গল্প পরে। আগে পটভূমি। সমুদ্র দিয়ে ঘেরা এক ভূখণ্ড ছিল—উর্বর, শ্যামল। বহু কাল আগে, বাইরের দেশ থেকে আরবি ঘোড়ায় চড়ে আসা মুসলিম ঘোড়সওয়াররা সেই দেশ দখল করেছিল। তারা খাওয়ার আগে হাত ধোয়; শুয়োর খায় না, অন্য প্রাণীর মাংসও—বিশেষ কায়দায় না মারলে খায় না; জন্মের পরে খৎনা আর মৃত্যুর পরে গোর দেওয়ার নিয়ম পালন করে; তাদের পুরুষরাও হাতে-পায়ে রঙিন হেনা পরে—যার ফলে অন্যের চোখে তাদের ‘মেয়েলি’ মনে হয়। সব মিলিয়ে—এক অদ্ভুত, বিজাতীয় সংস্কৃতি। ... ...
প্রকাশ্যেই জয়েন্ট ধরাবো, কাচ্চা পরে ঘুরে ফিরব ক্লান্তিহীন সমস্ত শহর... কানে স্তাড, এভিয়েটর, দেহ জুড়ে অসংখ্য ট্যাটু ... ...
তোত্তো-চানের নামের অর্থ ছোট্ট খুকু। তোত্তো-চানের অত্যাচারে তাকে স্কুল থেকে বের করে দিয়েছে। যদিও সেই সম্পর্কে তোত্তো-চানের বিন্দু মাত্র ধারনা নেই। মায়ের সঙ্গে নতুন স্কুলে ভর্তি হওয়ার জন্য সে চলছে। নানা বিষয়ে নানা প্রশ্ন, নানান আগ্রহ তার। স্টেশনের টিকেট চেকার থেকে শুরু করে আশেপাশের সব দিকেই তার সমান আগ্রহ। অন্যদিকে মায়ের দুশ্চিন্তা হচ্ছে নতুন স্কুলে তোত্তো-চান টিকতে পারবে কিনা তা নিয়ে। স্কুল দেখেই তোত্তো-চানের সমস্ত মনোযোগ স্কুলের দিকে চলে গেল। ও বিশ্বাসই করতে পারছিল না এমনও কোন স্কুল হতে পারে। প্ ... ...
সতেরোদিন যুদ্ধের শেষে কর্ণের মৃত্যু হলে ,অন্ততঃ সেদিনে, সাময়িক ভাবে হলেও কৌরব সেনানীদের মনোবল ভেঙে পরেছিলো। সেনারা ছুটছিলো ,পালাচ্ছিলো। আতংকিত স্ট্যাম্পিডে মারা যাচ্ছিলো মানুষ। হাতীর ধাক্কায় রথ,রথের ধাক্কায় ঘোড়া আর ঘোড়ার ধাক্কায় পদাতি চুর্ন হচ্ছিলো, আঘাত পচ্ছিলো। একা দুর্যোধন, তিনিই কুরুপক্ষের শেষ মানুষ, যিনি তখনো দাঁড়িয়ে ছিলেন। চেষ্টা করছিলেন নিজের সেনানীদের উদ্বুদ্ধ করতে। ... ...
বড় বেশী লিখে ফেলেছি। কষ্ট করে পড়ে মত জানালে ভাল লাগবে। এবং আগেই বলে রাখি এ আমার অশিক্ষিতপটু মত। আমাদের এক বন্ধু টিকিটের দাম বৃদ্ধি নিয়ে আমাদের সমালোচনার জন্য আপত্তি জানিয়েছিলেন। তিনি একটি মত দিয়েছেন। অ্যাকাডেমিতে নাটকের শো হলে কতটা খরচ বিজ্ঞাপন নিয়ে তা জানিয়েছিলেন আমাদের থিয়েট্রিক্স এর পাতায়।নাম না করেই (যেহেতু এ বিষয়ে তাঁর অনুমতি নেওয়া হয়নি তাই) তাঁর মতটা শুধু জানাচ্ছি প্রথমে। তিনি একজন দায়িত্ববান নাট্যকর্মী ও পরিচালক। তাঁর মতকে পূর্বপক্ষ হিসেবে রেখে আমার ব্যাক্তিগত মত জানাচ্ছি। এবং স ... ...
যাচ্ছি উত্তরাখণ্ডে, আমরা তিনজন। আমি, অমিতাভ দা আর তিতলি। প্ল্যান কিছুটা এইরকম – দিন দশেকের আশ্রমিক জীবন কাটানো। প্রথমে আলমোড়া, তারপর মায়াবতী, আর সবশেষে শ্যমলাতাল। প্রথম ও শেষ জায়গায় আমাদের ঠিকানা হবে রামকৃষ্ণ মিশনের দুটি আশ্রম; আর মায়াবতীতে নিশিযাপনটুকু বাদ দিলে বাকি সময়টা কাটবে অদ্বৈত আশ্রমে। ... ...
মূল গল্প : আইজ্যাক আসিমভরাইগেল গ্রহের যে দীর্ঘজীবী প্রজাতির হাতে এই গ্যালাক্সির নথিপত্র রক্ষণাবেক্ষণের ভার, সে পরম্পরায় নারন হল গিয়ে চতুর্থজন ।দুটো খাতা আছে ওনার কাছে । একটা হচ্ছে প্রকাণ্ড জাবদা খাতা, আর অন্যটা তার চেয়ে অনেকটা ছোট । গ্যালাক্সির সমস্ত বুদ্ধিমান প্রাণিদের নাম ওঠে ওই বড় খাতাটায় । আর ছোট খাতায় স্থান পায় শুধু সেই সমস্ত প্রজাতিরা যাদের সভ্যতা খানিকটা পরিণত হয়েছে, এবং সেই সুবাদে যারা গ্যালাক্টিক ফেডারেশনে স্থান পাবা ... ...
অর্কদীপ্ত কহিল, “কেন, মহারাজ?”মহারাজ প্রত্যুত্তরে যকৃৎ ও পাকস্থলীর মধ্যবর্তী কোনও অঞ্চল হইতে “ঘুঃ” শব্দ উচ্চারণ করিলেন। অর্কদীপ্ত স্তম্ভিত হইয়া গেল। এরূপ শব্দ সে কখনও শুনে নাই। বস্তুতঃ, রাজবংশে এইরূপ শব্দোচ্চারণের রীতি আছে কিনা, তাহাও তাহার অবগত নহে।মহারাজ পুনরায় পাদচারণায় রত হইলেন। অর্কদীপ্ত ক্রমেই অধৈর্য হইয়া উঠিতেছিল। মহারাজকে একই প্রশ্ন বারংবার করিলে তিনি অবধারিত বিরক্ত হইবেন; অন্যদিকে, দেবতারা কেন কুপিত, আর সে বিষয়ে তাহাকে কেন মহারাজ গুপ্তমন্ত্রণায় আহ্বান করিয়াছেন, তাহাও ... ...
এখন, মানে ঠিক এখনই, এই মুহূর্তে, এই সাবলীল দিবসাবসানে, তোমার পাশে কিছুক্ষণ বসতে ইচ্ছে করল l যদিও তুমি জানো এই ইচ্ছেটা সাময়িক l অথবা দীর্ঘমেয়াদী কোনও বিপর্যয়ের পূর্বাভাস l যেমন জানো, গন্তব্যগামী বড় রাস্তা পেরোতে গিয়ে কাল পটাং করে ছিঁড়ে যাবে প্রিয় হলুদ কালো স্লিপারের স্ট্র্যাপ l দাঁড়িয়ে পড়ব, বিড়ম্বিত হবো, মুহূর্তকাল, অথবা গোটা ব্যাপারটা খুব স্মার্টলি হ্যান্ডল করে সেফটিপিনওয়ালা চটিসমেত চড়ে বসব ওলা-মিনির সবজেটে সিটে l সবটাই নির্ভর করবে সেইদিন, সেই মুহূর্তটার ওপর l ওই কেব্লে যাওয়া, ওই স্মার্টনেস – সব ... ...
মহাশয়, আমি বিগত কয়েক বছর যাবৎ আপনাদের এই গুরুচন্ডালি নামক ওয়েব সাইট যাতাযাত শুরু করেছি। বলাই বাহুল্য, ইন্টারনেটের প্রসারের সাথে সাথে আমার মত লেখকদের যে কি পরিমাণ উপকার হয়েছে সেই বিষয়ে আশা করি আপনাদের মত সম্পাদকরা সম্যক অবহিত আছেন। এমনকি আমার এমনতর সন্দেহও এককালে হয়েছিল যে, ইন্টারনেট শুধুমাত্র আমার মত লেখকদেরই সুবিধা করে দেয় নি, আপনাদের মত সম্পাদকদের দিকেও মুখ তুলে তাকিয়ে ছিল। যাই হোক আমি যখন নানাবিধ লেখার সৃষ্টি যন্ত্রনা নিয়ে ছটফট করছি এবং বিনা পয়সায় প্রসব করার স্থান উপযুক্ত স্থান খুঁ ... ...
জর্জ অরওয়েলের খুব বিখ্যাত একটি উপন্যাস আছে অ্যানিলাম ফার্ম বলে।আমার খুব প্রিয় বই এটি।কমিউনিস্ট বিরোধী প্রোপাগান্ডার মধ্যে একদম ওপরের সারিতে রয়েছে এই বইটি।বইটিতে রূপকের মাধ্যমে একটা কমিউনিস্ট দেশের আভ্যন্তরীণ নানা সমস্যা দুর্বলতাকে তুলে ধরা হয়েছে।মূলত আক্রমণটা করা হয়েছিল সোভিয়েত ইউনিয়নকে।বইটার ন্যারেটিভের জন্য নয়, আমার ভালো লাগার কারন ফর্মটার জন্য।ম্যানর ফার্মের সব জন্তুরা একবার ওল্ড মেজর যে নাকি একটা শুয়োর ছিল তার নেতৃত্বে একটা মিটিং এ বসল।সেখানে মানুষকে তাদের শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করা হল আর মিস্ ... ...
রাত বারোটা পেরিয়ে যাওয়ার পর সোনালী পিং করল। "আধুনিক ভারতবর্ষের কোন পাঁচটা ঘটনা তোর ওপর সবচেয়ে বেশী ইমপ্যাক্ট ফেলেছে? "সোনালী কি সাংবাদিকতা ধরল? আমার ওপর সাক্ষাৎকার মক্সো করে হাত পাকাচ্ছে?আমি তানানা করি। এড়িয়ে যেতে চাই। তারপর মনে হয়, এটা একটা ছোট্ট খেলা। নিরাপদ। এর মধ্যে কোনো বিস্ফোরক নেই। নীল তিমি নেই। গৌরী লঙ্কেশ নেই ( না, গৌরী লঙ্কেশ তখন ভাবিনি, গৌরী লঙ্কেশ তো তার পরে ঘটল)।আমার নিমসুখী মধ্যবিত্ত জীবনে এমন ছোটখাটো খেলা সস্তা ও পুষ্টিকর। বিপর্যয়হীন। যে বিপর্যয় মানুষকে, লক্ষ লক্ষ মানুষক ... ...
বজ্র সারাদিনে আমার কাজ বলতে তিনটে। এক, স্টেশন রোডে অটো নিয়ে গুলতানি; দুই, সাড়ে চারটে থেকে সাড়ে ছটা সরযূবালা কলেজ থেকে স্টেশন কলেজ থেকে স্টেশন ফেরি; আর তিন, রাত সাড়ে দশটায় সূর্যসমকে স্টেশন থেকে কোলপাঁজা করে নীলবাড়ির দোতলায়। প্রথম দুটো না করলেও চলে যেত। পততি আমাকে ছ'হাজার দেয় মাসে। সূর্যসম-ও মাঝে মাঝে দু'একশো ভুল করে বার করে দেয়। ঘাড় জড়িয়ে ঝুঁকে দাঁড়ায় যাতে ওর নিখুঁত খাঁজকাটা থুতনি, যাকে চিবুক-ই বলা উচিৎ, আমার কাঁধে বিঁধতে থাকে। "এই যে তুই, বুঝলি, শালা অটো চালাস, অট ... ...
তপন এক সময় ছোট ভাইটি থেকে আস্তে আস্তে ভাই গোত্রীয়, সেখান থেকে ভাতৃপ্রতিম বন্ধু এবং আরো পরে বন্ধু্র মতনই প্রায় হয়ে গিয়েছিল। আসলে প্রতি বার দেশে ফিরে দেখছি চেনা বন্ধুরা ছড়িয়ে পড়ছে – পেটের ধান্ধায় গ্রামের বাইরে, বা সারা দিন ব্যস্ত থাকার জন্য সেই ফাঁকা মাঠে বা নিমো স্টেশনে আড্ডা আর জমে উঠছে না। ফলতঃ যারা আছে কাছে পিঠে তাদের নিয়েই কাজ চালিয়ে নিতে হত – এবং এই ভাবেই নিজের ব্যাচ- জুনিয়ার ব্যাচের গন্ডি ভেঙে আমি এক হয়ে যেতে থাকলাম তপন ও আরো অন্য তপনদের সাথে। আমাকে ওরা দাদা বলত, মনে হয় ভালোবাসতও কিছ ... ...
আর, দিল্লীর বাসস্ট্যান্ডে জড়ো হওয়া শুকনো মুখ, বান্দ্রা রেলস্টেশনে পুলিশের তাড়া খেয়ে পালিয়ে যাওয়া মানুষের চটির স্তূপ, মাঠ-ঘাট পেরিয়ে কাঁধে শিশু নিয়ে হেঁটে চলা মানুষের সারি, গ্রামে ফিরেছেন এই অপরাধে সারি দিয়ে বসে যাঁদের গায়ে ছিটিয়ে দেওয়া হচ্ছে ডিসইনফেক্ট্যান্ট…. কোল্যাটারাল ড্যামেজ… আজ না হোক কাল, করোনার বিরুদ্ধে লড়াইটায় আমরা জিতব নিশ্চিত - কিন্তু, এঁরা?? ... ...
প্রায় সকল অনার্য দেবতারাই এখন হিন্দু দেবতা। কিন্তু তাও দুয়ের মধ্যে বিস্তর ফারাক, দেবতাদের থেকে এখন সাধারণ মানুষের দূরত্ব বেড়ে উঠেছে বহুগুণ। আগে অনার্য মানুষরা দেবতাদের কাছে সরাসরি প্রার্থনা করতে পারতেন। কিন্তু এখন সে প্রার্থনার অনেক রীতি, অনেক পদ্ধতি, অনেক মন্ত্র, সে মন্ত্র আবার কোন আঞ্চলিক ভাষায় নয় – সে ভাষা দেবভাষা সংস্কৃত। আর এই সকল পূজার বিচিত্র বিধি-বিধান, বিভিন্ন দেব-দেবীর বিবিধ মন্ত্র যিনি জানেন, তিনিই পুরোহিত এবং তিনি অবশ্যই ব্রাহ্মণ। ... ...
দুনিয়া বৈষম্যে ভরা – অনেক সময়েই বোঝা যায় না কি কারণে একটা জিনিস অন্যের থেকে বেশী ফুটেজ খেয়ে চলে যায়! এই দেখুন না, ভিয়েতনামের এককালীন চেয়ারম্যান হো চি মিন-কে নিয়ে পাবলিক যেভাবে হৈ চৈ করে, ভিয়েতনামের খাবার নিয়ে কেউ সে রকম উতুপতু করে না! এটা কি ভিয়েতনামের খাবার প্রতি একপ্রকারের অবমাননা নয়? কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দেবার মত আবার যখন দেখা যায় প্রতিবেশী থাইল্যান্ডের কুজিনের নাম হো চি ... ...
কিউবা বেড়াতে গেছিলাম বলে দাবি করছিনা যে কিউবা দেখে ফেলেছি। সমাজতান্ত্রিক একটা দেশ দেখা বলতে যেরকম দেশটার মেঠো পথে পথে ঘুরে বেড়ানো বোঝায় , মানুষ কে ছুঁয়ে দেখা বোঝায় , সংস্কৃতিকে নেড়েঘেঁটে দেখা বোঝায় , বিশেষ করে এমন একটা দেশে , যেখানকার বৈশিষ্ট-ই পশ্চিমি বাজারসভ্যতার সঙ্গে ছুঁতমার্গ , তার আমি কিছুই করিনি। কিউবা বললেই আমাদের মতো আশি/নব্বই-এর দশকে বামপন্থী রাজনীতি করা বা বিশ্বাসকরা মানুষ যেমন করে রুকস্যাক কাঁধে মোটরসাইকেলে চে-গেভারার মেঠো পথে ঘুরে বেড়ানো মনে করে , সেরকম কোনো তীর আমি মারিনি। আমি ... ...
যেতে পাই না আসতে পাই নাকাঁপন লাগে তাইচুল্লীর কাছে গত গ্রীষ্মেরগল্প বলতে যাই...... নেহাৎ কিছুই নেই এখন, না তাতে আক্ষেপ করছি না। বরং জানি এই না-থাকাটা অনেক জরুরী। একটা কাদার তাল, একটা সাদা পাতা, বেশ একটা মিনিট চল্লিশের নির্ঝঞ্ঝাট অবকাশের তুলনা কমই আছে। কিছু না থাকলেই সব থাকে, মানে যা খুশি তাই। মানে একটা শব্দ, যাকে কারও পাশে বসাই, যে কোনও চিন্তা ভাবনা ঘটকালি, কাঠপুতুল ঘরজামাই যেই হোক ভালো লাগে। তার আগে অবশ্য জানলা খুলতে হয়, হাওয়া আসতে দিতে হয়, ফুটতে দিতে হয় ভাবনার সম্প ... ...
“কারণ এলিয়েনেশন এই পৃথিবীতেই হয়!” এবার নিজের জায়গা ছেড়ে জানালার কাছে গিয়ে দাঁড়ায় অপরাজিতা, “আপনি যেমন করেছেন আপনার গপ্পে…”“আমি এলিয়েনেশন করেছি?”“করেননি? রাজপুত্র থেকে কেরাণীপুত্রের বৃত্তের বাইরে সবাইকে?” ... ...