করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে একটি কল্প কথা -- ধরা যাক, ভ্যাকসিন আবিষ্কার হলো। সেই ভ্যাকসিন এর ফলে করোনা ভাইরাস নির্মূল হওয়া সম্ভব। কিন্তু সেই ভ্যাকসিন এর অনেক দাম। একটা ভ্যাকসিন নিতে কয়েকশো কোটি টাকা লাগে। সেই মহার্ঘ ভ্যাকসিন সাধারণের অধরা রয়ে গেল। ... ...
করোনা পরীক্ষা কি সত্যি কম হচ্ছে ভারতে? আর তাই করোনা রোগী যত বেশী হওয়ার কথা তা হচ্ছে না? আসুন দেখা যাক পরিসংখ্যান কি বলছে। আজ দ্বিতীয় কিস্তি ... ...
অনেকদিন বাদে আজ ছাতে উঠেছে ও। ছাতে এত সুন্দর বাগান করেছে মা! দেখে অবাক হয়ে গেছিল। আইআইটি জয়েন করেছে পরের থেকে খুব কম বাড়িতে আসে। এলেও ছাতে ওঠা হয়না। ওর গৃহবন্দিত্ব না। ঘরবন্দিত্ব চলছে। স্বেচ্ছানির্বাসন। সারা পৃথিবী থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে নিতে হয় মাঝে মাঝে। একেবারে একটা দ্বীপের মধ্যে। খুব বেশিই ছুটছিল যেন! একটার পর একটা সেমেস্টার।টপ করে যাওয়া। না করতে পারলেই ফ্রাস্ট্রেশন। বাড়িতে এখন আর কিছু বলে না। কিন্তু ছোটবেলা থেকে ও একটা অদৃশ্য চাপ অনুভব করে। দাদা ফার্স্ট হয়েছে।তোমাকেও হতে হবে। দাদা এটা পারে। তোমাকেও পারতে হবে। ... ...
-ওই বেজান বেড়াটার জন্য কত চোখের পানি, কত ঘৃণা, কত যন্ত্রণা, কত যুদ্ধ। যার জান নাই তার লাগি কত জান যায়, আমি রাতের আন্ধারে বেড়াটারে খুইলা লই। যেহানে বেড়া নাই সেহানে দেশভাগ নাই। সব এক, কে কইবে কোনটা দেশ আর কোনটা বিদেশ? ... ...
ওপরের তাক থেকে তিন চারটে বই টেনে নামাতেই একটা খাম মেঝের ওপর পড়ে গেল। টুলের ওপর থেকে রঞ্জন সাহা তাকিয়ে দেখলেন একটা বড়সড় ব্রাউন রঙের খাম। কিসের খাম বুঝতে পারলেন না। এই তাকটা খুব একটা ব্যবহার হয় না। মাসখানেক ধরে গৃহিনী তাগাদা দিচ্ছেন বই-এর আলমারির ওপরের তাকটা পরিষ্কার করার জন্য। আজ টুলে উঠে সবে কাজটা শুরু করেছেন, তার পরেই এই ঘটনা। ... ...
ত্বরিতগতিতে ছুটে যাচ্ছিল সারমেয়কুল। এদের একটা স্বভাব আছে। খাদ্যের সামান্য আভাস এবং আদরের সামান্যতম আভাস পেলেও এরা লেজ নাড়াতে নাড়াতে দৌড়ে আসে।যেন বহুদিনের পরিচয়। একেক জনের একেক রকম স্বভাব ।কেউ এসেই হামলে পড়ে খায়।কেউ কেউ এসে সলজ্জভাবে দূরে দাঁড়িয়ে থাকে।পেটে খিদে।অথচ আসে না।দূরে দাঁড়িয়ে লেজ নাড়াতে থাকে। ... ...
প্রকৃতির রোষের কাছে মানুষ অসহায় | বিশেষ করে গরীব মানুষের গল্প সারাবিশ্বে একই থাকে, বদলায় না | তাই যখন দক্ষিণবঙ্গে আমফান আছড়ে পড়ে, স্যান্ডি এসে আমেরিকার উত্তরপূর্ব তটরেখা বদলে দেয়, কোথায় যেন নিউইয়র্কের ফর্টি সিক্সথ স্ট্রিট আর টালিগঞ্জের কবি নবীন রোড মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় এক গৃহহীনের হুইলচেয়ারে | ... ...
ভারতের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগের নানান প্রতিবেদন প্রকাশিত হচ্ছে দেশী, বিদেশী সংবাদ মাধ্যমে। সম্প্রতি বিবিসি একটি তথ্য সম্বলিত প্রতিবেদন বের করেছে, যেখানে প্রতিবেদকরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে আমেরিকা, ব্রাজিল এর পরে করোনার পরবর্তী হটস্পট হয়ত ভারত। আমরা বিভিন্ন তথ্যের আলোতে এই প্রশ্নটারই উত্তর খুঁজব, একই পরিসংখ্যানে আলো ফেলব বিভিন্ন কোন থেকে। আগেই বলে রাখি, এই লেখা পড়ে আপনি যদি ভারতে পরিস্থিতি খুব ভালো বা খুব খারাপ, এই জাতীয় সিদ্ধান্তে আসার আশা রাখেন, তাহলে হতাশ হবেন। আমি শুধুমাত্র ভাবার চেষ্টা করছি, আপনাদেরও ভাবানোর চেষ্টা করছি। আজ প্রথম কিস্তি। ... ...
গাছ যা মাটির কাছ থেকে নেয় ফেরৎ দেয় তার চেয়েও বেশি - অক্সিজেন বানিয়ে দেয়, বাতাসের দূষণ নিয়ন্ত্রণ করে, বৃষ্টি আনে, পশুপাখিদের থাকার জন্য বিনামূল্যে বাসস্থান বানিয়ে দেয়, প্রোটিনকে রুপান্তরিত করে। একটা পঞ্চাশ বছরের গাছের এফিসিয়েন্সি মূল্য ১৫ লাখ টাকা বছরে, অঙ্ক কষে বুঝিয়েছিলেন বিখ্যাত উদ্ভিদ বিজ্ঞানী তারকনাথ দাশ । ... ...
থেমে যাও হে মৃত্যু আরও একদিন বেঁচে গেছি আমি স্নেহ ভালোবাসা ভালো, নেমন্তন্ন এলে তবে গায়ে মাখি পরিবারের তিনবেলা ভরা পেট বিড়ির আগুনের মতো দামী। ... ...
আজ থেকে বত্তিরিশ বছর আগে রঞ্জনদার লেখা পড়ি প্রথম। দেশ পত্রিকায় 'বাঙালির বাঙালোর' নামে একটি প্রবন্ধ লিখেছিলেন। বুদ্ধিতে আর উইটে ভরপুর এক অতি স্বাদু, মুচমুচে, আরবান লেখা। ভাল লেখা পড়লে কেটে রাখতাম। এ লেখাও সংগ্রহ করেছিলাম। আজও আছে। লেখকের নাম ছাড়া আর কিছুই উদ্ধার করা যায়নি। দেশ পত্রিকার আপিসে গেলে হয়ত পাওয়া যেত। তার বছর কয়েক পরে দেশে ছাড়লাম। ... ...
পথ চলতে গিয়ে যে সকল মানুষের সান্নিধ্যে এসেছি তেমন একজন কে মনে রেখে ... ...
অনেকে মনে করেন, এই যে বিচিত্র জটিল জীবদেহ এবং তার মধ্যে প্রাণ ও মনের খেলা, এ নাকি কোনও সর্বজ্ঞ ইঞ্জিনীয়ার বেশ পরিকল্পনা করে গুছিয়ে না বানালে নিজে থেকে কিছুতেই হতে পারত না । অতএব, বিবর্তন তত্ত্ব-টত্ত্ব সব ফেল, আসলে ভেতরে ভেতরে সবই ‘তাঁর’ লীলা ! চলুন তবে, একটু ঘেঁটেঘুঁটে দেখি কেসটা । ... ...
আমাদের বাড়িতে ছোটবেলায় ঠাকুমার এক বন্ধু, পাড়ারই এক বয়স্ক মহিলা, আসতেন। ঠাকুমা তাকে 'মেজদি' বলে ডাকতেন। আর আমরা সকলে, মানে ছোটরা, তাকে 'বিবিধ ভারতী' অথবা 'বিবিসি' বলতাম। সামনে না অবশ্য, পিছনেই। তিনি প্রায় প্রতিদিনই বিকেলবেলা, পাড়ার সকলের বাড়িতে যেতেন। প্রত্যেক বাড়ির জন্যেই তার বিকেল আর সন্ধ্যার খানিকটা সময় বরাদ্দ করে রাখতেন। আসতেন, চা খেতেন, গল্প করতেন, এক সময়ে চলে যেতেন। খালি হাতে ফিরতেন না। যাবার সময় তাঁর ঝুলিতে জমা পরতো একরাশ 'খবর'। ... ...
কখনও পুষ্পবৃষ্টি, আবার কখনও তাদের আবাসনে ঢুকতে না দেওয়া। অতিমারিতে চিকিৎসকদের এমন অবস্থা নিশ্চয় অনেককেই ব্যথিত করে তুলছে। তবে এই লেখাটি লিখছি একেবারে অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে। বাঙ্গালোরের এক চিকিৎসক বন্ধু জানালেন বহু পরিবারে বা আবাসনে বা বাড়িওয়ালার কাছে মহিলা চিকিৎসকরা আরও অচ্ছুৎ এই অতিমারির দিনে। তিনি হাসতে হাসতে বলেছিলেন, অতিমারি কেন; আজও চিকিৎসা করাতে এসে অনেকেই পুরুষ ডাক্তারের খোঁজ করেন, বিশেষত শল্যচিকিৎসার ক্ষেত্রে। আমাদের চিকিৎসা ক্ষেত্রে লিঙ্গবৈষম্য কোনোদিন যাবে না বোধহয়। ... ...
হিন্দি সিনেমার নায়ক নায়িকা চেনা ছিল বিশেষ গুন। সবাই পারত না, ফট ফট করে নাম বলে দেওয়া এ কি সোজা কথা? ডিডি ওয়ান আমাদের কাছে বিটিভির মতই ছিল। তাই আমরাও দুই একটা নাম জানতাম। কিন্তু আমাদের চেয়েও পাকনা কেউ আসলে অবাক হওয়া ছাড়া ভিন্ন কোন রাস্তা থাকত না। একটু ঘাইঘুই করে মেনে নিতাম। ঢাকা থেকে কোন আত্মীয় আসছে, তাদের সাথে আমরা পারি? হয়ত বাসায় তাদের ভিসিআর আছে, ততদিনে ক্যাবল লাইনও চলে গেছে ওদের ঘরে। নিত্য নতুন সিনেমার গল্প, নায়ক নায়িকার কিচ্ছা আমরা কই পাব? রবিবার করে রঙ্গোলী আর চিত্রাহার দিয়া খুব বেশি ফাইট দেওয়া যেত না। তাই মেনে নিতাম। ... ...
বিষয় এটা নয় যে, যুদ্ধ হবে কি হবে না। বিষয় হোলো 'যুদ্ধ' 'যুদ্ধ' জিগির তুলে রাখাটা কতটা প্রয়োজনীয়। যুদ্ধাস্ত্র প্রস্তুতকারক কোনো দেশের সামনেই এখন আতঙ্কবাদ আর তেমন বড় সমস্যা কিম্বা সুযোগ নয়। ... ...
অবশেষে সকল প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে হা রে রে করিয়া আসিয়া পড়িল সেই শুভদিন – সিকির বইএর উদ্বোধন। ইচ্ছেডানায়, সর্ষেদানায়। যেমন নামের ছিরি, তেমনি প্রচ্ছদের, তেমনি বিষয়বস্তুর, তেমনি তার চলনের – শা – (ইয়ে থুড়ি, গালি দেওয়া নিষেধ আছে) মানে ভালোর তো একটা লিমিট থাকে নাকি? সেই যে একজন লোক ছিল না – যে সবেতেই খুঁত ধরতে ওস্তাদ ছিল – যত ভালই হোক, কিছু না কিছু খুঁত ঠিক বার করতই – তা একবার ঈশ্বর (মানে হ্যাঁ – তিনিই আর কি) একটি মানুষকে একদম সর্বাঙ্গসুন্দর, মানে যাকে আমরা সাদা বাংলায় পারফেক্ট বলে থাকি আর কি, সেরকম এ ... ...
সেটা ছিলো একটা নিমবসন্তের কাল। মন্দমন্থরে নেমে আসা দুঃসময়ের কালো ছায়ার দিন। ভারতবর্ষ অনেক পালাবদল দেখেছে। বিংশশতক পড়ার পর এইবার প্রথম মানুষকে এতোটা নিষ্ঠুর ভবিতব্যের সম্মুখীন হতে হলো। বিশ্বযুদ্ধের চাপে পর্যুদস্ত ঔপনিবেশিক দস্যুদের কেউ যেন মরণকামড় দিতে প্ররোচিত করেছিলো। 'ভালো' ইংরেজরাও মুখোশ ছিঁড়ে মন্দ ইংরেজদের সঙ্গে একাত্মবোধ করতে শুরু করেছে। ভারতবর্ষ সাম্রাজ্যের লক্ষ্মী। সেখান থেকে নিহিত স্বার্থে আঘাত কোন হিজ ম্যাজেস্টিস অনারেবেল সাবজেক্ট সহ্য করবে। ১৯১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে ভারতসচিব মন্টেগু মহা ... ...