কথামুখ — প্রথমেই স্বীকার করে নেওয়া ভালো, আমার ইতিহাসের প্রথাগত পাঠ মাধ্যমিক অবধি। তবুও অ্যাকাডেমিক পরিসরের বাইরে নিছকই কৌতূহল থেকে গান্ধী বিষয়ক লেখাপত্তর পড়তে গিয়ে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের এই অবিসংবাদী নেতাটি সম্পর্কে যে ধারণা লাভ করেছি আমি, তা আর পাঁচজনের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চাওয়ার ইচ্ছে থেকেই এই দুরূহ কাজে হাত দেওয়া। মূল লেখা শুরু করার আগে কিছু প্রাথমিক কথা বলে নিতে চাই। প্রথমত, পড়ার ছন্দ ও গতি অব্যাহত রাখতে লেখার ফাঁকে ফাঁকে কেবলমাত্র গান্ধীর নিজের লেখাপত্র ছাড়া অন্য রেফারেন্স ... ...
এই ন্যারেটিভের প্রথম লক্ষণ হল, আফগানিস্তানকে আফগানিস্তান বানানোর জন্য পাকিস্তান, চিন এবং কখনও সখনও দুষ্টু রাশিয়াকে দায়ী করা। আর আমেরিকাকে স্রেফ একটু ব্যর্থতার জন্য সমালোচনা করা। আমেরিকা আফগানিস্তানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে লাট করেছে, সে নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই, কিন্তু উদ্দেশ্য তো ভালোই ছিল, গণতন্ত্রই তো গড়তে গিয়েছিল। মানুষকে ধর্মান্ধতা থেকে স্বাধীনতা দিয়েছিল, মেয়েদের দিয়েছিল ওড়ার আকাশ। কাইট রানার সেই পশ্চিমী স্বাধীনতার প্রতীক, মালালা হল মুখ। এখন আমেরিকার পিছিয়ে আসায় সে আকাশ ভেঙে পড়ে যাচ্ছে, এবার অ্যাসিড বৃষ্টি আসন্ন -- এরকম একটা ভাব। তো, এ ন্যারেটিভ এতই মোটাদাগের, এবং এতটাই অলীক, যে, আলাদা করে সমালোচনা করার এমনি কোনো কারণই নেই। তবু লেখা যখন হচ্ছে, তখন সংক্ষেপে, স্পষ্ট করেই বলা যাক, বাস্তবতা থেকে এসব অনেক দূরে। ইন্দোনেশিয়া থেকে আফগানিস্তান হয়ে আরব পর্যন্ত মৌলবাদীদের উত্থানে সক্রিয় ভূমিকা, মদৎ ছিল কাদের তা কোনো গোপন তথ্য নয়। আফগানিস্তানে মুজাহিদিনদের প্রশিক্ষণ, সৌদি আরবের অগাধ কনট্র্যাক্ট, এবং তালিবানদের সঙ্গে চলমান আলোচনা, এসব নিশ্চয়ই গণতন্ত্র এবং নারীর অধিকারের স্বার্থে করা হয়নি। বস্তুত জঙ্গী ইসলাম, মূলত প্রত্যক্ষভাবে পশ্চিমের তৈরি। ... ...
শক্তির কবিতা পড়লে কখনো কখনো মনে হয় ভেতরে বারুদ ঠাসা রয়েছে। অনেকে শক্তির কবিতায় জটিলতা খুঁজে পান, কেউ পান গভীর আস্তিক্য। আমার শক্তি পাঠ করে মনে হয়েছে তিনি ভীষণ প্রশ্ন করতে ভালোবাসেন, আর নিরন্তর উত্তর খুঁজে চলেন। এবং, তাঁর কবিতায় থাকে বিনির্মাণের ঝোঁক। একটি বিখ্যাত কবিতা পড়ে যা মনে হলো লিখছি। ... ...
বইয়ের রিভিউ ফেসবুকে কীভাবে লিখবেন (অথবা লিখবেন না)। ... ...
এই কন্যাটি অনর্গল ইংরাজী আর ফ্রেঞ্চ বলতে পারে , আর ফ্রেঞ্চ নিয়ে পড়ে সে পেল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা বিভাগের সর্বোচ্চ নম্বর । নিয়মগত কারণে প্রেস্টিজিয়াস ঈশান স্কলারশিপ পেল না বটে, কিন্তু তাতে তো তার কৃতিত্ব খাটো হয় না। কন্যাটির নাম লিলিয়ান পালিত, বন্ধুরা ডাকে লিল বলে। ... ...
[গ] বিজ্ঞানমনস্কতা বলতে কী বোঝায়এপর্যন্ত পড়ে কেউ কেউ প্রশ্ন করতে পারেন, বিজ্ঞান-মনস্কতার কথা বলতে বসে আমি স্রেফ ভূগোল আর ইতিহাস নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম কেন? বিজ্ঞান নিয়ে এখন অবধি একটাও কথা তো পাড়িনি। বিজ্ঞান বাদ দিয়ে বিজ্ঞান-বোধ হয় নাকি? বিজ্ঞান মানে বিশেষ জ্ঞান যা পরীক্ষা পর্যবেক্ষণ ও সিদ্ধান্তের উপর প্রতিষ্ঠিত—এই সব কথা তো বলছি না। বিজ্ঞান মানে সব কিছুকে যুক্তি তর্ক করে বিচার বিশ্লেষণ করে তবে গ্রহণ করতে হবে—সেই সব পুরনো কাসুন্দির কথা তুলছি না তো? ধান ভানতে বসে শিবের গীত গাইছি কেন? ... ...
এই উপন্যাসের শুরু জানতে গেলে সময়ের স্রোতকে বলতে হবে একটু উল্টোবাগে চলো। আইন করে নীল চাষ বন্ধ হয়েছে সদ্য সদ্য। তার কিছু আগের থেকে এ উপন্যাসের কুশীলবদের পথচলা শুরু। সুন্দরবন লাগোয়া ভবানীপুর গ্রামে রামতনু মুখার্জ্জীর পারবারিক প্রথা পুত্রবধূর প্রথম রজঃপাত হবে শ্বশুরের ভিটেতে। কিন্তু রামতনুর পুত্র শেখরের স্ত্রী আন্নার বেলায় এ নিয়ম ব্যর্থ হয়। আন্নার ঠাকুরদা যদুপতি তিতুমীরের সাথে লড়াইয়ে শহীদ হয়েছিল। রামতনুর পরিবার শেখরকে ... ...
জানলার কাছে বসন্তের নরম রোদে সার দিয়ে সাজানো আছে কাঁচের বড় বড় বয়াম। মুখ গুলো ঢাকা আছে পরিষ্কার সাদা কাপড়ের ফেট্টিতে। বয়াম গুলোকে বাইরে থেকে দেখলে বোঝা যায় না তার মধ্যে কি রসদ লুকিয়ে আছে। কিন্তু যারা এই বাড়িতে রোজ ভাত খেতে আসে তারা ঠিক জানে। ভাতের পাতে লেবু, নু্ন, লঙ্কা দেওয়ার পাশাপাশি উড়ে বামুন ধনঞ্জয় একটু করে শালপাতায় ছুঁয়ে দিয়ে যায় বয়ামের সেই লুকোনো সম্পদ। কামরাঙা, কতবেল, জলপাই কিম্বা কোনদিন পাকা তেঁতুলের আচার। নতুন কাস্টমাররা অবাক হয়ে যায়। আর পুরোনো লোকেরা ভাবে আজ ... ...
এর চেয়েও প্রলয়ঙ্কর হল গানের ব্যবহার। সহনায়িকা এখানে গুণগুণ করে গায় রবিবাবুর গান। মোটামুটি ১৮৯৫ সাল নাগাদ। কী গান? সেদিন দুজনে দুলেছিনু বনে। যে গান লেখা হবে এর বছর তিরিশেক পরে। বাঙালি হলেই একটু রবীন্দ্রনাথের পাঞ্চ দিতেই হবে, বাঙালি রবীন্দ্রনাথের জন্মের আগে থেকেই রবীন্দ্রসঙ্গীত গায়, এ তো জানা কথা। যেকোনো দিন পলাশীর যুদ্ধের দৃশ্যায়নেও সিরাজদৌল্লাকে 'ব্যর্থ প্রাণের আবর্জনা পুড়িয়ে ফেলে' গুণগুণ করতে দেখা যেতে পারে। বলিউডি ওয়েবসিরিজ/সিনেমার কারবার বলে কথা। এর আগে একটি সিরিজে দেখা গিয়েছিল বাঙালি নায়িকা সঙ্গমকালে 'শেষের কবিতা' থেকে আবৃত্তি করে। বলিউডি প্রযোজক-পরিচালকদের নির্ঘাত ধারণা ওতেই বাঙালির অর্গ্যাজম। ... ...
বাবরি মসজিদ আপনাআপনি ভেঙে পড়েছে। কেউ পরিকল্পিত ভাবে ভাঙেনি। ঠিক যেমন মনীষা বাল্মীকিকে হয়তো কেউ ধর্ষণ করেনি। বা ধর্ষণ করেছে। মনীষা এবং বিচারব্যবস্থাকে। ... ...
ইতিমধ্যেই অনেকেই বিষয়টা জেনে গিয়েছেন। অনেক চর্চাও চলছে। একটি সাক্ষাৎকারে অভিনেতা তথা এ বারের লোকসভা নির্বাচনের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী দেবের একটি মন্তব্য রীতিমতো আলোড়ন তুলেছে সর্বত্র। কি সেই মন্তব্য? সাক্ষাৎকারের সেই অংশটি তুলে দেওয়া যাক। প্রশ্ন - তার মানে আপনি বিষয়টা(সংবাদমাধ্যমের নজর এখন আরও বেশি করে তাঁর উপরে) এনজয় করছেন? দেব- এনজয়....! ইটস জাস্ট লাইক বিয়িং রেপড ইয়ার! ইউ ক্যান সাউট অর ইউ ক্যান এনজয়(হাসি...)! ব্যস, এর বেশি আর কী! এমন মন্তব্য ঘৃণ্য নিঃসন্দেহে। এ নিয়ে কোনও ... ...
সরকার না চাইলে যেমন দাঙ্গা হয়না, তেমনি রাষ্ট্র না চাইলে অপরাধী বা নিরপরাধী কেউ এনকাউন্টারে মরে না। এনকাউন্টারকে বাহবা দেয় যারা, তারা মব লিঞ্চারের সমগোত্রীয়। নিজের হাতে আইন তুলে নিতে চায়। তুচ্ছ করে দেশের সংবিধানকে, যেখানে একরকম আইনানুগ সুবিধে সবারই পাওনা একথা স্পষ্টাক্ষরে লেখা আছে। ... ...
ফেসবুকে বছর দুয়েক আগে একটা খবর পড়ে চমকে উঠেছিলাম। বিহারের একটি গ্রামে বাবা-মা তাদের দুই যমজ কন্যার একজনকে পুড়িয়ে মেরেছে আর একজনকে সুস্থ করে তোলার অভিপ্রায়ে। সন্তানদুটি দীর্ঘদিন ধরে অসুখে ভুগছিল। কিছুতেই ভালো হচ্ছিল না। শেষে তারা নিরুপায় হয়ে এক তান্ত্রিক বাবার কাছে যায়। সে পরামর্শ দেয়, ভগবান নাকি কোনো কারণে সেই বাবা-মার উপর অসন্তুষ্ট হয়ে এদের ফেরত চাইছে। তাই ওরা ভালো হচ্ছে না। হবেও না। অন্তত একজনকে ভগবানের কাছে ফেরত দিতে হবে। তাহলেই একমাত্র অপর সন্তানটি সুস্থ হয়ে উঠবে। তারপরেই একদিন বড় সড় আয়োজন ক ... ...
উপন্যাস ছাড়া নাকি প্রোলোগ লেখার নিয়ম নেই - তাই বুজুরগলোগ মাপ করবেন - এই উপন্যাসোপম আখ্যানে এই আদিপর্বটা প্রতিবারেই ঘাপলা হয়ে যায়, তাই এবারে এটা দিতেই হল। কারণ না দিলে মিস। বইমেলার লটারি এক জব্বর বস্তু - সে অভিজ্ঞতা না কহিলেই নহে। অতএব গিল্ড লটারির কথা অমৃতসমান - পূণ্যবানেরা আসুন আসুন - পিঁড়ে পেতে বসে পড়ুন। গিল্ড ফ্রী তে চা খাওয়ায়, এমন কি টপ বিস্কুটও খাওয়ায়, হাতে হাতে নিয়ে নিন বাবাসকল, মা সকল। কৃতাঞ্জলিপুটে বসে পড়ুন।ঘোষিত সময় দুপুর বারোটা। জনতা সাড়ে এগারোটা ... ...
এই যে ব্যক্তিমানুষটির যাপন বা আদর্শকে এড়িয়ে গিয়ে তাঁর লার্জার-দ্যান-লাইফ ইমেজটির অনুষঙ্গ ব্যবহার করে কিঞ্চিৎ গৌরব অর্জন, ব্যাপারটা শুধু নির্দোষ ব্যক্তিগত সংগ্রহের আত্মপ্রসাদ লাভে সীমাবদ্ধ থাকলে অতোখানি সমস্যা হত না। কিন্তু, ইদানীং ইমেজের সদব্যবহার বা অপব্যবহার করে নিজেদের অ্যাজেন্ডা গুছিয়ে নেওয়ার ধারাটি পুরোদমে চালু হয়ে গিয়েছে - আর পুরো পরিস্থিতির পাঠটাই খুব সহজেই কেমন গুলিয়ে দেওয়া যাচ্ছে। যেমন দেখুন... একদিকে গান্ধীজির হত্যাকারীর নামে মন্দির তৈরী হচ্ছে এবং আরেকদিকে গান্ধীহত্যার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত সংগঠনের সক্রিয় সদস্য হিসেবে গৌরবান্বিত প্রধানমন্ত্রী গান্ধীজির স্মৃতিসৌধে মালা দিয়ে থাকেন। গান্ধীজির প্রতিস্পর্ধী হিসেবে সর্দার প্যাটেলকে খাড়া করে ফুটেজ খাওয়ার ব্যবস্থা হয় এবং মোদি-শাহ জুটিকে প্রায় বল্লভভাই প্যাটেলের উত্তরসূরী হিসেবে প্রোজেক্ট করা হয়, যদিও প্যাটেল স্বয়ং আরএসএস-কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন এবং সাভারকারকে জেলে ঢোকানোর ব্যাপারে বদ্ধপরিকর ছিলেন, যা থেকে তাঁকে নিরস্ত করতে বিস্তর চিঠিচাপাটি লেখেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। ... ...
কিন্তু ভিতরে বসে দেখলে অবস্থা এত আশাপ্রদ কিছু নয়। আমেরিকা কাঁপছে ঠিকই, কিন্তু ভেঙে পড়ার জন্য কিনা কেউ জানেনা। বহু শহরে রাত্রিকালীন কার্ফু। প্রেসিডেন্ট ন্যাশানাল গার্ড নামাতে বলেছেন সমস্ত গভর্নরদের। না নামালে নিজেই সৈন্য নামিয়ে দেবেন বলেছেন। আমেরিকায় বসে এই মুহূর্তে সেটা শুধু ফাঁকা আওয়াজ মনে হচ্ছেনা। কারণ প্রতিবাদের চেয়েও হিংসা ছড়াচ্ছে বেশি গতিতে। তার চেয়েও বেশি দ্রুত ছড়াচ্ছে 'খবর'। ছড়াচ্ছে ফোনে, ছড়াচ্ছে সোশাল মিডিয়ায়, ছড়াচ্ছে ফিসফিসিয়ে। আমাদের পাড়ার নেটওয়ার্কে মেয়রের সাবধানবাণী জ্বলজ্বল করছে। 'নির্ভরযোগ্য' সূত্রের খবর দিয়ে লোকজন পোস্ট করছে, আজ রাতে বাসে করে দাঙ্গাবাজরা আসছে। সতর্ক থাকুন। ইঙ্গিত ব্ল্যাকলাইভসম্যাটার আর অ্যান্টিফার দিকে। ... ...
সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়ের অস্তিত্বকে ড্রয়িংরুমসাহিত্য-প্রিয় বাঙালি তাঁর জীবৎকালে বিশেষ মেনে নিতে পারেনি। সন্দীপনের ভাষা এবং বিষয়বস্তু দুটোই এর জন্য সমানভাবে দায়ী। সুনীলসাহিত্যের পাঠক সন্দীপন পড়তে গিয়ে যতিচিহ্ন থেকে যতিচিহ্নে হোঁচট খেত, রসভঙ্গ হয়ে যেত তাদের। কাউকে কাউকে বলতেও শুনেছি, "সন্দীপন আমি কেনই বা পড়ব! সহজ করে লিখতে পারাটাও সাহিত্যিকের একটা গুণ এবং সুনীল সেইদিক থেকে অনেক মহান লেখক!" সন্দীপনের মৃত্যুর পর এদিকে, তাঁর সেই ভাষা নিয়েই একচোট হইচই হয়েছিল বটে! আহাহা, সোনালী ডানার ঈগল, আহা ... ...
বৈজ্ঞানিক গবেষণা সম্পর্কে আমাদের বাঙালীদের কিছু মিথ দিয়ে শুরু করা যাক। আমাদের চোখে বৈজ্ঞানিক মানে একজন রকস্টার, একজন আত্মকেন্দ্রিক উন্নাসিক ম্যাজিসিয়ান। গল্পে, কমিক্সে তাই যখন বিজ্ঞানীর চরিত্র আসে, সে আর পাঁচটা লোকের মত নয়। পুলিশের ডিটেকটিভের সাথে শার্লক হোমসের যা তফাৎ, একজন ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানের শিক্ষকের সাথে প্রফেসর ক্যালকুলাস, ফিলিয়াস ফগ, বা প্রফেসর শঙ্কুর তফাৎ তার চেয়ে অনেক বেশী। এরা ঠিক মাটির মানুষ নয়। এরা নাহয় কল্পবিজ্ঞানের বিজ্ঞানী। কিন্তু আমরা যখন ফাইনম্যানের কথা পড়ছি, বা ডারউ ... ...
সে ছিল এক রংদার কফি হাউসের দুনিয়া– এক টেবলে ভাগাভাগি করে পাশাপাশি বসে সত্যজিৎ রায়, চিদানন্দ দাশগুপ্ত, কমলকুমার মজুমদার, মৃণাল সেন, সমর সেন, ও পাশের টেবলে গর্জন করছে সদ্য-ছাপা কৃত্তিবাস গোষ্ঠীর প্রথাচ্যুত জোয়ান কবিদের দঙ্গল! এই ধরতাইটুকু, এই দীপ্ত আধুনিকতা এবং পঞ্চাশের দশকের কলকাতার প্রেক্ষাপট বুঝে না-থাকলে আজকের কবরখানা কলকাতায় দাঁড়িয়ে সত্যজিতের শতবর্ষ-সেলিব্রেশন অর্থহীন হয়ে যায়। ... ...