সেপ্টেম্বরের কুড়ি বছর উপলক্ষ্যে আমার ব্যক্তিগত অনুভূতি আর অভিজ্ঞতার কথা। দূর থেকে লেখা নয়। একেবারে নিজের জীবনের কথা। লেকচার নয়। মনের কথা। ... ...
আত্মহত্যার ঠেকাতে গেলে সামগ্রিক সহমর্মিতা দরকার। ... ...
সালটা ১৮৪২। কলকাতার বুকে তখন পুরোদমে বেজে চলেছে নবজাগরণের দামামা। প্রতি মুহূর্তে পালটে যাচ্ছে কল্লোলিনী তিলোত্তমার চালচিত্র, বদলে যাচ্ছে শহর কলকাতার আট থেকে আশির রোজকার যাপন। চিৎপুর রোড, যা বর্তমানে পরিচিত রবীন্দ্র সরণি নামে সেই রাস্তা ধরে কিছুদূর হাঁটলেই চোখে পড়ে দ্বারকানাথ ঠাকুরের গলি যা ছিল তৎকালীন কলকাতার বুকে নবজাগরণের কেন্দ্রস্থল। শুধুমাত্র সাহিত্য সংস্কৃতি নয়, সেই সময় বাঙালির ব্যবসা-বাণিজ্যেরও অন্যতম পথপ্রদর্শক হয়ে উঠেছিল এই ঠাকুরবাড়ি। ... ...
তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯৬৮, ৬৯ আর ৭০ সালে তিনটে বড়ো গল্প লেখেন, তিনটে দেব সাহিত্য কুটীর পূজাবার্ষিকীতে। আপাতভাবে ভূতের গল্প হলেও, এই ট্রিলজির অনেক স্তর, আর অনেক ক্ষেত্রেই তারা ইউনিক। এই 'ভূতপুরাণ' নিয়েই আমার চিন্তাভাবনা। ... ...
কোনো ছবি থেকে, যদি তা সত্য ও শিল্পনিষ্ঠ হয়, সেই দেশের সমাজবাস্তবতার একটা আন্দাজ পাওয়া অসম্ভব নয়। এবার দেশটি যদি হয় চীন, আমাদের আগ্রহ আরো বেড়ে যায়। যদি কোনো ছবি সেই লক্ষ্যপূরণ করে, আমাদের সে ব্যাপারে অবহিত করে তবে তা নিয়ে আলোচনার প্রয়োজন আছে। সম্প্রতি আধুনিক চীনের তিনটি ছবি দেখলেও একটি ছবিকে ফোকাল পয়েন্টে রেখে এই আলোচনা। ... ...
কৃষক আন্দোলন সম্পর্কে মিডিয়া আর বেশি কিছু কথা বলেনা। মানুষকে ভুলিয়ে দেওয়ার খেলা, দৃষ্টি সরিয়ে দেওয়ার খেলা চলেছে নিরন্তর। এ এক নতুন ধরনের "জার্নালিজম অফ এক্সক্লুশন" -- সুকৌশলে বর্জন করার সাংবাদিকতা। আমার নতুন বই "আপনি কি দেশদ্রোহী?" (RBE, কলকাতা, ২০২১) থেকে এই বিষয়ে একটা ক্ষুদ্র অংশ এখানে পোস্ট করলাম। ... ...
অর্থমন্ত্রী অশোক মিত্র একবার ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণায় লিখেছিলেন, যে, দিল্লির যোজনা কমিশনের সহসচিবকে তিনি বলেছিলেন, কলকাতা থেকে দিল্লি এলে তাঁর মনে হয়, গ্রাম থেকে শহরে এলেন। অস্যার্থঃ পশ্চিমবঙ্গ থেকে সম্পদ চুষে নিয়েই দিল্লি এবং পশ্চিমাঞ্চলের রমরমা। অশোক মিত্রের বর্ণনা অনুযায়ী সে বছর যোজনা কমিশনের অবশেষে পশ্চিমবঙ্গকে তার যথাযথ ভাগ দিতে সুপারিশ করে। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। প্রধানমন্ত্রী সেই সুপারিশ খারিজ করেন। এ কোনো রাজনৈতিক স্লোগান বা লাইন নয়, কিন্তু মূল ন্যারেটিভটি ছিল এইরকমই। যা লোকে বিশ্বাস করত। ... ...
সেই ঘনায়মান আঁধারে এক সময় বালুদা এসে বসে ছিল আমার পাশটিতে। নেশা মেশানো নীচু গলায় বলেছিল : দাদাবাবু, আমার বড় সপপন ছিলো লালন মুর্দাফরাশ হবে না। জিন্দা আদমি তুলবে... ইলাজের জন্য হাসপাতাল আনবে এম্বুলেন্স চাপিয়ে। .... হল না । শালা মর্গে ডিউটি পেল -- অ্যানাটমি ঘরেও নয়। সবাই বলে ওখানে পয়সা আছে। ডেড দের গায়ের আংটি-হার ঘুরিয়ে দিলেই হলো। আমি লেকিন হেরে গেলাম দাদাবাবু। ..... মুর্দাফরাশের বেটা ডাক্তার হবে তো ভাবলাম না -- এটেন্ড্যান হবে... এটা তো ভাবা যায় বলুন? লালন তো ইন্টার পাশ ভি করল! তবুও.... "। স্তোকবাক্য শুনিয়েছিলাম বালুদাকে। বলেছিলাম : আরে, লালনের বিয়ে হবে... ছেলেমেয়ে হবে...তাদের ভালোভাবে পড়িয়ো... হয়ত একদিন কেউ ডাক্তারই হবে ! সেদিন যেন জানাতে ভুলোনা দাদা! " বালুদা ম্লান হেসে বলেছিল : দাদাবাবু, আর একটু মানসু নিতেই হবে লেকিন । ... ...
-দ্যাখো, বীনস, অ্যাসপারাগস, স্পিনাচ, ব্রকোলি এই সব তো দিন রাত খাইয়ে খাইয়ে আমাকে প্রায় শুঁয়োপোকা করে ফেললে -মানে কি বলতে চাইছো -তেমন কিছুই বলতে চাইছি না, শুধু তোমার নোটিশে আনতে চাইছি যে ঘাস পাতা খেয়ে খেয়ে আমার অবস্থা নিমো স্টেশনের ধারে সজনে গাছে থাকা শুঁয়োপোকা গুলোর মত হয়ে গেছে! দ্যাখোনি তুমি স্টেশনে শুঁয়োপোকা? -দেখেছি, কিন্তু তার সাথে তোমার কি সম্পর্ক ... ...
১৯৪৪ এর জুলাই মাসে গান্ধি জিন্নার সঙ্গে আলোচনায় বসবার প্রস্তাব দেন। আলোচনার ভিত্তি হবে রাজাগোপালাচারি-সূত্র ... ...
এই আচমকা বাম্পার যেন কুমারসাহেবের হেলমেট ছুঁয়ে গেল। উনি ডাক করার সময় পেলেন না। ক্রুদ্ধ চোখে কোসলে স্যারের দিকে কয়েক সেকেন্ড তাকিয়ে কেটে কেটে বললেন — তার মানে আপনি ওই ডাইনি দুটোর কথা বিশ্বাস করছেন? ... ...
আজ সারাটা দিন কেটেছে বুক ঢিপ ঢিপ উত্তেজনায়। স্যারের হুকুমে আমরা বসেছিলাম ফরেনসিক অফিসে। আমরা মানে আমি আর স্যার। আমাদের অফিসে সিমরনকে বলা ছিল আগামী দু’দিনের জন্য কাউকে কোন অ্যাপয়েন্টমেন্ট না দিতে। ... ...
সম্প্রতি ওটিটি প্ল্যাটফর্মে সিনেমা দেখার জনপ্রিয়তা অনেক বেড়েছে। কোভিড জনিত লকডাউন পরিস্থিতিতে প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ থাকায় ওটিটি গুলি লাভবান হয়েছে। আগামী দিনে সিনেমা হল খুললেও দর্শক কতটা ফিরে আসবেন তা নিয়ে অনেকেই সন্দিহান। এর ফলাফল কী হবে, কারা লাভবান হবেন আর কাদের হবে ক্ষতি সেটা নিয়ে নানা ভাবনা মাথাচাড়া দিচ্ছে। এই লাভ ক্ষতির হিসেবটা সবসময়ই আপেক্ষিক। দর্শক হিসেবে আমাদের কি প্রাপ্তি, সিনেমার ইন্ডাস্ট্রি হিসেবে আর আর্ট হিসেবে বিকাশের পথে এই পরিস্থিতি কতটা সহায়ক তা নিয়ে নানা ভাবনার সমাবেশ দরকার। তার প্রাথমিক সূত্রপাত এই লেখাটি। ... ...
এই ন্যারেটিভের প্রথম লক্ষণ হল, আফগানিস্তানকে আফগানিস্তান বানানোর জন্য পাকিস্তান, চিন এবং কখনও সখনও দুষ্টু রাশিয়াকে দায়ী করা। আর আমেরিকাকে স্রেফ একটু ব্যর্থতার জন্য সমালোচনা করা। আমেরিকা আফগানিস্তানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে লাট করেছে, সে নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই, কিন্তু উদ্দেশ্য তো ভালোই ছিল, গণতন্ত্রই তো গড়তে গিয়েছিল। মানুষকে ধর্মান্ধতা থেকে স্বাধীনতা দিয়েছিল, মেয়েদের দিয়েছিল ওড়ার আকাশ। কাইট রানার সেই পশ্চিমী স্বাধীনতার প্রতীক, মালালা হল মুখ। এখন আমেরিকার পিছিয়ে আসায় সে আকাশ ভেঙে পড়ে যাচ্ছে, এবার অ্যাসিড বৃষ্টি আসন্ন -- এরকম একটা ভাব। তো, এ ন্যারেটিভ এতই মোটাদাগের, এবং এতটাই অলীক, যে, আলাদা করে সমালোচনা করার এমনি কোনো কারণই নেই। তবু লেখা যখন হচ্ছে, তখন সংক্ষেপে, স্পষ্ট করেই বলা যাক, বাস্তবতা থেকে এসব অনেক দূরে। ইন্দোনেশিয়া থেকে আফগানিস্তান হয়ে আরব পর্যন্ত মৌলবাদীদের উত্থানে সক্রিয় ভূমিকা, মদৎ ছিল কাদের তা কোনো গোপন তথ্য নয়। আফগানিস্তানে মুজাহিদিনদের প্রশিক্ষণ, সৌদি আরবের অগাধ কনট্র্যাক্ট, এবং তালিবানদের সঙ্গে চলমান আলোচনা, এসব নিশ্চয়ই গণতন্ত্র এবং নারীর অধিকারের স্বার্থে করা হয়নি। বস্তুত জঙ্গী ইসলাম, মূলত প্রত্যক্ষভাবে পশ্চিমের তৈরি। ... ...