![]() বইমেলা হোক বা নাহোক চটপট নামিয়ে নিন রঙচঙে হাতে গরম গুরুর গাইড । |
অন্য দিল্লি
শমীক মুখোপাধ্যায়
সরকার কোনও চেষ্টা করে নি আমজনতার মধ্যে এই ক্ষোভ প্রশমিত করার। নিজের নিজের নিরাপদ সিকিওরিটির ঘেরাটোপের মধ্যে তাঁরা ব্যস্ত থেকেছেন ধর্ষণ সংক্রান্ত বিল নিয়ে কবে আলোচনায় বসা যায়, তাই নিয়ে, কিংবা অন্য কোনও বিষয় নিয়ে। সরকারপক্ষের এই নীরবতাই এক বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল গত বাইশ আর তেইশে ডিসেম্বরের বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশের।
গত শনিবার সকাল থেকেই দেখেছিলাম দলে দলে ছেলেমেয়ের দল, যাদের বয়েস সতেরো থেকে পঁচিশের মধ্যে, দলে দলে চলেছে ইন্ডিয়া গেটের দিকে। কোনও নেতা ছিল না তাদের। নিজেরাই চলেছিল। হাতে ব্যানার, পোস্টার, তাতে কালো আর লাল অক্ষরে লেখা তাদের ঘৃণা আর ছিছিক্কারের ভাষা। এর আগেও দিল্লির রাস্তায় ছাত্রদের, যুবকদের, এনজিওদের মিছিল দেখেছি, সেই মিছিলের মুখগুলো আমার লাগত এক রকমের। বিষয় হয় তো কোনও ঘটনা বা নিয়মনীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, কিন্তু প্রতিবাদের আগুন থাকত না মিছিলকারীদের চোখেমুখে। সামনের লাইনের দু তিনজন শ্লোগান বা “নারা-বাজি”তে ব্যস্ত থাকতেন, বাকি পেছনের সারির লোকজন নিজেদের মধ্যে হাসি তামাশা করতে করতে পথ হাঁটতেন। কখনও সামনে মিডিয়ার ক্যামেরা দেখা গেলে সোৎসাহে হাত নেড়ে নিজের অস্তিত্ত্ব প্রকাশ। মিছিলের মুখপাত্র যখন রাগী রাগী মুখ করে নিজেদের দাবিদাওয়া পেশ করতেন বাড়ানো মাইক্রোফোনের সামনে, তখনও ব্যাকড্রপে দেখা যেত অগুনতি উৎসাহী মানুষের হাসিমুখ আর তাদের হাত নাড়া।
আমরা সবাই টিভিতে অনেক দেখেছি এই ধরণের ক্লিপিং। এই প্রথম, গত শনিবারে, একটা নয়, অন্তত তিন চারটে মিছিল দেখলাম, কমবয়েসী ছেলেমেয়ের দল, তাদের কারুর মুখে হাসি নেই, নিজেদের মধ্যে ঠাট্টাতামাশা নেই। গনগনে রাগ মুখে মেখে তারা চলেছে ইন্ডিয়া গেটের দিকে। হাতে পোস্টার।
অসুস্থ সভ্যতার চিকিৎসা চাই -- কিছু জমায়েতের টুকরো টাকরা
ঈপ্সিতা পালভৌমিক, সোমনাথ রায়
অসুস্থ সভ্যতার চিকিৎসা চাই -- কিছু জমায়েতের টুকরো টাকরা
ধর্ষিতাদের কোনো নাম হয়না
সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায়
অবশ্য আরও একটা কারণও থাকতে পারে। এত অস্থির হবার। আসলে সব ছাপিয়ে আরও একটা কথা মনে পড়ছে। মেয়েটা সেই রাতে সিনেমা দেখে ফিরছিল। লাইফ অফ পাই। সে তো আমিও এই সেদিন দেখে এলাম। বৌ-বাচ্চা নিয়ে। পপকর্ন খেলাম। আমার পরিচিত মেয়েটি, মেয়েরা, অনেকেই তো দেখেছে, যারা দেখেনি দেখবে সিনেমাটা। কে জানে কোনদিন তাদের কেউ খবরের কাগজে "ধর্ষিতা" হয়ে যাবে কিনা। নাম অবশ্য জানা যাবেনা এই বাঁচোয়া, কারণ, আব্রু রক্ষার্থে সেসব আমরা চেপে রাখতে জানি। আমরা ভদ্র ও সভ্য হয়েছি। লোকলজ্জা থেকে বাঁচানোর জন্য আমরা ভিক্টিমের নাম মিডিয়ায় উচ্চারণ করিনা। আমাদের ধর্ষিতাদের কোনো নাম হয়না।
মহাভারত - পঞ্চবিংশতি পর্ব
শুদ্ধসত্ত্ব ঘোষ
বিদুর বালকের চোখে দেখলেন এক ঝলসানো ক্রোধ! অর্জুন সোজা তাকিয়ে আছে তাঁর দিকে। রেখাটা গাঢ় হল মাত্র। বিভাজন ঠেকানো সম্ভব হবে বলে মনে হচ্ছে না। কৌরব বংশ একত্রিত হলে যা হতে পারতো তা শুধু কষ্টকল্পনা এখন থেকে। ওই বালকের ক্রোধ বলে দিচ্ছে গৃহযুদ্ধের দামামা বেজে গেল। এখন এই বালককে আপ্তবাক্য শুনিয়ে লাভ কি? অথচ তিনি বিদুর। দুর্যোধন তাঁরও ভ্রাতুষ্পুত্র, ঠিক এঁদেরই মতন। মহারাজ পাণ্ডু আর মহারাজ ধৃতরাষ্ট্রের বিবাদেও তিনি কিন্তু পক্ষ নেননি কোনো। শুধু পাণ্ডবদের ন্যায্য অধিকারের জন্যই কুরুসভায় দাঁড়িয়েছিলেন। তাহলে এখন তাঁকেও কি পক্ষ নিতেই হবে? গাঙ্গেয়র মতন তিনি যে এড়িয়ে যেতে পারছেন না। গাঙ্গেয় তাঁর মতন সম্পর্কের, মোহের অথবা প্রেমের বাঁধনে যে বাঁধা নেই। তিনি, ধর্মবেত্তা বিদুর যে প্রথম প্রেমের কাছে সদা সমর্পিত, তাঁর কী হবে?
হরিতকী ফলের মতন - তৃতীয় কিস্তি
শিবাংশু দে
ওসব থাক, তুমি গায়ত্রীর গল্প বলো...
-সব গায়ত্রীর গল্প কিন্তু তৎসবিতুর্বরেণ্য হয়না, সুরায় উন্মত্ত হয়ে পদাঘাতে বিচূর্ণ হওয়া পুষ্পাধারের মতো পরিতাপহীন জীবনের গল্পই শুনতে পাবে তুমি.....
তার পর ছাড়া ছাড়া সংলাপে শোনে বিনয়, সুবিনয়, দুর্বিনয়ের গপ্পো। তার চিরকাল গায়ত্রীর শূন্য অলিন্দের দিকে চেয়ে গেয়ে যাওয়া সমুদ্রকল্লোল আর পঞ্চম সিম্ফনি। উদ্দাম একাকিত্ব, নিষ্করুণ দারিদ্র্য আর নির্নিমেষ অবসাদের নিম ইতিবৃত্ত।
প্রিয় কবির প্রতি সজল দৃষ্টিপাত ছাড়া বোধ হয় আমাদের আর কিছু দেবার ছিলোনা।
'..... অঙ্গুরীয়লগ্ন নীল পাথরের বিচ্ছুরিত আলো
অনুষ্ণ ও অনির্বাণ, জ্বলে যায় পিপাসার বেগে
ভয় হয়, একদিন পালকের মতো ঝরে যাবো। '
স্বাস্থ্য, অধিকার (শেষ কিস্তি)
ডা. পুণ্যব্রত গুণ
জনসচেতনতা থেকে কী ভাবে জন-আন্দোলন গড়ে ওঠে তার অভিনব নিদর্শন পাওয়া যায় এখানে—শুরু থেকে শহীদ হাসপাতালের প্রচারের বর্ষামুখ ছিল ডায়রিয়ায় মৃত্যুর বিরুদ্ধে। এই প্রচারে জনসাধারণ ডায়রিয়া-প্রতিরোধে যথাযথ পানীয় জলের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতন হন। ছত্তিশগড় মাইন্স শ্রমিক সংঘ ও ছত্তিশগড় মুক্তি মোর্চা এই সচেতন মানুষদের নিয়ে পানীয় জলের দাবিতে যে আন্দোলন গড়ে তোলে তার চাপে ১৯৮৯-এ স্থানীয় প্রশাসন ও ভিলাই স্টীল প্ল্যান্ট কর্তৃপক্ষ দল্লী-রাজহরা ও তার আশেপাশের গ্রামগুলোতে ১৭৯টা নলকূপ বসাতে বাধ্য হয়।
ধানাই পানাই -১৯
রূপঙ্কর সরকার
আমাকে মোটামুটি ঠেলে গুঁতিয়েই পাঠিয়ে দিল। ক্যাশ মেমো কাটার পর বলল, মনে কর না স্কুলতুতো এক দাদা তোর সিক্সটিফাইভ মেরে দিল। ওটা জলে গেছে ধরে নে। তবে যাওয়ার আগে আসল কথাটা শুনে যা। বাটা কিছু জুতো এক্সপোর্ট করে। তাদের কোয়ালিটি আমাদের দেশের দোকানে রাখা জুতোর থেকে অনেক ভাল। কতটা ভাল, পরে বুঝবি। তারই কিছু সারপ্লাস এখানে মাঝে মাঝে আসে। ভারতের কোনও শহরের অন্য কোনও বাটার দোকানে এগুলো পাবি না। এখানেও সব সময়ে পাবি না। ইস্কুলের ছেলে বলে ডেকে গছালাম। বাড়ি গিয়ে গালি দিস।