ঘটনাটা ঘটবে আজ থেকে ঠিক দেড়শো বছর পরে। ২১৬৬ সালের এপ্রিল মাসে। ঠিক কত তারিখে ঘটবে তা এখন জানা যায় না, তবে ঘটবে অবশ্যই।পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর আর বিশুদ্ধ শহরগুলোর একটাতে বিশাল লম্বা, বুলেটপ্রুফ গাড়িটার থেকে নেমে লক্ষ লক্ষ কালো মাথাগুলোর দিকে চেয়ে হাত নাড়বেন পৃথিবীপ্রধান। তুমুল হর্ষধ্বনি উঠবে সঙ্গে সঙ্গেই। প্রবল হাততালির শব্দে দায় হবে কান পাতা। টিভি ক্যামেরাগুলো প্যান আর জুম করে করে তুলবে জনতার এই উচ্ছ্বসিত কলরবের দৃশ্য।তারপর পৃথিবীপ্রধান গিয়ে দাঁড়াবেন ডায়াসে। ধীরে ধীরে নিশ্চুপ হবে চারিদিক ... ...
এখানে সবুজের ছড়াছড়ি। সবুজ মাঠের শেষে, সবুজ টিলার দল মাথা তুলতে তুলতে মিশে গেছে ধোঁয়ার মতো দলমা পাহাড়ে। আগে ছিল ঘন জঙ্গল। তখন নাম ছিল জারাগোড়া। হাতিদের দেশ। মাঝে মাঝে কয়েক ঘর আদিবাসীর ঝুপড়ি। খানিকটা চাষের জমি। আর তাদের ঘিরে ঘন শালের বন। তারপর জানা গেল এ জমিতে সোনা আছে। না, না সোনার থেকেও দামী জিনিস আছে মাটির তলায়। দলে দলে বাবুরা এলো। বলল, এ সব জমি সরকারের। সরকার যখন ইচ্ছে, নিজের দরকারে নিয়ে নিতে পারে। আইন নাকি তাই বলে। সে নিয়মও নাকি আজকের নয়। সেই প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে চাণক্য বলে কে এক মহাপণ্ডি ... ...
কুষ্টিয়া হাউজিংয়ের দূরত্ব বেড়ে গিয়েছে, এখন। যে কোনও সময়ে ডায়াল করার মতই আজও অবশ্য মনে রয়ে গেছে দেখছি ৪৩৮৩৭৪। তার পর এর আগে ২ লাগবে, তার আগে আবার কী যেন! ... ...
(গত ৫ জুন পরিবেশ দিবস উপলক্ষে এই এই সিরিজের প্রথম পর্বটি লিখেছিলাম। সিরিজের বিষয়বস্তু হিসেবে প্লাস্টিককেই চিহ্নিত করি কারণ প্লাস্টিক দূষনই ছিল এই পরিবেশ দিবসের প্রধান ফোকাস। এরই ধারাবাহিকতায় এখন দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে হাজির হচ্ছি। যাই হোক, গত গত পর্বের লেখাটায় আমার শেষ কথাটি ছিল "গবেষণা এও বলছে যে, যদি এর প্রতিকারের জন্য কিছুই না করা হয়, বা এখন যা চলছে তেমনি যদি চলতে থাকে, তাহলে সামনের ১০ বছরের মধ্যে মহাসাগরে প্লাস্টিকের পরিমাণ তিনগুণ বৃদ্ধি পাবে, আর ২০৫০ সালে এই প্লাস্টিকের ভর সকল সামুদ্রিক মাছের ভর ... ...
আপনাকে এই জানা আমার ফুরোবে নাসেই জানারই সঙ্গে সঙ্গে তোমায় চেনা।উপরের লাইন দুটো আমাদের সকলেরই চেনা। আমরা একটু পালটে নিয়ে বলতে পারি, তোমাকে চেনা আমার ফুরোবে না, আর সেই চেনার নিরন্তর পথ দিয়ে হাঁটার সময়ে আমি নিজেকেও চিনতে থাকবো। আমি শিক্ষক, তুমি ছাত্র। কোন দার্শনিক আত্মজ্ঞানের কথা এখানে বলা হচ্ছে না। বলা হচ্ছে নিছক নিজের মনের দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করা আমি আমার ছাত্রকে নিয়ে যা ভাবছি তা করছি কিনা, যেটা ভাবছি সেটার সম্পর্কে আমি নিশ্চিত কিনা, আমার ভাবার মধ্যে সততা আছে কিনা, স ... ...
সোনার মতো উজ্জ্বল হলুদ আঙ্গুলে লাল টুকটুকে চাটনী বিন্দু বিন্দু লেগে আছে যেন মাদার ফুলের পাপড়ির ছেঁড়া কুচি। অঞ্জনের চোখ ফিরতে চায় না। এই চাটনি অন্যরকম, টকটকে লাল লঙ্কার ঝালে রান্না শুঁটকিমাছের শুকনো শুকনো একটা আইটেম, পাহাড়ী পথের হোটেল গুলোর ডেলিকেসি ,অন্য সব খাবারের সঙ্গে ফ্রী, যার যেটুকু চাই। অঞ্জন অনিচ্ছাসত্বেও চোখ ফিরিয়ে নিলো। ভদ্রতা তার মজ্জায়। ডেভিড আর একটু চেয়ে নিল। সাম্পারীকে হোটেলের বৃদ্ধ পরিবেষক সাধলো -- নিতায়নি গো মাই একটু, ঘাড় নেড়ে সম্মতি জানালো লাল সবুজ পাছড়া আর সবুজ কাঁচের ... ...
এই ফুটবলের বাজারে আমি লোভে পড়ে একটা সিনেমা দেখে ফেললাম। কলকাতার সিনেমাজগতের পুরাযুগ নিয়ে সিনেমা, জিনিসটায় আমার আগ্রহ আছে, সেই লোভে। সিনেমার নাম কলা। ইংরিজিতে QALA। তাই থেকেই বোঝা উচিত ছিল কেসটা। কিন্তু আমি আবার ঠেকে শিখি। খুলে দেখি একেবারে কাঁচQALA । যেমন মিস্টিসিজম, তেমনই ডার্ক, কিন্তু সিনেমাটা কীসের প্রেক্ষাপটে, সুইজারল্যান্ড না কলকাতা, বোঝার উপায় নেই (ভাষা হিন্দি, তাতে অসুবিধে নেই, কারণ,হিন্দি সিনেমার প্রেমিক-প্রেমিকাদের প্রায়ই সুইজারল্যান্ডে দেখা যায়।) কলকাতার সিনেমা নিয়ে ছবি, কিন্তু সারাক্ষণ দেখে গেলাম সিমলারও উত্তরে কোন এক জায়গায় ধাঁইধপাধপ বরফ পড়ছে। কেদার-বদ্রীতেও সারাবছর বরফ পড়েনা, আলাস্কাতেও না, কিন্তু এখানে পড়ে, হয়তো উত্তরমেরুর কাছাকাছি, কে জানে। সেখানে এক সঙ্গীতশিল্পী মহিলা তাঁর মেয়ের উপর হেবি অত্যাচার করেন, আর বেপাড়ার একটা পাঞ্জাবি ছেলেকে ধরে এনে গান শেখান। সেই জাল ভেদ করে মেয়ে একদিন কলকাতায় গানের জগতে সুপারস্টার হয়, এই হল গপ্পের একটা অংশ। শুরুর পাঁচ মিনিটেই এটা বুঝতে পারবেন, কাজেই স্পয়লার নয়। ... ...
আমাদের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় শক্তি ছিল আমাদের দর্শক। নানা কারণে আমাদের সেই শক্তি এখন বড় শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশের বাহিরেও আমাদের সমর্থকরা এখন সবচেয়ে অশিক্ষিত খারাপ সমর্থক হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। আমরা আমাদের নিজেদের খেলোয়াড়দেরও ছাড় দেই না। ট্রল করতে করতে, মজা নিতে নিতে ক্রিকেটাররা যে মানুষ তা ভুলে যাই। ক্রিকেটারদের তো আছেই তাদের পরিবারকেও ছাড় দেই না। আমরা আশা করি আমরা যা ইচ্ছা বলব করব তারা খুব পেশাদার ভঙ্গিতে সব মেনে নিয়ে খেলে যাবে। না, আমরা এখন ওই পর্যায়ে যেতে পারি নাই। আমাদের ক্রিকেটের ইতিহাস খুব বেশিদিনের না। আমাদের বর্তমান প্রজন্মের আগের প্রজন্মই তো এদেরকে শিখিয়েছে? ... ...
উনিশশো একাত্তর সনের ৬ই মে, সেই মানিককিশোর সত্তর বছর বয়সে জীবন্ত বলি হলেন বলিহার বাজারের সেই চালাঘরটিতে, যেখানে টিনের চাল বেয়ে নামত সুরের বৃষ্টি, ফোঁটায় ফোঁটায় ভিজিয়ে দিত চালার তলায় আশ্রয় নেয়া ভাগ্যবান শ্রোতাদের! হয়ত বড় ভালবাসতেন চালাঘরটিকে, সে কারণেই সেই চালাঘরের যূপকাষ্ঠেই অগ্নিস্নান করে সেদিন অমরলোকে পৌঁছে গিয়েছিলেন শহীদ মানিককিশোর, সপ্তাকাশ জুড়ে তখন বেজেই চলছিল কোন ধ্রুপদী রাগ! ... ...
আরাস্তু জাকিয়া বর্তমানে দিল্লি নিবাসী। একটি স্টার্ট-আপ সংস্থার সহ-প্রতিষ্ঠাতা। সম্প্রতি ফেসবুকে তিনি শেয়ার করেছিলেন তাঁর জীবনের গল্প। আহমেদাবাদে একজন মুসলমান হিসেবে বড় হয়ে ওঠার গল্প, প্রথমে ১৯৯২, তার পরে ২০০২এর দাঙ্গা নিজের চোখে দেখার গল্প। তাঁর অনুমতিক্রমে, আমি লেখাটির বাংলা অনুবাদ তুলে দিলাম আমার ব্লগে ... ...
পৌরাণিক উপাখ্যান আছে, মহামুনি অগস্ত্যের শিষ্য ছিলেন বিন্ধ্যপর্বত। একবার সূর্যের ওপর রাগ করে বিন্ধ্যপর্বত সূর্যের গতিরোধ করার জন্যে খুব বেড়ে উঠছিলেন। সে সময় বিন্ধ্যের বৃদ্ধি কমাতে অগস্ত্যমুনি বিন্ধ্য পার হয়ে দক্ষিণ ভারত যাওয়ার মনস্থ করলেন। মহামুনি অগস্ত্য বিন্ধ্যপর্বতের সামনে দাঁড়াতেই, মহামুনিকে প্রণাম করতে বিন্ধ্য যখন মাথা নত করলেন, মহামুনি বললেন, আমি যতদিন না ফিরে আসি, এভাবেই মাথা নত করে থাকো। অগস্ত্য তারপরে দক্ষিণভারত থেকে আর ফেরেননি, বিন্ধ্যপর্বত আজও মাথা নত করে আছে এবং সূর্যেরও প্রদক্ষিণ পথ আজও রুদ্ধ হয়নি। কাহিনী যাই হোক, এর সার কথা হল মহামুনি অগস্ত্য দুর্গম বিন্ধ্যপর্বত পার হয়ে দক্ষিণ ভারতে যেতে পেরেছিলেন এবং তাঁর দেখানো পথে, পরবর্তী উত্তরভারতের রাজা, ঋষি এবং উপনিবেশ-স্থাপনকারী মানুষেরা, উত্তরের ভাষা, ধর্ম, সংস্কৃতি নিয়ে দক্ষিণে যাওয়া আসা শুরু করেছিলেন। ... ...
সিপিএম, কংগ্রেস, তৃণমূল- এই সবকিছুর বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা একজন ব্যক্তি মানুষ হিসাবে এদের কারও হয়েই ভোট চাওয়ার প্রবৃত্তি হয় না। বাংলায় কংগ্রেস আমলের কথা ছেড়েই দেওয়া যাক। কেন্দ্রেও ইউপিএ সরকার থাকাকালীন এমন বহু কাজ হয়েছে যা সমর্থনযোগ্য নয়। বাংলায় বাম আমলে বহু নিন্দনীয় ঘটনা ঘটেছে। মরিচঝাঁপি, বানতলা সিঙ্গুর, নন্দীগ্রামে গণআন্দোলনে শুধু গুলি চালনা নয়; "শিল্পায়ন এবং কর্মসংস্থান"-র যে মডেল সিপিএম সমর্থকরা এখনও দিয়ে থাকেন; তার সঙ্গেও বিন্দুমাত্র একমত নই। তৃণমূল সরকারের আমলেও লাগামছাড়া দুর্নীতি হয়েছে। শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। গণআন্দোলনের কর্মীদের ওপরে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস হয়েছে। তাই এদের কারও হয়েই ভোট চাওয়ার প্রবৃত্তি নেই। কিন্তু বিজেপিকে ভোটের ময়দানে আটকানোর প্রবৃত্তি আছে। কারণ যাই হয়ে যাক না কেন; সিপিএম, কংগ্রেস বা তৃণমূল- এরা কেউ ফ্যাসিস্ট নয়। ... ...
সব ব্যাপারে আদালতই শেষ কথা বলবে, এ অতি বিপজ্জনক ব্যাপার। আদালত যখন সমকামিতার পক্ষে রায় দেয়, তখন আমরা নাচি, যখন অযোধ্যা-বিবাদে একরকম করে বিজেপির পক্ষে রায় দেয়, তখন আমরা গেল-গেল রব তুলি, কিন্তু কথা হল, এগুলো আদৌ আদালতের বিচার্য কেন? আইন প্রণয়ন করা, সমাজকে সঠিক (অথবা বেঠিক) পথে চালনা করা, মানুষের বোরখা পরে ঘোরার অধিকার আছে, নাকি ন্যাংটো হয়ে, খুনে মৃত্যুদন্ড থাকবে না নয়, এগুলো দেখা আদৌ আদালতের কাজ নয়। ... ...
একমাস আগের কথা।তারিখটা স্পষ্ট মনে আছে - মার্চের ২৬। সেদিন ঠিক বেলা একটার সময় আমার কাছে একটা ফোন এসেছিল।- ওয়াচ অ্যান্ড সিকিউরিটিজ? বিলাসপুর, লিংক রোড?-জী হ্যাঁ, বোল রহা হুঁ। - মিঃ কোসলে? ডায়রেক্টর?- না, আমি ওঁর অ্যাসিসট্যান্ট বিশ্বাস বলছি।উনি একটা কাজে একটু বাইরে গেহেন। কাল রাত্তিরে ফিরবেন।-- সৌরভ? সৌরভ বিশ্বাস? বাবুমোশায়? জাস্ট দ্য ম্যান আই ওয়ান্ট!--জী হ্যাঁ, আপ কৌন?-- কাজের কথাটা আগে শুনে নিন। আগামীকাল আপনাকে ইন্দোর এক্সপ্রেসে বুড়ার যেতে হবে। বুড়ার হোল জবলপুর লাইনে শাহডোলের আগের স্টেশন। পরশুদিন বিকেলে একই ট্রেনে করে ফেরতের ব্যবস্থা। টিকিট, অন্য খরচা এবং কিছু অ্যাডভান্স একটু পরে আজ রাত্তির আটটার মধ্যে আপনাদের ... ...
হ্যাঁ, কথা আছে।অনেকদিন কোনো কথা না থেকে থেকেই ‘ইতিহাস গড়ে ফেলেছেন বাংলার মানুষ’। আর দিনে দিনে নিঃশব্দে ঝরে গেছে আমাদের শিরদাঁড়াগুলো।এখন ‘মেয়েটির বাবা’ কী বলল তাই নিয়ে বহু মানুষের বহু চিন্তা বিশ্লেষণ। আর দুদিন আগে তিনি যা বলেছিলেন, সেইসব কথা? শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনেছিল যে ছাত্রী, যে অভিযোগের ভিত্তিতে দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবী তুলতে গিয়ে মার খেল তার সহপাঠীরা, সেই অভিযোগ? সেই মারগুলো?কোলকাতার রাজপথে লক্ষ পায়ের দাপ দেখে তড়িঘড়ি একটা শিক্ষামস্তান সঙ্গে নিয়ে শিক্ষামন্ত ... ...
মগলাকে দেখে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। যাতে সানথাল, দেখতে শুনতেও মানুষ। কিন্তু মানুষ না। ওর পূর্বপুরুষরা ছিল ম্যাস্টোডন। হাতিদের সঙ্গেই ওঠাবসা। হাতিদের মতই দিনে চার ঘন্টা ঘুমোয়, কুড়ি ঘন্টা দাঁত নাড়ে। অবশ্য, শুধু হাতি নে, জঙ্গল আর জঙ্গলের সমস্ত প্রাণীর জন্যই মন কাঁদে মগলার। জানোয়ার জঙ্গল ছাড়া কিছুই ভাবতে পারে না। অথচ, এই মগলাকেই কিনা মালখানকে মারতে সুপারি দিয়েছে মোলাম সিং! কে মালখান? আগে মালখানের কথাই বলি। মালখান এখন জঙ্গলের বস। ওর সঙ্গে রাকা, সলোমন, হুরিয়া ----- আরও তিন মাস্তান। ... ...
স্মৃতির পটে জীবনের ছবি যে আঁকে সে শুধু রঙ তুলি বুলিয়ে ছবিই আঁকে, অবিকল নকল করা তার কাজ নয়। আগেরটা পরে, পরেরটা পরে সাজাতে তার একটুও বাঁধেনা। আরো অনেক সত্যের মধ্যে রবীন্দ্রনাথ তাঁর জীবনস্মৃতির আরম্ভেই এই ধ্রুব সত্য মনে করিয়ে দিয়েছেন। কথাটা মনে রেখেই শৈশবস্মৃতির প্রথম ছায়া -আভাসে সাঁতার কাটতে চেষ্টা করছি। তখন কি আর সন তারিখ জানি? নিজের বয়স কতো জানি? উঁহু, না, কিছুই বুঝি না। এখন একটু হিসেব করি, মনে হয় তিন বছর কি সাড়ে তিন বছর হবে হয়তো। ঝাপসা মনে পড়ে বিজন দুপুরে কি ঘুমছুট শেষরাতে। ... ...
জনা পনেরো ডাক্তার-নার্স-আয়া-ওয়ার্ডবয়ের 'টিপিন' মাখতেন হাসিমুখে। একেবারে শেষ পর্যায়ে তিনি বাড়ি থেকে নিয়ে আসা 'কিছুমিছু' আচারের তেল আর পেটমোটা লংকার অন্তর্বাসী মশলা (উনি হেসে বলতেন "মশল্লা") মেশাতেন - অতো জোড়া উৎসুক, খিদে খিদে দৃষ্টির সামনে। তারপর... যাহ্ , লঙ্কা আনা হয়নি ! ... ...
সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে অমলবাবু বুঝলেন মনটা বেশ ফুরফুরে লাগছে। আসলে এটা কাল রাতের রেশ। রাত তখন প্রায় বারোটা। হাই উঠে গেছে গোটা পাঁচেক, ঘুম ঘুম পাচ্ছে। এমন সময় এল। কবিতার লাইন। কবিতা যারা লেখেন তাঁরা জানেন, কবিতা খুব মারাত্মক জিনিস। একবার এলে, যতক্ষণ না লিখে ফেলা হচ্ছে, পেটের ভেতরটা গুড়গুড় করে, মন আনচান। লিখে ফেললে তবে শান্তি। অমলবাবুও দেরি করেন নি। স্ত্রী সুরমা ততক্ষণে ঘুমিয়ে পড়েছেন। চট করে কবিতাটা লিখে ফেলেছিলেন। সঙ্গে সঙ্গে ফেসবুকে পোস্ট। কিন্তু কটা লাইক পড়ল সেটা দেখার জন্য বেশিক্ষণ জেগে থাকতে পারেন নি অমলবাবু। ঘুমে চোখ জড়িয়ে এসেছিল। কটা লাইক পড়ল সেটা দেখার জন্য আজ একটু তাড়াতাড়িই ঘুম থেকে উঠে পড়েছেন। ... ...