![]() বইমেলা হোক বা নাহোক চটপট নামিয়ে নিন রঙচঙে হাতে গরম গুরুর গাইড । |
বড় দিনের খাওয়া দাওয়া
কল্লোল লাহিড়ী
বড় লম্বা উঁচু পাঁচিলটাকে দেখলে মনে হয় প্রেসিডেন্সি জেল। টুকনু প্রেসিডেন্সি জেলের কথা কী করে জেনেছে সেটা তাকেই জিজ্ঞেস করো বরং। সেই পাঁচিলের গা বেয়ে যেটুকু রোদ এসে পড়েছে সেই রোদে একটু একটু করে বসার জায়গা করে নেবে ওপার থেকে আসা মানুষ গুলো।দিদা নেই কাজেই বড়দিনটা এই বালির বাড়িতেই কাটাতে হয়।টুকনুর এখন ক্লাস এইট। পাড়ার ছেলেদের সাথে ফিস্ট করতে যাওয়ার পারমিশান পাওয়া যায়নি বাড়ি থেকে।পাটিসাপটা নেই।একমাত্র ডাক্তার কাকিমা কিস্কু পাঠিয়েছেন বাড়িতে বানানো কেক।কয়েকটা চকলেট।সেই দিয়ে কিছুতেই মন ভরছে না।গোরা কাকুর চিলেকোঠায় গিয়ে বিস্তর নালিশ জানিয়েছে সে।এই নাকি তোমাদের সাম্যবাদী সমাজ? প্রত্যেকের সমান অধিকার?বাড়িতে আসলে টুকনুর কোন ভয়েজ নেই। কেউ শোনেনা তার কথা। “ওরা আমাদের গান গাইতে দেয় না...ভিয়েতসংগ্রামী পল রবসন...”।গোরাকাকু কিছু বলে না।
স্বাস্থ্যক্ষেত্রে দুর্নীতি বা চিকিৎসা ও দুর্নীতি-ডাঃ পার্থসারথি গুপ্ত স্মারক বক্তৃতা
বিষাণ বসু
বাজার অর্থনীতির নিয়মে স্বাস্থ্যপরিষেবাকে চলতে দেওয়ার বিরুদ্ধে কয়েকটি অমোঘ যুক্তি রয়েছে। প্রথমত, বাজারের অত্যাবশ্যক শর্ত, তথ্যের সাম্য। অর্থাৎ, ক্রেতা এবং বিক্রেতা দুজনেই কেনার জিনিসটা নিয়ে সমান অবগত থাকবেন। চিকিৎসার ক্ষেত্রে, হাজার গুগলের সহায়তা সত্ত্বেও, চিকিৎসক এবং রোগীর মধ্যে এই তথ্যের সাম্য আসা একেবারে অসম্ভব। দ্বিতীয়ত, ফ্লোরিডার বিচারকের যুক্তিটি। কেনার বাধ্যবাধকতা কাজ করলে বাজারের নিয়ম খাটে না। আপনার যদি দামে না পোষায়, এবং তদসত্ত্বেও যদি আপনি কিনতে বাধ্য হন, তাহলে বাজারের নিয়ম চললো কি? আপনি যদি সত্যিই অসুস্থ হন, তাহলে তো আপনি যেকোনো মূল্যেই, ঘটিবাটি বিক্রি করে হলেও, চিকিৎসা কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। প্রতি বছর, এই দেশে কয়েকলক্ষ মানুষ নতুন করে দারিদ্র্যসীমার নীচে চলে যাচ্ছেন, স্রেফ চিকিৎসার খরচ জোগাতে না পেরে। অন্তত খাতায়কলমে, তত্ত্বগতভাবে, বাজার অর্থনীতি কিন্তু এমন পরিস্থিতির কথা বলেন না। তৃতীয়ত, বাজারের নিয়ম অনুসারে, ক্রেতা এবং বিক্রেতার সম্পর্কটি সরাসরি এবং সেইখানে তৃতীয় ব্যক্তির সরাসরি লাভবান বা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার প্রশ্ন নেই (মধ্যবর্তী মুনাফাভোগী বা দালালের প্রশ্ন আনছি না)।
কেন আমরা Transgender Persons (Protection of Rights) Bill 2018এর বিরোধিতা করছি - একটি যৌথ বিবৃতি
প্রান্তিক লিঙ্গ ও যৌনসংখ্যালঘু মানুষদের গোষ্ঠীভিত্তিক সংগঠন
গত ১৭ই ডিসেম্বর ২০১৮ লোক সভায় "ট্রান্সজেন্ডার পার্সনস (প্রোটেকশন অফ রাইটস) বিল" নামক একটি প্রস্তাবিত আইন পাশ করা হয়। ট্রান্সজেন্ডার অর্থাৎ রূপান্তরকামী ও প্রান্তিক লিঙ্গের মানুষদের অধিকার সংক্রান্ত এই বিল বা খসড়া আইনটি ২০১৬ সালে ভারত সরকারের সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রক (Ministry of Social Justice and Empowerment) প্রথম সংসদে পেশ করেছিল । তখন রূপান্তরকামী এবং প্রান্তিক লিঙ্গ পরিচয়ের ব্যক্তিবর্গ এই বিলের নানারকম সমস্যাজনক দিকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হয় এবং বিলটি সংশোধনের জন্য তাঁদের মতামত এবং সুপারিশ জানায় । অথচ যাদের অধিকার সুরক্ষার নামে এই বিল, তাদেরই মতামত অগ্রাহ্য করে সরকার ডিসেম্বর ২০১৮তে পুনরায় বিলটি পেশ করে, বেশিরভাগ অংশ অপরিবর্তিত রেখেই।
মনোজ মিত্রকে অনুসন্ধান
অমর মিত্র
আজ আমাদের অগ্রজ মনোজ মিত্রর জন্মদিন। তিনি ৮০ সম্পূর্ণ করে ৮১-তে পা দিলেন। ভারতীয় নাটক, নাট্য সাহিত্যে তাঁর অবদান পাঠক এবং নাটকের দর্শক মূল্যায়ণ করবেন। আমি ব্যক্তিগত ভাবে দূরের পাঠক হয়ে তাঁর নাটক পড়ি। এবং উচ্চ মানের সাহিত্য পাঠের স্বাদ পেয়ে থাকি। অসামান্য বহুমাত্রিক সংলাপ পড়ে মুগ্ধ হই। সেই ১৯৫৯ সালের মৃত্যুর চোখে জল একাঙ্ক থেকে চাকভাঙা মধু, পরবাস, সাজানো বাগান, গল্প হেকিম সায়েব, রাজদর্শন, যা নেই ভারতে, অশ্বত্থামা, আশ্চর্য ফান্টুসি, ভেলায় ভাসে সীতা, অলকানন্দার পুত্র কন্যা......তালিকা বাড়াব না। ১৯৭৫-৭৬ সালে জরুরি অবস্থার সময়ে নরক গুলজার নাটকের সেই গান, ' কেউ কথা বলো না, কেউ শব্দ করো না, ভগবান নিদ্রা গিয়েছেন, গোলযোগ সইতে পারেন না' তিনিই লিখেছিলেন। সেই গান এখন ভেসে বেড়ায় সব রকম সেনসরশিপের বিরুদ্ধে।
পাত্থর
শক্তি দত্তরায়
মাছ কটা সোমারীর হাতে, কাপড়ের বালতি নিয়ে বুড়ি লালমাটি আর পাথরের পথে কষ্টে হাঁটে। জলছেঁড়া সূর্য্যিটা বড় তাপ ছাড়ছে, কপালটা ঘামছে, অথচ এখনই ডুবচান দিয়ে উঠল। বড়রাস্তায় উঠতেই ট্র্যাক্টর চালিয়ে থামল চাবাগানের নার্সারির রোজারিও। একপ্যাকেট ডঙ্কা আগরবাতি হাতে দিয়ে বলল - একটা মোমও দিল - মৌসী, মেরীজুনের নামে পাত্থরঠাকুরের কাছে একটু প্রে কোর। রোজারিও তেজপুরের চার্চে যায় ফি-রোববার। ওর ঘরে যীশুবাবার ক্রুশবেঁধা ছবি। আহা, ভগবানের এত দুখ, তো মানুষের হবে না কেনে! রোজারিওর দুঃখও সুরিয়া জানে। ওর মেয়েদুটি খুব ধলা। একটা বারো একটা চৌদ্দ। মিসামারির ম্যাথুসাহাব ফৌজিসাহাব - সেও খিরিস্তান। লেখাপড়া শিখিয়ে বিয়া দিব বলে কোচিন না কই নিয়া গেল। গরিব রোজারিও বলে এংলোইন্ডিয়ান সাহেবের জাত। মেয়ে দুটি ভালো খাবে পরবে বলে দিয়ে দিল। এখন শুনছে জুন নাকি লুকিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে তারা দুই বহিন বহুত খারাপ আছে। গরিব সাহেব রোজারিও এখন চার্চে মোম দেয়, উদালগুড়ি পীরের মাজারেও মোম দেয়। এই চারহাত ভগবানকে মোম ধূপকাঠি দিতে চায় বুড়ির হাতে। হ্যাঁ, সুরিয়া কালকে গোলাপফুলের মত মেয়েদুটির নাম করে দিয়ে দেবে বৈকি ঠাকুরের কাছে। এটা চা বাগান - কার নানা পরনানা কোন জাত কোন গেরাম কোন জেলা থেকে কোন আড়কাঠির সঙ্গে এখানে ওখানে এসে পড়েছিল তারা জানেনা। তাদের সন্তান সন্ততিরা সবাই কুলি। এখন অবশ্য কুলি বলেনা, লেবার বলে। তারা এত জাতজন্মের খোঁজ রাখেনা। ঘামে শ্রমে হাঁড়িয়ার ঠেকে ওঠাবসা একসঙ্গে। তাদের দেবদেবীরাও একাকার। পাতি তোলে বাগানে নিড়ানি দেয়, চাঘরে ডায়নামো চলে, ড্রায়ারের আগুন গরম তাতে খাটে। দুপুরে একই পাত্র থেকে লাল চাহাপানি খায়। ওদের বামুন শুদ্দুর নাই, ওসব আছে বাবু কোয়ার্টারে। ডাক্তারবাবু বামুন, চাঘরবাবু শুদ্দুর, বাগানবাবু বড়গোঁহাই। তাদের খাওয়া ছোঁয়া ঠাকুরদেবতায় একটু আধটু নিয়ম নিষেধ আছে। বেচারী রোজারিও একুল ওকুল কোন কুলেরই নয়।
অরিত্রীর মৃত্যু শি্ক্ষাব্যবস্থাকে বাঁচাক
রুমা মোদক
পরীক্ষা নামক ফাঁসির রজ্জুর সম্মুখে নার্ভাস শিক্ষার্থীটিকে পুনঃপুন চেক করার নামে ভয়াবহ মানসিক চাপ,পরীক্ষার হলে খাতা আটকে রাখা ইত্যাদি কতোরকম ভয়াবহ নির্যাতনের মধ্য দিয়ে যে একজন শিক্ষার্থীকে এই পরীক্ষা নামক ফাঁসির রজ্জু থেকে বেঁচে ফিরতে হয় তা বলা বাহুল্য মাত্র! যেনো দেশের এই বেহাল শিক্ষা ব্যবস্থার সব দায় শোধ করতে হবে নিষ্পাপ শিক্ষার্থীদের।
যতোক্ষন একটি ব্যবস্থা পরীক্ষাকেই ধরবে মেধা যাচাইয়ের মাপকাঠি,যতোক্ষন একটি ব্যবস্থা পরীক্ষাকেই নির্ধারিত করবে তার যোগ্যতা যাচাইয়ের দাঁড়িপাল্লা ততোক্ষন গাইড ব্যবসা, প্রাইভেট পড়ানোর ব্যবসা, কোচিং ব্যবসা কিছুই বন্ধ করা সম্ভব নয়।সম্ভব নয় "শিক্ষক" নামধারী কিছু চাকরিজীবীদের ষণ্ডামি। সম্ভব নয় বন্ধ করা ছাত্রের পরীক্ষায় ভালো নাম্বার পাবার প্রতিযোগিতায় যে কোন উপায় অবলম্বনের প্রবণতাও।এবং ততোক্ষন পর্যন্ত এঈ প্রবণতা অপরাধও নয়।
যতোক্ষন একটি ব্যবস্থা পরীক্ষাকেই ধরবে মেধা যাচাইয়ের মাপকাঠি,যতোক্ষন একটি ব্যবস্থা পরীক্ষাকেই নির্ধারিত করবে তার যোগ্যতা যাচাইয়ের দাঁড়িপাল্লা ততোক্ষন গাইড ব্যবসা, প্রাইভেট পড়ানোর ব্যবসা, কোচিং ব্যবসা কিছুই বন্ধ করা সম্ভব নয়।সম্ভব নয় "শিক্ষক" নামধারী কিছু চাকরিজীবীদের ষণ্ডামি। সম্ভব নয় বন্ধ করা ছাত্রের পরীক্ষায় ভালো নাম্বার পাবার প্রতিযোগিতায় যে কোন উপায় অবলম্বনের প্রবণতাও।এবং ততোক্ষন পর্যন্ত এঈ প্রবণতা অপরাধও নয়।
অরিত্রীদের বাঁচাতে গেলে...
মোহম্মদ সাদেকুজ্জামান শরীফ
আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা এতই কুৎসিত যে এখানে নকলের মত অপরাধ করে হলেও ক্লাস নাইনের মেয়ে কে বার্ষিক পরীক্ষা দিতে হয়। আর আমাদের শিক্ষকগণ এতই মহান যে এতে নিজেদের অপরাধ, নিজেদের নৈতিকতা কে একবারের জন্যও প্রশ্ন না করে সেই ছাত্রী কে, তার বাবা মা কে অপদস্থ, অপমান করে। এমন ঘটনা যদি দেশের মফস্বল শহরের অখ্যাত কোন স্কুলে ঘটত তাহলে এটা হয়ত মানুষজনের নজরেও আসত না। কিন্তু এমন ঘটনা ঘটে বসে আছে দেশের সেরা স্কুলে।সেরা স্কুলের চেহারা যদি এমন হয় আশা করি বাকিদের অবস্থা খুব সহজেই অনুমেয়। তাই বাকিদের নিয়ে কোন উচ্চবাচ্য আজ পর্যন্ত হয়নি, সম্ভবত আর হবেও না।
অরিত্রীদের কেন মরতে হচ্ছে
রুখসানা কাজল
এসব ইশকুলের অধ্যক্ষা মাননীয়রা ছাত্রীদের বয়স, স্বাভাবিক অনায়বোধ, সহজাত অভিমান না বুঝে অমানবিক এবং বিকৃত মানসিকতার শিক্ষকদের চরমতাকে বিবেচনা করে অভিভাবকসহ ছাত্রীদের হরহামেশ অপমান করে থাকে। এদের না আছে আত্মমর্যাদাবোধ, না আছে অন্যদের মানব মর্যাদাবধের প্রতি বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা। ছোটবড়, ছেলেমেয়ে, ধনী নির্ধনের মানবমর্যাদা বোধে আঘাত করা যে অপরাধ— এই শিক্ষা, শিষ্ঠাচার, প্রয়োজন এবং ভব্যতা সভ্যতা তাদের নেই। এসবের ধারও তারা ধরে না। কেননা একজন অরিত্রী মরে গেলে আরো দশজন অরত্রী অই সিটে ভর্তি হওয়ার জন্যে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছে। সাথে আছে তাদের বাবামায়েরা।
অত্যন্ত দ্রুততার সাথে শিক্ষামন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপে এই প্রথম এ ইশকুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ ও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। কিন্তু অরিত্রী কি ফিরবে ? ওর বাবামা কি ফিরে পাবে কাঠগোলাপ কানে গোঁজা হাসিখুশি প্রাণোচ্ছল মেয়েটিকে ?
অত্যন্ত দ্রুততার সাথে শিক্ষামন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপে এই প্রথম এ ইশকুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ ও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। কিন্তু অরিত্রী কি ফিরবে ? ওর বাবামা কি ফিরে পাবে কাঠগোলাপ কানে গোঁজা হাসিখুশি প্রাণোচ্ছল মেয়েটিকে ?
ভাষা-ভীমরতি, সমালোচক ও হ-য-ব-র-ল (দ্বিতীয় পর্ব)
সৌরভ মিত্র
পরিবর্তনশীলতা মানেই খামখেয়ালিপনা (arbitrariness) নয়। - একদল মানুষ একটি বস্তুকে জল নামে চেনে। কিন্তু, যেহেতু শব্দ-জল আর বস্তু-জলের মধ্যে পরিবর্তনশীল ‘কিছু একটি’ আছে বলেই তারা হঠাৎ বস্তু-জলকে ‘স্থল’ বলে ডাকতে শুরু করে না। নামকরণের সময় সচেতনে বা অবচেতনে তারা নামের মাধ্যমে বস্তু/ বিষয়টির কোনও একটি মুখ্য বৈশিষ্ট্য যেন প্রকাশ পায় (বা নাম থেকে বস্তু/ বিষয়টিকে কিছুটা হলেও চেনা যায়) –সে’টুকু খেয়াল অবশ্যই রাখে। এমনকি একজন ‘মাতাল’কে দেখে ‘পেটে জল পড়েছে’র মতো (ব্যঞ্জনামূলক) মন্তব্য করার সময়ও সে সচেতনে/ অবচেতনে বা অভ্যেসে (ঐতিহাসিক সংগঠন বজায় রেখে) মদ ও জলের পানযোগ্যতা, তাদের তরল অবস্থা, ইত্যাদি ধর্মের (ক্রিয়াবৈশিষ্টের) একটি তুলনামূলক সংশ্লেষ সেরে ফেলে।
ছবি দেখা - দর্শকের কল্পনা – বারবার দেখার অনুভূতি – যোগেন চৌধুরীর (অ)সাধারণ ফুলদানি
বিষাণ বসু
গল্প খোঁজার জন্যে “ছবির সাথে সহবাস”-এর প্রয়োজন। দিনের অনেক সময়, বারবার যাতে চোখ যায়, এমন জায়গায় ছবিটি থাকা প্রয়োজন। যাঁদের বাড়ির দেওয়ালে ছবি রয়েছে (আবারও বলি, এইখানে ছবি বলতে প্রিন্ট বা ওরিজিন্যাল সবকিছুকেই বোঝাতে চেয়েছি), তাঁদেরকে এই বিষয়টি আলাদা করে বোঝানোর কিছু নেই। এইটা অনেকাংশেই, ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতানির্ভর। কিন্তু, যাঁদের বাড়িতে ছবি নেই, তাঁরা একবার চেষ্টা করে দেখুন। আগেই বলেছি, অনলাইন স্টোরে বেশ উঁচু মানের প্রিন্টের দাম তো তেমন কিছু নয়। শুধুই পশ্চিমের নয়, ভারতীয় মাস্টারদের ছবির প্রিন্টও পাওয়া যায় সেইখানে। আর, ওরিজিন্যাল ছবি ঝোলাতে পারলে তো কথা-ই নেই।
পুরুলিয়া আর জয়ন্তিয়া
প্রতিভা সরকার
মেঘালয়ের পাহাড়ে প্রায় ৬৪০ মিলিয়ন টন কয়লা মজুদ আছে। এদের মধ্যে বেশীরভাগই ভূসম্পত্তির অধিকারীদের দ্বারা যথেচ্ছ উত্তোলিত হয়। অবশ্যই এদের আঁতাত থাকে বড় কোল মাফিয়া, নামী সিমেন্ট কম্পানীগুলো এবং অন্যান্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে। গ্রামের পর গ্রাম জনগণ, কোনও ধনী ভূস্বামী যার জমির অন্তর্গত পর্বতশিরায় কয়লা লুকিয়ে আছে, তার অধীনে অল্প পয়সার বিনিময়ে এই খননকার্য চালিয়ে যায়। দিন দিন ভূস্বামীর কোষাগার স্ফীত হয়, হয়তো চেরাপুঞ্জি মৌসিনরামে বিলাসবহুল পান্থশালার সংখ্যা বাড়ে। কিন্তু অদক্ষ খনি শ্রমিকের সন্তানরা হামাগুড়ি দিয়ে ইঁদুরের গর্তের মত পাহাড়ের ভেতর কেটে রাখা অসংখ্য সুড়ঙ্গে ঢুকে খালি হাতেপায়ে কালো হীরের খোঁজ চালায়। এদের জন্য বা অন্য শ্রমিকদের জন্য কোন সুরক্ষার ব্যবস্থা হয় না।
আজকের কবিতার পক্ষে বারোটি পাল্টা প্রশ্ন/ কবির স্থানাঙ্ক বিষয়ক দুই চারিটি কথা - প্রথম পর্ব
কুশান গুপ্ত
অভিযোগ এই: আধুনিক কবিতা এতদূর দুর্বোধ্য হয়েছে যে তা প্রায় সিন্ধুর খরোষ্ঠী লিপির নিহিত অৰ্থ বা ব্যাঞ্জনা বের করার মত দুঃসাধ্য ও অসম্ভব ব্যাপার। এই অভিযোগ কতদিনের বলা মুশকিল, তবে জীবনানন্দ থেকেই সম্ভবত এই নিয়ে বেশি শোরগোল শুরু হয়। পরে এই একই অভিযোগে আক্রান্ত হন বারবার যে কবি তাঁর নাম শক্তি চট্টোপাধ্যায়। এমনকি বুদ্ধদেব বসুর মত আধুনিক কবি, যাঁকে কবিতাবিষয়ক অন্যতম উদারমনা শ্রেষ্ঠ বোদ্ধা ধরা হয়, পঞ্চাশ-ষাটের দশকের দিকে এসে এই জাতীয় কথা বলতে শুরু করেন, 'এদের কবিতা এত দুর্বোধ্য যে কিছুই বোঝা যায় না'। শুনেছি উপর্যুপরি দুর্বোধ্যতার অভিযোগে অভিযুক্ত স্বেচ্ছাচারী শক্তি আত্মপক্ষ সমর্থনে কোথাও বলেছিলেন যে প্রকৃত ও শিক্ষিত পাঠক সবাই না।কবিতার গূঢ় অর্থ ও কূটাভাস নির্ণয়ে এক্ষেত্রে পাঠককে প্রস্তুত হতে হয়, এগিয়ে আসতে হয়। যদি ভাবেন পাঠকের প্রতি এটি এক নিছক কাব্যিক ও শাক্ত প্রত্যাঘাত তাহলে অধিক তর্কে না গিয়ে হালকা একটি কথা বলি, রাগসঙ্গীতের প্রকৃত ও সমঝদার শ্রোতা কারা? ডোভার লেনে বসলে আমজাদ আলির সরোদ ধরার ভঙ্গি নাহয় ধরে ফেললেন, কিন্তু রাগ উপভোগ করতে পারবেন তো? নাকি অপরাধবোধে ঘুম পাবে? যদি একজন ফুটবল খেলার দর্শক খেলার সাধারণ নিয়মকানুন না জানেন তাহলে কি তার কাছে খেলাটি সমান উপভোগ্য হবে?