মেট্রো স্টেশন থেকে অফিস যাওয়ার পথে অটোটা ঠিক পাঁচবার বাঁক নেয় – অমিত হিসেব করে দেখেছে। সুধীন সমাদ্দারের বাড়ি ঠিক তিন নম্বর বাঁকের মুখে। সুধীন সমাদ্দারকে অমিত চেনে না। কিন্তু রোজই দেখে তাকে তাঁর বাড়ির বারান্দায় বসে লিখতে। সুধীন সমাদ্দার ছোট ছোট কবিতা লেখেন আর লিখে বাড়ির দরজা বা বাইরের দেওয়ালে আটকে দেন। তলায় সই – সুধীন সমাদ্দার। ... ...
সমীর রায়চৌধুরী সম্পর্কে দুচার-কথা ... ...
আজ শালপ্রাংশু, অনতিমন্দ্র কণ্ঠস্বরের বহুমুখী প্রতিভাধর মানুষটির ১০৩ তম জন্মদিবস। পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক দুঃসময়ে ওঁর তিনটি ছবির কথা আজ বেশি করে মনে পড়ছে যেগুলিকে ওর নাগরিক ট্রিলজি বলেন অনেকে। এই তিনটি ছবির মধ্যে অন্তত দুটির বিষয় বিপুল কর্মহীনতা আর অন্তত দুটি ছবিতে মধ্যবিত্তের আদর্শচ্যুতি। কিন্তু সেটা নিছক ঈশপ ফেবলসের নীতিকথা নয়, এই আদর্শচ্যুতির পেছনে যে সামাজিক পটভূমিকার চাপ যা মনুষ্যত্বকে বিকিকিনির হাটে চাপিয়েছে তা সত্যজিত বড় নিষ্ঠুরভাবে উপস্থাপিত করার সাহস দেখিয়েছিলেন। ... ...
বহু কষ্টে আব্বুর সাথে চয়ন গুন্ডাকে দেখা করতে রাজি করিয়েছি। চয়ন গুন্ডার সাথে আমার দশবছরের প্রেম।ছোটবেলায় যখন আমি চুলে দুই ঝুঁটি করে বাসার পেছনের গাছতলায় ফুল কুঁড়াতাম চয়ন গুন্ডা সেইসময় বন্ধুবান্ধব নিয়ে সেই গাছতলার এক চিপায় বসে গান্জা টানত। মাঝেমধ্যে আমি ফুল হাতের নাগালে না পেলে সে এসে গাছে ঝাঁকি দিয়ে ফুল ঝরাতো। সেই সূত্রেই আমাদের পরিচয়।শিশুহৃদয় লজিক বোঝে না। সেই ছোটবেলায়ই তাই চোপাভাঙ্গা গান্জাখোর চয়ন গুন্ডাকেই ভালোবেসে ফেলেছিলাম। পরিবারের বকাবকি, মারধোর কোনো কিছুতে কোনো ... ...
মৃত্যুদন্ড থাকা উচিৎ কি উচিৎ নয় এ নিয়ে বিভিন্ন থ্রেডে আলোচনা চলছে। কিছু ধর্মান্ধ লোক স্বভাবতঃই কোন যুক্তি তর্কের ধার ধারেন না শুধু ভাবাবেগের বেগ আর গলার (প্রয়োজন হলে কবজি বা অস্ত্রেরও) জোরে সব কিছু প্রমাণ হয়ে গেছে মার্কা স্টেটমেন্ট ছাড়েন। তাদের কিছু বোঝাতে আর বিরক্ত লাগছে। কিন্তু সবাই তা নন। কিছু মানুষ যুক্তি দিয়েছেন – এবং তাদের সঙ্গে এই আলোচনাটা হওয়া জরুরী মনে করি। আলোচনায় ঢোকার আগে আমার বায়াসটুকু জানিয়ে রাখা জরুরী – আমি সামগ্রিকভাবে মৃত্যুদন্ডের বিরোধী – সে ধনঞ্জয় চ্যাটার্জী হোক বা ইয়াকুব মেমন ... ...
এপার বাংলায় পশ্চিম প্রান্তের তিন জেলা মেদিনীপুর, বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়ার জঙ্গলমহলে বেড়ে উঠেছিল এক রাজনৈতিক আন্দোলন। কিন্তু এই মাওবাদী আন্দোলন হঠাৎ একদিন আকাশ থেকে পড়েনি। কোন পরিস্থিতিতে, কোন প্রেক্ষাপটে জঙ্গলমহলের রুক্ষ মাটিতে এই আন্দোলনের বীজ বপন হয়েছিল, তা নিয়েই রাজনৈতিক উপন্যাস ময়ূরঝর্ণা। ময়ূরঝর্ণা শুধুমাত্র একটা গ্রামের নাম নয়, এক স্বপ্নেরও নাম! ... ...
#গোলমেলে_গিন্নি_৮ ~শর্মিষ্ঠা নাহাহবু ননদ : গায়ের রং বড্ড চাপা।(পাত্রীর গালে আঙুল ঘসে) আবার মেক আপ করে দু পোঁচ হাল্কা করে রাখো নি তো?হবু জা: ( পাত্রীর হাত টিপে) এঃ কি কেঠো হাত। দিনরাত কম্পিউটার চালালে এমন তো হবেই।পাত্রী: আচ্ছা, আপনাদের ধবধবে ফর্সা নরম তুলতুলে মেয়ে দরকার?লুসি, আঃ আঃ চুঃ চুঃনেপথ্যেঃ ভৌ ভৌ.... গররর গরররহবু ননদ+ জা : থাক, থাক এই লুচি আলুছেঁচকি তুমি রান্না করেছ? ভাল হয়েছে। কিন্তু তুমি সাউথ ইন্ডিয়ান, মোগলাই, চাইনিজ, মাঞ্চুরিয়ান বানাত ... ...
জেনারেল এরশাদ সরকার বিরোধী ছাত্র-গণআণ্দোলনের উত্তাল দিন। প্রতিদিনই ছাত্র মিছিলে পুলিশী হামলা হচ্ছে, গুলি হচ্ছে। ঢাকায় ও ঢাকার বাইরে প্রতিদিনই ঝরছে রক্ত। এরকমই একটি দিন ১৯৯০ সালের ২৭ নভেম্বরের সকাল সাড়ে ৯টা। স্থান মধুর ক্যান্টিন প্রাঙ্গণ।বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকার প্রবেশপথগুলোতে কড়া দাগা-পুলিশী প্রহরা। ঘোষিত ছাত্র-গণসমাবেশ যেন কিছুতেই সফল হতে না পারে, সে জন্য ঢাবি’র ছাত্র-ছাত্রীদের পরিচয়পত্র দেখে তবেই ক্যাম্পাসে ঢোকার অনুমতি মিলছে। বুয়েট, ইডেন কলেজ, ঢাকা কলেজ, সিটি কলেজ, তেঁজগা কলেজ, আইডিয়াল ... ...
গ্রাম। কিন্তু তা বলে গন্ডগ্রাম নয়। গ্রামে স্কুল আছে। সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্র আছে। তারে করে ঘরে ঘরে কেবল কোম্পানির পৌঁছে দেওয়া আনন্দ স্ফূর্তি আছে। তবে সবাইকার পাকা বাড়ি নেই। সবাইকার জন্য পাকা শৌচাগার নেই। কিন্তু উদ্যোগ আছে। দেয়াল লিখন আছে। ঘরেতে একটি পায়খানা বানান, মা -বোনেদের ইজ্জত বাঁচান এমন দেয়াল লিখনের পাশেই গোলাভরা ধান আছে, আবার আলুচাষির আত্মহত্যা-ও আছে। আর আছে একজন ডাক্তার বাবু। ৮৪ বছর তার বয়েস। ... ...
হারামজাদা দিল্লীর ট্র্যাফিক >:(একটা সিগনাল পেরোতে যে ৮বার লাল বাতি দেখতে হতে পারে সেটা হাড়ে হাড়ে হৃদয়ঙ্গম কল্লুম আজ >:( >:(না ... মানে ... দুইবার, তিনবার পর্যন্ত্য ধৈর্য ঠিক থাকে ... এমনকি চতুর্থবারেও "ধ্যার বাল"এর উপর দিয়েই যায় ...... কিন্তু আটবার??????? শালা ... ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি ...কি করি আজ ভেবে না পাই,পথ থেকে নেমে ফুটপাথে যাই?কার ঘাড়ে যে গাড়ি চড়াই?ধাক্কা মেরে কাটি?না না না না না ...এসব বিপজ্জনক আইডিয়া সমুহ সমূলে উৎপাটি ... ...
কর্পোরেট হাসপাতালের জেলেদের কথাএকটি মধ্যবিত্ত যুবক বেসরকারি সংস্থায় অস্থায়ী কাজ করেন। তেত্রিশ বছরের ঐ যুবকটির কোন শারীরিক সমস্যা ছিলোনা। ফ্রি হার্ট চেক আপের জালে ওনাকে আটকেছে বাইপাসের কবিগুরুর নামাঙ্কিত একটি হাসপাতাল। ঐ হাসপাতালটা ও দূর থেকে কয়েকবার দেখেছে আর ভেবেছে বড় বড় হাসপাতালগুলো বড় বড় হোটেলের মতো। বাবাকে নিয়ে কয়েকবার রাতে পি. জি. হাসপাতালে ওনাকে যেতে হয়েছিলো। ওগুলোর একটা আলাদা গন্ধ আছে। বাইপাসের বড়ো রাস্তার দুধারে বড় বড় বাড়িগুলো দেখে কোনটা হোটেল আর কোনটা হাসপা ... ...
আমগো সব আছিল। খ্যাতের মাছ, পুকুরের দুধ, গরুর গোবর, ঘোড়ার ডিম..সব। আমগো ইন্টারনেট আছিল, জিও ফুন আছিল, এরোপ্লেন, পারমানবিক অস্তর ইত্যাদি ইত্যাদি সব আছিল। আর আছিল মাথা নষ্ট অপারেশন। শুরু শুরুতে মাথায় গোলমাল হইলেই মাথা কাইট্যা ফালাইয়া নুতন মাথা লাগাইয়া দিত। এই যেমন গণশার করসিল। যন্তু...জানোয়ার.... ওই মানে হাতের কাসে যা পাওয়া যায় আর কি। তারপর হইল কি, লোকজন ইস্যামত মাথা কাটতে আরম্ভ কইর্র্যা দিল। কারুর লাল মাথা কাটি সবুজ কইর্র্যা দিল, তো কাউরে মুকুলেই কাইট্যা করি দিল ... ...
ইরফানকে দেখেও মনে হত তা-ই। অসম্ভব রিল্যাক্সড, হাঁকপাঁক নেই - জাস্ট চরিত্রটা ঘটনাচক্রে ইরফান খান। অতএব, ব্যক্তি ইরফান খানকে চিনি না - কিন্তু, বিশ্বাস করতে ইচ্ছে হয়, তিনি সম্ভবত পিকু ছবির রানা-র মতোই - কথা রাখতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন, কিন্তু তার মধ্যেই হাল্কা আড়চোখে মজার ছলে দেখতে চাইছেন পরিস্থিতিটা - কিম্বা ভোডাফোনের বিজ্ঞাপনের লোকটা, ক্যাজুয়াল, চোখে মিচকে হাসি - ইন ফ্যাক্ট, ভেবে দেখুন, প্রত্যেকের কাছেই এমন কিছু সিনেমার চরিত্র রয়েছে, যে চরিত্রটিকে তিনি ব্যক্তি ইরফান খানের প্রতিফলন হিসেবে বা ব্যক্তি ইরফান খানকে সেই চরিত্রের আদলে দেখতে ভালোবাসেন। ... ...
অবশেষে আমি মারা গেলাম। খুব একটা কষ্টটষ্ট পাইনি। সকালে চা খেতে খেতে পাঁচতলা ফ্ল্যাটের ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে মোবাইলে গেম খেলছিলাম। হঠাৎ মোবাইলটা হাত থেকে ফসকে গেল। নতুন ফোন, কিছুদিন আগে একটা হারিয়েছিল। প্রচন্ড দাম এই ফোনগুলোর। আমার একটাই শখ, দামী মোবাইল ফোন ব্যবহার করা। এমনভাবে বারবার হাতছাড়া করা যায় নাকি। গেল, গেল করে ফোনের পিছন পিছন আমিও ধাওয়া দিলাম। ওমনি দেহটা কেমন পালকের মতন হয়ে গেল। আমিও পড়ছি, ফোনও পড়ছে। আমি কার্নিশে গোত্তা খাই, তো ও টেলিফোনের তারে, আমি পাইপ হাঁতড়াচ্ছি, ও তিনতলার টুসি বৌদির ব্রা ... ...
কৃত্যা : তৃতীয় পর্বপ্রসেনজিৎ বসু[পাণ্ডবগণ অধোনেত্রে নীরব এবং ধৃতরাষ্ট্র অন্ধনেত্রে সরব -- এমন সময়ে দুঃশাসন দ্রৌপদীর বস্ত্রাঞ্চল ধরে সজোরে টান দেন।]প্রবল উল্লাসধ্বনির মাঝে প্রথমে কিছুই বোঝা যায় না। পৈশাচিক আমোদে সভা তখন মত্ত। আঁচল খসে যায়, কিন্তু দ্রৌপদীর স্কন্ধদেশ অনাবৃত হতে-হতেও যেন হয় না। কিন্তু সভার প্রত্যন্ত এক কোণ থেকে একটি মর্মান্তিক আর্তনাদ ওঠে, যা বিপুল হর্ষধ্বনির মাঝে কারুর শ্রুতিগোচর হয় না। মত্ত জনতা লক্ষই করে না, দুঃসহ নামক এক কৌরবভ্রাতা রক্তাক্ত দেহে সভাকক্ষে ... ...
হাঁটতে হাঁটতে হুট করে চোখে পড়ল ধবধবে সাদা এক দালান। দেখেই বুঝা যায় গথিক স্থাপনার এক অনন্য নজির এই দালান। কাছে গেলাম, দেখি সেন্ট পল ক্যাথিড্রাল। অপূর্ব সুন্দর গির্জা। আমার মফস্বল চোখ এত সুন্দর স্থাপনা খুব কমই দেখেছে। রনি, মজার কথা হচ্ছে গির্জায় ঢুকতে টাকা নিলো! কেমন বেশরিয়তি কারবার! মানুষ ঠিকমত ধর্মকর্ম করতে পারবে না? গির্জায় যেতে টাকা নিবে? দশ টাকা দিয়ে ভিতরে ঢুকলাম। সিনেমায় যেমন চার্চ দেখি আমরা তেমন একটা চার্চ। দা ভেঞ্চি কোডের শুটিং করা যাবে চোখ বন্ধ করে। আমি ভিতরে গিয়ে বসলাম। অল্প কিছু মানুষ। নীরবে প্রার্থনা করছে। মনে হল একজনকে জিজ্ঞাস করি যে উনিও দশ টাকা দিয়ে প্রার্থনা করতে আসছেন কি না। কিন্তু তা আর করা হয় নাই। আমি দেখি সারি সারি যে চেয়ার গুলো বসানো তার উপরে মুখোমুখি করে বড় বড় চেয়ারের সারি। দুই পাসেই আছে এমন। এবং সবচেয়ে দারুণ ব্যাপার হল এখানে এখনও ব্রিটিশ আমলের চিহ্ন ধরে রেখেছে। সমগ্র ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রধান প্রধান শহরের চার্চ প্রধানদের জন্য সংরক্ষিত জায়গা এগুলা। লাহোর, বোম্বে যেমন আছে তেমনই ক্যালকাটার পাসেই লেখা ডাক্কা! প্রতিটার জন্য আলাদা আলাদা পতাকা আছে। দারুণ লাগল দেখে। ... ...