তাঁরা সাধারণ মানুষকে বিশ্বাস করাতে সক্ষম হলেন, পুণ্য ও পাপ এবং তার ফলে প্রাপ্য পুরষ্কার ও তিরষ্কারের ধারণা। তাঁদের উচ্চারিত প্রত্যয়ী মন্ত্রের ব্যাখ্যায়, কথকতায়, ধর্মকথায় কল্পনার জগতের দুয়ার খুলে গেছিল সাধারণ মানুষের মনে। তাঁরা আশ্চর্য হয়েছিলেন, অভিভূত হয়েছিলেন, এবং বিশ্বস্ত হয়েছিলেন। আমাদের ছোটবেলাতেও গ্রামের বাড়িতে দেখেছি, বাঁধানো ফ্রেমে আঁকা নরকভোগের রঙিন চিত্রপট। সেখানে যমদূতেরা চোরদের হাত কাটে, পরকীয়া প্রেমিক-প্রেমিকাদের লোহার কাঁটাওয়ালা স্তম্ভ জড়িয়ে শুয়ে থাকতে হয়, ফুটন্ত তেলে পাপীদের ভাজতে ভাজতে (deep fry) যমদূতরা মাথায় ড্যাঙস মারে, ইত্যাদি। ... ...
অণুগল্প # ১-‘এই লীলা, কাল ফোন করলি না তো ! রাতের দিকে একটা এস এম এস করলাম তোকে। পেন্ডিং দেখালো। মোবাইল অফ করে রেখেছিলি না কি?’-‘হুঁ। শুয়ে পড়েছিলাম আধখানা ভ্যালিয়াম খেয়ে।‘-‘মাথা ধরেছিল?’-‘সে তো আছেই। নিত্য সঙ্গী। আসলে কাল ও এমন অসভ্যতা করছিল-অসভ্যতাই আর কি বলব-‘-‘কেন কি হয়েছে?’-‘কিছুই না। কোনো ইস্যুই নয়। কোথায় কোন লকে চাবি লাগছে না, কোথায় কোন ক্যাবিনেটের হ্যান্ডেল খসে পড়ে গেছে, আমি তুলে রাখি নি তাই হারিয়ে গেছে-এই সব ফালতু ব্যাপার নিয়ে এমন বিশ্রী ভাবে বলল যে তু ... ...
অতলান্তিকের যুদ্ধ********************************৩ সেপ্টেম্বর,১৯৩৯, সকাল এগারোটা। বলা যেতে পারে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হলো। ব্রিটেইন আর ফ্রান্স, দুই দেশই একসাথে জর্মানীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করলেন। আর সেই ঘোষনার ঠিক আট ঘন্টা পরেই প্রথম সাবমেরিন আক্রমন ঘটলো। পরিষ্কার নিষেধ থাকা স্বত্তেও এক জার্মান ইউ বোট এক ব্রিটীশ যাত্রীবাহী জাহাজ "এথেনিয়া"কে টর্পেডো মেরে ডুবিয়ে দিলো। জার্মানীর মাথা হেঁট। যুদ্ধ তখনো বিবৃতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ। আর তারই মধ্যে প্রথম আক্রমনই এক প্যা ... ...
স্টার্ট-আপ সম্বন্ধে দুচার কথা যা আমি জানি। আমি স্টার্ট-আপ কোম্পানিতে কাজ করছি ১৯৯৮ সাল থেকে। সিলিকন ভ্যালিতে। সময়ের একটা আন্দাজ দিতে বলি - গুগুল তখনও শুধু সিলিকন ভ্যালির আনাচে-কানাচে, ফেসবুকের নামগন্ধ নেই, ইয়াহুর বয়েস বছর চারেক, অ্যামাজনেরও বেশি দিন হয়নি। অতএব স্টার্ট-আপ সম্বন্ধে গভীর বাণী দেবার সবরকমের হক ও জ্ঞানভান্ডার আমার আছে।প্রথম যে স্টার্ট-আপে ঢুকেছিলাম সে একেবারে ওয়ান-পাইস ফাদার-মাদার। একতলার করিডোরের দুপাশে তিনটে মাঝারি সাইজের ঘরে গাদাগাদি করে জনা-পঁচিশ লোক। তারপরে লোক বাড়লে আরেকটা ... ...
কিছুদিন আগে ফেসবুকে একটা পোষ্ট করেছিলাম “সাচ্ ইজ লাইফ” বলে। কেন করেছিলাম সেটা ঠিক ব্যখ্যা করে বলতে পারব না – আসলে গত দুই বছরে ব্যক্তিগত ভাবে যা কিছুর মধ্যে দিয়ে গেছি তাতে করে কখনও কখনও মনে হয়েছে যে হয়ত এমন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি মানুষ চট করে হয় না। আমি যেন নিজেই বুঝতে পারছিলাম না, নিজে যা ভাবছি সেটাই কি স্বাভাবিক ভাবনা? সাধারণ মানুষ কি এমন ভাবেই ভাবে – নাকি পরিস্থিতি এমন কোণার দিকে ঠেলে দিয়েছে যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করছে আমার ভাবনা! সর্বান্তকরণে আশা করব যে কাউকে যেন আমার মতন ঘটনার সম্মুখিন হতে না হ ... ...
কুলদা রায়দেশ থেকে পালিয়েই এসেছিলাম। সে সময়ে মনে হয়েছিল পালিয়ে এলেই বাঁচা যাবে। জীবনে বেঁচে থাকাটাই জরুরী। মা এসেছিল তার মাস খানেক আগে। কিছু দিন থেকে গিয়েছে আমার কাছে। আমার শার্টের একটা বোতাম লাগিয়েছে। দুএকবার মাথায় তেল ডলে দিয়েছে। পাখা দিয়ে মাঝে মধ্যে বাতাসও করেছে ঘুমের মধ্যে। আমার মেয়েদের চোখে কাজল টেনেছে। তারপর নিয়ে গেছে বাইরে—বগুড়া রোডের পাশে যে চার্চবাড়িটি রয়েছে, তার পুকুর পাড়ে হেঁটে গিয়ে তুলে এনেছে হেলেঞ্চা শাক। তিঁত পুঁটি মাছ দিয়ে রেঁধেছে। আমার বড় মেয়ে খেয ... ...
কষ্টে আছি। গতকাল বিকেল থেকে জ্বর। কেউ কথা বলার নেই। বা কথা বলার বিস্তর মানুষ আছেন। কিন্তু আমি সোসালাইজেশনে ব্যর্থ হচ্ছি ইদানিং। সোশাল মিডিয়া ভালো লাগছে না। চারপাশের মানুষজনও না। বইয়ের কাজ চলছে একটা। হয়ত বেরোবে। হয়ত বেরোবে না। জানিনা। আমার বাড়ির কেউ সবিশেষ জানেন না আমার লেখালিখি বিষয়ে। কেউ আগ্রহী নন বড় একটা। অনেকদিন হল একা একা লিখি। কাউকে পড়াই বা পড়াই না। সেসব ছাপা হয় অথবা হয়না। টাকা পাই কিংবা পাইনা। মাঝে মাঝে মনে হয় লেখা বন্ধ করলে ভালো হত। মা বলেছিল- একটা ফ্ল্যাট একটা চাকরি একটা বাচ্চা, ব্যস আমি ... ...
কুলদা রায়বাড়িটির নাম চিলেকোঠা। চারিদিকে বাগান। মাঝখানে ছোটো বাংলো ধরনের টিনের ঘর। কোনো চিলেকোঠা নেই এই ঘরটিতে। মধ্য পাড়ার প্রবীণ মোক্তার অসিতবরণ সরকার মফস্বলের ইতিহাস নামে একটি রচনায় লিখেছেন—এই এলাকায় গ্রেগরী চিলম্যান নামে এক ইংরেজ এসেছিলেন ১৮০৩ সালে। শুরু করেছিলেন নীলচাষ। এই নীলচাষের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে একটি মাঠের নাম আজও জারী আছে। নাম–নীলার মাঠ। এই নীলার মাঠে প্রতিবছর পহেলা বৈশাখে ঘোড়-দৌঁড় হয়। অসিতবরণ বাবু আরও লিখেছেন—এই চিলম্যান সাহেব মধুমতী নদীর তীরে পাঁচ বিঘা জমির উপরে এই ... ...
আমি খুঁজে দেখার চেষ্টা করেছিলাম পৃথিবীর কোন দেশের টুরিষ্টদের সবচেয়ে বদনাম – কিন্তু সমস্যা হল এই র্যাঙ্কিং এর তো কোন নির্দিষ্ট নিয়ম নেই, আর তা ছাড়া নিজের দেশকে কে আর খারাপ বলতে চায়! তবুও দেখেছিলাম যে শিষ্টাচার বিহীন টুরিষ্ট কিছু কিছু দেশের নামের পুনরাবৃত্তি হয়েছে – যেমন ইংল্যান্ডের ছেলে ছোকরাদের। যারা ফুটবল নিয়ে মাথা ঘামান তাঁরা জানেন যে সেই ফুটবল ফলো করতে গিয়ে নানা দেশে ঘুরে এই ভাবে এরা হুজ্জুত বাধিয়ে বেড়ায়! এদের তো ‘ফুটবল হুলিগান’ ও বলা হয়। এছাড়া আছে রাশিয়ান টুরুষ্ট – এদের ব্যবহার নাকি খুব খারাপ – জার্মান টুরিষ্টদের নাম আছে, অষ্ট্রেলিয়ানদের নাম আছে তালিকায় – চাইনীজ টুরিষ্টরা তো আছেই - এবং বেশ কিছু তালিকায় ভারতীয় টুরিষ্টদের নামও আছে শিষ্টাচার মেনে চলে না বলে। শুনতে খারাপ লাগলেও এটাই সত্যি। ... ...
মানুষের ভীতি এবং যৌন উত্তেজনার মধ্যে কোন সম্পর্ক আদৌ আছে কিনা ডোনাল্ড ডাটন এবং আর্থার আরন নামে দুই গবেষক তা তলিয়ে দেখার চেষ্টা করছিলেন! তাঁরা অনুমান খাড়া করেছিলেন এই মর্ম যে ভীতি বা উদ্বেগ জনিত অবস্থা যৌন উত্তেজনা বাড়াবে কারণ সেই অবস্থায় আমাদের মস্তিষ্ক ভুলভাবে সনাক্ত করবে যৌন উত্তেজনা জাগরণের মূল কারণ (“মিস-অ্যাট্রিবিউশন অফ আর্যাউজাল”)। এই থিওরী অনুযায়ী, যদি আমরা এমন কোন অবস্থার মধ্যে থাকি যা আমাদের মধ্যে খুব বেশী আবেগ জাগিয়ে তোলে, তাহলে আমরা বেশীর ভাগ সময় ভুল ভাবে আবেগের কারণ হিসাবে চিহ্নিত করি আমাদের সাথে থাকা মানুষটার সাথে – আসলে যেখানে আমাদের চালিত করছে সেই মুহুর্তে কোন পরিস্থিতিতে আছি মূলত সেটাই। এ তো গেল হাইপোথিসিস – কিন্তু এটা প্রমাণ করা যাবে কিভাবে? ভ্যাঙ্কুভার শহরের কাছে মানুষ পারাপারের ক্যাপিলানো ঝুলন্ত ব্রীজ। যাঁরা কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়ার দিকে গেছেন তাঁরা জানেন যে ওখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য খুব সুন্দর। আর এই ব্রীজটা ঠিক বাণিজ্যিক ব্রীজ নয় বরং খুব সুন্দর প্রাকৃতিক জায়গার মধ্যে বেড়াতে গিয়ে ব্যবহার করার জুলন্ত সেতুর মত – প্রায় ৪৫০ ফুট মত লম্বা – পুরোটাই কাঠ এবং দড়ি দিয়ে তৈরী, এবং খুব সরু। বুঝতেই পারছেন কাঠের পাটাতনের উপর দিয়ে এই ব্রীজ পেরোবার সময় বেশ ক্যাঁচ ক্যাঁচ শব্দ হত – আর পায়ের নীচে দেখা যেত প্রায় ২৫ তলা বাড়ির সমান গভীর পাথুরে খাদ। হাওয়া দিলে বা জোরে চলার চেষ্টা করলে সেই কাঠের সেতু দুলত – এবং কিছু এদিক ওদিক হয়ে গেলে নীচে পাথরের উপর পরে গেলেই ব্যাস গল্প খতম! ১৯৭৪ সালের কোন এক দিন - এক খুব সুন্দরী মহিলা সেই ঝুলন্ত সেতুর উপর যে সমস্ত একাকী যুবক পারাপার করছিল তাদের কাছে (এক সময়ে একজনের কাছে) এগিয়ে, একহাত দিয়ে সেই ঝুলন্ত দুলতে থাকা ব্রীজের ধারের দড়ি ধরে নিজের ব্যালেন্স রাখার চেষ্টা করতে করতে মিষ্টি তাকালো - ... ...
আরও একবার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি আমাদের এই চিরন্তন প্রশ্নটার সামনে এনে দাঁড় করিয়েছে -- আমরা কিভাবে শিখি, কিভাবে চিন্তা করি। আলফা গো জিরো সেই দিক থেকে টেকনোক্র্যাট দের বহুদিনের স্বপ্ন পূরণ।দাবার শুধু নিয়মগুলো বলে দেওয়ার পর মাত্র ৪ ঘণ্টায় শুধু নিজেই নিজের সাথে খেলে দাবা খেলা শিখে আজকের সবচেয়ে শক্তিশালী ইঞ্জিন স্টকফিশের সাথে ১০০টা ম্যাচে ২৮টা জিতেছে, একটাও হারেনি আর ৭২টা ড্র, অবিশ্বাস্য। হ্যাঁ, স্টকফিশকে তার ওপেনিং লাইব্রেরি ব্যবহার করতে দেওয়া হয়নি, ঠিকই। কিন্তু তাও অবিশ্বাস্য।মানুষের শেখার ... ...
জীবনে সেই প্রথম চক্ষুকর্ণের বিবাদ ভঞ্জন করে "কম্পিউটার" দেখা হল - ইনটেল 386 - সাদা রঙের পিসি - টিভির মত দেখতে সাদা দামড়া মনিটার, ইয়া গাব্বা সাইজের সি পি ইউ, সেটাও সাদা, তাতে ছোট এবং বড় দুই রকমের ফ্লপি ডিস্কের স্লট। বলা বাহুল্য এসব ডিটেইল কিছুই তখন জানতাম না - ওটাকে ফ্লপি বলে বা ওই ঢোকানোর জায়গাটাকে স্লট বলে, সেটুকুও না। সিডি ব্যপারটার নামই শুনব আরো প্রায় বছরখানেক পরে ... ...
ফোর টোয়েন্টিঅভীক মুখোপাধ্যায়‘হুজুর একটু দেখবেন। আপনারাই মা- বাপ।’ আচমকা একথা কানে আসতেই ঘাড় ঘোরালাম, যে দৃশ্য চোখে পড়ল তাতে অবাক না হয়ে পারলাম না। মার্চের প্রথম সপ্তাহের দুপুর, গরম খুব বেশী না হলেও নেহাত কমও বলা চলে না। এই গরমে কমলা রঙের হনুমান টুপি পরা বেঁটে খাটো চেহারার একজন মানুষকে দেখে একটু অবাক হলাম। গায়ে কটে যাওয়া নীল কোট। উদ্ভট লাগায় কৌতুহল আরও বেড়ে গেলো। ডান হাতের তর্জনীটাকে এমন ভাবে আমার দিকে তুলে মুখে চোখে একটা সনির্বন্ধ অনুরোধ নিয়ে তাকিয়ে আছেন যেন ‘একটাই মাত্র কোনও কথা’ ... ...
সারমর্ম আবার কী? বাংলা মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছি নাকি? ... ...
আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করে বঙ্গন্ধুকে পয়গাম্বার বানানোর যে চেষ্টা করা হয় তার কোন দরকার নাই। তিনি মানুষ ছিলেন, কোন প্রেরিত পুরুষ ছিলেন না। তিনি এই বাংলার একদম মাটি থেক উঠে আসা মানুষ ছিলেন, কৃষক পরিবার থেকে উঠে, কোন প্রকার রাজনৈতিক ঐতিহ্য না থাকা সত্ত্বেও এই ভূখণ্ডের সকল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব থেকে নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। কিন্তু তিনি মানুষ ছিলেন এইটা আমরা যেন না ভুলে যাই। এত বছর পরে উনার ভুল ত্রুটি নিয়েও আলোচনা হোক, আমরা উনার অবিশ্বাস্য সব কৃতীর কথা জানি, এক রোখা ভঙ্গিতে সমস্ত চাপকে পিছনে ফেলে দেশকে ধরে রেখেছিলেন ধর্মনিরেপক্ষ হিসেবে। পেট্রো ডলারের প্রলোভন ছিল, উল্টা দিক থেকে ইজরাইলের মত দেশের তরফ থেকেও প্রলোভন ছিল। রাশিয়া হাত ধরলেও আমরা চলে যেতে পারতাম সম্পূর্ণ ভিন্ন এক দিকে। কোন সঠিক ছিল কোনটা ভুল ছিল এই সব নিয়ে আলোচনা না হলে ভবিষ্যতে বিপদেই পড়ব আমরা। ... ...
রোজ কত কী লিখি যাহা তাহা, অবসরের সম্পাদকমন্ডলীর মত কেউ কোনোদিন বলেনি, "সঙ্গীতশিক্ষা নিয়ে লেখো দিকি?" শুনেই মাথায় বিদ্যুৎচমক। সত্যিই তো, চল্লিশ বছরেরও বেশি হল, এখনো তাঁর পদতলে বসে আছি। আমার গুরু প্রবাদপুরুষ সঙ্গীতাচার্য অমিয়রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়। অবসরের পাতায় আমার সঙ্গীতকথা, গুরুকথা তাঁকেই নিবেদিত। লেখাটি অবসর পত্রিকায় প্রকাশিত। ... ...
কালকের জয় শুধু মেসির শ্রেষ্ঠত্বের জন্য না, আর্জেন্টিনার সমর্থকদের জন্যও জরুরি ছিল। ৩৬ বছর কাপ পায় নাই একটা দল। এমন না যে দলটা উরুগুয়ের মত হারিয়ে যাওয়া দল। ভাল দল কিন্তু কই জানি গড়বড় করে ফেলে কাপ নেওয়া হয়। বিপক্ষের তীব্র বিদ্রূপের জবাবে গলার জোর ছিল প্রধান অস্ত্র। জন্মের পরে কাপ নিতে দেখছস? এই কথার উত্তর কী? আমার নিজের ৯৪ সালের খেলার কথা তেমন মনে নাই, ফাইনালে ব্যাজিও পোস্টের অনেক উঁচু দিয় মেরে ইতালিকে হারিয়ে দিছিল, এইটা ঠিক মনে আছে না পরবর্তীতে সিনেমা ডকুমেন্টারি, ভিডিও দেখে জানি তাও ঠিক মনে নাই। ৯৮ বিশ্বকাপের কথা হালকা পাতালা মনে আছে। পরিষ্কার মনে আছে ২০০২ সালের কথা। পরিবার থেকে বিদ্রোহ করে আমি তখন ইংল্যান্ডের সমর্থক, আমাদের বাড়ির চৌদ্দ গোষ্ঠী ব্রাজিলের সমর্থক! আমি তখনই সবাই যা করে তার থেকে বের হতে চাচ্ছিলাম। আর ছিল ব্যাকহাম নামের এক খেলোয়াড়, যে কারণেই হোক আমি তার মুগ্ধ ভক্ত হয়ে গেলাম। ব্রাজিল সমর্থকেরা সেবারও কাপ জিতার স্বাদ পেয়ে গেল! স্বভাবতই অন্তত আমাদের বয়সই আর্জেন্টিনার সমর্থকেরা জন্মের পরে কাপ দেখছস প্রশ্নের সম্মুখীন হতে থাকল নিয়ম করে! এখন অবশ্য জন্মের পরে কাপ দেখছস কথা ব্রাজিল সমর্থকদেরও শুনতে হচ্ছে! তবুও আর্জেন্টিনার কষ্টের কাছে কিছুই না। আরও যন্ত্রণা ৩৬ বছর আগের যে কাপ তাও ম্যারাডোনার হাত দিয়ে দেওয়া গোলের কলঙ্ক লেগে আছে। সমর্থকদের জন্য, এমন অন্ধ ভাবে সমর্থন দিয়ে যাওয়ার জন্য একটা কাপ জেতা খুব জরুরি ছিল। কালকে সমর্থকদের শ্রেষ্ঠ উপহার দিয়ে দিয়েছে মেসি ইতিহাসের সেরা ফাইনাল জিতে। ... ...
'সকলেই কবি নন, কেউ কেউ কবি।' কবিরা সংবেদনশীল হন। কবিরা দ্রষ্টা হন।যে দৃশ্য অন্যরা সাধারণভাবে দেখেন, সেই 'কেউ কেউ কবি', এ-সব দৃশ্যের অন্তরালে দেখতে পান অন্যতর সত্য। সেই সত্যের ধারাভাষ্য লেখেন তাঁরা।বিনয় মজুমদার এই ধরনের কবি ছিলেন। চেনা ও আপাত দৃশ্যের আড়ালে ঢাকা সত্য বের করে আনতেন স্বকীয় দক্ষতায়। তাঁর বহুচর্চিত কাব্যগ্রন্থের নাম ' ফিরে এসো চাকা'। 'ফিরে এসো চাকা'র প্রথম কবিতাটি নিয়েই এই সামান্য প্রয়াস, সেটি পড়লে বিস্ময়ের উদ্রেক হয়:একটি উজ্জ্বল মাছ একবার উড়েদৃশ্যত সুনীল কিন্তু প্ ... ...
পাকিস্তান আমলে বামপন্থি একটা সাংস্কৃতিক সংগঠন ছিল, নাম ক্রান্তি। ক্রান্তি দল একবার টাঙ্গাইলে গান গাইতে যায়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে সবাই মিলে হায়দার আকবর খান রনোকে বলে যে তারা মাওলানা ভাসানির সাথে দেখা করতে চায়। রনো সাহেব তাদের নিয়ে চলে যান সন্তোষে মাওলানা ভাসানির সাথে দেখা করতে। মাওলানাকে ঘিরে সবাই বসে আবার গান গাওয়া শুরু করে। মাওলানা মনোযোগ দিয়ে শুনে সব গুলা গান। পরে তিনি সবাইকে চা নাস্তা দিয়ে আপ্যায়ন করেন। গান নিয়েই আলোচনা চলতেছিল। আলোচনার এক পর্যায়ে ভাসানি তাদের বলেন, গান তো ভালই, মুশকিল হচ্ছে এই গান বুঝতে হলে তো কৃষকের বিএ পাস করতে হবে আর না হয় রনোকে যেতে সব জায়গায় এই গানের অর্থ বুঝিয়ে দিতে! এই উদাহরণটা দিলাম কারণ আমাদের প্রায় সব ক্ষেত্রেই এখনও একই অবস্থা। বিপ্লব করব কী। আমরা তো ভাষাই জানি না কৃষকের! প্রচুর প্রগতিশীল মানুষ, সৎ মানুষ, আক্ষরিক অর্থেই ভাল মানুষ, মানুষের ভাল চায় এমন মানুষ জানেই না সাধারণ মানুষের ভাষা! ঢাকা কেন্দ্রিক সব, এখন আরও বিপদ হচ্ছে অনলাইন বা ফেসবুক কেন্দ্রিক কাজকাম! মানুষ ভুলেই গেছে ফেসবুক বাংলাদেশ না। ফেসবুকের বাহিরে পুরো বাংলাদেশই পরে আছে, যাদের নিয়ে কারও কোন মাথা ব্যথা নাই। যারা এর বাহিরে কাজ করতে চায় তারা সাধারণ মানুষের ভাষাই বুঝে না, কাজ কী করবে? এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে কুসংস্কারে খাচ্ছে, ধর্মান্ধতা খাচ্ছে, অশিক্ষায় খাচ্ছে, অপসংস্কৃতি খাচ্ছে। আমাদের ঢাকা কেন্দ্রিক নেতৃত্ব শাহবাগে মানব বন্ধন করে কর্তব্য পালন করছে। আমরা এদিকে হারিয়ে যাচ্ছি অতলে। ... ...
যদি,ইলিশ মাছের আমেজ পেতুম কল্মীশাকে,তবে,“জয় মা” ব’লে জাপ্টে নিয়ে রাম বাবাকে,মাংস ছেড়ে পালিয়ে যেতুম হরিদ্বারে,ফলার খেয়ে তৃপ্তি পেতুম গঙ্গা পারে।যদি,শিক-কাবাবের গন্ধ পেতুম কুমড়ো ভাতে,তবে,জৈন হ’য়ে কল্পসুতো বাগিয়ে হাতেদিগম্বরের মূর্তি ধরে ডাইনে বামেআস্থা চ্যানেল ভরিয়ে দিতুম যোগ ব্যায়ামে।যদি,চিংড়ি মাছের মস্তি পেতুম থানকুনিতে,তবে,নিমাই সেজে ঢোল বাজাতুম ডানকুনিতে,চুল কামিয়ে দু’চোখ বুজে “কেষ্ট” ব’লেব ... ...